ব্যালকনির কাব্য গল্প --------- আশিস বন্দোপাধ্যায় পুরানো কিন্তু ভরানো সে সকাল, হেলান দিয়ে বসে হতুম খুন হেসে - গড়িয়ে গড়িয়ে ঘুরত কত বিকাল। বারান্দা দিয়ে আসতো আলো, খেলায়, দিনের সকাল প্রথম আলোর
এ যেন এক বালিকা ঘরের এক কোনে সূঁচ-সুতো নিয়ে বসেছে। খেলাচ্ছলে গৌরী বালিকা মালা তৈরী করছে শিব ঠাকুরের জন্য। পাশের ঝুড়িতে লাল-নীল-হলুদ হরেকরকমের ফুল। আপনমনে যে ফুল হাতের কাছে উঠছে তাই সূত্রাকারে গাঁথা হচ্ছে। তার কোন নির্দিষ্ট ছন্দ নেই, তাল নেই, লয় নেই। তবুও যে মালা গেঁথে সে শিব ঠাকুরের গলায় পরাল, তা অনিন্দ্যসুন্দর। তেমনই, কখনও সেকেন্ড পার্সন ন্যারেটিভে, কখনও ফার্স্ট পার্সন ন্যারেটিভে, কখনও থার্ড পার্সন ... ...
পরমানন্দবাবুর ঘরের বাইরে একটুখানি উঠোন আছে। তার একধারে একটা গন্ধরাজ ফুলের গাছ দাঁড়িয়ে। রাত্রে মধুর সুরভি ছড়ায় গন্ধরাজ ফুল। শুভ্র নির্মল কুসুমদল পাতার ফাঁকে ফাঁকে জেগে থাকে রাতের অন্ধকারে। অলোকেন্দু মিত্র অতি সহজে মামলা ঘুরিয়ে দিলেন। নিপুণ দক্ষতায় অকাট্য কাগজপত্র তৈরি করে পরমানন্দবাবুর প্রতিপক্ষকে ধুলিসাৎ করে দিলেন। মামলার রায় বেরোবার পরের দিন অলোকেন্দুবাবু প্রতিবিম্বদের বাড়ি গেলেন তার মামার সঙ্গে দেখা করতে। পরমানন্দবাবু খবরটা ... ...
পূবের সূর্য ঘোমটা খুলছে। কুঙ্কুম রাঙানো নরম আলোয় ভেসে যাচ্ছে চরাচর। সবুজ পাতারা ছড়িয়ে দিচ্ছে মিঠে হাওয়া; ফুলেরা সুবাস। পাখির দল বাসা ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে; জুড়ে দিয়েছে কনসার্ট। উঁচু উঁচু বাড়িগুলো তালগাছের মত নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে রয়েছে। একটু একটু করে জেগে উঠছে চরাচর। তবে বেশিরভাগ পাড়াই এখনও 'দুয়ার এঁটে' ঘুমিয়ে। বড় মায়াবী এই ভোরের পৃথিবী। অনাঘ্রাতা এক নারী যেন! যার অপার্থিব শান্ত সমাহিত আঁচল ছায়ায় ... ...
হেলায় হারানো সে বিকেল আবছা আলোয় ঝাপসা,কাঁচে আজযে আদর অধিকার কই প্রেমের নিবিড় প্রবীন জালে…একটা সকাল এমনও আসতে পারতো… মুখোমুখি তোমায় পেতাম.. কিন্তু তা আর হল না… মোহের জালের
আরতি প্রথম পর্ব। আরতি পনের বছরে পা দিতেই বাবা মারা গেলে, অনাথ হয়ে পড়ে পুরো পরিবার। বড় ভাই এক মুসলিম মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে, এক পর্যায়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে দুজনে, নিখিল ধর্ম ত্যাগ করে বউয়ের জন্য। এখন রীতিমতো পাক্কা ধার্মিক বনে গেছে। লম্বা দাড়ি, মাথায় টুপি আর হাতে তসবিহ আছেই। থাকে রাজধানীতে। বউ সহ ... ...
*** অভিযোগ ষোলোশো পয়ঁতাল্লিশে গুজরাটে সুবেদার থাকার সময় ঔরঙ্গজেব মোঘলদের ফাইনান্সার, হীরে জহরত বুলিয়ান ট্রেডার জৈন শান্তিদাসের তৈরি পারশনাথ মন্দির অপবিত্রকরণ করেন। বিগ্রহের অঙ্গহানী করা হয়। এর ভিত্তি হিসেবে ফার্সি সূত্রে অজানা লেখকের মিরাত-এ আহমাদির বর্ণনায় মন্দির অপবিত্র করে সেখানে কোবাল-উল ইসলাম (Quvval-ul-Islam) নামের একটা মসজিদ বানানর কথা জানা যাচ্ছে। ফরাসি পর্যটক জন দ্য থেভেনটের বিবরণীতে ... ...
মা বনাম বউ লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা। সুন্দরী বউ পেয়ে মাকে ভুলে যেও নাতুমি অকালে দুনিয়া থেকে চলে গেলেবৈবাহিক সঙ্গী দুই দিনের বেশি কাঁদবে নাতোমার চেয়ে ভাল একজন সঙ্গী খুঁজে নেবে। সন্তানহারা মায়ের চোখের জল কেউ কখনো মুছতে পারবে না।দশ মাস দশ দিন গর্ভ যন্ত্রণায় ভোগে তিনি যে সন্তানের গর্ভধারিণী
বদনাম লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা। যখন তোমার সকলে বদনাম শুরু করবে কিন্তু বুঝবে তখনতুমি সফল হতে শুরু করেছো !! পৃথিবীতে কর্মই শ্রেষ্ঠ জেনে রেখো। জীবনে খারাপ সময়গুলো আসা প্রত্যেকের জীবনে ভীষণ দরকার! মুখোশ পরা বেঈমান বিশ্বাসঘাতক
আজব সভ্য সমাজে বসবাস ! লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা। দেবর কখনো বৌদির ভাই হতে পারে না, বৌদির দুর্বলতার সুযোগে দেবরের সদ্ব্যবহার। শালী কখনো জামাই বাবুর বোন হতে পারে না, আড়ালে একা পেলে অবৈধ সম্পর্কিত লিপ্ত। প্রেম করলেই স্বামী-স্ত্রী হওয়া যায় না, কেউ একজন মত পরিবর্তন করলেদীর্ঘদিনের স্বপ্নের সম্পর্ক ভেঙে যায়। স্বার্থ ফুরালে জগতের সবকিছুই ফাঁকা। ধর্মের ভাই, বোন, মা-বাবা বলতে ... ...
জন্ম সাল জানার কৌশললেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা। ৮৩ থেকে নিজের বয়স বিয়োগ করুন। বিয়োগফলের সাথে ১৯৪১ যোগ করলে, আপনার জন্ম সাল দেখতে পাবেন। ৮৩ সংখ্যা - ৫৬ বছর বয়স = ২৭ বিয়োগফল আবার বিয়োগফলের সাথে ১৯৪১ সংখ্যা যোগ আপনার জন্ম সালের তারিখ জানা
শাহাজাদা দারা শুকোহর রাজনৈতিক প্রকল্প ছিল নিজেকে রামায়ণ – মহাভারতের মতো ইন্ডিক টেক্সটের প্রেক্ষিতে ভাবী আদর্শ বাদশাহ হিসেবে ভাবা। এর জন্য একটা স্বপ্নের গল্প বানালেন তিনি। দারা বলছেন :একদিন বশিষ্ঠ মুনি ও শ্রীরাম স্বপ্নে তাঁকে দেখা দেন। মুনিবরকে দেখেই শাহাজাদা দারা শুকোহ আভূমি প্রণত হলেন। খুশি হয়ে মুনিবর বলেন, ''বৎস রামচন্দ্র, এ হল তোমার একনিষ্ঠ ভক্ত, আলিঙ্গনে ধন্য কর একে।'' এর পর দারা বলছেন - শ্রীরাম আমাকে সস্নেহে আলিঙ্গন ... ...
নিখিলবাবুর বাড়িতে সকাল এগারোটা নাগাদ বাঁকুড়া থেকে এক ভদ্রলোক এলেন। নিখিলবাবুর আজ দেড়টার আগে ক্লাস নেই। নীচে কোচিং ক্লাসের ঘরে এসে বসলেন। ----- ' বল শঙ্করী ... কি খবর ... চাষ আবাদ ভাল চলছে তো ? ' শঙ্করীপ্রসাদ গুঁই ধুতি আর ফুলশার্ট পরে গায়ে একটা
"আমরা একে অন্যকে সাহায্য করতে পারি, কিন্তু নিজের ক্রুশ নিজেকেই বইতে হয়।"সংবেদনশীলতা কি কাউকে আদতে শেখানো যায়? অধুনা আপাত নিউরোডাইভার্স কর্পোরেট সংস্কৃতিতে কথায় কথায় অন্যের জুতোয় পা গলানোর যে প্রবাদ চালু আছে, সেই দুনিয়ায় সম্পূর্ণ অচেনা একজন মানুষের প্রতি সহমর্মী হয়ে ওঠার জন্য কতটা কাজে দিতে পারে আশি বছরের পুরনো টি-গ্রূপ মেথড? এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে, ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ এডভান্সড বিহেভিওরাল সায়েন্সের দুই আবাসিক শিবিরে যোগ দিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন লেখক। এই পদ্ধতিতে দশজন প্রতিভাগীরা কদিন রোজ আট ঘণ্টা আলাদা ঘরে যেভাবে একে অপরের সঙ্গে যা ব্যবহার করেন, তাই হয়ে ওঠে তাদের নির্জ্ঞান মনের ডেটাবেস। পুরো পদ্ধতি পরিচালনার দায়িত্ত্বে থাকেন কতিপয় ফেসিলিটেটররা। শুরুতেই সবাইকে এক ফর্মে সই করতে হয় এই মর্মে যে এই ... ...
“’অদ্বৈতসিদ্ধি’ গ্রন্থটি সে সমাপ্ত করিয়াছে। ইহার কঠোর যুক্তিজাল সে আজিকালি অধ্যাপনা করে। এইসব অন্ধকার রাত্রির গর্ভের ভিতর বসিয়া সংশয় আসে, কে তাহার গ্রন্থ মনে রাখিবে? শতাব্দী অতিক্রান্ত হইবার পর কেহ ইহা পড়িবে কি? অথবা, ইহা একটা নামমাত্র বাঁচিয়া রহিবে? এত কঠিন বিতর্কবিন্যাস ভাবীকালের মানবকের উপযোগীতাবাদী মস্তিষ্কে প্রবেশ করিতে পারিবে? অথবা, সে শুধু একটা কিংবদন্তী হইয়া বাঁচিয়া রহিবে? ইহার বেশি কিছু ... ...
বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডারের উৎস অন্য যেকোনো ভাষার মতোই বৈচিত্র্যে ভরা। এখনো পর্যন্ত এই ভাষার অধিকাংশ শব্দেরই সঠিক উৎসসূত্র নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। এযাবৎ প্রকাশিত অভিধানগুলিতে শব্দের উৎস বা ব্যুৎপত্তি যেটুকু পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগই সংস্কৃত তৎসম বা তদ্ভব, অথবা চেনা-পরিচিত বিদেশি শব্দের সূত্র। কিন্তু তথাকথিত দেশী বা বাংলা প্রয়োগ বলে যে কথ্য শব্দগুলিকে আলাদা করে রাখা ... ...
সিরাজ নিয়ে প্রাথমিক সূত্র নির্ভর বড় কাজের অপেক্ষায় ইতিহাস। আসলে বাংলার নবাবরা হায়দারাবাদের নিজামরা আর মহীশূরের হায়দার - টিপু সুলতান সবাই পার্সিওনেট মোঘল ঐতিহ্যের প্রতীক ও পরবর্তী সমপ্রসারণ।যাঁদের প্রত্যেকের রাজভাষা ফার্সি। রাষ্ট্রীয় মতাদর্শ ছিল ঈশ্বর আশীর্বাদপুষ্টরাজতন্ত্র ও তার মাধ্যমে ন্যায় বিধানের নাসিরুদ্দিন তুসির আখলাক এ নাসিরি প্ৰভাবিত যা আবার এরিস্টটল অনুপ্রাণিত। এই তিন রিয়াসাতে ... ...
আলোকবরণ চৌধুরী বিল্ডিং-এর পনের তলার ছাদে উঠে চারিদিক দেখতে লাগলেন। অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায়। যেন সবুজ রঙের আলোয়ানে জড়ানো তলাটা। সবুজের ফাঁকে ফাঁকে নানারঙা নুড়ি পাথরের মতো উঁকি মারছে ঘরবাড়ি। আলোকবরণের বয়স এখন ছেচল্লিশ। রবসন কেমিক্যালস-এর সি ই ও। তিনদিন আগে জার্মানি থেকে ফিরেছে। এখানে ঝাড়খণ্ডের এই প্রোজেক্টটা সুপারভাইজ করতে আসতে ... ...
বছরের শুরুতে দিল্লিতে জোর মিটিং। অবস্থা অতীব কঠিন, এবার বৈতরণী পার হওয়া যাইবে কী করিয়া? অমিত শাহেনশাহ কহিলেন, হোক রামমন্দির। যেমন কথা তেমন কাজ। ঢাক ঢোল ও টিভি চ্যানেল আনিয়া, ধাঁইধপাধপ ডিজে চালাইয়া উদ্বোধন হইয়া গেল। চারদিকে হই হই কান্ড। শাহেনশাহ ঢেকুর তুলিয়া মিডিয়া ম্যানেজারকে তলব করিলেন। কী সংবাদ হে? সে কাষ্ঠহাসি হাসিয়া কহিল, সংবাদ অতি উত্তম। কেবল বঙ্গাল মুলুকে দুষ্ট বালকেরা ছড়া কাটিতেছেঃজলে ভেজেনা পদ্মপাতা ... ...