“ ঘোড়ার পেছনে কখনও নিজের টাকা নিয়ে ছুটো না । ব্যাঙ্কারদের সেটা কখনও করা উচিত নয় । কিন্তু মনে রেখো - ঘোড়া হলো ব্যাঙ্কারদের বিজনেস পার্টনার । লোকে আমাদের কাছ থেকে ধার নিয়ে ঘোড়ার পেছনে পয়সা লাগাবে। সে ঘোড়া জিতলে লাভের টাকা আবার আমাদেরই সেভিংস ব্যাঙ্কে জমা দেবে “ আমি বললাম, “ আর যদি হারে ?” মুখে সেই অনবদ্য হাসি “ তখন তারা আমাদের পায়ে পড়বে আরও টাকা ধার নেওয়ার জন্যে ! ঘোড়া জিতলে আমাদের ব্যাঙ্কে পয়সা জমা করবে , হারলে ধার নেবে! “ ... ...
কলেজ স্ট্রিট এলাকা নিয়ে গত সাড়ে চার দশকের অবলোকন ... ...
১৯৯৩ সালের কথা - জ্যোতিবাবু যাচ্ছেন কিউবা, প্রথমে যাবেন কিউবার রাজধানী হাভানা, সেখানে ফিদেল কাস্ত্রোর সাথে দেখা সাক্ষাত করে তারপর কিউবা একটু ঘুরে দেখবেন। সিপিআইএম পার্টি থেকে জ্যোতিবাবুর সঙ্গী হয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরী। যাওয়ার কয়েকদিন আগে জ্যোতিবাবু ফোন লাগালেন ইয়েচুরী-কে। - সীতা, তা তুমি কি নিয়ে যাবে ভাবছো কাস্ত্রো-র জন্য? এত দূর থেকে যাচ্ছি, খালি হাতে তো আর যাওয়া যায় না! - জ্যোতিদা আমি তো এখনো তেমন ডিটেলস কিছু ভাবিনি! তা আপনি কি নিয়ে যাচ্ছেন? জ্যোতিবাবু ফোনের এদিকে তাঁর সেই বিখ্যাত না ফুটে বেরুনো হাসিটা হেসে নিলেন – কারণ তিনি জানেন যে এই ব্যাপারে তিনি এগিয়ে আছেন ইয়েচুরীর থেকে। তাঁর ভাবার তত কিছু নেই – কারণ কুড়ি বছর আগে কাস্ত্রো কলকাতা এলে বোঝাই গিয়েছিল তিনি কি জিনিস ভালোবাসেন। তাই জ্যোতি বসু বললেন - - আমার দিক থেকে তেমন ভাবার কিছু নেই, ও সব ঠিক আছে। - একটু খুলেই বলুন না। - অত কথা এখন ফোনে বলার সময় নেই, এয়ারপোর্টে দেখা হলে বলব সেই গল্প না হয়। - ঠিক আছে, তাহলে আমি ভেবে দেখি কি নেওয়া যায় - বেশী দামী জিনিস নিও না যেন! একটা কথা মনে রেখো সীতা, আমরা কমিউনিষ্ট পার্টি – দামী জিনিস আমাদের ইমেজের সাথে যাবে না ... ...
কলেজ স্ট্রিট এলাকা নিয়ে সাড়ে চার দশকের অবলোকন ... ...
লাঞ্চ নাগাদ ২৯৫/৫, সেমুর নার্স আউট । সাত নম্বরে ব্যাট করতে এলেন গারফিল্ড সেন্ট অবারন সোবারস। জীবনে সেই একদিনই তাঁর ব্যাটিং চাক্ষুষ করেছি । একি লাবণ্য প্রাণে ! অফের বল টেনে স্বচ্ছন্দে লেগে ঘোরালেন ,একি লাবণ্য প্রাণে ! অফের বল টেনে স্বচ্ছন্দে লেগে ঘোরালেন , ব্যাটিং নয় এ যেন একটা উচ্চকিত হাসি, দূরে গঙ্গায় জাহাজের ভেঁপু বাজলো তিনি খেলে গেলেন এই ছায়া আলোকের আকুল কল্পনে , এই শীত মধ্যাহ্নের মর্মরিত ইডেনে ! এগারোটি বাউনডারি সহ সোয়া ঘণ্টায় ৭০ রান ! পরের দিন নতুন কায়ায় আবির্ভূত - কখনো স্পিন কখনো মিডিয়াম পেস । একটা শিখতে জীবন কেটে যায় আর ইনি পারেন না এমন কিছু নেই! একই অঙ্গে এতো রূপ ?‘ ... ...
ছোট করে চুল কাটলে আমাকে একদমই বাঙালী বলে চেনা যায় না সেটা আবার আজ টের পেলাম। আর এমনিতে আমাকে দেখে ঠিক কি মনে হয় সেটারও রিমাইন্ডার এসে গেল আজ আমাদের হাউসিং কমপ্লেক্সে ওনম উপলক্ষ্যে মেলা টাইপের বসেছে - নানা ধরণের নারকেল তেল বিক্রী হচ্ছে খুব। কি খাওয়া সেফ হবে সেই ভাবতে ভাবতে দেখতে পেলাম এক দোকানে লস্যি পাওয়া যাচ্ছে। একবোতল ম্যাঙ্গো আর একবোতল স্ট্রবেরী কিনে বগলদাবা করে ফিরছিলাম, সেই দোকানী ভালোবেসে কাগজের ঠোঙায় প্যাক করে দিল সেই প্যাকিং নিয়ে আমি লিফটে ঢুকে দেখি এক দম্পতি। লোকটি আমাকে আপাদমস্তক দেখে হিন্দীতে বলল - - অ্যাই সুইগি ভাই, তুমি এই লিফটে কেন? ভেন্ডরদের জন্য যে লিফট আছে সেটায় যাও নি কেন? - আমি তো সুইগি নয়! - তাহলে জ্যমেটো হবে! তোমাদের তো কোম্পানী লেখা টিশার্ট থাকে। সেটা পর নি কেন? ... ...
গড়িয়ার মেসি মেস ... ...
এমন সময় চেরকাশভ সুইমিং পুল থেকে উঠে বাথরোব লাগিয়ে নিজের রুমের দিকে যাচ্ছিলেন। সামনের ফিতেটা ভালো করে বাঁধা নেই। তাঁর চোখে পড়ে গেল সলিলের দিকে – দেখেই তিনি ছুটে এলেন “আর রোকতো নই নই! আর ধ্বোংসো নই নই” গাইতে গাইতে। চেরকাশভ ছুটে আসছেন, খোলা গাউন উড়ছে দুইদিকে, সামনে ফাঁকা – অনেকে চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, ঋত্বিক বলছেন ‘কি দেখিলাম গ্র্যান্ডে এসে’। প্রায় সাত ফুট সেই মানুষটা কাছে এসে ‘সালিল, সালিল’ বলে প্রায় কোলে তুলে নিজের রুমের দিকে নিয়ে গেলেন। বেশ খানিক গল্পের পর চেরকাশভ আর পুদভোকিন বের করলেন ওঁদের সাথে করে আনা টিনের ক্যানের রাশিয়ান পিবা বা বিয়ার। আপনারা বললে বিশ্বাস করবেন না, সেই প্রথম সলিল এবং ঋত্বিক দুজনারই বিয়ার তথা মদ্যপান। আর সেদিন এক ক্যান বিয়ার খেয়েই ঋত্বিক পুরো আউট। চেরকাশভ আর পুদভোকিন খানিক পরে এক সভায় যোগদান করার জন্য বেরিয়ে গেলেন, কিন্তু এদিকে ঋত্বিকের নড়ার ক্ষমতা নেই! গ্র্যান্ড হোটেলের এক রুমের বারান্দায় সোফায় বসে প্রথম বারের মত মাতাল হওয়া ঋত্বিক নীচের কলকাতা দেখতে লাগলেন। কিন্তু কতক্ষণ আর বসে থাকবেন বারান্দায় চুপচাপ – তাই খানিক পরেই বিরক্ত হয়ে সলিল-কে বললেন, “এখানে বসে থাকার চেয়ে বরং চল গঙ্গার হাওয়া খেয়ে আসি”। এই বলে দুজনা হোটেল থেকে বেরিয়ে ইডেন গার্ডেন এর পাশ দিয়ে গঙ্গার ধারে এসে বসলেন। ঋত্বিক বলতে লাগলেন, “এ জিনিস কেন মানুষ খায়! আমি এই প্রতিজ্ঞা করছি, জীবনে আর এই জিনিস ছোঁব না!” ... ...
"সে ছিল এক একদম অন্যরকম হিন্দোস্তান। যেখানে বাস করতেন বলিষ্ঠ পাঠান, নির্ভীক রাজপুত, জ্ঞানী ব্রাহ্মণরা…সম্মানের সঙ্গে সেখানে একসঙ্গে বাঁচতেন হিন্দু আর মুসলিম জনগণ.."। আনিস কিদওয়াই লিখেছিলেন তাঁর 'আজাদী কি ছাঁও মে' নামক বইয়ের মুখবন্ধে। কে ছিলেন এই আনিস কিদওয়াই? কি এমন কাজই বা করেছিলেন তিনি এই দেশের জন্য? নিশ্চিত আমাদের অনেকের কাছেই আনিস এক অশ্রুতপূর্ব নাম। এই লেখায় আমরা বরং সংক্ষেপে ফিরে দেখি এই ব্যতিক্রমী অথচ বিস্মৃত সমাজকর্মীর জীবন ও মহতী সক্রিয়তাগুলিকে…। ... ...
হ্যারি বেলাফন্টেদের কাছে সময় হার মানে...সবসময়!! ..আর জিতে যায় ক্লান্ত ক্লান্তিহীন মানুষের নিয়ত ভেসে চলার গান!! ... ...
বাটপাড়ের মন বলতে যা বোঝায় ... ...
সাপ পুষলে ছোবল খেতে হয় ... ...
কলেজ স্ট্রিট নিয়ে সাড়ে চার দশকের অভিজ্ঞতা ... ...
অনতিদূরে দেখতে পেলাম, মিন্টু ভাইয়ের বাইক। গ্রামের একটি স্কুলের একুশ না, বরং ঐ বাইকটি আমায় আগ্রহী করে তুলল। তো সেই ভাঙ্গাচোরা স্কুলে গিয়ে যা ভেবেছিলাম, তা-ই দেখতে পেলাম- কোন শহীদ মিনার নাই। সাজসজ্জা নাই। মঞ্চ নাই। মনে মনে একটু হাসলামও। শহরের সেই বক্র হাসি, যা একান্ত স্বভাবজাত ও চিরাচরিত। ... ...
এই বসুন্ধরা সিটির সামনেই আমার তিনজন বন্ধু এক সাথে ধরা খাইল। ভোর বেলা বাস থেকে নেমে মেসে ফিরছে। তিনারা হাজির। ওরা আলগোছে সব দিয়ে দিছে। একজনের ছিল সিটিসেল মোবাইল। সিটিসেল মোবাইল তখন অনেকেই ব্যবহার করত। সিটিসেল ছিল সিডিএম সেট, মানে হচ্ছে এই সেটের সিম থাকে না। কেউ সেট অফিসে ফোন করে বন্ধ করে দিলে, ওইটা আর চালানোর উপায় থাকে না। তাই ছিনতাইকারীরা ওই সেট খুব অপছন্দ করত। আমার যে বন্ধুর হাতে সিটিসেল মোবাইল ছিল তাকে এমন অপমান করছিল সেদিন যে ও পারলে ওইদের জন্য ওইদিনই সেট কিনে! সবার সেট নিলেও ওর সেট যে নাই নাই, এইটা বুঝাতে সময় লাগছে বেশ অনেকক্ষণ! ... ...
কলেজ স্ট্রিট এলাকার সাড়ে চার দশকের নানা আখ্যান ও স্মৃতি বিষয়ক রচনা ... ...