"আমি উচ্চারণ করছি না হর্ষ আমি উচ্চারণ করছি না বিষাদ শুধু ধীর ও অনিবার্য হাতে তোমার বিসদৃশ মাথা ছিঁড়ে ফেলছি" ... ...
যে চোখ সব কিছু দেখে, সে কিন্তু নিজেকে দেখতে পায় না, তাই চোখে পোকা পড়লে আমরা পাশের লোকটাকে বলি দেখতে। ডাক্তার সবার অপারেশন করে, তার পেটে ব্যামো হলে? জোনাকির নিজের বুকে আলো, তবু সে ধেয়ে আসে আলোর উৎসের দিকে। এ উদাহরণ অন্তহীন। জ্ঞানী লোকেরা হলে উদাহরণ দিয়েই বুঝিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু আপনি পড়েছেন আমার পাল্লায়। অত জ্ঞানী হলে আজ আমি প্রফেসর হতুম। সে যাক গে। ... ...
মণিশঙ্কর বিশ্বাসের কবিতা ... ...
কবিতা লেখা ও পড়ার, কবিতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাবার পরেই অবশ্যম্ভাবী প্রশ্ন আসে, তার বহুমুখী অভিঘাত নিয়ে। যেহেতু কবিতা একটি মাধ্যম যেখানে একজন লেখক ও পাঠক একটি স্বতন্ত্র পথে নিজেদের মধ্যে মত বিনিময় করছেন, তাই এই বিষয়ে কোন সাধারণ উপলব্ধি বলে কিছু হয়না। আমরা এরকম বলতে পারিনা যে জীবনানন্দের বনলতা সেন যা বলতে চেয়েছিলেন তার "মানে" ঠিক এই। কবি ও পাঠকের কথোপথন অনেকটা দুটি মানুষের মধ্যে একান্ত নিভৃত টেলিফোনে বাক্যালাপের মত হয়ে দাঁড়ায়। আগে একটা সময় মনে করা হত এই কথোপকথনের নিজস্ব ব্যাকরণ থাকা উচিত, কালক্রমে সেই মজবুত বাঁধন অনেক আলগা হয়েছে। এখন লেখক ও পাঠক দুজনের ব্যক্তিগত যাপন ও দর্শনের প্রত্যক্ষ প্রভাব নির্দিষ্ট করে দেয় লেখায় কী থাকবে, পাঠকের সেই জিনিস ভালো লাগবে কিনা, এবং ব্যাকরণ বহির্ভূত কবিতা বলে সেইভাবে আর হয়ত কিছু নেই, যদি কবিতার সার্থকতা ভালো লাগা দিয়ে নির্ধারিত হয়। অবশ্য ভালো লাগার বাইরেও, শিল্পবোধ বা বহুদিন ধরে মানুষকে ভাবিয়ে তোলার নিরিখেও কবিতার ভালোমন্দ বিচার হয়, এবং কী সেই আশ্চর্য ভারসাম্য যা কবিতাকে কালজয়ী ও পাঠকের অন্তরঙ্গ করে, সেই কূট তর্ক আপাতত আমরা সরিয়ে রাখবো। নাট্যমঞ্চে যেমন আলোর বৃত্ত ফেলে ফেলে ঠিক করা হয় দর্শকের কী দেখা উচিত, সেইভাবে জীবনদর্শনের ফোকাস দিয়ে কবি ঠিক করেন কী লিখবেন, পাঠক ঠিক করেন সে জিনিস তার পছন্দের কিনা। এই দ্বন্দ্ব, এই কখনও ভালো কখনও খারাপ লাগার চর্চাকেই কেউ কেউ কবি ও পাঠকের মধ্যে ঘটে চলা নিরন্তর লড়াই বলেছেন। উৎসব সংখ্যা দ্বিতীয় পর্বের কবিতা। এই পর্বে লিখেছেন যশোধরা রায়চৌধুরী, চিরশ্রী দেবনাথ, হিন্দোল ভট্টাচার্য, সাম্যব্রত জোয়ারদার, হীরক সরকার, সোমনাথ রায়, জগন্নাথদেব মন্ডল এবং সোনালী সেনগুপ্ত। ... ...
জয় শ্রীরামের ভিরাট দেশে আইন কানুন সর্বনেশে! কুর্তা টুপি পরলে তাকে নেহরু ভেবে ক্যাম্পে রাখে ... ...
'হাত-রথ থাকতে থাকতেই পৃথিবীর সবকিছু দেখে ফেলা উচিত' এমন একটা কথা বলত ক্ষয়ে আসা এক বৃদ্ধা। যখন বলত তখন মুখ থাকত জানলার দিকে ঘোরানো,দৃষ্টি লোহার শিক পেরিয়ে অনেক দূরে। হাত অবধি বোঝা যেত কিন্তু রথ কী করে থাকতে পারে একজন মানুষের! রামায়ণ মহাভারতের কাল তো পেরিয়ে এসেছি অনেকদিন। ওঁর নিজের শরীরকে চাকা লাগানো কাঠের রথ বলে মনে হত হয়তো। ... ...
উলের বলের মত ক্ষয়মান প্রতিটি বিকেল অতএব হে পাঠক অকালপ্রবীণ কাঁটা ও চুলের মাঝে এইবেলা মাছ খুঁজে নিন সায়াহ্নে আপন পুচ্ছ ধাওয়া করা বিড়ালের শোভনীয় নয় | ... ...
যাহা ষোল তাহাই আঠেরো। রইল আঠেরোজন কবির ষোড়শোপচার। ... ...
নিকারাগুয়ার কবি খিওকোন্দা বেলি'র কবিতা উনো নো এসকোহে-র অনুবাদ 'কেউ বেছে নেয় না', করেছেন জয়া চৌধুরী। ... ...
নারদ কহিলা মাগো ইদানিং দেখি। ঘরে ঘরে ক্যানসার স্ত্রী রোগ এসব কী! লক্ষ্মী কহেন এই কুস্বাস্থ্যের মূল। অসুস্থ অভ্যাস আর শিক্ষাগুলি ভুল।। আজ হইতে শুনে রাখো আমার আশয়। ঋতুকথা নহে আর লজ্জার বিষয়।। ঋতুকালে ‘বস্ত্রখণ্ড’ নাহি নিও কভু। তব সুস্থতা লাগি দিয়াছেন প্রভু।। ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন’ মূল্য নহে বেশি। স্ত্রীরোগকে দূরে রাখে দৃঢ় থাকে পেশী।। পেশী দৃঢ় থাকে যদি জানো কি তখন। প্রতিরোধ করা যায় জরায়ু স্খলন।। অপরিচ্ছন্ন বস্ত্রখণ্ড রোগ আনে শত। শতরোগে জীর্ণ নারী কষ্ট পাবে কত।। আরো বলি শরীরের পরিণতি হলে। তবেই কন্যারে নিও বিবাহের স্থলে।। বিবাহ করিবে যবে হবে অষ্টাদশী। দু’বৎসর পতিসহ থাকো হাসিখুশি।। ... ...
"সকল শোকের কাছে পড়ে থাকে পাথরের হাত একটি বিষণ্ণ গাছ ছায়া নামে সূর্য ডুবে যায় কোথা যায়, কার কাছে নামিয়ে রেখেছে তার সারা দিন ভার" শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের চারটি কবিতা ... ...
শুক্কুরবার রাতের কবিতার পাতায় আজ প্রকাশিত হলো কবি ও গদ্যকার বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ। ... ...
তোমাকে পড়ছি রাষ্ট্রদ্রোহী, তোমাকে খুঁড়ছি নিরন্তর যাওয়া-আসা সেও চলতেই থাকে, পুড়ে যায় পোড়ো মাটির ঘর ... ...
শব্দহীন সাইকেল আসে৷ বেল বাজেনি ক্রিং৷ বেল বেজেছে ক্রিং। ঘরঘর করে আহ্লাদে ডেকে ওঠেনি পোষ মাদীটা। টের পায় সাড়ে তিন বছর৷ খুলে দেয় কাঠের পৌনে চার ফুটে হুড়কা আর চেয়ার টেনে ছয় ফুট উঁচুতে লোহার ছিটকিনী৷ "আব্বু আসছে"৷ এইবার গলাগলি ঘুম- ফজর আমার.. ফিশফিশানি দুপুর আসে৷ রঙিন ফড়িং, বোয়ামে নীল চোপড়া মাছ! ঘুম আর ভলো লাগে না৷ মনেহয় দিনমান খেলি "ঘুঘু'র তোর তরকারি" খেলতে খেলতে জহর গড়িয়ে আছর৷ পালানো বাছুর। সুতো ছিড়া ঘুড়ি৷ সন্ধ্যায় রুলটানা খাতা বেঁকে বেঁকে যায়৷ ক্লাস ফাইভের পদ্য লেখার রোগ… ... ...
কালো পৃষ্ঠা, লাল কালি, সাদা পিঁপড়ে সবটাই অদেখা ও না-ছোঁয়া। এবং, এই পরিপ্রেক্ষিতে সপাট তানে একটি আধখাওয়া হিউম্যান বডিকে, যার মুন্ডটি পুরুষ, যার দেহটি নারী, তাকে ছিন্ন করে দেওয়া হল। দৃশ্যটি ঘটিবামাত্র, পৃষ্ঠাটি নারী হয়ে ওঠে, কলমটি পুরুষ, পিঁপড়েটি লাল, সাদা ও কালো হয়ে ওঠে। ... ...
একটি সন্ধ্যা হচ্ছে, যেন সব সন্তান দূরে চলে গেছে একা কোনো মা শাঁখ বাজাচ্ছে, ঘরের আলোয় ফুটে ফুটে উঠছে চলে যাওয়া মেয়েদের পা শ্যামলা সবুজ তরল মুখের ছায়াগুলো পালং... ... ...