কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর স্তরে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে মঞ্জু রায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগে গবেষণায় যোগ দিলেন প্রফেসর অমরনাথ ভাদুড়ির কাছে। তারপর গবেষণাই করেছেন সারাজীবন। গবেষণার বিষয় ছিল ক্যান্সারের ওষুধ আবিস্কার। ডঃ মঞ্জু রায় এবং তাঁর স্বামী ডঃ শুভঙ্কর রায় একসঙ্গে কাজ করে কর্কট রোগ বা ক্যান্সারের চিকিৎসায় মিথাইল গ্লাইওক্সাল নামক যৌগটির কার্যকারিতা প্রমাণ করেছিলেন এবং ক্যান্সারের ওষুধ হিসেবে এই যৌগটিকে সাধারণ মানুষের নাগালে আনতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কাজ করেছেন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স (IACS, যেখানে সি ভি রমনও কাজ করেছেন) এবং বসু বিজ্ঞান মন্দিরে; শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার সহ বহু পুরস্কার এবং সম্মানও পেয়েছেন সারাজীবনে। ... ...
জলবায়ু পরিবর্তনকে এই বিপর্যয়ের জন্য সরাসরি দায়ী করা যেতে পারে। পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহের সম্মুখভাগের অর্ধগলিত অংশে হ্রদ তৈরি হয় প্রাকৃতিকভাবে। এই হ্রদের তিন পাশের দেওয়াল নির্মিত হয় হিমবাহ বাহিত মোরেন দ্বারা। মোরেন শব্দটির অর্থ হল যে পাথর ও পলি হিমবাহ পাহাড় ক্ষইয়ে ভেঙে বয়ে নিয়ে আসে। এই মোরেন-এর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বড় আকারের পাথর থাকে। সূক্ষ্ম দানার পলি খুবই কম। কারণ হিমবাহের গতি শ্লথ; ভেঙে আনলেও পাথর বেশিদূর বহন করে নিয়ে যায় না। ... ...
প্রিয় স্যার - সাধারণতঃ অদেখা কাউকে চিঠি লেখাটা খানিকটা কঠিন কাজ - অনেকটা কোন একটা বিমূর্ত ধারণাকে সম্বোধন করার মতই বলা যায় - তবে আপনার প্রতিনিধি, মিঃ এইচ এম স্ট্যানলির, এই দূরের দেশে উপস্থিতি আপনার সঙ্গে আমার অপরিচয়ের ব্যবধান ঘুচিয়েছে। উনি না এলে আমি অবশ্যই এই চিঠি লিখতে কিন্তু কিন্তু করতাম। তবে ওঁকে পাঠিয়ে আপনি যে অসীম দয়া দেখিয়েছেন সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি লিখতে খুবই স্বচ্ছন্দ বোধ করছি। ... ...
আর দায় নেই চুপটি থাকার, বলব যা আজ চাইবে মন, ভক্তকূলও ঝুঁকিয়ে মাথা, ঘুরবে পিছে সর্ব ক্ষণ। গান্ধীবাড়ির হিসাব জিগাই, ঠিক ভুলে যাই আম্বানি, নীরব, মেহুল ? - দূর মহাশয়, সবার কি আর নাম জানি? নারদাতেও যেমনি টাকা, নেয়নি মোটে ভোন্দুও, গ্রিটিংস কার্ডেই খাম ভরা সব, পাঠিয়েছিল বন্ধু ওর। ... ...
নিউ ইয়র্কে বলে, ইউ ক্যান টেক দি গার্ল আউট অফ ব্রনক্স বাট ইউ ক্যান নট টেক দি ব্রনক্স আউট অফ দি গার্ল। ভারমুক্ত আমি চলে এসেছি অনেক দূরে ইংল্যান্ডের সারেতে কিন্তু কুণালের লেখা মনে করিয়ে দিল, ‘ইউ ক্যান নট টেক বরানগর আউট অফ মি’। কুণাল আমার চেয়ে অনেক ছোটো হবেন, কিন্তু তিনি আর আমি দেখেছি এক আশ্চর্য উত্তাল সময়কে –দিকে দিকে ছড়ানো লাল আগুনের উত্তাল কলকাতা একাত্তর, সেখানে তিনি অর্থনীতি পড়ছেন, অমর্ত্য সেনের পভার্টি অ্যান্ড ফেমিনের কথা বলছেন আর তুষার রায়! রতন বাবু রোডের, আমাদের তুষারদার ব্যান্ডমাষ্টার অঙ্ক কষছেন ম্যাজিক লুকিয়ে চক এবং ডাস্টার। ... ...
তবে বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দানীর উৎসে পাশ্চাত্যের ঋণ থাকলেও এ কথা মানতেই হবে, পিতৃতান্ত্রিক অপরাধ-সাহিত্যপরিসরে গোয়েন্দা হিসেবে নারীদের উঠে আসা একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছিল। আর এই উত্থান যে ধূমকেতুর মতো সহসা দেখা দিয়েই মিলিয়ে যাওয়ার মতো নয়, সে কথাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল তার পরবর্তী দুই দশকেই। তাই কৃষ্ণা-শিখার মতো অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় মাতোয়ারা সম্পন্ন তরুণী কিংবা বিন্দিপিসি-সদুঠাকুমার মতো ঘরোয়া বয়স্কা মহিলা নন, ক্রমশ এই দুনিয়ায় আসর জাঁকিয়ে বসতে শুরু করলেন সেই মেয়েরা, যাঁরা পেশাগতভাবেই গোয়েন্দাগিরি বা অন্য কোনও বৃত্তিকে অবলম্বন করেছেন। অজিতকৃষ্ণ বসুর ডিটেকটিভ নন্দিনী সোম সায়েন্স কলেজ থেকে এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজির স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানাধিকারিণী। ... ...
মাসিদোনিয়াতে তাঁরা জনসংখ্যার পঁচিশ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী স্রেভেনকোভস্কি বললেন জনশ্রুতি এই যে মাসিদোনিয়ান সরকার তাঁদের মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছেন, আলবানিয়ান ভাষা শেখানো হয় না, ছেলে মেয়েদের আলবানিয়ান নাম দেওয়া নিষিদ্ধ, সরকারি দফতরে, আর্মিতে চাকরি জোটে না। ক্লিনটন সরকার এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কিন্তু আপনাদের জানাতে পারি এটি সম্পূর্ণ অসত্য। মুশকিল হলো প্রধানমন্ত্রী স্রেভেনকোভস্কি এমন সব রাজনৈতিক ইসু তুলে ধরলেন যার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানা ছিল না। ... ...
রাইফেলের মাছি ওর কপালে তাক করে ঘোড়ায় চাপ দিলাম আর , ঘোড়াটা টেপার সঙ্গে সঙ্গে সেফটি ক্যাচটাও খুলতে থাকি যাতে ওটা খোলা আর গুলির আওয়াজ এক সঙ্গে হয়। রাইফেল ছোড়ার এই উল্টোমুখি কায়দায় কী ভাবে কাজ হয় জানিনা , কিন্তু কাজ অবশ্যই হয়েছিল ; আর যখন কাছ থেকে ছোড়া শক্তিশালী রাইফেলের গুলি ওর কপাল ফুঁড়ে দিল শরীরটায় একটা ছোট কম্পন হয় ,ওর ল্যাজটা ছড়ানোই থাকে , পেছনের পাটা চারা গাছটার ওপরের ডালে যেমন ছিল রয়ে যায় ; উঁচু নাকটা এখনো স্বর্গের দিকে। ও যেমন ছিল ঠিক তেমনই রয়ে যায় যখন আমি প্রথমটার পরপরই সম্পূর্ণ অকারণেই , দ্বিতীয় একটা গুলি মারলাম। যে বদলটা চোখে পড়ে তা হল পেটের ওঠানামা বন্ধ হওয়া; আর কপালের দুটো আশ্চর্য রকমের কম ছোট ফুটো থেকে রক্ত চুইয়ে পড়তে থাকে। ... ...
আমরা নবম দশম শ্রেণিতে বাড়ি থেকে সাড়ে ছয় কিলোমিটার দূরে ভর্তি হয়েছি। গ্রামে জুনিয়র হাইস্কুল অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। পুরানো পাঠকদের মনে থাকতে পারে এ-সব কথা। আগের স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে উঠলে সরস্বতী পূজা করার দায়িত্ব পাওয়া যেত। করেছি ধুমধাম করে। তবে গ্রামে খিচুড়ি খাওয়ার চল ছিল না পেটপুরে। প্রসাদ মিলত। লুচি সুজির হালুয়া নানারকম ফল। খাওয়া নয়, পূজার আয়োজন ছিল আসল। অন্যদিন শীতকালে লাইতে (নাইতে/ চান করতে/ শহুরে স্নান করতে) ইচ্ছে করতো না, ওইদিন ভোর ভোর উঠে পুকুরে ডুব দিয়ে নতুন জামা পরে ছুট স্কুলে। ধুপধুনোর গন্ধ আমাকে খুব টানতো। আমার তো পরে ইচ্ছে করতো, বর্ধমানে অমল ব্যানার্জিদের পারিবারিক দুর্গাপূজার আয়োজন দেখে, একটা আস্ত দুর্গাপূজা একাই করতে। ২০১১ থেকে ২০২২ একটা দুর্গাপূজার অন্যতম প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে আমি পূজা পরিচালনা করেছি। ভোর পাঁচটায় উঠে রাত বারোটার সময় ঘরে ঢুকেছি। চারদিন দুবেলা খাওয়ার আয়োজন (পেটপুরে প্রসাদ ধরলে চার বেলা) একশো পরিবারের। সাড়ে তিনশো থেকে সাড়ে চারশো মানুষের। ... ...
আমি ডাক্তারকে শেখ সাইদের কাছে লোক পাঠানোর জন্যও অনুরোধ করলাম। তার কাছে এটা জানতে চাওয়ার দরকার যে ডাক্তার উজিজিতে প্রথম বার পৌঁছানোর পরে ডাঃ কার্ক ও লর্ড ক্ল্যারেনডনের জন্য যে দুটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন, সেটা তিনি পেয়েছেন কিনা; আর ডাক্তার যেমন চেয়েছিলেন, সেইমত তিনি চিঠিদুটো উপকূলে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কিনা। দূত এসে খবর দিল যে হ্যাঁ পাঠানো হয়েছে। পরে ডাক্তারের উপস্থিতিতে প্রশ্ন করেও একই উত্তর পেয়েছি। ... ...
অস্বাভাবিক দামি জিনিসের উপরে সাধারণ মানুষের একটা স্বভাবসিদ্ধ বৈরিতা কাজ করে। এ অস্বাভাবিক কিছু নয়, আমরা আমাদের দৈনিক জীবনেই বুঝতে পারি। যা আমাদের সাধ্যাতীত তাকে দূরে রেখে জীবনের কঠোর পথে তৈলনিষিক্ত করার নাম স্বাভাবিক জীবন৷ যা সাধ্যাতীত তাকে দূরে রাখবার জন্যেই এই মানসিক দমন প্রক্রিয়া, ডিফেন্স মেকানিজম, আমাদের শিখতেই হয়েছে। মিউজিয়ামে রাখা আকবরের সোনার গ্লাস দেখে আমাদের চিত্ত চাঞ্চল্য হয় না, কারন সেটা সরকারের প্রপার্টি, কিন্তু পাশের বাড়ির হরিপদ যদি অডি গাড়ি কেনে তবে আমরা মনে মনে চটে উঠি। তাই একটা ক্যানভাসে এলোমেলো কটা দাগ, যা হয়তো আমার পাঁচ বছরের বাচ্চাও করে দিত, তাকে কেউ কোটি কোটি টাকা দিয়ে কিনছে, এমনটা ভাবলে একধরণের বিতৃষ্ণা জন্মানো কিছু অস্বাভাবিক নয়। ... ...
চমৎকার ঘাস কাটার হাত ছিল উমার। ছাগলের জন্য বেছে বেছে কালচে ঘন নরম ঘাস কাটতো। আমিও আমাদের ছাগলের ঘাসের জন্য উমার সাগরেদি করেছি। তালপুকুরের পাড় থেকে শুরু করে আশপাশের ধান কাটা জমিতে ভালো ভালো ঘাস কেটেছি। এছাড়া উমার একটা গুণ ছিল, এক ধরনের লম্বা ঘাস হতো। তাকে বলা হতো, ব্যাঙের বাড়ির ঘাস। ভিতরটা ফাঁপা । হাত দিয়ে টিপলে পটপট করে আওয়াজ হতো। আমাদের গ্রামীণ জীবনে ওইগুলোই তো ছিল আনন্দের উৎস। সেই ঘাস দিয়ে উমা দারুণ ঘর বানাতো। দোতলা তিনতলা। ... ...
১৯৬৭ সালে ইজরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে। ওদিকে এই যুদ্ধের আগে থেকেই গাজার এক-পঞ্চমাংশ ইজরায়েলের দখলে। ২০০৪ সালের পর থেকে গাজাও যেন জেলখানায় পরিণত হয়েছে। ইজরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা ইচ্ছেমত প্যালেস্টাইনিদের পশ্চিম তীরের বাসস্থান থেকে হঠিয়ে দিয়েছে। আরবরা যখনই প্রতিবাদ করেছে, তাদের বা আইডিএফের হিংসার শিকার হয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে আরবরা বসতি দখল ও নির্যাতন সইছে। ইজরায়েলিরা পশ্চিম তীরের ৫৯ শতাংশ দখল করে নিয়েছে, ইজরায়েলি বসতি বানিয়ে দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন পৃথিবীর নজর যখন গাজার উপর, সেই অবকাশে ইজরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা পশ্চিম তীরে আরবদের বাড়িতে ঢুকে বাসিন্দাদের মারছে, গাড়ি, ফলের বাগান জ্বালিয়ে দিচ্ছে। বসতিতে ঢুকে এমন সন্ত্রাস করছে যে ভয়ে সবাই বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে। ... ...
মোহন ফরেস্ট চেক পোস্টে যখন আসে সে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে। তার জিনসের প্যান্ট ফেঁড়ে গিয়ে পায়ে অল্প অল্প রক্ত বেরোয়। নাম জিজ্ঞেস করলে সে বলল তার নাম আনিস। তার কথাবার্তা ঠিক ছিল না। ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে কেইবা ঠিকঠাক কথাবার্তা বলতে পারে। অনেকটা ঘোরের মধ্যে সে বার বার তার মোটর বাইকের দিকে দেখাচ্ছিল। আর বলছিল একমাত্র প্ল্যাটিনা নামের বাইকে চড়েছিল বলে সে পালাতে পেরেছে। ব্যাপারটা কী , কার হাত থেকে সে পালাতে পেরেছিল, এসব না বলে খালি বাইকের কথা বলায় অভিজ্ঞ ফরেস্ট গার্ডরা সব বুঝতে পারে আর এক গ্লাস গরম দুধের ব্যবস্থা করে। সেই দুধ খেয়ে ধাতস্থ হয়েও আনিস খানিকক্ষণ চুপ মেরে বসেছিল তারপর ধরা গলায় আদমখোরের কাহিনী শুরু করল। ... ...
পিংলা বলে, তুমি যখন বলছ কবিতা লেখা তোমার স্বাভাবিক ভাবে এখন আসছে না, বাদ দাও কবিতা লেখা। সিনেমা অনেক বড় ফীল্ড ওতেই মন দাও না তুমি। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ যখন রাশিয়া থেকে ফিরলেন – আমাকে নয়, কিন্তু – গুরুদেবের আশপাশে যে-সব গুণী মানুষরা সব-সময়ই থাকেন, শুনলুম কবি তাদের বলেছেন, ওখানে আইজেনস্টাইন নামের একজনের তৈরি করা ব্যাট্ল্শিপ পোটেমকিন নামে দীর্ঘ একটা সিনেমা উনি দেখে এসেছেন, সেই সিনেমার সঙ্গে এখানে যে-সব সিনেমা দেখেছেন তার কোন তুলনাই হয় না। উনি নাকি বলেছেন, অনেকের ধারণা সিনেমা আর কিছুই না, শুধু ক্যামেরায় তোলা একটা নাটকের মতো। এমনকি, নিজের নটীর পূজা সম্বন্ধেও নাকি বলেছেন, ওটা কোন সিনেমাই হয়নি, সিনেমা আধুনিক মানুষের আবিষ্কৃত একটা সম্পূর্ণ অন্যরকমের শিল্প – এ ছবি-আঁকা-মূর্তি-গড়া নয় যা গুহাবাসী মানুষরাও করত, এ কবিতা-লেখা-গান-গাওয়া নয় যা বেদ-উপনিষদের সময়েও মানুষের আয়ত্ব ছিল – এই শিল্পের ভাষাই অন্য, এবং সে-ভাষা এখন ক্রমাগত তৈরি হয়ে চলেছে, আর শিল্পের নতুন নতুন চমক শিখছে মানুষ। ... ...
দোকানপাটের চরিত্র বদলে গেছে। আগে শুধু থাকতো সব মিলিয়ে গোটা ১০-১৫ টি দোকান। বৈশিষ্ট্য গ্রামীণ। বারোয়ারিতলা তথা ওলাইচণ্ডী পূজার কাছে জিলিপি, জিভে গজা, গজা, কাঠিভাজা, এবং রসগোল্লার দোকান। পরপর দুটি। তারপর চপ বেগুনি পাঁপড়ভাজা। আর গোলামহলের দুপাশে মাঝেরপাড়া যাওয়ার রাস্তা ধরে বাচ্চাদের খেলনার দোকান। লাট্টু, কটকটি, তালপাতার সেপাই, বাঁদর লাঠি, ছোট ঢোল ইত্যাদি। থাকতো সংসারের জিনিস। খান দুই তিন দোকান। হাঁড়ি কুড়ি, অ্যালুমিনিয়াম ও লোহার কড়াই, তাওয়া, কাঠের বেলুনি, খুন্তি ইত্যাদি। আগে বেশিরভাগ থাকতো লোহার। মাটির হাঁড়ি কুড়ি, জালার দোকানও বসতো। আশির দশকে তার ঘন্টা বাজল। স্টিলের বাসনকোসন ঢুকল ১৯৮৫র পর। ... ...
তার পুব দিকের ঢালের উঁচুতে বড় বড় ওটের ঘাস জন্মেছে। ওই ঘাসবনের পরেই খাড়া পাহাড় সোজা নেমে গেছে কোশি নদীর পাড় অবধি। একদিন খাড়াই পাহাড়ের উত্তর দিকের গ্রাম থেকে একদল মেয়েবউ ওখানে ঘাস কাটছিল। হঠাৎ এক বাঘ তাদের মধ্যে এসে পড়ে, হুড়োহুড়িতে এক বয়স্কা মহিলা হুমড়ি খেয়ে পড়ে ঢাল বরাবর গড়িয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। বাঘটা যেমন হঠাৎ আসে তেমনই চিৎকার চেঁচামেচিতে রহস্যময় তার পালানো। খানিকটা ভয় কাটলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে মেয়েরা আর ঘেসো জমির ঢাল ধরে খানিকটা নেমে এক সরু ধাপিতে ওনাকে আহত অবস্থায় পাওয়া গেল। মহিলা কোঁকাতে কোঁকাতে বলেন তিনি মারাত্মক চোট পেয়েছেন। ... ...
ভারতের মানুষের আত্মসম্মানবোধ হারিয়ে গিয়েছে। তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন এ দেশে ধর্মের কদর রুটির চেয়ে বেশি। এ দেশে যারা প্রকৃতই আমাদের খেতে দিচ্ছেন, তাঁদের উপর নেমে আসছে অত্যাচার। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পেশা কী?এ প্রশ্নের উত্তরে পুরোহিত, রাজনীতিবিদ, সেনা, বিজ্ঞানী, শ্রমিক নয়, আসবে কৃষকদের কথা। কৃষকরাই আমাদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন। আর তাঁরাই এ দেশের রাজধানীতে ব্রাত্য। এ জন্য এ দেশের শাসকমহলে কোনও লজ্জা তো নেই, বরং শাসনের অহঙ্কার রয়েছে। ... ...
রাজ্য মহিলা কমিশন থেকে প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে খোঁজ নিতে। সেই প্রতিনিধি দলও পুলিশের সুরে সুর মিলিয়ে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে গ্রামে ঘুরে ঘুরেও নারী নির্যাতনের কোনো অভিযোগই তারা নাকি পায়নি। আর অন্যদিকে মিডিয়ার সামনে মুখ খোলার অপরাধে এক অভিযোগকারী মহিলার মুখে গরম লোহার ছেঁকা দেওয়া হয়েছে, আক্রমণের মুখে পড়েছে তার শিশুসন্তান, সমাজবিরোধীদের হাতে মার খেয়ে তার স্বামী ঘরছাড়া। সন্দেশখালির নিপীড়িত মহিলারা এতটাই সন্ত্রস্ত যে আগে যারা সরাসরি মিডিয়ার সামনে মুখ খুলেছিলেন, আজ গামছার আড়ালে পরিচয় লুকাতে হচ্ছে পাছে পরিচয় জেনে আবার গুন্ডাবাহিনী বাড়িতে হানা দেয়। অন্যায্য ভাবে পুরো এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে, ইন্টারনেট বন্ধ করে সন্দেশখালিকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল, হাইকোর্টের দাবড়ানি খেয়ে সেটা খারিজ করে আবার অঞ্চল ভিত্তিক ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ... ...
প্লাবনের বিষয় হিমালয়ে নতুন নয়। ২০০০ সালে শতদ্রু নদের ভয়াবহ বন্যা দেখেছে হিমাচল। ২০২৩ সালে অবশ্য বার বার এসেছে বিপর্যয়। এই বছরে মেঘ ভাঙার ঘটনা এবং তার ফলে হড়পা বান, এসব ঘটেছে বার বার। সারা বিশ্বে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। হিমালয় ব্যতিক্রম নয়। এই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অপ্রত্যাশিত এবং অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সঙ্গে যোগ হয়েছে মনুষ্যকৃত কিছু হঠকারী কার্যকলাপ। সেই কাজের মধ্যে অন্যতম হল যথেচ্ছ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি গড়ে তোলা। ... ...