শিলচর শহরে ১৮ জুন মধ্যরাত থেকে জল ঢুকতে শুরু করে। কাছাড় জেলা প্রশাসন তার আগে একটা বিবৃতি দেন, সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সেটা ছিল এরকম, "এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, প্রশাসনের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী বেতুকান্দি বাঁধটি কিছু দুষ্কৃতী নষ্ট করে দিয়েছে, বাঁধের ওই ক্ষতিগ্রস্ত অংশটুকু মেরামত করার চেষ্টা চালান সত্ত্বেও নদীর জল শিলচর শহরের নিচু এলাকা ও বেতুকান্দির আশপাশের এলাকাগুলোতে ঢুকে পড়তে পারে।" আস্তে আস্তে বরাক নদীর জল পুরো শিলচর শহরকে ভাসিয়ে দেয়। গরীবের কুঁড়ে ঘর থেকে বড় অট্টালিকা কিছুই আর বাদ যায় না। অনেক বাড়ীর জানালার উপর পর্যন্ত বান ভাসি হয়ে যায়। বিপন্ন মানুষ অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। ... ...
ইদানীং সুপ্রিম কোর্টের একটি বক্তব্য নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত নাকি পুলিশ প্রশাসনকে বলেছে ভারতে যৌনকর্মীদের সঙ্গে সম্মান দিয়ে কথা বলতে, মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার করতে, কথায় কথায় ওদের টানা হ্যাঁচড়া করে অপদস্থ না করতে। ওরা একটি পেশায় রয়েছে, কোন অপরাধ তো করেনি। আর নিজের পছন্দমত জীবিকা বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা আমাদের সংবিধানে স্বীকৃত। তাহলে? ... ...
আবারও বলছি, চুক্তিপত্রের কোথাও ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বলা নেই। অনিচ্ছুক শ্রমিকদের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণের টাকা ধরা হয়েছে কিনা, হলে তার পরিমাণ কত – সেটা বলা হয়নি। কোথাও বলা নেই – এই চুক্তিটি, এই আশ্বাস – কত সময়ের জন্য বলবৎ থাকবে। কোনো প্রতিশ্রুতির কোনো আইনগত প্রভিশন নেই, কোনো টাইম-ফ্রেম নেই। সমস্ত দায়িত্বটাই ন্যস্ত করা হয়েছে কোম্পানির সদিচ্ছার ওপর। সরকারের দায়িত্ব শুধুমাত্র কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আইনে কোম্পানিগুলিকে অধিকার দেওয়া হয়েছে অপ্রয়োজনীয় শ্রমিকদের ছাঁটাই করার। অনতিদূর ভবিষ্যতে কোম্পানি যে তার এই অধিকার প্রয়োগ করে শ্রমিক ছাঁটাই করবে না – তার গ্যারান্টি কী? এবং তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ এই ধারাটিকে এই রকম শূন্যগর্ভ অর্থহীন শব্দ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কেন? ... ...
কাহিনীর সারাংশ হচ্ছে হিন্দু রাষ্ট্রের প্রকল্প যত এগোচ্ছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা ততো বিঘ্নিত হচ্ছে। মুসলিমরা সব সময়ই টপ টার্গেট, নানা ফন্দি করে তাঁদের টাইট দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত। বিভিন্ন রাজ্য নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে কে কত এই সম্প্রদায়কে কোণঠাসা করতে পারে। কেউ সরকারি মাদ্রাসা বন্ধ করে দিচ্ছে, কেউ প্রকাশ্যে নামাজ পড়া বা মসজিদের মাইক লাগানো নিষিদ্ধ করে দিচ্ছে, কেউ কসাইখানা বন্ধ করে গোশালা খুলছে... ... ...
আসামের বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলায় “ডলু চা বাগান” রাজ্য সরকার আংশিকভাবে অধিগ্রহণ করেছে। ১২ই মে ২০২২-এর কাকভোরে ২৫০০ বিঘা জমি, প্রায় ত্রিশ লক্ষ চা গাছের ঝোপ এবং কয়েক সহস্র ছায়া গাছ উপড়ে ফেলে জমি পরিষ্কার করা হয়েছে। অবশ্য বিজেপি সাংসদ বলেছেন, ডলুতে কোনও উচ্ছেদ হয়নি, যা হয়েছে জমি অধিগ্রহণ। এদিকে দুই হাজার চা শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেছে। স্থানীয়, রাজ্য এবং জাতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলি এই বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে। কিন্তু তারপর থেকে সেখানে নেমে এসেছে এক শ্মশানের স্তব্ধতা। কোনও সংবাদ বাইরে বেরোচ্ছে না। কাউকে ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না ... তথাকথিত উন্নয়নবিরোধীর তকমা যাদের গায়ে সেঁটে দেবার চেষ্টা হয়েছিল, তাদেরই কয়েকজন ... কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে – কেন ডলু? কেন পাশের বিশাল খালি জমি খরিল নয়? ... ...
হজরত মহম্মদ সাম্প্রদায়িকতার বিরোধী ছিলেন। অগ্নিপূজক পারসিকদের সমান সম্মানের সঙ্গে উপাসনার অধিকার দিয়েছেন। আর এখন কিছু মৌলবাদী অন্য ধর্মের উপাসনায় বাধা সৃষ্টি করে বাংলাদেশে। তিনি মনে করতেন, তিনি ঈশ্বরের প্রতিনিধি। কিন্তু যীশু মুসাদের বলা হতো ঈশ্বরের পুত্র। আদম থেকে যীশু পর্যন্ত সব 'মহাপুরুষ'-কে তিনি নবি বা ঈশ্বরের প্রতিনিধি বলে স্বীকার করেছেন। এবং বলেছেন, তিনিই ঈশ্বরের শেষ প্রতিনিধি। ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মের যা কিছু ভালো তা নিয়েছেন। গ্রহণ করেছেন আরব বেদুইনদের কাব্যিক ভাষা। কোরান পৃথিবীর প্রথম লিখিত গদ্যগ্রন্থ। এবং তা অসম্ভব কাব্যিক ও তত্ত্বচেতনাময়। তবে অন্ধরা সব কোরানে আছে বলে বিপত্তি বাড়ান। যেমন একদল বলেন, সব বেদে আছে। ... ...
যেখানে যেখানে নক্সালবাড়ির কৃষক বিদ্রোহ ছড়িয়েছিল সেখানে বর্গা নথিভূক্তির কাজ আরম্ভ হয় আগে। গোপীবল্লভপুরে ডেবরায়, উত্তরবঙ্গে...সর্বত্র। জমির চাষী কে ? খুঁজে বের কর, নাম নথিভুক্ত করে তাদের চাষের অধিকার পোক্ত কর। অপারেশন বর্গা। আমিও সান্ধ্য মিটিং করেছি গোপীবল্লভপুরের গ্রামে। সারাদিন চাষীর তাদের কাজে ব্যস্ত। তাদের তখন সময় কোথায় ? সন্ধ্যায় ইস্কুলবাড়ি কিংবা অমনি কোথায়, এমন কি গাছতলায় হেজাক জ্বেলে মিটিং। ভয় নেই। তুমি কোন দাগের চাষী বলো, জমির রেকর্ড হাজির। তার নাম লিখে নিয়ে পরদিন জমিতে গিয়ে দাগ দেখিয়ে দিতে বললে তবে সে সাহস পেল। দুয়ারে সরকারকে যেতেই হয়। না গেলে অপারেশন বর্গা সফল হত না। কিন্তু ইতিমধ্যে বাবুরা, আমরা বুঝে গেছি কী করতে হবে। দলবদল করলাম নিঃশব্দে। সরকারি দলের ছত্রছায়ায় এসে বর্গাদারকে নিবৃত্ত করলাম নথিভুক্ত হতে। অনেক বছর বাদে, একুশ শতকের আরম্ভে মেমারি পেরিয়ে এক গঞ্জে গিয়েছিলাম পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে। অমুক সামন্তবাবুর বদান্যে সেই অনুষ্ঠান। সারাদিন সব হয়ে গেলে তাঁর বাড়িতে মধ্যাহ্নের আহার শেষ বেলায়। তিনিও কানুনগো ছিলেন। পরে প্রমোশনে উপরে উঠেছিলেন অনেক। তাঁর পুত্র এম এ পাশ। মোটর সাইকেলে চেপে চাষবাস দেখে। বর্গাদার নেই জমিতে। ... ...
প্রকাশিত হল জয় গোস্বামীর কবিতার বই, 'দগ্ধ'। কবির হাতেই। কবিতার বই কি বলা যায় একে? কবি যেখানে নিজেই বলছেন, "এই ঘটনার পর কবিতা বলে কি কিছু বাকি থাকে নাকি?" ... ...
চমকে উঠলাম। ওর ঘুম জড়ানো ঘোলা দু’চোখে বিরক্তি রাগ আর ভয় দেখে। যিনি আমাকে নিয়ে গেছিলেন তিনি খানিক ভূমিকা করে রেখেছিলেন মেয়েটি সম্পর্কে। ওর প্রথম কাজে যাওয়া চৌদ্দ বছর বয়সে। ২০০২ সাল। পাড়ার কোনো মেয়ে এই পাড়া থেকে মেয়ে জোগাড় করত। বলেছিল, কাজে যাবি? কাজ আছে। - পাঠাও না কাকা তোমার জামাইয়ের সাথে। খেতে পাবে, পরতে পাবে, মায়না পাবে। ... ...
হজরত মুহম্মদ অবশ্য নিজের জীবনে ‘চার-স্ত্রী নীতি’ মানেননি, কোরানের ৩৩ : ৫০ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল তাঁর চারের অধিক বিয়েকে অনুমোদন দিয়ে। ইসলামীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী তাঁর ‘তেরোজন’ (এ ক্ষেত্রে মতৈক্য নেই, তেরো থেকে পনেরো নানা সংখ্যা বলা হয়েছে) স্ত্রীর কথা জানা যায়। ... ...
না, গত পাঁচশ’ বছরে এমন শীত কেউ দেখেনি, তাপমাত্রা এইভাবে কখনো মুখ থুবড়ে পড়েনি। এই তো সেদিন হঠাৎ ধেয়ে আসা তুষার ঝড় আর বরফ এক রাতে মেরে ফেলেছে ২০০০ সুইডিশ সৈন্যকে – যারা রাশিয়ার সীমান্তে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল। ভেনিসে বড় বড় খাঁড়ি জমে এমন হয়েছিল, যে মানুষ তাদের ওপর চলতে গিয়ে দেদার আছাড় খাচ্ছে। সুইজারল্যান্ডে ক্ষুধার্ত নেকড়েরা দলবদ্ধভাবে গ্রামে ঢুকে পড়ছে। পুরো বাল্টিক সাগর জমে পাথর। সমস্ত নদী জমে পাথর, যানবাহনের অভাবে ব্যবসা লাটে উঠেছে। প্রথম প্রথম লন্ডনবাসী মহা ফূর্তিতে জমে যাওয়া টেমসের ওপর স্কেটিং, খানাপিনা ইত্যাদি করছিল। তারপর অবস্থা দাঁড়াল – ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি। ... ...
দীর্ঘ এগারো বছর ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে আজও সুবিচার অধরা। একটি নিরস্ত্র, আত্ম-নিরাপত্তাহীনা কিশোরীর মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়নি। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিএসএফের বিশেষ আদালত অভিযুক্ত জওয়ানকে নির্দোষ বলে রায় দিয়েছে। ২০১৫ সালে সেই রায়ের পুনর্বিবেচনা মামলায় সেই একই আদালত অভিযুক্ত জওয়ানকে পুনরায় নির্দোষ ঘোষণা করেছে। ফেলানি ও তার বাবা অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল এবং একই কায়দায় তারা আবার স্বদেশে ফিরতে চেয়েছিল। সেটা নিশ্চিতভাবে বেআইনি কাজ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধই বটে। কিন্তু এ হেন অপরাধের শাস্তি কি মৃত্যু হতে পারে? আর এই মৃত্যুদণ্ড তো বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালত-স্বীকৃত নয়! সীমান্তরক্ষীবাহিনীর কি কোনো নিরস্ত্র অনুপ্রবেশকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার অধিকার আছে? ... ...
মোদী ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের এ এক অসীম লজ্জা ও অপমানের প্রহর। কারণ কৃষকের দাবি যে মূহুর্তে মেনে নেওয়া হল, সেই মুহূর্তেই এই চরম প্রতিক্রিয়াশীল সরকারকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ইষ্টমন্ত্র – নয়া উদারবাদের বিরুদ্ধে যেতে হল। তাকে প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিতে হল, সে কার পক্ষে – আন্তর্জাতিক বৃহৎ ব্যবসার, নাকি দেশীয় মার-খাওয়া কৃষকের। আপাতত বাধ্য হয়ে সে কৃষকের – ভবিষ্যতের কোনো ষড়যন্ত্র যদি না পাশা উলটে দেয়। ... ...
এই অজানা, অনামী মুন্সি বা পণ্ডিতরাই অনুবাদে আসল ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই সমস্ত আইনের পুস্তিকাগুলো যে পণ্ডিতদের অনুবাদ, তার বড় প্রমাণ – সব পৃষ্ঠার ওপরে ‘শ্রীশ্রীদূর্গা সহায়’, ’শ্রীশ্রীহরি’ ইত্যাদি স্মরণিকা পাওয়া গেছে। কিন্তু নিজেদের অধিকারের বলে ইংরেজ ওপরওলারা অনুবাদের ধরণ, শব্দের ব্যবহার ঠিক করে দিতেন। আর সেখানেই সমস্যার জন্ম শুরু। হ্যালহেডের প্রভাব ও আধিপত্য এইসব ইংরেজ ‘অনুবাদক-অফিসার’দের ওপর প্রচণ্ড ছিল। আর এই হ্যালহেডই প্রথম থেকে প্রচলিত বাঙলা-আরবি-ফার্সি বাদ দিয়ে সংস্কৃত শব্দ ব্যবহারের পক্ষে ছিলেন। কঠোরভাবে নির্দেশ ছিল আরবি-ফার্সি চলিত (অসাধু) বাঙলা বাদ দিয়ে সংস্কৃত শব্দ ব্যবহারের জন্যে। ফলে, এই সময় থেকে এই অনুবাদগুলির মাধ্যমে আরবি-ফার্সি শব্দ বাদ পড়া শুরু হল এবং সংস্কৃত শব্দের ব্যবহার বাড়তে লাগল। ... ...
বেড়াতে গিয়ে ঝালমুড়ি, বাদামভাজা, বারোভাজা, আইসক্রিম কত কিছু খাওয়া হয় তার কোনো তালিকা বা হিসাব মনে হয় কেউই রাখে না। তাই আই সব খাবার বিক্রেতার মুখেও হাসি থাকে সর্বদা। কিন্তু জনশুন্য স্থানে এই খাবার কে খাবে? কোভিড তো মানুষ কে গৃহবন্দী করে দিয়েছে। তাই এই ব্যবসায়ীরাও বাধ্য গৃহবন্দী থাকতে। কিন্তু খিদে তো আর বন্দী থাকে না, সময় হলে তার খাবার চাই। সে বুঝবে না কিভাবে তা পাওয়া যাবে। এইসব ব্যবসায়ীদের অবস্থা সত্যিই কোনোভাবেই বর্ণনা করা যায় না। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর তারাও মূলস্রোতে ফিরছে। ... ...
মূল রামায়ণের সঙ্গে এই কাহিনির একটা বড় পার্থক্য হল এই কাহিনি অনেকটাই নারীকেন্দ্রিক। মন্দোদরীকে তাঁর প্রাপ্য ন্যায়বিচার বা পোয়েটিক জাস্টিস - যাই বলা হোক না কেন - সেটি দেবার জন্যই সীতার জন্ম এখানে। গৃৎসমদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেও তাঁর জন্ম বলা যায়। কোনও একটা প্রফেসিকে সার্থক করার জন্য পুরাণকাহিনিতে রাম বা কৃষ্ণের মত নায়কদের জন্ম হত। অদ্ভুত রামায়ণে এই ভূমিকা সীতার। অর্থাৎ একটি নারীচরিত্রকে এখানে মসিহার স্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আরও লক্ষণীয়, যে এখানে গৃৎসমদ কন্যালাভের আশায় দুগ্ধসঞ্চয় করতেন, অথচ সেই যুগে পুত্রেষ্টিযজ্ঞের প্রচলন আমরা বেশি দেখতে পাই। এটিও বেশ ব্যতিক্রমী। ... ...
এই গত সাত আট বছর নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এই মাধ্যমে কাজ করে, গালাগালি আর ঘৃ্ণার যে পাহাড়নির্মাণ প্রতিদিন দেখে গিয়েছি। তাকে প্রতিহত করার জন্য কেউ কোনও ব্যবস্থা নিল না কেন! আমি বর্ম পরে রয়েছি মানে বিষয়টা নেই তা তো নয়। অবিরল যে ভাবে লড়ে চলে দুটো গোষ্ঠী, দু'জন ব্যক্তি, তাতে প্রতি পলে ক্ষয়ে যায় সভ্যতার বাঁধনটা। প্রতি মুহূর্তে আলগা হয় সম্পর্ক। রেশ রেখে যায় ঘৃণা। অথচ কেউ কোনও ভাবেই একে নিয়ন্ত্রণ করে না। কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত? ... ...
অর-দা আমাকে মাঝে মাঝেই বলে, “সুকান, তুই তো সবাইকে নিয়েই লিখিস – আমার ব্যবসাটা নিয়ে লেখ না একদিন”। মজা করেই বলে – আমি চেষ্টা করলেও কিই বা আর করতে পারব! আমার আর পরিচিতি কতটুকু। কোভিডের জন্য দাদার ব্যবসা বিশাল ক্ষতিগ্রস্ত – আরো অনেক ক্ষুদ্র এবং ছোট ব্যবসায়ীদের মত। তা গুরুচণ্ডা৯ কর্তৃপক্ষ যখন বলল, পুজো সংখ্যায় ‘ওরা কেমন আছে’ – এইভাবে কোভিডকালের ব্যবসায়ীদের কথা ছাপাতে ইচ্ছুক – তখন মনে এল দাদার ব্যবসার কথা। এই লেখায় আমি ফার্স্ট-হ্যান্ড অভিজ্ঞতাতেই জোর দিয়েছি – তাই একদিন এক প্রশ্নমালা তৈরি করে দাদার ইন্টারভিউ নিলাম। তবে এ শুধু আমার দাদার একার কাপড়ের ব্যবসার গল্প নয় – ওর কথা, ওই অঞ্চলের বাকি ক্ষুদ্র এবং ছোট কাপড়ের ব্যবসায়ীদের জীবন কথা – এই ভাবেই এখন আছে তারা। ... ...
যে কোনো বাঙলা সাহিত্য বা ভাষার ইতিহাসের স্কুলপাঠ্য সিলেবাস বা বইতে চর্যাপদকেই আরম্ভ বা প্রথম নিদর্শন বলা হয়েছে। যেটা আমাদের স্কুলপাঠ্য বইতে লেখা নেই, সেটা হল, এই পুঁথি শুধু বাঙলার নয়, ওড়িয়া, অহমীয়া, ভোজপুরি এইরকম বেশ কয়েকটি ভাষারও পূর্বপুরুষ। ওই সব ভাষার সাহিত্যের ইতিহাস বইতেও একই কথা লেখা আছে। তাই প্রশ্ন আসে, এটা আদি নিদর্শন বটে, কিন্তু এ ভাষা তখনো কি বাঙলা হয়নি? এই চর্যাপদের কবি বা গীতিকাররা নিজেদের কোথাকার লোক ভাবতেন? তাঁরা কি নিজেদের বঙ্গবাসী ভাবতেন? এই ভাষাকে কোন সময় থেকে বাঙ্গালা বলা শুরু হয়েছিল? বাঙ্গাল অরিজিনালি কারা ছিল? এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা, যা স্কুলপাঠ্য বইয়ে নেই.. পড়তে থাকুন। ... ...
গ্রামের নাম এদেসমেত্তা, জেলা বিজাপুর, ছত্তিসগড়। জেলাশহর থেকে ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত এই গ্রামে যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই। ১৭-১৮ মে, ২০১৩র রাতে গ্রামের ৩০-৪০ জন মানুষ বীজ পান্ডুম উৎসব পালন করার জন্য মিলিত হয়েছে। বীজ পান্ডুম হচ্ছে ফসলের বীজের মাধ্যমে নতুন জীবনের আগমনকে উদযাপিত করা। প্রায় হাজার জনের নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের ঘিরে ধরে, নির্বিচারে গুলি চালায়; ৮ জন নিহত হন, যার মধ্যে ৪ জন নাবালক। মাওবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কোবরা ইউনিট উল্লসিত, তাঁরা উগ্রপন্থীদের একটি দলকে নিকেশ করে দিয়েছে। এলাকার মানুষ মানতে নারাজ, তাঁরা বলেন যে এঁরা সবাই ছিলেন নিরীহ গ্রামবাসী, কেউ মাওবাদী নন। তুমুল হৈচৈ হয়। তখন রাজ্যে রমন সিংয়ের বিজেপি সরকার যাদের প্রবল দমন-পীড়নে আদিবাসীরা আতঙ্কগ্রস্ত। ঘটনাটি নিয়ে এতো সাড়া পড়ে যায় যে সেই সরকারও বাধ্য হয় বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে। ... ...