'মিথ্যামেব জয়তে' প্রকাশিত হয়েছে তিন মাস হয়ে গেল। পঞ্চম বই, আলাদা করে তেমন কোনও অনুভূতি হয়নি। তাও বই প্রকাশের সময়ের এই পোস্টটা আরো একবার দিয়ে রাখলাম। ফেসবুক কখন উড়িয়ে দেয় ঠিক নেই। সুতরাং ব্যাকআপটুকু থাক... দীর্ঘ সময় ধরে বহন করে চলা একটা লেখা যখন অবশেষে দু মলাটে বাঁধাই হয়ে বই হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, তখন মনে নানা রকমের ভাবের উদয় হয়। আনন্দ, গর্ব, স্বস্তি, কৃতজ্ঞতা...কিন্তু আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, আমার ক্ষেত্রে এই সমস্ত ইমোশনকে ছাড়িয়ে গেছে বিষাদ। বন্ধু বিচ্ছেদ আর হতাশার হাত ধরেই যে লেখার সুত্রপাত, অসহায় যাপন আর নীরব দীর্ঘশ্বাস অবলম্বন করেই যে আখ্যান গড়ে উঠেছে, সেখানে আর আনন্দের অবকাশ ... ...
গ্রামের নাম পুলনা। চিরতরে হারিয়ে গেছে এই গ্রাম। না, নামটা আছে, গ্রামটাও আছে। কিন্তু বদলে গেছে আমার স্মৃতিতে ধরে রাখা এক চিলতে গ্রামের সেই পরিচিত দৃশ্য, যেখানে সূর্যের আলো মাথায় হাত দিয়ে ঘুম ভাঙাত। চা-ওয়ালা রমনকিশোর ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স-এর ট্রেকারদের চা দিতে ভুলে গিয়ে মোহিত হয়ে তাকিয়ে থাকত আচমকা জেগে ওঠা রামধনুর দিকে। হেমকুণ্ড সাহিবগামী তীর্থযাত্রীরা চলে যেত এই গ্রামের পাশ দিয়েই কিন্তু ফিরেও চাইত না গ্রামের মোড়ল রামধনীর দিকে। গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান যদি নিয়ম করে নদীর ধারে গিয়ে রঙিন পাথর কুড়োয় তাহলে কে আর পাত্তা দেয়? গোবিন্দঘাটের হইচই থেকে দূরে পাহাড়ের কোলে নিরবিচ্ছিন্ন শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকত পুলনা। নাম না জানা পাখিরা ... ...
একবার এক বন্ধু বাংলায় অ্যাডভেঞ্চার গল্প বিশেষ লেখা হয় না বলে বকবক করছিল। আমিও মনের দুঃখে সায় দিচ্ছিলাম কিছুটা। মিনিট কুড়ি জ্ঞান আহরণ করে জানলাম বাবাধন 'চাঁদের পাহাড়'-ই পড়ে দেখেনি। বটমলাইন -- আমি যেটাকে মাস্ট ওয়াচ, ক্লাসিক বা ট্রেন্ডমেকার বলে মনে করছি, অনেকে হয়তো সেই বই বা সিনেমার নামও শোনেনি। তাই দোনামোনা করে আজকের পোস্টটা দিয়ে ফেললাম। ... ...
১) যারা ব্রেকিং ব্যাডকে সর্বকালের সেরা সিরিজ বলে মনে করেন। ( পিরিয়ড) ২) যারা একইসঙ্গে দমফাটা হাসি আর নখ কামড়ানো সাস্পেন্স থাকা একটা সিনেমা দেখে দু' ঘণ্টা কাটাতে চান। ৩) যারা মনে করেন তেলুগু সিনেমা মানেই মোটা দাগের অ্যাকশন বা রোমান্স/যারা মনে করেন তেলুগু সিনেমায় ফাটাফাটি কাজ হচ্ছে ... ...
১) যারা হাড়হিম করা... ওরে বাবা! ভেবেই গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। বুইজতেছেন?২) যারা জম্বি অ্যাপোক্লিপ্সের মাঝেও একটা নিটোল গল্প আর পারফেক্ট এক্সেকিউশন চান।৩) যারা 'ট্রেন টু বুসান'-এর চরম ভক্ত অথবা জ্যাক স্নাইডারের 'আর্মি অফ দ্য ডেড' দেখে 'ঠিক জমল না' বলে ভাবছেন। ... ...
১) যারা ভাল ক্রাইম থ্রিলার না পেয়ে হাহুতাশ করছেন।২) যারা ক্রাইম থ্রিলার লিখবে বলে পরিকল্পনা করছেন।৩) যারা বিনামূল্যে রাইটিং মাস্টারক্লাস করতে চান। ... ...
