ঘরের অন্ধকারে ঘড়ির দিকে তাকালাম ঠিকই কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না। তবে রাতের গভীরতা দেখে আন্দাজ করলাম বড়জোর ১ কি ২ বাজে। মনে হল জানলার বাইরে থেকেই শব্দটা আসছে। কীসের শব্দ? মনে হচ্ছে কেউ যেন তীব্র গতিতে পায়ে ঘুঙুর পরে ঠিক আমার জানলার পাসেই দৌড়াদৌড়ি করছে। বাবা এতো রাতে আবার কে? পাস ফিরে মা বাবার দিকে তাকালাম। তারা তখন ঘুমের জগতে স্বপ্ন বুনছে। ... ...
তিস্তা আর মেঘনা ছোটবেলা থেকেই ভাল বন্ধু । তিস্তা যেমন ভালোমানুষ মেঘনা তেমনই দুষ্টু। সবসময় তার মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে। কোনো নিয়ম দেখলেই তার সেটা ভাঙার ইচ্ছে করে। তিস্তা আর মেঘনা অনেক ঝগড়া করে কিন্তু তারপর তাদের ঝগড়া মিটিয়েও নেয়। কিন্তু সেদিনের ঘটনার পর তাদের আর কথা হয়নি। এর কারণ হল লকডাউন । কোভিড ১৯ এর জন্য তাদের স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ... ...
যে স্রোতস্বিনী তাদের উন্নতির জন্য দিবা নিশি অক্লান্ত পরিশ্রম করে সেই স্রোতস্বিনী কে তারা কেবলি অজ্ঞাত কুলশীল ভেবে ব্রাত্য করে। তারা স্রোতস্বিনী কে কোন দিন তার কাজের দক্ষতা দিয়ে বিচার করে নি। বরং সকলেই তার দিকে প্রশ্নের বাণ ছুঁড়ে জিজ্ঞেস করে তার জাতের পরিচয়। ... ...
বিদুষীর মা সকালের জলখাবার লুচি, আলুর দম নিয়ে এলো। বিদুষী লুচির নরম পাতলা অংশটা টুনটুনিকে খেতে দিলো। টুনটুনি তো খুব খুশি লুচিটা পেয়ে। কিন্তু একটা মুশকিল হল লুচির ওই অংশটা টুনটুনির থেকে বেজায় বড়ো। তাই সে লুচিটা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে আরম্ভ করল। কিভাবে খাবে কিছুতেই বুঝতে পারছে না। অবশেষে বিদুষী তাকে সাহায্য করল লুচিটা খেতে। বিদুষী লুচির পাতলা অংশ ছোট ছোট টুকরো করে দিলো টুনটুনিকে। টুনটুনি মহাখুশিতে অর্ধেকটা খেয়ে নিল। বিদুষীরও খাওয়া শেষ হল। ... ...
বিক্রমাদিত্য আর বেতালের গল্প কত পুরোনো ভাবো। ভারতীয় গল্প-সংস্কৃতি পুরোই হবেনা এই সিরিজটা বাদ দিলে। আমি খুঁজতে খুঁজতে, ধুলো, মাকড়্সার জাল হাতড়ে অনে-এ-এক দূরের এক দেশের উপকথার মধ্যে একটা গল্প খুঁজে পেলাম যার সাথে এই বিক্রম-বেতালের (পুরনো গান মনে আছে? বিক্রম বিক্রম বিক্রম, বেতাল তাল তাল?) বেবাক মিল! দেশটার নাম জর্জিয়া। হ্যাঁ, পূর্ব ইউরোপের সেই ককেশাস পাহাড় আর কালো সমুদ্দুরের দেশ। গল্পটা হলো 'রাজা আর আপেলের গল্প'। ... ...
আমার যেমন হয় – সন্ধেবেলা হলেই খিদে পেয়ে যায়! গেস্ট-হাউসে ঢুকেই খাবার টেবিলে বসে পড়ার ধান্ধা করছিলাম, যে কোনো একটা চেয়ারে। পিছন থেকে টান দিল এক কলিগ – সেই প্রথম জাপানে বসার এটিকেটের সাথে পরিচয়। এই নিয়ে আলাদা করে একটা লেখা হয়ে যাবে – পদমর্যাদা অনু্যায়ী বসার ব্যবস্থা করা হয়। যারা সর্বোচ্চ পদমর্যাদার লোকজন – তাদের বসার ব্যবস্থা প্রথমে এবং তারা যেখানে বসবে, সেগুলোকে বলা হয় ‘কামিজা’। কম পদমর্যাদার লোকেরা যে স্থানে বসবে, সেগুলোকে বলা হয় ‘সিমোজা’ .... আমাদের বসতে বলল সেই ঘরে ঢোকার দরজার থেকে দূরের চেয়ার গুলোতে। এটাও একটা রীতি – অতিথিদের বসতে দেওয়া হয় দরজার থেকে দূরে, আর দরজার কাছে থাকবে হোস্ট। এর কারণটাও বেশ ইন্টারেস্টিং – এই রীতি চালু হয় বহু বহু আগে, জাপানের ফিউডাল পিরিওডে – যেখানে দুমদাম শত্রুর আক্রমণের বেশ চল ছিল। আমাদের মত জাপানীদেরও বিশ্বাস অতিথি নারায়ণ – তাই অতিথিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রবেশদ্বারের থেকে সবচেয়ে দূরে বসতে দেওয়া হত। ... ...
২০২১ সালের গ্রীষ্মে স্যান হুয়ানের গভর্নর রিকার্ডো রোসেলোর কিছু চ্যাট মেসেজ কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ফাঁস হওয়া ঐ মেসেজগুলি রোসেলো এবং তাঁর ঘনিষ্ট বৃত্তের মধ্যে বিনিময় হয়েছিলো। সেগুলো থেকে জানা যাচ্ছে হারিকেন মারিয়ায় যাঁদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাঁদের প্রতি রোসেলো অ্যান্ড কোম্পানি খুবই উদাসীন মনোভাব পোষণ করে। এছাড়াও ঐ মেসেজগুলিতে নানা আপত্তিকর মন্তব্য এবং দূর্নীতির স্বীকারোক্তি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি নিয়ে অসন্তুষ্ট মানুষ এর পরেই রাস্তায় নেমে আসে। জালিয়াতির অভিযোগে রোসেলোর দুজন শীর্ষ আমলা গ্রেপ্তার হওয়ার পর, জুন মাস নাগাদ, ব্যাপার খুবই ঘোরালো হয়ে ওঠে। পুলিশ প্রতিবাদকারীদের হঠাতে গিয়ে বলপ্রয়োগ করে, ফলে আরো বেশি প্রতিবাদ, পুরো দ্বীপ জুড়ে অন্দোলন ইত্যাদি হয়। বিদেশ থেকে নামকরা কয়েকজন শিল্পী আসেন প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিতে (তাঁদের একজন রিকি মার্টিন )। ... ...
গ্রীষ্মের রাতে নদীর দিক থেকে হাওয়া বাতাস খেলে যায় শহরের বুকে। মল থেকে বেরিয়ে তিনবারের চেষ্টায় সিগারেট ধরালো পঙ্কজ। পার্কিংএর দিকে হাঁটল। গাড়ির দরজা খুলতে যাবে, যেন হাওয়া ফুঁড়ে বেরিয়ে এল এক মূর্তি- ফাটা জুতো, মলিন জামা প্যান্ট, গোঁফ দাড়ি, লম্বা চুল- মুখ থেকে ভকভক করে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে, একহাত পঙ্কজের দিকে এগিয়ে দিয়েছে, অন্যহাত পিছনে। পঙ্কজের হৃদয়ের বরফ আতঙ্কের উত্তাপে গলতে শুরু করেই আবার জমাট বেঁধে গেল। পার্কিং লটের আলোয় লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে তার মনে হল, যে নিরানন্দ জগত থেকে আগত একমাত্র মানুষ মনে হচ্ছিল নিজেকে , এ লোক সেই জগতেরই কেউ। এই আলোয়, এই নিয়ন সাইনের নিচে যাকে মানায় না। পঙ্কজের সামনে দাঁড়িয়ে হাত পাতল সেই লোক। ... ...
‘চাঁপাডাঙার বউ’ উপন্যাস ভাঙনের কাছাকাছি গিয়ে আবার এক হয়ে যাওয়ার কাহিনি। নয় বছর বয়সে বিয়ে হয়ে বাড়িতে এসেছিল ‘বড়বউ’। দেওর মহাতাপ তখন আট বছরের বালক। তাই তারা পরস্পরের বাল্যসঙ্গী। ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্ক নিবিড় ভালোবাসা ও ভরসার সম্পর্কে পরিণত হয়েছিল। সেই ছিল ছোটবউ মানদার রাগের কারণ। গ্রামের পাঁচজনে বউদি-দেওর সম্পর্ক নিয়ে পাঁচ কথা বলতে শুরু করায় সেতাবেরও মনে সন্দেহ জাগে। একথা শুনে বড়বউ রাগ করে তার স্বামীকে বলত, ‘ইতর’। বলত, পটোয়ারি-জালিয়াতি বুদ্ধিতে এই সম্পর্কের হিসেব বোঝা যায় না। ... ...
এখন যখন আমরা পত্রিকার পাতায় পড়তে বাধ্য হই তিন দিনের সদ্যজাত শিশুকে ডাস্টবিন হতে তুলে বাঁচাল ক্ষুধার্ত কুকুর, তখন আমাদের মনে পড়ে যায় ৬১ বছর আগে লেখা হাসান আজিজুল হকের ‘শকুন’ নামের গল্পটির কথা। যদিও সেই গল্পে কাদু শেখের বিধবা বোনকে চিহ্নিত করা গিয়েছিল, চিহ্নিত করা গিয়েছিল শকুনদের, কিন্তু এই ২০২১ সালে যখন নগরের ডাস্টবিনে বা নালায় মাঝে মধ্যেই সদ্যজাত শিশুকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তখন সেই মা-দের আর চিহ্নিত করা যায় না। চিহ্নিত করা যায় না শকুনদেরও। এই ৬১ বছরের ব্যবধানে দেশটা ছেয়ে গেছে কাদু শেখের বিধবা বোন আর অসংখ্য শকুনে! কিন্তু হাসান আজিজুল হক আর নেই! ... ...
"বাংলা শিশুসাহিত্যের ছোটোমেয়েরা", লেখক শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক গাঙচিল। নেহাৎ ঘটনাচক্রে বইটি প্রকাশ হবার দিন দুই আগেই হাতে আসে। চমৎকার প্রচ্ছদ ও মুদ্রণ পারিপাট্য। তখনও "অপ্রকাশিত" হওয়ায় বইটির প্রতি একটা কৌতুহল জাগেই , আরো বেশী হয় নামটি দেখে। কালো ও হলুদ প্রচ্ছদে হলুদ রঙে অর্ধবৃত্তাকারে লেখা "যখনই ঘুম ভেঙে যায় তখনই দেখি জেগে আছি"। রুমু বলেছিল না? হ্যাঁ রুমুই তো বলেছিল। মনে পড়ে যায় রুমুর মত আরো সব ছোটো ছোটো মেয়েদের কথা। দুর্গা, রাণু, আলি-ভুলি, মিচকিদের কথা। ... ...
চকচক করে উঠেছিল আমিনার চোখ, আশা আর আনন্দে চোখের কোলে টলটল করছিল দুটো মুক্তোদানা। ডান হাতে খামচে ধরেছিল মনিরুদ্দির পেটি। একটা খপর এনে দাও আমায়। আজ থে তুমি আমার ভাইজান হলে, আলেফের খপর তোমাকে আনতেই হবে ফের। কি কুক্ষণে মনিরুদ্দি সেদিন ব্যাপারি বুদ্ধি খেলিয়ে ভাইজান হবার সুবাদে কম পয়সায় মাল খরিদ করেছিল। তখন কি জানত ওয়াহিদ বক্স কোনো খবর আনতে পারবে না। মোদ্দা কথা হল, ওয়াহিদ নিজে তো যায়নি, এরকম বছর বছর লোক যায়। তার মধ্যে থাকবে কোনো এক আলেফ। কিন্তু যদি দশজনা যায়, ফেরে মুরুব্বি গোছের দু’জন। ক’মাস বাদে তারা আবার সঙ্গীসাথী জুটিয়ে পেটি নিয়ে সফরে রওয়ানা হয়ে যায়। আর সবার যাওয়ার জায়গা – সে-ও কি এক? বুঝিয়েছিল ওয়াহিদ বক্স। কেউ যায় লন্ডন, জোহানেসবার্গ, আবার এক দল যাবে নিউ ইয়র্ক, নিউ অরলিন, ভ্যাঙ্কুভার – এমনই হরেক বন্দর। কে আলেফ আলি, সে কোন দিকে গেছে, কে জানবে তার ঠিকানা? ... ...
Memories of murder (২০০৩) খ্যাত দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক বং জো-হো এর ২০১৯ সালের ছবি ‘Parasite’ নিয়ে আলোচনা করলেন শুভদীপ ঘোষ। ... ...
হাজার বছর ধরে ইহুদি পেটানো, পোড়ানো এবং খ্যাদানো এক জনপ্রিয় ক্রীড়ায় পরিণত হয়েছে। যিশু খ্রিস্টকে ক্রুসে চড়ানোর অপরাধের কলঙ্ক ইহুদিদের মাথায় লাগানো রইল। তার ওপরে ইউরোপের গ্রামে গঞ্জে পাড়ায় পাড়ায় কেউ রটিয়ে দিলো ইহুদিরা খ্রিস্টান শিশুর রক্ত দিয়ে তাদের পুজো আচ্চা করছে (ব্লাড লাইবেল) অথবা তারাই ভয়ঙ্কর প্লেগের (ব্ল্যাক ডেথ) কারণ। আম জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি সোঁটা নিয়ে ইহুদি হত্যায় লেগে গেলো। খুন কা বদলা খুন। নাৎসিরা কোনমতেই এই খেলাটির পেটেন্ট দাবি করতে পারে না। বরং ক্রিকেট বা ফুটবল খেলার মত আরেকটি নতুন ক্রীড়া উদ্ভাবনের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ইংল্যান্ডের প্রাপ্য। জাতি ধর্ম দিয়ে চিহ্নিত করে কি ভাবে একটা গোটা টিমকে রেড কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করা যায় সে খেলা দেখাল ইংরেজ। সিনাগগ বন্ধ হয়েছে, আত্ম পরিচিতির জন্য ইহুদিদের বিশেষ ব্যাজ পরা আবশ্যক (সাড়ে ছশো বছর বাদে নাৎসিরা এঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করবে)। ... ...
জানো সেদিন রাতে খুব ঝড় এসেছিল। মনে পড়লো সেদিন আমি নৌকাটি বাঁধতে ভুলে গিয়েছিলাম। এই কারণে আগে দু দুবার আমি নৌকা হারিয়েছি। ঝড় একটু থামলে চটপট ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ঘাটে গিয়ে দেখি নৌকা ঠিক বাঁধা আছে। আমি তো সেদিন নৌকা বাঁধিনি। স্পষ্ট মনে আছে। হঠাৎ দেখলাম নৌকায় একটি ছোট বাচ্চা বাঘ। বাঘ দেখে আমার শরীর ভয়ে কাঁপছিল। বাঘটির দিকে তাকিয়ে খুব মায়া হল। আহারে এত ছোট্ট বাচ্চা বাঘ। এই ঝড় বৃষ্টিতে বেচারা কষ্ট পাচ্ছে। ... ...
তীরে এসে তো আর প্রেস্টিজ ডোবাতে পারিনা, তাই মুখে হিন্দি শেখা ডাকাবুকো অভিনেতার মত হাঁ হাঁ কিঁউ নেহি টাইপের ভাব করে ভেসে পড়তে হলো। এই অঞ্চলটা প্রায় একইরকম তবে বৈচিত্র্য আরো বেশি। মিনিট কুড়ি ধরে সেখানেও কুস্তি করে তারপর একসময় মুক্তি পেলাম। বীরের মত জল থেকে উঠে এলাম, মুখের ভাবটা আরো ঘন্টা দুই জলে থাকতে পারলেই ভালো হতো। শুনলাম ৫০-৫৫ বছরের ঐ ভদ্রলোক, যিনি সপরিবারে স্নরকেলিং করতে এসেছেন, তিনি অগাধ সমুদ্রে সাঁতার দিয়ে একটা কচ্ছপের পেছনে ধাওয়া করেছিলেন। তারপর এতদূরে চলে যান (এবং কচ্ছপটা এতই দ্রুতগামী) যে তাঁর ভয় হতে থাকে ফিরতে পারবেন না। অতঃপর বুদ্ধিমানের মত ফিরে এসেছেন। বুঝলাম যে লড়াইটা আদপেই সংস্কৃত আর হিন্দির না, বস্তুত তারা হলো "অলসো র্যান" ক্যাটাগরি। আসল হিরো হলো হলিউড, সেখানে সবই সম্ভব। কচ্ছপটা জোর বেঁচে গেছে। ... ...
টিভিতে সিরিয়াল দেখা বন্ধ রেখে এক দুই তিন করে ছায়াপিণ্ডরা সব পাশের বাড়ির ছাদে উঠে আসছিল। অন্ধকারে লাল বিন্দু দেখতে পেল বিপ্লব- সিগারেট ধরিয়ে মজা দেখছে সুধীন। এই সময় বাড়ির সামনে বলাইএর রিক্সা এসে দাঁড়িয়েছিল।মিঠুকে নামিয়ে দিয়ে ফিরে যাচ্ছিল বলাই। টেনে টেনে প্যাডেল করছিল। কমজোরি আলোয় এ'পাড়ার প্যাঁচালো গলি আবার তার সমস্ত রহস্যময় বাঁক নিয়ে উপস্থিত। অসম্পূর্ণ এক্কাগাড়ির মত লাগছিল বলাইএর রিক্সাকে। ভৌ ভৌ করল কালু। রিক্সার পিছনে দৌড়োলো খানিকক্ষণ। ছন্দা দ্রুত নামছিল সিঁড়ি বেয়ে - দরজা খুলে দেবে। বিপ্লব ওর পিছনে। মিঠু ঘরে ঢুকে ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলল সোফায়- সকালের পারফিউমের গন্ধ উবে গিয়ে অদ্ভূত গন্ধ বেরোচ্ছে গা থেকে- অচেনা আর অস্বস্তিকর। ... ...
সপ্তদশ শতক। শাহ জাহান বাদশার হেঁশেল। মুঘলাই খিচুড়ির রোশনাই। আর তারই মধ্যে একটির নাম খিচড়ি দাউদখানি! সে নাম যেমন রহস্যময়, তেমনই বিচিত্র সে খানা—বলছে খিচড়ি, কিন্তু চাল নেই! নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
পাড়ার বাসস্টপ পেরিয়ে একটু গিয়েই মেট্রো স্টেশনটা, প্ল্যাটফর্ম এর পাশের দোকান থেকে প্রতিদিন এক কাপ চা না খেলে দিন শুরু হয় না, ট্রেনে চেপে বসলাম, আমার পাশে একটা মেয়ে বসলো দুই স্টপ পর, প্রতি দিন ৩ ঘন্টা ট্রেনে বসতে ভালো লাগে না, লোক জন কথাও বলে না। মেয়েটার চুল ছোট করে ছাঁটা, মেটে লাল রঙের। মুখ দেখা যাচ্ছিল না, কিন্তু তারপর হঠাৎ, আমার দিকে তাকিয়ে বললো, "কিছু জিজ্ঞেস করবেন? এতক্ষণ ধরে কারো চোখে কারোর তাকিয়ে থাকা একটু ইমপোলাইট, তাই না?" ... ...