বিজ্ঞান ও যুক্তির সত্যসন্ধানী ভাবমূর্তিতে নাকি আজকাল একটু কালির ছিটে লেগেছে, ও সব নাকি আসলে ততটা ‘সত্য’ নয়, যতটা পশ্চিমী মগজ-ধোলাই । ও হচ্ছে এশিয়া, আমেরিকা আর আফ্রিকার প্রাচীন জ্ঞানকে দাবিয়ে রাখা আর অস্বীকার করবার হাতিয়ার, পশ্চিমী জ্ঞানকেই একমাত্র জ্ঞান বলে বাকি পৃথিবীর ওপর চাপিয়ে দেবার ষড়যন্ত্র । এই কারণেই নাকি আধুনিক যুক্তিবাদ, বিজ্ঞান আর তারই উপজাত আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগে যুদ্ধ-বিগ্রহে, মানুষকে দমিয়ে রাখতে, নির্বিচারে পরিবেশ ধ্বংস করতে । কাজেই, এ হেন খারাপ জিনিসের জন্ম ও বাড়বৃদ্ধি যে এশিয়া আর আফ্রিকার উপনিবেশগুলোকে শোষণ না করে সম্ভব হতে পারত না, তাতে আর সন্দেহ কী ? আধুনিকতা ও পাশ্চাত্যের রোমান্টিক বিরোধিতার এই ফ্যাশনেব্ল্ বয়ানটি বিশ শতকের সাত থেকে নয়ের দশক পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক্স-এ খুব চলত । আজ তার সুদিন গিয়াছে, তবু আজও অনেকে নিয়মিতই এ নিয়ে ফেসবুকে চর্বিতচর্বণ করে থাকেন । ভারতের মত এক সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ইংরেজের হাতে দখল হয়ে যায়, আর, মোটামুটি ওই একই সময় থেকে ব্রিটেন-এ শুরু হয় শিল্প-বিপ্লব, অতএব সেটা নিশ্চয়ই ভারত থেকে লুঠ করা টাকাতেই সম্ভব হয়েছিল, এ রকম একটা ধারণা অ্যাকাডেমিক পণ্ডিত থেকে শুরু করে সাধারণ পড়ুয়া মানুষ অবধি অনেকেই পোষণ করে থাকেন । কিন্তু, কথাটা কি সত্যি ? মানে, যে ভাবে বলা হয় ওভাবেই সত্যি ? ... ...
'The Rojava Revolution is the Paris Commune under German siege ,Mardrid during the Spanish civil war,and Stalingrad during the second world war' জর্জ অরওয়েল তার স্পেনের গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা ‘ Homage to Catalonia’ শুরু করছেন এইভাবে ‘ In the Lenin Barracks in Barcelona, the day before I joined the militia,I saw an Italian militiaman standing in front of the officer’s table.’। ফ্যাসিবাদি বিরোধী ১৯৩৬-১৯৩৯সালের সেই লড়াই হাজারো স্বাধীনতাকামী মানুষের সাথে পেয়েছিলো ... ...
আমার সুচিত্রা সেনের অভিনয় জঘন্য লাগত। বেশ ন্যাকাই লাগত, ইন ফ্যাক্ট। আমি অনেককে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে উনি অভিনয় করতে পারেন না, আর প্রচুর গালাগালের সম্মুখীন হয়েছি। আজ এই পোস্টটা লিখে তো আরোই হব, কারণ সমাজের অলিখিত আইন অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি সমালোচনার ঊর্ধ্বে।কথা বলার টোন তো অসহ্য ছিলই, কিন্তু সবথেকে বিরক্তিকর ছিল তাকানো - বহু, বহু ওপরে কোথাও। "তুমি আমাকে ভালবাসবে না, শহীদ মিনার?" জাতীয় ব্যাপার।কিন্তু তাহলে কীসের এত মাতামাতি? "ঐধরনের অভিনয়ই তো তখনকার দিনে চলত"টা অত্যন্ত ব ... ...
সাহিত্যের পাঠক কম বেশি সকলেই। কিন্তু তার মধ্যেই কেউ কেউ জহুরী। তাঁরাও পড়েন সাহিত্য, কিন্তু কেবল গল্পের টান বা ছন্দের তানের আকর্ষণে নয়। তাদের নজর চলে যায় সৃজনের অন্দরমহলের দিকে। পুঁথির পাতায়, অক্ষর বিন্যাসে। প্রাচীন বা মধ্যযুগের সাহিত্যের প্রামাণিকতা নিয়ে আলাপ আলোচনায় এগুলি অত্যন্ত জরুরী হয়ে ওঠে সে আমরা জানি। আর এও জানি সাহিত্যের জহুরীদের এইসব পণ্ডিতি আলোচনা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম পেরিয়ে খুব কমই সাধারণ পাঠকের দোরগোড়ায় কড়া নাড়ে। কিন্তু কখনো কখনো একটা ব্যতিক্রম তৈরি হয়ে যায়। প্রীতম বসুর মতো ... ...
বিগত কয়েকশো বছরের সময়সীমা জুড়ে ধর্মকে কেবলই সরতে হয়েছে ‘ইতিহাস’ নামক নাটকটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক চরিত্র থেকে ক্রমশ গুরুত্বহীন হতে থাকা পার্শ্বচরিত্রে । একেই পণ্ডিতেরা আজ বলছেন ‘সেক্যুলারাইজেশন’, বাংলায় হয়ত বা কোনও মতে বলতে পারি ‘ধর্মনিরপেক্ষীভবন’ । এ প্রক্রিয়ার তিনটে দিক । প্রথমত, রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর থেকে ধর্মের রাশ আলগা হয়ে যাওয়া, প্রশাসন-অর্থব্যবস্থা-সেনা-শিক্ষাব্যবস্থা এইসব থেকে ধর্মের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া । দ্বিতীয়ত, জ্ঞান-চিন্তা-শিক্ষা-শিল্প-সংস্কৃতির জগতে আধুনিক বিজ্ঞান যুক্তিবাদ ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের দ্বারা ধর্মের তাত্ত্বিক পরিসরটি দখল হয়ে যাওয়া । এবং তৃতীয়ত, ব্যক্তি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ও মনোজগতে ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত ক্রমশ আলগা হয়ে আসা । বোঝা যায়, প্রক্রিয়াটি অনতিসংক্ষিপ্ত, জটিল, বহুমাত্রিক, বহুস্তরীয় । ‘সেক্যুলারাইজেশন’ নিয়ে চর্চা, কাজে কাজেই, খুব সোজা না । ... ...
চন্দ্রপুলিধনঞ্জয় বাজার থেকে এনেছে গোটা দশেক নারকেল। কিলোটাক খোয়া ক্ষীর। চিনি। ছোট এলাচ আনতে ভুলে গেছে। যত বয়েস বাড়ছে ধনঞ্জয়ের ভুল হচ্ছে ততো। এই নিয়ে সকালে ইন্দুবালার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে। ছোট খাটো ঝগড়াও। পুজো এলেই ইন্দুবালার মন ভালো থাকে না। কেমন যেন খিটখিটে হয়ে যায়। পইপই করে ধনঞ্জয় বলেছিল মেয়ে ডাকছে এতো করে ঘুরে এসো। ইন্দুবালার ছোট মেয়ে থাকে ব্যাঙ্গালোরে। এবছরেই তাদের সেখানকার পাট উঠবে। জামাই চলে যাবে ইউক্রেনে। মেয়ে তার ছেলেপুলে নিয়ে এসে উঠবে দিল্লী। শ্বশুর বাড়িতে। তারপর সেখান থেক ... ...
মডার্ন মেডিসিনের ছাত্র হিসেবে হোমিওপ্যাথি বিষয়ে কিছু ভাবনার কথা লিখেছিলাম অনেকদিন আগে।কথাগুলো প্রাসঙ্গিক বোধ করায় আরেকবার শেয়ার করলাম।প্রথমেই জানাই, আমি মডার্ন মেডিসিন প্র্যাক্টিশনার, ওরফে এলোপ্যাথি চিকিৎসক আর অন্য চিকিৎসাপদ্ধতি বিষয়ে খুব একটা বিশেষ জানি না। আর, সেই না জানার জন্যেই, অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি বিষয়ে আমি খুব একটা কথাবার্তা বলতে চাই না।হোমিওপ্যাথি নিয়ে আমার খুব একটা জ্ঞানগম্যি আছে এমন নয়। আর সেইজন্যেই, এই চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে নিকটজনের অসুস্থতার তদারক ... ...
দুর্জনেরা বলে ইদ মানে নাকি আমাদের (কিছু কিছু হিন্দুদের) নিজেদের সেকুলার প্রদর্শন করার দিন। রোজকার যাপনে যতোই মৌলবাদ প্রকাশ করি না কেন, ওই দিন গদ-গদ ভাবে 'ইদ মুবারক' জানিয়ে আমরা সেকুলার সাজি। সে যাই হোক, এর মধ্যে কতোটা সত্যতা আর কতোটা মিথ্যাচার তা নিয়ে নিশ্চয়ই বিতর্ক থাকবে। সে প্রশ্নে যাচ্ছি না।আমার দেখা অনেকেই ধর্মের নামে পশুবলি প্রথার বিরোধিতা করেন। কালী পুজোয় পাঁঠা-বলি নিয়ে অনেক অনেক কথা বলেন। তারা নিজেদের বরাবর সেকুলার হিসেবে দাবি করেন বলেও জানি। কিন্তু এই তাদেরই অনেককে কুরবানির ইদে ... ...
পথিকের প্রদর্শিত পথ সুজয়যুক্ত করতে আনন্দের বাজারে এখন হাম্পটি ডাম্পটি।গতকাল ( ৬ই এপ্রিল, ২০১৮) যে দৈনিক দৈনিক না পড়লে আপনি পিছিয়ে পড়বেন তাঁরা আপনাকে এগিয়ে রাখতে জেনেভা থেকে নিয়ে এলেন হাম্পটি ডাম্পটি কে ... ...
সময়টা ছিল ২০০৩-এর ডিসেম্বর অথবা ২০০৪-এর জানুয়ারি। আমি তখন একুশ এবং কলেজের ফাইনাল ইয়ার। কলেজ থেকে পিকনিকে গেলাম আমরা ডিপার্টমেন্টের বন্ধুরা দল বেঁধে। জায়গাটা ছিল বাটানগর ছাড়িয়ে গংগার ধারে এক মরে যাওয়া টাউনশিপ, যেখানে কোনো এক সময়ে একটা কারখানা ছিল এবং তাকে ঘিরে লোকালয়। এখন শীতকাল, এখানে সন্ধ্যে নেমে যায় সকাল হতে না হতেই, এবং সারা অঞ্চল জুড়ে একটা কালচে কুয়াশার চাদর।সেই মৃত জনপদ আসলে গোটা কারখানা জুড়েই। তার বড় রাস্তার পাশে বন্ধ কোয়ার্টারের সারি, তার ভাংগা দেওয়াল জুড়ে বর্ষার ড্যাম্প, নিঃঝুম পানে ... ...
আমার ছোটবেলার পাহাড় ঘেঁষা মফস্বলের বাড়িতে একটা প্রাচীন লোহার সিন্দুক ছিল। ডালার ওপর একটা ফ্ল্যাট পদ্মফুল। তার মাঝে সরু একটি নিখুঁত কাটা আয়তক্ষেত্র । চাবিটাও তিনসেরি। মাঝে মাঝে যখন খোলা হতো, মনে পড়তো আলিবাবার খুল যা সিম সিম। ছোঁবার যো ছিল না,ঐ ডালা হাতে পড়লে থ্যাঁতলানো টিকটিকি। শুধু একবার কয়েন, অলংকার,দলিল নামিয়ে পরিষ্কার করার সময় মায়ের লেখা একটা একটা লুকোনো চিঠি আবিষ্কার করেছিলাম। রুলটানা কাগজে গোটা গোটা অক্ষর, প্রাপক আমার বাবা,-----" আমার গায়ের রঙ কালো বলে অনেক লাঞ্ছনা সইতে হয়। আবার মেয়ে হলো, ত ... ...
বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে, আর সবাই তাদের নিজেদের ভবিষ্যদ্বাণী দেয়াও শুরু করেছে। খেলাধুলার ক্ষেত্রে কিছু কিছু ভবিষ্যৎবাণী করা অনেকটা সহজ যেমন ধরুন আজকের ব্রাজিল বনাম কোস্টারিকা ম্যাচ কে জিতবে, অথবা এখন যে ম্যাচটা চলছে সেটা কি ড্রাগ হবে নাকি হবে না। এর চাইতে একটু কঠিন ভবিষ্যৎবাণী হতে পারে পেনাল্টি হবে কিনা বা পেনাল্টি শটে আদৌ গোল হবে কিনা এসব। কিন্তু সবচেয়ে কঠিন যে ভবিষ্যৎবাণীটি সেটা হচ্ছে সমগ্র টুর্ণামেন্টের ওয়ার্ল্ড কাপটি কার হাতে যাবে। আর এই দুরূহ কাজটিই করে দেখিয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স। ... ...
একটা পরিবারে ধরা যাক বাবা, মা এবং বাচ্চা তিনজনেরই জ্বর হয়েছে। পরিবারটি মোটামুটি স্বচ্ছল, কাজের মাসি পিসি সবই আছে। আজকাল এমনিতেও আর আলাদা করে বাজার করার দরকার পড়ে না, মোবাইলে দু চারটে বোতাম টিপে দিলেই স্যাট করে বাড়ির দরজায় তরিতরকারি মায় মাছের ঝোল বা রেশমি কাবাব সবই পৌঁছে যায় ঘন্টা খানেকের মধ্যেই। অসুখ করলে ডাক্তার দেখানো হয়, ওষুধও পড়ে নিয়মিত। তা, এ হেন একটা পরিস্থিতিতে খুব স্বাভাবিকভাবেই কি দেখা যাবে? দেখা যাবে যে, তিনজনেই শুয়ে বসে কাতরাচ্ছে, জ্বরে যেমন হয় আর কি। আর তারপর বাবাটিকে অনতিবিলম্বেই দে ... ...
"ওয়েলকাম টু জুরাসিক পার্ক" অডিটোরিয়ামের বাঁ পাশে হরিণদের এনক্লোজারের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ময়ূরের খাঁচাটার সামনে। এ ময়ূরগুলো ঠিক পোষ মানা নয়। বিদ্যাপীঠের পোল্ট্রিতে মুরগীকে দিয়ে তা দিইয়ে অনেকক'টা ময়ূরের ডিম ফোটানো হয়েছে, সেগুলো আজন্ম মানুষের সাহচর্যে বেড়ে ওঠা। ছোটবেলায় ধাই-মা মুরগীর পিছনে পিছনে ঘুরত, বড় হতে হতে নিজের জাত চিনে আলাদা হয়েছে। ওদেরকে খাঁচার বাইরে মাঝেমধ্যেই ছাড়া হয়, ডেয়ারীর খড়গাদা পেরিয়ে ইলেভেন-টুয়েলভের হস্টেলের কাছ ... ...
ভারত মহাসাগরের তীরে এক বর্ণময় নারীর জীবনাবসানের সাক্ষী হতে হচ্ছে নেহাত ঘটনাচক্রে। হঠাতই এসে পড়েছি তামিলনাড়ুর পাশে, ইচ্ছে ছিল আজ শ্রীরঙ্গাপত্তনমে টিপুর কাছে যাবার, সব ভন্ডুল করে দিয়ে ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে এক বৃদ্ধা অভিনেত্রীর, আপাতসফল কিন্তু নিষ্ঠুর একনায়িকার অবশ্যম্ভাবী মৃত্যু। সে আগুনের আঁচের সেঁক নিচ্ছে চেন্নাইতে এপোলো হাসপাতালের সামনে মানুষের কাতার, সন্ত্রস্ত সেবাকর্মীরা,রেলস্টেশন,এয়ারপোর্ট জুড়ে আটকে পড়া অসহায় মুখের ভিড়, বন্ধ দোকান বাজার আর ক্রমশ জনবিরল হতে থাকা রাস্তাঘাট। বন্ধ করে দেওয়া হ ... ...
ললিত স্যার না থাকলে দেবু দত্তগুপ্তর লেখার সাথে হয়ত কোন দিনও পরিচয় হত না। তখন দশম শ্রেণী, স্যার একদিন আলোচনা প্রসঙ্গে একটি বইয়ের কথা বললেন, যা সারাংশ দিলেন তাতে করে খুবই আগ্রহ জন্মাল। এটাও বললেন যে বইটা আমাদের ওই বয়সী ছাত্রদের সবারই পড়া উচিত অন্তত একবার করে। ওই বই তখন আমাদের ওদিকের দোকানে বিক্রী হত না – তাই স্যারই আনিয়ে দিলেন কোথা থেকে যেন। হাতে এসে পড়ল লাল-কালো প্রচ্ছদের একশো তিরিশ পারাত বইটি – “যে পাহাড়্গুলি ডিঙোতে চাই”। আমাদের এলাকা তখন প্রবলভাবে বামপন্থী – স্কুলের স্যাররাও বেশীর ভাগ বাম মতাদর ... ...
‘চুল’কানিস্থানঃ রানাঘাট স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্ম।কালঃ রাজ্যে পঞ্চম তথা শেষ দফা ভোটের আগের দিনের সকাল।পাত্রঃ চিনতে হলে শেষ অবধি ধৈর্য ধরুন।পোলিং পার্টির বাসে রানাঘাট কোর্ট পাড়ায় নেমে ষ্টেশন অবধি আসতে আসতে পাক্কা ছ’ মিনিটের জন্য ফুলিয়ার ট্রেনটা যখন মিস করলাম তখন অশান্ত মনের হোমাগ্নিতে আরও খানিক হবি বিসর্জন হল। সকাল চারটেয় উঠে রেডি হয়ে বেরতে দাঁতে কুটোটি কাটার সুযোগ পাইনি। সামনের শেডে ভাজা কচুরি দেখে মনে অসম্ভব লোভ সৃষ্টি হ ... ...
আমি গণিতবিদ নই – কিন্তু গণিত ভালোবাসি। গণিতজ্ঞদের দিকে তাকাই সম্ভ্রমের চোখে – আর ঠিক এই কারণেই পাশের গ্রামে ফিরোজ, বন্ধু সুমন এরা ছিল আমার ঈর্ষা মিশ্রিত বিষ্ময়ের পাত্র। তাই এই লেখা শুরু করার আগেই সাফাইটা গেয়ে দিই – বলে রাখি যে এই প্রবন্ধ কোন নতুন তথ্য দেবার জন্য নয়, নয় কোন গালভরা গবেষণার গল্প বলার জন্য। এটা নিছকই সেই সব তথ্য, ঘটনা আর নাম সমৃদ্ধ, যা অনেক সময় আমরা খেয়াল করি না। অর্থাৎ ধরুন আপনি নিজের জামাটি রোজ পড়েন, কিন্তু সেই জামায় কয়টা বোতাম আছে তা কখনো খেয়াল করেছেন কি? এই লেখাও তেমন হবে আর কি! ... ...
এই লেখাটা ভাঙ্গর, পরিবেশ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে নানা স্ট্যাটাস, টুকরো লেখায়, অনলাইন আলোচনায় যে কথাগুলো বলেছি, বলে চলেছি সেইগুলো এক জায়গায় লেখার একটা অগোছালো প্রয়াস। এখানে দুটো আলাদা আলাদা বিষয় আছে। সেই বিষয় দুটোয় বিজ্ঞানের সাথে সাথে আমার রাজনৈতিক ভাবনা চিন্তাও জড়িত অবশ্যই, কারণ আর সব কিছুর মতই বিজ্ঞানও রাজনীতি মুক্ত বা রাজনীতি বহির্ভূত বিষয় নয়। আমি মনে করি কেন্দ্রীভূত বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা ক্ষতিকারক। এ কথা আমি ভাঙ্গর আন্দোলনে যখন পরিবেশ স ... ...
স্কটিশ ক্যাফে*******************************(১)মহাযুদ্ধের ক্ষত তখনও ইউরোপের শরীরে শুকোয়নি, তার মধ্যেই বেজে উঠল আরো একটা যুদ্ধের দামামা। শক্তি বাড়িয়ে হিটলার তখন ইউরোপের সম্রাট হবার উচ্চাকাঙ্খা পোষণ করছে। কয়েক বছরের মধ্যেই মারা যাবে নয়-দশ কোটি মানুষ। কিন্তু সেই মহামৃত্যুমিছিলের পাশাপাশি একটা আলোর রেখাও ছিল। দুই যুদ্ধের সমসাময়িক সময়্টা সমস্ত দিক থেকেই ইওরোপে আইকনিক। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে উর্বরতম সময়। গোটিঙ্গেনে তখন গাউসের সোনার তরী সোনার ফসলে ভরে ঊঠেছে। কেম্ব্রিজ-ইকোল পলিটেকনিক-কোপেনহেগেন- ... ...