#পুরোনোলেখা (বানান ফানান ভুল থাকতে পারে। ইংরেজি বাংলা মিশিয়ে লেখা। কিন্তু কেউ কেউ আগ্রহী হতে পারে বলে দিলাম)অফিস থেকে ছুটি নিতে হলে যে কত মিথ্যে কথা বলতে হয়, তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। মিথ্যে বললেও চলবে না, সেই কথাটা হতে হবে একেবারে বিশ্বাসযোগ্য আর নতুন ধরনের। ছুটি না নিলে দেশ দেখার কোনো সুযোগ নেই, আর বেশিদিন শহর আর অফিসের চক্কর কাটলে আমার মাথার পোকা কিলবিল করে ওঠে। তাই কালে কালে এই বিদ্যায় আমি ভালোই হাত পাকিয়েছি। সেই টুকরো টাকরা ভ্রমণের অভিজ্ঞতাগুলোর আসল মর্ম বুঝতে পারি বছর কয়েক পর যখন বিশেষ বিশেষ মুহূর্তগুলো উঁকি মারে স্মৃতির পাতা থেকে। সেরকম একটা অদ্ভুত ঘটনার ... ...
মহাকাশ বিজ্ঞান বা গবেষণা নিয়ে ফেসবুকে বিশেষ আগ্রহ দেখি না। কয়েকজন অবশ্য নিয়মিত পোস্ট করেন, ভালো ছবি-টবি থাকলে অনেকে সেই পোস্টে লাইক করে এগিয়ে যান। অথচ এখন প্রায় প্রতি সপ্তাহে, প্রতি মাসে, যুগান্তকারী সব আবিষ্কার হচ্ছে। হাবল টেলিস্কোপের নতুন নতুন ছবি আসছে, ইন্টারস্টেলার স্পেস থেকে ভয়েজর-১ আর ভয়েজর-২ এমন সব তথ্য পাঠাচ্ছে যে মহাকাশবিজ্ঞানীরা নড়েচড়ে বসেছে।ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট অফ অ্যাস্ট্রনমিতে Coryn A.L. Bailer-Jones কয়েকদিন আগে ইন্টারস্টেলার নেভিগেশন নিয়ে একটা পেপার সাবমিট করেছেন, সেটা নিয়ে হইচই পড়ে গেছে। প্রসঙ্গত বলা ভালো ব্যাপারটা নতুন কিছু নয়, ভয়েজরের পাশাপাশি নিউ হরাইজনও 'হেলিওপজ' বা সোলার সিস্টেমের সীমানা অতিক্রম করে কিছুদিন পর আন্তনক্ষত্র মহাকাশে পৌঁছে ... ...
বইয়ের ভূমিকাতেই লেখক জানিয়েছেন, আনকোরা ও অশ্রুতপূর্ব বই কিনে পড়ার আগে তাঁর বাবা তাকে ভূমিকাটা পড়ে নিতে বলতেন। 'অপচ্ছায়া' বইটার ভূমিকা পড়ার সুযোগ আমার হয়নি। সব্যসাচী সেনগুপ্তের লেখা অন্যান্য জনপ্রিয় বইগুলোও আগে পড়িনি। কিন্তু ভূতের বই বলেই কিনা কে জানে, আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় মোটেও ভুল করেনি।গত কয়েক বছরের মধ্যে ভৌতিক ঘরানার যত বই পড়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে, নিঃসন্দেহে বলতে পারি, 'অপচ্ছায়া' তাদের মধ্যে সেরা। কিন্তু একটা ডিসক্লেইমার আগে থেকেই দিয়ে রাখলাম, দাঁত কপাটি লাগা ভূতের গল্প পড়ার ইচ্ছে হলে এড়িয়ে যেতে পারেন। এই বইয়ের লেখায় ভয় দেখানো ভূতের দেখা প্রায় মিলবে না বললেই চলে। ... ...
আমার প্রিয় বইয়ের অন্যতম হল পর্তুগিজ কবি ও লেখক ফের্নান্দো পেসোয়ার লেখা বই 'দ্য বুক অফ ডিসকোয়াইট'। তথ্যশূন্য এই আত্মজৈবনিক লেখাটা পেসোয়া প্রায় সারাজীবন ধরে লিখেছেন। প্রতিদিন রাতে এসে লিখতেন কয়েক পাতা। অস্পষ্ট রোজনামচা, খামখেয়াল অথবা দর্শন, চিন্তাভাবনা, আশাআকাঙ্খা, নিরাপত্তাহীনতা, বিষাদ... জড়মড় করে মিশে গেছে একে অপরের সঙ্গে। পেসোয়ার মৃত্যুর আশি বছরেরও পরে বইটা প্রকাশিত হয় এবং কয়েক বছরের অন্তরালে বিশ্বসাহিত্যে বরাবরের মত জায়গা করে নেয়। 'আত্মহত্যার সম্পূর্ণ বিবরণী' ইতিহাসে জায়গা করতে পারবে কি না আমার জানা নেই। হয়ত কয়েকজন আগ্রহী পাঠক বছর তিরিশ পর খুঁজে খুঁজে পড়বে বইটা, আবার হয়ত বছর দুয়েক পরেই আউট অফ প্রিন্টও হয়ে যেতে পারে। ... ...