আমরা পাই সারগর্ভ উপদেশ, জ্ঞানের ফুলঝুরি, আমাদের কি করা উচিত ছিল, তার লম্বা ফিরিস্তি, ভবিষ্যতে কি শিক্ষা নেওয়া উচিত, নিজেকে কেমনভাবে পাল্টে নেওয়া উচিত, কি করলে এমনটা ঘটতো না। এ জেনে আমার কি লাভ? আমি কি পালটে ফেলবো এসব জেনে? আমি বিষ খেয়েছি, জেনে বা না জেনে, কিন্তু তোমার কাছে আমি শুধু একটু উপশম চাই। তার বদলে আমরা পাই, পুকুরে ডুবতে থাকা আপনাকে না বাঁচিয়ে, সাঁতার না জেনে আপনার পুকুরে নামা খুব অন্যায় হয়েছে, সেই মতামত, পুকুরের পাড়ে সাবধানে দাঁড়িয়ে থাকা লোকেদের থেকে। আর তারা কে? তারা বলে তারা আপনার বন্ধু। বলে, আমরা তোমার বন্ধু না হলে কি দরকার ছিল আমাদের সময় নষ্ট করে এইসব বলার। কিন্তু আপনি কি চান, আপনার কি দরকার, সেটা কেউ শুনেছে তাদের মধ্যে? ... ...
আমি কিন্তু বড়ো পত্রিকায় লেখার পক্ষে বিপক্ষে সওয়াল করছিনা। যে সব গুরুত্বপূর্ণ বই প্রতিষ্ঠানের আলো পাইনি, সেই বই যদি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত হতো তবে তা খারাপ হয়ে যেত না। অন্য দিকে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত (যদিও খুব কম, বাংলা ভাষায় তো বটেই) বইমাত্রই পড়া যায় না এমনটিও নয়। প্রতিষ্ঠানে সমস্ত লেখকদের লেখার গণতন্ত্র ফিরে আসুক এমন অদ্ভত দাবিও আমি করছিনা। আমি বলছি একটা প্রতিরোধ ব্যবস্থার কথা যা একটি ছোট পত্রিকার লেখকরাই ঠিক করবেন। খারাপ লাগে, যখন রানাঘাটের একটি পত্রিকা, বীরভূমের একটি পত্রিকা কলকাতার চেনা লেখকগোষ্ঠী নিয়েই আত্মপ্রকাশ করে। ... ...
"আমি উচ্চারণ করছি না হর্ষ আমি উচ্চারণ করছি না বিষাদ শুধু ধীর ও অনিবার্য হাতে তোমার বিসদৃশ মাথা ছিঁড়ে ফেলছি" ... ...
যে চোখ সব কিছু দেখে, সে কিন্তু নিজেকে দেখতে পায় না, তাই চোখে পোকা পড়লে আমরা পাশের লোকটাকে বলি দেখতে। ডাক্তার সবার অপারেশন করে, তার পেটে ব্যামো হলে? জোনাকির নিজের বুকে আলো, তবু সে ধেয়ে আসে আলোর উৎসের দিকে। এ উদাহরণ অন্তহীন। জ্ঞানী লোকেরা হলে উদাহরণ দিয়েই বুঝিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু আপনি পড়েছেন আমার পাল্লায়। অত জ্ঞানী হলে আজ আমি প্রফেসর হতুম। সে যাক গে। ... ...
এ কদিন তুমি আসোনি কেন গো?অসুখবিসুখ করেছিল নাকি? সে বলল - না রে বাপ,ছেলেটা মরে গেল। এই কথাকটি বলে জল থাবড়াতে থাবড়াতে সে চিৎকার করে বাটা মাছ,কাৎলা মাছ,পাঙাশ,সিলভার কাপ বলে খদ্দের ডাকতে লাগল। নোয়াপাড়া থেকে আসা আমার প্রতিদিনের দেখা মা, শোককে জলে ডুবিয়ে মাছ বেচতে এসেছে। নাহলে পেটের খাবার জুটবে না।খিদের কাছে ম্লান হওয়া শোক আমার চেতনার ধুড়ধুড়ি নেড়ে দিয়েছে। ... ...
শুক্কুরবার রাতের কবিতার পাতায় আজ প্রকাশিত হলো কবি ও গদ্যকার বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ। ... ...
... ...
... আমার পুরোনো নিমগাছ চুড়োয় দেখেছি তার বাঁধা আছে পুজোর মাইক হেমন্তবাতাসের ঝরা গানে তারা-ঝিকমিক চাঁদের বাড়িতে ফেরা পাখি ... ... ...
আর কী-বা সেবা দিতে পারি ফ্রিতে, দুশমনের ঠাণ্ডাতম দিনে... একদিন ছন্দ মেলাতাম, একদিন অন্ত্যমিল দিতাম, একদিন প্রেম ভেঙে যাওয়ার ছমাস যেতে না যেতেই ছটফট করতাম নতুন প্রেমের জন্য, আর এখন হারপিকের ফাঁকা কৌটোর দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিতে পারি সারাবসন্ত... আগের প্রজন্মের উন্মাদেরা সব কী করছেন এখন? নতুন বইটা তারা কি পড়লেন? কারুর হাতে কি জ্যান্ত হলো? কেঁপে উঠল কি কারও তালুর ওপর? কোথায় প্যাঁচাদের চিয়ার্স? আজ মাপবো হেমিস্ফিয়ারের জ্যামিতি-আকার-আয়তন... তার ব্যাপ্তি... একটা লোক অনর্গল হয়ে গ্যাছে বাংলাভাষার সাথে মিশে... এটা রোগ না নেশা না সিদ্ধি না অভিশাপ না চক্রান্ত না ভ্রান্তি না প্রতিভা না পরিশ্রম না নিউরোপ্রবাহ না প্রলাপ না পলায়ন না প্রারব্ধ না ট্রান্স না মোনোটনি...? ... ...
বললুম : এরকম মানে ? // এরকম মানে কেমন যেন বাউল বাউল / দেহতত্ব তোমার কবিতা জুড়ে / রসে-রসে টুপটুপে / সেই প্রথম থেকেই লিখছ এই রকম কবিতা / কেন গো ? / জিগ্যেস করল তরুণী ... ...
পদ্মপাতায় জল / জল, তুমি কার? ওর না আমার? / কলহে ব্যাপৃত হয়ে পড়ি। // কাঁচা ইলিশের ঝোল পুড়ে যায়। // চোখের নাগাল ছুঁয়ে নীলকন্ঠপাখি ঘুরে যায়। // ফুলের আঘ্রাণ উড়ে যায়। ... ...
বিশ্বরূপে মোহিত হলে মাটি খাবে ঘরের ছেলে / খুলো না ওর হাতের দড়ি আটকে রাখো রান্নাশালে / কোন্ মথুরায় চলে যাবে এইবার যদি সুযোগ মেলে / তখন দেখবে নন্দরানি শূন্য যে ঘর রাত পোহালে- // বলে দিও দিব্যি কেটে ঐ যমুনা আর না পেরোয় / পাড়ার মাঠেই খেলুক ঘুরুক নিজের পাঠে বসুক ভোরে / ননীর অঙ্গে ছপটি মেরো বকলে যদি না করে ভয় / যার অন্তরে জগৎ কাঁদে কাঁদাও তাকেই শাসন করে ... ...
যাইনি কখনো ও বাড়িতে / চানঘরে দেখিনি কখনো জল পড়ে যায়— / অথচ শরীর ভেজেনি একটুও / শুনিনি রবি ঠাকুরের গান বসবার ঘরে বসে / শুধু দেখেছি সিঁড়ি ঘরে আলো— ... ...
নতুন মালিক এলে গাছ গুলি ভয়ে জড়সড় / আগাছা আপদ ভেবে যদি ওরা উপড়ায় মুল / কিম্বা সাধের পাতা ছেঁটে কেটে বানায় অদ্ভুত / সান্ত্বনা চেয়েছে ওরা মাথা নুয়ে মাটির উপর ... ...
তুমিও সহজ মতো বিশ্বাস করেছ সবকিছু। / সত্য ভেবে এ সংসার। ভাঙা চাল। ভাতের কাঁকর / নীরবে না-পাওয়া নিয়ে আমিও জপেছি রাধানাম / ঝড় এলে উড়ে যায় চাল, শস্য, তাও বলি --'তিষ্ঠ ক্ষণকাল' / যেভাবে বানের জলে ভাসে কৃষিকাজ / কৃষকের মন ভাবে প্লাবিত এ মাটি / অধিক ফলন সুখে / বর্ষশেষে ভেজা নারী / কোথা থেকে কোথায় বা যায়! / ... ...
রোধ নিভছে। / পোড়া পায়ে তাকতবর মাটি / আহা, / কষ্ট আছে / দরকারে নরম চটির আংটায় / লুকিয়ে রাখলে / গোপন কথারাও / ... ... ...
দেশ জাতি দ্বেষ জাতি পোড়া / মাটির পুতুল দিয়ে / চিত্রনাট্য,স্টেজ, আলো, পর্দা সব রেডি, / সেট সাজিয়েছি... / মৃত্যু উপত্যকার... / / যাবতীয় আলো দর্শকের চোখে ! / মঞ্চ অন্ধকার | / ... ... ...
জয় শ্রীরামের ভিরাট দেশে আইন কানুন সর্বনেশে! কুর্তা টুপি পরলে তাকে নেহরু ভেবে ক্যাম্পে রাখে ... ...