পাঞ্জাবের শহীদ নকশাল কবি অবতার সিংহ সন্ধু 'পাশ' - এর দু-টুকরো অসামান্য কবিতার বঙ্গানুবাদ। ... ...
পিএফআই যে ঠিক কী 'দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র' করেছে, খবরের কাগজ তন্ন তন্ন করেও খুঁজে পেলামনা। অবশ্য এখন গণতন্ত্রের কারবারই আলাদা। সেই উপকথার গপ্পে ছিল, 'তুই না, তোর বাপ জল ঘুলিয়েছিল', সেখান থেকে একটা জিনিস বোঝা যায়, যে, খুব বদ হলেও, রাজা-বাদশারা ইচ্ছে হলেই কারো মুন্ডু কেটে ফেলতে পারতেননা। অন্তত একটা ফালতু অভিযোগ খাড়া করতে হত। এখন দারুণ গণতন্ত্রে সেই চক্ষুলজ্জাও উঠে গেছে। এমন সব দুর্দান্ত আইন বেরিয়েছে, যাতে, সব গোপন। তদন্ত তো গোপন বটেই, বিচারও চুপি-চুপি, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযোগও গোপন। আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ব্যাপারটা তো ক্রমে উঠেই যেতে চলেছে। খুব ইচ্ছে হলে করতেই পারেন, কেউ আটকাবেনা, কিন্তু আপনি কেন নির্দোষ সেটা বলবেন কীকরে, অভিযোগটাই তো জানা নেই। হয়তো বললেন, আমি তো চুরি করিনি, খুনও করিনি, কিন্তু তদন্তকারীদের খাতায় লেখা আছে, সুপ্রিম কোর্টের দিকে ট্যারা চোখে তাকিয়েছিলেন, ওইটাই অপরাধ। কিন্তু সেটা আপনাকে বলা যাবেনা। সে আপনি জানবেনই কীকরে, আর পাল্টা বলবেনই বা কীকরে। ... ...
কী করব বলুন, আদতে বীরভূম জেলার লোক তো, ঢেঁকিতে চড়ে সেখানকার আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ে নারদ মুনির কী অবস্থা হয়েছিল জানেনই তো। অ, জানেন না, তাইলে শুনুন। বেলা তখন দশটা হবে। প্রভু নারায়নের নাম জপতে জপতে বীরভূমের ওপর দিয়ে যাচ্ছেন নারদ। হঠাৎ সোঁ সোঁ করে একটা অদ্ভুত শব্দ। কী ব্যাপার? মেঘ করল নাকি? ঝড় এল? না তো, আকাশ দিব্যি পরিস্কার। ওদিকে সোঁ সোঁ আওয়াজটা হয়েই চলেছে। ভয় পেয়ে স্পিড বাড়িয়ে দ্রুত চলে গেলেন নারদ। নারায়নের কাছে গিয়ে সব খুলে বলে জিজ্ঞেস করলেন, “ওটা কিসের শব্দ ছিল?” ... ...
(আমার এ রচনা বিভিন্ন সিঁড়ি নিয়েই। হঠাৎ করেই একদিন অন্যমনায় ছিলাম। সে সময়ে মাথার মধ্যে ছোটবেলার আমাদের বাড়ির এক প্রাচীন আমলের সিঁড়ির নানান ঘটনা ভেসে উঠল অতর্কিতেই।) ... ...
তর্পণমন্ত্রগুলি কেবলই কি পিতৃপুরুষকে জল দেওয়ার কথা বলে? নাকি তার গভীরে নিহিত আছে বৃহত্তর মহত্তর কোন অর্থ ও উদ্দেশ্য? শুধু মানুষ নয়, এই বিশ্বপ্রকৃতির প্রতিটি প্রাণ-অপ্রাণকে ভালোবেসে, তার তৃপ্তি ও শান্তি কামনা করে আত্মা থেকে পরমাত্মায় উত্তরণের সমার্থক হলো শাশ্বত ভারতীয় সংস্কৃতি। তর্পণ মন্ত্র তাই নিজ পরিবার থেকে সেই বিপুল আপনের ডাক, ঠিক যেমন দূর ইরানের প্রতিবাদী মেয়েদের ছবি এই আশ্বিনে একাকার হয়ে যাচ্ছে এই মাটির রণরঙ্গিনী দুর্গা রূপের সঙ্গে.... ... ...
সোফায় পা গুটিয়ে বসে গুছিয়ে ভাট শুনবেন যাঁদের এমন বাঙালী আইকনিক আঁতেল এখন বিলুপ্তপ্রায়। কিন্তু আঁতেল আইকন সামনে না থাকলে কি নিয়ে দিন কাটবে সেই চিন্তা থেকে ঋতুদা চলে যাবার পর চন্দ্রিলের আশ্রয়ে ছিলাম। তবে সেবারে ‘ক্যালকাটা লিটারেরী ফেষ্টিভ্যাল’ না কিসে যেন একটা চন্দ্রিলের বক্তৃতায় গোদার, বার্তোলুচি, বেলা লুচি, ফালুদা, ভারমিচিলি কি সব ঢুকে যাবার পর বুঝতে পারলাম চন্দ্রিল-দা আমার নাগাল ছাড়িয়ে এগিয়ে গেল – মধ্যবিত্ত আঁতেল থেকে উচ্চবিত্ত আঁতেল পর্যায়ে উন্নিত হয়েছেন দাদা। ফলে আমি আবার মধ্যবিত্ত আইকন খুঁজতে বসলাম – মার্কেটের অবস্থা খুব খারাপ। শেষে স্মরণাপন্ন হতে হলে শান্তনু মৈত্র মানে আমাদের সবার প্রিয় জি বাংলা সা রে গা মা পা-র শান্তনু-দা। তো শান্তনু-দাকে ফলো করেই আমার সেই কনফারেন্স কাঁপানো - ... ...
দেবীপক্ষে দেবীর কেবল পুজো হয়। দেবীরা বেয়াড়াপনা কেউ সয় না। দেবীর ইচ্ছে অনিচ্ছের তোয়াক্কা করে না। প্রয়োজন হলে বোধনের আগেই বিসর্জন দিয়ে দিতে কসুর করে না। ... ...
প্রায় সকল অনার্য দেবতারাই এখন হিন্দু দেবতা। কিন্তু তাও দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক, দেবতাদের থেকে এখন সাধারণ মানুষের দূরত্ব বেড়ে উঠেছে বহুগুণ। আগে অনার্য মানুষরা দেবতাদের কাছে সরাসরি প্রার্থনা করতে পারতেন। কিন্তু এখন সে প্রার্থনার অনেক রীতি, অনেক পদ্ধতি, অনেক মন্ত্র, সে মন্ত্র আবার কোন আঞ্চলিক ভাষায় নয় – সে ভাষা দেবভাষা সংস্কৃত। আর এই সকল পূজার বিচিত্র বিধি-বিধান, বিভিন্ন দেব-দেবীর বিবিধ মন্ত্র যিনি জানেন, তিনিই পুরোহিত এবং তিনি অবশ্যই ব্রাহ্মণ। ... ...
ধরুন আপনি আঁকতে শিখছেন। আবার ধরুন আপনি বেড়েপাকা। তাই ধরে ধরে আইডিয়াল ঘোড়া না এঁকে একেবারে চক্ষু মুদে আঁকতে গিয়ে খচ্চর এঁকে বসেছেন। আবার ধরুন আপনি গান গাইতে চান। কিন্তু সারেগামা না সেধে একেবারে খাম্বাজ রাগিণী ধরতে গিয়ে এবারে স্টেজের উপর টম্যাটোর দোকান বসিয়ে দিলেন। কিংবা ভাবুন আপনি কর্পোরেট থ্রিলার লিখতে চান। অনেক আগে জয়েস পরেছিলেন। ইদানিং ম্যান্টল। তারপরেই কেমন গা ঘুলিয়ে উঠে ভক করে নামিয়ে ফেললেন সাহিত্যিক উদবমন। একবারে নয়। কিস্তিতে কিস্তিতে। ... ...
হাঁদাভোঁদা আর নন্টেফন্টে-কেল্টুদার কীর্তিকাহিনীতে যে সব অতুলনীয় ধ্বন্যাত্মক শব্দ পাওয়া যেত তার মধ্যে ছিল ‘উলস চাকুস চুকুস’, জিভে জল আনা খাবার চেটেপুটে খাওয়ার শব্দ। অর্থাৎ রাজধানীর স্ট্রিট ফুড। দিল্লিতে থেকে সেই সুযোগের সদ্ব্যাবহার না করে কোন মূর্খ ? আলকাতরা মার্কা ছোলার তরকারি যারা রাঁধে তারা চুলও বাঁধে, মানে জিভে জল আনা চাটও বানায় স্যার। ... ...
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এতদিন একতরফা ভারতের আধিপত্য ছিল। এবার গ্রুপ পর্যায়ে তিন শূন্য গোলে হারায় ভারতকে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে হারায় আট শূন্য গোলে। সেমিতে ভুটান হারে আট শূন্য গোলে। ফাইনালে নেপাল হারে তিন এক গোলে। বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। এমন একতরফা খেলে টুর্নামেন্ট জিতল কোন দলটা? যাদেরকে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয় পেটের ভাতের জন্য। রূপকথা না? এই দলটার আট জন এসেছে একটা গ্রাম থেকে, নেত্রকোনার কলসিন্দুর গ্রাম, যেখানে অদ্ভুত ভাবে মেয়েরা দারুণ ফুটবল খেলে। যাদের নিয়ে কয়েক বছর আগে তৈরি করা হয় একটা প্রতিবেদন, যেখানে তাঁদের চাওয়া কি জানতে চাইলে মেয়েরা বলে ভাল করে খাওয়া! এক বেলা ভাল করে খাওয়ায় দিয়েন!! কারা আমাদের সাফল্যের মুকুট এনে দিয়েছে বুঝা যাচ্ছে? পাঁচজনের বাড়ি পার্বত্য চট্টগ্রামে। তাঁদের তো আরও সমস্যা। কোন কিছুরই স্বীকৃতি নাই। পাহাড়িদের তো মানুষই মনে করে না আমাদের সভ্য সুন্দরেরা। তাঁদের নাই ঘর বাড়ি, তাঁরা গেছে ফুটবল খেলতে! এই সব সমস্যার পরে আমাদের ঐতিহাসিক আদর্শ নারী বিরোধীরা তো আছেই, যারা প্রতিনিয়ত অশ্লীল, পাপ, রসাতলে গেল সমাজ বলে চিৎকার করছে। এদেরকে লাথি মেরে এগিয়ে যাওয়া, শুধু যাওয়া না, চ্যাম্পিয়ন হওয়া এইটার সাথে কিসের তুলনা দেওয়া যায়? আমার জানা নাই, সত্যিই জানা নাই। ... ...
সম্প্রতি মিয়ানমার বিভিন্নভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে বাংলাদেশের সীমানা লঙ্ঘন করছে। এর প্রকৃতি থেকে পরিষ্কার যে এগুলো এক্সিডেন্টাল নয়। এর কারণ কী সেই ব্যাপারেই অনুসন্ধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। ... ...
এরপর চলল আফজলের কাঁচি। এক এক পার্ট করে কাটছে আর মাঝে মধ্যে ক্লিপ গুঁজে দিচ্ছে মাথায়, সেও এক বিশাল কায়দার ক্লিপ একেবারে কাঠঠোকরার ঠোঁটের মত ব্যাঁকানো। এরপর গানের তালে তালে চুলে কাঁচির আওয়াজ আরও জোরে হলো। ... ...
আমি,আপনি,আমরা আর একটা কুকুর। ভালবাসা,ন্যাকামো,আদিখ্যেতা,ধাষ্টামো সবকিছু। অবশ্যই গল্পে। ... ...
কত গল্প করতো বুড়ো -- ঘুড়ি তো ছিল ছুতো ! মেটেবুরুজ-কলুটোলা - রাজাবাজার - গ্যাস স্ট্রীটের দোকানগুলোর মাঞ্জা ছিল লা-জবাব কিন্তু কোন কথা জিজ্ঞেস করলে জবাব পাওয়া যেত না ! জনাবের মুখভর্তি যে পান -জর্দা- সূর্তি ! ... ...