এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • ভাটিয়ালি

  • এ হল কথা চালাচালির পাতা। খোলামেলা আড্ডা দিন। ঝপাঝপ লিখুন। অন্যের পোস্টের টপাটপ উত্তর দিন। এই পাতার কোনো বিষয়বস্তু নেই। যে যা খুশি লেখেন, লিখেই চলেন। ইয়ার্কি মারেন, গম্ভীর কথা বলেন, তর্ক করেন, ফাটিয়ে হাসেন, কেঁদে ভাসান, এমনকি রেগে পাতা ছেড়ে চলেও যান।
    যা খুশি লিখবেন। লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়। এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই। সাজানো বাগান নয়, ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি। এই হল আমাদের অনলাইন কমিউনিটি ঠেক। আপনিও জমে যান। বাংলা লেখা দেখবেন জলের মতো সোজা। আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি।
  • গুরুভার আমার গুরু গুরুতে নতুন? বন্ধুদের জানান
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অপু | 162.158.166.58 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:৫২431550
  • কিন্তু g তোমাকে ঠিক চিনতে পারছি নি। একটু হিন্টস দাও প্লিজ :))
  • অপু | 162.158.166.58 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:৪৮431549
  • এলসিএম দা, ধন্যযোগ।
  • অপু | 162.158.166.58 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:৪৭431548
  • g, না না টন্ট করি নি। টন্ট করার কোন যোগ্যতা ই আমার নেই। লিখলাম না কবিতা বুঝতে পারি না। তবে শিখতে চাই। খুব মনযোগী ছাত্র।
    বিভিন্ন বিষয়ে এত কিছ জানতে পারি বলেই গুরুর পাতায় আসা।

    "হঠাৎ দেখা" অত্যন্ত প্রিয় কবিতা।
    হৃদয়ের খুব কাছাকাছি। তাই জানতে চাইছিলাম এর অন্য কোন অর্থ আছে কিনা ?

    আর "সমর সেন" র গল্প পুরোনো। বিবেকানন্দের সাথে এর পারফেক্ট নেগেটিভ কোরেলেশন। :)))
  • g | 172.69.134.14 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:৪৬431547
  • লহমা কে কোনো পোস্টে কেই অনাধিকারী মনে হয় নি। কাউকেই (নিজেকে সহ) অধিকারী ও মনে হয় নি। ইন ফ্যাক্ট আমার তো আপনার পোস্টে অসম্ভব সেনসিবল লাগে ছিল।
  • o | 172.69.22.205 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:৪১431546
  • আসলে কিছু না, বই নিয়ে গপ্পো করার বিশেষ জায়গা নেই জীবনে। সেদিক থেকে গুরুতে একটা স্পেস পাওয়া গেছে। এই আর কি! ঃ-))) জীবনানন্দের আর সবকিছু ছেড়ে স্রেফ পড়ার পরিধি ভাবলেই রোমাঞ্চ জাগে। 'বিভা' নভেলাটিতে সাহিত্যে অশ্লীলতার একটি ডিসকোর্স উপস্থিত করছেন। সেখানে এলিজাবেথ লোমন্ডের 'আই হ্যাভ বিন ইয়ং' বলে একটি ফেমিনিস্ট উপন্যাসের কথা বলছেন। কে এই লোমন্ড? আমি জানি না। গুগল করে মনে হয় ওয়ান বুক অথর। ভদ্রলোক এইসব সেসময়ে বসে বসে পড়েছিলেন। জীবনানন্দের বেশীরভাগ মেয়ে চরিত্ররা প্রচুর বই পড়ে। এও সেসময়ের লেখকদের লেখায় তেমন দেখিনা। 'কল্যাণী'-তে দেখুন কল্যাণী ধমক খাচ্ছে বাবার কাছে ফরাসী উপন্যাস পড়ার জন্য। নানারকম বইয়ের কথা বারবার এসেছে। ডিকেন্স তো ভারী প্রিয় ছিল বোধহয়। কারুবাসনাতে আছে, আলমারিতে সাজানো ডিকেন্সের বই দেখে একটি নেগেটিভ ধরনের চরিত্র বলছে 'কে হে এই রত্নটি, যার ভোগের থালা দিয়ে তাকখানা সাজিয়ে রেখেছ।' এসব আশ্চর্য ডার্ক হিউমরে জীবনানন্দ ভর্তি। :-)
  • g | 162.158.167.193 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:২৮431545
  • জীবনানন্দ কে শুধুই একটি কবি মনের সীমাহীন -কল্পনা ধরে নিলে , তার ইউরোপীয় সাহিত্যে সযত্ন প্রশিক্ষণ টি কে এবং প্রভূত রেফারেন্স কে অস্বীকার করা হয়। সি এস এর সঙ্গে একেবারেই এক মত।

    সি এস মাইরি, এটা বলে ভালো করলে , আমি জীবনান্দের বিশ্ব সাহিত্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা কে আমার পোস্টে গুলোতে অন্য ইস্যু আড্রেস করতে গিয়ে আভয়েড করে ফেলেছি।

  • | 172.68.146.91 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:২০431544
  • ও র পোস্টে খুব সুন্দর লাগলো। আমা রো মনে হয়েছে, জীবনান্দের গদ্য হয় আসলে একটা আধুনিকতার ইনএভিটেবল ইমরালিটি কে আভয়েড করার কল, নতুবা গদ্যে বাপু ম্যাজিক চলবে না এরকম একটা প্রি কনসিভড ডিকেনসিয়ান রিয়েলিজম এর বারণ মতো আছে। কিন্তু তাতেই কাকু যা কাপিয়ে গেলেন, এখনো কেঁপে চলেছি।

  • g | 172.69.134.248 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:১১431543
  • ব্রতীন , কবিতা র পাঠক আমিও নই। আমার কোবিতা ভালো লাগে না। কিন্তু জীবনানন্দ কে বাদ দিয়ে, আমি বাংলা ভাষা ভালোবাসি বলাটা প্রথম কবিতা টা পড়ার পর থেকেই কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো, জীবনানন্দ সত্যি বিংশ শতকীয় আধুনিকতার প্রথম সিরিয়াসলি বাংআলি অথেন্টিক ভয়েস। তাছাড়া আমার সোশাল হিস্টরি তে আগ্রহ ছিল বলে, আমার দুটো জিনিস জাস্ট আশ্চর্য্য লাগতো, রবীন্দ্রনাথের পরে, কতখানি ভাবনার ইন্ডিপেন্ডেন্স থাকলে কল্লোল যুগ, বুদ্ধদেব বসু র কবিতা ভবন বা জীবনানন্দ হয়। এটা আমার খানিকটা মার্ক্সবাদী এস্থেটিক্স প্রভাবিত না হলেও ফ্রান্ন্কফুর্ট স্কুল প্রভ্বাবিত অবস্থান বলতে পারিশ , (থিয়োরী পড়েছি অনেক পরে, কিন্তু পরে প্লেস কোরেছি লিটেরারি ক্রিটিসিজম ধারাটা) এর সংস্কৃতি শুধু হিস্টরি অফ আইডিয়ার না, তাকে সোশাল হিস্টরি র এভিডেন্স হিসেবে দেখি, এই জন্যেই শুধু টেক্স্চুয়াল অ্যানালিসিস কে সীমাবদ্ধ লাগে। একটা লেখা পোরে একটা মোমেন্ট অফ রিভিলেশন এর সম্ভাবোনা, বা হিউমান ট্রান্সফর্মেশনের ম্যাজিকের সম্ভাবনা কে অশ্রদ্ধা না করেই বলছি, আধুনিক সাহিত্যের মূল অবস্থান টাই হলো, কনটেম্পোরারি কে অ্যাড্রেস করা, এবঙ্গ সেভাবে জ্ঞানচর্চার এমনকি অনুভূতির স্যাংকটিটি কে চ্যালেঞ্জ কোরা। এমোনকি গভীর ইন্ট্রোস্পেকটিভ লেখার ক্রাফ্ট ও কন্টেম্পোরারি র প্রতিক্রিয়া মাত্র।

    আর বাকি যে টন্ট গুলো করছিস বা আসছে, তাতে বিচলিত হচ্ছি না। আউটসাইডার হিসেবে যে কোনো সাবজেক্ট পড়ার মোটামুটি স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি হলো, সেই সাবজেক্ট এর কন্টেম্পোরারি ডিবেট কে ধরে সাবজেক্ট টার চলন বোঝা। বিজ্ঞানচর্চায় এটা স্বাভাবিক বলে ধরা হয়, কিন্তু ইতিহাস , সাহিত্য বা সোশাল সায়েন্স বা লিবেরাল , অ-আর্ট্স পড়ার ক্ষেত্রে অ-প্রশিক্ষিত দৃষ্টিভংগী থেকে পড়ার সময়ে তার কোন প্রয়োজন আছে বলে মোনেই করা হয় না। একটা টেক্স্ট সব শব্দের মানে বোঝা যাচ্ছে, অতএব পড়ে আলো , শান্তি, হোমিওপ্যাথি ইন্টারপ্রেট করাটাকেই শিক্ষিত ভাবনার সআধীনতা বলে মনে করা হয়। এটা টেকনোক্রাটিক একটা চিন্তা, এ মানে বোহুবার বলেছি। তাই টন্ট্স এ অবস্থান বদলাচ্ছে না।

    আর শেষ দিকটা হল, প্রতিযোগিতা মূলক আলোচনা, যে কোনো আলোচনা কেই একটা রোড শো হিসেবে দেখা, কুস্তি হিসেবে দেখা। সেটার থেকেই টন্ট গুলো আসে, বা ইরেলিভান্ট শর্ট নোট লেখা হয় ভাটে, এটাও নতুন কিসু না।

    আমি ফ্রাংকলি জীবনানন্দ র মতো বড় আর্টিস্ট কে বোঝার যোগ্যতা রাখি না, কিন্তু তাঁর লেখা কতগুলো অদ্ভুত আগু পাছু হীন চিত্র কল্প মাত্র নয়, এটুকু বোঝার মত প্রশিক্ষন গ্রহণ কোরেছি। সময় লেগেছে।
  • lcm | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:০৫431542
  • বোতিন,
    একটা বেসিক কবিতা দিয়ে শুরু করো
    ------
    গাব্বু (তারাপদ রায়)

    আমি জানি গাব্বু ছাড়া আর কেউ লেখেনা কবিতা।
    আমি জানি গাব্বু ছাড়া আর কেউ পড়েনা কবিতা।
    আমি জানি গাব্বু ছাড়া আর কেউ বোঝেনা কবিতা।
    আমি জানি গাব্বু ছাড়া আর কেউ শোনেনা কবিতা।

    গাব্বুই গাব্বুর জন্য লিখে যায় গাব্বু-গাব্বু অসংখ্য কবিতা।
    গাব্বুই গাব্বুর সব ভাই-বন্ধু বড় বাবু মাতা কিংবা পিতা।
    গাব্বুর কিছুই নেই শুধু আছে গাব্বু গাব্বু অসংখ্য কবিতা।
    গাব্বুই গাব্বুর জন্যে রেখে যায় গাব্বু-গাব্বু অসংখ্য কবিতা।

    আমি জানি, সবজানি গাব্বুদের গাব্বু-গাব্বু সমস্তই জানি।
    আমি জানি গাব্বু ছাড়া কবিতার বন্ধু নেই সমস্তই জানি।
    কিন্তু আমি এখনো জানি না কিন্তু, আমি কিন্তু এখনো জানি না?
    গাব্বু শব্দের মানে, কোনো মানে, প্রকৃতই কোনো অর্থ আছে কিনা?
    --
    আর এই হল কবিতার টই - https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=11756

    বাই দ্য ওয়ে, এই টইতে দেখলাম তোমার কমেন্ট রয়েছে, কবিতা পড়ে তোমার ভাল লেগেছে বলে পোস্ট করেছ - সুতরাং, অলরেডি তোমার অভ্যেস আছে, z-আনতি পারো নি
  • অপু | 172.68.146.169 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৪৫431541
  • :))))

    আচ্ছা আটোজ। আমাকে কবিতা পড়ার অভ্যেস করতে হবে। বেটার লেট দ্যান নেভার ।

    আচ্ছা "হঠাৎ দেখা" কিএকমাত্রিক কবিতা? একে কি কবি হারিয়ে যাওয়া কিন্তু ভুলতে না পারা প্রেম হিসেবে দেখিয়েছেন। নাকি কোন গভীরতর ব্যঞ্জনা আছে?
  • Atoz | 162.158.186.23 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৩৮431540
  • কিন্তু অপু, কবি কী ভেবে লিখেছেন তা দিয়ে পাঠক কেন লিমিটেড হবে? সে তার নিজের মন অনুযায়ী কল্পনা করে নেবে বা বুঝে নেবে। তবেই তো কবিতা পল্লবিত হয়ে উঠবে, নতুন অর্থ পাবে। তাই নয়?
    (সেই যে প্রোডিউসার বসে বসে বাদাম ফাটিয়ে খাচ্ছিলেন, সিনেমায় তখন শব্দ জোড়া হচ্ছে, সেই বাদামফট গুলির শব্দ হিসেবে সিনেমায় ঢুকে গেল, ওটা আর সরানো হয় নি। কিন্তু সিনেমা-বোদ্ধারা বহুরকম উচ্চমার্গের ব্যাখা করেছেন কেন ওখানে গুলির শব্দ! ঃ-) )
  • অপু | 172.68.146.169 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৩৮431539
  • একটা কাজের কথা। আমার গাড়ির ইন্স্যুরেন্স প্রতিবার ই Dewars garrage করিয়ে দেয়। মারুতি ইন্স্যুরেন্স। বাড়িতে এসে চেক নিয়ে যায়। আমি যথারীতি এ ব্যাপারে এখন অবধি চাপ নিই নি। কিন্তু গত কয়েক বছর দেখছি
    ইন্স্যুরেন্স মনোটনিক্যালি ইনক্রিসি ং
    ফা ংশন (স্ট্রিক্টলি)।

    সস্তায় পুষ্টিকর কোন ইন্স্যুরেন্স সাজেস্ট করতে পারেন?
  • Atoz | 162.158.186.23 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৩৩431538
  • ওরা চিংড়ি খায় না? রাশিয়ানরা? ঃ-)
  • অপু | 162.158.166.160 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৩১431537
  • আমি মূলত বা ংলা লেখা পড়ি। সব ধরনের লেখা ই। কিন্তু
    কবিতা খুব একটা পড়া হয় নি বা বলা ভালো সুবিধে করতে পারি নি। কবিতার ইন বিটুইন লাইনস আমি ঠিক অনুধাবন করতে পারি না। কবি যা ভেবে লিখেছেন সেটি ঠিকঠাক বুঝতে না পারলে কি কবিতা পড়া সার্থক হবে? আমি জানি না।

    আমার মনে হয় কবিতা পড়া একটা অভ্যাস। পড়তে পড়তে এর প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। আর এর রুপ রস গন্ধের সঠিক মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়।
  • o | 172.68.142.214 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৩০431536
  • রাশিয়ার চিংড়িটা জাস্ট টু গুড! ঃ-)))
  • | 172.68.146.169 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:২৬431535
  • *রাশিয়ার চিঠি, অবশ্য ই রাশিয়ার চিংড়ি না।
    **জীবনানন্দ গুঁতো মেরে বা়ংলা সাহিত্য কে দূই যুদ্ধে র
    র মধ্যবর্তী সময়ে নিয়ে 'আসছেন'। অন্যান্য রবীন্দ্র পরবর্তী ইপোক অতিক্রম করে।বলা যেতে পারে জীবনানন্দ ই যুদ্ধ পরবর্তী আমাদের আধুনিকতার প্রথম বাঙালি অথেনটিক উচ্চারণ।
  • Atoz | 162.158.187.86 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:২৩431534
  • না না অপু, সেইজন্যেই তো ঢাল নিয়ে খাড়া আছি আড়ালে। জীবনের স্রোতে ভাসিয়ে দেবো। ঃ-)
  • অপু | 172.68.146.187 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:২২431533
  • যা ভয় পাচ্ছিলাম ঠিক তাই হল মানে বিদগ্ধ আর বিস্মৃত কবিশ্রেষ্ঠ সমর সেন চলে এলেন আলোচনায়। এরপরে
    হয়তো অচিরেই ওনার লেখা আমরা দেখতে পাবো গুরুর পাতায়। "শেষের সেদিন" কী ভয়ঙ্কর। :)))))
  • Atoz | 162.158.187.86 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১৪431532
  • "মনিয়ার ঘরে রাত", এই মনিয়া যে কে, সেই নিয়ে একটা নেশ ইন্টারেস্টিং লেখা পড়ছিলাম কিছুদিন আগে।
  • o | 172.68.141.81 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১৩431531
  • একটা কথা বারবার মনে হয়। জীবনানন্দের উপন্যাস পড়লেই চোখে পড়ে লম্বা লম্বা সংলাপ। কথা, কথা আর শুধু কথা। কেবল 'নিরুপম যাত্রা' নামের নভেলাটি বাদ দিলে প্রায় সব উপন্যাসে সংলাপের একটা বিরাট উপস্থিতি। কিন্তু কেন? ক্রমাগত স্বাভাবিক একেবারে মুখের ভাষায় সমস্ত অসাবধান শব্দ ও পদের ব্যবহার সমেত সংলাপ লেখবার চেষ্টা করেছেন লেখক। অথচ তাঁর সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উন্মোচনের কাজে ব্যবহৃত হয় না। চরিত্রেরা কেবল ঘুরে ঘুরে জলের মত কথা বলে চলে। য্যানো সব সংলাপ শেষপর্যন্ত সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে দাঁড়ায়। এইটে আসলে তাঁর টেকনিক।

    যেকোনো ফিকশনকে যদি এভাবে দেখি যে তা আসলে চরিত্রগুলোর প্রাথমিক অবস্থান থেকে অন্তিম অবস্থানে পৌঁছনোর ট্র্যাজেকটরি, তাহলে সনাতন সাহিত্যতে আমরা এই ট্র্যাজেকটরিটি নিপুণভাবে আঁকবার একটি প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করি। যেমন ধরুন শরৎচন্দ্র। তাঁর চরিত্ররা ঘটনা ঘটায়। ঘটনা তাদের মনোজগতে ছাপ ফ্যালে। তারা আবার প্রত্রিক্রিয়া দেখায়। এভাবে ট্র্যাজেকটরিটি নির্মিত হয়। এই রিয়ালিজমের ওপর সারা পৃথিবীর ক্লাসিক সাহিত্য দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আধুনিক পৃথিবী এত জটিল হয়ে উঠল যে এভাবে সাহিত্যের পক্ষে খুব বেশি গভীরে যাওয়া দুরুহ হয়ে দাঁড়াল। ফলে ঘটনাক্রম সাজিয়ে লেখা গল্পের বদলে শুধু ঘটনার আভাস রচনা করার একটা ধারা তৈরী হল, যেখানে চরিত্রদের অ্যাকশন ও রিয়াকশনের ডিটারমিনিস্টিক ছকটিকে সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করা হল। কাফকার মেটামরফোসিসে পাঠকের আর বোঝবার কোনো উপায় রইল না কেন গ্রেগর সামসা পোকা হয়ে গেল। এইটা আমরা জীবনানন্দের মধ্যে পাই ব্যর্থ সংলাপের ভেতর দিয়ে। মানিকের 'পদ্মানদীর মাঝি' পড়লে প্রায় ফ্রয়েড ধরে ধরে চরিত্রগুলির রিয়াকশন সাজানোর যে প্রচেষ্টা লক্ষ্য করি, জীবনানন্দে তা একেবারে অনুপস্থিত। বোধহয় জল্পাইহাটিতেই 'ফ্রয়েড কী বুঝবেন, উনি তো স্রেফ রোগীদের কফি খাইয়ে গল্প জুড়তেন' এরকম ধরনের একটা কথা আছে। একটা অদ্ভুত মরবিড জগতের ভেতর বসে মাল্যবান আর উৎপলা অজস্র অজস্র কথা বলে যায়। অথচ মাল্যবান আসলে কীরকম বা উৎপলা কীরকম সেটা পাঠকের ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়।

    আরেকটি অদ্ভুত লেখা সুতীর্থ। সুতীর্থ সম্পর্কে আলোচনা পড়ে আমি দেখেছি এটাকে ব্যর্থ উপন্যাস বলা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে মাল্যবান তবু কিছুটা দুঃখী-দুঃখী বলে পাঠকের মনে দাগ কাটে, সুতীর্থ ওরকম নয়। এ খুবই বিচিত্র সমালোচনা, কিন্তু আমি সত্যিই জানি না সুতীর্থ সার্থক না ব্যর্থ উপন্যাস। সুতীর্থকে য্যানো একেবারেই বোঝা যায় না। তার জটিল মনোজগতের একটা আভাস পাওয়া যায় মাত্র। বাসমতীর উপাখ্যান পড়লে দেখা যায় কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ও এক ছাত্রীর মধ্যে লম্বা একটা সংলাপ। তার মধ্যে অবদমিত যৌনতা, অন্তর্লীন ক্ষমতার স্ট্রাকচার সবই এসেছে, অথচ আসলে তারা কী বলতে চায় তার স্রেফ আভাস মেলে মাত্র। সচরাচর তারা যা বলতে চায়, আসলে তা বলে না। আসলে জীবনানন্দের সব সংলাপ ব্যর্থ।

    না বললে পাপ হবে, এই আভাস রচনা করবার খেলা আরেকজন খেলেছেন খুব মন দিয়ে। তিনি কোর্তাজার। এই খেলার নানারকম টেকনিক পরীক্ষা করে দেখেছেন ভদ্রলোক। অবশ্য একটু ফিলোজফিক্যালি। 'অ্যাক্সলটল'-এ দেখুন একটা লোক রোজ অ্যাকোরিয়ামে গিয়ে পায়ে হাঁটা মাছেদের দ্যাখে এবং একদিন সে নিজেই একটা পায়ে হাঁটা মাছ হয়ে যায়। 'স্টোরি উইথ স্পাইডারস'-এ দেখি দুজন মানুষ সমুদ্রতীরে বাংলোতে নির্জন ছুটি কাটাতে গিয়ে দ্যাখে পাশের ঘরে দু'টি মেয়ে উঠেছে। দেয়ালের এপাশ থেকে মেয়েদুটির ফিসফিসানি শুনতে শুনতে অবসেসড মানুষদুটি মাকড়সায় পরিণত হয়। 'উই লাভ গ্লেন্ডা সো মাচ', তাতেও একদল ফ্যান প্রিয় অভিনেত্রীকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই যে মরবিড জগত কাফকার বা কোর্তাজারের বা জীবনানন্দের, এ য্যানো সাহিত্যের সমস্ত গুরুদায়িত্বকে ঠাট্টা করতে করতে ঢুকে পড়ে গভীর অন্ধকারের ভেতর।
  • Atoz | 162.158.187.86 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১২431530
  • কুড়ি বছর পরে

    আবার বছর কুড়ি পরে তার সাথে দেখা হয় যদি!
    আবার বছর কুড়ি পরে—
    হয়তো ধানের ছড়ার পাশে
    কার্তিকের মাসে—
    তখন সন্ধ্যার কাক ঘরে ফেরে— তখন হলুদ নদী
    নরম-নরম হয় শর কাশ হোগলায়— মাঠের ভিতরে।

    অথবা নাইকো ধান খেতে আর;
    ব্যস্ততা নাইকো আর,
    হাঁসের নীড়ের থেকে খড়
    পাখির নীড়ের থেকে খড়
    ছড়াতেছে; মনিয়ার ঘরে রাত, শীত আর শিশিরের

    জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার—
    তখন হঠাৎ যদি মেঠে পথে পাই আমি তোমারে আবার!

    হয়তো এসেছে চাঁদ মাঝরাতে একরাশ পাতার পিছনে
    সরু-সরু কালো-কালো ডালপালা মুখে নিয়ে তার,
    শিরীষের অথবা জামের,
    ঝাউয়ের— অামের;
    কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে!

    জীবন গিয়েছে চ’লে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার—
    তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!

    তখন হয়তো মাঠে হামাগুড়ি দিয়ে পেঁচা নামে—
    বাবলার গলির অন্ধকারে
    অশথের জানালার ফাঁকে
    কোথায় লুকায় আপনাকে!
    চোখের পাতার মতো নেমে চুপি কোথায় চিলের ডানা থামে—

    সোনালি-সোনালি চিল— শিশির শিকার ক’রে নিয়ে গেছে তারে—
    কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে!
  • Atoz | 162.158.187.86 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১১431529
  • শিকার

    ভোর;
    আকাশের রং ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল:
    চারিদিকের পেয়ারা ও নোনার গাছ টিয়ার পালকের মতো সবুজ।
    একটি তারা এখনও আকাশে রয়েছে:
    পাড়াগাঁর বাসরঘরে সব চেয়ে গোধূলি-মদির মেয়েটির মতো;
    কিংবা মিশরের মানুষী তার বুকের থেকে যে-মুক্তা আমার নীল মদের
    গেলাসে রেখেছিলো
    হাজার-হাজার বছর আগে এক রাতে— তেম্নি—
    তেম্নি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও।

    হিমের রাতে শরীর ‘উম্’ রাখবার জন্য দেশোয়ালীরা সারারাত মাঠে
    আগুন জ্বেলেছে—
    মোরগ ফুলের মতো লাল আগুন;
    শুকনো অশ্বত্থপাতা দুমড়ে এখনও আগুন জ্বলছে তাদের;
    সূর্যের আলোয় তার রং কুঙ্কুমের মতো নেই আর;
    হ’য়ে গেছে রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো।
    সকালের আলোয় টলমল শিশিরে চারিদিকের বন ও আকাশ ময়ূরের
    সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছে।

    ভোর;
    সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে-বাঁচিয়ে
    নক্ষত্রহীন, মেহগনির মতো অন্ধকারে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে ঘুরে-ঘুরে
    সুন্দর বাদামী হরিণ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিলো।

    এসেছে সে ভোরের আলোয় নেমে;
    কচি বাতাবী লেবুর মতো সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিঁড়ে-ছিঁড়ে খাচ্ছে;
    নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামলো—
    ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল শরীরটাকে স্রোতের মতো একটা আবেগ দেওয়ার জন্য;
    অন্ধকারের হিম কুঞ্চিত জরায়ু ছিঁড়ে ভোরের রৌদ্রের মতো একটা বিস্তীর্ণ
    উল্লাস পাবার জন্য;
    এই নীল আকাশের নিচে সূর্যের সোনার বর্শার মতে জেগে উঠে
    সাহসে সাধে সৌন্দর্যে হরিণীর পর হরিণীকে চমক লাগিয়ে দেবার জন্য।

    একটা অদ্ভুত শব্দ।
    নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল।
    আগুন জ্বললো আবার— উষ্ণ লাল হরিণের মাংস তৈরি হ’য়ে এলো।
    নক্ষত্রের নিচে ঘাসের বিছানায় ব’সে অনেক পুরানো শিশিরভেজা গল্প;
    সিগারেটের ধোঁয়া;
    টেরিকাটা কয়েকটা মহিষের মাথা;
    এলোমেলো কয়েকট বন্দুক— হিম– নিঃস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম।
  • Atoz | 162.158.187.86 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১০431528
  • আট বছর আগের একদিন

    শোনা গেল লাসকাটা ঘরে
    নিয়ে গেছে তারে;
    কাল রাতে— ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
    যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ
    মরিবার হ’লো তার সাধ;

    বধূ শুয়েছিলো পাশে— শিশুটিও ছিলো;
    প্রেম ছিলো, আশা ছিলো— জ্যোৎস্নায়– তবু সে দেখিল
    কোন্ ভূত? ঘুম কেন ভেঙে গেল তার?
    অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল— লাসকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার।
    এই ঘুম চেয়েছিলো বুঝি!
    রক্তফেনামাখা মুখে মড়কের ইঁদুরের মতো ঘাড় গুঁজি
    আঁধার ঘুঁজির বুকে ঘুমায় এবার;
    কোনোদিন জাগিবে না আর।

    ‘কোনোদিন জাগিবে না অার
    জানিবার গাঢ় বেদনার
    অবিরাম— অবিরাম ভার
    সহিবে না আর—’
    এই কথা বলেছিলো তারে

    চাঁদ ডুবে চ’লে গেলে— অদ্ভুত আঁধারে
    যেন তার জানালার ধারে
    উটের গ্রীবার মতো কোনো এক নিস্তব্ধতা এসে।

    তবুও তো পেঁচা জাগে;
    গলিত স্থবির ব্যাং আরো দুই মুহূর্তের ভিক্ষা মাগে
    আরেকটি প্রভাতের ইশারায়— অনুমেয় উষ্ণ অনুরাগে।

    টের পাই যূথচারী আঁধারের গাঢ় নিরুদ্দেশে
    চারিদিকে মশারির ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা;
    মশা তার অন্ধকার সঙ্ঘারামে জেগে থেকে জীবনের স্রোত ভালোবাসে।

    রক্ত ক্লেদ বসা থেকে রৌদ্রে ফের উড়ে যায় মাছি;
    সোনালি রোদের ঢেউয়ে উড়ন্ত কীটের খেলা কতো দেখিয়াছি।

    ঘনিষ্ঠ আকাশ যেন— যেন কোন্ বিকীর্ণ জীবন
    অধিকার ক’রে আছে ইহাদের মন;
    দুরন্ত শিশুর হাতে ফড়িঙের ঘন শিহরণ
    মরণের সাথে লড়িয়াছে;
    চাঁদ ডুবে গেলে পর প্রধান আঁধারে তুমি অশ্বত্থের কাছে
    এক গাছা দড়ি হাতে গিয়েছিলে তবু একা-একা;
    যে-জীবন ফড়িঙের, দোয়েলের— মানুষের সাথে তার হয়নাকো দেখা
    এই জেনে।

    অশ্বত্থের শাখা
    করেনি কি প্রতিবাদ? জোনাকির ভিড় এসে সোনালি ফুলের স্নিগ্ধ ঝাঁকে
    করেনি কি মাখামাখি?
    থুরথুরে অন্ধ পেঁচা এসে
    বলেনি কি: ‘বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে
    চমৎকার!

    ধরা যাক দু-একটা ইঁদুর এবার!’
    জানায়নি পেঁচা এসে এ তুমুল গাঢ় সমাচার?

    জীবনের এই স্বাদ– সুপক্ব যবের ঘ্রাণ হেমন্তের বিকেলের–
    তোমার অসহ্য বোধ হ’লো;
    মর্গে কি হৃদয় জুড়োলো
    মর্গে— গুমোটে
    থ্যাঁতা ইঁদুরের মতো রক্তমাখা ঠোঁটে।

    শোনো
    তবু এ মৃতের গল্প; কোনো
    নারীর প্রণয়ে ব্যর্থ হয় নাই;
    বিবাহিত জীবনের সাধ
    কোথাও রাখেনি কোনো খাদ,
    সময়ের উদ্বর্তনে উঠে এসে বধূ
    মধু— আর মননের মধু
    দিয়েছে জানিতে;
    হাড়হাভাতের গ্রানি বেদনার শীতে
    এ-জীবন কোনোদিন কেঁপে ওঠে নাই;
    তাই
    লাসকাটা ঘরে
    চিৎ হ’য়ে শুয়ে আছে টেবিলের ’পরে।

    জানি— তবু জানি
    নারীর হৃদয়— প্রেম— শিশু— গৃহ– নয় সবখানি;
    অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতা নয়—
    আরো-এক বিপন্ন বিস্ময়
    আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
    খেলা করে;
    আমাদের ক্লান্ত করে

    ক্লান্ত— ক্লান্ত করে;
    লাসকাটা ঘরে
    সেই ক্লান্তি নাই;
    তাই
    লাসকাটা ঘরে
    চিৎ হ’য়ে শুয়ে আছে টেবিলের ’পরে।

    তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি, আহা,
    থুরথুরে অন্ধ পেঁচা অশ্বত্থের ডালে ব’সে এসে
    চোখ পাল্টায়ে কয়: ’বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে?
    চমৎকার!
    ধরা যাক্ দু-একটা ইঁদুর এবার—’

    হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
    আমিও তোমার মতো বুড়ো হবো— বুড়ি চাঁদটারে আমি ক’রে দেবো
    কালীদহে বেনোজলে পার;
    আমরা দু-জনে মিলে শূন্য ক’রে চ’লে যাবো জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার।
  • Atoz | 162.158.187.86 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:০৯431527
  • আমিও বেশ কিছু রেখে যাই। এখানে পড়া যাবে। ঃ-)
    নগ্ন নির্জন হাত

    আবার আকাশে অন্ধকার ঘন হ’য়ে উঠছে:
    আলোর রহস্যময়ী সহোদরার মতো এই অন্ধকার।

    যে আমাকে চিরদিন ভালোবেসেছে
    অথচ যার মুখ আমি কোনোদিন দেখিনি,
    সেই নারীর মতো
    ফাল্গুন আকাশে অন্ধকার নিবিড় হ’য়ে উঠছে।

    মনে হয় কোনো বিলুপ্ত নগরীর কথা
    সেই নগরীর এক ধূসর প্রাসাদের রূপ জাগে হৃদয়ে।

    ভারতসমুদ্রের তীরে
    কিংবা ভূমধ্যসাগরের কিনারে
    অথবা টায়ার সিন্ধুর পারে
    আজ নেই, কোনো এক নগরী ছিলো একদিন,
    কোনো এক প্রাসাদ ছিলো;
    মূল্যবান আসবাবে ভরা এক প্রাসাদ:
    পারস্য গালিচা, কাশ্মীরী শাল, বেরিন তরঙ্গের নিটোল মুক্তা প্রবাল,
    আমার বিলুপ্ত হৃদয়, আমার মৃত চোখ, আমার বিলীন স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা,
    আর তুমি নারী—
    এই সব ছিলো সেই জগতে একদিন।

    অনেক কমলা রঙের রোদ ছিলো,
    অনেক কাকাতুয়া পায়রা ছিলো,
    মেহগনির ছায়াঘন পল্লব ছিলো অনেক;
    অনেক কমলা রঙের রোদ ছিলো,
    অনেক কমলা রঙের রোদ;
    আর তুমি ছিলে;
    তোমার মুখের রূপ কতো শত শতাব্দী আমি দেখি না,
    খুঁজি না।

    ফাল্গুনের অন্ধকার নিয়ে আসে সেই সমুদ্রপারের কাহিনী,
    অপরূপ খিলান ও গম্বুজের বেদনাময় রেখা,
    লুপ্ত নাসপাতির গন্ধ,
    অজস্র হরিণ ও সিংহের ছালের ধূসর পাণ্ডুলিপি,
    রামধনু রঙের কাচের জানালা,
    ময়ূরের পেখমের মতে রঙিন পর্দায়-পর্দায়
    কক্ষ ও কক্ষান্তর থেকে আরো দূর কক্ষ ও কক্ষান্তরের
    ক্ষণিক আভাস—
    আয়ুহীন স্তব্ধতা ও বিস্ময়।

    পর্দায়, গালিচায় রক্তাভ রৌদ্রের বিচ্ছুরিত স্বেদ,
    রক্তিম গেলাসে তরমুজ মদ!
    তোমার নগ্ন নির্জন হাত;

    তোমার নগ্ন নির্জন হাত।
  • একলহমা | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:৪১431526
  • @আতোজ, @সিএস

    অনুসূর্যের গান - প্রিয় কবিতাটিকে আবার পড়ানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ।
  • Atoz | 162.158.187.84 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:২৭431525
  • সিএস, ধন্যবাদ।
    আকারের দিক দিয়ে না, ইন্টারেস্টিং গল্পের দিক দিয়ে বলছিলাম ইনফের্নো অংশটার কথা।
  • সিএস | 162.158.118.107 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:২৩431524
  • ডিভাইন কমেডির তিনটে ভাগ তো সমমাপের, প্রতিটিতেই তেত্রিশটি ক্যান্টো, প্রতি ক্যান্টোতেই সমসংখ্যক পংক্তি। ফলে, স্বর্গ অংশটি ছোট করে বলা নয়, বরং প্যারাদিসো থেকে ধরলে, স্বর্গ বা স্বর্গের ছোঁয়া লাগা বিষয়ই বেশী।

    আর এই হল অনুসূর্যের গানঃ

    https://sites.google.com/site/mohaprithibi/Home/sattitarartimir/onusurjergaan
  • Atoz | 162.158.186.155 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:১০431523
  • আহ, একটা প্রবন্ধের আইডিয়া পাওয়া যাচ্ছে, "রবীন্দ্রনাথ ও রাশিয়ার চিংড়ি"
    ঃ-)
  • একলহমা | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:০৮431522
  • @ গ
    আমার পড়া-শোনা বিশেষ কিছু নেই। তাই আমার পক্ষে যা সম্ভব তাই করি - যাঁরা জানেন, তাঁদের কথা শুনি, তাঁদের আলোচনা পড়ি, যতটা পারি বুঝি, নিজের ভাল-লাগা জানিয়ে যাই আর মাঝে মাঝে একটা-দুটো প্রশ্ন রাখি।

    আমি নিরন্তর সংশয়বাদী। খুব সামান্য কয়েকটি বিষয় ছাড়া সমস্ত পণ্ডিত, বোদ্ধা মানুষদের সবরকম প্রস্তর-দৃঢ় নিশ্চয়তায় আমায়ে সংশয় জারী থাকে, থাকবে। আমাকে অনধিকারী মনে হলে দুঃখিত।
  • | 172.68.146.91 | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:০৭431521
  • আধুনিক সাহিত্যে চিরায়ত বলে কিসু হয়না, ইন ফ্যাক্ট সেটাই আধুনিক সাহিত্যে র মূল দার্শনিক অবস্থান। এনগেজমেন্ট টাই কনটেম্পোরখরি, সেইজন্যই রিয়ালিজম জিনিস টা ধরুন তৃতীয় শতাব্দী তে হয়নি, ঝট করে বলা যায় , মরালিটি বা স্টেট ক্রাফ্ট এর থেকে তখনকার রাজনীতি তে মানবজীবন সংক্রান্ত আর্টের আলাদা হবার উপায় ছিল না। এটা ঠিক আমি ভার্সাস আপনি না, দৃষ্টি ভঙ্গি র পার্থ ক্য শুধু না, সয়য়ের পার্থক্য। রবীন্দ্রনাথ ও কলোনি তে রিয়াক্ট করছেন, হিন্দু মেলা থেকে রাশিয়ার চিংড়ি বা সভ্যতার সংকট বা একটা কন্ট্রাস্ট টেড প্রাচ‌্য ধারণা র কথা বলছেন, কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, রবীন্দ্র পরবর্তী রিগ্রেসিভ রিডাকশন বা জেনুইন লি ইনভেনটিভ কল্লোল বা সোশলিস্ট রিয়ালিজম এর আগমন সবকিছু কেই একটা সিরিয়াস গুঁতো মেরে বাংলা সাহিত্য কে দুই যুদ্ধ এর মধ্যবর্তী সময়ে নিয়ে আসছে না এব়ং একাধারে প্রবল ক্রিয়েটিভ আসপিরেশন এবং একটা মিসান্থ্রোপিক সন্ত্রস্ত ভাব দুটি জিনিস ই তাকে সয়্ভ
    সম্ভব করছে। আমি টেক্সট রিডিং এ জীবনানন্দ কে সীমাবদ্ধ না রাখার বিষয়টা কনসিডার
    করতে বলছি মাত্র, ব‌্যক্তিগত মতপার্থক্য টাই একমাত্র ইসু না, আলোচনার স্কোপ টা বাড়ানো র কথা বলছি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত