মাথায় উলের টুপি গায়ে মোটা জ্যাকেট পরে দোকানী হয় উদাসমুখে বাইরে দাঁড়িয়ে রোদ্দুর মাখছেন নয়ত পাশের দোকানীর সাথে গল্প জুড়েছেন। ক্রেতার প্রতি আবাহনও নেই বিসর্জনও না। ক্রেতা নিতান্তই কিনতে আগ্রহী হলে স্মিতমুখে ভিতরে ঢুকে বিকিকিনিতে ব্যস্ত হন। দেখে ভারী আরাম লাগে, কারো বিশেষ তাড়া বা উত্তেজনা কিছু নেই। ... ...
১৯০১ সালের ২৪ শে অক্টোবর – নায়াগ্রা জলপ্রপাতে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকেরা এক জিনিস অবাক হয়ে দেখতে লাগলেন যে আগে কোনদিন দেখেন নি! মানে কেউ ভাবেনও নি! এক ভদ্রমহিলা নৌকার একপাশে রাখা এক কাঠের ব্যারেলের ভিতর ঢুকছেন – সেই ব্যারেলটা নাকি নৌকা করে মাঝে নদীতে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। স্রোতের টানে ব্যারেল জলে ভেসে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের পুরো উচ্চতা থেকে ধপাস করে পড়বে! কিন্তু যারা দেখছিলেন তাঁরা কেউই বুঝতে পারছিলেন না, আত্মহত্যার ইচ্ছে না থাকলে ঘটা করে এই ভাবে ব্যারেলের ভিতর ঢুকে নায়াগ্রায় ঝাঁপ মারার দরকারটা কি! ... ...
যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...
ক্রমে মাসুরি প্রেমে পড়ে যায় লাঙ্কাভির এক যোদ্ধার – এবং ভালোবেসে তাদের বিবাহও সম্পন্ন হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভালোবাসার সেই সংসার বেশী দিন করার আগেই যুদ্ধ লেগে যায় লাঙ্কাভির লোকেদের সাথে সিয়ামীজ-দের (থাইল্যান্ডের দক্ষিণ প্রদেশের লোক)। মাসুরির স্বামীকে যুদ্ধে যেতে হয় মাসুরিকে গ্রামে একা রেখে – অনেক দিন ধরে যুদ্ধ চলতে থাকে – আর সেই সমস্ত সময়টাতেই মাসুরিকে একা একাই কাটাতে হয়। এমন সময় একদিন গ্রামে এক কথক আসে – আমাদের দেশের মতই এই কথকরাও যাযাবরের মত এই গ্রাম সেই গ্রাম ঘুরে বেড়াতো। খুব ভালো কথা বলতে পারত বলে কথকের গল্প শুনে গ্রামের সবাই মন্ত্রমুদ্ধ হয়ে গেল। তাকে রিকোয়েষ্ট করা হল আর কিছু দিন এই গ্রামে থেকে যাও। কিন্তু সে থাকবে কোথায়? মাসুরি নিজেও তার গল্প শুনে মুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল আর তার বেশী জটিল কিছু না ভেবে বলল, তাহলে তুমি আমার বাড়িতে থেকে যাও। ... ...
জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রধান ফটকেই আমাকে আটকে দেওয়া হল। বললাম, লাইব্রেরীতে কেন যায়? বই দেখব, পড়ব, হাতাব! মছুয়া দারওয়ান বলল, উঁহু, এখানে ওই সব হয় না! ওই সব করতে হলে আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, কবে আমি আসব তা আগে থেকেই ঠিক করে আসতে হবে। আর যদি সদস্য হওন তাহলে বই বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন! তাহলে এখন? তিনি জানালেন, ‘ভিজিট’ দিয়ে আসতে পারবেন! ভিজিট দিয়েই না হয় আসলাম। নাম, ঠিকানা, ডাবল ডোজ টিকা চাইলেন, আমি টিপ্রল ডোজ টিকার কার্ড দেখিয়ে, নাম ধাম দিয়ে ঢুকলাম। ওই ঢুকা পর্যন্তই। ভিতরেও একই কাণ্ড। একজন মহিলা আমাকে নিয়ে রিডিং রুমে নিয়ে গেলেন। বললেন, ওই যে ওইটা রিডিং রুম। আমি কাছে যেতে চাইলে বললেন, উঁহু, কাছে যাওয়া যাবে না। বোঝ? আমি এদিকে একটু উঁকি দিতে চাই, নানা কোন দিকে তাকানো যাবে না! একটা ছবি তুলি? নেহি! অজ্ঞতা আর কী, চলে আসলাম। ... ...
যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...
হল্যান্ড ওরফে নেদারল্যান্ডস এমন একটা দেশ যেখানে আবহাওয়া কখন ভালো হবে বা কখন চনমনে রোদ উঠবে, সেকথা ভেবে বসে থাকলে কোথাও ঘোরাই যাবে না। মানে রোদ-ঝলমল সকাল দেখে বেরিয়েও দশ মিনিটের মধ্যে বৃষ্টি এসে আপনাকে ভিজিয়ে দিতে পারে। হাওয়া তো আছেই সে-কথা আর আলাদা করে বলার নয়, তাপমাত্রা সব সময়েই পাঁচ ডিগ্রী কমিয়ে ধরতে হবে। প্রথম শনিবারটা সকালে উঠে ভেবে রাখলাম শহরের বাইরে কোথাও হাওয়া কল বা ট্র্যাডিশনাল উইন্ডমিল দেখতে যাব। সেইমত, চটপট প্রাতঃরাশ সেরে বেরিয়ে পড়লাম। এয়ারপোর্ট থেকে স্প্রিন্টার ধরে যাব স্লটারডিক, তারপর সেখান থেকে আবার অন্য এক স্প্রিন্টারে যাব 'জানডাইক - জ্যানসে স্ক্যানস' - হ্যাঁ স্টেশনের নাম ঠিক সেটাই। পুরো যাত্রাটাই একটা রিটার্ন টিকিটে সারা হয়ে যায়। জ্যানসে স্ক্যানস আদতে একটি গ্রামের গন্ধ-মাখা মফঃস্বল (কান্ট্রি-সাইড বলা চলে)। ... ...
যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...
যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...
দার্জিলিং জেলার মিরিকের কাছে চা বাগান ঘেরা একটা ছোট্ট গ্রাম তাবাকোশি। যে চা বাগানের মাঝে আমাদের হোমস্টে তার নাম মাগারজাং টি গার্ডেন। প্রচুর কমলালেবু পাওয়া যায় বলে জায়গাটিকে অরেঞ্জ ভ্যালিও বলে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। অন্য সব পাহাড়ি গ্রামের মতোই এখানে সুস্থ, কর্মঠ মানুষের বাস। গোটা গ্রামে তাই একটিও ওষুধের দোকান নেই। নেই কোনো মিষ্টির দোকানও। ... ...
রাস্তার মাঝে জেব্রা ক্রসিং করা আছে। তো রাস্তার অর্ধেক তো খালি দেখে পেরোলাম। বাকী অর্ধেকে বাইক আসছে হু হু করে। একদম সামনের জন দাঁড়িয়ে গেলেন। আমি ইতস্তত করছি কারণ তাঁর পেছনে পাশে আরো বাইক আসছে দেখছি। উনি আমায় ইশারা করলেন এগোতে আর একইসাথে বাঁ হাত তুলে পাশের বাইককে থামতে ইশারা করলেন। এগোলাম এবং আশ্চর্য্য পরপর বাইকগুলো এসে থেমে যেতে লাগল আগেরজনের ইশারায়। অতঃপর এক মহিলা টলমলে পায়ে পিঠে এক বিশাল বোঁচকাটাইপ পিঠু নিয়ে আর ডানহাতে এক চাকাব্যাগ টেনে খানিক ক্যাবলার মত মাথা ঝুঁকিয়ে ঝুঁকিয়ে থ্যাঙ্কিউ থ্যাঙ্কিউ বলতে বলতে দিব্বি পেরিয়ে গেল আর একসারি দুরন্ত বাইক স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল যতক্ষণ না ওপারে একেবারে ফুটপাথ অবধি সে পৌঁছায়। ... ...
শীতল মরুভূমি স্পিতি উপত্যকায় সারে তিনদিন ... ...
#একাকী_ভ্রমি_বিস্ময়ে ... ...
আইজল যাবার জন্য সড়কপথ নয় আকাশপথই শ্রেষ্ঠ। সস্তা এবং সময় সাশ্রয়ী। হাফলং থেকে আইজল যাওয়ার প্ল্যান করাটা আমার একেবারেই ঠিক হয় নি। মিজোরাম বেড়াতে গেলে খ্রীস্টমাসের সময় না যাওয়াই ভাল কারণ এই চার পাঁচদিন প্রায় গোটা রাজ্যই ছুটি কাটায়। যদিও আইজল শহরের আলোকসজ্জা বা উৎসবের আবহ সত্যিই চমৎকার। মিজোরাম যথেষ্ট বড় রাজ্য। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গার দূরত্বও যথেষ্ট আর রাস্তার অবস্থাও সর্বত্র ভাল নয়। অনেক জায়গায় রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। ফলে হাতে অন্তত এক সপ্তাহ নিয়ে না এলে বিশেষ কিছু দেখা হবে না। প্রকৃতি ঢেলে সাজিয়েছে মিজোরামকে, তাকে দেখার জন্য সময় নিয়ে আসতে হবে। ... ...
যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...
যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...
মিনিট পঁয়তাল্লিশ বাদে তিনি উঠে দাঁড়ালেন, অর্জুন পাশের গাড়ি সরাতে বললেন আমরা রওনা দেব বাঘের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। রাস্তার (মানে জঙ্গলের ভেতরের কাঁচা পথ) দিকে খানিক এগিয়ে এসে এত গাড়ি দেখে বিরক্ত হয়ে তাড়ুবাবু আবার জঙ্গলের গহীন গহনে ঢুকে গেলেন। অর্জুন কিছু নির্দেশ দিয়ে গাড়ি নিয়ে গেলেন এক জলাশয়ের পাশে, তাড়ু জঙ্গলের ভেতর দিয়ে দিয়ে এখানেই নাকি আসবে। আর সত্যিই এলোও। ধীরেসুস্থে এসে জলে নামল তারপর মুখ তুলে তাকালো। উফফ স্বাভাবিক পরিবেশে একদম খোলা জায়গায় খোলা গাড়িতে বাঘের সাথে প্রথম চোখাচোখি ... সে রোমাঞ্চ মানুষের জীবনে একবারই আসে, পরের পরের বারেরা শুধুই প্রথমবারের সাথে তূলনীয় হয়ে চলে। ... ...
যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...