এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রুপঙ্কর সরকার | 126.203.184.59 | ১৯ মে ২০১৩ ১৬:১৮605285
  • আর একটা কথা না বললে নিজের প্রতিই অবিচার হবে, ডিসক্লেমার সত্বেও।

    সেই শুরু থেকে এই পর্যন্ত এতদূর যে লিখলাম, আমার তো স্মরণে নেই উৎপলবাবু আন্ডার অ্যাক্টিং করতেন কোথাও লিখেছি বলে। তিনি হিন্দী ছবিতে কমিক-ভিলেন রোল করার সময়ে নিশ্চয়ই আন্ডার অ্যাক্টিং করতেননা। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় ভূতের ভবিষ্যতে হাত কাটা কাত্তিকের ভূমিকায় নিশ্চয়ই 'আন্ডার অ্যাকটিং করেননি। ওভাবে 'তকমা' বোধহয় কাউকেই দেয়া যায়না। বিশেষ বিশেষ অভিনেতা, বিশেষ বিশেষ জায়গায় আন্ডার অ্যাকটিং করে থাকেন, বিশেষ উদ্দেশ্যে। আমার এখনও মনে হয় টিনের তলোয়ারের প্রথম দৃশ্যে উৎপলবাবু খুব মেপে আন্ডার অ্যাক্টিং করতেন ।

    মিড সামার নাইট'স ড্রীম অনুবাদ করে চৈতালী...ইত্যাদি নাটকটা লেখা ১৯৬৪ সালে। তখনকার কনসেপ্ট এত সেরিব্রাল হয়নি সম্ভবতঃ । নাট্য অ্যাকাডেমি অনেক পরে প্রযোজনা করলেও সংলাপ বা ধারা তো বদলানো যায়না। আগেই তো বললাম, এখন 'প্রফুল্ল' করলে অর্ধেন্দুবাবুর মতই করলে ভাল।
  • kumu | 132.161.163.148 | ১৯ মে ২০১৩ ১৯:২২605286
  • গোলা লোকের প্রশ্ন-
    ১।আপনি নিজে ঐ দৃশ্যটি কিভাবে করতেন?
    ২।মঞ্চ বা পরিবেশ অনুযায়ী অভিনয়রীতি বদলাবে?যেমন একই নাটক নন্দনে ও দিল্লীর পুজোপ্যান্ডেলে অভিনয় করলে অন্য রকম হবে?
  • রুপঙ্কর সরকার | 126.203.221.79 | ১৯ মে ২০১৩ ২০:৪৬605287
  • গোলা কেন, সমুচিত প্রশ্ন।

    উত্তর দেয়ার সাধ্যমত চেষ্টা করছি।
    ১) কিভাবে করতাম না, করে ফেলেছি তো (স্মাইলি)। তবে প্রথমে খুব সংশয় ছিল, অত মহান লোকের নিজের লেখা নাটকের নিজের জন্য তৈরী করা চরিত্র করব। তার ওপর ড্রেসার মেক-আপ ম্যানরা বললেন, উনি যা পরতেন, সেই আলখাল্লাই পরতে হবে, সেই মেক-আপই নিয়ে হবে, এক্সট্রা কিচ্ছু পাবেন না। যাক নাট্য দেবতাকে স্মরণ করে নামতে গিয়ে একটা কথা খেয়াল রেখেছিলাম সারাক্ষণ,- ভুলেও যেন ওনার কপি করতে না যাই। অত্যন্ত হাস্যকর ব্যাপার হবে। একদম অন্যরকম করার চেষ্টা করেছি। মধুসূদন কে মুসুসূদন বলিনি। একদম মাতলামিই করিনি। যদি ইউ টিউব দেখে থাকেন, তবে প্রথমেই বলা আছে -'চার পাঁইট বাংলায় আমার কিস্যু হয়না' - তাই কিস্যু হয়নি বলে চালিয়ে গেছি। খালি সোজা হাঁটার সময়ে একবার সামান্য হোঁচট খেতে গিয়ে সামলেছি। তা না হলে বিচ্ছিরি হ'ত। পরের বার আবার একটু অন্য রকম করেছি। লিঙ্ক দিলাম( একেবারে ডান দিকে আমি, ৩২ বছর আগে) https://www.facebook.com/photo.php?fbid=210175449019439&set=a.210173022353015.54282.100000809550506&type=3&theater

    ২) নন্দন আর পূজো প্যান্ডাল কেন, নন্দন আর অ্যাকাডেমিতেও তফাত হয়, যেখানে অ্যাক্যুস্টিক্স যেরকম, সেই ভাবে অ্যাডজাস্ট করতে হয়, পিচ, বাড়াতে কমাতে হয়, দেয়াল যুতসই হলে ৪৫ ডিগ্রী অ্যাঙ্গলে থ্রো করে তার সুযোগ নিয়ে হয় এবং এগুলো কেউ আগে থেকে শিখিয়ে দিতে পারেনা, বোর্ড রিহার্সালের দিন মোটামুটি আন্দাজ পাওয়া যায়, দু-এক নাইট শো হবার পর চেনা শোনা লোকের কাছে ফীডব্যাক নিয়ে শোধরাতে হয়। এইরকম আর কি।
  • ন্যাড়া | 132.179.111.129 | ১৯ মে ২০১৩ ২১:০৭605288
  • রূপংকরবাবু কি এলটিজি/পিএলটি-তে ছিলেন?
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.221.79 | ১৯ মে ২০১৩ ২১:১৫605289
  • পিএলটিতে ছিলামনা। থাকলে ঐ রোল করতে দিত? আমি ছিলাম চতুর্মুখ/মুকুর-এ। তবে এল টি জি র ব্যাপার প্রথম থেকেই দেখেছি ( তখন বাচ্চা) আমাদের বাড়িতেই নাটকের সাজ সজ্জা তৈরী হত। গ্রুপের পত্তন ও নামকরণ করেছিলেন আমার বড়মামা (দিলীপ রায়)। অনেকে অবশ্য জানেন ওটা উৎপলবাবুর কাজ। তবে আমার যা বলার বলে খালাস। এই নিয়ে কোনও বিতর্ক উঠলে আর কিচ্ছুটি বলবনা।
  • dukhe | 127.194.237.32 | ১৯ মে ২০১৩ ২৩:০৯605290
  • কিং লিয়র দেখে আমি প্রচণ্ড হতাশ হয়েছিলাম, তাই ও নিয়ে কিছু না বলাই ভালো।
    কিন্তু শিশির ভাদুড়ি গিরিশ ঘোষ প্রমুখ আগেকার দিনের অভিনেতারা ওভার অ্যাক্টিং করতেন, আর এখন অভিনেতারা অনেক সেরিব্রাল হয়ে আন্ডার অ্যাক্টিং করছেন এইটা যদি বক্তব্য হয় (আশা করি তা নয়), তাহলে একেবারে পোবোল চন্দ্রবিন্দু রইল।
    যুগে যুগে লোকের কথা বলার ভঙ্গি পাল্টায়, ভাষা পাল্টায়, সমাজ পাল্টায়। অভিনয় যেহেতু ভীষণ শরীরী ব্যাপার এবং এগুলোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, এক সময়ের অভিনয়ের সঙ্গে পঞ্চাশ বছর পর দর্শক রিলেট করতে পারে না।

    তবে তর্ক অ্যাপার্ট, আপনার অভিনয় সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা শুনতে আগ্রহী।
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.222.29 | ১৯ মে ২০১৩ ২৩:৩৪605291
  • কিং লীয়র দেখে হতাশ হয়েছেন, তা বেশ। কিন্তু শিশির ভাদুড়ি আদি অভিনেতারা ওভার অ্যাক্টিং করতেন, আর এখন কার অভিনেতারা পোবোল আন্ডার অ্যাক্টিং করেন, তাই কি বল্লুম? আমাদের মনোজ(বাঞ্ছারাম) মিত্তিরদাই তো বেশ ওভার অ্যাকটিং করেন। আমি যা বললাম, তা হ'ল, এই আন্ডার বা কন্ট্রোল্ড অ্যাক্টিং এর কনসেপ্ট টা আধুনিক। আগে ওভার না হলেও বেশ লাউড গোছের অ্যাক্টিং হত। লাউড অর্থে চ্যাঁচানো নয়, চড়া। তার অনেক কারণও ছিল। সেগুলো মোটামুটি আপনিই পরের লাইনে বলে দিয়েছেন। চন্দ্রবিন্দুটা আপাতত ক্লেম করছিনা, পরে দেখা যাবে। (স্মাইলি)
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২০ মে ২০১৩ ০৯:৪২605292
  • বোঝাতে পারছি না। বক্তব্য এই যে সেরিব্রাল দর্শক এবং সেরিব্রাল অভিনেতা কোনো যুগের একচেটিয়া নয়। আজ যে অভিনয় দেখে আমরা মুগ্ধ হচ্ছি, সেটা হয়তো আমাদের নাতিনাতনীদের পোষাবে না। তার মানে এই নয় যে তখনকার অভিনয়টা সেরিব্রাল বা সূক্ষ্ম আর এখনকারটা না।
    শিশির ভাদুড়ি কোন একটা নাটকে ভীল সর্দারের ভূমিকায় এক চরম মুহূর্তে দুপায়ে মল পরে স্টেজের ওপর লাফাতেন। শম্ভু মিত্রের অভিজ্ঞতা হল একটা পঞ্চান্ন বছরের লোক এইটা করলে এমনিতে হাসি পেয়ে যাবার কথা, কিন্তু শিশিরবাবুর সেই অভিনয় ওনাকে এবং সহ-দর্শকদের স্তম্ভিত করে রাখত। আজকের দিনেও মেঘনাদবধে ইন্দ্রজিতের মৃত্যুর পর বিভীষণের বিলাপে গৌতম হালদারকে দেখুন। চরিত্র কী দাবি করছে এবং অভিনেতা তাকে কীভাবে প্রকাশ করছে - এটাকে ফর্মুলায় ফেলা বা গোদা বনাম সূক্ষ্ম ক্যাটেগরিতে ফেলে দেওয়া পয়েন্টলেস।
    সচরাচর বেশি-বেশি ক'রে প্রকাশ করা হচ্ছে - এমন অভিনয়কে আমরা ওভার অ্যাক্টিং বলতে অভ্যস্ত। কিন্তু শম্ভুবাবুর লেখায় আছে পল্লীসমাজের অভিনয়ে একটি ছেলে রমেশ সেজেছিল। মানানসই চেহারা, শরৎচন্দ্রের বাস্তবসম্মত সংলাপ ব'লে গেল, সবাই বলল দিব্বি 'ন্যাচারাল' হয়েছে। চলতি ভাষায় এটা 'আন্ডার অ্যাক্টিং' যেহেতু সে লাউড কিসু করেনি। কিন্তু শম্ভুবাবু বুঝতে পারলেন না এইটা যদি ভালো অভিনয় হয় তাহলে অভিনেতার কাজটা কী। মোটামুটি চলনসই চেহারার যে কোনো যুবক, যার উচ্চারণ ঠিকঠাক, বেসিক বুদ্ধিসুদ্দি আছে সে-ই তো এটা করতে পারবে। তো ওভার অ্যাক্টিং যদি লাউড বা বাড়াবাড়ি হয়, আন্ডার অ্যাক্টিং মানে কম-কম যাকে বলে নন-অ্যাক্টিং। তাই বলেছিলাম অ্যাক্টিং হল অ্যাক্টিং - ওভার বা আন্ডারের মধ্যে ব্যালান্স পয়েন্ট।
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.216.197 | ২০ মে ২০১৩ ১৩:০১605293
  • বোঝাতে সম্ভবতঃ আমিও পারিনি। আসলে আমরা কেউই ঠিকমত মনের ভাব অপরকে ব্যক্ত করতে পারিনা। এগুলোর জন্য অনেক ফ্যাকটর রেসপন্সিবল।, যাকগে, আর একবার বলি, আগেরটা গোদা আর এখন সেরিব্রাল - ঠিক এক্স্যাক্টলি এই কথা বোধহয় বলিনি কোথাও। আর একবার চেষ্টা করে দেখি -

    আগেই বলেছি দুটো মাধ্যম ( আরও অনেক আছে, প্রধানতঃ সিনেমা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলাম, পরে নাটক যোগ হ'ল) এখন বেশ কিছু ছবি যদি কম্পিউটারে বা ল্যাপটপে দেখেন হেডফোন না লাগিয়ে, কিছু কিছু চরিত্রের কথাই শুনতে পাবেননা। সিনেমায় বসলে পাবেন, কেননা বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে কানে পৌঁছে দেয়া হবে। সেই চরিত্রের ফেসিয়াল এক্সপ্রেশনও খুবই কম। এই ব্যাপারটা পরে আসছি -

    আগে আমরা ছায়াছবিতে ( নাটকেও) অভিনেতার রাগ, দুঃখ, আনন্দ ইত্যাদি অভিব্যক্তি দেখতাম বেশ চড়া ভাবে। যাকে আমি 'লাউড' বলেছি আগে। তেমন করতে হ'ত, আমিও করেছি, সবাই করেছে। আমাদের আগের জেনারেশনের অভিনেতারা আরো বেশি করে করতেন, সেটাই সমাদৃত হত। এবং সেই ব্যাপারটাকে আমি খাটো করে দেখাইনি কোথাও।

    এরপর এল স্বাভাবিক ভাবে কথা বলা এবং বিশেষ মুহূর্তে অভিব্যক্তি নয়, সংলাপে বা আবহে জোর দিয়ে ব্যাপারটার নাটকীয়তা বোঝানো। উদাহরণ দিই - আপনি নাটক ভালই দেখেন বোঝা যাচ্ছে। এবার নান্দীকার ( ভেঙে যাওয়ার আগে) প্রযোজিত 'শের আফগান' নাটকের কথা চিন্তা করুন, অজিতেশ বাবু একটুও গলা না তুলে, চোখ পিটপিট না করে ( ওটা আবার ওঁর 'ফোর্টে' ছিল), ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে 'ঝাঁই' করে জগঝম্পো না করে খুব স্বভাবিক গলায় বললেন, ওই চশমা পরা লোকটা ডাক্তার, না?' ভেবে দেখুন, ওই জায়গাটা কিন্তু দর্শকের রোম খাড়া করা ক্লাইম্যাক্স। আমরা সেই যাকে আজকাল 'জঁ' বলে, সেই একটা নতুন জঁ এর শুরু দেখতে পেলাম। আপনি কিছু আগে, অজিতেশ, উৎপল, শম্ভু মিত্র এইসব নাম একত্রে করেছিলেন। আমি একটু আপত্তি জানাই, শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র এবং শ্যামল ঘোষ ( পরে শাঁওলিও) এঁদের উচ্চারণ হাইলি স্টাইলাইজড। খারাপ ভালোর দিকে যাচ্ছিনা, তবে এগুলোকে স্বাভাবিক বাচন বলতে আমার অন্ততঃ ছোট্ট আপত্তি।

    এইবার আসি আসল কথায়। নাটকে কিছু কম, ছায়াছবিতে কিছু বেশি, নতুন একটা ধারা দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিকের কম। আবার ফিরি গিরীশ যুগে, তখন ছিল স্বাভাবিকের বেশি। তারপর উৎপলবাবু, অজিতেশবাবু, রুদ্রবাবু, অসিত বন্দ্যো, চেতনা গোষ্ঠি, এঁরা আনলেন স্বাভাবিক বাচন। সেইভাবে সিনেমাতেও অহীন্দ্র/দূর্গাদাস/ শিশির যুগে একরকম বাচন তারপর ছবি/পাহাড়ি/ধীরাজ যুগে আর এক রকম। এল উত্তম/সৌমিত্র।অনিল যুগ -কথা বলার স্টাইল অনেক অন্যরকম হয়ে গেল। এইবার একটা কথা -

    আবার যদি পিছিয়ে প্রমথেশ বড়ুয়ার ছবি দেখেন, দেখবেন তাঁর বাচন ভঙ্গী অন্যরকম। সে সময়ের সঙ্গে খাপ খায়না। তাই বলা হ'ত, প্রমথেশবাবু ৫০ বছর পরের অভিনয় করতেন।

    এখন একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে, বাংলা ছায়াছবিতে খুব একটা নয়, তবে আন্তর্জাতিক ছবিতে তো বটেই, বেশ কিছু ভারতীয় ছবিতেও - যে, অভিনেতাদের কথা এবং অভিব্যক্তি স্বাভাবিক আমজনতার সেই ধরণের রিঅ্যাকশনের চেয়ে বেশি তো নয়ই, স্বাভাবিকও নয়, তারচেয়েও কম। যেমন চিত্রশিল্পে 'মিনিমালিজ্‌ম' এসেছে, সেরকম না হলেও সেই ধাঁচের। দর্শকের বুদ্ধি বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে ব্যাপারটা। ওটাই 'আন্ডার' অ্যাকটিং।

    এর পর আমি হাত তুলে সারেন্ডার। আমায় ছেড়ে দেন সার, আর এমনটি কোর্বোনা।
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২০ মে ২০১৩ ১৪:০৪605141
  • আরে না না - চাট্টি মিনিময় না হলে চলবে কী করে? ঃ)
    আমার বরাবরের আক্ষেপ দুর্দান্ত সব প্রযোজনা ধরে রাখা হয়না - অডিও কয়েকটা আছে, ভিডিও তো নেইই। আগেও তাই, এখনও। অজিতেশের 'শের আফগান' আমি শুধু কল্পনাই করতে পারি।

    কিন্তু টিনের তলোয়ারেই "আমি দেবতার মতন একা, ঘৃণার মত একা" হাহাকারকে কি 'স্বাভাবিক' অভিনয়ের কোঠায় ফেলা যাবে? বা "বেণীমাধব চাটুজ্জে পাথরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে, কাষ্ঠপুত্তলিকায় প্রাণ দিতে পারে, সব গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করতে পারে" এই আস্ফালন? বা অজিতেশের 'মঞ্জরী আমের মঞ্জরী'-র বাড়ি কিনে ফেলার পর সেই দীর্ঘ মনোলগ (অজিতেশের অনেক নাটকেই যা কমন)?
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.215.95 | ২০ মে ২০১৩ ১৫:৪৩605142
  • আমি তো টিনের তলোয়ারের শুধু একটা দৃশ্যের একটা অংশের কথা বললাম। কিন্তু, 'বেণীমাধব চাটুজ্যে পাথরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে, কাষ্ঠপুত্তলির চক্ষু উন্মীলন করতে পারে' ( এই জায়গাটা মনে হয় এইরিকম ছিল) - এ অংশটা চেপে অভিনয় করলে হবে? তা ছাড়া ওই মোনোলগ কোথায়? কোন জায়গায়? সে তো প্রিয়নাথকে আত্মম্ভরিতা দেখানো। সেখানে তো ইচ্ছে করেই যাত্রা প্যাটার্নের বাচন ভঙ্গী। ওটা তো ডেলিবারেট।

    আন্ডার অ্যাক্টিং ব্যাপারটা এমনিই কঠিন। তারপর পুরো সময় ধরে করে যাওয়া প্রাকটিকালি ইম্‌পসিব্‌ল।

    মঞ্জরীতে তো পুরুলিয়ার ডায়ালেক্ট। ওখানকার স্থানীয় ভাষা ওমনিই। শহুরে সফিস্টিকেশন নেই সেথায়।

    তা ছাড়া আরো আছে। আমি এবার একটা ছায়া ছবির উদা দিই, একেব্বারে হালের ছবি। টাটকা। গ্যাঙ্গস অফ ওয়াসেপুর দেখুন। রামাধীর সিং-এর ভূমিকায় অভিনয় দেখুন। অভিনেতা মহাশয়, ছোট নেতা থেকে বিধায়ক, সেখান থেকে মন্ত্রী হলেন। প্রথমে চ্যাঁচাতেন, রেগে যেতেন, লোকে দিব্যি বুঝত। এবার বয়স বাড়ছে, রাজনৈতিক ওজনও বাড়ছে। এক্সপ্রেশন কমে যাচ্ছে, কথা আস্তে হচ্ছে, শেষে এমন আস্তে হ'ল, যে কানে হেডফোন না লাগালে শুনতে পাবেননা। এটা করা হ'ল তাঁর রাজনৈতিক ওজন বৃদ্ধির ক্রমপর্য্যায় দেখাতে। কোন নেতা এভাবে কথা বলে? বুদ্ধবাবু বলেন ? লালুজী বলতেন? মুলায়ম? আর দিদিমনি শুনলে তো অজ্ঞান হয়ে যাবেন। ওটা স্বাভাবিক নয়। কিন্তু আপনি দেখে বুঝলেন ক্ষমতা পেলে মানুষ কেমন হয়।তখন চেঁচিয়ে জাহির করতে হয়না। ভাল লাগল কিনা অন্য ব্যাপার। এক এক জনের ভাল লাগা এক এক রকম।

    রিচার্ড বার্টনের 'বেকেট' দেখুন। পিটার ও'টুল যত হম্বিতম্বি করেন, রিচার্ড তত আস্তে বলেন। ওটা কন্ট্রাস্ট দেখাতে করা হয়েছে। হাল আমলের নাটক খুব একটা দেখা হয়না, তাই এক্ষুণি নাটক থেকে উদা দিতে অপারগ।
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২০ মে ২০১৩ ১৬:০৪605143
  • থ্যাঙ্কু, সংলাপটা আপনি শুধরে দিলেন। আমারও লিখে খটকা লাগছিল, কিন্তু ঠিক মনে পড়েনি।
    আমি সেটাই বলছি - অভিনয়ে 'স্বাভাবিকতা' একটি গোলমেলে বস্তু। গলা ডেলিবারেটলি চড়ানো কেন? না চরিত্রকে প্রকাশ করতে। আন্ডার দিয়ে চলবে না। ঝুলে যাবে। যে কোনো বড় অভিনেতাই ইমিটেট করার বেশি কিছু করেন। যাকে বলে স্টাইলাইজড অ্যাক্টিং। "আমি দেবতার মতন একা ঘৃণার মতন একা" এ স্বাভাবিক কথাই নয়, দৈনন্দিন তো ছেড়েই দিন, আমরা সারা জীবনে কাউকে এরকম বলি না। একসঙ্গে হাহাকার দীর্ঘশ্বাস অভিমান সব আনতে হবে, অথচ নেতিয়ে গেলে চলবে না, চরিত্রের প্রবল পৌরুষ ধরে রাখতে হবে। এটায় একদিকে যেমন বাড়াবাড়ি হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা, আবার অন্যদিকে স্বাভাবিক বা আন্ডারের খোপে ফেলে দিলে অভিনেতা এটা বলতেই পারবে না। যে জন্য ভার্স বলতে অভিনেতাদের অসুবিধে দেখে উৎপল ক্ষুব্ধ হতেন। সূক্ষ্ম একটা ব্যালেন্স খুঁজে বের করতে হয়।

    মঞ্জরীর ভাষা নয়, অভিনয় নিয়ে প্রশ্ন।
  • kallol | 125.241.55.176 | ২০ মে ২০১৩ ১৬:৩০605144
  • আন্ডার অ্যাকটিং হয়। বরং স্বাভবিক অ্যাকটিং বলে কিছু হয় না। অভিনয় ব্যাপারটাই "অস্বাভবিক"। আপনি নিজের জীবনে কোন একটি প্রেক্ষিতে যেমন আচরণ করেন তেমনটি করলেই অভিনয় হয় না। সে নাটকে বা সিনেমায় কোনটতেই হয় না। কারন, চরিত্রটি আপনি নিজে নন, অন্য কেউ। অভিনেতাকে ভাবতে হয় সেই চরিত্র সেই প্রেক্ষিতে কেমন আচরণ করতে পারে। কিন্তু সেটা কি দিয়ে ঠিক হবে বা কে ঠিক করে দেবে? অভিনেতা ও কিছুটা পরিচলক (নাটক), পরিচলক ও কিছুটা অভিনেতা (সিনেমা)।
    নায়কে অরিন্দমের প্রথম শ্যুট, প্রবীণ অভিনেতটির সাথে। দেবী চৌধুরাণী ব্রজেশ্বর ও তার বাবা। উত্তমের অভিনয় দেখুন। বাবা কিছু বলছেন, বেশ তেড়িয়ে। উত্তর দিচ্ছেন উত্তম দাঁড়িয়ে, মাথা নীচু করে, নীচু গলায় একটু দ্বিধার সাথে। ছেলের আত্মবিশ্বসের অভাব প্রকট। এটা আন্ডার অ্যাকটিং। কিন্তু আর সব কিছু এক রেখে শুধু শরীরের ভঙ্গিমা পাল্টে দিলেই ওটাই লাউড হয়ে যেতো - একটু ঝুঁকে দাঁড়িয়ে হাত জোর করে কথাগুলো ওভাবেই বললে।
    ঐ উৎপল দত্তের মসূসূদন বলার মতো। ওটাই মৌদুসুদন বল্লে লাউড হয়ে যেতো।
    কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে অভিনয় লাউড অথবা আন্ডার করতে হয়। এটা ভালো ওটা খারাপ এরকম কিছু নেই। মে-ঢা-তা এ সুপ্রিয়া আর অনিল শেষ দৃশ্যে যদি বিড়বিড় করে ঐ সংলাপগুলো বলতো, তাহলে ছড়িয়ে ছাপ্পান্ন হতো।
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২০ মে ২০১৩ ১৬:৪৫605145
  • আমার কেমন সন্দেহ হচ্ছে সবাই একই কথা বলছি - বিভিন্ন টার্মিওলজিতে।
  • pi | 78.48.231.217 | ২০ মে ২০১৩ ১৭:১৫605146
  • অর্বাচীনের মত একটা কোশ্চেন করি।
    নাটক মিডিয়াম হিসেবেই একটু চড়া না ? নাটক আর সিনেমার অ্যাক্টিং নিয়ে কি একসাথেই আলোচনা হতে পারে ?

    দুখেদা যেটা বল্লেন, স্বাভাবিকতা প্রসঙ্গে, নাটকের যেসব সংলাপ, ওগুলো স্বাভাবিকভাবে দৈনন্দিন কি সারা জীবনেও অনেকসময় আসেনা। সেগুলো বলার সময়েও স্বাভাবিক থাকতে হবে ?
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.188.15 | ২০ মে ২০১৩ ১৮:০১605147
  • এ আলোচনা বা আলুচানা চলতে থাকলে রেল লাইন। পাশাপাশিই চলবে। অবশ্য অধিকাংশ আলোচনাই তাই।

    পাই, তোমাকে একটা নাটক পাঠিয়েছি, সেটা পড়েছ কি? প্রথম দৃশ্যে সবাই স্বাভাবিক কথা বলছে। এক্কেবারে স্বাভাবিক। কোনও বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠান ধরে নিতেই পার। মানে, এরকম ঘটনা যদি তোমার আমার বাড়িতে হয়, এইরকম কথাবার্তাই হবে বলে মনে হয় ( আবার বলি, আমার মনে হয়)। নাটিকটা শিগ্‌গিরইই হবে, তবে করছে একটা এলেবেলে গ্রুপ কেমন করবে, বা ওখানে গিয়ে আমার কথার প্রমাণ দিতে পারব কিনা জানিনা। হয়ত দেখা গেল এই সব ঘরোয়া কথাই খুব চেঁচিয়ে বলছে বা 'নাটকীয়' করার চেষ্টা করছে।

    নাটক মিডিয়াম হিসেবে চড়া ঠিক বলবনা তবে অন্যরকম তো বটেই, যে জন্য উৎপলবাবু এত সফল নাট্য পরিচালক হয়েও সিনেমা করতে গিয়ে গোল খেয়েছেন।

    তবে অ্যাক্টিং নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। তবে টুকরো টুকরো ভাবে। কেমন বলি। নাটক কন্টিনিউয়াস কিন্তু মুভি আলাদা আলাদা করে তুলতে হয় শুধু না, আমি যেদিন বাবার হাতে চড় খেলাম, কাঁদতে শুরু করলাম হয়তো তিন মাস পরে। একই রকম আবেগ ধরে রাখা, একটা মোশন চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সত্যি খুব কষ্টসাধ্য। তবে সেটা হচ্ছে কিনা দেখার জন্য পরিচালক, সম্পাদক অনেকে আছেন, অভিনেতার দায়িত্ব কমে গেল অনেকটাই। কিন্তু যতখানি একসঙ্গে দেখা গেল, সেখানে যদি ক্যামেরার বিশেষ অ্যাঙ্গল ট্যাঙ্গল বা স্পেশাল এফেক্ট কিছু না থাকে, তবে সেইটুকু অংশ নিয়ে নাটকের সঙ্গে কম্পেয়ার করা যেতেই পারে।

    এবার একটা অন্য উদা দিই। আলফ্রেড হিচককের রোপ(রশি) নামে একটা মুভি আছে। ওটা সিনেমাটোগ্রাফির একটা বিশেষ উদাহরণ। ছবিটা ক্যামেরা রোল করে শুরু হয়েছে আর শেষ হয়েছে ২/২,৫ ঘন্টা পরে। টানা অভিনয়, কোনও যতি বা ছেদ নেই। প্রত্যেকটি চরিত্র বাড়িতে যেমন কথা বলি, তেমনি বলেছে। এটার সঙ্গে নাটকের তথাকথিত 'স্বাভাবিক' অভিনয়ের তুলনা করা যেতেই পারে।
  • kallol | 125.242.159.36 | ২০ মে ২০১৩ ২২:২২605148
  • নাটক চড়া কি চড়া নয়, সেটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। বিষয়বস্তু ও তার ট্রিটমেন্ট এবং প্রেক্ষাগৃহ। ব্যাঙ্গালোরের রঙ্গশংকরায় সংলাপ স্বাভাবিক টোনে বলা যায়। তিনশো লোক শুনতে পায়, মাইক ছাড়া। রবীন্দ্রসদনে মাইক ছাড়া করলে গলায় চাপ পড়বে, তাতে অভিনয়ও চড়া হবে। মাইক থাকলে অভিনেতা থেকে সবচেয়ে কাছের মাইক কত দূরে তার ওপর নির্ভর করে সংলাপের চড়াত্ব, ফলতঃ অভিনয়ের চড়াত্ব।
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.201.206 | ২১ মে ২০১৩ ০৯:৪৭605149
  • ঠিক এই কথাটাই আগে একবার আলোচনা করেছি। তবে প্রতিষ্ঠিত নাট্যমঞ্চ ও প্রতিষ্ঠিত নাট্যদল মোটামুটি মাইক ব্যবহার করেননা। ওগুলো হয় প্যান্ডাল বেঁধে কল শো করার সময়ে। যে কোনও সাধারণ মানের রঙ্গমঞ্চও অ্যাক্যুস্টিক্সের হিসেব রেখে তৈরী হয়। তাতে নরমালি মাইক লাগার কথা নয়। তবে তার মধ্যে হেরফের তো হবেই। অ্যাকাডেমি বা জ্ঞানমঞ্চের অ্যাক্যুস্টিক্স অতি উচ্চ মানের। রবীন্দ্রসদনও যথেষ্ঠই ভাল। ওদিকে এক সময়ে শ্যালদায় রেলের নেতাজি সুভাষ মঞ্চে নাটক হত। রিভল্ভিং স্টেজও ছিল, তবে অ্যাক্যুস্টিক্স মাথায় রেখে মঞ্চ তৈরী হয়নি। অভিনেতাদের কাল ঘাম ছুটত, অথবা মাইক লাগানো হত।

    আর একটা কথা যোগ করি, অ্যাক্যুস্টিক্স খারাপ হলে গলার জোর বাড়াতে হবে, কিন্তু অভিনয় চড়া না করলেও চলবে। অভিনয় চড়া মানে, মাইমিং বেশি, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বা হাত পা নাড়া বেশি, মুখের অভিব্যক্তি বেশি। হল-এ আওয়াজ ঠিক মত না পৌঁছলে গলা একটু তুলতে হয়, কিন্তু অন্যগুলো না বাড়ালেও চলে।

    তবে পাই বা কল্লোলবাবু বোধকরি গালা তোলাটাকেই চড়া অভিনয় বলছেন, হ্যাঁ, তা হলে তা তো করতে হবেই।
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২১ মে ২০১৩ ১০:৫২605150
  • পাইয়ের প্রশ্নটা বোধহয় অন্য। "নাটকের যেসব সংলাপ, ওগুলো স্বাভাবিকভাবে দৈনন্দিন কি সারা জীবনেও অনেকসময় আসেনা। সেগুলো বলার সময়েও স্বাভাবিক থাকতে হবে ?"

    না। স্বাভাবিক অভিনয় দিয়ে "আপনি চায়ে ক চামচ চিনি খান?" বলা যেতে পারে, কিন্তু নাটকের সংলাপ অনেক সময়ই দৈনন্দিনের মধ্যে আটকে থাকে না। রক্তকরবীর শুরুতে কিশোরের "নন্দিনী নন্দিনী নন্দিনী" ডাকটাই কীভাবে হবে এ নিয়ে শম্ভু মিত্রকে বিস্তর মাথা ঘামাতে হয়েছিল, বাকি সংলাপ তো ছেড়েই দিলাম। বাসের টিকিট কাটার মত করে হ্যামলেটের সংলাপ বলা যায় না। টিনের তলোয়ারের উদাহরণ আগে দিয়েছি, অজিতেশের 'তামাকু সেবনের অপকারিতা'-র মত ছোট্ট পিস শুনলেই দেখা যাবে "আমি যেতে চাই, পালাতে চাই, কোথাও কোনো প্রসারতার মাঝখানে গিয়ে দাঁড়াতে চাই যেখানে মেঘের ঢাকনা দিয়ে আলতো করে মোড়া রয়েছে পৃথিবী, জ্যোৎস্নায় ধুয়ে যাওয়া মাঠ" ইত্যাদি সংলাপে স্বাভাবিকতার গণ্ডিকে বারবার ভেঙে ফেলতে হয়। একই সঙ্গে বেশি উচ্চকিত হলে সেটা বাড়াবাড়ি মেলোড্রামা হয়ে যেতে পারে। অভিনয়ের কাব্যকে অনুভব এবং প্রকাশ করা একটি বিশেষ দক্ষতা।
  • kallol | 125.241.9.18 | ২১ মে ২০১৩ ১২:৩৯605152
  • রূপঙ্করদা।
    আমি চড়া অভিনয় বলতে শুধু গলা চড়ানোর কথা বলিনি। গলা চড়ানো একটা ব্যাপার। গলা না চড়িয়েও চড়া অভিনয় করা যায়। উদাহরণ, আমার Date:20 May 2013 -- 04:30 PM পোস্ট।

    "নায়কে অরিন্দমের প্রথম শ্যুট, প্রবীণ অভিনেতটির সাথে। দেবী চৌধুরাণী ব্রজেশ্বর ও তার বাবা। উত্তমের অভিনয় দেখুন। বাবা কিছু বলছেন, বেশ তেড়িয়ে। উত্তর দিচ্ছেন উত্তম দাঁড়িয়ে, মাথা নীচু করে, নীচু গলায় একটু দ্বিধার সাথে। ছেলের আত্মবিশ্বসের অভাব প্রকট। এটা আন্ডার অ্যাকটিং। কিন্তু আর সব কিছু এক রেখে শুধু শরীরের ভঙ্গিমা পাল্টে দিলেই ওটাই লাউড হয়ে যেতো -একটু ঝুঁকে দাঁড়িয়ে হাত জোর করে কথাগুলো ওভাবেই বললে।"

    তবে গলা চড়িয়ে আন্ডার অ্যাক্টিং, হয় হয়তো, সিচুয়েশনের ওপর নির্ভর করে। আমার তো সাগিনা মাহাতোয় দিলীপকুমারের কালীদার সাথে টেলিফোন কথা বেশ লাগে। তখন ট্রাঙ্ককলে গলা চড়াতেই হতো।
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.214.233 | ২১ মে ২০১৩ ১৪:১৬605153
  • সেই আদি ও অকৃত্তিম রেল লাইন। আমরা তো কেউ কারো বিরুদ্ধে বলছিনা। সবাই ঠিক বলছি। শুধু সমান্তরাল চলেছি।

    এখানে প্রশ্ন দুটো। এক নম্বর, স্বাভাবিক কথা বার্তা নাটকে হয় কিনা। অবশ্য হয়। বাসের টিকিট হ্যামলেট হয়তো কাটেননা, কিন্ত কন্ডাক্টারের ভূমিকায় হলে? কন্ডাক্টরও তো রিয়েল লাইফে চেঁচান, ঝগড়া করেন, জোর করে মাঝরাস্তায় নামিয়ে দেন। আবার হঠাৎ রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে ওঠেন ( পঙ্কজ সাহা) তাই নিয়ে নাটক ফাঁদলে? নাটকে একই চরিত্র কখনও স্বাভাবিক আবার কখনও অতিনাটকীয় বাচন প্রয়োগ করেন সিচু্যেশন বুঝে।

    দু নম্বর, চড়া অ্যাক্টিং নিয়ে। হ্যাঁ যায় তো, গলা না চড়িয়েও বীভৎস চড়া অ্যাক্টিং করা যায়। কোনও দ্বিমত নেই।
  • dukhe | 127.194.247.72 | ২১ মে ২০১৩ ২০:৪৯605154
  • কল্লোলদাকে বলার - চরিত্রের আত্মবিশ্বাসের অভাব প্রকাশ করতে উপযুক্ত অ্যাক্টিংকে কি আন্ডার অ্যাক্টিং বলব? আবার চরিত্রের দাপট প্রকাশ করাকে লাউড অ্যাক্টিং বলব? আমি দুটোকেই চরিত্রোপযোগী অভিনয় বলার পক্ষপাতী। যোগ্য অভিনেতার হাতে পড়লে কোনোটাতেই সূক্ষ্মতার অভাব ঘটে না।
    সা তে গান করা কি আন্ডার সিঙ্গিং? আর নি তে গেলে ওভার সিঙ্গিং? এরকম কিছু হয়?
  • kallol | 125.241.125.27 | ২২ মে ২০১৩ ১০:৪১605155
  • না দুখে তেমন নয়। মে-ঢা-তা এর শেষ দৃশ্যে অনিল যখন সুপ্রিয়াকে বাড়ীর কথা বলছে (যাকে মৃণালবাবু "মোটা চামড়ার লোকের মতো" বলেছেন) সেটা বিড়বিড় করে বলা হলে ছড়িয়ে ছাপ্পান্ন হতো। তার রিঅ্যাকশনে সুপ্রিয়ার - আমি বাঁচতে চাই - বিড় বিড় করে বলা হলে সেটাও যাতা হতো।
    আমি বলেছি আন্ডার অ্যাকটিং ও লাউড অ্যাকটিং হয়। বরং নর্মাল অ্যাকটিং বলে কিছু হয় না। হ্যাঁ, ভালো অভিনয় ও খারাপ অভিনয় হয়। তার সাথে আন্ডার বা লাউড অ্যাকটিংএর কোন সম্পর্ক নেই। চরিত্র, প্রেক্ষিত, ট্রিটমেন্ট অনুযায়ী আন্ডার বা লাউড অ্যাকটিং হতে পারে।
  • কৃশানু | 177.124.70.1 | ২২ মে ২০১৩ ১০:৫০605156
  • ধুর, মৃণালবাবু ঐখেনে পুরো ছড়িয়েছেন।
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২২ মে ২০১৩ ১০:৫৩605157
  • একই বক্তব্য নিয়ে তর্কাতর্কির চোটে মাঝখান থেকে রূপঙ্করদার অভিনয়ের গল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সেই অভিজ্ঞতার কথা একটু লিখুন না।
  • kallol | 125.241.125.27 | ২২ মে ২০১৩ ১১:০১605158
  • গানে ওভার সিঙ্গিং হয়। পীযুষকান্তির আকাশ ভরা শুনুন। দেবব্রতর আকাশ ভরা শুনুন।
    আমার সাধারণভাবে পীযুষকান্তির গান মনে হয় "ওভার সিঙ্গিং"। এক্সপ্রেশনকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে বড় বেশী নাটুকে করে ফেলতেন গানকে। সেদিক থেকে সুমনের গায়কী খুব ভালো। তবে এও সত্যি কিছু গান "ওভার সিঙ্গিং" দাবী করে। যেমন কিছু নাটকের গান। আমার এই মুহুর্তে দুটো গান মনে পড়ছে - বিজনদার হোসেন ভাই (কোমল গান্ধারে অল্প একটু ছিলো, ওনার নিজের গলায়) আর অজিত পান্ডের আটটা ঘোড়ার গান, নান্দীকারের কোনো নাটকে ছিলো।
  • lcm | 34.4.162.218 | ২২ মে ২০১৩ ১১:০৮605159
  • নাট্কে আন্ডার কিছু করলে মুশকিল, লোকে কথা শুনতে পাবে না, রাগে নাকের পাটা ফুলে যাওয়া দেখতে পাবে না। একেবারে সামনের সারির লোকজন হয়ত খানিকটা খেয়াল করতে পারে।
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.204.201 | ২২ মে ২০১৩ ১১:৪৯605160
  • lcm - লোকে শুনতে না পাওয়ার সঙ্গে 'আন্ডার' এর যোগ নেই। নাট্যকর্মীদের একদম গোড়ায় শেখানো হয় 'থ্রো'। আসলে ব্যাপারটা অনেকটা ভেন্ট্রিলোকিস্‌ম টাইপ। আমি চ্যাঁচাবনা, অথচ অনেক দূরের লোক আমার কথা শুনতে পাবে। এটার জন্য কয়েকটা ভোকাল এক্সারসাইজ আছে। শিক্ষক হিসেবে সামান্য হেরফের হয়, তবে ব্যাপারটা আদপে একই। আধুনিক নাটক থেকে উদাহরণ দেয়া মুশকিল, কারণ এখন খুব বেশি দেখিনা। তবে অজিতেশবাবুর নানা রঙের দিন, শাঁওলির অপরাজিতা -এই সবে, মাঝে মাঝে বিড়বিড় করে বকাও শেষ অবধি শোনা গেছে। আর নাকের পাটা ফোলা? স্টেজে আলোর ব্যবহার এমনই, আপনি দাঁড়িয়ে বাঁহাতের কড়ে আঙুলটা সামান্য নাড়ালেও, হ'ল শুদ্ধু দেখতে পাবে, যদি অ্যাটেন্টিভ থাকে। পপকর্ণ যাঁরা খাচ্ছেন, তাঁরা নাও পেতে পারেন। আবার পুরোন উদা দিয়ে হবে, কমার্শিয়াল নাটক 'বেগম মেরী বিশ্বাসে' অনুপকুমারের হাতপাখা।

    Dukhe - টইতে আমার গল্পটা আপনারা কেউ পড়ছেননা বলে আমি খুব রেগে গেছি। তাই এখন নাটকের গপ্পো বলব না। পরে দেখছি। ঃX
  • dukhe | 212.54.74.119 | ২২ মে ২০১৩ ১২:১৬605161
  • আরে ওটার শুরুতে দু লাইন জটিল কবিতা দেখে ঘাবড়ে গেসলাম। পড়ছি পড়ছি।
  • lcm | 34.4.162.218 | ২২ মে ২০১৩ ১২:৩১605163
  • নাটকে সংলাপ, মুখের অভিব্যক্তি কখনই সিনেমার ক্লোজ শটের মতন বা ডাবিং করা শব্দের মতন হয় নাকি! অসম্ভব।

    ভালো সাউন্ড সিস্টেম, স্টেজ পজিশনিং ইত্যাদি দিয়ে হয়ত ফিসফিস উচ্চারণ শোনা গেলেও....
    মুখের অভিব্যক্তি সামনে না বসলে কিস্যু বোঝা যায় না - আমি কিছু বুঝতে পারতাম না, ইন ফ্যাক্ট, পেছনের সিট থেকে মুখটা ভালো করে বোঝাও যায় না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন