এই বছরের আশ্বিন মাসের, বাঙালির এই বাতসরিক অনুষ্ঠান আমার জন্য অভুক্তের সামনে খাদ্য সামগ্রীর অঢেল উপস্থিতির মত ছিল। কাজের গুঁতোয়, গত ৪০-টা বচ্ছর বাইরে বাইরে কাটিয়ে, এবার নিজের ঘরে ফিরি। তাই মহালয়া থেকে এক দুরু দুরু অপেক্ষা নিয়ে দিন গুণছিলাম। কিন্তু হতাশ হলাম। কলকাতার পূজো হয়তো জাঁক জমক আর আকারে প্রকারে বিরাট হয়ে উঠেছে - বিশেষত তকমাধারী হবার পরে। তা বলে মায়ের রূপও পালটে দেবে? বন্ধু বান্ধব আর প্যান্ডেল হপিং করে বেড়ানো কিছু উৎসাহী পরিচিতের পাঠানো হোয়াটস অ্যাপ ছবিতে, মা-কে বেশির ভাগ মন্ডপেই, অ্যালিয়েন রূপে দেখতে পাচ্ছি। মায়ের এ রূপ আমি জানি না, পড়ি নি, বীরেন বাবুর বর্ণনাতেও পাই নি। এই কি আমাদের ... ...
একা একা পথ চলতে আর লাগছে না ভালো।এবার তো আমার জীবনে মনের মতো কেউ আসো।।এই নাছোড় ছাড়া মনটাকে কেউ তো নিজের প্রেমে বাঁধো।।নিজের মনে করে এবার কেউ তো আমায় ভালোবাসো।।আগাম দিনের বার্তা নিয়ে কেউ তো পায়ে পায়ে পথ চলো।আমার যে এখন লাগছে একা একা। কেউ তো আমার সুখে দুঃখে হাঁসো। -দীপঙ্কর সাহা (দীপ) ... ...
"পৌরাণিক ভস্ম থেকে উঠে আসে বেদনার পাখি বিবর্ণ প্রজাপতি ছুটে যায় কালো জল নদীটির কাছে অস্তমিত সব কথা অতীতের নিবিড় অতলে ঘুমিয়েছে আমাদের অন্তর্গত অলীক শহর"পাপা, ক্যান আই টেল ইউ এ্যা স্টোরি অব ডগ।আমি কলম সরিয়ে রাখলাম, গভীর মনোযোগে তাকালাম মেয়ের দিকে। আধো আধো কথা তার। বোঝা না-বোঝার এক আশ্চর্য পৃথিবীতে বসবাস সদ্য খেলতে খেলতে পড়ালেখা শেখার চেষ্টা করা শিশুটির।সস্নেহে বললাম, বলো মা।ওয়ানস আপঅন এ্যা টাইম। থিংক, ইটস এ্যা মিলিয়ন ইয়ার এ্যাগো। দেয়ার ওয়াজ এ্যা ডগ। ওহ! নো! সরি! নট ডগ পাপা। এ্যা নাইস হটডগ দেয়ার।বাংলায় বলো মা গো। বাংলা তো তুমি পারো, তাই না!অফকোর্স আই ক্যান পাপা। ওকে, দেন ... ...
কলতান ভাবল , মিসেস দত্তকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করে, তার কলতানের কাছে আসার উদ্দেশ্য কি । যেসব কথা বলছে, সেসব তো সে আগেই জেনে ফেলেছে । সে প্রিয়দর্শিনীকে একটা খোঁচা মারল, ' সতীনাথবাবুর ব্যাপারে কি ভাবছেন আপনি ? 'এবার আর কোন হেঁয়ালি করলেন না ভদ্রমহিলা । প্রাঞ্জল ভাষায় বললেন , ' ওর ব্যাপারে আর ভাবার কি আছে । ইহকাল পরকাল সবই তো গেছে । আর আমার জীবনেরই বা আর কি আছে ? মেয়েটার ভবিষ্যৎ যদি সুখের হয় সেটুকুই কামনা .... ' ------ ' হ্যা ...... সে তো ঠিকই .... কিন্তু নেকলেসের সমস্যাটার তো সমাধান করতে হবে..... আপনার কাছে কো-অপারেশান চাইতেও সংকোচ বোধ ... ...
নীরবতা ভাঙলে বলটা ইংরেজদের কোর্টে-পালাইনি তো; গাছে তুলে মই নিয়েছে কেড়ে! সম্বিৎটা ফিরলে বোঝে বুদ্ধিটা কার ঘটেকোটি কোটি মহাত্মা কি আর কখনও ফেরে!?
কলতান সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিল না । পরের দিন সকাল পর্যন্ত মুলতুবি রাখল চিন্তাভাবনা করার জন্য । তার গোয়েন্দা মন জানে, অত সহজে কাউকে বিশ্বাস করা যায় না । একজন বিবাহিতা মহিলা একা আসতে চাইছে প্রকাশ্য স্থানে কিছু বলবার জন্য এটা শিশুসুলভ সরলতায় গ্রহণ করাটা অবিমৃশ্যকারিতা হতে পারে । তাছাড়া দেখা যাচ্ছে ভদ্রমহিলা নিউ হরাইজনের কথা জানেন । এখানেই ব্যাপারটা আরও জটিল লাগছে । হয়ত তিনি মহুয়া মিত্রের ব্যাপারটাও জানেন । প্রিয়দর্শিনীকে ফোন করাটা ওনার পক্ষে নিরাপদ হবে কিনা বলা মুশকিল । তাই ভোরবেলায় কলতান প্রিয়দর্শিনী দত্তকে একটা মেসেজ পাঠাল ----- "বেটার টু মিট অ্যট মাই প্লেস ইফ পসিবল ফর ইউ, ... ...
সন্ধে ছটা নাগাদ কলতান বৌবাজার থানায় ঢুকল । বিদ্যুৎ থানায় ছিল ।----- ' আরে কলতানদা..... আসুন আসুন .... আপনার জন্যই ওয়েট করছিলাম ....খুব ঘেমে গেছেন ..... কোল্ড ড্রিঙ্কস আনাই ? ' কলতান রুমাল বার করে ঘাম মুছতে মুছতে বলল, ' আনাও .... আনাও .... সারাদিন প্রচুর প্রেসার গেল ...... 'বিদ্যুৎ একজনকে ডেকে দুটো ঠান্ডা বোতল আনতে দিল । ----- ' তারপর ....... বালীগঞ্জ অপারেশান সাকসেসফুল ? '---- ' হ্যা .... যে উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম সেটা করে আসতে পেরেছি । সতীনাথবাবুর এ ব্যবসায়ে কোন অংশীদারিত্ব নেই । তিনি তার দাদার অধীনে দোকানের ম্যানেজার স্তরের কিছু ... আর কি ..... এবং যে কারণেই ... ...
ওখান থেকে লেকের গার্ডেন্সের মোড়ে এসে বাইকটা দাঁড় করিয়ে বউবাজার থানার ওসি বিদ্যুৎ তরফদারকে একটা কল দিল । ----- ' হ্যা ..... কলতানদা ..... কেসটার কদ্দুর ?'----- ' কেন .... এত তাড়া কিসের ? '----- ' আরে কি বলব ..... পার্টি বহুৎ সেয়ানা .... বারবার হুড়কো মারছে ..... খালি বাজে ধান্দা .... একটা নীরিহ গরীব মানুষকে ফাঁসাচ্ছে ..... শেমলেস ....'---- ' তুমি কি বললে ? '----- ' আমি ওসব রংবাজদের কেয়ার করিনা..…. আর যে করে করুক ..... পুলিশে কাজ করি বলে কি ..... ছো : '------ ' সে ঠিক আছে .... তুমি কি বললে ওদের ?' ----- ' ও..ই ক্যাভিয়েট পিটিশানের কপিটা ... ...
----- ' তুমহারা নাম কেয়া হ্যায় ভাই ?'----- ' দীনেশ ' কলতান ফলওয়ালাকে বলল, ' তুম হররোজ ইঁহা ব্যয়ঠতে হ্যায় কেয়া ? ' ----- ' নেহি ..... কভি কভি ব্যয়ঠতে হ্যায় ..... আভি ইয়ে পুরা মাহিনা ব্যয়ঠেগা .... '----- ' আচ্ছা ঠিক ঠিক .... কবতক রহতে ? '------ ' আট , সাড়ে আট তক ..... '----- কাল ভি সাড়ে আট তক থে ? '----- ' হাঁ জি ..... '----- ' আচ্ছা আচ্ছা .... ঠিক হ্যায় .... আজ তো লাগতা জ্যায়দা বিকা নেহি ..... ফিকর মাত করনা ..... ইয়ে লো .... এ ভি রাখ লো ..... 'বলে কলতান আর একটা পঞ্চাশ ... ...
দুপুর প্রায় আড়াইটে বাজে । কলতান বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ল । বৌবাজারের মোড়ে এসে বাঁ দিকে ঘুরল । ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মোড়ে এসে থামল । যাবার রাস্তায় দেখল দত্ত জুয়েলার্সে শাটার নামানো , তালা মারা । কলতান লক্ষ্য করল দত্ত জুয়েলার্স আর তার পাশের দোকানের মাঝখান দিয়ে একটা সরু গলি গেছে ছানাপট্টির দিকে । দীনবন্ধুবাবুরা নিশ্চয়ই বাড়ির দিকে রওয়ানা দিয়েছে এতক্ষণে । হ্যা ... ওরা ঠিকই বলেছে । মোড়ের মাথায় ওদিকের ফুটপাথে একটা পান সিগারেটের গল্লা আছে । ওপরে ছোট একটা টিনের সাইনবোর্ড । তাতে লাল রঙে লেখা আছে -- কস্তুরী । একজন নীল রঙের স্যান্ডো গেঞ্জি ... ...
আবার পড়া হবেতোমার জন্য রাখা হরিদ্রা ফুটবে নীল টবেআবার পড়া হবে কালো পাথর সাদা পাথর বিষটানা সব নুড়িএকে একে নীল, নীলকন্ঠ হবেআবার পড়া হবে ঢেউ এসে মুখ মুছোবে কারুর, অমানির্জন পুরীভরে উঠবে প্রবল মহোৎসবেআবার পড়া হবে
শত জন্মের পাপ করলে তবে মানুষকে বঙ্গের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে হয়। উৎসবের গভীর রাত। নামজাদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমারজেন্সিতে উপচে পড়া ভিড়। প্রতিটি উৎসবেই এমন চিত্র সব হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আগেও দেখেছি। কিছু অতি উৎসাহী নিরাপত্তা রক্ষীদের বাধার কারণে রোগীদের পরিজনরা ভিতরে ঢুকতে পারছেন না। রোগীর সাথে একজনের প্রবেশাধিকার। ভাবলাম, অতি উত্তম ব্যবস্থা। জরুরী বিভাগের ভিড় এড়াতে এমন ব্যবস্থাই হওয়া উচিত। সামনের ভিড় ঠেলে এগোলাম ... ...
।।।
একে ওকে জিজ্ঞেস করে কলতানের বাড়িটা খুঁজে পেয়ে গেল দীনবন্ধুরা । কলতানরা থাকে তিনতলায় । এরা ঝট করে তিনতলায় উঠে যেতে পারল না । আত্মবিশ্বাসহীন মানুষের যেমন হয় আর কি । ফুটপাথের ধারে দাঁড়িয়ে আবোল তাবোল আলোচনা করতে লাগল । প্রথমত, তারা অনেকক্ষণ ধরে কজন ওপরে যাবে , কারাই বা যাবে , যারা যাবে তারা কিভাবেই বা তাদের সমস্যার কথাটা উপস্থাপন করবে , উনি যদি তাদের কেসটা নিতে রাজি না হন তাহলেই বা কিভাবে অনুনয় করবে , যদি খুব বেশী পারিশ্রমিক চেয়ে বসেন তাহলে কোন ভঙ্গীতে ভদ্রতার সঙ্গে দরাদরি করা উচিৎ, এই ভর দুপুরে ভদ্রলোককে বিরক্ত করা উচিৎ হবে ... ...
দীনবন্ধু জানাকে আপনারা চেনেন না নিশ্চয়ই । কি করেই বা চিনবেন । দীনবন্ধু জানা তো আর কেষ্টবিষ্টু কেউ না । পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়ায় বাড়ি । কলকাতায় শ্যামবাজারে একটা মেসে থাকে । বউবাজারে একটা নাম করা জুয়েলারির দোকানের কর্মচারি সে । মেসবাড়ি সংস্কৃতি এখন অবলুপ্ত। তবু পুরনো কলকাতায় দু একটা আছে এখনও । সেখানে ঢুকলে মনে হয় চল্লিশ বা পঞ্চাশের দশকে ঢুকে পড়েছি । শ্যামবাজারে এরকম আছে একটা ওই আর জি কর রোডের ওপর । প্রায় অমিয়বাবুর বাজারের ওপর বলা যায় । ওখানে দীনবন্ধুর সঙ্গে আরও পাঁচজনথাকে । তারা হাওড়া, মেদিনীপুর, বর্ধমান, বীরভূম বিভিন্ন জায়গার লোক । তারা অবসর পেলে তাস ... ...
ইদানিং ধর্ম শিক্ষা দিতে ব্যস্ত জরাসন্ধ আর শিশুপাল কালীয় নাগের চাষ সাফল্যের সঙ্গে করে সমাজের বুকে কেটে খাল।হিংস্র বিষে জরজর হতে থাকে ইন্দ্রপ্রস্থ , বিষে জ্বলে যমুনার জলদ্রৌপদীর বস্ত্র টানে দুঃশাসন, কর্ণের অশ্লীল হাসি আজও চলতে থাকে খল খল! "মুক্তি চাই "! এই রবে মুখরিত হিমালয় থেকে নিম্নে ভারত সাগর ,নির্লজ্জ কৌরব তবু হিংস্র ক্রোধে উন্মাদ গরগর! বাসুদেব নিরুদ্দেশ, দ্বারকাই ভূলুন্ঠিত ধর্মোন্মাদ অসদ শাসনে, সংখ্যা গর্বে মদমত্ত অক্টোপাস যেন এক,জড়িয়ে ধরেছে দেশ বিষাক্ত বাঁধনে।থার্ড রাইখও পেয়েছিল ভূতগ্রস্ত জার্মানির নেশাসক্ত উগ্র সমর্থন , সর্বনাশা নাৎসি প্ল্যান আউশভিৎজ, ট্রেবলিঙ্কা, ডাচাউ এ রেখে গেছে ভয়াবহ সেই নিদর্শন! কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে অগণিত লাশের পাহাড়ে, শুনতে পাও কি তুমি সেই হাহাকার? স্বদেশ সমাজ কাটে বিভেদের কর্কশ ... ...
॥ ২ ॥নুভেল ভাগ ২৮ সে ডিসেম্বর, ১৮৯৫। ঠান্ডা, স্যাঁৎ-স্যাঁতে এক শনিবার প্যারিস শহরে। শহরের একটি রাস্তার ধারে গ্র্যান্ড ক্যাফে তে গ্র্যান্ড ক্যাফেতে এসে হাজির হয়েছে প্যারিস শহরের নিমন্ত্রিত সাংবাদিককুল ও থিয়েটার ডিরেক্টররা। অগাস্টা ও লুইস দুই লুমিয়ের ভাইয়ের তৈরী করা এক নতুন যন্ত্র সিনেমাটোগ্রাফের কারসাজি দেখানো হবে। সেই শোতে বিশিষ্ট থিয়েটার ডিরেক্টরদের মধ্যে হাজির ছিলেন আরেকজন ব্যক্তি, তার নাম George Melies। দশ থেকে পনেরো মিনিট দৈর্ঘের প্রায় কুড়িটি ফিল্ম এর এই শো টি র একটি ছিল সেই বিখ্যাত ট্রেনের দৃশ্য যেটি স্টেশনে এসে থামলে লোক নেমে আসে ট্রেন থেকে প্লাটফর্মে। পর্দায় চলন্ত ট্রেনের ছবি ক্রমশ বড় হয়ে ক্যামেরার কাছে আসতে থাকায় ভয়ানক ... ...