এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পুজোর ধারাবিবরণী

    Ishan
    অন্যান্য | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৬ | ৭৩১১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • biswajit | 24.166.174.168 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ০৮:২২670653
  • দাদা,
    কেমন আছেন।
  • dam | 202.54.214.198 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১১:৩৪670734
  • সপ্তমীর সকাল গুড়গাঁও
    =============

    ঘুম ভেঙ্গেছে ভোর ৬ টায় "চন্দা চমকে চমচম চামেলী -----" শুনে, বোরের অ্যালার্ম রেডিও মির্চি 98.3 FM। দিব্বি ঝকঝকে রোদ আর এলোমেলো হাওয়া। বাইরে বেরোলে রোদ্দুর বেশ চিড়বিড় করে গায়ে লাগে। আজ সক্কাল সাক্কাল আপিস বেরোতে হবে, কারণ তাড়াতাড়ি কাটতে হবে। এদিকে আবার ভোগ খাওয়া আর ট্রেনিঙের সময় ধাক্কা খাচ্ছে। ভোগ খাওয়াটা আজের মত বাদ থাক।

    আসার সময় দেখে এলাম প্যান্ডেল শেষ। সকালের অঞ্জলীও বোধহয়। গতবছরের জায়গায় নয়, তাই অবাঙালী বন্ধুরা জিগ্যেস করছে পুজা হচ্ছে কিনা। পুজোর জায়গা সরে গেলেও বন্ধ হয় নি শুনে তাঁরা নিশ্চিন্ত। এমনিতেই বাঙালীরা নাকি ভীষণ অধার্মিক।এই কটাদিনও যদি না করে তাহলে তো আর ধর্ম বলতেই কিছু থাকবে না।

    এদিকে আজ আবার সপ্তাহ এবং মাস দুইই শেষ। নানান ছাঁদের নানান ডিজাইনের রিপোর্ট বানিয়ে নানান ধরণের লোককে পাঠাতে হবে। অতএব ......

    শুভ সপ্তমী।
  • Parolin | 210.211.233.167 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১৩:৪১670745
  • ঝলক দিখলা যা......', সাথে টাক ডুমা ডুম , কাঁসর-ঘন্টা , "রায়্‌কাকীমা অন্‌জলী শুরু হয়ে গেল" , হাত-বন্দুকের প্যাটা-প্যট , ওপাড়ার মাইকে পুরুতমশায়ের অং-বং , সব মিলে মিশে একাকার। মা এসেই গেলেন। সেই চির পরিচিত লাবন্যময়ী হাসিমুখ। আমি এখন কোলকাতায় , দেখছি ফ্ল্যাট-বাড়ির পুজো।কাল সোনামুখী। লাইভ দেবার সময় নেই , হাইলাইট পাবে কদিন পরেই।সব্বই খুব ভালো কাটাও পুজো।যারা বাইরে আছো তাদের হয়ে আমি কটা ফুচকা বেশি খেয়ে নেবো। দেখছো কত্ত ভালোবাসি তোমাদের।
    জ্জয় মা , মা গো।
  • i | 202.128.112.253 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১৬:৫৪670756
  • সিডনি, মহাসপ্তমীর রাত

    পাটে পাটে শাড়ীগুলি ভাঁজকরা থাকে। মথবল দেওয়া। মনোমত শাড়ীখানি বেছে নেওয়া। হাল্কা ইস্ত্রি। উত্তাপ মুক্ত করে দেহঘ্রাণ,পুরোনো পারফিউমের অবশেষ... ফেলে আসা স্মৃতি, ফেলে আসা পুজো-

    সপ্তমীর আপডেট এভাবে শুরু হতে পারত। আপিসফেরতা শাড়ী বাছাই করার ছিল। হ'ল না। কাল-ও আপিস। সপ্তমীর মধ্যরাতে যখন মানুষের ঢল কলকাতার পথে তখন ঘুম থেকে ওঠা-

    তাই আজকের কথা এখানেই শেষ।গল্পরা আজ জাগল না। ঘুমিয়ে রইল পাটে পাটে।
  • tania | 151.151.73.167 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ২১:৩৯670767
  • সান ফ্রানসিসকো, সপ্তমী, সকাল আটটা।

    বার্ট স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখলাম আকাশ অসম্ভব মেঘলা। Trasnamerica pyramid নামের উঁচু বাড়িটার মাথা ঢেকে গেছে মেঘে। ঠান্ডা হাওয়া বইছে। আমার আশেপাশে হন্তদন্ত হয়ে আপিশ ছুটছে কালো, বাদামী, ধুসর জ্যাকেট গায়ে মেয়ে পুরুষ। কল্পনা করতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল ঠিক এই সময়ে আমার শহরে ঢাক বাজছে, সকালে সেখানে ঝলমলে রোদ উঠেছিল। চোখ বন্ধ করে একটা বড় নি:শ্বাস নিয়ে নিই। নাকে এসে লাগে কলম্বিয়া রোস্ট কফির কড়া গন্ধ। আমার সপ্তমী শুরু হয়ে গেল।
  • Paramita | 64.105.168.210 | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ২২:২৮670778
  • সপ্তমীর সন্ধে(IST), স্যাঁতসেতে সকাল(ক্যালিফোর্নিয়া)

    কাল পুজোয় যাওয়ার ছিলো, হয়নি। শুধু ঝালমুড়ি আর দেবীর বোধনের বাঁশি শুনেছি। আজ নিজের, মেয়ের ব্যাগ গুছিয়ে পুজোর জামা, গরম জামা ঢুকিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছি - ফ্রিওয়ের মুখে পৌঁছতেই আধ ঘন্টা লেগে গেলো, পাঁচ মিনিটের পথ। বাকিটা যেতে ভরসা করলাম না, ভীষণ দেরী হয়ে যাবে। খারাপ ধরনের অ্যাক্সিডেন্টই হবে, কার গেল কে জানে। ওয়ার্ক ফ্রম হোম করা যাবে না পুরোপুরি, বিকেলে মিটিং। আপাতত: বাড়িতে ফিরে এলাম।

    তাও দুপুরে একটা ট্রাই নেবো। আপিসের পাশেই পুজো, খিচুড়ি ফ্রি। নিচে তারা মুজিক চলছে, মেঘের ঠাম্মা-দাদু দেখছেন, নচিকেতার গানের একটা পুজোর মিউজিক ভিডিও বেশ ভালই বানিয়েছে। আর কন্সট্যান্ট বাজলো তোমার, শুভ্র শংখরবে, আমার রাত পোহালো এসবের তো বিরাম নেই।

    মেঘের বারোটা পুজোর জামা হয়েছে, আমার দুটো। অথচ মেঘ প্রতিদিন লম্বা হয়ে যাচ্ছে, নতুন না পরা জামা কত কত, আমি আর লম্বা হবো না একটুও, কিন্তু আমার সেই দুটো।
  • dri | 199.106.103.254 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ০০:২২670800
  • সপ্তমীর সকাল, সান ডিয়েগো

    আজ বিছানায় গড়িয়ে গড়িয়ে উঠতে দেরী হয়ে গেল। তাও মেয়ে চুল টেনে তুলল তাই। আজ ওর মা ভোর ভোর উঠে খাতা দেখতে বসে গেছে। মায়ের কাছে পাত্তা না পেয়ে এসেছে আমাকে জ্বালাতে।

    এইত্তো দিব্যি কটকট করে রোদ উঠে গেছে। নীল আকাশ তো আঁকাই আছে। না, সাদা মেঘের ভেলা ফেলা নেই, ওসব মনে মনে বসিয়ে নিতে হবে। তার বদলে আছে জেট প্লেনের কেটে দেয়া দাগ, লম্বা সাদা। ধনী দেশের আকাশের সাথে ম্যাচ করে। লন মোয়ারের শোঁ শোঁ শব্দ পাই।

    আমাদের শহরে পূজো এ সপ্তাহে নয়, পরের সপ্তাহে। মেলে ফ্লায়ার আসছে খুব। ওয়েবসাইটে গিয়ে নতুন ঠাকুরের চেহারাটা একটু দেখে নিলাম। অসুর মেরে মায়ের মুখে হাসি আর ধরে না।

    আজ লাঞ্চের পর চার ঘন্টা ব্যাপী মিটিং। তাতে ইস্যুর বন্যা বয়ে যাবে জানি। তবু এই সপ্তমীতে ইশেনের দেয়া নতুন কলের এই ছোট্ট জানলা আজ আমার থাক।

    ভাল থাকুন সব্বাই।
  • dd | 202.122.18.241 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ০০:২২670789
  • রাত বারোটা বেজে গ্যাছে,তবে এখন কি বলা যায় এটা অষ্টমীর সকাল ?

    মোটকথা সপ্তমীর সন্ধ্যাও পার করে দিলাম। সারাদিন শুধু মেয়েদের সাজ গোজের ঝিন ঝিন আওয়াজ। আর ঠাকুর দেখতে যাওয়া।

    রেষ্টুরেন্টে চ্যাংব্যাং খাওয়ানোর প্রলোভনে মত্ত পুরো ফেমিলি আর পাড়ার নানাবিধ অপগন্ড - এইসব নিয়ে বুঝি না বুঝি না করে দু পেগ হুইস্কি উড়িয়ে দিয়ে বাড়ীতে এসে শুদ্ধ চিত্তে তৃতীয় পেগ নিয়ে বসিচি।

    কালকে মহাষ্টমী। ব্যাথা আছে। সকাল থেকে রাত পজ্জ্যোন্তো দৌড়।

    এই আনন্দের বানভাসিতে আমি এক মুত্তিমান মারিজনস্য মার্জিন। আমার ব্যাথা কে বোঝে ? কেউ বোঝে ?
  • Paramita | 143.127.3.10 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ০৩:০৫670811
  • ক্যালিফোর্নিয়ার লোকেদের দ্যাখো - কেউ এখনো পুজো ফুজো দেখেই নি তাও তিন পিস ধারাবিবরণী পোস্ট পড়ে গেল। আর ওদিকে একা কুম্ভ পারোলিন কলকাতার হয়ে লড়ে যাচ্ছে। তাও তো সে ডাবলিন থেকে ধার করা প্লেয়ার।

    আসলে সব হোলনাইট নয় খিচুড়িনিদ্রা দিচ্ছে।
  • Samik | 125.23.115.215 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ০৯:৫৫670654
  • দুদিন দেরি হল আপডেট দিতে।

    দিল্লির সীমানা থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে, বৈশালি ভূখন্ডে আমাদের পচাধসা অ্যাপার্টমেন্ট। সেখানে এ বার প্রথম দুর্গাপুজা শুরু করা হয়েছে। কিছু উৎসাহী জনতার উদ্যোগে।

    ঠাকুরের মুখ ছাড়া অবশ্য আর কিছুই বাঙালিত্ব নেই। একটা ফেস্টুনও বাংলায় নেই, একটাও ফুচকা বা ঝালমুড়ির স্টল নেই, একটাও বাংলায় অ্যানাউন্সমেন্ট নেই। আসলে, সাড়ে পাঁচশো ঘর বাসিন্দার মধ্যে মাত্র কুড়ি পঁচিশ ঘর বাঙালি। সবাইকে ইনভল্‌ভ করতে গেলে বাঙালি হলে চলে না।

    চিত্তরঞ্জন পার্ক থেকে মুর্তি এসে গেছিল চতুর্থীর দিন। ষষ্ঠীর দিন অ্যাপার্টমেন্টের কিছু বৌদি-কাকিমা গোত্রের জনতা আধবাঁধা স্টেজের ওপর ভুলভাল সুরে এবং তালে একটা তাপ্পিতুপ্পি মারা মহিষাসুরমর্দিনী নামালেন। দুর্ভাগ্যবশত তবলায় আমাকে থাকতে হয়েছিল।

    সপ্তমীতে দুপুরের খ্যাঁটনটা মন্দ হয় নি। খিচুড়ি, ফুলকপি কুমড়ো আলুর ঘ্যাঁট, খেজুরের চাটনি আর যত-চাই-তত রসগোল্লা। লোডশেডিংয়ে দরদরিয়ে ঘামতে ঘামতে গরম খিচুড়ি খাবার কিন্তু কোনও তুলনা নেই, যাইই বলো।
  • Riju | 124.7.97.195 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১৩:৫০670665
  • অষ্টমীর সকাল
    বাগবাজার সার্বজনীন - কোলকাতার অন্যতম প্রাচীন পুজো।সেই চিরায়ত মাতৃপ্রতিমা -শিল্পী কুমোরটুলীর জীতেন পাল । অদ্ভুত টানা টানা চোখ।ওপাশে মন্ত্রোচ্চারণের সাথে অঞ্জলী । একটু পরেই আরতির ঘন্টা, ঢাকের আওয়াজ আর মন্ত্র মিশে যাচ্ছে।এক্ষুনি ঠাকুরের সাম্নে পর্দা টেনে দেওয়া হবে - খিচুড়ি ভোগ পুজো দেওয়া হবে।এটাই এখান কার রীতি।
    চারপাশে প্রচুর দোকান।মেলা বসে গ্যাছে।নব্য যুবক আড়চোখে ঝাড়ি মারছে শাড়ী পড়ে অচেনা হয়ে ওঠা চেনা প্রতিবেশীকে।দাদুর কোলে চেপে নাতনি এসেছে সিংহীমামা কে সামনে থেকে দেখতে -। পাড়ার ঠাকুমাকে গরদের শাড়ী আর নাকছাবি পড়ে কিন্তু বেশ লাগছে।উত্তর কোলকাতার গলি ঘুঁজি তে জমে উঠেছে আড্ডা ।এর ই মধ্যে টিভি চ্যানেলের উপদ্রব - কেন এখানে আসেন বার বার ধুতি সামলাতে সামলাতে নাজেহাল কিশোর টি একমনে মোবাইলে কথা বলে চলেছে তার বান্ধবীর সাথে।
    ঐতিহ্য আর আধুনিকতা মিশে একাকার।

  • dam | 202.177.185.224 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১৬:৫১670676
  • সপ্তমীর বিকেল -- দিল্লী
    ================

    অফিস থেকে ঠিক ৫ টায়ই কেটেছিলাম। গুড়গাঁও থেকে দিল্লী আসার পথে উদ্যোগবিহারের পাশে সাদামাটা একটা প্যান্ডেল। চলতি গাড়ী থেকে অসুর আর সিংহ ছাড়া আর কিছুই দেখা গেল না। তবে ঢাক আর কাঁসির যুগ্ম বাদ্য -- খুব অল্পক্ষণের জন্যই বোধহয়, বেশ লাগল। মহাবীর এনক্লেভে পৌঁছে শুনি রাত আটটায় ডোনা গাঙ্গুলীর নাচের অনুষ্ঠান। ছোট্ট একটা দমবন্ধকরা অডিটোরিয়াম। লোকে যত না নাচ দেখে মুগ্‌ধ, তার চেয়েও বেশী "চক্রান্তের শিকার দাদা"র সহমর্মিতায় মুগ্‌ধ।

    ইতিমধ্যেই জোর খবর : পয়সা নিয়েও পুরোসময় গান না করায় শিল্পী উদিতনারায়নের বিরুদ্ধে কালকাজি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ২ ঘন্টা গান করবেন এই কড়ারে সি আর পার্কে আনা হয়েছিল উদিতনারায়নকে। তিনি ৮০ মিনিট পরে অনুষ্ঠান শেষ করে মঞ্চ থেকে নেমে যেতে চাইলে উদ্যোক্তা ও স্বেচ্ছাসেবকরা প্রথমে বাধা দেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় পাঞ্জাবী টেনে ধরেন। শিল্পী তাতে অপমানিত বোধ করেন বলে খবরে প্রকাশ।

    ওদিকে সুমেরু বলেছে সাড়ে আটটায় ইটিভি বাংলা। কোনমতে ২০ মিনিট ডোনার নাচ দেখেই দেখেই হাঁচোড় পাঁচোড় করে বাড়ী। দেখি "মুস্কিল আসান" নামে এক অশ্রুসজল সিরিয়াল চলছে। দেরী হয়ে গেল? নাকি আগেরটা শেষ হয় নি? ১০ মিনিট সেই অশ্রুসজল করুউউণ কাহিনীকে সহ্য করে, আর না পেরে জিগ্যেস করলাম আর কোন ইটিভির চ্যানেল আছে কিনা। জানা গেল চ্যানেল এটাই এবং সুমেরু উল্লিখিত অনুষ্ঠান রাত সাড়ে ১০টায়। যাহোক সে অনুষ্ঠান সেই সময়ই হল। একটা অসাধারণ সুন্দর বাড়ী দেখা গেল তাতে। অন্য সব কিছু বাদ দিয়ে বাড়ীর গায়ের কারুকাজই কেবল মনে আছে।

    আর্টিস্ট'স প্রিসিশান -- ২ ঘন্টা এদিকওদিক -- এমন কিছুই না। এইভাবেই শেষ হয়ে গেল সপ্তমীর রাত।

    অষ্টমীর সকাল দুপ্‌য়্‌র - দিল্লী
    =================

    কারেন্ট না থাকায় শনিবার সকালের জমাট ঘুমটা ঠিক ততটা জমাট হতে পারল না। একটা পুজা ভেঙ্গে এবার থেকে দুটো পুজো শুরু হয়েছে মহাবীর এনক্লেভে। ছোটমামীমা আর ছোটমামা দুজনে দুই জায়গায় গেল অঞ্জলী দিতে। আর বোন এক এক করে দুটোতেই গিয়ে অঞ্জলী দিয়ে এলো। আমি প্রথা মেনে কোথায়ই গেলাম না।

    দুপুরের ভোগ খাওয়া দোয়ারকা সেক্টার ৬ এ। ফ্রায়েড রাইস, ছোলার ডাল, আলুকফির তরকারী, আনারসের চাটনী আর ক্ষীরকদম। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, সুস্বাদু খাওয়া। চমৎকার কাজ করা ডবল বেড বেডকভার ও বালিশের ওয়াড়ের সেট ---- কিন্তু দোকানীকে খুঁজে পাওয়া গেল না বলে দামটাও জানা হল না। চড়চড়ে রোদ, দরদরে ঘাম, কাঁহাতক আর দাঁড়ানো যায়!

    বিকেলে একজায়গায় স্বাগতালক্ষ্মী আসছেন, আর একজায়গায় রেজওয়ানা চৌধুরী ---- কোথায় যে যাওয়াঅ হবে! খুবই চিন্তার বিষয়।

    ছোট্ট ছোট্ট ২-১ টা চোরকাঁটা খচখচ করছে। অষ্টমীর দিন খিচুড়ি খাওয়া হল না। বাড়ীতে মা ঠিক আজকে খিচুড়ি পায়েস দিয়েছে ঠাকুরকে। ঠাকুর প্রণাম না করলে মা কিছুতেই চালকলা দিতে চাইত না --- আমরাও প্রণাম তো করবই না ---- সারাদিন উপোষ করতে হয় তাও সই। মা নাকি এখন আর ভাইকে প্রণাম টনাম করতে বলে না, এমনি এমনিই চালকলা দিয়ে যায়। চালকলার গন্ধটা যেন কিরকম ছিল!? কিছুতেই মনে পড়ছে না।
  • mita | 69.134.231.58 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১৭:১৭670687
  • নর্থ ক্যারোলিনা, মহাষ্টমীর সকাল:
    ষষ্টির দিন পুজোর বাজার করা হলো। এবার ৪০০'র উপর লোক হবে, তাই ফল ও আগের বারের থেকে বেশ বেশি বেশি কেনা হলো। ফল কিনে ফেরার সময় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামলো, কাক ভেজা হয়ে গেলাম সক্কলে।
    কাল সপ্তমীর সন্ধ্যায় ঠাকুর প্যাকিং বাক্স থেকে বেরোলেন, তিন বছর আগে ফাইবার গ্লাসের ঠাকুর আনা হয়েছে দেশ থেকে।
    কাল সপ্তমীর পক্ষে বেশ ভালই ভীড় হয়েছিল, কত যে নতুন মুখ দেখলাম। পুরোনোরা অনেকে, যারা অন্য জায়গায় চলে গ্যাছেন, পুজো উপলক্ষ্যে এসেছেন। কি যে ভালো লাগছিলো না! রতন বল্লো, ঠিক মনে হছে না বাড়ির লোকে বাড়ি ফিরে এসেছে?
    অনেকে জিগ্গেশ করলো, বনবন আসছে গো পুজোয়? নাহ, এই তো সবে শিকাগো ফিরলো, এখন কি করে আসবে।

    সাতটায় পুজো অফিশিয়ালি শুরু হলো। আমাদের ঠাকুর কিন্তু সত্যি খুব ভালো দেখতে, বেশ বড় আর জমকালো সেজে আছেন।
    আটটায় বিচিত্রানুষ্ঠান। ফাংশানের সময় হঠাৎ একজন কে দেখে খুব চেনা লাগলো। আচ্ছা তুমি কৌশিক সেন না? হ্যাঁ তো, কেমন আছো? দিব্যেন্দুদা কই? আমরা তো এখানে এই দু মাস হলো মুভ করেছি!! মাঝে মাঝে কৌশিকের লেখা পড়ি নানা জায়গায়, দশ বছর বাদে দেখা!! প্রচুর গপ্প, ক্যাচ আপ করা, এতো কম সময়ে হবে না, দিব্যেন্দু পরের রবিবারের নেমন্তন্ন করে দিলো।
    বন্ধু এসেছে ডিসি থেকে, তাছাড়া কাল ভোগ রান্না করার আছে, তাই তাড়াতাড়ি, মানে ১১টায় ফিরে এলাম। এসে দুটোর সময় আড্ডা মেরে শুতে গেলাম।
    এখন উঠে ভোগ রান্না চলছে, কয়েক ঘন্টা বাদেই আবার টেম্পেলে ছোটা।
    এ বছর পুজোর আগে নানা কারনে মনটা খুব খারাপ ছিলো, কাল গিয়ে, এক বছর বাদে আবার চেনা মুখগুলো দেখে খুব ভালো লাগলো।
    সবাই কে শারদিয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা, ছোটোদের এই জেঠি/মাসি'র তরফ থেকে অনেক আদর।
    হ্যাপি পুজো!!!
  • i | 202.128.112.253 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১৮:২৯670698
  • অষ্টমীর রাত, সিডনি

    এই ফিরলাম ইস্টউডের পুজো থেকে। দুপুরে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনে যাওয়া হয় নি, ভোগের আধখানা ল্যাংচা, একটি গজা, তিনটি ছানার মিষ্টি পেয়েছি যদিও। নবমীতে যাওয়ার ইচ্ছে রাখি।
    ইস্টউডের ঘরোয়া পুজো-একদিনই।খাওয়াদাওয়াও দিব্য হোলো। ফ্রায়েড রাইস, পনীর, বেগুনী, দরবেশ ইত্যাদি-
    প্লাস্টার অফ প্যারিস দিয়ে আশিসদা গতবছর প্রতিমা গড়েছেন ইস্টউডের পুজোর জন্য। চারখানি মূর্তিরই হাত পা, মাথা সব খোলা যায়।বছরভোর এঁরা নানাজনের বাড়ীতে ছিলেন প্যাকেটজাত। গাড়ীর বুটে করে নিয়ে এসে অ্যাসেম্বেল করা হয়েছে। একটু পরেই আবার সব খুলে নেওয়া হবে।
    ঘরোয়া অনুষ্ঠানে গান গাইলেন স্থানীয় প্রতিভারা আর সিরাজুস সালেকিন। 'পথ হারাবো বলেই এবার', বা 'চোখের নজর কম হলে আর' ঠিকই ছিল, কিন্তু অষ্টমীর রাতে , সিরাজুস, আপনি কেন গাইলেন বলুনতো 'সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে, সার্থক জনম মা গো, তোমায় ভালোবেসে'-
    চোখে কুটো পড়েছিল।অনেকেরই। রাতের অনুষ্ঠান। কালো চশমা ছিল না সঙ্গে।
  • Paramita | 64.105.168.210 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ২০:৫২670709
  • অষ্টমী সন্ধে(IST), ঘুমন্ত সকাল(ক্যালিফোর্নিয়া)

    কাল সন্ধেয়(হেথায় সপ্তমী) আপিশ থেকে বেরিয়ে মেঘকে ডে কেয়ার থেকে তুলতে গেলাম, দেখি, নানারঙের টিপ পরিয়ে ওর "আজ্জি" (মারাঠিতে ঠাম্মা) ওকে সাজিয়ে দিয়েছেন। আমি ঘাগড়া বের করে দিতে আহ্লাদে আটখানা হয়ে টপটা পরে স্কার্টের দড়ি চিবোতে লাগলো। ঝটপট তৈরী হয়ে নিলাম আমি ও আজ্জি, সাতটা সাড়ে সাতটার মধ্যে গেলে তবু পুজোমন্ডপে পার্কিং পাওয়ার আশা আছে। ঠিক সময়েই পৌঁছলাম, আরতি সবে শুরু হয়েছে তখন। লোক আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ছে, শেরয়ানি পরা ধুনুচি নিয়ে পুরুষরা ও কোমরে ওড়না বেঁধে মহিলারা ঢাকের বোলে বোলে প্রতিমার সামনে নাচ শুরু করেছেন। একজন ডাকলেন, বাচ্চাদের পাঠিয়ে দিন ঘেরাটোপের মধ্যে। মেঘ দড়ি টপকে ঢুকে প্রচন্ড "জাম্পিং" নাচ শুরু করলো। ওদিক থেকে মেঘের ঠাম্মা-দাদুকে নিয়ে মেঘের বাবা পৌঁছেছে। প্রায় এক ঘন্টা ধরে সেই নাচ ও লম্ফন চললো। আরতি শেষ হলো, প্রসাদ পেলাম, মেঘ আর কিছুতেই বেরোবে না। একাই লাফিয়ে যাচ্ছে।

    ঝালমুড়ি খাবলে খাবলে খেলাম। মেলার মতো সার দিয়ে গয়না, শাড়ি, সিডি/ডিভিডি, খাবারের দোকান। বইএর কোন দোকান যথাযথভাবেই নেই। শ্যাম বেনেগালের সত্যজিৎ রায় ও হাঁদা ভোঁদা পকেটস্থ করলাম।

    আর কতোজনের সঙ্গে দেখা হলো। দশ বছর ধরে যারা আমার প্রতিবেশী, বন্ধু হয়ে উঠেছে। হাসি-গান-ভালোবাসা-মান-অভিমান সব মিলে - মোনোলিথিক এই যে সমাজ, যে উপনিবেশ গড়ে তুলেছি আমরা।

    ভেতরে তখন সুকল্যাণ ভটচাজের নাচ চলছে। আমি ক্লাস ফাইভে পড়া তরতর করে লম্বা হয়ে যাওয়া শ্রীতমার পাশে দাঁড়িয়ে নিজের হাইট মেলাচ্ছি, ওদিকে সুহৃদ স্বাগত পাঁচশো ছবির কোটা পুর্ণ করে ফেললো বোধহয়, ওপাশে কলেজের জুনিয়ররা কলকল করছে, হঠাৎ দেখলাম দূর থেকে সে এগিয়ে আসছে, এসেই "বন্ধু কি খবর বল, কতদিন দেখা হয়নি"।

    মন ভালো হয়ে গেলো।
  • dd | 202.122.18.241 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ০০:১২670720
  • যাক।

    অষ্টমীও কাটিয়ে দিলাম। সকাল থেকেই ঠাকুর দ্যাখার ধুম। আর সারাদিন সাজুগুজুর ঝনঝনা। কপাল গুনে এক প্যান্ডেলে খিচুরী ভোগ পেলাম এক ঘন্টা হাপিত্যেশ করে বসে থেকে বেলা তিনটের সময়ে লাস্ট ব্যাচে। সেলফোনে সেলফোনে বার্তা ছুটছে - খিচুরী সব প্যান্ডেলেই ফুরিয়ে গ্যাছে।

    বিকেলে এট্টু বিশ্রাম করে আবার দৌড়। শংকরস্কোপ মানে সিনেমা,নাচ,পাপেট্রী মিলিয়ে একটা নৃত্যনাট্য চন্ডালিকা দেখলাম। রাত এগারোটায় নিজামের ফ্র্যান্‌চাইসীর অসম্ভব বাজে রোল দিয়ে ডিনার।

    শেষ পাতে সামান্য রাম - এই বাড়ী এসে।

    সব পুজোপ্যান্ডেলেই দেখি বাংলালাইভের বিশাল বিজ্ঞাপন। মাসীমার সাম্রাজ্য বেড়েই চলেছে।

    কাল দুপুরে একটা স বীয়ার খ্যাঁট আছে - শুধু সন্ধ্যাবেলাটা কোনো প্যান্ডালে যেতে হবে। ব্যাস।
  • pallab | 59.93.244.39 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ০১:০০670731
  • তাই বলি, সবাই লুকালো কোথায়? ওদিকে আমি যে নাড়ুয়া, চন্দননগরের live আর video update দিয়ে যাচ্ছি ভাটে সে খেয়াল আছে!
    বেগার খেটে মরছি ...
    বলো, কার জন্যে??????
    link:
    http://www.chitrasilpi.com

    narua on-line নামক টেক্সট লিংক থেকে ...
  • dri | 66.81.196.1 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ১৩:৪৭670732
  • অষ্টমী, সান ডিয়েগো

    সকালে ফিডিং বট্‌ল ধোয়া। আগের রাতে ধুয়ে রাখিনি। সেই পাপে দুটো একস্ট্রা ধুতে হল। নানা রংএর ছিপি, বেগুনী, গোলাপি, হলুদ। এই রকমই হলুদ ছিল সেই হলুদ টপ, আর কালো লং স্কার্ট। ম্যাডক্স স্কোয়ার। বন্ধুদের সাথে অষ্টমীতে। আমার তখন ফুলপ্যান্ট। গোঁফেরা সব সরু আর নরম। ছবিগুলো এত পুরোন যে রংগুলো উঠে উঠে গেছে। এই হলুদটা রয়ে গেল কিকরে? আমরা তখন জটলা করেছিলাম বোধ হয়। কেউ কেউ আইসক্রিম কোন চাটছিলাম। আর টুকটাক ঝাড়ি করছিলাম। হলুদ টপ আমাদের কাছেই দাঁড়িয়েছিল। বন্ধুদের সাথে কথা বলছিল। খুব ঘনঘন হাসছিল। মাঝে মাঝে মাথা ঝাঁকিয়ে চোখ থেকে চুল সরিয়ে নিচ্ছিল। আর টেরিয়ে টেরিয়ে দেখে নিচ্ছিল আমরা দেখছি কিনা। আমাদের গ্রুপের মধ্যে যে সবচেয়ে হ্যান্ডু তাকে চোখ মটকে বললাম, তোর সাথে ঝাড়ি করছে কিন্তু। আমি ফিসফিস করেই বলেছিলাম। সে ব্যাটা চিৎকার করে বলল, কে? ঐ কালো শায়া পরা মেয়েটা? শ্‌শ্‌শ, শুনতে পাবে। এরপর কি একটা অ্যানাউন্সমেন্ট হল। কালো শায়া হারিয়ে গেল। আমার কালো প্যান্টটা দেখেছ, বউ আরো দুটো বোতল বসিয়ে দিয়ে বলল। তুমি কি আজও ল্যাবে যাবে? কি করব, এল এ তো আর আমরা যাচ্ছি না। কিছুটা কাজ এগিয়ে রাখি। পরের সপ্তাহে লক্ষীপূজোর সময় দুর্গাপুজো দেখব। আমি বললাম, ভলিউমটা একটু বাড়িয়ে দিও তো। ক্যাসেটে রামকুমার ধরেছেন, দুটো মনের কথা তোমায় বলি জগদম্বে, বল দেখি মা দীনের দু:খ কোনকালে বা কমবে।

    এরপর ফোনকলের ঝড় বয়ে গেল। প্রতিটির বিষয়ই বিলাপ। কত বচ্ছর বাদে পূজোর দুদিন উইকএন্ডে পড়ল। আর তোরা পরের উইকএন্ডে পূজো রাখলি? নিকুচি করেছে এল এর পূজো। কে যাবে অদ্দুর ঠেঙ্গিয়ে পূজো দেখতে। গজগজ করতে করতে বউ ল্যাবে গেল।

    যত বেলা বাড়ল দু:খ আরো গাঢ় হল। কাজের দিনে ব্যাপারটা এতটা বোঝা যায় না। খেলার মাঠে হিসেব হল কে কত দিন কোলকাতার পূজো দেখেনি। কেউ আট, কেউ দশ। আমি বারো।

    বউ ইন্ডিয়ান স্টোর্স থেকে খবর নিয়ে এল কাল নবরাত্রি উপলক্ষে ডান্ডিয়া হবে। কিন্তু পূজোর স্বাদ কি ঘোলে মেটে। শুধু বাড়ীতে খিচুড়ি রেঁধে খেলাম।
  • dri | 66.81.196.1 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ১৩:৫০670733
  • পল্লব, আপনার অন লাইন অঞ্জলি চালিয়ে বাড়ীতে ফোন করায় ওরা ভেবেছিল আমরা পূজো দেখতে গেছি।

    ধন্যবাদ।
  • Riju | 124.7.97.201 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:০৩670735
  • অষ্টমীর রাত - সন্ধিপুজো
    সিঁথি বারোয়ারী -বয়স একশো পঁচিশ । ঠাকুর সনাতনী।প্যান্ডেল লাইট সাধারন ,কোন থিম ভিত্তিক নয়।সন্ধ্যেবেলা এখানে হয়েছে ঢাকীদের কম্পিটিশন আর সঙ্গে উদ্দাম ধুনুচি নাচ। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মেনে পুজো হচ্ছে।সন্ধি পুজোয় দেবীর গলায় ১০৮ নীলপদ্মর মালা।বেশ নিষ্ঠা ভরে যজ্ঞ করছেন পুরুত মশাই। আগে বলি হত অনেকদিন বন্ধ হয়ে গেছে সেই প্রথা। মন্ত্রোচ্চারণ, কাঁসর ঘন্টায় মখোরিত পরিবেশ।ক্যাপ ফাটানোর শব্দ আর ভেঁপুর আওয়াজে কার্নিভ্যাল মুড।
  • i | 202.128.112.253 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ১৫:৩১670736
  • নবমীনিশি, সিডনি

    পোহায়ো না-
  • Santanu | 80.122.170.93 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ১৭:৪০670737
  • নবমী দুপুর সৌদি,

    ওরে তাড়াতাড়ি পোহা, আরো একটা দিন কাটুক এ বনবাস থেকে -

    সন্ধিপুজোতে ১০৮ পদ্মের ব্যপারটা তাহলে ঠিক ই জানতাম, কিন্তু পল্লব এর ক্যামেরা সেটা দেখতে পেলো না কেন?

    বন্ধু ফোন করেছিল লন্ডন থেকে, এবার নাকি টেম্‌স নদীতে প্রতিমা বিসর্জন করার অনুমতি পাওয়া গেছে।
  • Paramita | 64.105.168.210 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ২০:২৭670738
  • নবমী সন্ধে(IST), ব্যস্ত সকাল(ক্যালিফোর্নিয়া)

    ঠাকুর দেখার কাউন্ট এখন দুই। চার হতে পারতো কিন্তু কোয়ালিটি ইজ বেটার দ্যান কোয়ান্টিটি। কাল এখানে প্রচন্ড ঠান্ডা ছিলো, কিন্তু শাড়ি-গয়নার ওপর শাল - ছো! তাই আজ সকালে নাক দিয়ে জল পড়াই সই। প্রথম পুজোতে দিয়ে দেখলাম ভোঁ ভোঁ। বন্ধুবর্গের লোকাল ব্যান্ড গান শুনবো বলে বসে আছি তো বসেই আছি। দু ঘন্টা লেটে রান করছে, অতএব উঠে পরের ঠাকুরের কাছে যেতেই পরিচিত প্রিয় ভিড়। মেঘ আর চারটে কুচো মনের আনন্দে ধুলো ঘাটতে বসে গেলো। ঠান্ডার মধ্যে আমরা চা খেলাম আর পড়ে ছিলো ঠান্ডা খিচুড়ি, পাঁপড়ভাজা, দুপুরের। সেই অমৃত লাগলো। মেঘ একটা পাঁপড় খেয়ে "মোর চিপস"-এর ধান্দায় ঘুরতে লাগলো মায়ের আশেপাশে। সিঙ্গাড়া খাওয়া হলো। তারপর প্রতিমার সামনে গিয়ে ছবি তোলা, সবই নিয়মমতো।

    রাত আটটায় বাবুল সুপ্রিয় আছে, তাই জনগণ তাড়াতাড়ি ডিনার করে নিয়ে নাচার জন্য রেডি হচ্ছে। আমরা প্রচন্ড ঝাল একটা চাইনিজে গেলাম খেতে। তারপর বাড়িতে এসে আকাশ বাংলায় পুজাপরিক্রমা দর্শন।

    আজ দশমীতে পুজো দেখতে যাবো না। দুবছর আগে এইদিনে আমার ঘরে মা স্বয়ং এসে পড়েছেন "আজ এসেছি তোদের বাড়ি / কোথায় আমার পুজোর শাড়ি?" বলে হুহুংকার রবে, তাই মেঘবালিকাকে নিয়ে আমরা আজ যাবো একটি গরু-ভেড়া-ছাগল সম্বলিত চিড়িয়াখানায়। সেসব সে বড়ো ভালোবাসে।

  • Samik | 125.23.26.233 | ০১ অক্টোবর ২০০৬ ২৩:৪২670739
  • নভরাত্রের হাতে গরম আঁখো দেখি বিবরণ:

    গাম্বাট ওয়াটেজের খান কুড়ি বক্সের আওয়াজে সোসাইটির সমস্ত দেওয়াল থরথর করে কাঁপছে। ডান্ডিয়া রাস। রাত এখন এগারোটা ছত্রিশ, চলবে ততক্ষণ, যতক্ষণ না সমস্ত পা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। নবরাতের আজ শেষ দিন। রেডিও মির্চির রেডিও জকি আর কোথাকার কে যেন ড্যান্স ট্রুপ এসেছে, নিম্বুরা নিম্বুরা আর কাজরা রে কাজরা রে আর মুঙ্গড়া মুঙ্গড়া আর হাজারো হিন্দি মারাঠি গুজরাটি পাঞ্জাবি গানের সাথে কাঠি নিয়ে সে যে কী ড্যান্স!! চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। তিন বছর দিল্লিতে আছি, এত কাছ থেকে ডান্ডিয়া রাস দেখি নি। পাগ্‌লা জিনিস মাইরি! বয়েসের কোনও বাধা নেই, ছুঁড়ি থেকে বুড়ি সবাইকার পা একসাথে পড়ছে, উঠছে, দৌড়চ্ছে, স্থির থাকতে দিচ্ছে না কাউকে। নাচছি আমরাও। সব্বাই। স্টেজের ওপরে, নিচে, থিকথিকে ভিড়, সব্বাই নাচছে। হ্যান্ডিক্যামে করে তুলে রাখলাম যতক্ষণ না ব্যাটারি শেষ হয়।

    গ্রেট নবমী নিশি মাইরি, বাই হার্ট বলছি, পোহায়ো না বস্‌। বাংলায় এ রকম গান যে কেন তৈরি হয় নি!
  • Samik | 125.23.26.233 | ০২ অক্টোবর ২০০৬ ০০:১৬670740
  • দিল্লির পুজো: ছোট্ট করে:

    http://www.anandabazar.com/1desh4.htm
  • Pallab | 59.93.247.123 | ০২ অক্টোবর ২০০৬ ০১:১৪670741
  • শান্তনু, পদ্ম বাবদে সাফাই ভাটে দিয়েছি।

    সবাই, আগামী কালের আকর্ষন ... সিন্দুর খেলা! ডিংডং :)
    কলকাতা সময় ৬:৩০ কিংবা এট্টু আগে থেকেই পাবে। লিংক:
    http://www.chitrasilpi.com
    নাড়ুয়া অন-লাইন-এ। কেমন লাগলো জানিও। :)
  • Riju | 124.7.98.49 | ০২ অক্টোবর ২০০৬ ০১:৪১670742
  • নবমী সকাল -
    এশিয়ান পেন্‌ট্‌স এর পুরস্কার ঘোষণা হয়ে গেছে।যারা পেয়েছে তাদের চৌকাঠে টাঙ্গানো পোস্টার -গর্বিত বিজয়ী ২০০৬। এশিয়ান পেন্‌ট্‌স এর গাট্টুর ঢাক বজানো ছবিতে মালা।উত্তর কোলকাতা এবার টেক্কা দিয়েছে দক্ষিণ কে - ফল ৩-২। ভবতোষ সুতার ,সনাতন দিন্দা, প্রশান্ত পালের জয়জয়কার এবার ও ।আর যারা শেষ বাছাই তে থেকেও পান নি তাদের মুখ চুন।সক্কাল থেকে মানুষ নেমে পড়েছে 'প্রাইজ পাওয়া' ঠাকুর দেখতে
  • Riju | 124.7.98.49 | ০২ অক্টোবর ২০০৬ ০১:৪৯670743
  • নবমী রাত - জনস্রোতে মিশে
    কসবা ,জপুর , লেকটাউন,হরিদেবপুর,খান্না,হাজরা,বাগবাজার ,কলেজ স্ট্রীট সর্বত্র হাজারে হাজারে লোক,অনেকে হয়ত প্রথমবার কোল্কতা এলো। তার সাথে পাল্লা দিয়ে রাস্তার ধারে ধারে বিরিয়ানি আর রোলের দোকান। মাইকে পাঁচমিশালী গান আর নিরুদ্দেশ ঘোষণা।
    কাল উৎসব শেষ -আবার এক বছর । চিন্ময়ীর চোখের কোণ কি ছলছলে?
    যেও না নবমী নিশী পোহায়ো না ধরি পায়
    তুমি চলে গেলে মাগো ঊমা মোরে ছেড়ে যায়
  • m | 67.173.95.163 | ০২ অক্টোবর ২০০৬ ০৯:৫০670744
  • শনিবার এই শহরের পুজো ছিল,

    সকাল সাড়ে দশটা

    উজান স্নান করে ঘুমিয়ে কাদা,ঘুমিয়ে পড়লে ভালো ই ,মাঝখানে আর বাড়ি আসার ঝক্কি নেই,তার সব খাবার -জল-জামা পোটলা বন্দী করে আমাদের সাজগোজের পালা,সাজ সাঙ্গ হতে না হতেই ছেলের চীৎকার,তাকে ধুতি পরিয়ে রওনা হলাম,বাড়ির কর্তাপাঞ্জাবিআর হাফ প্যান্টুতে সোফায় তখনো উপবিষ্ট।

    বেলা দেড়টা
    অঞ্জলি র আর কোনো আশা নেই,খাবার জুটবে কিনা এই বিষয়েও গৃহিনীর উদ্বেগ লক্ষ্য করলাম।আমাদের জন্যে তিনি উপোষ থেকেও অঞ্জলি দিতে পারলেন না। পুজোর জন্যে সাড়ে তিনশো মাইল উজিয়ে গিয়ে ঠিক খাবার শেষ হবার আগে পৌঁছে সামান্য খিচুরি,তরকারি খেয়ে পেটের এক টুকরো ভরিয়ে হলের বাইরে এলাম।

    আড়াইটা

    বেশ মেলার মত পরিবেশ।পাশেই হিন্দু টেম্পল হওয়াতে সেখানেও দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক,নবরাত্রি উৎসবের আয়োজন চলছে ।ছেলে বেশ বড়ো জায়গা পেয়ে নিজের ফর্মে।আমাদের ফোটো সেশানের সুযোগে সোজা সিঁড়ি দিয়ে প্রতিমার সামনে,পড়ি মড়ি করে আমি ও সেখানে,সামনে রাখা ফলের মধ্যে থেকে একটা আপেল হাতে নিয়ে অ্যাপেল টা নেবে বলে আমার সঙ্গে কুস্তি চল্লো।আপেলের শোকে কাতর হয়ে বারবার সিঁড় দিয়ে ওঠানামার বাসনা জানাতে লাগলো।

    তিনটে

    বাবা দায়িত্ব নিয়ে ঘুম পাড়াবার চেষ্টা করতে গাড়ি করে চরকি পাক দিতে নিয়ে গেলোগেলো।আমরা সেই ফাঁকে সোজা হিন্দু মন্দিরে,ভেঙ্কটেশ থেকে শুরু করে শনি পর্যন্ত সবাই সেখানে পূজিত। বাবা ঘুম পারাবার রণেভঙ্গ দিয়ে আমাদের সঙ্গে এসে ভিড়লেন।

    বিকেল ৪ টে থেকে ৬-৩০

    উনি ঘুরে ঘুরে খেলছেন,ধুলো-কাদা য় চামচ কাঁটা ইত্যাদি সংগ্রহ করলেন।এক জায়গায় এক সেকেন্ডের বেশি বসেন নি।বাবা,মা মাসি,কাকু সবাই হা ক্লান্ত।এক ভদ্রলোক নিজেই এগিয়ে এসে জানালেন ওর ছেলেও নাকি এইরকম ই ছিলো,এখনো নাকি শান্ত হয় নি তেমন,জানতে পারলাম তার বয়েস সাত।অন্তত পাঁচ বছরের জন্যে শুবেচ্ছা জানিয়ে ইনি বিদায় নিলেন।মাসি আর কাকু অনুষ্ঠান দেখতে গেছেন,আমরা বাইরে।ক্লান্ত চোখ বন্ধ হয়ে আসছে,বিরতি নেই।

    সাঅড়ে ছটা-আটটা
    ওনার খাওয়া শেষ,গাড়িতে মৌসুমি ভৌমিক বাজছে,উনি কারসিটে ঘুমিয়ে পড়েন পড়েন,আবার জেগে কথা বার্তা শুরু,উপরে কতকি হয়ে জাচ্ছে,আমরা গাড়িতে।

    আটটা

    ঘা কতক দিয়ে গাড়ি থেকে বার করে হলে,একজন তোতাকাহিনী পাঠ করছেন,বাড়ির তোতার তখন গলা দিয়ে বিজাতীয় কান্না আসছে।
    আমরা হলের শেষ প্রান্তে বসে আছি,খেতে দিলেই বাড়ি যাই,এক মহিলা গান ধরামাত্র ছেলে ঘুমিয়ে কাদা।

    পৌনে নটা

    ছেলারা জেনে এলো,খাবার দেবে নটায়।স্ট্রলার চ্যাংদোলা করে উনি নীচে নামলেন,নাকে -মুখে দিয়ে আবার গৃহে ফেরা।

    আজ আবার সাড়ে তিনশো মাইল উজিয়ে বাড়ি ফেরা।

    আমাদের একটি বিপন্ন পুজো কেটে গেলো।
  • dri | 66.81.199.190 | ০২ অক্টোবর ২০০৬ ১১:১০670746
  • নবমী, সান ডিয়েগো

    চারটে ফ্যামিলি রেগেমেগে বাইরে খেয়ে এলাম। এছাড়া? কস্টকোর বাজার করলাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন