ফেলিক্স হপ্পে-সেলার ( Felix Hoppe-Seyler ), যাঁকে আধুনিক বায়োকেমিস্ট্রির জনক বলা যায়, ক’বছর পরেই ১৮৬৪ সালে হিমোগ্লোবিন নামটি দিলেন। দেখালেন যে হিমোগ্লোবিন আর অক্সিজেন মিলে তৈরি করে অক্সিহিমোগ্লোবিন। কিছুদিন আগেই ১৮৬০ সালে আবিষ্কার হয়েছে স্পেকট্রোস্কোপ। সেই যন্ত্র দিয়ে রক্তের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে আসা বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো বিশ্লেষণ করে ফেলিক্স দেখালেন যে লাল রং এর আলোর ক্ষেত্রে অক্সিহিমোগ্লোবিন, ডিঅক্সিহিমোগ্লোবিনের মানে যে হিমোগ্লোবিনে অক্সিজেন নেই তার তুলনায়, আলো শোষণ করে অনেক কম। অথচ ইনফ্রারেড আলোর ক্ষেত্রে কতটা আলো শোষণ করবে তা রক্তে কতটা অক্সিজেন আছে বা নেই তার উপর ততটা নির্ভর করে না। ... ...
তারা, নেবুলা, নক্ষত্রজগতের পরিসীমা এই সব নিয়ে কাজ করতে করতে একদিন তিনি একটা পর্যবেক্ষণ করলেন। আসলে ভালো করে সূর্য-পর্যবেক্ষণের জন্য সাহেব একটি ফিল্টার বানাতে চাইছিলেন। বিভিন্ন রং-এর কাঁচ দিয়ে পরীক্ষা চলছিল – তখন দেখেন যে কিছু রংএর কাঁচের মধ্য দিয়ে তিনি বেশি উত্তাপ অনুভব করছেন কিন্তু দেখতে পাচ্ছেন কম আবার কিছু রংএর কাঁচের মধ্যে দিয়ে দেখলে তাপ আর পৌছাচ্ছে না, কিন্তু প্রচুর আলো এসে চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। ... ...
এই যে ব্যাঙ্কগুলোর আক্যাউন্টে পয়সা রাখিস, এই টাকাটা তো ব্যাঙ্ক আবার অন্যকে ধার দেয়। সেই ধারের সুদটাই ব্যাঙ্কের মূল আয়। ২০১৯ সালে এই ধারের মোট পরিমাণ কত জানিস, প্রায় ৯৭ লক্ষ কোটি টাকা আর তাঁর মধ্যে প্রায় ৩৯ লক্ষ কোটি টাকাই আসে সেভিংস ব্যাঙ্কের ডিপোজিট থেকে, যাকে বলে CASA ডিপোজিট। ব্যাঙ্কগুলোর কাছে এটা খুব লোভনীয় কারণ এটার জন্য ব্যাঙ্কের সব থেকে কম খরচ হয়। এই মোট ধারের সব থেকে বেশি অংশ, ২২.৫% মানে ২১.৮ লাখ কোটি আসে এসবিআই এর থেকে। এসবিআই এই টাকার ৫০% পায় সেভিংস ডিপোজিট থেকে। অন্য দিকে ইয়েস ব্যাঙ্কের হিসেব টা দেখ, ওদের বাজারে যে টাকা লোন দেওয়া ছিল;সেভিংস ডিপোজিটের পরিমাণ তার মাত্র ১৯%। ... ...
অবশ্য শুধু রান্না কেন, জুঁইএর শেখা সেলাই ফোড়াই-ই বা কোন কাজে লাগল! বিয়ের পরের অনেকগুলো দুপুর না ঘুমিয়ে ফ্রেঞ্চ নটের গোলাপফুলে সাজিয়ে তোলা বিছানার চাদর বিছিয়ে সবাইকে চমকে দিতে চেয়েছিল একবার। শুনেছিল, "ভালোই, তবে এ ঘরের মিনিম্যালিস্ট ডেকরের সঙ্গে যাচ্ছে না।" উলের কাঁটা, কুরুশের সুতোর গুলি এরপর আর বাক্স থেকেই বেরোয় নি। বাবুই এর ঈষৎ অনিচ্ছুক মুখটার দিকে তাকায় জুঁই। ভাবে, আমি ওকে যা শেখাব, সেগুলো ওর ও কি কোনদিনই কাজে লাগবে? ... ...
জাতীয় পতাকার সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়েছিল স্কুলের গন্ডীতে। খুব ছোটবেলায়। তখনো ইতিহাস বা সিভিকসের বইএর পাতায় জাতীয় পতাকার ইতিহাস পড়া হয়ে ওঠে নি। অথচ পনেরই আগস্ট এসে গেছে মহা সমারোহে। চার্ট তৈরির পরব। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। আবার করে ঝালিয়ে নেওয়া, " মুক্তির মন্দির সোপানতলে যত প্রাণ হল বলিদান লেখা আছে অশ্রুজলে"। তারপর পনেরই আগস্ট ভোর ভোর স্কুলে যাওয়া, আলপিন পড়লে শোনা যায় এমন শান্ত পরিবেশে তেরঙ্গার মাথা ঝাঁকানি দিয়ে ওঠা, ফুল ছড়াতে ছড়াতে আকাশে পৌঁছে যাওয়া , তারপর গঙ্গার হাওয়া গায়ে মেখে পতপতিয়ে ওড়া। ন ... ...
প্রায়-শূন্য করিডোর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল তমালী। করিডোরের প্রান্তে হেডমিস্ট্রেসের ঘর। সেখানে মিটিং আছে। ক’দিন ধরে স্কুলে তোলপাড় চলছে। গুরুতর অভিযোগ। আজ সেই নিয়ে মিটিং। হেডমিস্ট্রেস ছাড়াও ম্যানেজিং কমিটির দু-একজন এসেছেন দেখেছে। আর আসার কথা অবন্তীর বাবা-মা’র। করিডরের পাশেই ছোট লন রোদে ভাজা ভাজা হয়ে এলিয়ে আছে। এক কোণের বকুলগাছটার তলায় একটুকরো ছায়া। তমালীর ইচ্ছে হচ্ছে ওই ছায়াটাতে গিয়ে বসে থাকতে। আসলে তমালীর মিটিংটাতে যাওয়ার ইচ্ছে নেই এতটুকু। তবু যেতে হবে। আক্টিভিটি কো-অর্ডিনেটর সে। নিজের দায়িত্ব কিভাবে ... ...
ছোটবেলায় বিজাতীয় খানা বলতে মাঝে সাঝে ছপ্পর ফুঁড়কে মিলে যাওয়া সাবিরের রেজালা আর ফিরনি-ই মনে পড়ে। উত্তর কলকাতা থেকে মধ্য কলকাতায় পাড়ি দিয়ে সেই খেতে আসাটাই একটা বেশ বড় সড় ঘটনা ছিল তখন। অথচ কি অবাক কান্ড। তারই কাছে অলি-গলির পেটের মধ্যে সেঁধিয়ে আছে আরেক কলকাতা সেটা জানতে আমাকে দু-কুড়ি পাঁচেরও বেশি বছর পেরোতে হল। সৌজন্যে কুণাল বসু। কালকুত্তার দৌলতে চিনলাম এক অজানা পৃথিবী। মনে আছে বইটা পড়ে নরেন্দ্রনাথ মিত্রের লেখা প্রথম পড়ার সময় যে শিহরণ জাগত ... ...
বিভা চৌধুরীকে নিয়ে আমার আগ্রহ অনেক দিনের। আগ্রহের সুচনা কেন্দ্র অবশ্যই তাঁর বিজ্ঞানচর্চা । বৈজ্ঞানিককে তার বিজ্ঞান ছাড়া ধরা যায় না। তবে তিনি যখন বিজ্ঞান সাধনায় নামেন , তখন সে জগত এক অবিচ্ছিন্ন জ্ঞানের জগত, আমার বিজ্ঞানের যে সীমিত জ্ঞান তাই দিয়ে তাঁকে আবছা বোঝা গেলেও , পুরোটা ধরা মুশকিল-ই।
আগ্রহের শুরুটা একটু অদ্ভুত ভাবে। ফেমিনিজম নিয়ে পড়াশুনা করছিলাম। দেখলাম কট্টর নারীবাদীরা বলেন যে ক্লাসিক্যাল ফিজিক্স যেভাবে গোটা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডকে objectifiable আর knowable বলে সেটাই নাকি গণ্ডগোলের। ... ...
।। ০।।
সেদিন সদর শহরের কাছের ক্যান্টনমেন্টে এক ছোকরা অফিসার ছুটতে ছুটতে এসে তার লাঞ্চরত সুপারভাইজারকে খবর দিল, স্যার আকাশে একটা ইউ এফ ও র মত কি দেখা যাচ্ছে। স্যর যখন ন্যাপকিনটি নামিয়ে, সেটি প্লেটের পাশে গুছিয়ে রেখে হাত মুখ ধুয়ে ধীরে সুস্থে এসে টেলিস্কোপে চোখ ঠেকালেন, তখন আকাশ মেঘমুক্ত – একেবারে নিদাগ। ছোকরাটি তুতলে মুতলে যা বিবরণ দিল, তাতে লাহোরিয়া সুপারভাইজার শুধু হিমশীতল কন্ঠে “আপকা কাম করো” বলে শিশ দিতে দিতে বেরিয়ে গেলেন। সুবে সুবে খোয়াব দেখ রহা হ্যায়। ইঊ এফ ও! ড্যাম, মাই ফুট! ইসিকো ... ...
নাচ নিয়ে নাচানাচি করার বয়স বহু আগে পেরিয়ে গেছে। করতেও হত না, যদি বইখানা হাতে না আসত। ঐশিকা চক্রবর্তীর “কলকাতার নাচ সমকালীন নগরনৃত্য”। নামেই চমক। ডিহি কলকাতার তিনশ বছরের সাংস্কৃতিক জগতের টানাপোড়েনের হিসেবে, তার সংস্কৃতিগত উঁচু-নিচু ভেদাভেদের জগতে, কোন নাচকে বলব নগরনৃত্য? ইউরোপীয় ভুখন্ডে যেমন নাগরিক নৃত্যের একটি বিশেষ সর্বজনগ্রাহ্য ধারা রয়েছে, তেমনটি যে এদেশে তেমন ভাবে গড়ে ওঠে নি সেটা সবারই জানা। গ্রামীণ সংস্কৃতির ধারার কথা হচ্ছে না, বাংলার মহানাগরিক জীবনে নাচের জায়গাটা ঠিক কোথায় ছিল সেটা বোঝা যা ... ...