এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • achintyarup | 115.111.248.134 | ২৭ মার্চ ২০১২ ১৮:৪৫533793
  • আহা!
  • achintyarup | 59.93.240.44 | ২৮ মার্চ ২০১২ ০৪:৩১533794
  • সুধা খাই জয় কালী বলে...

    বেম্মজ্ঞানী হতে হতে না হওয়া আমাদের বৈষ্ণব পরিবারে মূল্যবোধাদি ছিল রক্ষণশীল। মাংসভক্ষণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল। দেশভাগ, কম্যুনিস্টি ইত্যাদি কারণে আস্তে আস্তে তার পরিবর্তন হতে থাকে, কিন্তু মদ্যপান ছিল অন্যায়। ফলে ছাত্রজীবন শেষ করার পরও মাদক স্পর্শ করিনি। চেখে দেখা দূরস্থান, বোধ হয় চোখেও দেখিনি। ইচ্ছেও হয়নি কখনও। কিন্তু প্রায়-বেকার হলেও, তখন কাজ করি এক খপর কাগজে। জীবনের ঘষায় পারিবারিক মূল্যবোধের খোসা পাতলা হতে শুরু করেছে। সর্বোপরি আমরা এসেছি বাংরিপোসিতে এবং যে পানীয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তার নাম মহুয়া। কাজেই তা কোথায় পাওয়া যায় এবং কিভাবে আনানো যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে বৈকি।

    সুকন্যা ভুল বলেছে। মহুয়ার বোতল কিভাবে পাওয়া যাবে সে কথা আমরা ভাবছিলাম না। আমাদের মত দৈত্যদের তখন বোতলে পুরবে কে? সুকন্যা যখন ক্ষুধা ক্লান্তি ইত্যাদিতে বাহ্যজ্ঞান হারাচ্ছিল, আমরা সেই সময় পাঁচ লিটারের জেরিক্যান ভর্তি মহুয়া আনানোর ব্যবস্থা করছিলাম।

    নির্মিয়মাণ লজের চৌকিদার একজন মহিলা। এবং তার নাম জ্যাঠা। তিনি জানালেন কোনোই সমস্যা হবে না মহুয়ার ব্যবস্থা করা। এই তো লজের পেছনেই জঙ্গল, তার পর গাঁ। সেখান থেকে এনে দেওয়া যাবে। এক লিটারের বোতল সাড়ে তিন টাকা, পাঁচ লিটারের জেরিক্যান পনের টাকা। দামগুলো স্পষ্ট মনে আছে। (পরবর্তীকালে অন্যত্র এক জঙ্গলে খাস ভাটিখানায় বসে দেড় টাকা গ্লাস মহুয়া খেয়েছি। আরও পরে এক জায়গায় পাঁচশ মিলিলিটারের লেবেল-মারা বোতল কিনেও খেয়েছি মহুয়া। আর একবার কাঁকড়াঝোর কি আমলাশোলে গাছতলা থেকে বিস্তর মহুয়ার ফল কুড়িয়ে চেখে দেখেছি। তবে সে সব গল্প অন্য কখনো করা যাবে।)
  • ranjan roy | 122.168.46.36 | ২৮ মার্চ ২০১২ ০৮:১৯533795
  • বা: বা:! উমকি-অচিন্ত্যর যুগলবন্দী চলুক।
    ( মহুয়া নিয়ে কতা হলে ছত্তিশগড়ের "শুদ্ধ মহুয়া', ছুরি গাঁয়ের, নাম আসবেই। আমি স্যাম্পল্‌ হিসেবে দু'বোতল শান্তিনিকেতনে সাপ্লাই দিয়েছিলাম। ওরা স্বীকার করেছিল সাঁওতালপাড়ার প্রোডাক্টের থেকে আমাদের হ্যান্ডলুম ইন্ডাস্ট্রি উন্নত!)
  • achintyarup | 59.93.255.243 | ২৯ মার্চ ২০১২ ০৫:৩০533796
  • অরণ্যের দিনরাত...

    লজের উঠোনে (নাকি রাজবাড়ির আঙ্গিনায়) বাঁধানো কুয়ো। কপিকল লাগানো। দড়ি-বাঁধা বালতি রাখা আছে এক ধারে। সুকন্যা বাথরুমে ঢুকলে আমরা তিন মূর্তি নেমে আসি কুয়োতলায়। খানিক কসরত করে আধ-বালতিখানেক জল তুলতে পারি। দেখে হাসি হাসি মুখে এগিয়ে আসে একটি ছেলে। লজের কর্মচারি নিশ্চয়ই। বালতি বালতি হিম-ঠাণ্ডা জল তুলে সে আমাদের গায়ে-মাথায় ঢেলে দেয়। দিল জান কলিজা তর্‌র্‌ হয়ে যায়।

    মহুয়া কি এর মধ্যেই এসে গিয়েছিল? কুয়োতলায় গিয়ে বসার আগেই কি পাওয়া গিয়েছিল তার তীব্র মধুর স্বাদ? অত কিছু খুঁটিনাটি এতদিন পর কারই বা মনে থাকে। তবে স্নানের পর পান তো হয়েইছিল। সে কথা মনে আছে। তার পর থেকে এই আঠের বছরে দিশি বিলিতি বহু রকম সুধাপানের অভিজ্ঞতা হয়েছে, কিন্তু মহুয়া রয়ে গেছে প্রথম প্রেমের স্মৃতি হয়ে। তার গন্ধটুকু নাকে এলে এখনও স্থান-কাল ভুলি। বিভোর লাগে। কেউ কি গেয়েছিল, মহুয়ার দায় নেই মাতাল হবার? আমার ঘাড়ে সেই দায় চাপিয়ে সে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে মনে হয়।

    পিপাসা মেটায় মহুয়া। খিদেও ভোলায়। লজে খাবার ব্যবস্থা নেই। সামান্য দূরে, রাস্তার ধারের ঝুপড়িতে বলে দিলে তারা রান্না করে দেয়। ভাত, ডাল, আলুভাজা, ডিমের ঝোল। তবে ঘণ্টা দেড়-দুই আগে জানাতে হয়। কিন্তু সময়ের হিসেব রাখে কে? কখন যেন এক বার গিয়ে খাবারের কথা বলে আসা হয়। বেলা কত হয়েছে কে জানে। ঝুপড়িতে রান্না চড়ে, আর লজের বারান্দায় চড়তে থাকে নেশা। সুকন্যাও হয়ত যোগ দিয়েছিল ততক্ষণে। তবে স্পষ্ট মনে থাকা সম্ভব নয়, বুঝতেই পারছ।

    মাথার ভেতরে মদ গাঢ় হলে গলা বেয়ে গান নেমে আসে। তাল লয় ইত্যাদির দায়িত্ব কোনোকালেই আমার নয় যদিও। ভরসা এটুকুই, যে শ্রোতারাও কেউ তখন প্রকৃতিস্থ নয়। ঝিমঝিম নেশা লাগে। মাথার ভেতরে পাক খেতে থাকে সুর। নাকি সুরা? তাই হবে।
  • umki | 122.176.65.176 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১১:৩৩533797
  • সেদিন কি পুর্ণিমা ছিল? ডেকেছিল কি চাঁদ আমাদের?

    দুপুরের ডিমের ঝোল ভাত খেতে খেতে বিকেল। কোনো মতে বারান্দা থেকে উঠে মহুয়াকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বসিয়ে রেখে ঝুপরিতে গিয়ে ভাত খেয়ে আসা। অচিন্ত্যদের সে কি বিরহ ...

    ধীরে ধীরে আবছায়া হচ্ছে আশপাশ। অচিন্ত্য, সুমন আর বিপ্লব মহুয়াকে নিয়ে অর্ধ শায়িত লজের বান্দায়। আর আমি -- নেশা তখন হাওয়ায় নামে/ আকাশ থেকে ঝরা চাঁদে

    তখন সন্ধে। মহুয়াকে সঙ্গে নিয়ে নেমে এলাম বাগানে। পুরোনো রাজবাড়ির পোড়ো বাগান। কেউ কোথাও নেই। কাউকে চিনি না আমি/ আমাকে চেনে না কেউ ... চুঁয়ে চুঁয়ে আকাশ থেকে নেমে আসছে চাঁদ।

    এক এক ঢোক মহুয়া সর্বাঙ্গে জ্বালা ধরিয়ে নেমে যাচ্ছে গলা দিয়ে। একটু একটু করে চলে যাচ্ছে সন্ধেটা। ঘনিয়ে আসছে চাঁদের আলোয় আরো অন্ধকার। মাথার মধ্যে চুমু খাচ্ছে মহুয়া।।। এভাবেই কি হারিয়ে যাবে বাংরিপোসির রাত?

    আরো দু ঢোক মহুয়া। তিন প্রমাণ সাইজের মাতাল যুবক তখন মহুয়াকে সর্বাঙ্গে জড়িয়ে শুয়ে পড়েছে বারান্দায়। আমাকে তো যেতেই হবে চাঁদের জঙ্গল দেখতে।

    -- অচিন্ত্য, এই অচিন্ত্য, চল না জঙ্গলে যাই।

    -- উ: উউউউম।

    -- এই বিপ্লব ওঠ না।

    -- তুইইইইই যা।

    -- সুমন (এক ধাক্কা) জঙ্গলে যাব। চল।

    -- উউউ কেন?

    এরপর আর কোনো বাক্য বিনিময় চলে না। শারীরিক ধাক্কাধাক্কি এবং খামচানোর ঠেলায় তিন মাতালের উত্থান এবং জঙ্গল যাত্রা। অবশ্যই সঙ্গে আমি।

  • dd | 110.234.159.216 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১২:০৪533798
  • বোঝো।

    এতো কষ্ট করে বিদেশ বিভুঁই গিয়ে সুধু মহুয়ার বোতোল আঁকড়ে সকাল থেলে সন্ধ্যে পার করে দিলো। তিন যোয়ান মদ্দ।

    ঘন অন্ধকার চাঁদেল বনে পোকার অত্যাচারে কাহিল ,কষ্টভ্রমনের বাড়াবাড়িতে নাগরিক শরীরের যন্ত্রনা, আগত ডিনারে ফের ফের সেই ডিমের ঝোলের রেকারিং ডেসিমেল.... এই সব অবিরাম শোক ও জংগুলে অকর্মন্যতার হাত থেকে পরিত্রান পেতে রেতের বেলায় তো সিরিয়াস ড্রিংকিং করতেই হবে। সেটা কখন করবে ?

    তা নয়, সাপ খোপ, বাদুরের অ্যাতে ভর্ত্তি বনস্থলী, শ্যালের দাঁত খিঁচানো, প্যাঁচার রাগী চোখ, এইসব গেরাহ্যি না করে সেই আন্ধারেই বার হলো এক ন্যাকা ও গুন্ডা প্রকৃতির মেয়ের কথায়।

    পড়তেই আমার বুক ঢিপ ঢিপ করছে। তেষ্টা পাচ্ছে।
  • d | 14.96.158.114 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১২:১৫533799
  • না না মাঝরাত কিম্বা শেষরাতে দেখুন গে এরা ঐসব মেঠো সাপের ঝোল, ধেনো ইঁদুরের কালিয়া ইত্যাদি খেয়েছিল।
  • Jhiki | 219.83.85.197 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১২:৫৪533801
  • উমকি-অচিন্ত্য, দারুন লাগছে। dd দা, ন্যাকা আর গুন্ডা দুটো মিউচুঅ্যালি এক্সক্লুসিভ সেট।
  • dd | 115.242.168.230 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১২:৫৪533800
  • হা:।
    মাতালের দল সাপ ধরবে? সে প্লাস্টিকের হলেও কথা ছিলো। আর ইঁদুর ধরার কল নিয়ে গেছিলো বুঝি কলকেতা থেকে? না কি খালি হাতে খপ করে ধরবে?

    এ সব গুল্পো।

    হ্যা, যদি কোনো ফাস্ট ফুড চেইন থাকতো ম্যাক স্নেক বা র‌্যাটবার্গার, তাইলে ভাবা যেতো। আকন্দ পাতার উপর রেখে ধুতরো পাতার সস দিয়ে মেখে জোছনা রাতে খেতো। ময়ুর ফয়ুর উড়তো। কাব্যি হতো।

  • dd | 110.234.159.216 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১৩:৪৮533803
  • সব সময় ২৪/৭ কি আর গুন্ডামি চলে? গা ম্যাজ ম্যাজ করে না? তাছাড়া অন্যেরা ঘুমায়। একা একা শুনশান ভুবনে তখন হেই চাঁদ লতাপাতা দ্যাকোমাখো টাইপের ন্যাকাব্য চলে।

    প্রুভড।
  • siki | 155.136.80.36 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১৪:০৮533804
  • উমকি, এইবারে আমি পাহারা দিচ্চি, আর লেখা ভ্যানিশ হবে না। চালাও পানসি বাংরিপোসি।
  • Jhiki | 182.253.0.99 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১৪:১২533805
  • গুন্ডারা চাঁদ দেখে না এর স্বপক্ষে প্রমাণ কি? মহুয়া-আবিষ্টা গুন্ডীর গাছের মাথায় চেপে চাঁদ ছুঁতেও ইচ্ছে করতে পারে।
    Hence, not yet proved. :)
  • achintyarup | 115.111.248.134 | ২৯ মার্চ ২০১২ ১৭:১০533806
  • আমার সব বান্ধবীগুলোই বেশ গুণ্ডা প্রকৃতির। কিন্তু ন্যাকা ঠিক নয় বোধ হয় কেউই। আর বন্ধু (পুং) গুলো সব ম্যাদামারা, আমার মত।
  • Nina | 12.149.39.84 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২১:১৩533807
  • জমে উঠেছে ---যুগলবন্দী :-)

    ন্যাকা কথাটা বাঙালীরা বড্ড বাজে ভাবে নিয়েছে---অথচ কথাটা নাকি এসেছে "নেক" শব্দ থেকে অর্থাত কিনা ---নেক=ভাল' (আমি না শিবাংশু বলেছিল) !

    এই টই এর নেশায় একেবারে টই-টুম্বুর আছি----
  • umki | 117.194.236.177 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২২:৪৫533808
  • বাংরিপোসি তখন এক অখ্যাত জায়গা। অত রাতে কোথাও কোনো দুপেয়ে নেই। বাংলোর গেট ছাড়িয়ে পিচ বাঁধানো রাস্তা রুপোলি ফিতে, অদুরে কষ্টি কালো পাহাড়ের গা দিয়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। রাস্তার দু ধারে কালো ছোপ। দুরে পাহাড়ের গা দিয়ে কদাচিৎ নেমে আসছে লরি, অন্ধকার চিরে চলে যাচ্ছে দিগন্তে।

    আর তখন ...

    কি অসম্ভব আবেশে হেঁটে চলেছি চরাচর। ছলকে নামা চাঁদ তখন গাছের ফাঁকে। ও চাঁদ আমায় দেখতেই হবে। জঙ্গলে তখন টুপ টুপ করে চাঁদনি খসছে।

    .....শুনেছি এ জঙ্গলে নাকি হাতি বেরোয়
  • rimi | 168.26.205.19 | ২৯ মার্চ ২০১২ ২৩:৫৬533809
  • বাংরিপোসি দারুন হচ্ছে। চালিয়ে যাও।
    কিন্তু উমকি আর অচিন্ত্য এত অল্প অল্প করে লেখে কেন? আরেকটু বড় পোস্ট করতে কি হয়?
  • Nina | 12.149.39.84 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০১:১৫533810
  • সত্যি ! রিমিটা বড় হক কথা বলে ।
    এত কম কম কেন ?? ---চাঁদের আলো তো ঢেলে মাখিয়ে দেয় --মহুয়া তো হুলিয়ে নেশা দেয় (শুনেছি) --সেইসব কথা লিখতে গেলে ই শুধু
    টুপ টাপ টিপ টিপ :-((

    (চিন্টুবাবু কিছু শুরু কল্লেই দূগ্গানাম জপ করি--এই বুঝি থেমে গেল মাঝপথে--উমকি কে কি ভরসা কত্তে পারি??)
  • achintyarup | 59.93.244.83 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০৫:০৩533811
  • সন্ধের সময় বাইরে যাবেন না বাবু, হাতি নামে।

    হাতি নামে মানে? এখানে কি হাতির শিলাবৃষ্টি হয়?

    না বাবু, ওই পাহাড় থেকে নেমে আসে, বয়স্ক লোকটি কাঁচুমাচু মুখে হাসে। কাল সন্ধেবেলাতেও এসেছিল, ওই সামনেটায়। (কে লোকটা? জ্যাঠার পতিদেবতাই হবে নিশ্চয়ই। এর নাম কি তাহলে জ্যেঠি?)

    পাত্তা দিই না। উঠোন পেরিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ি। পিচ রাস্তা বরবর আস্তে আস্তে হাঁটতে থাকি পাহাড়ের দিকে। জোছনায় চমচম করছে চারদিক। চাঁদটাকেকে চোলাই করে মদ বানিয়ে কেউ যেন ঢেলে দিয়েছে বন-পাহাড়ের গায়ে।

    সন্ধে নেমে গেছে বেশ খানিক ক্ষণ। পাথুরে মাটি ঠাণ্ডা হচ্ছে দ্রুত। বুনো গন্ধ উঠছে পথের দুপাশের গাছ-গাছলা থেকে। দূরে পাহাড়ের গা বেয়ে ওঠা ভারি ট্রাকের গোঁ গোঁ আওয়াজ আবছায়া এসে কানে লাগে। ঝিঁঝির ডাকে ঝমঝম করে বাংরিপোসির রাত্রি। শীত শীত লাগে। চলতে চলতে দাঁড়িয়ে পড়ি ঢালের মুখটায় এসে। এখান থেকে পাহাড়ে চড়েছে পথ।

    সিমলিপালের অরণ্যের একটা কোনা ছুঁয়ে গেছে বাংরিপোসিকে। সামনের পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে এসেছে জঙ্গল। সেদিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি খানিকক্ষণ। এই পাহাড়টুকু পেরিয়ে গেলেই কি ফুলকিয়া বইহার? মহুয়া-ভেজা মন আমার হুহু করে ওঠে। সেই নীরব নিশীথরাত্রে জ্যোৎস্নাভরা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে মনে হয় এক অজানা পরীরাজ্যে আসিয়া পড়িয়াছি -- মানুষের কোন নিয়ম এখানে খাটিবে না। এই সব জনহীন স্থান গভীর রাত্রে জ্যোৎস্নালোকে পরীদের বিচরণভূমিতে পরিণত হয়, আমি অনধিকার-প্রবেশ করিয়া ভাল করি নাই।

    ফেরার পথ ধরি।
  • achintyarup | 59.93.244.83 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০৫:০৫533812
  • *চাঁদটাকে
  • Tirthang | 128.103.11.115 | ৩০ মার্চ ২০১২ ০৭:৩৩533814
  • তারপর? তারপর?
  • umki | 122.176.65.176 | ৩০ মার্চ ২০১২ ১৩:৪৫533815
  • তারপর....

    কে ফিরতে চায়? হুরিপরীদের না দেখেই ফিরে যাব? ফিরলে তো সেই একটাই বাগান, একটাই বারান্দা, একটাই ঘর আর তিনটে ছেলে।

    অনন্ত আলো অন্ধকারে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। কতক্ষণ! কতক্ষণ কেউ কোনো কথা বলি না। কতক্ষণ স্নিগ্‌ধ গভীর সাদা আলোয় স্নান করি। করেই যাই।

    -- এই চল তো আমরা যাই। ধরুক ওকে হাতিতে। (অচিন্ত্য)

    -- হাতি কি জিন নাকি? ধরবে মানে?

    -- আরে বলল না এখনে হাতি নামে। (বিপ্লব)

    -- নামুক না। দলে দলে পালে পালে। কালো কালো পাহাড়। বড় বড় গাছের ফাঁকে। দারুণ !

    -- শোন বাড়াবাড়ি করিস না। লজে চল (সুমন)

    -- ধ্যাৎ। তোরা যা, আমি যাব না।

    হতাশ। চূড়ান্ত হতাশায় ডুবতে থাকে তিনজন। ডুবে যেতেই থাকে।

    -- লক্ষ্মী মেয়ে চল না।। (সমবেত প্রয়াস।)

    করুণ, খুবই করুণ সেই মুখগুলো। মায়া হয়। আহা রে! অতএব চলে আসি, ফিরে আসি, একাকী হাঁটা পথে। ঢুকে যাই বাগানে, উঠে আসি বারান্দায়, খুঁজে নিই তরল গলানো নেশা।

    সামনে ছড়ানো বাগানে বুনো ফুলের হাসি। পেছনে সাদা দেওয়ালে এলানো আমাদের শব। বাঁ দিকে কুয়ো পারে খোলা চুলে কে যেন দাঁড়িয়ে। নিঝুম ভাঙাচোরা একটা রাত আরও ঘন হয়।

    আর আমরা -- এলিয়েই থাকি, জড়িয়ে থাকি, আকণ্ঠ মহুয়ায়।

    রাতের খাবার আসে কি? কে নিয়ে আসে? কেই বা নিয়ে যায়? মনে পড়ে না আজ আর কিছু।

    মধ্যরাতে শুতে যাই আমরা।

    একটা মাতাল মেয়ে আর তিনটে মদ্যপ ছেলে শুয়ে পড়ে একই সঙ্গে একই খাটে এবং ................... ঘুমিয়ে পড়ে।
  • Jhiki | 182.253.0.99 | ৩০ মার্চ ২০১২ ১৪:০১533816
  • ব্যাপক!
  • dd | 110.234.159.216 | ৩০ মার্চ ২০১২ ১৪:১৬533817
  • অবিমৃষ্যকারিতার একশেষ।
    কি না, পাচশো মাইল ঠেঙিয়ে বন বাদারে গিয়ে এক বালতি মহুয়া খেয়ে এলাম। সেটাই আবার বড় গলায় ব্যাখ্যান করছে দ্যাখো।

    আরে, কোথায় আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটকে এক হাত নিয়ে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এক ঝাঁকি দর্শন, পর পরই কিছু ইতিহাসের ছোটো ছোটো গুলতি আর ইন্টের্স্টিং কিছু ভুগোল আর জিওফিজিক্যাল ফ্যাকট্‌স।

    সবার শেষে নৃতঙ্কেÄর বুড়ি ছুঁয়ে কিছু লোকোগীতি গোছের ভ্যানোর ভ্যানর।
    তবেই না সার্থক রচনা।

    দু জনেই ফ্যাল।
  • kumu | 122.160.159.184 | ৩০ মার্চ ২০১২ ১৪:২৮533818
  • ভাল্লাগলো,আমিও এমন বেড়াতে চাই।
  • dd | 110.234.159.216 | ৩০ মার্চ ২০১২ ১৪:৫১533819
  • ছি ছি। কুমু। এ কি কথা?
    আমরা বড়োরা এরকম মদেল বেড়ানোর কথায় উল্লসিত হয়ে পরলে ছোটোরা কি শিখবে?
  • achintyarup | 115.111.248.6 | ৩০ মার্চ ২০১২ ১৮:১০533820
  • :-))))
  • kumu | 122.160.159.184 | ৩০ মার্চ ২০১২ ১৮:১৩533821
  • অ চিন্টুবাবু,যতটা লিখেছ,সেটা গুছিয়ে লিখলে কী সুন্দর একটা গল্প হয়!লেখো না--
  • Nina | 12.149.39.84 | ৩০ মার্চ ২০১২ ১৮:৪৪533822
  • উমকি
    কুর্নিশ, মেরি জান!!
    আরও আরও শুনতে চাই
    এমন মন-পাগোলের কথা
    এমন ইচ্ছেডানা মেলে
    কজন উড়তে পারে---
    উড়ল যদিবা --কজন পারে
    সেই আকাশের খোঁ জ দিতে?!
    যে পারে সে পারে---

    হে হে চিন্টু বাবু সঙ্গত ভাল হইসে:-)
  • rimi | 168.26.205.19 | ৩০ মার্চ ২০১২ ২০:১৮533823
  • ইসস!! একি ? হাতি না দেখেই ফিরে এলে? পাহাড়ে না উঠে, পরীদের না দেখেই চলে এলে??? তবে আরো বাকি আছে নিশ্চয়ই। পুরোটা লেখো।

    বাঙালী ছেলেরা, খুবই আশ্চর্য্যজনক ভাবে বরাবরই, চিরকালই খুব ভীতু। আমিও, অনেককাল আগে একবার মানালির কাছাকাছি আরেকটা জায়গায় গেছিলাম, নামটা ভুলে গেছি। আর তখন এইভাবেই এক রামভীতু ছেলে আমাকে জঙ্গলে ঢুকতে দেয় নি, নাকি বাঘ আছে :-(( পার্বতী নদীর ঠিক কিনারে একটা ছোট্টো লজ ছিল, যেটায় কোনো ইলেক্ট্রিসিটি ছিল না, একজন কেয়ারটেকার ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনো লোকও ছিল না। আমরা সেখানে থাকতে গেছিলাম এক রাতের জন্যে, একটা ছোট্টো ঘুপচি মাটির ঘরে প্রদীপ জ্বালানো ছিল। আমার দারুণ লাগছিল, বেশ একটা ভৌতিক ভাব। কিন্তু সেই ভীতু ছেলে প্রথমে একদম চুপ করে ছিল, তারপরে বলল, তার নাকি মা'র জন্যে মনখারাপ করছে!!!! :-o তারপরেই আমাকে জোর করে সেই লজ থেকে বের করে এনে ছুটতে ছুটতে ব্রিজ পার হয়ে নদীর ওপারে। ওপারে গিয়ে ঘিঞ্জি বাজারের মধ্যে একখানা ঘর ভাড়া নিয়ে তবে তার শান্তি। পরের দিন বাকি বন্ধুরা এসে ওখানে পৌঁছে যখন সব শুনল, তারা তো হাঁ। বিশেষ করে ঐ লজের লোকটাকে সত্তর টাকা দেওয়া হয়ে গেছিল, আর বাথরুমে আমার ক্রিম, টিপ ইত্যাদি জিনিষ ছিলো, সেগুলো নেবারও সময় পাই নি। সেই গরীবদশায় সত্তর টাকা আর পাঁচ টাকার টিপের পাতাও বিরাট মূল্যবান ছিল।
    কিন্তু জায়গাটার নামই মনে পড়ছে না ছাই। ওখান থেকে আমরা ক্ষীরগঙ্গা পর্যন্ত ট্রেক করেছিলাম।
  • Nina | 12.149.39.84 | ৩০ মার্চ ২০১২ ২০:৩১533825
  • হয়ত বা সেই রামভীতুর জন্যি আজ বসে ইহা লিখিলে গো রিমি-সাহসী-কন্যে ;-)
    নইলে হয়ত বাঘের পেটে কবর হইত---হয়ত বা------
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন