এই লেখার শুরুর আগে শুরুর গল্প বলে কিছু নেই। কিংবা আছে, কে জানে! পাই বলল একটা নিয়মিত কলাম লিখতে। ব্যাপারটা একটু ভীতপ্রদ, কারণ নিয়মমাফিক লেখা চাপ। আর তাছাড়া আজকাল গুরুতে অন্য বাকি সব লেখা বা কলামের সমাজচেতনা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অ্যানালিসিসের তীব্রতা – এর সবকটাই আমার নাগালের বাইরে। কিন্তু পাই-য়ের রিকোয়েষ্ট ফেলা চাপের – তো যেটা ঠিক হল, আমার যা খুশী লেখার লাইসেন্স থাকবে। এটুকু বলার, যাদের ব্রেন সারাদিন জটিলতার চাপ না নিয়ে রাতের বেলা রেষ্ট নিতে পারে না – যাদের ব্রেন তত্ত্ব এবং তথ্যের ভারে নিমজ্জিত না হলে হা-হুতাশের ফীডব্যাক লুপে ঢুকে করে – তাঁরা স্বচ্ছন্দে এই লেখা এড়িয়ে যেতে পারেন। এই কলামের অনেক লেখা হয়ত মায়ের কাছে মাসির গল্পের মত হয়ে যাবে – তাঁরা আমাকে নাদান এবং চাষার ছেলে বলে অ্যাডজাষ্ট করে নেবেন। তো কি দিয়ে শুরু করা যায়? ঠাকুমা বলত শুভ দিনে নাকি মাছ পয়া জিনিস – ছোটবেলায় পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট হলে তার পিছনে পুকুরের কাতলা মাছের অবদান যে অর্ধেকের বেশী সেই বিষয়ে ঠাকুমা আমার পুরো কনভিন্সড ছিল। তাই মাছের গল্প দিয়েই শুরু হোক। লেখা ভালো লাগলে, বেল আইকনে চাপ দেবেন। ও, এখানে তো আবার বেল আইকন নেই! বাট ইউ নো, হোয়াট আই মিন। কিছু একটাতে চাপ দেবেন। ... ...
মনে করুন, আপনি জানতে চাইলেন, যুক্তিবাদ জিনিসটা ঠিক কী এবং কখন কোথা থেকে কীভাবে তা এল, এইসব ব্যাপারস্যাপার নিয়ে পড়াশোনা কীভাবে শুরু করা যায় । এ সব নিয়ে ভাল ভাল প্রবন্ধ আর বই তো বিস্তর আছে, অন্তত ইংরিজি ভাষায়, এবং বাংলাতেও হয়ত বা ছিটেফোঁটা কিছু, তার মধ্যে কোথা থেকে শুরু করবেন, আর কোনদিকে কতদূরই বা হাঁটবেন? মনে করুন, আপনি গ্রন্থের অরণ্যে হারাতে চাইছেন না, ভয়ঙ্কর পণ্ডিতিও চাইছেন না, আবার একেবারে হালকাপলকা খেলো কথাবার্তাও চাইছেন না । যেন বেশ সিরিয়াস, গুরুত্বপূর্ণ ধরনের কিছু কথাবার্তা পড়ে ফেলা যায়, অথচ পড়বার শ্রমটি যাতে পাহাড়ের মত সামনে দাঁড়িয়ে নতুন বোধপ্রাপ্তির আনন্দটুকুকে আড়াল না করতে পারে, এইটুকু চাইছেন । ... ...
জন্মের দুশো বছর পরেও, বিদ্যাসাগরকে ঘিরে ‘ভদ্রলোক’ শ্রেণির চিরাচরিত চর্বিতচর্বণ চলতে থাকুক। লুঠেরা উপনিবেশের প্রতি অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন, অব্যাহত থাকুক তাঁদের। শুধু অগণন অন্ত্যজ হিন্দু ও দরিদ্র মুসলমান এবং আর্ত ও অসহায় নারী, সেই দাসত্বের দোসর হবেন না। সুকৌশলে তাঁদের চিরদিন অপাঙ্ক্তেয়, প্রান্তিক, বঞ্চিত করে রাখার দিন শেষ। তাই, তাঁরা তাঁদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করবেন বিদ্যাসাগরকে। তাতে যদি তিলে তিলে গড়ে তোলা সযত্ন ‘নির্মাণ’ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে, তবুও তাঁদের প্রতিস্পর্ধী দৃপ্ত উচ্চারণ থমকে যাবে না এক মুহূর্তের জন্যও। কারণ তাঁদের কথা কেউ বলেনি এতদিন, পরেও বলবে না। তাঁরা যে ‘ছোটলোক’! ... ...
অতিমারী সম্পর্কে যেমন আমরা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি, তেমনি বোধ হয় এই সংক্রান্ত আলাপ আলোচনাতেও উৎসাহ কমতে শুরু করেছে, যদিও চিন্তাভাবনার কারণ ও প্রয়োজন মোটেই কমে নি। এইসব তাৎক্ষণিক লেখালেখি আর তর্ক-বিতর্কের একটা প্রধান অংশ হল স্বাস্থ্যপরিষেবা ও চিকিৎসাবিজ্ঞান। অন্যদিকে রয়েছে অর্থনীতি, যার প্রভাব প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ, বর্তমানে এবং দীর্ঘস্থায়ী আগামীতে। এই অতিমারীর দিনগুলোতে ফুটে উঠেছে আরো অজস্র সামাজিক দিক- মানুষের গ্রহণ, বর্জন, পাশে থাকা আর না থাকার গল্প। আমরা যদি আমাদের এতোদিনের কৃতকর্ম আর ভবিষ্যতের আতঙ্কের কথা একটু গভীরভাবে ভাবি, তাহলে কোভিড সমস্যার আরেকটি দিকও স্পষ্ট দেখতে পাবো। ... ...
কথামুখ — প্রথমেই স্বীকার করে নেওয়া ভালো, আমার ইতিহাসের প্রথাগত পাঠ মাধ্যমিক অবধি। তবুও অ্যাকাডেমিক পরিসরের বাইরে নিছকই কৌতূহল থেকে গান্ধী বিষয়ক লেখাপত্তর পড়তে গিয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই অবিসংবাদী নেতাটি সম্পর্কে যে ধারণা লাভ করেছি আমি, তা আর পাঁচজনের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাওয়ার ইচ্ছে থেকেই এই দুরূহ কাজে হাত দেওয়া। মূল লেখা শুরু করার আগে কিছু প্রাথমিক কথা বলে নিতে চাই। প্রথমত, পড়ার ছন্দ ও গতি অব্যাহত রাখতে লেখার ফাঁকে ফাঁকে কেবলমাত্র গান্ধীর নিজের লেখাপত্র ছাড়া অন্য রেফারেন্স ... ...
সত্যপীরের দরগা থেকে ফিরছে বুড়ো আনসার বাওয়াল। ছেলে মন্তেজ এর গায়ে ভর দিয়ে হাঁটছে। ক্লান্ত শরীর। হাতে ধরা লাঠিতে ভর দেয়ার মতো গায়ের জোর নেই। মন্তেজ শেখের হাতের মুঠোয় দরগার বাতাসা। ওর নাতি দুবছরের রাজু বাতাসা খেতে পছন্দ করে। ঘামে ভিজে কাগজে মোড়ানো বাতাসা নরম হয়ে গেছে। দরগায় মানত ছিল আনসার বাওয়ালের। ঘোর বিপাকে পড়ে দরগায় গিয়েছে সে। নইলে বাহাত্তর বছরের শরীর বয়ে অতদূর যাবার কথা নয়। দরগাতে প্রতিদিন আগরবাতি জ্বলে। মুসলমান-হিন্দু নির্বিশেষে ভক্তরা রোগ মুক্তি আর সংসারের মঙ্গল কামনায় শিরনি দেয়। ফুল, ফল আর লুঠ দেয়। ‘হিন্দুর দেবতা আমি মোমিনের পীর, যে যাহা কামনা করে তাহারা হাসিল’- এই পাঁচালীর ভক্তিরসে বাওয়ালী, মৌয়াল, জেলেদের মনে আশা জাগে। সত্যপীরের দয়ায় যদি কোনো উপায় হয়! ... ...
দেখছিলাম সেই পাতাদের ওড়উড়ি, বুনোফুলে প্রজাপতিদের খেলা, জলে বাতাসের তোলা হালকা হালকা ঢেউ – যাতে মনে হয় মেঘের ছায়াতে সুড়সুড়ি লাগে। তখনই খুব আস্তে গাড়িটা বলল – এখন অনেকটা সুস্থ লাগছে। ... ...
চোখ খুলে চিত্তর ঘামে ভেজা জবজবে মুখটা দেখেই অনন্তরূপা আবার চোখ বন্ধ করে নিল।চিত্ত তখন তার সমস্ত সত্তা দিয়ে অনন্তরূপার গভীরতা ছুঁতে চাইছে। কিন্তু কিছুতেই যেন সে পারছেনা! বারবার চেষ্টা করেও সেই কাঙ্ক্ষিত তৃপ্তি সে পায় না; আদর দিয়ে শরীর জাগিয়ে তোলা তো দূরের কথা, অনন্তরূপাকে একটি মাংসল জড় পদার্থ ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না চিত্তর। ... ...
এতো ছোট লেখার আবার সারমর্ম ... ...
বেশ্যাদ্বার (দ্বিতীয় পর্ব)প্রসেনজিৎ বসু"কেন !? কেন এখন সমুদ্রলঙ্ঘন আর সম্ভব নয় ঋক্ষরাজ ?" রাম ও হনুমানের যৌথ প্রশ্নে জাম্বুবান বলতে শুরু করেন -- "প্রভু রঘুবীর ! অবধান করুন। দেবীপূজার লগ্ন ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আপনার বিজয়কামনায় দেবগণও নিজ-নিজ লোকে দুর্গারাধনারত, যাতে সকলের মিলিত প্রার্থনায় মহেশ্বরী আশু প্রসন্না হন। বরুণদেবও যথারীতি সমুদ্রগর্ভে দেবীপূজা করছেন। এমতাবস্থায় হনুমান যদি সমুদ্র ডিঙোতে যায়, তাহলে তা দেবীমণ্ডপ-লঙ্ঘনের মহাপাপে পরিণত হবে। চণ্ডিকা অবধারিতভাবেই কুপিতা হয়ে হ ... ...
সম্প্রতি এই বছরের পদার্থ বিদ্যায় নোবেল পুরষ্কার ঘোষণা হয়েছে। কৃষ্ণ গহ্বর নিয়ে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্বশ্রুত গণিতজ্ঞ রজার পেনরজ, অ্যান্ড্রিয়া গেজ এবং রেইনহার্ড গঞ্জাল এই বছরের নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন।....... নোবেল প্রাইজ তিনি পাননি, কিন্তু এই বছরের পদার্থ বিদ্যার নোবেলের সাথে জড়িয়ে গেছে আদ্যপান্ত এক বাঙালি অধ্যাপকের নাম। অমল কুমার রায় চৌধুরি বা ছাত্রদের AKR । কিন্তু কেনও? কি করেছিলেন তিনি? ... ...
এমনিতেই আমার স্বপ্ন সবসময়ই অদ্ভুত সিনেম্যাটিক হয়। তার ওপর বহুদিন পর অন্ধকার থাকতে থাকতে চোখ বুজতে পেরেছি। ব্যাস আর যায় কোথায়!! এই ঘন্টা তিনেক ধ'রে আমি ইস্কুলে ইস্কুলে গিয়ে সাইকেল চুরি করে বেড়াচ্ছিলাম। তাও গাড়ি নিয়ে। গাড়ির ডিকিতে প্রচুর খাবারের প্যাকেট ছিল। সেটাতে পরে আসছি। আমার তিনজন পার্টনার ছিলো সাথে। একজন কে সেটা মনে পড়ছেনা। এছাড়া ছিলো কাজু আর সুফি। সুফি একটু বড়। তিনি ড্রাইভারের পাশের সিটে বসে পা দোলাচ্ছিলেন। ... ...
সময় কে আমারা কি চিনি? নাকি আমরাই সময়ের অংশ? সময় কি আমাদের বোধে লুকিয়ে নাকি সে বাস্তব? সে কি অশেষ নাকি তার ও প্রান্ত রেখা আছে? কালকের আমি কোথায় ? আগামি কালকে জানতে আমায় কে বাধা দিচ্ছে? এমনই হাজার প্রশ্ন ঘিরে ধরে যখন আমরা সময় কে নিয়ে ভাবতে বসি। সময়ের দর্শন, বিজ্ঞান, মনবিজ্ঞান, সবকিছুই এইসব প্রশ্নে ঘেরা। বিভিন্ন পর্বে এই সব জায়গাতেই আমরা ঘুরে বেড়াব। ... ...
১৪শ শতক হচ্ছে ইউরোপের মধ্যযুগের শেষ শতক। দুর্ভিক্ষ, প্লেগ মহামারির মত নানান বিপর্যয়ে এই শতাব্দি পরিপূর্ণ। এই শতাব্দীতে জনসংখ্যার হ্রাসের ফলে ইউরোপের কৃষি, বাণিজ্য, শিল্পোৎপাদন সব কিছুতেই বিপর্যয় নেমে আসে। কিন্তু এই বিপর্যয়ের মাঝেই হয়তো আধুনিক যুগের উত্থানের বীজ নিহিত ছিল। এই বিপর্যয়ের প্রভাবের পতন ঘটে তদকালীন সামন্ততন্ত্রের। প্রচুর কৃষক-শ্রমিকের মৃত্যু ঘটলেও যারা বেঁচে যায় তারা হয়ে ওঠে আগের থেকেও বেশি স্বাধীন, জীবনযাত্রার মান হয় আগের থেকেও উন্নত। এই শতাব্দীর বিপর্যয় আবার প্রভাবিত করেছিল পরের শতকের সমুদ্রযাত্রা, ভারত আবিষ্কার ও এর সাথে বাণিজ্যকে। সব মিলে পৃথিবীর ইতিহাসে এই শতাব্দীর গুরুত্ব অনেক। তাই ইউরোপের ১৪শ শতক সম্পর্কে জানতে চাইলে এই নিবন্ধটি পড়ুন (আগাম সতর্কতা - এই লেখায় সাহিত্যরসের ঘাটতি আছে)। ... ...
লৌহ স্তম্ভ কেন ক্ষইছে না তা খুঁজতে গেলে কি কি জিনিস টার্গেট করবে গবেষকরা? প্রথম ধারণা করা হবে যে আবহাওয়ার একটা ব্যাপারটা আছে। মানে যেখানে এই স্তম্ভ খাড়া ছিল আগে এবং এখন দিল্লিতে, সেখানে বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা কি স্তম্ভের জন্য ভালো ছিল? অর্থাৎ বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশী নেই – শুকনো বাতাস! যেই কারণে দীঘার হোটেলের বারান্দার গ্রীল কলকাতার হোটেলের গ্রীলের থেকে অনেক বেশী তাড়াতাড়ি ক্ষয়। দ্বিতীয়ত, সেই প্রায় ষোলশো বছর আগে যারা বানিয়েছিল ওই স্তম্ভ তারা কি ধাতুর সাথে অন্য কিছু স্পেশাল মিশিয়েছিল? তৃতীয়ত, ধাতুর সাথে বানাবার সময় কিছু না মেশালেও পরে কি স্তম্ভকে সুরক্ষা দেবার জন্য তাতে কিছু্র প্রলেপ বুলিয়েছিল? ইত্যাদি ইত্যাদি। ... ...
ঘনঘন টিভির পর্দায় ভেসে উঠছে, "লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা"।বিশ্বের ধনী, শক্তিশালী দেশ গুলি কুপোকাত, বিশ্বের অর্থনীতি দিশাহীন, কি হবে আগামী দিনগুলোতে এই চিন্তায় মানুষের ঘুম ছুটে গেছে... ঠিক এমনই সময় আপনার মুঠো ফোনে ভেসে উঠলো করোনা কে নিয়ে একটা কৌতুক ম্যাসেজ!!! মৃত্যুর আবহে কৌতুক?? এও কি সম্ভব? ... ...
"ব্যবসা চলে না একেই, নিজের সংসার চালাতে...ছিঁড়তে হয়, আবার টাকা ধার দেবে। তোমরা মেয়ে মানুষ, আর কিছু না হোক শরীর বেচে খেতে পারো। আমরা পুরুষরা কি বেচে খাব?" ... ...
টিভি চালাই। খবর দেখি। একদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রী বিচিত্র সব শিরোভূষন শিরোধার্য করে এদিক ওদিক ঘুরে লাফিয়ে লাফিয়ে চিত্কার করে অন্যের অকর্মণ্যতা প্রচার করছেন। কখন কোন জাদুবলে ভারতের গৌরব সেনাবাহিনীকে নিজের দলের প্রচারের হাতিয়ার করে উঁচিয়ে ধরছেন। এক এক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আঙুল উঁচিয়ে সমান চিত্কারে পাল্লা দিচ্ছেন। কে কত গর্জনশীল তার ওপর ভোট নির্ভর করছে। বিরোধী মানেই দেশদ্রোহী এটা আগে বিশেষ কেউ শেখায়নি। এবারে শিখলাম। আগে গ্রামগঞ্জের মহিলারা প্রার্থী মহিলাদের দেখতেন মোটামুটি নিজেদের একজন হিসেবে। ... ...
সুফি আজকাল লোকনাথ বাবার স্টাইলেই বেশিরভাগ সময় বসে থাকেন। বসেন লোকনাথ বাবার মতো কিন্তু শয়তানি বুদ্ধি লুসিফারের মতো। আমি প্রায়ই ওর অত্যাচার আর সহ্য করতে না পেরে বলি, বেরিয়ে যা ... ...