একের পর এক সাপ্তাহিকীতে কলম-পেষার পর নয়ের দশকের শুরুতে দৈনিক আজকের কাগজে তিন হাজার+ অনিয়মিত বেতনে ক্ষুদে রিপোর্টার হিসেবে প্রথম চাকরীতে যোগদান। সেই সময় দুর্ধর্ষ ক্রাইম রিপোর্টার আমিনুর রহমান তাজ (এখন অবসর জীবনে) ভাইকে দেখে অধমেরও শখ জাগে ওনার মতো খ্যাতনামা ও ক্ষমতাধর ক্রাইম রিপোর্টার হওয়ার। শুরু হয় তাজ ভাইয়ের পেছনে ঘোরাঘুরি। তখনই বোঝা হয়ে গিয়েছিলো, সাংবাদিকতায় রাজনৈতিক ও অপরাধ বিষয়ক রিপোর্টারদের সবচেয়ে বেশী বাজারদর। ক্ষমতার পাল্লাটিও বেশ ভাড়ি। ... ...
জীবনের অনেকটা বাঁক পেরিয়ে আমি আমার ছোট্ট বন্ধু মানিকের কথা ভুলতে বসেছিলাম। প্রায় দুই যুগ আগে বিবিসির বাংলা বিভাগের (এখন দৈনিক প্রথম আলোতে ) কুররাতুল আইন তাহমিনা, আমাদের মিতি আপার টেলিফোনে এক লহমায় মনে পড়ে যায় হারিয়ে যাওয়া সেই কালো মানিকের মায়াময় মুখ। মিতি আপা জানতে চান, আপনার কী মানিকের কথা মনে আছে?আমার প্রথমেই সাংবাদিক মানিকের নাম মনে পড়ে।মিতি আপা বলেন, আরে না, আমি টোকাই মানিকের কথা বলছি, ওই যে সে নাকি এক সময় আপানাদের সাথে দল বেঁধে ঘুরতো। আর খুব সুন্দর গান করতো।…হ্যাঁ, মনে আছে। কিন্তু কেনো?সময় থাকলে আপনি এখনই বিবিসির ইন্দিরা রোডের অফিসে চলে আসুন। খুব জরুরী। সে সময় বিবিসি ... ...
আম পাতা জোড়া জোড়া তৎকালে লোকে প্রেমকে লাইন বলিতো। আমাদিগকে বলা হইয়াছিলো, ইহা ভালো নয়। ভাবেসাবে আমরা বুঝিয়াছিলাম, লাইন একটি বখাটেপনা, সামাজিক অপরাধ বিশেষ। …এই ঢাকা তখন সেই ঢাকা ছিলো না। ফুলবাড়িয়াতে ছিলো রেল স্টেশন। রিকশাই ছিলো সর্বত্র জনপ্রিয় বাহন। ইপিআরটিসি’র লাল দোতলা বাস বিআরটিসি হইয়াছে মাত্র। বাবার হাত ধরিয়া সেই দোতলা বাসে চাপিয়া মিরপুর-ফুলবাড়িয়া ভ্রমন করিয়া জীবনকে মনে হইয়াছিলো সার্থক। রমনা পার্কের দোলনায় আবার কবে চড়িবো, সেই ভাবনায় ছোট্ট শিশু মন কতই না রঙিন স্বপ্ন আঁকিয়াছিলো। …কিন্তু ‘ছেলেধরা’ নামক আতঙ্কে আমাদের ঘরে বন্দি থাকিতে হইতো। গ্রাম হইতে আসা ‘কামলা’ অমুক ভাইয়ের হাত ধরিয়া ইস্কুল-বাসা-দোতলা বাসার ছাদ অবধি ছিলো আমাদের দৌরাত্ন।আমরা ... ...
আমার বন্ধু, এপারে চট্টগ্রামের ফটোসাংবাদিক দিদার আর নেই; ভাবতেই বুকের ভেতর শেল বিঁধে যায়!কিছুক্ষণ আগে তার মৃত্যু সংবাদ পেলাম! করোনাক্রান্তিতে যেন কত সহজ এই সব মহাপ্রস্থান! দিদারের পবিত্র মুখচ্ছবিতে এক লহমায় মনে পড়ছে কত শত স্মৃতি, কত হাসি গান, ফেনিল পানপাত্র, প্রাণের উচ্ছ্বাস! রাঙামাটির পাহাড়ে সেই ২০০০ সালে তিন বিদেশী অপহরনের সংবাদ আমরা মাসখানেক ধরে করেছি। এরপর তার সাথে অনেক নৈকট্য, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দৈনিক যুগন্তরে দুই দফায় তিনি আমার সহকর্মি ছিলেন, কতবার চট্টগ্রামে তার বাসায় আড্ডা জমিয়েছি! বড্ড অকালে তার এই চলে যাওয়া! কেন মেঘ আসে, হৃদয়ও আকাশে, তোমারে দেখিতে দেয় না ❤️ ... ...
হাজং উৎসব : প্যাঁক খেলা -- লিখেছেন বিপ্লব রহমানহাজংদের ‘প্যাঁক খেলার’ মতো কক্সবাজার-পটুয়াখালির রাখাইনদের রয়েছে আরেক ঐতিহ্যবাহী পানি-খেলা উৎসব-- সাংগ্রেং। পার্বত্য চট্টগ্রামের মারমারাও পানি খেলার আয়োজন করেন, তারা একে বলেন-- সাংগ্রেই পোয়ে। সেটি অবশ্য বর্ষ বিদায় ও বর্ষ বরণের ভিন্ন এক উৎসব। আর বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলে বসবাসকারী গারো বা মান্দি জাতিগোষ্ঠীর রয়েছে বীজ বপনের উৎসব ‘রঞ্চুগালা’ ও নবান্ন উৎসব ‘ওয়ানগালা’। আর চাকমাদের বর্ষ বরণ ও বর্ষ বিদায় উৎসবের নাম ‘বিঝু’। ত্রিপুরারা তাদের চৈত্র সংক্রান্তির উৎসবকে বলেন ‘বৈসুক’। সাঁওতাল আদিবাসীর রয়েছে নবান্ন উৎসব ‘সোহরাই বাহা’ ও বৃক্ষ বন্দনা ‘কারাম’ উৎসবের ঐতিহ্য। পুরোটা পড়ুন ... ...
রাখাইনরা কেন দেশ ছেড়ে যান? -- লিখেছেন বিপ্লব রহমানশেষ বিকেলের আলোয় ডলি রাখাইনের ফর্সা কচিপানা মুখে লালচে আভা। কণ্ঠস্বর বাস্পরূদ্ধ, যেন অস্পষ্ট থেকে অস্পষ্ট হতে থাকে, আচ্ছা, বিপ্লব দা, আপনার তো ঢাকায় অনেক টাকার চাকরি! এ রকম একটা বাড়ি সস্তায় কিনতে পারেন? মানবিক লোকজন এসবের দখল নিলে রাখাইন মালিকটি দেশান্তরে গিয়েও অন্তত নিশ্চিন্ত যে, যাক, পূর্বপুরুষের ভিটেমাটির নিশানাটুকু তো টিকে থাকবে, সেটুকু তো আর একেবারে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে না! … পুরোটা পড়ুন ... ...
এই দারুণ নিদানকালে বাংলাদেশের আদিবাসী অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রামের ন্যাড়া পাহাড়ে কোনো গাছ নাই, কেবলই দিগন্ত জুড়ে সবুজ মরুভূমি, এদিক সেদিক শুকনো ধুলো উড়ছে, তপ্ত বাতাসে যেন আগুন। কোথাও প্রেম নাই, বৃষ্টি নাই, নাই শিশুদের প্রাণের উচ্ছ্বাস! কাপ্তাই লেকের ঘোলা জল ফুঁড়ে বেরিয়েছে শোষণের চিহ্ন মৃত গাছের কংকাল। ... ...
করোনাক্রান্তিতে এপারে বাংলাদেশের আদিবাসী পাহাড়ি অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রামে উৎসব ম্লান, নাই প্রাণের উচ্ছাস, নতুন সাজ পোষাকে শিশুদের শোভাযাত্রা, মেলা ঘিরে বর্ণিল আয়োজন, ফানুসের আলো। তবু কোথায় যেন বিঝু পাখি ডাকছে, "হাত্তোল পাগোক, বিঝু এজোক" (কাঁঠাল পাকবে, বিঝু আসবে)।.... কোকিলের কুহু কুহু সুর ১৪টি পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠির চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষ বরণের উৎসব বিঝু,বৈসু, বিহু, বিষু, সাংগ্রাই, চাংক্রানের আগমনী বার্তা জানিয়ে দেয়।দিকে দিকে পাহাড়-জংগল আলো করে ছড়িয়েছে হলুদের শোভা, "পদক পাইন" অর্থাৎ পদক ফুল। মায়ানমারের জাতীয় ফুল বা বৈসাবি ফুল। ইংরেজিতে "রোজউড"।সবাইকে বৈসাবি, চৈত্রসংক্রান্তি ও নববর্ষের শুভেচ্ছা।সকলে নিরাপদে থাকুন, সুস্থ থাকুন। ... ...
বিপ্লব রহমানের বই ‘পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ’ [সাংবাদিকের জবানবন্দিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অকথিত অধ্যায়] চার বছর পর আবারও অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বেরিয়েছে বর্ধিত কলেবরে, দ্বিতীয় সংস্করণ আকারে।পাহাড়ের অজানা, অব্যক্ত নানা ঐতিহাসিক ঘটনার প্রত্যক্ষ দেখা থেকে লেখা এই বই। এটি নিছক সাংবাদিকের লেখনিতে পরিস্থিতির বিবরণ নয়, বরং অনেক ঘটনার নেপথ্য ঘটনা তথ্য-প্রমাণসহ সরাসরি উপস্থাপন করা হয়েছে এই বইতে। অসংখ্য সাক্ষাৎকার, টিকা-টিপ্পনী, তথ্যসূত্রে এটি হয়ে উঠেছে একই সংগে জীবন্ত দলীল।এর প্রচ্ছদ এঁকেছেন সব্যসাচী হাজরা, একুশের বইমেলায় এটি পাওয়া যাচ্ছে "সংহতি প্রকাশন" এর স্টল-২০৫-৬ এ, এর দাম পড়বে ৩২০ টাকা মাত্র (২৫% ছাড়)। বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে রকমারি ডটকম-এ এই বইটি অনলাইনে কিনতে পাওয়া যাবে। ... ...
আহাদ ভাই আমাদের বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন, নেতা ও ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। ১৯৯০ এর উত্তাল দিনগুলোতে তার নেতৃত্বে আমরা স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। তখন আমরা ছিলাম সকাল ৮-৯টার সূর্য, একেকজন যেন আর্জেস গ্রেনেড! এরশাদ পতনের পর ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র ফেডারেশন আহাদ-জিলানী পরিষদে প্যানেল দিয়েছিল। "আহাদ-জিলানী পরিষদ, আন্দোলনের ভবিষ্যৎ/ লং লিভ রেভ্যুলেশন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন" শ্লোগানে গলা তুলেছিলাম সোৎসাহে। ১৯৯২ সালে আহাদ ভাই, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আনু মুহাম্মদ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন প্রমুখসহ খাগড়াছড়ি ভ্রমণে গিয়ে আমরা ভয়াবহ লোগাং গণহত্যার মুখে পড়েছিলাম। পরে এই নিয়ে সংবাদ প্রতিবেদন ও ব্লগ নোট লিখেছি। আমার বই "পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ" এ ... ...