আরও কথা বল বরং, আরও দৃশ্য তৈরি হোক, মুহূর্তের গর্ভে সারি সারি বিন্দু বিন্দু মুহূর্তের অণু-পরমাণুগুলি। বিশ্বাস করো, এখনও জমাই আমি পাগলের মতো তোমার সঙ্গে কাটানো সময়গুলি। প্রতিটি বাক্য, তার মধ্যের আলাদা আলাদা শব্দরা, তার উচ্চারণ, তখন কী বৃষ্টি হচ্ছিল না কি ফুরফুরে হাওয়া, কেমন ছিল এই কালভার্টের পাশে অল্প ঘাসগুলি, ইটভাটি থেকে ধোঁয়া উড়ছিল নাকি তখন, ফড়িং উড়ছিল কি না। জানো মস্ত এক রাজ্য বানিয়েছি অন্দরে। এইসব মুহূর্ত নিয়ে। তুমি শহরে ফিরলে আমিও টুপ করে ওখানে বেড়াতে চলে যাই। এক একটা দেখা হওয়ার দিনের এক একটা গুমটি দোকানঘরের মতো সেই চুরানব্বই সালের এগারোই নভেম্বর থেকে পর পর সাজানো। ঈশ, যদি তোমাকে দেখানো যেত! ... ...
...রাত শেষ হয়ে যাবে শব্দের শেষ তরঙ্গ হবে আগামী নদীর ডাক প্রতিটি ঘাট ছুঁয়ে রেখে যাবে নিজস্ব এই রোগ যেখানে দাঁড়িয়ে কেউ মুক্তি পাবেনা ... ... ...
একটি সন্ধ্যা হচ্ছে, যেন সব সন্তান দূরে চলে গেছে একা কোনো মা শাঁখ বাজাচ্ছে, ঘরের আলোয় ফুটে ফুটে উঠছে চলে যাওয়া মেয়েদের পা শ্যামলা সবুজ তরল মুখের ছায়াগুলো পালং... ... ...
কালো পৃষ্ঠা, লাল কালি, সাদা পিঁপড়ে সবটাই অদেখা ও না-ছোঁয়া। এবং, এই পরিপ্রেক্ষিতে সপাট তানে একটি আধখাওয়া হিউম্যান বডিকে, যার মুন্ডটি পুরুষ, যার দেহটি নারী, তাকে ছিন্ন করে দেওয়া হল। দৃশ্যটি ঘটিবামাত্র, পৃষ্ঠাটি নারী হয়ে ওঠে, কলমটি পুরুষ, পিঁপড়েটি লাল, সাদা ও কালো হয়ে ওঠে। ... ...
তোমার ভেতর একটি পতঙ্গ আছে, অবাক ডানার হাসিমুখে সারাদিন ফুলে ফুলে ঘোরে। কিন্তু তুমি জানো বি-কিপার সরল মেশিন হাতে বন্দরের দিকে গেছে। লুব্ধ ক্ষারের মেশিন অতি দ্রুত প্রহরকে খায়, জলযান খায়, ভাষাভঙ্গি খায় মাতাদোর ও ষাঁড়ের মধ্যে পড়ে থাকা চিৎকার হামাগুড়ি দিয়ে মেশিনের পেটের ভেতর ঢোকে তবু পতঙ্গ তোমার বিকেলবেলায় অর্কিড-হাউস ঘুরে পাইনের দিকে আসে। ... ...
তোমার চোখের দিকে তাকালে দেখতে পাই স্বচ্ছ জলের নীচে কবেকার পুরোনো শ্যাওলা নড়ছে। নুড়িপাথরে হামা দিয়ে কোথাও, কোনো গন্তব্যে এগিয়ে গেল একটি রঙিন কাঁকড়া। পিচ্ছিল পাথরেরা যেন তাদের বংশপ্রদীপ নিয়ে বসে আছে। চোখ সরিয়ে নিই। কয়েক পা পিছিয়ে যে আয়ত দেওয়াল সময়েরও অতীত, তার কাছাকাছি চলে আসি। হয়তো-বা এমন স্থির বায়ুর জগতে কিছুটা মনোরম শব্দ তুলে বসার আসনে বসেও পড়ি। বসার আসনে পুরনো একটি চাদর। ... ...