অতএব সাধারণ মানুষের সঙ্গে আত্মার (পরবর্তী কালে, দেবতাদের ) সম্পর্কটা নির্বিঘ্নে হয়ে উঠছিল – Head you win, tail I loose – অর্থাৎ “হে আত্মা, হেডে জয় তোমার, টেলে আমার হার” ... ... ...
তাঁরা দুঃখেষু অনুদ্বিগ্নমনা সুখেষু বিগতস্পৃহঃ। চা খেতে খেতে তাদেরই এক জন বললেন, "ইহার পূর্বে কি কোনও কেলেংকারি ঘটে নাই এই দেশে ? রাজনীতিকরা কি অভিযুক্ত হন নাই পূর্বে ? সে সকল লইয়া প্রবল তদন্ত হইয়াছে এবং তাহা যে অতি বৃহৎ গ্রিন ব্যানানা ব্যতীত অন্য কিছু প্রসব করে নাই, তাহা বুঝিতে চিন্তন বৈঠক নিষ্প্রয়োজন। অতয়েব, হে অর্বাচীন, তুমি নিশ্চিন্তে পানভোজনে নিরত থাক এবং বাহুমূলকে বাদ্যযন্ত্র রূপে ব্যবহার কর।’’ ... ...
এতদিনের গতানুগতিক জীবনে যে মস্তিষ্ক আর পাঁচটা পশুর মতোই জীবনধারণের কাজে সদা ব্যাপৃত ছিল, তার ভেতরে আসছে নতুন এক আবেগের জোয়ার। সেদিন ওই আদিম মানুষগুলি প্রথম যে অনুভবে নির্বাক হয়ে গিয়েছিল, তারা স্বপ্নেও ভাবেনি তাদের বহু প্রজন্ম পরে, এই অনুভূতির নাম দেওয়া হবে, প্রেম, ভালোবাসা। ছেলে ও মেয়ের ভালোবাসার এই অনুভূতি নিয়ে অজস্র কাব্য, কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস, নাটক লেখা হবে। খুলে যাবে মানব সংস্কৃতির আরেকটি দিক – যার নাম সাহিত্য। ... ...
সপ্তমীর ভোগ সাতরকম ভাজা, ডাল, শুক্তো, আলুপটল, নটেশাকের ঘন্ট, চালতার চাটনি, সিমাইয়ের পায়েস, লুচি, সুজি, চিনি আর গুড়ের নাড়ু, সন্দেশ আর ফলপ্রসাদ। এটি আমার শ্বশুরবাড়ির পুজো। এই প্রসাদ কিন্তু আমরা দুপুরে পাবোনা। কারণ দুর্গাপুজো শেষ হতে সন্ধ্যে হয়ে যায়। তাছাড়া কায়স্থ বাড়ি বলে অন্নভোগ দেওয়া যায়না। ঠাকুরের রান্নাঘরে আজ যা রান্না হচ্ছে, তার থেকে কিছুটা সরিয়ে রেখে গোপীনাথের মন্দিরে অন্নভোগ দেওয়া হবে। সেটা আমরা দুপুরে খাব। আর দুর্গাদেবীর প্রসাদ খাওয়া হবে রাতে। মানে early dinner। গোপীনাথের মন্দিরে নিত্য অন্নভোগ গত দুশ বছর ধরে চলছে। কোনদিন বন্ধ হয়নি। আগে এলাকার বহু নিরন্ন মানুষের দুপুরের খাবারের যোগানদাতা ছিল এই মন্দির। কিন্তু এখন এলাকায় গরীব মানুষ কমে গেছে। পরিবারেরও সঙ্গতি কমেছে, তাই সাধারণ দিনে এখন সাত আটজনের মতো রান্না হয়। ... ...
ইতিহাস ও ধর্মচর্চা করতে করতে খুব ক্লান্ত? তাহলে ছোটদের গল্প (ছো-গ) পড়ুন। ছুটির সময় স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়ানো বিহারি বিষুণদাদাকে মনে আছে? বাঁশের সরু কাঠি দিয়ে বানানো বিশাল ডুগডুগির মতো স্ট্যাণ্ডের ওপর সাজিয়ে বন-কুল, বিলিতি আমড়া, তেঁতুল বা কুলের আচার বেচতেন? আমাদের পছন্দ ছিল, বিট-নুন, কারেন্ট-নুন, আর মিঠে-গুঁড়ি ছেটানো বন-কুল। তার প্রধান কারণ ছিল বৃদ্ধ বিষুণদাদা - আমাদের ছোট্ট হাতের তালুতে একটুস খানি কারেন্ট-নুন ফাউ দিতেন। অবিশ্যি বনকুলের বীজ "ফুঃ" করে বন্ধুর কান টিপ করে ছোঁড়াতে আমি তেমন নাম করতে পারিনি কোনদিন। সেই বনকুল আর সেই ফাউ কারেন্ট-নুনের আমেজ পেতে পড়তে থাকুন "ছো-গ" ... ...
দুপুরে কলকাতার এক সিনেমা হলের বাইরে খবরের কাগজ নিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইল শিবরাম। কোন চেঁচানো না, কোন তোষামোদ না। কেবল দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাতে থাকল সে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে কারোর অপেক্ষা করছে গভীর আগ্রহে। ... ...
কালীপূজোর সময় ছাত থেকে বোতলের সাহায্যে ছাড়া হত হাউইবাজি, পরের প্রজন্মে রকেট বোম। তারাও ফিরে আসত প্যারাবোলার পথেই। কিন্তু প্যারাবোলার গঠন তো রেললাইনের মত সমান্তরাল নয়, বরং খানিকটা চুলের কাঁটার মত; ফলে শুরুর বিন্দু আর শেষের বিন্দু একজায়গায় মেলে না। ভূমি একই, কিন্তু দুটোর মধ্যে বেশ কিছু তফাৎ থেকে যায় । ... ...
এপার বাংলায় পশ্চিম প্রান্তের তিন জেলা মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে বেড়ে উঠেছিল এক রাজনৈতিক আন্দোলন। কিন্তু এই মাওবাদী আন্দোলন হঠাৎ একদিন আকাশ থেকে পড়েনি। কোন পরিস্থিতিতে, কোন প্রেক্ষাপটে জঙ্গলমহলের রুক্ষ মাটিতে এই আন্দোলনের বীজ বপন হয়েছিল, তা নিয়েই রাজনৈতিক উপন্যাস ময়ূরঝর্ণা। ময়ূরঝর্ণা শুধুমাত্র একটা গ্রামের নাম নয়, এক স্বপ্নেরও নাম! ... ...
চা-ওয়ালা ছেলেটা হো হো করে হাসল, তারপর বলল, “জমি কিনতে গেছিলাম।” আমার মুখ দেখে ছেলেটা কিছু একটা বুঝল। বলল, “বিশ্বাস হল না, না ?” আমি চুপ। সত্যিই বিশ্বাস হয়নি। “কিছু মনে করবেন না স্যার, আপনি কত মাইনে পান? পাঁচ হাজার? সাত হাজার? দশ হাজার?” আমি চুপ। ১৯৯৬ সালে দশ হাজার টাকা মানে বেশ ভাল মাইনে। আমি তার চেয়ে অনেক কম পাই। “আমার ডেইলি প্রফিট ৫০০ টাকা। সেল নয়, প্রফিট,” বলল ছেলেটা। ... ...
নিজের চারদেওয়ালের স্বপ্ন দেখা এক মানুষের বড় হয়ে ওঠার টুকরো টাকরা। ... ...
...মানুষ মিথ্যা কথা বলায় অত্যন্ত দক্ষ। তারা প্রায়শঃ মিথ্যা কথা বলতে ভালোবাসে। একজন মানুষ নিজেকে বীর প্রমাণ করার জন্যে জঙ্গলে কোন দিন না গিয়েও, অজস্র বাঘ বা সিংহ শিকারের নিখুঁত গল্প বানাতে পারে। সে যদি মিথ্যা বলায় দক্ষ হয় মানুষ তাকেই বীর বলে বিশ্বাস করে। আর যে হয়তো সত্যিই বীর কিন্তু তেমন দক্ষ কথক নয়, তার কথায় কেউ কানই দেয় না। ... ... ...
আজ অষ্টমীতে , গোপীনাথ মন্দিরে খিচুড়ি ভোগ। দুর্গাদেবীর কাছে টমেটো খেজুর, কাজুবাদামের চাটনি, কুমড়ো ঘন্ট, আট রকম ভাজা, সুজি, লুচি, সিমাইয়ের পায়েস, কলার বড়া, খই, মুড়কি, দুরকম নারকেল নাড়ু - এই হল অষ্টমীর ভোগ। ... ...
ফচকেমির গল্প ... ...