প্রত্যেক আবিষ্কারের যেমন একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে, এই টেকনোলজিরও খুঁত ডিম বেচতে গিয়েই ধরা পড়ে। ডিমের ভেতরে ও খোসায় অধিক আয়রন থাকার দরুন কিছুদিনের মধ্যেই ডিমের গায়ে জল ও অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে জং পড়া শুরু হয় ও ফেরোসোফেরিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়ে খাবার অযোগ্য করে তোলে। ডিম কোম্পানীরা কিছুদিনের মধ্যেই গবেষণার মাধ্যমে স্টেনলেস ডিম তৈরি করতে সক্ষম হয়, কিন্তু তার দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে হওয়াতে সাধারন মুরগির ডিম কেনাই মানুষের পক্ষে শ্রেয় হয়ে ওঠে। ... ...
বাংলায় চুরি ক্রমশ: বাড়ছে-- মরুদ্যান শুকিয়ে গেল বলে। হপ্তা দুই আগে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর গোঁফচুরি হয়ে গেল। একটি বন্ধুত্বের সাইটে ছবি-টবি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর একটি "ফেক' প্রোফাইল বানিয়েছিলেন জনৈক যুবক, তাই নিয়ে মিডিয়ার হুল্লোড় যেন যৌবনের জলতরঙ্গ, রুধিবে কার পিতৃদেব। মুখ্যমন্ত্রীর আইডেন্টিটি চুরি হয়ে যাচ্ছে, সম্মানহানি হচ্ছে, রাজ্যের ভাবমূর্তি ম্লান হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি থেকে শুরু করে থেকে শুরু করে কোনো কোনো গপ্পের গোরু "ইহা একটি চক্রান্ত' পর্যন্ত পৌঁছে গেল। তাও কপাল ভালো, এর মধ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কালো হাত কেউ দেখতে পাননি। (অবশ্য দেখতে পেলেও নির্ঘাত চেপে গেছেন, এই শিল্পায়নের বাজারে মার্কিন বহুজাতিক নিয়ে প্রশ্ন তোলার বুকের পাটা আর কোন বাপের ব্যাটার আছে?) ... ...
চেতন ভগৎ তাহলে ফিরেই এলেন! সমালোচকের মুখে নুড়ো জ্বেলে কোটি কোটি ভক্তের প্রত্যাশা মেটাতে নিজের নতুন উপন্যাস নিয়ে শ্রীভগৎ স্বয়ং ধরাধামে পুনরাবির্ভূত হয়েছেন। আমরা জানতাম, ভগৎসাহিত্যগণিতের নিয়ম মেনে শ্রীভগতের নতুন বইয়ের নামে কোনও সংখ্যার উপস্থিতি অনিবার্য, কিন্তু এবারে শ্রীভগৎ আমাদের সবার ওপরে টেক্কা দিয়েছেন। তাঁর নতুন নামে সংখ্যা আছে ঠিকই, কিন্তু তা নেহাৎই ভগ্নাংশ: আধ। ভাবতে বসলাম। একুশ শতকের শেক্স্পীয়রের নামে সংখ্যা থাকবে – এটা এতদিনে বুঝে গেছি। কিন্তু পরের বইয়ে কোন্ সংখ্যাটা থাকবে, তা আগে থেকে বলা সম্ভব? হাজার হোক্ আমি স্ট্যাটিস্টিক্স পড়েছি – একটা মান-ইজ্জত আছে – ... ...
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে সনাতন ভারতীয় পদ্ধতিতে "কন্যাদান' এর এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে গেল। "মুখ্যমন্ত্রী কন্যাদান যোজনা' নামক একটি সরকারি প্রকল্পে সম্প্রতি বিয়ে দিয়ে উদ্ধার করা হল ১৫১ জন দু:স্থ মহিলাকে। গত ২৬শে জুন। বেণীর সঙ্গে মাথার মতো, বিয়ে দিয়ে কন্যা উদ্ধার করার পাশাপাশি আরেকটি সামাজিক কর্তব্যও মধ্যপ্রদেশ সরকার পালন করলেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। বিয়ের উপযুক্ত কিনা জানার জন্য, প্রতিটি কন্যার "পরীক্ষা' নেওয়া হল রীতিমতো সরকারি উদ্যোগে। যে-সে পরীক্ষা নয়, প্রতিটি বিবাহেচ্ছুক নারীর "কুমারীত্ব' পরীক্ষা করা হল একদম পাশ-করা স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞদের দিয়ে। খবরে প্রকাশ, যে, জনৈকা পরিক্ষার্থিনী সামান্য ট্যাঁফোঁ করেছিলেন, কিন্তু তাঁকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, যে, পরীক্ষায় না বসলে বিয়ের আসরে এϾট্রর কোনো প্রশ্নই নেই। ফেল করলে কি হবে, সেটা অবশ্য স্পষ্ট করে বলা হয়নি, কিন্তু ফেল করলে কি হয়, সে তো ক্লাস ফাইভের নাদান বালকও জানে। ... ...
ডঃ পাত্র এর একটা বিহিত বা হেস্তনেস্ত করার দায়িত্ব নিলেন। অবশ্য এতে ওনার একটা অ্যাকাডেমিক ইন্টারেস্টও ছিল। সময়সুযোগ থাকলে একদিন তিনিও পুরোদস্তুর গবেষণা করতে পারতেন, শুধু ছাত্র ঠেঙিয়েই চাকরির জীবনটি চলে গেল। সে যাই হোক, উনি অনেক আঁকজোঁক করে কিচ্ছু বের করে উঠতে পারলেন না। এই অবস্থায় উনি একদিন কাকভোরে উঠে লেকের মাঠে গাছপালার ঝোপে বান্ধবগড় থেকে কেনা ক্যামোফ্লাজ জ্যাকেট পরে ঘাপটি মেরে কী হয় দেখার জন্য বসে রইলেন। প্রথম দু দিন কিচ্ছু দেখতে পাওয়া গেল না। সুস্থ শরীর ব্যস্ত করে রাতের ঘুম নষ্ট হল। কিন্তু তাতে ডঃ পাত্র দমলেন না। এক সময় তিনি ডক্টরেট করেছিলেন, তাই অকিঞ্চিৎকর জিনিস নিয়ে খামোখা লড়ে যাবার ক্ষমতা তাঁর পুরনো। ... ...
পুজোর সময়টা একটু ব্যস্ত থাকব। তেমন কিছু না, একটু ঘুরতে হবে আর কি। নানা বেড়াতে-টেড়াতে নয়। ওসব সুখ কি আর কপালে আছে? সাধ করে তো আর যাচ্ছি না। এই বুড়ো বয়সে কোথায় পায়ের উপরে পা তুলে আয়েস করব, লোকজন এসে প্রণাম টনাম করবে, অনেকদিন তো হল এবার একটু প্রধানমন্ত্রী হন স্যার বলে সাধবে, তা নয়, আবার রথে চড়তে হচ্ছে। না না কলা-টলা বেচতে যাচ্ছি ভাববেন না। ওটা বজরং দলের ডিপার্টমেন্ট। গদা হাতে ল্যাজ লাগিয়ে লাফাবে, কলা-টলা বেচবে। হই-হল্লা করবে। ওসব ছোটোখাটো জিনিস নিয়ে আমি মাথা ঘামাইনা। ... ...
এক ঝাঁক কচিকাঁচাদের আঁকা সুনিপুণ শিল্পকর্ম, গুরুচন্ডা৯র বিবর্ণ বৃদ্ধদের তরফে একটা অক্ষম প্রচেষ্টা, সেই সব শিল্পকর্মকে একটা পাতায় ধরিয়ে ফেলার। ধরানো গেল কিনা, তা জানাবেন পাঠক। ... ...
সমস্যা হল পোস্ট-ইন্ডাস্ট্রিয়াল যুগে তির-ফির আর বিশেষ পাত্তা পাচ্ছে না। সভ্যতার কেরিয়ারে এখন হাই স্কুল পর্ব। গেটস স্যার চোখ রাঙিয়ে রীতিমত শাসাচ্ছেন "সাবধান! এখন থেকে কিন্তু সব বুদ্ধির খেলা'। আমরা বাঙালিরা আবার সেখানে ডবল প্রমোশন পেয়ে বসে আছি, মুশকিল! মগজাস্ত্রে ধোঁয়া দেবার তালে নিজের বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে অসীম দু:সাহসে বিড়ি ফুঁকে চলেছি। তো এই সিগারেট কান্ড, এই আমাদের, মানে এই বীর, বেপরোয়া বাঙালি যুবকদের ইমপ্রেস করার কৌশল হতে পারে কি? হতেই পারে। আমরাই যখন "আজ কা অর্জুন'। উফ:! অতই সোজা! আরে বোকারা, আমাদের আজ পুরো রাত জেগে সন্ধের ঝিলিমিলি লিখে লিখে কাল নোবেল পেতে হবে, তাই একটু মাল সিগ্গী স্টকে চাই। তোরা মীন হোয়াইল মাঠে কিছু দৌড়ঝাঁপ করে সোনা নিয়ে আয় দেখি। তা না, এই সব ফালতু অশৈল করে ভাবছিস কু থেকে সু হয়ে জাবি। আগে রুপা (গাঙ্গুলী) তো হ, একটা ক্লাস বানা, তারপর কাউন্টার পাবি। বেলেল্লাপনার টিকিট, প্রতিভার ট্যঁ¡ক খসিয়ে কাট! ... ...
পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়নের উপদ্রব বেড়েছে আর বিহারে নাকি ডাকাতের। বিশেষ করে ব্যাঙ্ক ডাকাতের। বিহার পুলিশের বড়োকর্তারা এই নিয়ে একাধিক গম্ভীর মিটিং এবং তৎসহ প্রচুর চা, বিড়ি, সরকারি পেট্রোল এবং টিএ বিল খরচার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, যে, আসলে দোষটা মোবাইল ফোনের। কেন মোবাইল ফোন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা দক্ষিণমেরুর পেঙ্গুইনদের এ ব্যাপারে কেন দায়ী করা হচ্ছেনা, সে নিয়ে বিশদ তথ্য না পাওয়া গেলেও, সংবাদে প্রকাশ, ব্যাঙ্কে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, যে, ডাকাতরা ডাকাতির কাজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। যুক্তি মারকাটারি সন্দেহ নেই। ... ...
মুশকিলটা এইখানে, যে এই ধরণের কাজে গণতান্ত্রিকভাবে চাট্টি আলোচনা, বা কথা বলাটা গ্রাহ্য নয়। পাবলিক বলতেই পারে, এইসবই তারা করে আসছে শতশত বছর ধরে, কিন্তু বললেই শুনতে হবে, এরকম ধাষ্টামো করার সাহস ও শিক্ষা আমাদের থাকবে কেন? ছাগুলে পাবলিকের পাগুলে কথা নাহয় বাদই দেওয়া হলো, কিন্তু এমনকি আমাদের সিভিল ইÏনিয়ার ভাইবোনেরা ও উচ্চপদাসীন বিশেষজ্ঞরাই বা খবরের কাগজে - টিভিতে-মায় ফেসবুকে নিজেদের মতামত দেখে পুলকিত হয়ে ওঠার নাবালক লোভে বিশু থেকে শিশু হয়ে উঠছে আর আমরা সেই দেখে ধিনিকেষ্ট নাচ জুড়েছি। এভাবে হয় না। এজলাসে এই মোকদ্দমা উঠলে এই এতগুলি পণ্ডিতের রায় শুধু এক্তিয়ারবহির্ভূতই নয়, এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই দায়িত্বজ্ঞানহীন হিসাবে গণ্য হতে পারে। ফলতঃ, আমোদগেঁড়ে জনতা নিজেদের মধ্যে প্রতর্ক করুক। কিস্যু আসে যায় না। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ কেউ সম্পূর্ণ ঠিক কথা বলে থাকলেও না। সোসাল মিডিয়া আর খবরের কাগজে চ্যানেলে বসে এসব হয় না। তাই অন্ততঃ সাংবাদিক ভাইবোনদাদাদিদিবেয়াইবোনাই সকলকেই করজোড়ে অনুরোধ, এই বিশেষজ্ঞ মতামতটা দেওয়া একটু তামাদি রাখুন না। অনুভব করছি, তাই বলছি। ... ...
পরিবারমনস্ক, আধুনিকমনা, বর্ধিষ্ণু বাঙালি পরিবারের জন্য বইমেলা গাইড লিখলেন ঈপ্সিতা পালভৌমিক। পুরোনো বিজ্ঞাপনের পাতা ঘেঁটে। বই, প্রকাশনী ও স্টলগুলি একেবারে অথেন্টিক। তবে স্টলনম্বর মিলবেনা। কারণ, বইমেলাটি পুরোনো। এ সেবারের কথা যখন বইমেলা ছিল পার্কসার্কাসে। ... ...
তবে ভেবে দেখতে গেলে, সংস্কৃত সভ্যতার ব্যাপকতর প্রভাব সম্যকরূপে অনুধাবন করা গেছে একমাত্র ভৌগোলিকদের মাধ্যমে। কলকাতার পুরনো নামটির কথাই ধরা যাক না কেন - এখনকার নাম তো বিদেশি। প্রাচীন বঙ্গে প্রথিতযশা সম্রাট বিজয়ের একমাত্র পুত্র ছিলেন রাজকুমার জয়। তিনি একবার সুতানুটির তীরে অপরূপ বাঙালি বৌদিদের গঙ্গাবক্ষে স্নানদৃশ্য দেখে বিহ্বল হয়ে তাঁর রসোপলব্ধি দুই ঠোঁটের ফাঁকে বায়ুর গতায়াত সংকুচিত করে তীক্ষ্ম ধ্বনিতে প্রকাশ করেন। তখন থেকে সেই এলাকার নাম হয় সিটি অফ জয়। সাগর পেরিয়ে বহু বিদেশেও সেই নামকরণের চিহ্ন বিদ্যমান। দক্ষিণ আমেরিকায় সংস্কৃতভাষী ভারতীয় নাবিকদের অজস্র অর্জুন গাছ লাগানোর স্মৃতি আজও বয়ে বেড়ায় আর্জেন্টিনা। অভ্রের খনি সমৃদ্ধ সুন্দরী অভ্রিকা আজ এক বিশাল মহাদেশ। ... ...
উচ্চশিক্ষিত(/তা) এবং সংস্কৃতিবান (/বতী) বাঙালীমাত্রেই সমালোচনা করতে ভালবাসেন। তাঁদের সমালোচনা যুগপৎ "ইরেজার' আর "শার্পনার'এর কাজ করে। ভন্ড, ক্লিশে, অপ্রয়োজনীয় লেখক-গায়ক-আঁকিয়েরা কখনো সমালোচনার দাপটে "ইরেজিত' হয়ে স্রষ্টা থেকে ভোক্তায় পরিণত হন। অন্যদিকে আবার কম ধারালো প্রতিভাবানেরা সমালোচনার শার্পনারে আরো চোখা হয়ে প্রবল বেগে পাঠক-শ্রোতা-দর্শককে নব নব সৃষ্টির খোঁচায় ব্যাকুল করে তোলেন। ধনের মত সমালোচনার-ও মূল ধর্মই হল, অসাম্য। সেখানে মুড়ি-মিছরি একদর হবার ভয় নেই মোটেই। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, এই প্রবন্ধে শুধু আ-মরি বাংলা ভাষার সাথে সম্পর্কিত সমালোচনা এবং কৃতি সমালোচকদের কথাই বলা হচ্ছে, অন্য ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের মোটেই মাথাব্যথা নেই। মানে হল, হয় মাথা নেই অথবা ব্যথা নেই ... ...
মহানগরের পর্দা সরালেই মহারগড়ের প্রসেনিয়াম! কখনও আপনি দর্শক, কখনও আপনিই নটরাজ। হয় ফ্যালফ্যাল, নতুবা, স্বপ্নের বডি কাঁধে নিয়ে তপ্ত-মটকা ধেই ধেই। কোনও নাট্যকার নেই। যখন ইচ্ছে যেখানে ইচ্ছে যা ইচ্ছে। সিগনাল-তোড়ু বাইক থেকে ভিড়মি-জাগানো মাইক, কোলকাতা পুলিশের কেচ্ছা হইতে পাবলিক প্লেসের পেচ্ছাপ, দাদার হালুম টু চাঁদার জুলুম – মোদ্দা প্লট, কল্লোলিনীর কল খারাপ, আর মিস্তিরিরও ফোন অফ। ছিল তিলোত্তমা, হলো তিলোঃট্রমা! অতেব, টানার যেমন হ্যাঁচড়া, খিচুরির যেমন ছ্যাঁচড়া, কলকাতার তেমন ক্যাচড়া। জড়িয়ে পড়লেন দীপাংশু আচার্য ... ...
বিপ্লব শেষ করে নেপালের মাওবাদীরা ক্রমশ: ক্ষমতার জুতোয় পা গলাচ্ছেন। নেপালের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের দায়িত্ব হাতে পেয়েছেন মাওবাদী মন্ত্রী কৃষ্ণ বাহাদুর মাহারা। এতদিন টিভিতে নেপাল সুন্দরী প্রতিযোগিতার সরাসরি সম্প্রচারের তুমুল বিরোধিতা করে আসার পর, দপ্তরের দায়িত্ব হাতে পেয়েই মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, বাস্তব পরিস্থিতির পর্যালোচনার পর, সম্প্রচার বাতিল করা সম্ভব নয়। দুর্জনে দাবী করেছেন, যে, বাস্তব পরিস্থিতি বলতে এখানে সরকারি চ্যানেল আর সুন্দরী প্রতিযোগিতার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিকেও বোঝানো হচ্ছে। ... ...
কুড়ি-কুড়ি ক্রিকেটের মাঠে টু-পিস-পরিহিতা চিয়ারগার্লরা নাচিতেছে দেখিয়া অকস্মাৎ মরালিটির মেজদার ঘুম ভাঙিয়া গেল। চোখ খুলিয়া মেজদা দেখিলেন খেলাধুলা লাটে উঠিয়াছে। খেলার মাঠে উর্বশী-রম্ভারা শরীর খুলে নাচিতেছে, রেশম ত্বকে পিছলে যাচ্ছে আলো আর স্টেডিয়াম-ভর্তি ভুখা জনতা চোখ দিয়ে গপাগপ রেশমি কাবাব গিলছে। দিকে দিকে অনাচার। সোডোমি। হিপি-হিপিনি, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, সমকাম। পাঙ্ক কালচার, নুডিস্ট কলোনি, বিকিনি-বালিকা। দেশ জুড়ে নারীমাংসের মোচ্ছব। ভারতীয় সংস্কৃতির সাড়ে সব্বোনাশ। পাপের পাত্র উপচীয়মান, মানবকুলের আর রক্ষা নাই। ... ...
যা বোঝা যাচ্ছে, অনুশাসনের সময় ক্রমে আসিতেছে। উচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই অনির্দিষ্টকালের জেলবাস। কার্টুন আঁকলেই একরাত্রি হাজতযাপন। পুলিশেরও রেহাই নেই। অনুমতি ব্যতিরেকে সাদাকে সাদা, কালোকে কালো, ধর্ষণকে ধর্ষণ বললেই সিধে ব্যারাকপুরে ট্রান্সফার। অনেক অকর্মণ্য অপোগন্ডোই কদিন আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মাথায় দুটো শিং এঁকে আর মুখে দুটো শ্বদন্ত এঁকে ফেসবুকে সেঁটে দিয়ে অপার আনন্দ লাভ করছিলেন, আর এতদ্বারা কী প্রমাণিত হইল, জিজ্ঞাসা করলেই বুক ঠুকে বলছিলেন "পেইড ব্যাক ইন হিজ ওন কয়েন"। তাঁদের ফুর্তির দিন শেষ। ... ...
নেপালের আকাশে নাকি এখন লাল তারা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। স্বৈরাচারী রাজা পিছু হঠেছেন। ক্ষমতাচ্যুত হলেন বলে। এখন একদা বিপ্লবীদের হাতে গণতন্ত্রের বিজয়পতাকা। দীর্ঘদিনের বিরাট লড়াইয়ের শেষে এসেছে বিজয়। বিজয়ী বীররা তাই নামিয়ে রেখেছেন অস্ত্র। সেই অস্ত্রের পরিমান এতই বেশি, যে, ভারত থেকে পাঠানো হয়েছে অস্ত্র রাখার কন্টেনার। সেখানে অস্ত্রশস্ত্র জমা রাখার পর তালা বন্ধ করে একটি চাবি নিয়েছেন প্রচন্ড। অন্য ডুপ্লিকেট চাবিটি ঠিক কার কাছে জমা আছে, সেটা এই মূহুর্তে জানা না গেলেও, এই আনন্দের মূহুর্তে আমরা আর সেসব নিয়ে মাথা ঘামাবোনা। আজ আনন্দের দিন। আজ বহুদিন পরে বিজয় এসেছে ফিরে। আজ আমরা, অর্থাৎ আমি আর আমার চিরপুরাতন পাড়াতুতো প্রেমিকা খেঁদি , হলইবা রিমেক, শাহরুক খানকে দেখব মন দিয়ে। ... ...
তবে উপায়? বিকাশ প্রথমে ওয়াটার থেরাপির ধান্দা করলেন। দিনে আট গেলাস জল পেটে ঢুকতে লাগলো, মদ্যপান বন্ধ, আর প্রতি ঘন্টায় দুচোখে জলের ঝাপটা। এতে করে কোনও লাভ হল না, বার বার বাথরুম যাবার প্রয়োজন পড়ল, ঝাপটা দিতে গিয়ে জামা ভিজে একশা হল, সন্ধ্যায় ইয়ারবক্সীরা 'উল্লাস' বলার একটি সাথী আপাততঃ হারিয়ে সামান্য বিমর্ষ হলেন। রাতে ঘুম এল না। ঘুম আসার জন্য সানন্দায় কানে কানে পড়তে গিয়ে মাথাটা শেষে খেলল। বিকাশবাবু গোপনে ওনার সহধর্মিনীর প্রসাধন সামগ্রী হাঁটকে শসা, লেবু ইত্যাদি প্রাকৃতিক ভেষজ দেওয়া ক্রিম চোখে লাগাতে শুরু করলেন ও কদিনের মধ্যেই ক্রিম সরাতে গিয়ে ধরা পড়লেন। লাগিয়ে ফল হল কচু, হাতি আর ঘন্টা। চৌর্যের কোনও কারণ বাৎলানো দায় হল, গৃহিনীর মুখনাড়া সার হল, বিবিজান লবেজান করে দিলেন। কিছুতেই কিছু হল না দেখে মরিয়া বিকাশ খুব ভোরে উঠে আদা-মধু আর কল ওঠা ছোলা মুখে ফেলে দু-আঙুলে টেনে টেনে চোখের চামড়ার ব্যায়াম আরম্ভ করলেন। এতে তাঁর জীবনযাত্রা পূর্বের চেয়ে স্বাস্থ্যকর হল, তর্জনীর গাঁটে ব্যথা হল, কিন্তু চোখের কোনও রদবদল ঘটল না। হতাশ, ভগ্ন, ভীত, রোগগ্রস্ত বিকাশ সেন ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেন। ... ...
টালিগঞ্জের নায়করা অফিস টাইমে মেট্রোরেলে চড়ে বিক্ষোভ দেখাতে গেছেন, তাঁদের জন্য মেট্রোরেলের চাট্টি কামরা বে আইনী ভাবে সংরক্ষিত ছিল, যাত্রীরা সেখানে উঠতে গেলে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি বলে যাঁরা বাজার গরম করার চেষ্টা করছেন, তাঁরা চক্রান্তকারী। জনমানসে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই তাঁদের একমাত্র কাজ। তাঁরা ভুলে গেছেন, নায়করা হলেন জাতির মুখ। ফিল্মে রোমান্স এবং অ্যাকশন করে তাঁরা জগৎ উদ্ধার করেন। একাই একশ জনের মহড়া নেন, পিটিয়ে দেশের শত্রুদের প্যান্টুল খুলে দেন, সোজা কথা? সত্যি কথা বলতে কি, তাজমহল, শচীন তেন্ডুলকার আর বলিউড ছাড়া দেশে আছেটা কি? পার্লামেন্ট আর রাষ্ট্রপতিভবন? ছো:। ... ...