এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • গুলবস্তা

    pharida
    অন্যান্য | ১৩ ডিসেম্বর ২০১১ | ৬৩৯৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Nina | 223.29.205.110 | ১৮ ডিসেম্বর ২০১১ ২৩:৩০511581
  • ঘনাদা :-))
    আরিবাস!ক্ষি ক্ষান্ড---জয় গুরু!

    পিকনিক খুব মিস কল্লাম:-(
    ফোন কাজ করছেনা তাই এখানে লিখলাম---দেখা হবে,দিন গুনছি।
  • rupankar sarkar | 116.202.221.233 | ১৯ ডিসেম্বর ২০১১ ০৬:৫৫511582
  • ঘনাদা, লুইজিয়ানার সোমনাথ সম্ভবত: এখন পাটনায়। অবশ্য আবার অন্য কোথাও চলে গিয়ে থাকলে জানিনা।
  • pi | 72.83.83.28 | ১৯ ডিসেম্বর ২০১১ ০৯:০৩511583
  • এইক্ষণে কোলকাতায় :)
  • GHANADA | 223.223.140.246 | ১৯ ডিসেম্বর ২০১১ ১৯:৪২511584
  • লেখাপড়ার কথা ভাবলে, আজও শিউরে উঠি। এই বয়সেও দু:স্বপ্ন দেখি, পরীক্ষার হলে কিস্‌সু লিখতে পারছি না, আর দরদর করে ঘেমে যাচ্ছি।
    পরীক্ষার খাতাতে মুজতবা সাহেব নাকি এয়ায়সা আয়ানসার ঝেড়েছিলেন, যে পরীক্ষককেরা বলেছিলেন-
    -এনকোর! ( ফিরসে বা রিপিট) আর সেই ক্লাসে তাঁকে আবার রেখে দিতেন। পরের বছর পর্য্যন্ত পরীক্ষককেরা অপেক্ষা করতেন, কখন আবার এইরকম উত্তর মুজতবা সাহেব লিখবেন।( এটা মুজতবা সাহেব নিজেই লিখে গেছেন)
    এনকোর ব্যপারটা একটু বুঝিয়ে বললে বোধহয় ভালো হয়। আগেকার দিনে, যাত্রা থিয়েটারে কোন সিন ভালো লাগলে, দর্শকেরা বলতেন--এনকোর! (ইংরেজী শব্দ) আর কুশীলবেরা সেই দৃশ্যটি আবার অভিনয় করতেন!
    এ দিক দিয়ে আমার পরীক্ষককেরা আমাকে এনকোর না বললেও, ফার্ষ্ট কল বা থার্ড কলেও আমাকে পাশ করাতেন না! ফলং- প্রহারং। আবার দাদু গিয়ে বণ্ড দিয়ে আমাকে ওপরের ক্লাসে ওঠাতেন।
    ঋষি বঙ্কিম বলেছিলেন:- ( মুজতবা সাহেবের রেফারেন্স)
    “ছাত্র জীবন হইত বড় সুখের জীবন
    যদি না থাকিত এগ-জামি-নেশন!”
    একটা চালু কথা(গুজব?) আছে। ঋষি বঙ্কিমও নাকি প্রথম সুযোগে স্নাতক পর্যায়ে পাশ করতে পারেন নি। যেহেতু, ঐ পরীক্ষা কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পরীক্ষা ছিল, সঙ্গে সঙ্গে গ্রেস মার্ক দিয়ে পাস করানো হয়! ( প্লিজ, গুজবে কান দেবেন না)
    ঐ দুই লাইনের কবিতাটা পড়ে মনে হয়, কথাটা সত্যি হলেও হতে পারে। যাই হোক, রেডুকুৎসিও আব আয়বসার্ডাম ( রিডিউসড টু আয়বর্সাড থিংস- আবার মুজতবা সাহেব!!!) সূত্রে আমি পরীক্ষার ব্যাপারে মুজতবা সাহেব আর ঋষি বঙ্কিমের সমগোত্রীয়!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
    এক তালেবর ম্যাট্রিকে ফেল করে, নাকি বলেছিল:- ম্যাট্রিকুলেশন এক্সামিনেশন ইজ এ গ্রেট বদারেশন টু আওয়ার নেশন। ফাদারস আয়ডভাইস ফর কালটিভেশন আয়াণ্ড মাদারস কনশোলেশন।
    সেই মাতব্বরটি ( আমার কাছে প্রাত:স্মরণীয়) ইতিহাসে, বাবর সম্বন্ধে লিখেছিল-
    বাবর ওয়াজ এ গ্রেট এম্পপেরর। হি ফ্যাটাচুলেটেড আয়ণ্ড ল্যাটাচুলেটেড। হি অলসো পারপেনডিকুলারলি গরমরালাইজড এভরিথিং!
    আরও ছিল, কিন্তু সেটা আর জানা যায় নি! ( দেশের কি দুর্গতি! মুন্না ভাইয়ের ভাষায় “ওয়াট লগা দিয়া!”)
    হেসে উড়িয়ে দিলেন তো! তা ঠিকই করেছেন। এসব অবাস্তব কথা পড়াই উচিত নয়! মহা পাপ!
    আমার তখন ক্লাস সেভেন। সংস্কৃত শেখান হচ্ছে। পণ্ডিত মশাই শেখাচ্ছেন- বৃক্ষ ( উচ্চারণ করেছিলেন- বৃখ স) হইতে লম্ফ প্রদান কর।
    বৃক্ষাৎ উল্লম্ফ!
    শান্তি (আমাদের পাগলা দাশু) বলল- স্যার, থুড়ি পণ্ডিতস্যার- ট্রাম হইতে লম্ফ প্রদান কর, এর সংস্কৃত কি হবে?
    ফার্ষ্ট বয় কার্ত্তিক ভদ্রের উত্তর:- ট্রাম- অ কারান্ত শব্দ, নর শব্দের ন্যায়, সুতরাং ওটা হবে-
    ট্রামাৎ উল্লম্ফ!
    পণ্ডিতস্যার খেপে গেলেন। বললেন:-
    ওহে শাখামৃগের ( বাঁদর) দল! ট্রাম, ইংলণ্ডিয় যবন শব্দ। সংস্কৃত ভাষায় যাবনিক শব্দের প্রবেশ নিষিদ্ধ!!!!!!
    তবে, কি হবে পণ্ডিতস্যার?
    দাঁড়া, একটু চিন্তা করতে দে!
    শান্তি উঠে দাঁড়াল!
    -এ কি—খাড়াইলি ক্যান? (পণ্ডিতস্যার, রেগে গেলে বা হতচকিত হলে মাতৃভাষা বলতেন)
    -আপনেই তো কইলেন!
    -বলদা! তরে কখন খাড়াইতে কইলাম!!!!!
    -ছ্যার! অহনেই তো কইলেন!
    -ঊ বুঝসি। বয়! বয়! ভাবতে দে।
    -কিন্তু ছ্যার!
    -ক
    - ঐ যে বলদা কইলেন, হেইডার সমসক্রিত কি হইবো? বলদা তো দুয়ো সম্প্রদায়ই কয়! হেইডা কি যাবনিক শব্দ?
    -ছ্যামড়া, তুই তো মহা বজ্জাত! এইডা ন্যায়ের প্রশ্ন! হেইগুলা বোঝোনের বয়স তোগো হয় নাই!
    - ছাড়ান দ্যান। অহনে কন, টেরামের সমসক্রিত কি হইবো?
    -শকট
    - এই দ্যাহেন, তা অইলে গিয়া, বলদা গাড়ীর সমসক্রিত কি?
    -ঐটা পরে কমু হনে! টেরাম গাড়ীর তো টিক্কি থাহে! তা হইলে গিয়া- শিখা! আচে- সমন্বিত। লাইন- লৌহবর্ত্ম! ইলেকট্রিকে চলে- বিদ্যুশ্চালিত। উমমমমমম! তা অইল হইবো গিয়া- শিখা সমন্বিত লৌহবর্ত্মে বিদ্যুশ্চালিত স্বতশ্চল শকট:। বুঝছস? পুরাডা দাঁড়াইল গিয়া -শিখা সমন্বিত লৌহবর্ত্মে বিদ্যুশ্চালিত স্বতশ্চল শকটাৎ উল্লম্ফ!
    আমরা স্বত:র্স্ফূত ভাবে হাততালি দিয়ে উঠলাম। শুনে পণ্ডিতস্যার হাঁফ ছাড়লেন! শান্তি, শুধু আস্তে একটা ফুট কেটেছিল- টেরাম, তলে হইল গিয়া জাতে বাউন!!!! শিখা আসে কইতাসেন!!! পণ্ডিতস্যার বোধহয় শুনতে পান নি বা শুনেও উপেক্ষা করেছিলেন।
    তখনও কি পণ্ডিতস্যার জানতেন, আরও কি অপেক্ষা করে আছে তাঁর জন্য? দুই বছর ধরে এনকোর পাওয়া আর একটি ছিল, গদা। ভালো নামটা আর মনে নেই! ঐ নামে ডাক শুনতে অভ্যস্থ ছিল সে। ফলে ভালো নামে ডাক শুনলে, ও নিজেও উত্তর দিত না। কারণ বোধহয় একটাই ছিল- ভালো নামটা ও নিজেও ভুলে গেসল। গদা খুব শিব্রাম পড়ত!
    তা গদা হঠাৎ কাঁচুমাচু হয়ে জিজ্ঞেস করল-
    -ছ্যার! একডা শ্লোকের মানে একডু কইয়া দেবেন?
    - আরে ক না! সংস্কৃত শ্লোকের মানে কইতে পারুম না!!!! তইলে কিসের আমি হরিহর দেবশর্মণ?
    - কইলাম তইলে- বলে করযোড়ে, মুদিত নয়নে; গদা সুর করে শুরু করল: -
    হবর্তাবা কহিপ্তাসা, টজেগে ন শকেডুএ।
    রন্তগাযু শদে ইব সীবাঙ্গব:।অ।
    স্পষ্টতই পণ্ডিতস্যার কুলকুল করে ঘামছেন, দেখতে পেলাম। তখন, ইস্কুলে ইলেকট্রিক ছিল না। রতন, জোরে জোরে পাখার হাওয়া করতে লাগল। সাথে, পণ্ডিতস্যার মাথাকে বাম থেকে ডান দিকে ঘোরাতে শুরু করলেন। শান্তি জিজ্ঞেস করল:-
    -মাথাডা ঘোরান ক্যান, পণ্ডিতস্যার?
    -আরে, হাওয়ার ইস্পিড বাড়াইতেসি, লগে মাথা থিকা শ্লোকের মানে বাইর করনের চেস্টা!
    ঢং ঢং করে ক্লাস শেষ করার ঘন্টা পড়ল। ক্লাস থেকে বেরিয়ে, পণ্ডিতস্যার দৌড়ে টীচারস রুমের দিকে চলে গেলেন। পরে, টিফিনের জন্য আধঘন্টা ছুটি। সবাই গদাকে চেপে ধরলুম। ক, শ্লোকটার মানে ক- শান্তির চিৎকার! গদা শুরু করল:- আরে ঐ শ্লোকটা বুঝছস, কতকগুইলা খবরের কাগজ আর সাময়িক কাগজের নাম উল্টাইয়া দিসি। লগে, ইব আর বিসর্গ জুইড়া দিসি।
    - খুইল্যা ক!
    - হবর্তাবা= বার্তাবহ, কহিপ্তাসা= সাপ্তাহিক,টজেগে ন শকেডুএ= এডুকেশন গেজেট, রন্তগাযু= যুগান্তর, শদে= দেশ, সীবাঙ্গব = বঙ্গবাসী। বোঝসস?
    টিফিন পিরিয়ড শেষ হল। ইংরাজীর ক্লাস। স্বয়ং হেডস্যার আসবেন। আমরা সবাই তটস্থ।
    হেডস্যার এসেই বললেন- তোদের আজ ইংরাজী কথপোকথন শেখাব। আয়াই গদা, তোকে আমি ইংরাজীতে জিজ্ঞেস করব আর তুই ইংরাজীতেই উত্তর দিবি। বুঝেছিস? গদা মাথা নাড়ল। সেটাতে, হ্যাঁ, না কিছুই বোঝা যায় না।
    হেডস্যার শুরু করলেন-
    -হোয়াট ইজ ইওর ফাদার?
    - মাই ফাদার ইজ আমব্রেলা ফ্যাকটরী।
    - হোয়াট?
    - মানে ছ্যার, আমার বাবায় ছাতাকলে কাম করে!
    হেডস্যার খানিক চোখ বন্ধ করে বসে থাকলেন। কিছু যেন বোঝার চেস্টা!!!!!
    এরপর শান্তি! ( সবাই লাষ্ট বেঞ্চ, আমি সহ)
    - হোয়াট মেটেরিয়ালস ইউ ইউজ ফর ইয়োর হাউজ?
    - মাই হাউজ ইজ চ্যাকার ব্যাড়া ছ্যার!
    - হোয়াট ইজ চ্যাকার ব্যাড়া? (হেডস্যারের হুংকার!!!)
    - ছ্যার, চ্যাকার ব্যাড়া? দাউ দিয়া কাটিং ব্যাম্বু ঝাড়া। পাতলা পাতলা কাটিং দাড়া। ইঞ্চি ইঞ্চি গাড়া গাড়া। পেরেক দিয়া ঠুকিং ব্যাড়া! দ্যাট ইজ কলড চ্যাকার ব্যাড়া!
    সহ্যের সীমা অতিক্রম করলে যা হয় আর কি! সপাং সপাং করে লাষ্ট বেঞ্চের সবাইকে বেত মেরে তিনি ছিটকে বেরিয়ে গেলেন ক্লাস থেকে!!!!!!!!
    পরের ক্লাস, বিজন স্যারের। অঙ্ক!!!!!!! তাও আবার আয়লজেবরা! বেতের মারের ব্যাথা যায় নি।
    বিজন স্যার বোর্ডে, বড় বড় করে লিখলেন:-
    এক্স=১০
    ওয়াই=
    তাহলে এক্স/ওয়াই= ?
    শান্তি!!! তুই বোর্ডে আইয়া অঙ্কটা কইষা দে!!!
    শান্তি বীরদর্পে বোর্ডে গেল। চক দিয়ে লিখতে লাগল:-
    ২)১০(৪১


