হাজার বছর আগের কবিরা এমনকি আজকের ফেসবুকে স্টেটাস আপডেট দেওয়া কবিদের সঙ্গেই যেন কিভাবে এক অলীক আত্মীয়তায় রয়েছেন। তাই , কাহ্নু, কৃত্তিবাস, জয়, বিনয় , সুনীল, মৃদুল, জয়দেব(বসু), সোমনাথ যেন নিরবচ্ছিন্ন কালপ্রবাহে একই সূত্রে বাঁধা, কিন্তু তাদের দেশ একই।সে আমাদের বাংলাদেশ, আমাদেরই বাংলা রে।মনে পড়ে গেল সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের এই কবিতায় সত্যজিৎ রায়ের কথা। মনে পড়ে গেল বিভূতি ভূষণ। অপুর হাতে ধরা গ্লোব, সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের এই কবিতা আবৃত্তি করে অপু এই পুরস্কার জিতেছিল। সুদুরের পিয়াসী, কৌতূহলী, অপু এই গ্লোব সবসময় হাতে রাখত, সত্যজিতের ‘অপরাজিত’ সাক্ষ্য দেয়। কিন্তু এও মনে পড়ে গেল সত্যেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের অভিযোগ: ' সত্যেন করতেন কিছু/যদি না ছুটতেন ছন্দের পিছু পিছু'। ... ...
শতপথ ব্রাহ্মণের | আমি একা এক পথে হেঁটে হৈমবতী রাজকন্যা পরবাসে কুলটা হলাম... ... ...
সেই যে জারজ পিঁপড়ে, জারে জন্ম যার জারে মৃত্যু জারে বিয়ে জারেতে সংসার... ... ...
... ...
এ কদিন তুমি আসোনি কেন গো?অসুখবিসুখ করেছিল নাকি? সে বলল - না রে বাপ,ছেলেটা মরে গেল। এই কথাকটি বলে জল থাবড়াতে থাবড়াতে সে চিৎকার করে বাটা মাছ,কাৎলা মাছ,পাঙাশ,সিলভার কাপ বলে খদ্দের ডাকতে লাগল। নোয়াপাড়া থেকে আসা আমার প্রতিদিনের দেখা মা, শোককে জলে ডুবিয়ে মাছ বেচতে এসেছে। নাহলে পেটের খাবার জুটবে না।খিদের কাছে ম্লান হওয়া শোক আমার চেতনার ধুড়ধুড়ি নেড়ে দিয়েছে। ... ...
হে ধর্ষিতা, তুমি জান, শরীর কোথায় শেষ হয় কোথা থেকে শুরু হয় অদ্ভুত, দ্বিতীয় অপমান... ... ...
সেই কজনের ভিড়ে আমি ছিলাম খানিক আবিন্যস্ত। ভিড়ের মধ্যে একজন তো, তাতেই হবে। ঐকতানের মাধ্যে হলেও ঠিক আলাদা আওয়াজটি তার চিনছি তাতেই ফিনকি দিয়ে রঙ ছড়ালো শব্দগুলো। আবীর প্যাকেট হাতেই ছিল। নিজের কাছে অচেনা তাও তোমার কাছাকাছি ছিল। রোদ্দুরে সব ঝলসে ওঠা অভ্রকুঁচি চোখ ধাঁধিয়ে, সেই সুরে এক ডুবতে থাকা খুব অচেনা আবেশ ছিল। ইচ্ছে বলে কিছু একটা অল্প আবীর দিতে চাওয়া অনেকাদিনের স্বপ্ন ছিল। সেই আবেশে ভেসে গিয়ে ভুল ঠিকানায় ঠিক কথাটা স্রেফ একটিবার বলার ছিল। হাজার হাজার রঙের ফোঁটার সেই একটাই জীবন ছিল। ... ...
এসে পড়েছে ১৪২৫ নববর্ষ সংখ্যার বকেয়া কবিতা। এই পর্বে লিখেছেন মিতুল দত্ত, চিরশ্রী দেবনাথ, সোনালী সেনগুপ্ত, চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, কল্পর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়, হিন্দোল ভট্টাচার্য। ... ...
আমি কিন্তু বড়ো পত্রিকায় লেখার পক্ষে বিপক্ষে সওয়াল করছিনা। যে সব গুরুত্বপূর্ণ বই প্রতিষ্ঠানের আলো পাইনি, সেই বই যদি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হতো তবে তা খারাপ হয়ে যেত না। অন্য দিকে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত (যদিও খুব কম, বাংলা ভাষায় তো বটেই) বইমাত্রই পড়া যায় না এমনটিও নয়। প্রতিষ্ঠানে সমস্ত লেখকদের লেখার গণতন্ত্র ফিরে আসুক এমন অদ্ভত দাবিও আমি করছিনা। আমি বলছি একটা প্রতিরোধ ব্যবস্থার কথা যা একটি ছোট পত্রিকার লেখকরাই ঠিক করবেন। খারাপ লাগে, যখন রানাঘাটের একটি পত্রিকা, বীরভূমের একটি পত্রিকা কলকাতার চেনা লেখকগোষ্ঠী নিয়েই আত্মপ্রকাশ করে। ... ...
অ্যাক্রস্টিকের সঙ্গে অ্যাক্রোব্যাটের শব্দগত মিল দেখে অভিধান খোলা গেল। তাতে অ্যাক্রোব্যাটের মানে লেখা আছে মল্ল, মত পরিবর্তনকারী, দড়াবাজিকর, ব্যায়ামবিদ, ঘনঘন দলপরিবর্তনকারী, রজ্জুনর্তক, ব্যায়ামকুশলী। শব্দের মিলটা কিছু না, তবে অ্যাক্রস্টিক লেখার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ, দড়াবাজি, রজ্জুনর্তন, ব্যায়াম - এইসবের অল্প মিল আছে। সমবেতভাবে মনে হল, পুজোর ফুর্তি, হাঁটাহাঁটি, জুতোয় ফোস্কা, বাঁকা এয়ারগানে বেলুন - এসব তো সুদূর, শব্দ, ছন্দ নিয়ে একটু রজ্জুনর্তনই না হয় হোক। ভাবের ঘরে চুরি হলে কী, আমাদের ভঙ্গীও কম নয়। পাঠক যদি আমোদ পান তাহলেই ধন্য। ... ...
একটা নধর আকারের গোটা পেঁয়াজ, পান্তাভাতের থালার পাশে। এই স্বপ্নটা বিলাস ক’দিন ধরেই দেখছে। আসলে এখন গোটা একটা পেঁয়াজ একবেলায় কে আর খেতে পাবে? অর্ধেক বা সিকিভাগ বরাদ্দ, যা দাম বাড়ল… কিছু করার নেই। বাদ চলেও যেতে পারে একদম। তখন শুধু লঙ্কার আচার দিয়েই… বউ দু’আঙুল দিয়ে যেভাবে সিঁদুর পরত, সেভাবে একটিপ লাল লঙ্কার আচার কৌটো থেকে তুলে নেবে সে। ... ...
বেলা চলে গেছে, ঘোচেনি এখনো খেলা রিক্সা চলেছে অংক স্যারের বাড়ি রাধিকার ব্যাগে কেসিনাগ, বই খাতা স্কুল থেকে সোজা, বাসন্তী রং শাড়ি ... ...
আফজল আহমেদ সৈয়দ। উর্দু কবি ও অনুবাদক। জন্ম অবিভক্ত ভারতবর্ষের গাজীপুরে। ১৯৪৬ সালে। ১৯৭৬ থেকে বসবাস পাকিস্তানের করাচিতে। পেশায় কীটপতঙ্গ বিশারদ। উর্দু নাজম-এর অন্যতম আধুনিক কবি। নাজম লেখা হয় ছন্দোবদ্ধভাবে এবং মুক্ত বা গদ্যছন্দেও। তাঁর উর্দু নাজমের অনুবাদ প্রকাশিত হয় ইংরিজিতে। ... ...
পয়লা একলা - ঐ একই হলো, এমনিতেও পয়লা হলে সচরাচর একলা হয়। সে যাই হোক, সংক্রান্তি পেরিয়ে গেল, আজ কবিতার শুভ হালখাতা মহরৎ। কবিতার ভৌগোলিক গন্ডী হয়না, কিন্তু সাহিত্যের ভূগোল কিছু থাকে তো। ক'দিন আগেই আলোচনা হচ্ছিল বাংলা সাহিত্যের কলকাতা-কেন্দ্রিকতা নিয়ে। সেই ভূগোলের সীমানা ভাঙার চেষ্টা করছি, আপাতত তার সামান্য ছোঁয়া এখানেও থাকবে। হুগলী কপোতাক্ষ আড়িয়াল খাঁ বুঢ়া লুঈ ছুঁয়ে সুদিন আসুক, নতুন বছরের কবিতা পড়ি আমরা। এই পর্বে লিখছেন যশোধরা রায়চৌধুরী, রামেশ্বর ভট্টাচার্য, মিঠুন ভৌমিক, সোমনাথ রায়, জারিফা জাহান, সায়ন কর ভৌমিক, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, সুমন মান্না। প্রকাশিত হল নববর্ষ ১৪২৫ সংখ্যার প্রথম পর্বের কবিতাগুলি। খুব শিগ্গিরই বেরুবে আরো কবিতা, এই সংখ্যার পরের পর্বে। ... ...