আজ থেকে বত্তিরিশ বছর আগে রঞ্জনদার লেখা পড়ি প্রথম। দেশ পত্রিকায় 'বাঙালির বাঙালোর' নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। বুদ্ধিতে আর উইটে ভরপুর এক অতি স্বাদু, মুচমুচে, আরবান লেখা। ভাল লেখা পড়লে কেটে রাখতাম। এ লেখাও সংগ্রহ করেছিলাম। আজও আছে। লেখকের নাম ছাড়া আর কিছুই উদ্ধার করা যায়নি। দেশ পত্রিকার আপিসে গেলে হয়ত পাওয়া যেত। তার বছর কয়েক পরে দেশে ছাড়লাম। ... ...
সারমর্ম আবার কী? বাংলা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছি নাকি? ... ...
"অমর-আকবর-অ্যান্থনি" ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের চরিত্রের নাম ছিল অ্যান্থনি গঞ্জালভেজ, শুধু তাই নয় অমিতাভের লিপে গানও ছিল 'মাই নেম ইজ অ্যান্থনি গঞ্জালভেজ'। এই অ্যান্থনি কোন কবির কল্পনা নয়। হিন্দি ছবির এক বিখ্যাত বেহালাবাদক-তথা-অ্যারেঞ্জারের নাম ছিল অ্যান্থনি গঞ্জালভেজ। সুরকার-জুটি লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলালের পেয়ারেলাল বেহালা শিখেছিলেন এই অ্যান্থনির কাছে। শোনা যায় রাহুল দেব বর্মনও কিছুদিন অ্যান্থনির ছাত্র ছিলেন। "মাই নেম ইজ অ্যান্থনি গঞ্জালভেজ" গানটি পেয়ারেলালের গুরুদক্ষিণা বলা যেতে পারে। ... ...
হ্যালোউইন চলে গেল। আমাদের বাড়িতে হ্যালোউইনের রীতি হল মেয়েরা বন্ধুদের সঙ্গে ট্রিক-অর-ট্রিট করতে বেরোয় দল বেঁধে। পেছনে পেছনে চলে মায়েদের দল। আর আমি বাড়িতে থাকি ক্যান্ডি বিতরণ করব বলে। মুহূর্মুহূ কলিং বেল বাজে, আমি হাসি-হাসি মুখে ক্যান্ডির গামলা নিয়ে দরজা খুলি। নানা সাইজের বাচ্চা। তাদের ক্যান্ডি দিই। দেখেছি আমি নিজের হাতে না দিয়ে বাচ্চাদের গামলা থেকে ক্যান্ডি তুলে নিতে বললে তারা বেশি খুশি হয়। খুব ছোট মেয়েদের পরী সাজার চল বেশি। ছেলেদের মধ্যে ব্যাটম্যান-সুপারম্যান। একটু বড় হলেই ভ্যাম্পায়ার, ব্যাটম্যা ... ...
হ্যামলিনের বাঁশিওলার গল্পটা জানিস তো? একটা শহরে খুব ইঁদুরের উপদ্রব হয়েছিল। ইঁদুরের জ্বালায় শহরের লোকের ত্রাহি ত্রাহি রব। কিছুতেই ইঁদুর তাড়ান যাচ্ছেনা। এমন সময়ে হ্যামলিন শহর থেকে একজন বাঁশিওলা বাঁশি নিয়ে এল। শহরের মেয়রকে বলল যে উপযুক্ত পারিশ্রমিক পেলে সে ইঁদুর তাড়ানোর বন্দোবস্ত করতে পারে। মেয়র এক কথায় রাজী। তখন বাঁশিওলা এমন সুর বাজাল যে সারা শহরের যত ইঁদুর, আনাচ থেকে, কানাচ থেকে, গোলা থেকে, সুড়ঙ্গ থেকে, ভাঁড়ার থেকে, আলমারির তলা থেকে - মানে যে যেখানে ছিল - সব দলে দলে বেরিয়ে বাঁশির সুর অনুসরণ করে ন ... ...
ছাত্র হয়ে অ্যামেরিকায় পড়তে যারা আসে - আমি মূলতঃ ছেলেদের কথাই বলছি - তাদের জীবনের মোটামুটি একটা নিশ্চিত গতিপথ আছে। মানে ছিল। আজ থেকে কুড়ি-বাইশ বছর বা তার আগে। যেমন ধরুন, পড়তে এল তো - এসে প্রথম প্রথম একেবারে দিশেহারা অবস্থা হত। হবে না-ই বা কেন? এতদিন অব্দি রাস্তায় গাড়ি দেখেছি অ্যাম্বাসেডর আর মারুতি। কন্টেসা দেখলে লোক জমে যেত। সবে বেরোন স্ট্যান্ডার্ড ২০০০ গাড়ি দেখা গেলে বাড়ি থেকে লোক ডেকে এনে দেখান হত। ভেন্ডিং মেশিন দেখিনি কভু - মানে পয়সা ফেললাম আর ঘটাত করে কোকের ক্যান বেরিয়ে এল। ভেন্ডিং মেশিন ছাড়ু ... ...
অনেকদিন পরে পুরনো পাড়ায় গেছিলাম। মাঝে মাঝে যাই। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়, আড্ডা হয়। বন্ধুদের মা-বাবা-পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। ভাল লাগে। বেশ রিজুভিনেটিং। এবার অনেকদিন পরে গেলাম। এবার গিয়ে শুনলাম তপেস নাকি ব্যবসা করে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। একটু পরে তপেসও এল আড্ডায়। জিগেস করলাম, কী ব্যাপার কাকা? ্বেওসা করে লাল হয়ে গেছ শুনলাম এই কদিনে, ড্রাগ বেচছ নাকি?
"আরে ড্রাগ ছাড়। পুজো-পুজো। আজকাল এই পুজো-টুজো কীরকম নুইসেন্স হয়েছে জানিস তো! তার ওপর জুটেছে থিম। কাগজ আর টিভির দৌলতে সব পুজোই এখন হিট পুজো। আম ... ...
অনেকদিন আগে একবার দিন সাতেকের জন্যে ভূটান বেড়াতে যাব ঠিক করেছিলাম। কলেজ থেকে বেরিয়ে তদ্দিনে বছরখানেক চাকরি করা হয়ে গেছে। পুজোর সপ্তমীর দিন আমি, অভিজিৎ আর শুভায়ু দার্জিলিং মেল ধরলাম। শিলিগুড়ি অব্দি ট্রেন, সেখান থেকে বাসে ফুন্টসলিং। ফুন্টসলিঙে এক রাত্তির থাকব। পরের দিন পারোর পার্মিট নিয়ে বাসে করে পারো হয়ে থিম্পু। এই হল প্ল্যান।
প্রথমেই গর্দিশ। আমাদের পারো যাবার পার্মিট দিলনা। কাজেই সোজা থিম্পু। থিম্পুতে নেবেই মালুম হল এখানে সাতদিন কেন, তিনদিনও থাকা যাবেনা। করার মতন কিচ্ছু নেই। দ্বিতীয়দিন ... ...
ফার্স্ট ইয়ারে ফাইলের ওপরে লিখেছিলাম "ইউনিভার্সিটি অফ যাদবপুর"। এদিকে প্রতিবাদী বামপন্থী। কিন্তু বিক্ষুব্ধ। মানে কোন দলে নেই। ইন্ডিপেন্ডেন্ট। কী করে যেন তালেগোলে আমি ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ মানে সিআর ক্যান্ডিডেট হয়ে গেলাম। কাগজের ভাষায় ডিএসএফ সমর্থিত নির্দল প্রার্থী। প্রতিদ্বন্দী এসএফয়াই-এর হয়ে দাঁড়ান আশিস দাস। অসম্ভব ম্যাড়ুম্যাড়ে ব্যাপার-স্যাপার। আমি আর আশিস গাছতলায় বসে কাউন্টার করে সিগারেট খাচ্ছিলাম আর জীবনের সুখ-দুঃখের গল্প করছিলাম। মেন বিল্ডিং-এ ব্যালট গোনা হচ্ছে। আমরা দুজন ... ...
অযোধ্যার নবাবির পত্তন করেছিলেন প্রথম সাদত আলি। পারস্যের লোক। দিল্লির মুঘল বাদশা তাঁকে অযোধ্যার নাজিম করে দেন। সেই নাজিমই লক্ষ্ণৌর কাছে ফয়জাবাদের রাজধানী স্থাপন করে অযোধ্যার নবাবি শুরু করেছিলেন। তৃতীয় নবাব সুজা-উদ-দৌলার আমলে রাজধানী চলে আসে লক্ষ্ণৌতে। সেই থেকে অযোধ্যা আর লক্ষ্ণৌ সমার্থক হয়ে ওঠে। তদ্দিনে দিল্লির অস্তগামী ছায়া পড়েছে লক্ষ্ণৌতে। লক্ষ্ণৌ তখন হিন্দুস্তানী সংস্কৃতির শুধু ধারক-বাহকই নয়, তার অগ্রডোমও বটে। ... ...