    -------------

    -------------

    -------------
    X
    সুতরাং, এক্স/ওয়াই=৪১।
    ঢং করে ছুটির ঘন্টা! বিজন স্যার বেরিয়ে গেলেন।
    শান্তি চীৎকার করে বলল- ল্যাহাপড়া!!!!!
    আমরা কোরাসে বললুম- এনকোর!!!!!!!

  • GHANADA | 223.223.140.246 | ১৯ ডিসেম্বর ২০১১ ১৯:৪৫511585
  • নীনা
    তোর সঙ্গ সবাই মিস করছিল। হেব্বী জমেছিল পিক নিক!
    হ্যাঁ! দেখা তো হবেই তোর সাথে।

  • PM | 86.98.43.63 | ১৯ ডিসেম্বর ২০১১ ২০:৩৩511586
  • ঐ সংস্কৃত শ্লোক-টা ( খবরের কাগজের নামে) কোথায় পড়েছি আগে মনে করতে পারছি না। তবে পড়েছি সিওর।
  • GHANADA | 223.223.136.6 | ১৯ ডিসেম্বর ২০১১ ২০:৪৫511587
  • @PM
    পড়েছেন তো! শিব্রামের গল্পে। তাই তো বলেছি, গদা শিব্রামের ভক্ত ছিল।

  • nk | 151.141.84.194 | ২০ ডিসেম্বর ২০১১ ০২:৩৩511588
  • আরে আপনেরা গুরুতে আসেন যান, ভাট পড়েন না? এই নিয়ে ভাটেই তো মারামারি হয়ে গেল কবেই! শিব্রামভক্ত হুতো তো কহিপ্তাশা ছদ্মনামে এক বিশাল রাধিকা সিরিজই নামিয়ে দিলো। হিপ্ত ছিলো আশা! :-)
    (রাধিকা সিরিজের কবিতাগুলো সত্যি চমৎকার! ব্যক্তিগত মতে একদম সত্যি করে বলছি। )
  • pi | 128.231.22.133 | ২০ ডিসেম্বর ২০১১ ০৮:৩৮511589
  • টিকিধারী ট্রামের একটা ছবি হবে নাকি ? হুতো, লামাদা ? :)
  • GHANADA | 223.223.140.24 | ২১ ডিসেম্বর ২০১১ ১৪:৫৯511591
  • ----------------ভুলভাল------------------------------
    শিরোনামে যা আছে, সেটা ঠিকই পড়েছেন!!! এমন কি চশমা চোখে দিয়ে পড়লেও। বাঙ্গাল আর ঘটির লড়াই কবে থেকে চালু হয়েছে, তা ঐতিহাসিকরাই বলতে পারবেন। এই বিষয় নিয়ে বহু পত্র পত্রিকায় লেখালেখি, চলচিত্র তৈরী, মুখে মুখে ছড়া চালু-ও হয়েছিল। সরলীকরণ করে বলা যায়, দেশভাগের পর, বাঙ্গালী হলেও দুই ভিন্ন মুখী সংস্কৃতির সংঘর্ষ, বিশেষ করে রান্না বান্না আর ফুটবলের ক্ষেত্রে এই তথাকথিত সংঘাতের সৃষ্টি। দুটো প্রচলিত ছড়া বলি।
    বাঙ্গাল মনুষ্য নহে
    বিদঘুটে জন্তু
    লাফ দিয়ে গাছে ওঠে
    ল্যাজ নাই কিন্তু!!!!!!
    উত্তরে, এই ছড়াটি চালু হলো
    বাঙ্গাল মনুষ্য নহে
    দেবতার তুল্য
    এ দেশের ঘটিরা
    বুঝিবে কি মূল্য!!!!
    ৬৪ বছর পর এসবের আর মূল্য সত্যিই নেই। সবই ইতিহাস! যেটা আছে, সেটা পুরোনো স্মৃতি নিয়ে হাসাহাসি। আসুন, সেই ভুলে যাওয়া দিনগুলোকে নিয়েই এই ভুলভাল লেখাটা শুরু করি।
    দেশভাগ হয়ে গেছে। মদনেরও চাকরী গেল! ওপারের জমিদার বাবু মদনকে ডেকে বললেন-( কথপোকথন বাঙ্গাল ভাষাতেই হয়েছিল, কিন্তু আমি সেটা ইচ্ছে করে এড়িয়ে গেলাম)
    -বুঝলি রে! তোর রান্না খেয়ে খেয়ে আর কারো রান্না মুখে রুচবে না জানি, কিন্তু আমার আর মাইনে দিয়ে তোকে রাখার সামর্থ্য নেই। তাছাড়া, আমি ঘটি বাটি বেচে দিয়ে কোনরকমে ওপারে চলে যাচ্ছি। কোথায় থাকব জানি না। তোকে বাপ পিতেমোর রাখা এই দুটো মোহর দিয়ে গেলাম। ভালো থাকিস।
    মদন কিছু দিন ধরেই আঁচ পাচ্ছিল এরকম কিছু একটা ঘটবে। বিয়ে সাদী করে নি। বাপ মাও মরে ভূত। তিনকূলে কেউ নেই। থাকার মধ্যে পিতৃপুরুষের দেড় কাঠার ভিটেটা। তিন চার দিন ভেবে চিন্তে, মদন আবদুল চাচাকে ভিটেটা বেচেই দিলো।
    যে টুকু পয়সা পেলো, সেটাই নিয়ে পাড়ি দিয়ে এসে মদন এসে পৌঁছল এপারের এক জেলাতে। ছোট্ট এক চিলতে বাসা ভাড়া করে মদন থিতু হলো।
    রান্না ছাড়া কিছু জানা নেই!!!! রোজই কাজের সন্ধানে বেরোয় আর ফেরে এক বুক হতাশা নিয়ে।
    ঘুরে ঘুরে মদন ভাবল, এপারে আসাটা কি ভুল হলো! ওপারে থাকলেও বা কি হতো!!! সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে আনমনা হয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গিয়ে পা পড়ল জমে থাকা জলের ওপর! কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আর কি! ঠিক সেই সময় মোটোর গাড়ীতে উঠছিলেন স্থানীয় জমিদার গৃহিণী। চলকে ওঠা জল গিয়ে পড়ল তাঁর দামী শাড়ীর ওপর! আর যায় কোথায়! পায়ের চটি খুলে সপাটে মদনের গালে। তারপর গটমট করে মোটোর গাড়ীতে উঠে চলে গেলেন! সঙ্গে তীর্যক মন্তব্য-
    বাঙ্গাল গুলো রাস্তাটাও দেখে চলতে পারে না!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
    মদন ভেবে অবাক! তাকে বাঙ্গাল বলে চিনলেন কি করে ঐ মা জননী? ভেবে কোনো কূল কিনারা পেল না! শেষে রাস্তার ধারের মুদি দোকানে বসে ১ পয়সার মুড়ি কিনে চিবোতে লাগল। অন্তত পেটের জ্বালাটা তো মিটুক! অপমানের জ্বালাটা আপাতত থাক!
    দোকানী হেসে বলল: -বাপু হে! ঐ ছোট্টো টিনের বাক্সর ওপর “ ভালেবাসা” কথাটা কেন লিখেয়েছ? তুমি তো দেখছি এক্কেরে খাজা বাঙ্গাল!!!
    মদন,বাড়ী থেকে বেরুলে তার সমস্ত টাকা পয়সা, জামা কাপড় বাবার বিয়ের এই ছোট বাক্সটাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বিদ্যুৎ খেলে গেল মদনের মাথায়!!!!!!
    এবার বুঝতে পারল, মা জননী কেন তাকে বাঙ্গাল বলেছিলেন!!!!!
    দোকানীকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারল. মা জননী কার স্ত্রী!!! ভদ্রলোক বিশাল পয়সার মালিক আর তাঁকে সবাই জমিদার বাবু বলেই ডাকে। মা লক্ষ্মীর কৃপায় পয়সার কোন অভাব নেই! রোজ বেলা ১২ টা থেকে ৩ টে কাছারী বাড়ীতে বসেন, পাত্র মিত্র সহ। বিশাল পয়সার মালিক হলেও ভদ্রলোক বেশ দলু! রোজ তাঁর বাড়ীতে প্রায় ১০০ জনের পাত পড়ে, আর বেশ কিছু বেকার লোক জনও থাকেন ওনার বাড়ীতে।
    তখন বাজে বেলা একটা। জল খেয়ে মদন কপাল ঠুকে বেরিয়ে পড়ল জমিদারবাবুর কাছারী বাড়ীর দিকে।
    তখন লোকজন একটু কম। বাবু আয়েস করে গড়গড়া টানছেন!!! মদনকে দেখে বাবু ভুরু কুঁচকে বললেন- কি চাই? গম্ভীর স্বরের সঙ্গে মদন পরিচিত। তাই না ঘাবড়ে বলল- হজুর, আমি ওপার থেকে আসছি। রান্না ছাড়া তো কিছু জানি না! হজুর যদি দ করে একটা রান্নার কাজ দেন!!!!
    -ওহে! তোমার ঐ বাঙ্গাল রান্না এখানে কারুর মুখেই রুচবে না! আর তা ছাড়া, আমার চার চার জন রান্নার লোক! তোমাকে রেখে কি লাভ?
    - হজুর আমার রান্না একবার খেয়েই দেখুন!!!
    -বেশ! খেতে পারি, কিন্তু এমন জিনিস তোমাকে রেঁধে খাওয়াতে হবে, যেটা আমি জীবনে খাই নি!! পারবে???
    মদন এক মুহূর্ত্ত ভেবে বলল- পারব হজুর! কিন্তু দশ দিন সময় দিতে হবে!
    বাবু বললেন- বেশ! তা যদি পার, তবে তোমাকে আমি কাজে বহাল করব। ওরে! কে আছিস! এ ব্যাটাকে নিয়ে গিয়ে থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত করে দে! আর রান্নার জিনিস কিনতে যা পয়সা লাগবে দিবি! যাও বাপু! এখন আর বিরক্ত করো না!
    মদন লাফাতে লাফাতে গিয়ে ওর ভাড়া বাড়ীটা ছেড়ে দিয়ে বাবুর বাড়ী এসে উঠল।
    সেই যে ঘরের মধ্যে এসে ঢুকল, খাওয়া আর টুকটাক কেনাকাটি করা ছাড়া মদন আর বাবুর বাড়ীর বাইরে আর বেরোয় না।
    ক্রমে ক্রমে দিন গড়িয়ে যাচ্ছে। দশদিনও হয়ে গেল। বাবুর আর মনে নেই! কে কার খবর রাখে? মদন কিন্তু ঠিক মনে রেখে সময় মত তার নতুন রান্না এক বিরাট কড়াই করে হাজির করল বাবুর সামনে।
    বাবুকে একটা বড় বাটী করে মদন খেতে দিল। মুখে দিয়েই লাফিয়ে উঠলেন!
    -অমৃত! অমৃত! ওরে গিন্নীমাকে ডেকে নিয়ে আয়! ওনাকেও চাখাই! গিন্নীমা এলেন, খেলেন কিন্তু মদনকে চিনতে পারলেন না! চেনার কথাও নয়। দশদিনে গরীবের কথা কে আর মনে রাখে? রান্না খেয়ে গিন্নীমাও লাফিয়ে উঠলেন!
    একই কথা মুখে-অমৃত! অমৃত! পারিষদেরাও খেল। তাদেরও একই কথা! রান্না যারা করত, তারা দৌড়ে এসে ঘটনা দেখে হতভম্ব! ওদের মধ্যে একজন বলল- সবই তো হল!! কিন্তু বাবুকে নতুন জিনিস কি খাওয়ালে হে, মদন?
    বাবুরও মনে পড়ল। ঞ্যাঁ!! তাই তো! বল হে, কি সেই নতুন জিনিস!!!! গিন্নীমাও সুরে সুর মেলালেন!
    মদন শুরু করল-
    কাছারী বাড়ীতে ঢোকার সময় দেখি একগাদা পুরোনো জুতো! জিজ্ঞেস করে জানলাম- ওগুলো চাকর বাকরদের বাতিল জুতো!!! তা ঐ জুতো গুলো থেকে গোড়ালী গুলো খুলে নিয়ে, এই দশদিন সিরকাতে ভিজিয়ে রেখে রান্না করেছি!! অনেক ভেবে দেখলাম বাবু আর গিন্নীমা, আপনারা তো অনেক জিনিস খেয়েছেন, কিন্তু বাঙ্গাল রান্না আর চাকরের জুতো তো আর খান নি!!!!!!! তাই আর কি!!!!

    ............সমাপ্ত..........

  • aishik | 122.181.132.130 | ২২ ডিসেম্বর ২০১১ ১০:৪৯511592
  • ঘনাদা, আপনার সোনার কলম হোক।
  • PM | 86.96.228.84 | ২২ ডিসেম্বর ২০১১ ১১:৩৩511593
  • ক্ষি ক্ষান্ড !!!!
  • siki | 122.177.189.106 | ২২ ডিসেম্বর ২০১১ ১১:৫৯511594
  • ঘনাদার একটা হুগলি কানেকশন আছে। আছেই আছে।
  • aranya | 144.160.226.53 | ২২ ডিসেম্বর ২০১১ ১২:০৬511595
  • আমি শুনেছিলাম - ঘটি, বাটি বুঝিবে কি বাঙালের মূল্য।
    বাটি মানে বোধহয় যার বাবা, মার একজন বাঙাল, অন্যজন ঘটি।
  • kd | 59.93.245.151 | ২২ ডিসেম্বর ২০১১ ১৫:৩৭511596
  • হায়! সকলে কেমন ঘটি-বাঙাল নিয়ে কথা বলো, ঝগড়া করো। আমাদের কথা কেউউউ বলে না! কেন? আমরা কি বানের জলে ভেসে এসেছি? না কারুর পাকা ধানে মই দিই না বলে?
  • siki | 122.177.189.106 | ২২ ডিসেম্বর ২০১১ ১৫:৩৮511597
  • আমারো সেই দু:খ। কাব্যে উপেক্ষিতই রয়ে গেলাম, নিখাদ নিপাট প্রবাসী বাঙালি বলে। না ঘটি হলাম এ জীবনে, না হলাম বঙ্গ+আল।
  • Ghanada | 223.223.138.96 | ২২ ডিসেম্বর ২০১১ ২০:৪৯511598
  • যাঁরা, এই অধমের হাবিজাবি লেখাগুলো পড়েছেন, তাঁদের কে অসংখ্য ধন্যবাদ।
    বাটী শব্দটা, আমি যতদূর জানি, উত্তরবঙ্গীয়াদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। ভুলও হতে পারে।
    ভারত ভাগ হবার পর, বাংলাদেশেও উত্তরবঙ্গ আছে।
    রাজসাহী, দিনাজপুর, রংপুর, পাবনা, বগুড়া- এসবই এখনো ঐ দেশে উত্তরবঙ্গ নামে পরিচিত। ( সবাই জানেন, তাও নামগুলো বললাম, এবং বলে তৃপ্তি পেলাম।)
    আমাদের উত্তরবঙ্গের জেলা গুলো তো সবাই জানেন।
    আমি মূলত রাজসাহী জেলার লোক।
    আর সিকিকে বলি:- আমি শ্রীরামপুরের মাহেশ হাইস্কুলে অল্প কিছুদিন পড়েছি।
    আর হ্যাঁ!!!!
    বাঙ্গাল মনুষ্য নহে
    দেবতার তুল্য
    এ দেশের ঘটিরা
    বুঝিবে কি মূল্য!!!!
    এই ছড়াটার পাঠান্তরও আছে।
    বাঙ্গাল মনুষ্য নহে
    দেবতার তুল্য
    এ দেশের ঘটি- বাটি
    বুঝিবে কি মূল্য!!!!

  • siki | 122.177.189.106 | ২২ ডিসেম্বর ২০১১ ২২:২০511599
  • বল্লাম না! হুগলি কানেকশন আর পোতিভা কখুনো চাপা থাকে না। রামকৃষ্ণ বিদ্যেসাগর হয়ে সেই ট্র্যাডিশন আজও চলিতেছে :) যাক আর উপেক্ষা পেলাম না।
  • pi | 128.231.22.133 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ০৬:৪৮511600
  • বাটি প্লাস বাঙালের পরের জেনেরেশন কী হবে ? বাবা ?
    আর বাটি + ঘটি কি বাঘ ?
  • Ghanada | 223.223.143.18 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ১১:০৪511602
  • @সিকি
    আমি কেন তোমাকে উপেক্ষা কোরবো বল তো? উপেক্ষা করার ভিত্তি কি? বোলে তো, জ্যোতিষ টইতে তোমার সঙ্গে আমার তক্কো? ধ্যূস।
    আমি এখন অবসর প্রাপ্ত বেকার লোক। হাতে প্রচুর সময়। তাই চেষ্টা করি, নানা বিষয় নিয়ে নাড়াঘাটা কোরতে। সেটারই ফসল কিছু লেখা –পত্তর। মত বিরোধ হতেই পারে। তাই বলে উপেক্ষা? কোথায় যেন পড়েছিলাম- অপমান করার শ্রেষ্ঠ উপায় হলো উপেক্ষা।
    না, না!! সেটা হতেই পারে না। আমার কোনো অধিকারই নেই তোমাকে অপমান করার। আর কোরবৈ বা কেন?
    এই কল্পজগতে বন্ধুত্ব হয়েছে, এটাই আমার কাছে প্রচুর পাওনা! এইটাই বজায় থাকবে, আমি দৃঢ় নিশ্চিত।
    ভালো থেকো।
  • Ghanada | 223.223.143.18 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ১১:৩৭511603
  • @ সিকি
    আমি কিন্তুক জ্যোতিষ টইতে তোমার কাছে খুল্লম খুল্লা দু:খ প্রকাশ করেছি।

  • siki | 122.177.189.106 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ১১:৪১511604
  • আরে না না, ছি ছি। ওপরে আমার গতকাল ৩-৩৮ পিএমের লেখাটা পড়ুন। ঘটি বাঙালের তর্কে আমি উপেক্ষিত বলেছিলাম। আপনারে কই নাই। :-)
  • siki | 122.177.189.106 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ১১:৪২511605
  • ঘনাদা প্লিজ লজ্জা দেবেন না। কোনও ব্যক্তিগত বিরোধ নিয়ে কিছু বলতে চাই নি। জাস্ট মজার ছলে বলেছি।

    মশলা খাবেন? :-)
  • Ghanada | 223.223.143.18 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ১২:৩৭511606
  • @ সিকি
    তোমার *মশলা খাবেন?* শুনে আমার যৌবনের একটা শোক মনে উথলে উঠলো! সেই কালে বড্ড ব্যাথা পেয়েছিলাম। এখন হাসি।
    কারণ, সেই পৃথুলা ( বর্তমানে) মহিলার সঙ্গে বছর দুই আগে পার্ক ষ্ট্রিটে দেখা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল- ওনার ১৭/১৮ বছরের সুন্দরী নাতনী।
    আমাকে দেখে, কুশল বিনিময়ের পর নাতনীর সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেবার সময় বলেছিলেন- ইনি তোর হলেও হতে পারত ঠাকুরদা!
    নাতনী তো হেসেই খুন! বলল- গ্‌র্‌যানি, তুমি না খুব সুইট! এইরকম লোকের সঙ্গে আমি একটু আড্ডা দিয়ে, তোমাদের পুরোনো প্রেমের গপ্পো শুনবো।
    তো, আমরা গিয়ে বোসলাম সিলভার ড্রাগনে।
    নাতনী আমাকে বললো- সুইটস, তুমি বিয়ার না জিন নেবে?
    আমার তো জিভ লকলক করে উঠলো।
    আমার কাছ থেকে শুনে নিয়ে অর্ডার দিল:- দুটো জিন উইথ ফ্রেস লাইম। একটা কোক! আর তিন প্লেট চিলি চিকেন।
    জিন দুটো আমার আর ঐ মহিলার জন্য। নাতনী নিল- কোক! আমি ভদ্রতা করে বললাম:- তুমি জিন নিলে না কেন?
    উত্তর পেলাম:- আমি এখনও খাই না! খেলে নিতাম। আমার গ্‌র্‌যানি খুব লিবারেল। গ্‌র্‌যাণ্ড পাও তাই।
    নাও! নাও শুরু করো!
    বলতে লাগলাম!!!!
    তোর গ্‌র্‌যানি বেশ সুন্দরী ছিলেন।
    বলতেই বাধা!
    হোয়াট ডু ইউ মিন? আমার গ্‌র্‌যানি, এখনও বেশ সুন্দরী!!
    থতমত খেয়ে বললাম:- না! মানে ইয়ে, তখন আরও বেশী ছিল।
    বেশ বেশ- নো তক্কো! চালাও পানসী বেল ঘরিয়া
    শুরু কোরলাম:-
    প্রেম হবার পর বহরমপুরে ( গঞ্জাম, ওড়িশা) পোষ্টিং পেলাম। চিঠিতে তো বটেই, আর কোলকাতায় এলে প্রেমটা আরও জমতো।
    করে, করে, বেশ চলছিল!!!!!
    হঠাৎ একদিন একটা টেলিগ্রাম তোর গ্‌র্‌যানির কাছ থেকে।
    *কাম শার্প । মাই ম্যারেজ হ্যাজ বিন ফিক্সড! মিট মি আয়াট যাদবপুর কফি হাউস আয়ট ওয়ান পিএম শার্প টু ফিক্স দ্য নেক্সট কোর্স অফ আয়কশানস।*
    দুপুরে টেলিগ্রাম পেয়ে, সেই দিন-ই - বিকেলের ম্যাড্রাস মেল ( তখন ঐ নামই ছিল) ধরে হই হই করে চলে এলাম কোলকাতায়!
    ভোরবেলা হাওড়ায় নেমে,চলে গেলাম ঠিক দুপুর একটার সময়! যাদবপুর কফি হাউসের পাশেই একটা চাইনিজ রেস্তোরাঁ ছিল সেই সময় ( এখনও আছে কিনা, জানি না)
    টুকটাক অন্য গল্প কোরতে কোরতে তোর গ্‌র্‌যানি লাঞ্চ খাচ্ছে, কিন্তু আসল কথা আর বলে না!
    শেষ হলে মুখ টুখ মুছে বলল:- শোনো, আমার তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। বিয়ে হলেই আমি আয়মেরিকা চলে যাচ্ছি। তুমি না, আজ থেকে আমাকে বোনের চোখে দেখ।
    আমার মটকা গরম হয়ে গেল! একে তো লাঞ্চের বিল দিয়েছি, তার ওপর বহরমপুর থেকে আসা যাওয়ার খরচ!!!!!!!
    বললাম:- কোনো চোখে যদি দেখতেই হয়, তবে আজ থেকে তোমাকে *রক্ষিতা* র চোখে দেখবো!!!!!!!!!!
    তোর গ্‌র্‌যানি হেসে বলেছিল- আহা চটছো কেন? মশলা খাও!
    আমার বলা শেষ হতেই একজন হ্যাণ্ডসাম বৃদ্ধ ঢুকলেন। হেসে হাত মিলিয়ে বললেন- সেল ফোনে আপনার খবর পেয়ে চলে এলাম।অআমি প্রেজেন্ট, আপনি পাষ্ট!
    সেদিনের বাকী মশলা একটু খান!
    বেয়ারা! তিনঠো জিন উইথ ফ্রেস লাইম ফির সে দো!
  • siki | 122.177.189.106 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ১২:৫৮511607
  • হাহাহা, ক্কীদিঙ্কাল!!

    =| এটা দিয়ে লাইক বোঝানো যাবে?
  • CB | 192.193.164.10 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ১৫:১৫511608
  • মশ লা টা অসম্ভব কিউট খেতে :)
  • ranjan roy | 14.97.58.109 | ২৩ ডিসেম্বর ২০১১ ১৬:৩৮511609
  • অমৃত! অমৃত!
  • Ghanada | 223.223.130.218 | ০১ জানুয়ারি ২০১২ ২২:৪২511610
  • আড্ডা

    ফেলে আসা জীবনে শুধু তো দু:খ থাকে না! অনেক মজা, হাসি , ঠাট্টা লুকিয়ে থাকে! মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে চাকরী জীবন শুরু ও শেষ হয়েছিল।অশেষের দিকে একটু পায়া ভারি হয়েছিল, তবে ওটা উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। এই চাকরী টা না করলে, আমি হয়তো বুঝতামই না, জীবনের মজা টা কি! আমাদের রেস্ট হাউস বলে একটা বাসস্থান থাকত, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে। হোটেল থেকে অনেক আরাম, আর আমাদের ইউনিয়নও আমরা করতাম এই রেস্ট হাউসকে কেন্দ্র করে। রেস্ট হাউসে দু ধরনের রিপ্রেজেন্টেটিভই থাকতেন। মেডিক্যাল এবং সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ। অনেক সাহায্য পেতাম আমরা, এই সব রেস্ট হাউসের সিনিয়র দাদাদের কাছ থেকে। তা আমাদের আড্ডাটা জমত রাতে। ঐ আড্ডায় কি না চর্চা হত। অনেকেই পরবর্তী জীবনে সিনেমা, থিয়েটার, সংগীত, রাজনীতিতে নাম করেছিলেন। দু একটা নাম করছি। স্বরূপ দত্ত, অসীম রায়চৌধুরী। হালের শ্রীকান্ত আচার্য্য। প্রসঙ্গত বলে রাখি, শ্রী মৃণাল সেনও তাঁর জীবন শুরু করেছিলেন,মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে । যাই হোক, কিছু টুকরো মজার ঘটনা তুলে ধরছি।
    সেবার, একটি নতুন ছেলে এলো কটকের রেস্ট হাউসে। একটু হাই- ফাই ব্যাপার, ছেলেটির। টেনিদার চরিত্র ঠিক না হলেও, প্রায় কাছাকাছি। তা ছেলেটি, একদিন কথায় কথায় বলল- “বুঝলে, মিসেস সেন এর সাথে, একটা বড় রোল পাচ্ছি। বুড়োদা খুব হেল্প করছেন। আর,মিঠুর বিপরীতে আমার হিরো হবার কথা চলছে।”
    আড্ডা তখন জমজমাট। হঠাৎ সবাই নিস্তব্ধ। মিসেস সেন, বুড়োদা এরা কে, আর মিঠু?????? সবাই মনে মনে উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছি। তা কিছুক্ষণ বাদে আমাদের এক সিনিয়ার দাদা বললেন “মিসেস সেন মানে রমা???” আমরা অকুল পাথারে। আমার পাশের দাদা, আমার মুখ হাঁ দেখে, হাত দিয়ে আমার মুখটা চেপে ধরে; কানে চুপি চুপি বললেন- রমা হচ্ছে সুচিত্রা সেন, আর বুড়ো দা- তরুণকুমার।
    সিনিয়ার দাদা বললেন- তা, “মিসেস সেন, তোমার সাথে দেখা করেছেন?”
    ছেলে-“ না, আসলে আমি ঠিক টাইম করে উঠতে পারি নি। হটাৎ চলে এলাম তো!”
    সিনিয়ার দাদা-“ তা বুড়োদাকে ভার দিয়ে এসেছ বুঝি?
    ছেলে- বললাম না, কটকে চলে এলাম!!!
    সিনিয়ার দাদা-“তা, রমাকে টেলিগ্রাম করে দিচ্ছি, যাতে তোমার কাছে আয়াপয়েন্টমেন্ট চেয়ে টেলিগ্রাম পাঠায়!”
    ছেলেটি এরপর শুধু হাতে পায়ে ধরতে বাকি রাখে। কিনতু ওর নাম হয়ে যায়- হটাৎকুমার।
    ----------
    আর এক দিন, একটি নতুন ছেলেকে সেই সিনিয়ার দাদা জিজ্ঞেস করলেন- ভাই, তোমার নাম কি?
    ছেলেটি- দাদা, আমার নাম; রবি সোম। আপনার নাম দাদা?
    দাদা- মঙ্গল বুধ।
    ----------
    “হটাৎকুমার একদিন ছুটির শীতের সকালে খালি গায়ে তেল মাখছিল।
    তা দাদা বললেন- কি রে! তোর গায়ে তো দেখছি প্রচুর কেশ!
    "হটাৎকুমার-পুরুষ দাদা,পুরুষ।
    দাদা- গাধা তো তা হলে মহাপুরুষ রে!

  • Ghanada | 223.223.130.218 | ০১ জানুয়ারি ২০১২ ২৩:৩৯511611
  • তখন, আমি মালদায় পোষ্টেড। সন- ১৯৮৩। গৌড়ে কোন গাইড ছিল না। মালদা ট্যুরিষ্ট লজের ম্যানেজার, বিদেশি এলেই আমায় ফোন করে ডেকে নিতেন, সেই বিদেশি ট্যুরিষ্টদের গাইড হতে। (অবশ্য-ই পয়সার বিনিময়ে, আর রবিবারেই কাজটা বেশী হত)

    আমি টুটা ফুটা ইংরেজি জানি, তাতেই কাজ চলে যেত আর কিছু একষ্ট্রা ইনকামও হত।
    এক রবিবার সকালে ফোন!!! দুই জার্মান সাহেবকে গৌড় দেখাতে হবে। চলে গেলাম। তা জার্মান সাহেবরা হেভী ব্রেকফাষ্ট খাওয়ালেন। খেলুম, গাণ্ডে পিণ্ডে।
    সাহেবরা দেখলাম, ইংরেজি জানেন কিন্তু খুব স্বচ্ছন্দ নন। যাই হোক! ওনারাও আমার ইংরেজী শুনে খুশী- ই হলেন। যাওয়ার আগে জানতে চাইলেন, গৌড়ের ইতিহাস!!!!
    টেবিলে বসে বলতে শুরু করলাম। স্বভাবতই দু একটা সংস্কৃত শ্লোক চলে এলো! শুনে তো সাহেবরা লাফিয়ে উঠলেন!!!!!!!!
    YouknowSanskrit!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

    Let’stalkinSanskrit!!!! WhyinEnglish? WeareprofessorsofSanskritin……UniversityofGermany!!!!! আমার তখন ধরণী দ্বিধা হও অবস্থা! সংস্কৃতে কথা বলা??? তাও ঐ সংস্কৃতের পণ্ডিতদের কাছে????
    কোনোরকমে বোঝালাম, আমি দু একটা শ্লোক জানি, এর বেশি কিছু নয়!!!!!
    খুব দু:খিত হলেন ওঁরা! বললেন- ExceptinSouthIndia, wecouldnotiteract.However, pleasecarryoninEnglish!!! ButitiseasiertopickupSanskritthanEnglish!!!
    মাথাটা লজ্জায় নীচু হয়ে গেছিল!!! এটা হস্তান্তর করলাম আপনাদের!!!!!

  • Sibu | 108.23.41.126 | ০২ জানুয়ারি ২০১২ ০৭:৩৪511613
  • এই গপ্পোগুলো চটি করে ছাপানো উচিৎ ঘনাদা। আর কখনো দেখা হলে, মার্গারিটা অন মি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন