বাংলার ভাগ্যাকাশে এখন ব্যোমকেশের দুই সত্ত্বাধিকারী, ঈশেন আর সত্যবাহন, ইয়ে মানে দত্তবাবু আর শীলবাবু। দত্তবাবু ল্যাপ শুরু করেছিলেন আগে, অন্যজন সদ্য যোগ দিয়েছেন। ওনার আগের ফিল্মটা দেখে মনে হয়েছিল, বজরা টজরা এনে ট্রিবিউট দিয়ে ফাটিয়ে দিতে চাইলেও, জ্ঞানের বহর প্রথমজনের চেয়ে একটু কম হওয়ায় হয়তো একটু বেশি সহনীয় হবে। কিন্তু এই পর্ব দেখে উপলব্ধি: এটা বাস্তবে দত্ত vs দত্ত। আসলে ট্রিবিউটের মধ্যেই কেলোটা লুকিয়ে ছিল। এতে উনি ট্রিবিউট দিয়েছেন স্বয়ং অঞ্জন দত্তকেই, একটু আদিবাসী নাচে আগন্তুক, রেসকোর্সের বাইরে সীমাবদ্ধ ইত্যাকার কিছু হালকা সত্যজিৎ বাদ দিলে। লোকেশন সেই এক ডুয়ার্স, ভিলেন সেই এক কৌশিক, গ্রেফতারির আগের সেই এক ধাঁচের বক্তৃতা, এবং জ্ঞানের বাটখারা। ফিরে এসে মনে হল ন্যাশনাল এনথেম ও ন্যাশনাল সং দিয়ে মোড়া এই সিনেমাটিতে কী কী চমক লাগলো, তারও লিস্টি করা দরকার। শুরুতে ড্রোন ক্যামেরায় রেল লাইনের বিহঙ্গদৃষ্টি অতি চমৎকার, কিন্তু তারপরেই চমক। রাইটার্সে বসে আছেন স্বয়ং অরিন্দম শীল, টেবিলে লেখা 'মুখ্য সচিব'। এবং তার পর থেকেই সত্যবতী, অজিত, বড় দারোগা সবাই বিন্দাস বলে যাচ্ছে মুখ্য সচিব অমুক, মুখ্য সচিব তসুক। ১৯৪৮এর আগস্টের আগেই 'মুখ্য সচিব' শব্দের এরূপ প্রসার ও গ্রহণযোগ্যতা দেখে তাক লাগার শুরু। আমার সহদ্রষ্টাকে বললাম, ইয়ে তখনও মাউন্টব্যাটেন আছেন, সংবিধান আসতে বহু দেরি তো, তিনি বললেন, চুপ করে দ্যাখ। দেখলাম। এবং এটা হজম করার পর আর কষ্ট হল না যখন দেখলাম সেই মুখ্য সচিবের ঘরের দেওয়ালে অখণ্ড বাংলার ম্যাপ, তিনি নিজেই সান্তালগোলার তদন্তের দায়িত্ব দিতে তো এসেইছেন সরকারের তরফ থেকে, সেই সান্তালগোলার সম্ভাব্য কোন কোন ব্যবসায়ী আসামী হতে পারেন তার লিস্টিও তিনিই পকেটে নিয়ে ঘোরেন, দারোগা নন, এসপি নন, এমনকি সিপিও নন। তা সেই তথাকথিত নগণ্য জায়গার ওসিকে সরাসরি নির্দেশ দেন মুখ্য সচিব, এবং তার পরেও সেই সচিবের পাঠানো খাস গোয়েন্দার সামনে সরাসরি তাচ্ছিল্য, হুমকি ইত্যাদি দেখাতে সাহস করেন আংরেজ জমানার সেই দারোগা। চুপ করে দেখা ছাড়া উপায় নেই। আমি তো কোন ছার, ব্যোমকেশ-ই চুপ। ... ...
তবে যে শুনিয়াছিলাম পুলিশ হইল শান্তিরক্ষক? তবে যে শুনিয়াছিলাম উহাদের কাজ সুকঠিন? তবে যে শুনিয়াছিলাম উহাদের অস্ত্র ব্যবহারের নির্দিষ্ট বিধি আছে? ইহাও শুনিয়াছিলাম যে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হইলেই আত্মরক্ষার্থে আক্রমনকারীকে আঘাত করিতে পারে, কিন্তু শান্তিরক্ষকদের, এমনকি আক্রান্ত হইলেও, আত্মরক্ষার্থে অস্ত্র ব্যবহারের নিয়ম নাই? ভুল শুনিয়াছিলাম সন্দেহ নাই। কিভাবে জানিলাম? পুলিশকর্তার বাণী শ্রবণ করিয়া। সংবাদে প্রকাশ লবণ হ্রদ উপনগরীতে একদল উন্মত্ত আন্দোলনকারী বিদ্যুৎ বিভাগের হেডাপিস আক্রমণ করিলে শান্তিরক্ষকরা গুলি চালায়। ... ...
