ছবির ব্যবসার ক্ষেত্রে মুক্তি পাবার পর প্রথম তিন দিন খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ। অর্থাৎ প্রথম শুক্রবার , শনিবার এবং রবিবার। আশি বছর আগে একটা হল থাকলে প্রতি শুক্রবার সন্ধেবেলা আগে থেকে কিছুই না জেনে দর্শকরা ঘুরতে ঘুরতে সেখানে গিয়ে দেখতেন কি ছবি চলছে , তারপর টিকিট কাটতেন । এই সন্ধ্যেবেলার শো কেই বলা হত ম্যাটিনি শো এবং হলে যে তারকার ছবি হুলিয়ে চলত তিনিই হতেন ম্যাটিনি আইডল। কিন্তু একসময় এক্স এবং ওয়াইরা বুঝতে পারলেন যে কোন ছবি এর পরের শুক্রবার মুক্তি পাবে সেটা আগে থেকেই দর্শকদের জানা জরুরি। সবার পাড়ায় বা যাতায়াতের পথে তো আর হল পড়ে না যে তিনি বুঝতে পারবেন কোন ছবি এর পর সেই হলে আসছে। এটা সামলাতে প্রথমে হাতে আঁকা পোস্টার এল যাতে আসন্ন ছবি মুক্তির ... ...
সাধারণত ছবির পেছনে এক্স যে টাকা খরচ করেন , জনসমক্ষে সেই বাজেট কিছুটা কমিয়ে বলা হয়। একদিন সকালে উঠে আপনি সকালের খবরের কাগজে দেখলেন - পুজোর সময় আপনার দেখা সেই বাজে ছবিটার সত্তর লাখের বাজেট ছিল , বক্স অফিসে করেছে চল্লিশ লাখ। মানে ছবি ফ্লপ। আপনি মনে মনে বললেন বেশ হয়েছে , বা জিভ দিয়ে সহানুভূতিমূলক চুক চুক আওয়াজ করলেন বেচারাদের ক্ষতির জন্য। কিন্তু আসলে সবাই টাকা ফেরত পেয়ে গেছে , অল্প হলেও লাভ হয়েছে। যদিও এই মডেলে চার পাঁচটা ছবি এরকম ফ্লপ করলে তারপর আর প্রযোজনা সংস্থা ছবি বানাতে পারবে না, কারণ ফাইনান্সার পাওয়া সমস্যা হবে। নায়ক নায়িকাদের টিআরপি কমতে থাকলে স্যাটেলাইট স্বত্ত্বর দাম কমে ... ...
ধরে নেওয়া যাক , 'ক' একটা ছবির চিত্রনাট্য লিখলেন এবং একজন এক্সের[প্রযোজনা সংস্থা] কাছে সেটা জমা দিয়ে বললেন আমি এই ছবিটা পরিচালনা করতে চাই। এক্স সেটা পড়ে বললেন আমি ছবিটা বানাতে রাজি আছি। ক এবং এক্স তারপর একসঙ্গে বসে বাকি সমস্ত কিছু ঠিক করলেন , কাকে কোন চরিত্রে নেওয়া হবে , কোথায় শুটিং হবে , ছবির সম্পাদনা কে করবে , সংগীত পরিচালনা কে করবে এসমস্ত কিছু। সেই অনুযায়ী হিসেব করে এক্স দেখলেন ছবির বাজেট হচ্ছে এক কোটি টাকা। পয়লা ফেব্রুয়ারী এক্স ক এবং বাকিদের বলে দিলেন শুটিং শুরু মে মাসের ১৫ তারিখ থেকে । সবাই সেইমত প্রস্তুতি নিতে লাগল। কিন্তু এক্স আরো দেখলেন তার কাছে খরচ করার মত ... ...
সিনেমা দেখতে যেকোনো বয়সের মানুষ ভালোবাসে , কারণ অন্য অনেক শিল্প মাধ্যমের (বই, আঁকা ছবি, শাস্ত্রীয় সংগীত) তুলনায় ছবি অনেক সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে যায় এবং দৃশ্যশ্রাব্য মাধ্যম হওয়াতে যেকোনো বয়সের মানুষের [যিনি লিখতে পড়তে জানেন না তার ক্ষেত্রেও] ছবিটার গল্প বুঝতে অসুবিধা হয়না। কিন্তু অনেকসময় একটা ছবি দেখে পছন্দ না হলেও আমরা দেখি ছবিটা বিপুল ব্যবসা করছে। আবার উল্টোটাও ঘটে, ভালো ছবি ব্যবসা করতে পারে না। আবার অনেক সময় বহু ছবি দারুণ ব্যবসা করলেও আমরা শুনতে পাই সেই ছবির প্রযোজক আর কোনো ছবি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর পিছনে রহস্য কি? ছবির পিছনে যে ব্যবসার মডেল আছে তা কিভাবে কাজ করে? প্রথমে যদি ... ...
১ একসময় এ বাড়ি ছিল জমজমাট । কালীপুজোর রাতে মহা ধুমধাম করে পাঁঠাবলি, গ্রামের সবাইকে পাত পেড়ে খাওয়ানো, আতশবাজির রোশনাই । পাইক বরকন্দাজের দল ছিল, গুমঘর ছিল । একটা কালি ঝুলি মাখা দোনলা বন্দুক এখনো রয়ে গেছে দোতলার মাঝের বন্ধ ঘরে। এখন বাড়িটা বহুদিন ফাঁকাই বলা যায়, বেশীর ভাগ বংশধররা দূরে চলে গেছে, বিদেশেও থাকে । তবে মাঝে মাঝে আসে । বাড়িটা সারানোও হয়, ভেঙে পড়ার মত অবস্থা নয় । লাগোয়া কালী মন্দিরের জন্য গ্রামের লোকেরাও এ বাড়ির দিকে তেমন নজর দেয়নি কিন্তু পঞ্চায়েত বদলের পর একটা চেষ্টা হয়েছিল এ বাড়ির চাষের জমি দখলের। সেসব কান্ড যখন হয়েছিল তখনও বাড়ির ... ...
এক বড় বসকে ছেলেটা খুবই ভোগাচ্ছে কদিন ধরে। বড় বস অর্থে, প্রত্যয়ের পরিচয় সে এই অফিসের একজন ডেলিভারি ম্যানেজার, যার দায়িত্বে অনেক ছোট ছোট দলে সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন কাজ করে । যাদের মধ্যে একজন এই ছেলেটা, শান্তনু । অর্থাৎ বুঝিয়ে বললে প্রত্যয় শান্তনুর ম্যানেজারের ম্যানেজার। যখন মিটিংরুমে সবাই গম্ভীর মুখে প্রত্যয়ের কথা শোনে, শান্তনু এককোণে চেয়ারে বসে ঝিমোয়। সবসময় তার মধ্যে একটা ঘুম ঘুম ভাব, একেবারেই সিরিয়াস না। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলেই অফিস ডুব দেয়। পরদিন ধরলে বলে, "বৃষ্টি পড়ছিল তো, তাই আসতে ইচ্ছে করেনি। বাড়িতে বসে বৃষ্টি দেখলাম, তেলেভাজা আর চা খেলাম।" ক্যান্টিনে শান্তনু তার টিমেরই অনিন্দিতার সঙ্গে ... ...
- এত উঁচুতে আমরা কি করে এলাম?- তোর মনে নেই? ওই লোকটা মেলার দোকান থেকে কিনে নিয়ে এলো যে আমাদের । এটাই ওর বাড়ি । বৌ ছেলেকে নিয়ে থাকে ।- না, ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আমি তখন । কিন্তু মেলার দোকানে কি করে এলাম আমরা?- সে তো আমারও মনে নেইরে । শুধু মনে আছে আমার চোখ ফোটার আগে চারিদিকে অন্ধকার ছিল । ঘুটঘুটে অন্ধকার । চোখ খোলার পর দেখলাম তুই তৈরি হচ্ছিস পাশের হাপরের আগুনে ।- কে বানালো আমাদের?- আমি মুখ দেখতে পাইনি । শুধু হাতদুটো দেখতে পেয়েছিলাম । ওখানে আরো সব আমাদের মত মানুষের মূর্তি, জীবজন্তু, থালা, বাসন কত্ত কিছু তৈরি ... ...
গার্গীর কিছু নরম খেলনা বাড়িতে রেখে দেবার শখ আছে । নরম খেলনা মানে যেটাকে সফ্ট টয় বলে সবাই , ভেতরটা তুলো দিয়ে স্টাফ করা । আমার কাজের টেবিলের ওপর রাখা আছে সেই গোত্রেরই একটা হাতির ছোট পুতুল । পেটের জায়গাটায় একটা সুতো মনে হয় কেটে গেছে কোনভাবে । মাঝে মাঝে ভেতরের তুলো বেরিয়ে আসতে চায় । আমি দেখলে চাপ দিয়ে আবার ঢুকিয়ে দিই যাতে গার্গীর চোখে না পড়ে ।এই সুতো কেটে যাবার ব্যাপারটা হয়েছে মোটামুটি একমাস আগে যখন আমি বিসনেস ট্রিপে যাবার জন্য সুটকেস গুছোতে গিয়ে একটা ওয়েফেয়ারার সানগ্লাস আর লাল সবুজ নকশা কাটা মাফলার পেয়েছিলাম । জিনিসগুলো দেখে অবাক ... ...
সকালে মোবাইলে অ্যালার্ম বাজলে প্রথমেই মোবাইলটা তুলে নিয়ে অ্যালার্মটা অফ করে দেখে নিই কিছু নোটিফিকেশন এসেছে কিনা | তারপর আরো আধ ঘন্টা ঘুমিয়ে নিই | আধঘন্টা বাদে দ্বিতীয় অ্যালার্ম বাজলে সত্যিকারের ঘুমটা ভাঙে | এটাই অভ্যেস | কিন্তু আজকে একটাও অ্যালার্ম বাজেনি, তাই চোখ খুলে প্রথমেই মনে হল প্রচুর দেরী হয়ে গেছে |বিদ্যুৎবেগে মোবাইলটা তুলে লক স্ক্রিনে সময় দেখতে পেলাম না | ছুটলাম বাথরুমে | তারপর চান করে বেরিয়ে আবার ইচ্ছে হল সময় দেখার | আনলক করে মোবাইলের হোম পেজে ঘড়ির উইজেটটা পেলাম না | উদ্ভট ব্যাপার |খটকা লাগল, ঘড়ির উইজেটটা কি কোনো কারণে কাল রাতে ডিলিট করে দিয়েছি ?গলি থেকে ... ...
১ কোথাও কিছু নেই, আচমকা একদিন চাকরি ছাড়ার ভূতটা চেপে বসল সন্দীপনের মাথায় | প্রথমে সে পাত্তা দেয়নি তেমন | আপদটাকে সে বুঝিয়ে বললও একদিন - "দেখ, আমার তো বৌ মেয়ে আছে | বৌ যদিও সরকারি স্কুলে পড়ায়, আমি তো আর ঘরে বসে তার ঘাড় ভেঙে খেতে পারি না | মেয়েটাই বা স্কুলের বন্ধুদের কি বলবে? তার বাবা বাড়ি বসে ঘুমোয়? তুই চলে যা, আমাকে আর জ্বালাস না |" এসব প্রলাপ শুনে কিছুদিন সে সম্ভবত লজ্জাবোধে কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছিল | কদিন সন্দীপনের মনেও হচ্ছিল, কি যেন একটা নেই নেই ভাব ... ...