#পুরনোলেখা চার্লি চ্যাপলিনের অটোবায়োগ্রাফি পড়ে এই নোটটা লিখে রেখেছিলাম। ১৯১৮ সালের ছবি। চার্লি চ্যাপলিন ওয়াল স্ট্রিটের সাব ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে লিবার্টি লোন বা লিবার্টি বন্ডের প্রচার চালাচ্ছেন। তখনও চ্যাপলিন নিজে সিনেমা পরিচালনা শুরু করেননি সেভাবে, দ্য কিড আসতে আরো তিন বছর বাকি। কিন্তু সিনেমায় তাঁর 'ট্র্যাম্প' অবতার ( ট্রাম্প নয় রে বাবা!) দেখে জনতা তাঁকে নায়কের আসনে বসিয়েছে ইতিমধ্যেই। আসল চ্যাপলিনকে কেউ না চিনলেও 'ট্র্যাম্প'-কে সারা দুনিয়ার লোক চেনে, তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁয়েছে। এমন সময় মার্কেটে এল লিবার্টি লোন। মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে এই ফিনান্সিয়াল বন্ড লঞ্চ করা হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগেই। উদ্দেশ্যে মিত্রশক্তি বা 'অ্যালাইড পাওয়ার্স' এর জন্য ... ...
কাল গুঁতোগুঁতি করে ট্রেনে উঠে দেখি, জানলার ধারে জিলিপির আসর বসেছে। এক গ্রাম লোক কোলের উপর খবরের কাগজ পেতে তাস পেটাচ্ছে, সঙ্গে চলছে গরম গরম রসে ভেজা জিলিপি। মিষ্টি গন্ধে প্রাণ মাতোয়ারা, ঠেসাঠেসি করে দাঁঁড়িয়ে থাকা সমস্ত মানুষ অবিকল মাছির দৃষ্টিতে লোকগুলোর ঠোঁট থেকে গড়িয়ে পড়া রসের দিকে চেয়ে আছে। জিলিপি গ্যাংয়ের অবশ্য তাতে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই, কচরমচর মুখ চলছে, তোড়ে বেরোচ্ছে কথা। সেই কথার বহর কী! চোখে আবছা দেখবেন, রক্তচাপ বেড়ে যাবে। আমার মতো যদি রিসেন্টলি রুট ক্যানাল হয়ে থাকে, সাবধান! কানে আঙুল দিন। দাঁতের ক্যাপ খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জানলার ধারে বসে আছে যে ঢ্যাঙা লোকটা, তার কোটার জিলিপি ... ...
#পাহাড়যাপন আতরের দোকান করে যারা, তাদের কাছে দোকানের বাইরের পৃথিবীটা বাসি বলেই মনে হয়। পুষ্পের সৌরভ পেলেও যেন মনে হয় জোলো, ভালো মিষ্টির সুবাসও মনে ধরে না। সব কিছুই বড় অপরিশোধিত। আতরের দোকানটা যেন আরেক জগত, গন্ধের হাট বসেছে সেখানে। কোনওটা পারস্যের ফুলের আতর, কোনটা হিমালয়ের আয়ুর্বেদিক শিকড়ের গন্ধ। প্রতিটি ফুল নিজের ইতিহাস জানায়, বলতে চায় নিজের গল্প।কয়েকজন কারিগর বছরের পর বছরের ধরে এক্সপেরিমেন্ট করে যায় নতুন সুগন্ধের আশায়। দক্ষ হাতে গন্ধ তৈরি করে ওস্তাদ তারা। কিন্তু যে গন্ধ শেষমেশ তৈরি করা যায় না, সেই আতরের কারিগররা হীনমন্যতায় ভোগে। ব্যর্থতা স্বীকার করতে চায় না। মাথার চুল খামচে ধরে চেষ্টা চালিয়ে যায় ... ...
কোরিয়ার সাহিত্যিকদের মধ্য চো নাম জু আজকাল তুমুল জনপ্রিয়। তাঁর লেখা প্রথম দুটো বই বেশ সাড়া ফেলেছে, আর তিন নম্বর বই 'কিম জিয়োয়ুং বর্ন ১৯৮২' তো ইংরেজিতে অনুবাদ হয়ে মুড়িমুড়কির মতো বিকোচ্ছে। জনপ্রিয়তা এলে সঙ্গে বিতর্কও আসবে, এই বইটা নিয়েও দুনিয়ারাজ্যের ক্রিটিকরা দু' ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। অনেকের মতে 'কিম জিয়োয়ুং বর্ন ১৯৮২' মডার্ন ফেমিনিন লিটারেচারের মাইলস্টোন, আবার অনেকে এটাকে উপন্যাস বলে মানতেও নারাজ। কোরিয়ার থ্রিলার নিয়ে আমরা যতই নাচানাচি করি না কেন, সেখানে আবার সামাজিক অসঙ্গতি আর স্যাটায়ার নিয়ে লেখাই জনপ্রিয় হয় বেশি। সেইদিক থেকে দেখতে গেলে যে এই বইটা নিয়ে যে সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনা চলছে, তাতে কোনও ... ...
আমার মতো যারা মার্ভেলের নতুন সিরিজ 'লোকি' দেখে মুগ্ধ, তাঁরা অনেকে জানেন না ১৯৫২ সালে স্ট্যান লি লোকিকে এনেছিলেন সম্পূর্ণ অন্যভাবে। সেই লোকি তখন ভিলেন হয়েও ভুলভাল বকত, মাথায় ছিটও ছিল কম নয়। মাঝেমধ্যেই দরকারি কথা ভুলে যেত। মিস্ট্রি ৮৫ কমিক্স-এ তো লোকির সংলাপ শুনে বিষম লাগে। থর-এর শক্তির কথাও ব্যাটাচ্ছেলে বেমালুম ভুলে গেছে। বলছে, ""Oh...I forgot - the hammer's greatest power - whenever Thor throws it, it returns to him!" কে জানত, এমসিইউতে সেই লোকিই এমন জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। কিন্তু সম্প্রতি মার্ভেল এন্টারটেইনমেন্ট জানিয়েছে, লোকির চরিত্রে টম হিডলসনকে দেখে বুড়োবাবা স্ট্যানলি চোখ মটকে বলেছিলেন, 'এ ছেলে বহুত দূর যাবে! লোকিকে ... ...
#পুরোনোলেখা The wonderful things in life are the things you do, not the things you have. শুধু পুরোনো নয়, ওয়েবে প্রকাশিত প্রথম লেখা। ম্যাজিক ল্যাম্প-এ এই লেখাটা দেওয়ার পিছনে একটাই কারণ, রেইনহোল্ড মেসনারের প্রেমে পড়া। আলপাইন ক্লাইম্বের প্রবাদপ্রতিম ব্যাক্তিত্ব তো বটেই, ধীরে ধীরে মেসনার কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছেন অল্টিটিউড ক্লাইম্বের জগতে। বেসিক কোর্স করার সময় ওর কিছু দুর্লভ সাক্ষাৎকার দেখার সুযোগ হয়েছিল, সেইগুলো এখনও প্রয়োজনে আমাকে সাহস জোগায়। পুরো লেখাটাই তুলে দিলাম। যদি কেউ আগ্রহী হয়, মেসনারের লেখা 'ক্রিস্টাল হরাইজন' বইটা পড়তে পারেন। জীবনের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।পাহাড় যখন ডাকেপায়ের পাতায় রক্ত জমে বরফ হয়ে গেছে। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে এবার রীতিমতো। ... ...
#পাহাড়যাপন বনপাহাড়ের দেশ। সবুজ ঘন জঙ্গল। মাথার ওপর গাছের শাখা প্রশাখায় একসুরে ডেকে চলেছে দোয়েল, ময়ূর, ম্যাগাপাই, আরও কত নাম না জানা পাখি। মাটির রং খয়েরি সবুজ, মনে হয় খানিক আগেই হয়ে গেছে একপশলা বৃষ্টি। কচি সবুজ পাতাগুলো থেকে এখনও জল চুঁইয়ে পড়ছে। টুপ,টুপ,টুপ টুপ...নাকে ভেসে আসছে বৃষ্টির সোঁদা গন্ধ। মুক্ত আসমানি শামিয়ানার নিচে একখানা মাত্র বাড়ি, তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে মস্ত এক গাছ। বাড়ির রোয়াকে বসে কলকেতে টান দিচ্ছে এক বৃদ্ধ, তাকে কোথায় যেন দেখেছি। মন দিয়ে দেখে চিনে ফেলি। আমারই প্রতিরূপ, তবে ভারি আনমনা। কোত্থেকে আমদানি করা হল একে? তাজ্জব! কেসফাইলের দরকার পড়ে না, সব কিছু আপনা হতেই স্পষ্ট হয়ে ... ...
আজকাল গ্রুপে অনেকে ইংরেজি বইয়ের রেকামেন্ডেশন দিচ্ছে দেখে এই বইটা সাজেস্ট করার ইচ্ছে হল। অসম্ভব জনপ্রিয় বই, অনেকেই পড়ে থাকতে পারেন। না'হলে পড়ে দেখতে পারেন। টাইমলাইনে বছরখানেক আগে লিখেছিলাম, সেটাই কপি পেস্ট করে দিলাম।অ্যামাজন বেস্টসেলারের তালিকায় থাকা কোন বই হাতে পেলে আমি ভয়ে ভয়ে থাকি। কয়েকবার রাম ঠকান ঠকেছি, মাঝখানে বই ছেড়ে দেওয়া আমার নীতিবিরুদ্ধ, ফলে বইটা শেষ করতে গিয়ে রীতিমত নাকানি চোবানি খেতে হয়েছে। এই বইটা নিয়েও আমার দ্বিধা কম ছিল না। আমাজন বেস্ট সেলার লিস্টে এক নম্বরে বিরাজ করছে, কিন্তু তেমন কোনও আলোচনা নেই কেন? ভয়ে ভয়ে বইটা পড়তে শুরু করেছিলাম। আমার ইংরেজি ভাষাজ্ঞান খুবই সীমিত, লিটারারি স্টাইল নিয়ে ... ...
ঝিমপাহাড় আর সবুজ বনের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে গ্রামটা। দূর থেকে দেখলে 'হ্যামলেট' কথাটাই মনে আসে প্রথমে। গ্রামের এক প্রান্তে অতলস্পর্শী খাদ, সেখানে অতিকায় বৃক্ষরা জড়ামড়ি করে নেমে গেছে অরণ্যের বুকে। অন্যদিকে সবুজের সিড়ি ধাপে ধাপে উঠে গেছে বরফাচ্ছাদিত চুড়ার উদ্দেশে। ইজারায়েলের ব্যাকপ্যাকাররা বছর চল্লিশ আগে খুঁজে বের করেছিল এই রত্ন, চার দশকের শত হাঙ্গামাতেও তার ঔজ্জ্বল্য একফোঁটাও মলিন হয়নি। হয়নি যে, সেটা সত্যি আশ্চর্য! মাত্র ঘন্টা চারেকের দূরত্বে অবস্থিত পার্বতী নদীর ধারে একটা কংক্রিটের জঙ্গল গড়ে উঠেছে প্রায়। পার্টি ক্রাউডের জ্বালায় গ্রামের মানুষ তো বটেই, বনের পাখিরাও অস্থির। কিন্তু তা সত্ত্বেও অবিশ্বাস্যভাবে এই গোপন গ্রামটা বেঁচে গেছে। ভাগ্যিস! এই অচিনপুরের ডাকে ... ...
#পুরোনোলেখা গল্প লেখার অভ্যেস আমার কস্মিনকালেও নেই। ওসব কঠিন জিনিস। কিন্তু গল্পের নামে নিজের জীবনের ঘটনা লিখে ফেলা বেশ মজার ব্যাপার। আমার গুরুদেব সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এই পদ্ধতিতে উপন্যাস লিখে ফেললেন গোটাকয়েক, তাই আমি একইভাবে অণুগল্প/গল্প লেখার চেষ্টা করেছি একসময়। নামধামগুলো বদলে দিলেই হয়। কী সব আবোল তাবোল লেখা। পড়লেও হাসি পায়। বছর সাতেক আগের আনাড়ি হাতে লেখা এই জিনিসটা আবার হাতপাখা ব্লগে ছাপাও হয়েছিল ... ...