"আঁতেল" এই শব্দটি বিগত কয়েক দশক ধরে বাঙলা ভাষা জগতে বিপুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং এই অতুলনীয় শব্দটিকে ঘিরে জনমানসে অদ্ভুত মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। ফরাসী ঘ্রাণমিশ্রিত এই শব্দটির উৎপত্তি সম্ভবত: "ইন্টেলেকচুয়াল" থেকে, যদিও শব্দটিকে বাঙলা ভাষার অভিধানে সরকারীভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে কিনা তা আমার অজ্ঞাত। কিন্তু এই শব্দটির বিচিত্র অর্থ এবং জনমানসে এর প্রভাবের কথা বিচার করে এই শব্দটির বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনার অবকাশ রয়েছে। ... ...
এবং শেষপাতে, ভিসি কা ইনসাফ! তিনি জানিয়েছিলেন, ঘটনা নিয়ে তদন্ত হবে| সে তদন্তের টিকিও আজ পর্যন্ত দেখা গ্যালো না| তিনি জানিয়েছিলেন, সব্বাই পরীক্ষা দেবে| কেউ দিলো না| মাসখানেক আগের কথা, বাহান্ন ঘন্টার ঘেরাওয়ের পর, যে রফা হয়েছিল, তাতে অধ্যাপকরা ওনার সাথে কথা বলে এসে জানান যে সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্তের পুরোটা নিয়েই ফের আলোচনা করা হবে| মিটিং ডাকা হলো, কিন্তু তাতে আলোচনার বিষয় বদলে গ্যালো| এরপরেও ওনার বিশ্বাসযোগ্যতা খুব থাকবে কি? ... ...
গত লোকসভা নির্বাচনে এইরকম একটি আপাত:নিরীহ শব্দ আমাদের খবরের কাগজের পাতায় উঠে এসেছিল। কথাটা হল "নিরপেক্ষ", অর্থাৎ যিনি কোন পক্ষেই মতামত দেন না। শব্দটা প্রশংসাসূচক। কিন্তু সত্যিই যিনি কারুর সাতে-পাঁচে থাকেন না, কাউকে ভালো-মন্দ বলেন না, তাঁকে ভালো বলার বা ভাবার কি কোন কারণ আছে? এইরকম লোক কিন্তু কোন অন্যায়েরই প্রতিবাদ করবেন না; ভেবে দেখুন তো, বাস্তবে তেমন লোকের ওপর আপনি কতটা ভরসা করতে পারবেন? আর আদালতের জজসাহেব এইরকম নিরপেক্ষ হলে তো কোন মামলারই কোনদিন নিষ্পত্তি হবে না! ... ...
প্রথমে অযোধ্যা তার পরে লন্ডন এবং সব শেষে বান্দোয়ানে উপর্যুপরি বোমাবিস্ফোরণে যারা বিস্মিত হয়েছেন, যাঁরা শখের গোয়েন্দাগিরি করে এই উপর্যুপরি বিস্ফোরণের কার্যকারণ সন্ধানে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে, যে এগুলি মূলত: প্রাকৃতিক ঘটনা। এবং প্রতিটি প্রাকৃতিক ঘটনারই কিছু বিধিদত্ত সময় থাকে। শীতকালে শীত পড়ে বর্ষাকালে বৃষ্টি। ভাদ্রমাসে কুকুররা পথে নামে, আর স্বরস্বতীপুজোয় ইশকুলের ছোঁড়া-ছুঁড়িরা। একমাত্র পূজাবার্ষিকী প্রসবের সময়েই কবি গর্ভযন্ত্রণায় ছটফট করেন, অন্যান্য সময়ে নিয়ম করে থলে হাতে বাজারে গিয়ে বেগুনের দরদাম করে থাকেন। সুধীজন জেনে খুশি হবেন যে এগুলি নিছকই প্রকৃতির নিয়ম। ... ...
আপনারা কি বলেন জানিনা, তবে এই একমেরু দুনিয়ার অধীশ্বরের মতই আমরাও মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। মানুষের মতামতের আমরা মূল্য দিই এবং জনতার রায় আমরা মাথা পেতে নিই। এটা যে শুধু কথার কথা নয়, তা জানানোর জন্য আমরা এক গণভোটের অয়োজন করেছি। ... ...
ভোট এল। ভোট গেল। দিল্লিতে গ্যাঁড়ার এই দ্বিতীয় লোকসভা ভোট। দেশের জন্য পঞ্চদশ। ভোট উপলক্ষ্যে কত ক্যাম্পেনিং হল, কত বার্গেনিং হল, বিস্তর কাদা আর গালাগালি বিনিময় হল, কিছুকিঞ্চিৎ জুতোও ছোঁড়া হল। তবু আমজনতার তাতে কিছুই এল গেল না। ... ...
টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসবাদী হানা জনিত সর্বশেষ ক্যাজুয়ালটিটির খবর পাওয়া গেল হালে, যা এতদিন জনচক্ষুর অগোচরে ছিল। অসমর্থিত সূত্রের খবরে প্রকাশ, জনৈক বিবাহিত শ্বেতকায় যুবক,যার কর্মস্থল ঐ যুগ্ম স্তম্ভের কোনো একটিতে ছিল, ঘটনার দিন অফিস ফাঁকি দিয়ে প্রেমিকার অ্যাপার্টমেন্টে প্রেমসাগরে নিমজ্জিত ছিলেন। স্বভাবতই সেই অ্যাপার্টমেন্টে টিভি ও রেডিও, দরজা ও জানালা ছিল বন্ধ। ... ...
ধ্বংসের মাঝেই লুকিয়ে থাকে পুনর্নির্মাণের বীজ। অন্ধকার যত লম্বা হয় ভোরের আলোর পথ ততই ত্বরান্বিত হয়। আর বসন্ত হল পুনর্নির্মাণের ঋতু। প্রবল শীতের দাপটের পরে বসন্তে রিক্ত শুষ্ক গাছের ডাল সবুজ পাতায় ভরে ওঠে। রঙীন ফুলের ভারে আনত বৃক্ষশাখার দৃশ্য সভ্যতার পুনর্নির্মাণেরই চিরন্তন জয়যাত্রা ঘোষণা করে। ধ্বংস দেখেছে অনেক আমাদের এই প্রিয় বাসভূমি। কিন্তু বার বার আমরা, এই অমৃতের সন্তানেরা আমাদের সব সৃজন, মেধা ও শ্রম দিয়ে সেই ধ্বংসস্তূপের উপর গড়ে তুলেছি নতুন সভ্যতার ইমারত। প্রতিবার আমাদের সাধনার ফল হয়েছে আগের থেকে মহৎ, আগের থেকে সুমিষ্ট। আগের থেকে উন্নত। উন্নততর। ... ...
প্রতি বারের মতো এবারও ফিসফিসের প্রশ্ন-উত্তর নাম-ধাম সবই বানানো। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। এতদিন মাথার উপর বস ছিলেন, সম্প্রতি একার ঘাড়ে একটি ব্রিজ বানানোর দায়িত্ব পড়েছে। বিম আর কলাম নিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। সহজে সিদ্ধিলাভের কোনো শর্টকাট আছে? ... ...
বাঙালির বগলে পাউডার। পন্ডস পাউডারের গোলাপি কৌটোটি অনেকদিনের । সেই কবে মা বা কাকির ড্রেসিং টেবিল থেকে টিনের সেই কৌটোটি ঝেড়ে দিয়ে, আমি ও বুটু মেঝেতে পাউডার ছড়িয়ে ব্যালে নাচ ব্যালে নাচ খেলেছিলাম পেছল শানে পা ঘষে। ফলত মাথা ফাটা আছাড় খেয়ে। সেই পন্ডসের জায়গায় আরো কিছু কিছু অ-ব্র্যান্ডেড নামের আনাগোনা ছিল, তার উবে গেছে গ্রীষ্মের সন্ধেতে ক্রমক্ষীয়মান পাউডারের গন্ধের মত । তাদের মধ্যে একটির নাম হালকা ভাবে মনে পড়ে, কিউটিকিউরা। কী অদ্ভুত নাম। আর বোধ হয় ছিল মাইসোর স্যান্ডালেএর কৌটোগুলোও। পরে ওগুলোতে কানের দুল, ক্লিপটিপ রাখা যেত, দিব্যি শক্তপোক্ত কৌটো। ... ...
সংবাদে প্রকাশ, যে মেয়েদের হোস্টেলে জনৈকা ছাত্রী তার পুরুষ বন্ধুকে নিয়ে প্রবেশ করার অপরাধে হোস্টেল এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির সুপ্রাচীন জীর্ণ ভবনে যেহেতু ঐতিহ্যপূর্ণ বাস্তুঘুঘুদের বাসস্থান, অতএব, আমরা এই মূহুর্তে ভুলে যাব, যে ছেলে এবং মেয়েদের আলাদা খোঁয়াড়ে ভরে রাখাটা প্রাগৈতিহাসিক একটি প্রথায় রূপান্তরিত হতে চলেছে সারা বিশ্ব জুড়ে, ভুলে যাব, যে এই অ্যান্টি ব্যারাকিং মুভমেন্ট ... ...
কোফু লশেমি বিশুদ্ধ সিনেমায় বিশ্বাস করেন। তাই কিছু বেয়াড়া সিনেমা ফ্যনাটিক বাদে তাঁর সিনেমা কেউ দেখে নি। কোফু লশেমির সিনেমা যখন দেখানো হয় তখন পর্দাটাকে রাখা হয় হলের মাঝখানে। আর তাকে ঘিরে গোল হয়ে চেয়ারে দর্শক বসে থাকেন। তবে চেয়ারগুলো যেন গায়ে গায়ে না থাকে। দুজন দর্শকের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব প্রায় তিন ফুটের মত। ন্যাড়া হলঘরে মধ্যে একটা পর্দা রেখে সিনেমা দেখা প্রায় তন্ত্রাভ্যাসের পর্যায়ে চলে যায়। বিখ্যাত ফিল্ম সমালোচক জারিদে কাদা এই সিনেমা সম্পর্কে বলেছেন: " Here cinema is not an art from but a ritual, not an expression but a blank, not something to marvel at, but something to have intercourse with '. ... ...
বাঁশ তো কাঁদবেই। যে বাঁশের ফিলামেন্টে প্রথম কৃত্রিম আলোকরশ্মি জ্বলে উঠল, যে বাঁশের কেল্লায় তিতুমীর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মহান যুদ্ধ লড়ে গেলেন, যে বাঁশঝাড়ের মাথায় চাঁদ উঠলে কাজলাদিদির কথা মনে পড়ত, এখন সেই বাঁশ শুধু দেবার জন্য? একসময় বাঙালী কিন্তু বাঁশের যথেষ্ট কদর করত। তখন শত্রুকে নির্বংশ হবার অভিশাপ দেওয়া হত, এবং বন্ধুকে বংশরক্ষা বা বংশবৃদ্ধির শুভেচ্ছা জানানো হত। হায় বাঁশ, তোমার সে দিন নাই। এখন তুমি স্রেফ দেওয়ার জন্য, নেওয়ার জন্য নও। ... ...
আমার বড় মেয়েটি এই ঝড়জলের মধ্যে হাতে রসুনের কোয়া নিয়ে জানালার কাছে বসে আছে। নিউ ইয়র্কের ঝড়জল হারিকেন ওরফে আইরিন দেখতে চেষ্টা করছে। আইরিন নামের এক ভৌতিক ভ্যাম্পায়ারকে তাড়ানোর চেষ্টা করছে। আমাদের দেশের কালবৈশাখির মত শোঁ শোঁ করে আওয়াজ হচ্ছে। গাছের ডাল নড়ছে। পাতা পড়ছে। এরকম ঝড়বাতাস আমাদের দেশে বছরে গণ্ডায় গণ্ডায় আসে যায়। সরকার ঘুমায়। আর জনগণ তাড়া খাওয়া ইঁদুরের মত ছুটে বেড়ায়--পোকামাকড়ের মত মরে।। আবার ঘুমিয়ে পড়তে পড়তে শুনলাম, ছোটে মেয়েটা গলা খুলে গাইছে, ওরে ঝড় নেমে আয়, আয়। ... ...
সবাই খালি অ্যাডেরে দোষে। অ্যাড না থাকলে আপনি কি হারাইবেন তার জলজ্জ্যান্ত উদাহরণ হল এ দশকের কামাল ধামাকা (আক্ষরিক অর্থে) কম্পমান কন্ডোম। হিন্দুস্থান ল্যাটেক্স চুপকে চুপকে স্টাইলে বাজারে ছেড়েছেন ক্রেজেন্ডো, কন্ডোম "দ্য" কম্পমান। শুভকার্যের সময় এই সর পে লাল টোপি রাজ কাপুর স্টাইলে থিরথিরিয়ে কাঁপবে। পাশের ঘরে শুয়ে থাকা গুরুজনের কান লাল হয়ে যাওয়া নিবারণার্থে ঝুমঝুমিটা শুধু বাঁধা হয় নি। সর্বজ্ঞ সার্ভেতে জানা গেছে রবারটুপিময় সেক্ষকার্যে পুরুষেরা আনন্দ পাচ্ছেন না। তাই কন্ডোমের জনপ্রিয়তা বাড়াতে তাকে কিঞ্চিৎ "কাঁপিছে দেহলতা থরোথরো" রূপ দেওয়া হল মাত্র। ১২৫ টাকায় তিনটি কম্পমান টুপি, নিরাপদ সেক্ষকার্য এবং বিনিপয়সার পেলভিক থ্রাস্ট। ঘোমটার আড়ালে খেমটা নাচার দুরারোগ্য অভ্যাসের জন্য জনসাধারণ সম্পূর্ণ স্বদেশী এবং পাবলিক সেক্টরজাত এই উদ্ভাবনের খোঁজ পান নি। নইলে এতদিনে চন্দ্রিলের হাত থেকে এই নাজুক চীজের কোনো রক্ষে ছিল! ... ...
সেই কোনকালে ২০১১ সালে নরওয়েতে ঘটা ঘটনাটা অনবরত টুকরো হতে থাকা সারা পৃথিবীকে যে এভাবে এক করে দেবে কেউই তা ভাবতে পারেন নি। তেইশ শতকের সেই প্রথম শিশুবিপ্লবের পর থেকেই বিশেষ কানুনের বলে নানা ভাষা নানা মত ওয়ালা সারা বিশ্বে শিশু সংক্রান্ত আইন তার ধারা উপধারা অবধি এক হয়ে গেল। আর সেই নিয়ম কানুন অনবরত আরও বেশি শিশুবান্ধব করে তোলা হচ্ছে দিন কে দিন। এখন সবকটা দেশের রাষ্ট্রযন্ত্রের একটা বিরাট অংশ পরিচালনা করেন দশ বছরের অনুর্ধরা। আর সেই ক্রমবর্ধমান শিশু সংবিধান এর প্রথম ধারাই বলছে এই বইয়ের কোনো ধারাই লোপ করা যাবে না - শুধু বাড়িয়ে নেওয়া যাবে। আর এখান থেকেই যত সমস্যার সুত্রপাত। এই বাবা মায়েরাই যখন শিশু ছিলেন তারা কিন্তু অন্য কথা বলতেন - কিন্তু আঠেরো বছর হতেই তাদের ভোটাধিকার শেষ হয়ে যেতেই তারা আছড়ে পড়লেন বাস্তব সমুদ্রে - শুরু হল পড়াশোনা আর তার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করে পেট চালানো। আঠেরো বছর হয়ে গেলে রাষ্ট্র আর তার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে না যে। সেই কুড়ি-একুশ শতক থেকেই বাবা মায়েরা বুঝতে পারছিলেন কীভাবে বাড়ির শিশুটি প্রভাবিত করে তাদের জীবনযাত্রা। ব্যবসায়িকরাও বুঝতে শুরু করেছিলেন সংসারের কেনাকাটায় শিশুর পছন্দ গুরুত্ব পাচ্ছে বেশি। বিজ্ঞাপনের ভাষা বদলে যাচ্ছিল দ্রুত। ... ...
বিষভাবে-পীড়িত একদল ভগবতী-অন্বেষী সম্প্রতি দূরদর্শনে-সম্প্রসারিত-ফুটবল-ম্যাচ ও সাস-বহু-ধারাবাহিক সম্বন্ধে একটি দীর্ঘ তুলনামূলক গবেষণা প্রকাশ করিয়াছেন এই আখ্যানে তাঁহাদের সিদ্ধান্তেরই একটি ব্যাখ্যান পেশ করা হইল| লিখিবার সুবিধার্থে এই রচনায় ফুটবল ম্যাচকে 'ফু:' ও সাস-বহু-ধারাবাহিককে 'সাবধা' রূপে সংক্ষেপিত করা হইবে । ... ...
বিদূষকেরা বলিল, “মহারানী, সত্য কথা যদি শুনিবেন তবে ডাকুন বিদ্বজ্জনদের, পণ্ডিতদের, লিপিকরদের, ডাকুন যারা উন্নয়ন করে এবং উন্নয়ন তদারক করিয়া বেড়ায়। নিন্দুকগুলো ফেসবুকে লগ ইন করিতে পায় না বলিয়াই মন্দ কথা বলে।” জবাব শুনিয়া রানী অবস্থাটা পরিষ্কার বুঝিলেন, আর তখনি সাংবাদিক সম্মেলন ডাকিয়া বিদূষকদের একশোতে একশো নম্বর দেওয়া হইল। ... ...