এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ভাট : ভার্চুয়াল থেকে রিয়্যাল

    Tirthankar
    অন্যান্য | ২১ জুন ২০০৬ | ৪০০১৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dri | 199.106.103.254 | ০৬ জুলাই ২০০৬ ০৭:৫০602592
  • আপনি কত বড় দেখলেন? আমি কিছু দেখেছি একদম ছোট্ট টিকির মত লেজ, আর এক রকম হয় থাই পর্যন্ত ঝোলা মানে হরিণের হাইটের কোয়ার্টার মত। তার চেয়ে বড় দেখেছি বলে মনে পড়ছে না।
  • Paramita | 64.105.168.210 | ০৯ জুলাই ২০০৬ ০৩:১২602603
  • দময়ন্তী, ডিম আর চিংড়িমাছের দম-ভাজা-সেদ্ধ-সর্ষে-যা সম্ভব ছিল কিনা সেই পাঁচদিনের খাবারে?
  • dam | 208.251.193.3 | ০৯ জুলাই ২০০৬ ০৭:৫১602614
  • না গো, পুরো নিরামিষ।
  • damayantee | 208.251.193.3 | ১০ জুলাই ২০০৬ ০২:০৩602625
  • নর্থ ক্যারোলাইনা পর্ব
    =============

    আমি আসলে NC যাওয়াটা কাটিয়ে দেব ভেবেছিলাম। তীর্থঙ্কর সেই কবে থেকে বলে আসছে। তাছাড়া তীর্থঙ্কর আর অভ্যুদয় এদের দুজনকে আজও চোখে দেখি নি, অথচ দুইজোড়া মাসীমা মেশোমশাইএর কাছেই গিয়ে দিব্বি আদরযত্ন ও মিষ্টি খেয়ে এসেছি। কাজেই অ্যাটলান্টা যাব, আর NC তে তেমন কিছু দেখারও নেই। এইসব ভাবতে ভাবতেই আমার মামাতো বোন হঠাৎ NC তে একটা চাকরী পেয়ে আয়ওয়া থেকে শিফট করে গেল।

    কাজেই অ্যাটলান্টা বাতিল করে আমিও চললাম ক্যারী, ডারহ্যাম, রকি মাউন্ট ঘুরতে। ইতিমধ্যে যোগাযোগ হয়েছে অপনকাকুর সাথে। ওঁর সাথে কোনদিনই কোন চিঠিচাপাটি চলে নি, এমনিতেও খুবই কম, বোধহয় ২-১ বার সরাসরি কিছু বাক্য বিনিময় হয়েছে ভার্চুয়াল ফোরামে। শুধু জানতাম এতখানি বয়স হওয়া সঙ্কেÄও উনি বেশ ঝরঝরে চিন্তা করতে পারেন। অথচ উনি শুনেই নেমন্তন্ন করেন। আমি ড্রাইভ করি না শুনে, নিজে এসে নিয়ে যেতে ও পৌঁছে দিতে চান। ভার্চ্যাল হয়ে যায় এক্কেবারে রিয়াল।

    আমি অবশ্য গ্রে-হাউন্ড আর অ্যামট্র্যাকে অগাধ আস্থাশীল। কিন্তু আমায় লজ্জায় ফেলে গ্রে-হাউন্ড আমাকে ক্যারী পৌঁছে দেয় রাত এগারোটায়। ঐ অত রাতেও বাস স্টেশানে মিতাদি, দিব্যেন্দুদা আর বনবন হাজির। তীত্থর থেকে তো আগেই জেনেছিলাম যে দিব্যেন্দুদার একটু বেশীক্ষণ 'আপনি আপনি' করা অভ্যেস আছে। তাই শুরু থেকেই চেঁচামেচি করে সেটাকে থামানো গেল। মিতাদির রান্না করা আলু ফুলকপি দিয়ে ভেটকি মাছের ঝোল!! আহাগো সে যে কি চমৎকার! আর ডাল আর ইলিশভাজা। তারপর চাটনী। তারওপরে মিঠাইয়ের মালাই চমচম আর কালোজাম। আমি তো তাও ইলিশের সরষেবাটা আর মাংস ছুঁতেই পারি নি। পরেরদিন অবশ্য সব খেতে হয়েছিল।

    তারপরে আমাতে মিতাদিতে আড্ডা চলল ভোর চারটে অবধি। কতকিছু নিয়েই যে আড্ডা হল! দিব্যেন্দুদার একটি চমৎকার বাগান আছে। একবার ডালহৌসী বেড়াতে গিয়ে পাহাড়ের গায়ে ফুটে থাকা একটা ফুল বেশ ঝুঁকে ঝুঁকে তুলে এনেছিলাম। অ্যাদ্দিনে জানলাম তার নামটা। হাইড্রেনজিয়া। না না, মিতাদি বলতে পারে নি, প্রাণপণে হার্ড দিস্ক সার্চ করছে দেখে আমি বলেছিলাম দিব্যেন্দুদার থেকে জেনে নেব, তাই নিয়েছি।

    দুপুরে গেলাম একটু এদিক ওদিক বেড়িয়ে দেখতে। বিকেলে অপনকাকুর বাড়ী নেমন্তন্ন। কি ফুলগাছের বাহার সেখানে। হঠাৎ গাছভর্তি গন্ধরাজ দেখে আমি তো মোহিত এক্কেবারে। আর পারুলকাকীমার রান্না! আ-:। লুচি, আলুরদম, ছোলার ডাল, ইয়াব্বড় বড় বেগুনভাজা, ঢ্যাঁড়শের একটা কি শুকনো শুকনো মত তরকারী, মাংস এসব তো ছিলই। কিন্তু আসল শিল্পকর্ম হচ্ছে পারুলকাকিমার ছানার জিলিপী আর কমলা সন্দেশ। অদ্ভুত মিহি ছানায় তৈরী এক সন্দেশ, হাল্কা কমলা রং আর কমলালেবুর গন্ধ দেওয়া। মুখে দিলে আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায়। সে যে কী অপুর্ব্ব একটা ব্যপার -- লিখে বোঝানো যাবে না। তারপরে ছানার জিলিপী। ইয়াব্বড় বড়। ডোবা রসে ভাসমান। অতবড় সাইজ অথচ একটুও ভেঙ্গে যাওয়াটাওয়া নেই। আর স্বাদ তো এককথায় দেবভোগ্য। শুধু এই দুটো মিষ্টির জন্যই পারুলকাকীমাকে নিয়ে দেবতা আর অসুররা মারামারি করতে পারে। গল্পে, হাসিতে, আড্ডায় সময় যে কোথা দিয়ে কেটে যায়। অপনকাকুর সেই বিখ্যাত কেটলী দিয়ে উনি বানান চা এবং কফি। কিন্তু হায় আমি তখন আর কিচ্ছু গলাতে পারছি না গলা দিয়ে। রুণা, ইন্দ্রনীল যায় প্রথমে, আর আমি আর মিতাদি সবশেষে (এবং এসে রাত আড়াইটে অবধি আড্ডা মারি)। ওঁদের ওখানকার দুই শিল্পীর রেকর্ড করে রাখা গান শোনান অপনকাকু। আশ্চর্য্য সুন্দর। সেই গান শুনে আমি ভুলে যাই ছবি তোলার কথা। অথচ আমি ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলাম।

    ইয়ে, কোথায়ও গিয়ে নিন্দে করতে নেই। তবে আমি নিন্দে না করে পারছি না। প্রথমত: রু মানে রুনা। ওর মেয়েটা যে কি শান্ত কি শান্ত কি বলব! সারাক্ষণ আপন মনে ঘুরে গেল, একটুও কাঁদল না, কোন জিনিষ নিয়ে টানাটানি করল না (যেটা রুনা ভয় পাচ্ছিল) অথচ রু আর ইন্দ্রনীল কেবলই ওর নিন্দে করে!! নাকি ভীষণ দুরন্ত! নাকি ঘ্যানঘ্যান করবে! আশ্চজ্জি!! মেয়ে কি মাটির পুতুল হবে নাকি? দ্বিতীয়ত: মিতাদি স্বয়ং। এত এত রান্না করেছে --- তারপর পাঁচদিন পরেও বলে নাকি তখনও শেষ হয় নি খাবারদাবার। ওরা তিনজনে মিলে পাঁচদিনে খেয়ে শেষ করতে পারল না আর আমি একদিনেই খাই নি বলে অভিযোগ করছে!!

    না: NC না গেলে সত্যিই একটা চমৎকার অভিজ্ঞতা হত না।
  • Tirthankar | 69.180.29.91 | ১০ জুলাই ২০০৬ ০৯:৩৬602636
  • সাড়ে তেরো ঘন্টার ক্যারী সফর নিয়ে যা যা লিখতে চেয়েছিলাম তার অনেকটাই দময়ন্তী লিখে ফেলেছে। পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় (হলেও অবিশ্যি অসুবিধা ছিল না), তার জন্য ডিসজয়েন্ট উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো পয়েন্ট বাই পয়েন্ট তুলে দিচ্ছি।

    ১) রাত সোয়া এগারোটা। সারাদিনের অসংখ্য দু:খজনক ও স্ট্রেসফুল অভিজ্ঞতার পর ধুঁকতে ধুঁকতে কোনোরকমে গাড়ী চালাচ্ছি। এমন সময় মিতাদি'র ফোন এবং আমাদের অবস্থান জেনে নিয়ে ঘোষণা: "এবার দিব্যেন্দু তোমাদের গাইড করবে।' ফোন লাউডস্পীকার মোডে করে দেওয়া হল। আকাশ থেকে দৈববাণীর মত ভেসে আসতে লাগল দিব্যেন্দুদার আবেগবর্জিত কন্ঠস্বর, "এক্সিট ১২৯ নিয়ে ডানদিকে যাও। এবার দুটো সিগন্যাল ছেড়ে তৃতীয় সিগন্যালে রাইট টার্ন। নিয়েছো? বেশ। এবার ............ লাল বাড়ীগুলো যেই শেষ হবে অমনি রাইট টার্ন। তারপর পরপর দুটো লেফ্‌ট্‌; হ্যাঁ এইবার আমি তোমাদের গাড়ীর আলো দেখতে পাচ্ছি, এসে গেছো তোমরা।' টানা পনেরো মিনিট এমন অনলাইন পথনির্দেশ। প্রায় "আমার হাত ধরে তুমি নিয়ে চলো সখা' গোছের সার্ভিস এবং নি:সন্দেহে জি পি এসের ঠাকুরদাদা!

    ২) ডালে লেবু চেপার আগেই নাকে লাগে গন্ধরাজ লেবুর সুবাস! ম্যাজিক নাকি? মিতাদি ডালে দিয়েছে গন্ধরাজ লেবুর পাতা, যা নাকি "কাফির লাইম' নামে মেলে চীনে দোকানে। কতদিন পরে ওলকপির তরকারি! একটা হালকা অথচ ভারী মুখরোচক পাঁচমিশালী তরকারী। সর্ষে চিংড়ি। পাঁঠার মাংস। চাটনি। পিন্টুদার মাস্টারপিস মালাই চমচম ও কালোজাম। উল্লাস! উল্লাস!
  • Tirthankar | 69.180.29.91 | ১০ জুলাই ২০০৬ ০৯:৫৫602647
  • ৩) পরদিন সকাল সাতটায় যে মানুষটাকে আপিসে ছুটতে হবে, সে কিনা রাত আড়াইটে অবধি বসে আড্ডা দেয়! পরেরদিন আমাদের নিদ্রাভঙ্গ হবার বহু আগেই দিব্যেন্দুদা আপিস চলে গেছেন; ফিরেও এলেন ঘন্টা চারেকের মধ্যে। সেই নিঁখুত, নিপাট, নিভাঁজ, মখমলের মত চেহারা - যেন এইমাত্র নদীর ধারে হাওয়া খেয়ে ফিরলেন! স্ট্রেস রিলিভার ওষুধ কোম্পানী বা মেডিটেশন স্পেশ্যালিস্ট বাবাজীরা দিব্যেন্দুদাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করলে সে অ্যাড নির্ঘাত বিরাট হিট হবে।

    ৪) দিব্যেন্দুদা সম্প্রতি একটা জাঁদরেল (পরিভাষায় যাকে গাম্বাট বলে) জুসার কিনেছেন। তারপর থেকেই এন্তার জুস বানাচ্ছেন, নিজে খাচ্ছেন, পুত্র বনবনকে খাওয়াচ্ছেন, এবং খাওয়াবার জন্য আরো লোক খুঁজছেন। মুসাম্বি, তরমুজ, গাজর, পালংশাক ... কিছুই দিব্যেন্দুদার জুসারে নিষ্পিষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। মিতাদির আবার জুসে অ্যালার্জি (সাম্প্রতিক ফেনোমেনন কিনা অবিশ্যি জানা গেল না)। তবে তরমুজের রসটা হয়েছিল বড়ই ভালো। "জুস খাইয়ে দিব্যেন্দু খিদে মেরে দেবার ষড়যন্ত্র করছে' গোছের একটা সন্দেহ অপনকাকু প্রকাশ করেছিলেন বটে, কিন্তু তাতে বিচলিত না হয়ে সকলেই "জেনেশুনে জুস করিল পান'।
  • Tirthankar | 69.180.29.91 | ১০ জুলাই ২০০৬ ১০:০৯602658
  • ৫) পারুলকাকীমা বছর দশেক আগে পান ধরেছেন। খাস বেনারসী জর্দা দেশ থেকে আনান। কেন পান ধরলেন? "হঠাৎ একদিন মনে হল, সিগারেট খেলুম না, মদ খেলুম না, কোন নেশা করলুম না - এত বড় জীবনটা যে বৃথা গেল! সেই দিন থেকে পান।' নিজের লিমিটেড স্টক থেকেই চারখানা পান শেয়ার করলেন আমার পান-বুভুক্ষু বাবা-মা'র সঙ্গে। তাঁরা তো আহ্লাদে আটখানা!

    ৬) পারুলকাকীমা আর অপনকাকুর দাম্পত্যকলহের অসাধারণ বর্ণনা দিলেন কাকীমা - " খুব রাগ হল, বুঝলি? দিলুম তোদের কাকুকে আচ্ছা করে তুলোধুনে। তা সে একটি কথাও কয় না দেখে ভাবলুম, আ: - আজ এক্কেবারে শুইয়ে দিইচি, কথা বন্ধ করে দিইচি! আনডিসপিউটেড ভিকট্রি! কিছুক্ষণ পর দেখি মানুষটা ঘর থেকে উঠে চলে গেল। ও:, কি বকাই না দিইচি, একেবারে ঘর থেকেই উধাও! এমন জয়টা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করব, ও মা, দেখি দুকাপ কফি হাতে করে নিয়ে এসে তিনি বল্লেন, অনেক বকেচো, এবার গলাটা এট্টু ভিজিয়ে নাও!'

    সত্যি, আপনাদের কাছে আমাদের অনেক শেখার।
  • Tirthankar | 69.180.29.91 | ১০ জুলাই ২০০৬ ১০:২২602669
  • ৭) মধ্যাহ্নভোজনে বসে কি একটা কথায় হাসতে গিয়ে শ্বাসনালীতে এককণা খাদ্য পিছলে ঢুকে যাবার উপক্রম হয়েছে, প্রাণপণ চেষ্টা করছি আসন্ন কাশির দমক সামলে ওঠার - কারোর বোঝার কথা নয়; বিদ্যুতের মত দিব্যেন্দুদার হাত এগিয়ে এল আমার প্লেটের দিকে। সে হাতে একটি জলের গেলাস। মুখে কিন্তু কথা নেই একটিও। ধন্যি আপনার অবজার্ভেশন, স্যার!

    ৮) বাড়ী ফিরছি পারুলকাকীমার হাতে যত্নে ফোটানো একগুচ্ছ অপরূপ সুগন্ধী ফুল, জিভে জল আনা মাখনের মত মসৃন কমলা-সন্দেশ, অনিবার্য মালাই চমচম এবং নিপাট আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় ভরপুর সাড়ে তেরো ঘন্টার স্মৃতি। আবার আসব মিতাদি, দিব্যেন্দুদা, কাকু, কাকীমা।
  • Mita | 24.163.123.37 | ১২ জুলাই ২০০৬ ০৯:০২602680
  • পরপর দু weekend সত্যি খুব ভালো কাটলো। প্রথমে দমু এসে খাতা খুলে দিলো, তারপরে তীর্থ-কোয়েলি মাসিমা-মেসোমশায় সহ! তবে দুজনার ক্ষেত্রেই সময়টা বড্ড ই কম ছিলো!
    কবে থেকে জল্পনা-কল্পনা, চোখের পলকে কেটে গ্যালো!
    আর তীর্থ, তোমাদের লেখা পড়ে বনবন জিগ্গ্যেস করছিলো, ঐ নিপাট, নিভাঁজ stress free ভদ্রলোকের সাথে,
    আমাদের একটু আলাপ করিয়ে দেবে? :-))
  • damayantee | 61.246.154.249 | ০৩ আগস্ট ২০০৬ ১১:১৫602692
  • শিকাগো
    =======

    ঈশানের রাস্তা হারানোর, থুড়ি অ্যানার্কিস্ট অর্ডার ফলো করার গল্প তো আগেই বলেছি। এবারে কোনমতে বাড়ী পৌঁছাতেই ঘেঞ্চুর সাদর সম্ভাষণ একগাল হাসি আর একরাশ কথাসহ। তারপরের বাকী দিনটা ঘেঞ্চু প্রবল উত্তেজিত। কেবলই হাত ধরে টানে তার খেলাঘরে নিয়ে যাবার জন্য। বাবা মা'র সাথে গল্প করাটা তার একেবারেই না-পসন্দ। আর দৌড়াদৌড়ি করে খেলতে পারলে বেজায় খুশী ছেলে। এর ফাঁকে ফাঁকেই সে টিভি কে হয় ঘুরিয়ে দেয় অথবা ফেলে দেয়। আমি তাকে একটু গম্ভীর গলায় বললাম করতে নেই ওরকম ---- তাতে আমার দিকে তাকিয়ে একগাল দুষ্টুমিষ্টি হাসি দিল। কোন পাষন্ড তার পরেও গম্ভীর হয়ে থাকতে পারে! তবুও আমি আপ্রাণ চেষ্টা করে গম্ভীরভাবে বললাম "হেসে ভোলালে হবে না"। এবারে মায়ের দিকে ফিরে তিনি আরো বিগলিত হাসির সাথে জানালেন "বেবী হেসে ভোলাচ্ছে"।

    রাতে যথারীতি ভাটের নিয়ম মেনে অনেক রাত অবধি ভাটানো হয়েছে। পরেরদিন আমি আর মিঠু গেলাম শিকাগো ফিল্ড মিউজিয়াম দেখতে। মিঠু নাকি এর আগে কোনোদিন ট্রেনে চড়ে নি। অতএব দোতলা ট্রেনে চড়ে মিঠু বেদম খুশী। একে বেড়াতে যাওয়া ---- তায় আবার মিউজিয়াম --- ঈশান বাড়ীতে ঘেঞ্চুর সাথে খেলা করাটাই বেটার অপশান মনে করল। ফিরতি পথে কফিতৃষ্ণার্ত আমাদের দুজনের মুখের ওপরে ডানকিন ডোনাটস দোকান বন্ধ করে দিল। অতএব মিঠুর মাথা ধরা ছাড়ল না। অতএব রাত্রে আমি আর ঈশান বসে বসে সেই Y2K নামক বিচ্ছিরি সিনেমাটা দেখলাম, মিঠু দেখল না।

    তার পরেরদিন নেভী পীয়ার অভিযান। অমন চমৎকার খোলামেলা জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করার জন্য ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে না বলে ঘেঞ্চু খুবই বিক্ষুব্ধ ছিল। আমি রোদ্দুরে আর গরমে কিঞ্চিৎ কেলিয়ে পড়েছিলাম। মিঠু পরপর দুদিনের হাঁটাহাঁটি আর ৪ বেলা করে চর্ব্যচোষ্য রান্না করে একেবারে বেহদ্দ ক্লান্ত। আর দাড়িতে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানো ঈশান সারাক্ষণ আমাদের আওয়াজ দিয়ে গেল। তা নারীজতির প্রতি এই ব্যবহার তো যুগেযুগেই হয়ে আসছে --- তাই আমি বা মিঠু কেউই বিশেষ পাত্তা দিলাম না। যথারীতি ঈশান বাঁদিকের বদলে ডানদিকে ঢোকাল গাড়ী আর সঙ্গেসঙ্গেই বুঝে গেল ভুল করেছে। বেশী না, মাত্র ১৫ মিনিট অতিরিক্ত লাগল। আর ঐ রাত দেড়টায় ফিরে মিঠু ঈলিশ ভাপা আর ভাত রেডী করে ফেলল।

    ও হ্যাঁ ভাতটা ঈশানকে একটু দেখতে বলে গেছিল মিঠু। তো আমি এসে দেখি ঈশান একটা হাতা হাতে নিয়ে ভাতের সসপ্যানের দিকে ঝুঁকে খুব উদ্বিগ্নমুখে তাকিয়ে রয়েছে। ভাত নাকি ওকে ফাঁকি দিয়ে রোজরোজ গলে যায়। তাই ও ভাতের প্রতি সেকেন্ডের মুভমেন্ট অবজার্ভ করছে।

    তার পরেরদিনও প্রচুর আড্ডা। মিঠু সেদিন আমায় ধোঁকা খাওয়াল। এটা তো একেবারেই আমার মায়ের স্পেশ্যাল। ঐ সুদূর অয়মেরিকায় যে কেউ ধোঁকার ডালনা করে খাওয়াবে ---- আমি মোটেই ভাবতে পারি নি। তখন আমি আর খেতে পারছি না --- মিঠু বেশ কড়া গলায় বলল "খেয়ে না-আ-ও"। বাপরে!! আমিও সুড়সুড় করে খেয়ে নিলাম। চিকেন ধনেপাতা দিয়ে যেটা করেছিল, তাও ভারী ভাল খেতে।

    ফেরার আগেরদিন যখন গোছাচ্ছি, ঘেঞ্চু সাথে সাথে অনেক কিছু গোছাল। খুব ইচ্ছে ছিল আমার জিনিষগুলো ও গুছিয়ে দেয়, তবে দেওয়া হল না বলে বিশেষ আপত্তি করে নি। শুধু অনবরত কিসব বলে গেল, যার মধ্যে "গুছিয়ে নিই" কথাটা বোঝা যাচ্ছিল। তার মধ্যেই আমাকে ৩ বার কফি, চিনি, নুন, জিয়েগুঁয়ো, দুধ আর চাল দিয়ে কফি বানিয়ে খাওয়াল। ফেরার সময়েও যথারীতি প্রথা মেনে ঈশান ভুল এক্সিটে গাড়ী ঢুকিয়ে দিল। আসলে এমন ল্যাদ যে পরেরটা অবধি যেতে আর ইচ্ছে করে নি, আগেরটাতেই ঢুকিয়ে দিয়েছে। তা মাত্র ১০ মিনিট দেরী। সে অমন কিছু নয়।

    আর এই সমস্ত কিছুর মাঝেমাঝেই বোজোর ফোন। আসলে অনুসন্ধান, কি কি খাচ্ছি। মিতাদির সাথে আড্ডা। তীর্থঙ্করের সাথে উড়ন্ত টেবিলের গল্প।

    এবারের ৩ মাস সত্যি অসাধারণ ভাল কাটল। একবারও মনে হয় নি, এইসব লোকজনেদের সাথে আমার আগে কোনদিন আলাপ ছিল না। এখন অপেক্ষা, মিঠু শীতকালে আসবে ---- দিল্লীহাট দেখব। নি:সন্দেহে তখন রেশমীও থাকবে দলে। সুমন ততক্ষণ খেলা করবে ট্রেজে আর ঘেঞ্চুর সাথে।

    আসছ তো মিঠু?
  • mithu | 67.173.95.163 | ০৮ আগস্ট ২০০৬ ০৩:৩৪602703
  • দময়ন্তীকে যারা বাড়িতে আসতে বলবেন ,তারা ইলিশ অতি অবশ্যি রেডি রাখবেন,ও সত্যিকার ইলিশ প্রেমী,ইলিশের জোয়ারে অন্য সব মাছ সব ভেসে যাবে,পাঁঠা ও কোনো ক্রমে ক্ষমা-ঘেন্না করে পাতে একটু জায়গা পাবে।

    তবে দময়ন্তীর সঙ্গে বেড়িয়ে খুব সুখ,আমি আর ও মিউজিয়ামে শুধু দোকানে ঘুরেই পাঁচ মাইল হেঁটে ফেলেছি,একই দোকানে তিন বার করে ঘোরা,আহা দময়ন্তী এলো দেখে,নইলে এ সুখ তো কবে কোলকাতাতেই ফেলে এসেছিলাম:-(

    দিন কটা কি তাড়াতাড়ি চলে গেলো,কত গল্প হলো না,কত গল্প মাঝপথে রইলো.... প্রান খোলা হাসি টা এখনো কানে লেগে আছে।

    আবার খুব তাড়াতাড়ি দেখা হবে দময়ন্তী।
  • m | 67.173.95.163 | ০৭ অক্টোবর ২০০৬ ০২:২২602714
  • দু-তিন দিনের নোটিশে গত উইক এন্ডে আমরা গিয়েছিলাম মিজৌরিতে,সেন্ট লুইসের পুজো দেখার পাশাপাশি একখানি দিব্য ভাট হলো।ভাটুরে অমৃতার সঙ্গে এই আমার প্রথম দেখা,যদিও ফোনে আগে অনেক গপ্পো হয়েছে।সৈকতের অবশ্য কিংশুকের সঙ্গে বি ই কলেজীয় পুনর্মিলন হলো।অমৃতার অবশ্য সিঙ্গুরে আদি বাড়ি,ফলে দুই সিঙ্গুরবাসীর মোলাকাত হলো ও বলা যায়।

    শুক্রবার আপিশ মায়া করেও দুপুরের আগে বেরোনো গেল না,ছেলে মিসৌলিতে অমলিতা মাসির বাড়ি যাবার আনন্দে বিভোর হয়ে দুপুরে আর ঘুমোলো না।O'Hare এর পাশ দিয়ে যাবার সময় আকাশে প্লেনের মেলা দেখে সে ভয়ংকর উত্তেজিত,প্রচুর প্লেন দেখে সে ধরেই নিয়েছে সারা আকাশে সব সময় প্লেন দেখা যাবে,মুখে ফাটা রেকর্ডের মত বুলি,বেবি আরো প্লেন দেখতে চায়।বাবা সমস্ত প্লেন দের কিছু সময়ের জন্যে বিশ্রাম করতে পাঠিয়ে দেওয়ায় সে বিষন্ন হয়ে পড়লো,তারপর শুরু হলো বৃষ্টি,রাস্তা মেরামতির কারণে ঘন্টায় পাঁচ মাইল বেগে ফ্রি -ওয়ে তে যাত্রা,সব হ্যাপা সামলে রাত আটটায় গিয়ে পৌঁছোলাম ওদের বাড়ি।ও পথি মধ্যে আমি সামান্য মন খারাপ ও করে নিয়েছি,সব রাস্তা গুলো ই ক্যানসাসের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করছে।

    অমৃতাদের ওখানে পৌঁছে ছেলে একটু গুটিয়ে রইলো,অচেনা যায়গায় খাপ খুলবে কিনা ভাবতে ভাবতে রাতের আহার করে সে বিছানায়।
    এরপর শুরু হলো আমাদের গপ্পো,যদিও আমি অমৃতাকে প্রথম দেখলাম,তবুও বিন্দু মাত্র অচেনা মনে হলো না( সমস্ত ভাটুরে,যাদের দেখেছি,তাদের ক্ষেত্রেও এই কথা দিব্যি খেটে যায়)গল্প জমে উঠেছে,সঙ্গে খাওয়া,অনেক কিছু ছিলো মেনু তে,চিংড়ি,মালাই কোপ্তা,চিকেন,অ্যাসপ্যারাগাসের ছেঁচকি,চাটনি ইত্যাদি,খিদে পেয়েছিলো আর সুন্দর রান্না,দুয়ে মিলে ভোজ খেলাম বলা যায়,আমি আবশ্যি দাঁতের জন্যে একটু রয়ে সয়ে খেলাম।সৈকত সমানে মালাই কোপ্তা খেয়ে গেল,আর আমি দেবভোগ্য ছেঁচকি।এঁটো হাতে শুকিয়ে চড়চড় করছে,গল্পের বিরাম নেই।
    হাতটাত ধুয়ে মনে হলো,কাল সকালে পুজোতে যাবো,গয়না-শাড়ি এই বেলা সব যবন ওঠার আগেই গুছিয়ে রাখি,বাক্স খুলে গয়না আর খুঁজে পাই না,বাইরে এসে সেকথা বলতে অমৃতা উদ্বিগ্ন হলো,বাকি দুজন তখন সোফায় আধশোয়া হয়ে গল্পে মত্ত।আমার দৃঢ় বিশ্বাস সে সব গাড়িতেই পড়ে আছে,বহু ঠেলে-গুঁতিয়ে তাদের দুজন কে দেখতে পাঠানো হলো,নির্বিকার মুখে এসে জানালো ,নেই।কি আর করা,আবার গল্পে জমে গেলাম।মাঝরাতে প্রায় শুতে গেলাম।

    সকালে পৌঁনে পাঁচটায় ঘেনু জেগে উঠে নিজের কাজ শুরু করে দিলো।আমি আগেই বলেছিলাম,পই পই করে সব জিনিস যেন নিরাপদ উচ্চতায় থাকে
  • m | 67.173.95.163 | ০৭ অক্টোবর ২০০৬ ০২:৪৫602725
  • অমৃতা আমার কথায় কান দেয় নি,ওর একটা ছোট জলচৌকি তে কিছু ক্ষুদে ক্ষুদে ঠাকুরের ওপর প্রথমেই টিনটিনের নজর পড়লো,তাদের নিয়ে সে একবার বিছানায় রাখে একবার টেবিলে।তারপর বসার ঘরে গিয়ে সব লন্ডভন্ড-বার দশেক নটি সিটে বসা আর কান মলা খেয়ে ক্লান্ত হয়ে বেলা দশটায় তিনি চান করে আবার নিদ্রায় চলে গেলেন।
    আমরা সকলে আলুর দম-আর রুটি খেয়ে সোফায় গা এলিয়ে দিলাম,অমৃতা অবশ্য নিজে খেলো না,কিছু ক্ষণ পরে আবার পাই নিয়ে সে উপস্থিত হলো।অনেক কষ্টে নিবৃত্ত করলাম।

    কিংশুক আর সৈকত আলস্যে একে অপরের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে,দুজনেই আহার জনিত পরিশ্রমে আবার সোফায় এলিয়ে পড়লো।আমরা শাড়ি পরে তৈরী,অমৃতা অনেক কষ্টে কিংশুক কে পাঞ্জাবি টা পরাতে পারলো,হাফ প্যান্টের ওপর পাঞ্জাবিতে ওদের দুজনের একটা ফোটো সেশান হলো।উজান উঠে একপ্রস্থ কেঁদে রেডি হলো,তখন ঘড়িতে বারোটা বাজতে চলেছে।কোন গাড়িতে যাবো এইটা মনে হতেই গাড়ির চাবির খোঁজ পড়লো,চাবি নেই,কিংশুকের পার্স ও নিপাত্তা।সারা বাড়ি তন্নতন্ন করে সম্ভাব্য-অসম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজা হলো,অমৃতার উত্তেজনার পারদ চড়ছে,কিংশুকের বিশেষ হেলদোল নেই,এদিকে বেলা গড়িয়ে চলেছে।জানা গেলো গাড়ির এক্সট্রা চাবি আছে,কিন্তু পার্সে সমস্ত দরকারি কার্ড,লাইসেন্স- বৌ উত্তেজনায় চীৎকার করছে ,বর তাকে শান্ত ভাবে বলছে,চীৎকার কার্লে কি লাভ আছে?আজ সন্ধ্যে বেলা বাড়ি ফিরে কার্ড গুলো ক্যানসেল করে দেবো।কিংশুকের এই সমাহিত ভাব,অমৃতার একরাশ উৎকন্ঠা আর বিরক্তি নিয়ে আমরা আমাদের গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম,দেখি,অমৃতা চীৎকার করে উঠলো,সামনের সিটে পার্স পড়ে আছে,অমৃতা তখন বর কে যে দু ঘা দিয়ে দিলো না ,এই পরম সৌভাগ্য।রাতে মেন গেট থেকে উনি আমাদের পথ দেখিয়ে বাহ্রি এনে ছিলেন,তখন থেকে ই পার্স সিটে বিরাজমান।(দুজনে আবার রাতে গয়ানার ব্যাগ খুঁজতে এসেছিলো,অমৃতার দাবী,ওরা নাকি বাইরে সিগারেট খেয়ে চলে গেছে,ব্যাগ খোঁজে নি)গাহ্রি চলতে শুরু করতেই দেখি,অমৃতা সলজ্জ মুখে কি একটা সামনে বাড়িয়ে দিচ্ছে,দেখি তাদের গাড়ির চাবি,সেটা অমৃতার ব্যাগেই ছিলো।বৌ এর দাবড়ানি খেয়ে ক্লান্তকিংশুক বৌ কে কিছু ই বল্লো না।
  • m | 67.165.172.170 | ০৭ অক্টোবর ২০০৬ ০২:৫৯602736
  • পুজোর খিচুড়ি খেয়ে ক্লান্ত কিংশুক নাকি উজানের বদলে গাড়িতে চক্কর খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়েছিলো।রাতে বাড়ি ফিরে সৈকত বাদে আমরা তিনজন আবার ভাত খেলাম,আমি আর অমৃতা কিছুক্ষণ তার পরেও গল্প করলাম।
    রবিবার সকালে আমাদের আবার ফেরার তাড়া,ঠিক করলাম পথে সেন্ট লুইসের আর্চ টা দেখে বাড়ি যাবো,এগারোটায় আবার খাওয়া,ভেজ বিরিয়ানি আর পাঁঠার রেজালা-অপূর্ব হয়েছিলো বল্লে কম বলা হবে।দাঁতের পরোয়া না করে খেলাম আর খেয়েই গেলাম।যখন শেষ হলো,তখন আর নড়তে পারি না।এই বার বিদায় নেবার পালা,কিংশুক আর সৈকত মালপত্র গাড়িতে তুললো।দুটো দিন কোথা দিয়ে হুশ করে চলে গেলো,মনে হলো ভালো করে গল্প তো জমেই উঠলো না।ছেলের ও দেখলাম অমলিতা মাসির সঙ্গে বেশ ভাব হয়ে গেছে,কিংশুক কে তার কেবলমাত্র হাতি -টাতি দেখা বা কোনো জাগতিক দরকারে কাজে লাগানো ছাড়া বিশেষ কাছে ঘেঁষতে দিলো না।
    ভারাক্রান্ত মনে আবার গাড়িতে ওঠা,এইবার সে মাসিকে গলা জড়িয়ে আদর করলো।আমাদের এইবারের মত ভাটের এখানেই ইতি।
    এমাসের শেষে বা আগামি মাসের শুরু তে ওরা আমাদের বাড়ি আসবে,এখন তার জন্যে আবার দিন গোনা।
  • A | 70.239.222.212 | ০৭ অক্টোবর ২০০৬ ২৩:৩৯602747
  • শ্রদ্ধেয়া ম মামী,
    আপনি কি রহস্য রোমাঞ্চ গল্প লিখতে ভালবাসেন? "বেড়ানো মজার স্মৃতি" থ্রেডে ডাইমনহাবরা থেকে ফেরার ট্রেনে তাপ্পর কি হল আজ-ও তা রহস্য, তেমনি সেই হারিয়ে যাওয়া গয়না'র বাক্সের কি হল তাও কি অজানা থেকে যাবে?
  • dam | 61.246.152.131 | ০৮ অক্টোবর ২০০৬ ১১:৫৬602758
  • ডাইমনহাবরার গপ্পটা তো পুরোটাই জানি :-))) কিন্তু গয়নার বাক্স কি হল?? শীঘ্র জবাব দাও।
  • A | 70.143.31.79 | ০৯ অক্টোবর ২০০৬ ১৯:৩৬602769
  • কই ডাইমনহাবরা'র গপ্প শেষ কোথায় হল খুঁজে পেলাম না। ১ টা লোক ট্রেনে খৈনী হাতে অধুনা শিকাগো'র বনলতা সেন এর মুখোমুখি জানলায় বসলেন- এইখানেই শেষ দেখছি। এরপর কি হল? বনলতা'র কাঁধে মাথা রেখে সেই ঘুমন্ত যুবকের ঘুম কখন ভাঙ্গলো, ট্রেন কখন শিয়ালদা পৌঁছলো? বাড়ি গিয়ে কি হল ইত্যাদি ইত্যাদি সেই সব কই?
  • m | 67.173.95.163 | ১০ অক্টোবর ২০০৬ ০২:১৯602780
  • A
    আমি পাঁচকড়ি দে র ভাবশিষ্যা তো,সবে হাত পাকাচ্ছি,এরপর দেখবে গল্পের গরু সোজা আ আ আ চাঁদে পৌঁছে যাবে,স্পুটনিক আর গোরু দুই জনে পাশাপাশি বসে এক বাটি বিউলির ডাল নিয়ে সুখ-দু:খের কতা কইবে,তবে না-সে জন্যে একটু সবুর করো।

    আর গয়নার ব্যাগ টার কি হইলো সে তো তুমি ই লিখে দিতে পারতে;-))গাড়ির চাবি আর গয়নার ব্যাগে কাটাকুটি হয়ে যেত।

    দময়ন্তী,
    বাক্স খানি বাড়িতে আমার একখানি জামার উপরে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলো:))
  • dam | 61.2.3.14 | ২৫ অক্টোবর ২০০৬ ১৩:৩৫602791
  • কলিভাটের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ: টুংকাই।
    কলিভাটের শ্রেষ্ঠ চমক: কাবলিদা।

    কাবলিদা ঠিক খুঁজে বার করেছেন আমাদের, আর ইন্ডো একটু থমকাচ্ছিল, কে হতে পারেন ভেবে -- কিন্তু মাথায় ঐ ৩ খানা চুল আর ২৮ থেকে ৩২ এর মধ্যে বুকের ছাতি দেখেই আমি চিনেছি, এ কাবলিদা না হয়ে যান না।

    ঋজু যে বাচ্চা, তা তো জানতামই, তবে সে যে সবসময় হাসে, আর বেশ মিষ্টিমত তা জানা ছিল না।

    "ব" -- যেমন ভেবেছিলাম, সেরকমই মোটকা সোটকা, দেখলেই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। বেশ কিইউউট।

    রাত্রি-- বিশেষ বদলায় নি। তেমনি মিষ্টি আছে।

    সামরান--- বড় চুপচাপ--ক্লান্ত!

    ইন্ডো দেখলাম এট্টু বড় হয়েছে। সেই রবিঠাকুর বলেছিলেন না, যে বয়সে কচি কথাও ন্যাকামি আর পাকা কথাও জ্যাঠামি মনে হয়, ইন্ডো এখন সেই বয়সে আছে।

    বাপ্পাদার পুরুষ্টু গোঁফ গজিয়েছে, সেটা জুলাইতেই দেখে এসেছিলাম, তবে ইন্ডো এইবারে দেখে এট্টু চমকাল মনে হল।

    সুমেরু-- আরো মোটা হয়েছে। বেশ কোঁৎকামত।

    "র" এর প্রাণে বড় দু:খ। ও যখন যেখানে থাকে, সেখানেই কেউ ভাটায় না। এবং গ্‌ন্‌গাবক্ষে নারীবাহিনীর সাথে ভ্রমন নিয়ে সে বেশ ভয়ে আছে।

    মিতাদি আগেরবার প্রচুর আগে ফোন করেছিল। সেটা মেকাপ করতে এবারে অনে-এ-এক পরে করেছে।

    শমীকও ঐ।

    কাবলিদার আনা "উজ্জলা চানাচুর" সুপার্ব। আমার "পানদোষ" নাই, তাই পানটা কেমন ছিল জানি না।

    এবারে সময়াভাবে খ্যাঁটন হয় নাই। উহা জানুয়ারিতে হইবে।
  • Riju | 221.135.212.32 | ২৬ অক্টোবর ২০০৬ ০০:১৫602803
  • স্বভূমি সন্ধ্যে ছটায় ইস্ট গেটে ঢুকতে গিয়ে দেখি সামনে কয়েক জন জটলা করছে।চিনি না কাউকেই (আগে তো কখন কাউকে দেখিনি)।অতএব সাহস করে এক জন বাচ্চা মতম ভদ্রলোক কে জিগ্গেস করলুম "ইন্দ্রনীল ঘোষ দস্তিদার?"(ঐ যে ভাটে শুনেচি ডগদার দা বাচ্চা মতম)।ওমা! সহাস্যমুখে রিপ্লাই এলো "ঋজু?" অত:পর আলাপ পর্ব -পরিচয় হল সুমেরু দা,সামরান দি,রত্রি দি,টুংকাই আর বেশ গুরুগম্ভীর এক ব্যক্তির সাথে যার নাম সোমনাথ। দম দি লেকটাউনের জ্যাম পেরিয়ে একটু দেরী তে এসে পৌঁছোলো।সবাই ঢুকলুম স্বভূমি তে।সিঁড়ি তে উঠতে উঠতে নতুন আরেকজন এসে পড়লেন - বেশ গোলগাল হাসিখুশী মানুষ কাঁধে গোদা মত ব্যাগ - নিজেকে বন্ননা দিলেন 'যা তা' বলে - ইনি ই বোধি দা বা ব দা।অত:পর 'মাটির ভাঁড়ে চা' । বোধি দা আমার পরিচয় পেয়েই বল্ল 'তুমিও আমার মত আইটি সেক্টরের পাপী!জঘইন্য ' :-) বোধিদাকে জিগালুম "তোমার বিশাল ব্যাগে কি ল্যাপটপ?" 'আমার জয়গার খুব অভাব,আমার বৌ তার বাড়ীতে আমায় থাকতে দিয়েচে ওখানেই থাকি।' :-))
    ইতিমধ্যে টুংকাই স্বভূমির চত্তর জুড়ে দৌড়োতে শুরু করে দিয়েছে আর ইন্দো দা পেছু পেছু ছুটছে।রাত্তির দি ইন্দোদাকে বল্ল "তুমি বস ,আমি ওকে সামলাই, একটু ক্যালোরি ও ঝরবে " ব্যস সাথে সাথে দম দির টিপ্পনি "ইন্দোর আর ক্যালোরি ঝরলে ওয়ান ডাইমেন্‌শনাল হয়ে জাবে" । ইতিমধ্যে এসে গেছেন পাজামা পাঞ্জাবী পরিহিত এক বয়স্ক তরুণ বাপ্পা দা।আমার সাথে পরিচয় করেই বল্লেন 'আচ্ছা এই সেই পাঁড় মোহনবাগানী চাটুজ্জে'। জমে উঠলো গপ্পো। সোমু আর আমি সৈকত কুন্ডুর লেখা গান নিয়ে কথা বলছিলুম তারপর ব দার প্রস্তাব সোমু কে টইপত্তরে বিভিন্ন লেখক দের সাহিত্যকীর্তি নিয়ে ডিটেল্‌স স্টাডির।তখন ই সাদা পাজামা পাঞ্জাবী পরা টাক মাথা এক বুড়ো মানুষ এসে উপস্থিত - কাবলি দা। আমি ভাবতেই পারি নি যে মানুষ টি অত দশক ধরে আম্রিগায় ছিলেন তিনি একবারে পাড়ার রকের জ্যেঠুর মত দিলখোলা মিশুকে আড্ডাবাজ ! এবার কাবলি দার আশ্চর্য ঝোলা থেকে একে একে বেরোল গরম চানাচুর মিষ্টি পান ।জমে গেল আড্ডা।এর মধ্যে এলো রঙ্গন্দার ফোন।কলকেতা থেকে লংডং মেতে উঠলো ভাটে।(ক্রমশ:)
  • Arjit | 82.39.106.176 | ২৬ অক্টোবর ২০০৬ ০১:৪৪602814
  • একটা সন্দেহ হচ্ছে, তাই টেস্ট করছি।
  • kali | 160.36.241.41 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ ০০:৪৯602825
  • শুক্কুরবার ৯ই ফেব্রুয়ারী গেছিলাম অ্যাটলান্টা। প্রায় এক বছর ধরে যাবো যাবো বলেই চলেছি দেখে তীর্থ দা ভয়ানক ফ্রাস্টেটেড হয়ে গিয়ে আমায় আল্টিমেটাম দিয়েছিলো যে এবার না এলে এক্কেবারে বাক্যালাপ বন্ধ করেই দেবে। আমার ভয় ও হলো,লজ্জাও।কাজেই রওনা দিলাম ,অবশেষে। পৌঁছোতে হলো প্রায় সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা।

    তীর্থ দা তো বারান্দা থেকে আমাদের গাড়ি দেখতে পেয়েই সটান নেমে এলো,এমন কী আমাদের সুটকেসটাও সে ই বয়ে ওপরে নিয়ে গেলো। ঝলক ঝলক ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছিলো,কিন্তু শীতটা টের পেলাম না, ঘরে ঢোকার আগেও।

    আলাপ হলো কোয়েলী দি'র সাথে।আগে কোনদিন দেখিনি তাকে। কিন্তু কোয়েলী দি'র সহজ হাসিটা দেখেই মনে হলো, সত্যিই কি দেখিনি আগে? বহুদিন ধরেই কি আমাদের আলাপ নেই? আরাম করে বসতে না বসতেই কোয়েলী দি এনে হাজির করলো স্তুপীকৃত গরম গরম শিঙাড়া আর সেই সঙ্গে চমৎকার চা।মানিকবাবুর খুড়োমশাই থাকলে এক ফাঁকে নিশ্চয়ই টুক করে নোট বইয়ে লিখে রাখতেন : 'আড্ডাধারী ভোগ্য চা'-- পথশ্রমজনিত ক্লান্তি হরণকারী,বাকস্ফুর্তি বর্ধক,মজলিশী মেজাজ আনয়ক,আড্ডায় উৎসাহ প্রদায়ী চা।

    আড্ডা এক মূহুর্তেই এক্কেবারে পীকে পৌঁছে গেছে এদিকে। কি নিয়ে যে আড্ডা নয় তাই বলা বরং সহজ। গু-চ এবং ভাটুরেদের প্রতিভা,আশীর দশকের সাথে আজকের হিন্দী সিনেমার গুণগত পার্থক্য,ভিসা আপিসের পরিবর্তনশীল নিয়ম কানুন, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়,কী ওয়েস্ট দ্বীপ..... লিস্টি ফুরোবার নয়।তীর্থ দা'র ঝোলায় যে কত রকম অভিজ্ঞতার গপ্পো আছে,আর তার বলার ভঙ্গী এত সরস, যে আমার মনে হয় একজন ভালো শর্টহ্যান্ড জানা লোক থাকলে ঐ খানে বসেই চমৎকার এক বইয়ের আগা গোড়া প্রুফ লিখে ফেলতে পারতো। নিসান ম্যাক্সিমার কান্ড কারখানা থেকে শুরু করে ভাঙা পা নিয়ে টিকটিকি শিকার.... হায় বাংলা সাহিত্য জানেনা যে কি অমুল্য রম্যরচনার ভান্ডার সে হারাইতেছে।

    ওরই ফাঁকে দেখে নিলাম চ্যাটানুচি জঙ্গলে ক্যাম্পিং এর ভিডিও টেপের একটা টুকরো। আমাদের কোয়েলী দি যে ফিল্ম দিটিং এ দিব্যি পারদর্শী তা জানা হয়ে গেলো এই সুযোগে।

    সময় যে কোথা দিয়ে কতদূর গড়িয়ে যাচ্ছিলো তা আর খেয়ালই ছিলো না।এদিকে গল্পের ফাঁকে ফাঁকেই কোয়েলীদি গরম খাবার সাজিয়ে ফেলেছে। তার রাজকীয় আয়োজন দেখে বুঝলাম যে শিকে আজ পুরোপুরি ছিঁড়েছে। গরম ভাতের সাথে মুগ ডাল,আলু ভাজা,এঁচোড়ের কালিয়া, কইমাছের সর্ষে-নারকেল দিয়ে একটা পদ,চিতল মাছের মুইঠ্যা,চিকেন চেট্টিনাড়,পাঁচ মেশালী ফলের চাটনী।এর মধ্যে কই মাছ ও এঁচোড় তীর্থ দা'র রান্না, বাকি গুলো কোয়েলীদি'র। সে যে কি স্বর্গীয় স্বাদ,তার বর্ণনা করে সবার মনে দু:খু দেবো এমন পাষন্ড আমি নই (ছাই,সে লিখে বোঝানোর ক্ষমতাও আমার নেই কো )। এ হেন রাজসিক ভুরিভোজের পরে আর অমন চমৎকার ওরিও ক্রাস্টের চীজকেকটা খাবার আর জায়গা রইলো না পেটে।

    খাবার পর কোকের গ্লাস হাতে নিয়ে আবার জাঁকিয়ে বসা..... ঘড়ির কাঁটাকে সেরেফ অগ্রাহ্য করে আবার গল্প,এবং আড্ডা,সঙ্গে গল্প, আর আড্ডা.... শেষে রাত দুটো নাগাদ বহু কষ্টে মোহ কাটিয়ে শুতে যাওয়া গেলো।

    পরদিন সকালে আবার আসর শুরু হলো পুরোদমে। সঙ্গে চা, বিস্কুট, চিঁড়ে ভাজা।খানিক পরে আবার এক রাউন্ড কফি। এবারে শুধু গল্পই নয় গানও ছিলো। তীর্থ দা কি ভালো যে গায় তা আর কি বলব!! রবীন্দ্র সঙ্গীত, আধুনিক, লোকগীতি, সব কটাই দুর্দান্ত। সঙ্গে কখনো কী-বোর্ড, কখনো গীটার। অবাক হই ,একটা মানুষের প্রতিভা যে কত মুখী হতে পারে ! এই সময়ে ধৃতিমান ওর অনভ্যস্ত গলায় দু একটা গান করলো, আমি আর কোয়েলী দি নীরব শ্রোতা।

    অ্যাটলান্টার বিখ্যাত ফার্মার্স মার্কেট অনেক দিন ধরে ফুড নেট-ওয়ার্কে দেখে আসছি। সেখানেও একবার ঢুঁ মারা গেলো। খোদ আমেরিকার বুকে মোচা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, তালশাঁস দেখে যারপরনাই আমোদ পেলাম বলাই বাহুল্য। কেনাও গেলো অনেক কিছু, তীর্থ দা-কোয়েলী দির সহায়তায়। বাস্তবিক,এমন গুছিয়ে বাজার করা কালে ভদ্রেই হয়ে ওঠে।

    দুপুরে বাড়ি ফিরে আবার এলাহী খাওয়া দাওয়া। অনেক ক্ষণ ধরে ঘড়ির দিকে না তাকিয়ে তাকিয়ে যাবার সময়টাকে কেবলই পিছিয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু সে ই বা আর কতক্ষণ করা যায়। 'দুটোয় বেরিয়ে পড়বো', 'আচ্ছা, নয় চারটেয়', 'চারটেই যখন হলো, নয় পাঁচটাই বাজুক' এই করে করেও শেষ অব্দি গাঠোরিয়া বাঁধার সময় হয়েই গেলো। কোয়েলী দি ভারী গুছিয়ে রাত্রে খাবার জন্য টিপিন বাক্স ভরে নানা সুখাদ্য দিয়ে দিলো জোর করে।

    বাইরে তখন শিরশির করে হিম হাওয়া দিতে লেগেছে। ভারী শীত করতে লাগলো, সারা মন জুড়ে, ভারী শীত। অন্ধকার হয়ে আসছে। বাঁক ঘুরতেই হাত নাড়ারা মিলিয়ে গেলো। মিলিয়ে যেতে লাগলো অ্যাটলান্টা, আস্তে আস্তে.....ভারী 'তৃপ্তিদায়ক পূর্ণতা' রেখে।

    তীর্থদা,কোয়েলী দি, তোমাদের রাস্তা চেয়ে আছি কিন্তু। শিগ্গিরই আবার দেখা হবে। ঠিক কিনা?

  • kali | 160.36.241.41 | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ ০১:০৫602836
  • ফিল্ম এডিটিং, দিটিং নয়। টাইপো।
  • dd | 122.167.145.13 | ০৭ মার্চ ২০০৭ ১৫:৫০602847
  • এই তো গত হপ্তাতেই গুপি আর ভিকিদা আমার বাড়ীতে রাত্রিবাস কল্লো।

    বাড়ীতে একটা চীনা কি জানি ছিলো। ভিকিদা যে অতো পড়াশুনায় চৌকশ সেও এক ঢোঁকের বেশী খেতে পাল্লো না, গুপিরও পোষালো না অথচ এই শুনি সেও নাকি ফোটোগ্রাফীতে ব্ল্যাক বেল্ট। তা যাগ্গে, চাট্টি রাম আর হুইশকি ছিলো অগত্যা সেগুনো পান করেই রাত বারোটা পজ্জন্তো বক বক বকম বকম।

    দু জনেই চিন্তিত। অত:কিম। গাব্দা কোম্পানীর সি ই ও হবে না হাবার্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর। দুজনকেই এক শহরে থাকতে হবে। আমি পই পই করে বল্লাম সি ই ও না হতে। শুনবে ? পেত্যয় হয় না।

    রাত বারোটায় ভাঁটের দরজা বন্ধ হলো। গুপি বড় গলায় বল্লে "জানেন আমার কিন্তু ভারী ভুলো মন"

    পাছে অবিশ্বাস করি সেজন্য পরের দিন ভোরবেলা টেক্সি করে চলে গ্যালো আমার বাড়ীতে ওর দামী ক্যামেরাটা ফেলে রেখে। হ্যাঁরে ভিকিদা - ওটা পেইচিস ?

    **********

    আর যে ভাঁট হলো নি। পাল্লিন ব্যাঙ্গালুরে এয়েছিলো কিন্তু দেখা হলো নি। ফস্কে গ্যালো।
  • J | 160.62.4.10 | ০৭ মার্চ ২০০৭ ১৬:০৮602858
  • ক্যামেরা? তাও ভালো।
    গুপী তো বিয়ে করতে যাবার আনন্দে আমার বাড়ীতে মোজাজোড়া খুলে রেখে গ্যালো।
  • dd | 58.68.81.3 | ০৭ মার্চ ২০০৭ ২১:৩৪602869
  • আহা !! ছেলেমানুষ গো ।

    ঐ মোজা দুটোয় চগ্লেট,ন্যাবেঞ্চুষ,জলছবি, রং পেন্সিল এইসব ভরেটরে খীসমাসের আগেই পাটিয়ে দিও।
  • S | 122.162.85.1 | ১১ মার্চ ২০০৭ ১২:৪২602880
  • তাং: ১০ই মার্চ্চ ২০০৭ (ইং)

    জমায়েত হবার কথা হয়ে ছিল বে থে-র বাড়ি, মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিলেটেড পার্টি। দময়ন্তী, সুমন-রেশমী-সাম্পান, কল্লোলদা, আর কল্লোলদার এক বন্ধু, জেএনইউতে গরু খুঁজতে থাকা সুস্মিতা।

    কল্লোলদার বাড়ি বে থে-র বাড়ি থেকে খুব বেশি হলে আধঘন্টার দূরত্ব, এগারোটায় ফোং করে জানা গেল কল্লোলদা বেরোচ্ছে, ইদিকে বারোটা বেজে গেল, তার দেখা নাই। ইদিকে সকাল থেকে দেখছি গাজিয়াবাদের ভোল পাল্টে গেছে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলুশ, সাদা পুলুশ, খয়েরি পুলুশ, খাকি পুলুশ, জলপাই পুলুশ ... মানে সে এক পুলিশায়িত ব্যাপার। ভাবলাম বোধ হয় মুলায়ম সিং যাবে টাবে। তখন কল্লোলদার ফোন এল, গাজিপুরে রাস্তা জ্যাম করে দিয়েছে, কী ব্যাপার? না, রাষ্ট্রপতি যাবেন। মাইরি, কেন যে এই সব লোকগুলো রাস্তায় নামে ...

    বিস্তর বিপ্লব শেষে কল্লোলদা সুস্মিতা, ওদিক থেকে দময়ন্তী প্রায় একই সাথে এসে হাজির হল বে থের হাউসিংয়ের মুখে। ঘরে ঢোকা মাত্রই পৌঁছে গেল সুমন রেশমী সাম্পান। ঘড়িতে তখন সাড়ে বারোটা। কিছু কিঞ্চিৎ গল্পগুজবের পরে পরেই খাবার অর্ডার দিয়ে এল বে থে আর ফরিদা, এসে দেখি ঝুলি থেকে বেরিয়েচে ইয়াব্বড়ো এক গিটার। কল্লোলদার গান শুরু হল। মাঝে মাঝে ভাট ইত্যাদিও চলল একই সাথে। সাঁঝ আর সাম্পানের বন্ধুত্ব হতেও খুব বেশি সময় লাগল না, সদ্য কুয়েতফেরৎ রেশমী তাদের সাথে দিব্যি জমে গেল।

    তারপর খাওয়া, তারপর আবার গান। মাঝে বে থে দু একবার গাইবার চেষ্টা করে বিস্তর লোক হাসালো, প্রথমে সবাই ভেবেছিল বে থে বিনয় করে বলছে, 'না ভাই, আমি গাইতে পারি না'। গান শুনে সব্বাই খুব সিরিয়াস হয়ে রায় দিল, বে থে মোটেই বিনয় করে নি।

    ছবি কিছু কিঞ্চিৎ দময়ন্তী পাঠিয়েছে, আমিও কিছু পাঠাবো, আর ভিডিও তুলে দেব আজ রাতে।
  • d | 122.162.103.226 | ১২ মার্চ ২০০৭ ০৮:৫৭602891
  • না না আমরা মোটেই বে থের সাথে একমত হই নি। বে থে মোটামুটি ভালই গায়। দিব্বি তবলা বাজায়। বে থের দেখাদেখি সুমনও তবলা বাজানোর চেষ্টা করেছিল, ঢোলের স্টাইলে, কাজেই দিব্বি জমেছিল - একথা বলাই যায়। তবে সত্যের খাতিরে আমি একথা বলতে বাধ্য যে বে থের চেয়েও সাঁঝ বেশী ভাল গায়।
  • S | 122.162.85.44 | ১২ মার্চ ২০০৭ ১১:০০602902
  • তবে একটা জিনিস বোঝা গেল, দময়ন্তীর থেকে গুড়গাঁওয়ের রাস্তা বে থে ভালো চেনে। ;-)
  • Arjit | 128.240.233.197, 128.240.229.3 | ১২ মার্চ ২০০৭ ১৫:১২602914
  • ছবিতে ক্যাপশন নাই কেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন