লক ডাউন কাটানোর কোন "খুড়োর কল"নেই। চলেই যাচ্ছে,চলেই যাচ্ছে,চলেই যাচ্ছে। কাগজ কুঁচি, বালিশের তুলো, রাগ শহীদ মিনার। ... ...
তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এ-দেশেও সম্ভব নয়। বিকেলবেলা সেই খবরই এলো। সরকারী অনুদান প্রথমে সরাসরি ব্যাঙ্কে জমা পড়বে বলে ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু বহুসংখ্যক লোক একইসাথে সরকারী ওয়েবসাইটটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েবসাইটটিতে গোলমাল শুরু হয়েছিল। এর ফলে সরাসরি অফিস থেকে টাকা তুলতে সবাই চলে এলো। দীর্ঘ লাইন। টিভিতে দেখা গেল সব গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোথায় গেল রাস্তায় দু’জন লোকের মাঝে সরকারী নির্দিষ্ট ১.৫ মিটার দূরত্ব? দেখে শিউরে উঠলাম। ... ...
ভাইরাসকে নিয়ে সহবাস করা মানবজাতিকে শিখে নিতে হবে। কোথাও herd immunity তথা গোষ্ঠী ইমিউনিটি তৈরি হবে, কোথাও হবেনা। এমনটাই স্বাভাবিক। হাতে গোণা কয়েকজন কর্পোরেটের এবং কয়েকটি দেশের লাভের, লোভের খিদে মেটাতে গিয়ে শিকার হচ্ছে সমগ্র মানবজাতি। ... ...
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকাল রিসার্চ (ICMR) এর স্বীকৃতি পেলে বাজারে আসতে চলেছে COVID 19 সনাক্তকরণ আর এক সহজ ও দ্রুত উপায়, Chitra GENELAMP-N. তিরুবনন্তপুরমের শ্রী চিত্রা ইনস্টিটিউট ফর মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজির একটি দল ডঃ অনুপ ঠেক্কুভীত্তিল এর নেতৃত্বে RT-LAMP (Reverse Transcription Loop Mediated Isothermal Amplification) রাসায়নিক বিক্রিয়া কে কাজে লাগিয়ে এই দ্রুত সনাক্তিকরণ কিটটি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যা সর্বাধিক ২ ঘণ্টা র মধ্যে এর মধ্যে SARS Cov2 ভাইরাস এর N-জিন টির উপস্থিতি রোগী র অনুনাসিক বা লালারস থেকে সনাক্ত করতে সক্ষম হবে। এই সনাক্তিকরণ প্রক্রিয়া র জন্যে যে যন্ত্রাদি দরকার তার মুল্য হবে আয়াত্বের মধ্যে, সাথে সাথে এই পরীক্ষার উপাদান গুলি ও খুব খরচ সাপেক্ষ নয়। ডিপার্টমেন্ট অফ সাইন্স এন্ড টেকনোলজি র অধীনের এই প্রতিষ্ঠানের গবেষক ডঃ অনুপ আশাবাদী যে রোগী পিছু মাত্র ১০০০ টাকায় এই পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। যা এখন বাজার চলতি পরীক্ষার তুলনায় বেশ সস্তা এবং দ্রুত। ... ...
কোভিড-১৯ অতিমারী আমাদের সমাজের বহু বিভাজনকে আরও বেশি প্রকট করে দিয়েছে। অতিমারী একদিন বিদায় নিলেও তার ক্ষতচিহ্ন কিন্তু অত সহজে বিদায় নেবেনা। অনলাইন শিক্ষার সোনার পাথরবাটির সন্ধান ভারতবর্ষের ডিজিটাল ডিভাইডকেও একই ভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। ... ...
ত্রানের অপ্রতুলতার প্রথম কারণটি নিয়ে নাড়াচাড়া করলে আবার কেন্দ্রীয় নীতির কথাতেই ফিরে যেতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে যে গণ বন্টন ব্যবস্থায় নাম নথিভুক্ত আছে এমন প্রত্যেকজন তিনমাস ধরে ৫ কেজি বাড়তি খাদ্যশস্য এবং ১ কেজি বাড়তি দানাশস্য বিনামূল্যে পাবে। কিন্তু ১০ কোটির বেশি মানুষের নাম গণবন্টন ব্যবস্থায় নথিভুক্ত নেই, কারণ সরকার ২০১১ সালের জনগণনাকেই ন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি এক্টের ভিত্তিবর্ষ ধরবে ঠিক করে ফেলেছে। ... ...
COVID-19 মহামারীর বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকার লকডাউনের সময়সীমা ২০২০ সালের ৩রা মে অবধি বাড়িয়েছেন। ১৪ই এপ্রিল ২০২০ তারিখে এই মর্মে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে জনসাধারণের কষ্ট কমানোর জন্য, আগামী ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ থেকে কিছু কিছু নির্বাচিত অতিরিক্ত কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। এই দফার লকডাউনের কিছু বিধিনিষেধ আগের দফার মতই একইভাবে বহাল থাকবে। আবার বেশ কিছু নিয়মাবলীতে পরিবর্তনও করা হয়েছে। সেসবেরই সুসংবদ্ধে তালিকা রইল এই লেখায়। ... ...
অমন দূরত্ব নির্মাণের অদূরপ্রসারী ফল যে কতটা মারাত্মক হতে পারে, বুদ্ধির বৈকল্যে তা যুদ্ধবিশারদদের কাছে ধরা পড়ে না। আমরাও হয়তো এইভাবে সমাজবিচ্ছিন্ন কোনও উৎকট জীবে পরিণত হয়ে যাব। আমরা কি অজান্তে সেই পথই খনন করে, নতুন অসভ্যতার রিহার্সাল দিচ্ছি? অথচ যুদ্ধের যে-কঠোর কৌশল আমরা এখন বাধ্য হয়ে মানছি তা এড়িয়ে যাওয়া যেত, যদি সময়মতো কর্তব্যগুলো কঠোরভাবে পালন করা হত। অন্তর্জলি যাত্রার দৃশ্যকল্প না-লিখে ভিয়েতনাম, কিউবা, থাইল্যান্ড বা দক্ষিণ কোরিয়া তা করে দেখিয়েছে। কারণ, সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবার কাঠামোটা মজবুত। আমরা নিধিরাম! গলাবাজী আর ধূর্তামি ছাড়া আমাদের রাষ্ট্রনীতিতে আছেই বা কী! ... ...
বালুরঘাট ব্লকের কাশমুলাই গ্রামে মানুষ গাছের কচি পাতার দিকে তাকিয়ে আছে। কখন পাতা শুকিয়ে ঝরে পড়বে, তবে তাই দিয়ে রান্না হবে। রান্না কী হচ্ছে? ত্রাণ দিতে গিয়ে আমার বন্ধুরা দেখে এসেছে, গরু যে ঘাসপাতা চিবিয়ে খাচ্ছে, তাই সিদ্ধ করে গ্রামের মানুষ খাচ্ছে। মানুষ আর পশুর খাবার এক হয়ে গিয়েছে। ... ...
আরে, বলতে চাইছেন কী এক্স্যাক্টলি? লকডাউনটা ভুল - এই তো?? এককথায় ঠিক নাকি ভুল - বলা মুশকিল। কিন্তু, তার চেয়েও বড় কথা - বলে আর লাভ নেই। আমরা তো লকডাউনের চতুর্থ সপ্তাহে আছি। লকডাউনই বলুন বা সোশ্যাল ডিস্টান্সিং - তার আর্থিক প্রভাব গভীর। শুধু গরীব লোকই না - আঁচ পড়বে আমার বা আপনার উপরেও - কিন্তু, অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষেরা যেমন ঘোর বিপদে, নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে, আপনি বা আমি ততোখানি নই। লকডাউন ঠিক হয়েছিল, নাকি ভুল - এ নিয়ে আলোচনা করার সময় অনেক পাওয়া যাবে - স্রেফ লকডাউন করে করোনার থাবা থেকে কত লক্ষ বা কত কোটি মানুষকে বাঁচিয়ে দেওয়া গেল, সে নিয়েও হাওয়া গরম করার সময় পরে মিলবে - আপাতত এটুকু নিশ্চিত করা যাক, যাতে লকডাউনের কারণে অনাহারে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত না হতে পারে। ... ...
মূল প্রবন্ধ থেকে বাংলায় ভাষান্তরঃ স্বর্ণেন্দু শীল শস্যের সাবেকি জাতগুলো সুস্থায়ী কৃষির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, কারণ তাদের ফলনের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা বেশিরভাগ আধুনিক জাতের চাইতে বেশি। পর্যাপ্ত পরিমাণ সাক্ষ্যপ্রমাণ এটাই দেখায় যে যখনই সেচের জলের বা সারের স্বল্পতা দেখা যায় - খরা, সামাজিক সমস্যা কিম্বা সরবরাহ ব্যবস্থার সাময়িক গোলযোগে, আধুনিক জাতগুলোর ফলন ঘাটতি অনেক বেশি হয় ও অনেক বেশি অঞ্চল জুড়ে এই ঘাটতি দেখা যায়১০ [Cleveland et al. 1994]। চাষের আদর্শ পরিস্থিতিতে, কিছু সাবেকি জাতের গড় ফলন উচ্চফলনশীল জাতদের থেকে কম হতে পারে, কিন্তু যে প্রান্তিক পরিবেশের জন্য ঐ দেশি জাতটা বিশেষভাবে অভিযোজিত, সেখানে তাদের ফলন উচ্চফলনশীল জাতের থেকে অনেকটাই বেশি। ... ...
বস্তুত আমাদের সকলের চোখের সামনে এই সমস্যা ক্রমশ যেন এক টইমবোমার রূপ নিচ্ছে, যা যে কোনো সময়েই ফেটে পড়তে পারে। অথচ রাষ্ট্রের দিক থেকে এ নিয়ে কোনো কেন্দ্রীয় নীতি থাকা তো দূরস্থান, এমনকি সমস্যাটির যথাযথ স্বীকৃতিদানেও অনীহা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, যা শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীনই নয়, চূড়ান্ত অমানবিকও বটে। ... ...
করোনায় ভারতবর্ষে প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৃতের নাম ন্যূনতম মনুষ্যত্ব, মানবিক বোধ। তার হয়তো মৃত্যু বরাদ্দই ছিল, কারণ সে বহু আগে থেকেই ধুঁকছিল, আর এরকম শিকার তো করোনা ছাড়ে না বলেই জানা গেছে। এক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় হয় নি। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং হয়েছে, ওদিকে হাজারে হাজারে মানুষ পথে হাঁটছে, হাঁটতে হাঁটতে মরে পড়ে যাচ্ছে, আমরা নির্বিকার। মানুষকে কীটনাশক দিয়ে ধুইয়ে দিচ্ছেন আধিকারিক – আমরা নির্বিকল্প। আধিকারিক ভুল স্বীকার করছেন – আমরা খুশী। আমরা প্রশ্ন করতে ভুলে গেছি যে ভুল যে স্বীকার করলেন – কিসের ভিত্তিতে? ঠিকটা কী? আদৌ আপনি জানেন যা করেছেন তা ঠিক না ভুল? কেউ জানে? ... ...
রাগের মুহূর্তে জামাল সাহেবের কথা বলার সুরটি অবিকল সেই খরিস সাপের মতো, আর তার মুখের সামনে দাড়িয়ে শাহিদা তখন সত্যিকার অর্থেই কাঁপতে থাকে, নারকেলের লম্বা পাতায় শয়তান ভর করলে যেমন অনবরত কাঁপতে থাকে, ঠিক তেমনই। শাহিদাদের নারকেল গাছের আর সব পাতাগুলো যখন নিথর থাকে, শুধু একটি মাত্র পাতা যখন অনবরত কাঁপতে থাকে তখন ওর দাদি বলেন, “শয়তানের ভর হইছে, একখান কাচি পোড়া দিয়া থো”– শাহিদা তখন একটা কাচি চুলোর ভেতর গুজে দিত। সেসব দিন শাহিদা আখতার ভুলে যাচ্ছে আস্তে আস্তে, আজকাল তো সে আর শুধু শাহিদা নয়, শাহিদা আখতার। জামাল সাহেব কখনওই তাকে শুধু শাহিদা ডাকেন না, ডাকেন শাহিদা আখতার বলে। ... ...
‘স্বর্গ চেনো না, মিয়ারা, বেহেশত চেনো না, জান্নাতের কথা শুনো নাই কোনদিন?’ ‘শুনছি, শুনছি।’ লোকেরা বলাবলি করে, ‘স্বর্গের আছে মণিমুক্তাখচিত সোনার তৈরি দরজা, সেইখানে সকল দালানের ইট সোনা রূপায় তৈরি, মাটি খাঁটি জাফরানের, কাঁকর হইল মণিমুক্তা আর ইয়াকুত পাথর, আবে রহমতের নদী সুরম্য স্পন্দনে সারক্ষণ বয়ে চলে সেখানে, যার পানি দুধের চেয়ে সাদা, বরফের চেয়ে ঠাণ্ডা, মধুর চেয়ে মিষ্টি, স্বর্গের গাছগুলো সোনা ও রূপার, ফলগুলি নিকটবর্তী, বাতাস মোলায়েম, জান্নাতে ইচ্ছাপ্রকাশ করলেই সোনা রূপার পাত্রে তোমার সামনে চলে আসে সুস্বাদু বেহেশতি খানা, আসে মাছের কলিজার কাবাব, আসে সুমিষ্ট ফলফলাদি, আসে শীতল পানীয় ভর্তি পানপাত্র। আরো নাকি সেইখানে আছে নূর দিয়া তৈরি অলৌকিক হুর। তারা নব্যকুমারী, অতিশয় সুন্দরী, নম্র ও নরম। তারা পরিচ্ছন্ন, স্বপ্নমানসী। হুর বালিকার মৃদু হাসিতে চারদিক আলোকিত হয়, একবিন্দু থুতুতে মিঠা হয়ে যায় দরিয়ার সমস্ত পানি...’ ... ...
আমি রবি ঠাকুরের কবিতাও গড়্ গড়্ করিয়া বলিয়া যাইতে পারি। যেমন, ছপ্পড় পর কৌঁয়া নাচে ও আর কত কাল একা থাকব। এরূপ ভীষণ স্মরণশক্তি আজিকালকার বাঙ্গালীদের মধ্যে দেখা যায় না। শুনিয়াছিলাম মহাপুরুষ স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের এইরূপ ভীষণ স্মরণশক্তি ছিল। স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয় বাঘের ন্যায় গর্জ্জন করিতে পারিতেন। এ কারণে লোকে তাঁহাকে বাঙ্গালার বাঘ বলিত। তিনি একবার অত্যাচারী বৃটিশ শাসকের বাড়িতে গিয়া এইরূপ ভয়ানক গর্জ্জন করিয়াছিলেন যে অত্যাচারী বৃটিশ শাসক ভয় পাইয়া তাঁহার নামে একটি অট্টালিকা লিখিয়া দেয়। সেই অট্টালিকাতে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয় একটি কলেজ স্থাপন করেন। সেই কলেজ অধুনা আশুতোষ কলেজ নামে খ্যাত। এইরূপ আরো বহু ঘটনার কথা আমি নানা দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থে পড়িয়াছি। এইভাবে নানা দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থের পর গ্রন্থ পড়িতে পড়িতে আমি বর্ত্তমানে একজন কেও-কেটা হইয়াছি। আমার সহিত এখন আর কেহই পাল্লা টানিতে পারিবে না। ... ...
গলা তুলে বলতে থাকে: বেশ করে লংকাকুচি আর পেঁয়াজ দিও তো আর একটু বেশি সস। একটু বেশি সস, বুঝলে? কাল কম দিয়েছিলে। তোমার দোকানের সসটা না... ‘চ-অ-ক-স’ করে তৃপ্তির শব্দ করে মেসো — ঠোঁট জিভ আর দাঁত দিয়ে — সামান্য থুতু ছিটকোয়। পবিত্র দেখতে থাকে — প্লাস্টিকের চেয়ারে পা ছড়িয়ে বসেছে মেসো — দুহাত সামনে বাড়িয়ে বন্ধ ছাতাটা ধরে রেখেছে — হাওয়ার দাপট সামলাতে টানটান হাত — বাদলা হাওয়ায় লম্বা চুল উড়ছে, এদিক ওদিক তাকাচ্ছে তৃপ্তিভরা চোখে — ক্ষৌরিবিহীন কালচে মুখে রোলের দোকানের আলো, পায়ের কাছে খানিকটা জ্যোৎস্না; প্লাস্টিকের চেয়ারটা অবিকল একটা রথের মত দেখাচ্ছে এই মুহূর্তে। ... ...
চাঁদ সেদিন সরু হতে হতে সুতোর মতো, যেন সেদ্ধ ডিম ফালি করা যাবে তা দিয়ে। নিমগাছটায় রাতজাগা কাকের পালক ঝাড়ার আওয়াজ কানে এল আন্নুর। রাত কতো হল কে জানে, সাতদিন পার করে আজও দিলদার ফিরল না। আপসোস। পাশের ঘর থেকে ক্রমাগত ধর্ষণের হুমকি আর দেওয়ালে লাথি মারার আওয়াজ এই সবে থামলো। ঝুলে পড়া তলপেট খালি করতে যাবার এই তো সময়। আন্নু খসে পড়া ওড়না তুলে মাথায় দেয়। খোলামাঠে উদোম হয়ে বসার সময়ও মাথার কাপড়টি ঠিক রাখতে হবে। নাহলে রীত ভঙ্গ হয়। বাহারে দুনিয়া, বাপ ছেলে এক নারীকে ভোগ করলে, টাকা দিয়ে মেয়ে কিনে তাকে ভঁইসার মতো খাটালে, কোন রীত ভাঙে না, দুনিয়া উলটে যায় শুধু মাথায় কাপড় না থাকলে ! ... ...
পাগলি খোঁড়া ঝুমির বিটি বাতাসিয়া এবার জোয়ান মরদ কুলিদের সব টেক্কা দিয়ে মজুররত্ন হবে। এমন বিষয় মেনে নিতে পারেনি কেউ। একদিন সন্ধ্যার পর কাজ থেকে ফেরবার সময় একদল মুখে কাপড় বাঁধা পুরুষ ছিন্নভিন্ন করে দেয় বাতাসিয়াকে। খোঁড়া ঝুমির বাতাসিয়াকে মজুররত্ন বানানোর স্বপ্ন ফের চিরতরে ঘুচে যায়। বাতাসিয়া এখন খুদে খুদে চোখ জোড়ায় ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে। খাদানে এমন ঘটনা মাঝেসাঝে ঘটে। তাই হইচই একটু কমই হয়। তা ছাড়া বাতাসিয়া তো বোবা হয়ে গেছে। ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে আর নাল ঝরে, শুধু বসে বসে পাথর ভাঙে। বাতাসিয়া মা হতে চলেছে খবর পেয়ে ছুটে এসেছিল সুজাউদ্দিন। ঝুমিয়াকে রেগে গিয়ে বলেছিল – ওকে হাসপাতালে নিয়ে যা। যা খরচা লাগে আমি দেব। মাথা নেড়েছিল ঝুমিয়া – না মালিক। মারাংবুরু জীবন দেয়। নেয় না বটে। ... ...
রাধি, আজ ভরাপূর্ণিমা। চল, রাস খেলি। কুঠিয়ালের গোমস্তা হয়তো তার প্রিয় এক নারীকে এমন কিছুই বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন আট দিক থেকে কুকুরের ডাক ভেসে এসেছিল। গোল চাঁদের দিকে মুখ তুলে ওরা কেন যে একসঙ্গে কাঁদে, কে জানে। রায়মশাই শুনলেন হাজারও বেজম্মার দল এক সঙ্গে হাসছে। সঙ্গে সঙ্গে টের পেলেন পরনের কাপড় নীচের দিকে ভেসে যাচ্ছে। দুর্গন্ধে ঘর ভরে গেছে। পিঠের ওপর কে যেন শক্ত জুতো দিয়ে চাপ দিচ্ছে। কে হাসছে ? রাধি ? রাধি, আমাকে শক্ত করে চেপে ধরে রাখ। আমি বেঁকে যাচ্ছি, ধনুকের মত বেঁকে যাচ্ছি। আঃ রাধি, সরে যা। আমার লজ্জা করছে। বিছানা ভেসে যাচ্ছিল। মলমূত্র কোথা দিয়ে বেরোয় – সবাই জানে। কিন্তু প্রাণপাখি যে নবদ্বারের কোন দ্বার দিয়ে বেরোয় – কেউ সঠিক বলতে পারে না। রাধিকা খুব অবাক হয়ে দেখছিল তখনও বাবুর শরীরের গর্মি বোঝা যাচ্ছে। ... ...