এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • হিন্দমোটর - আলো থেকে অন্ধকার

    Dipankar Patra লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ১৬ মার্চ ২০১৬ | ১৬৭১২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Dipankar Patra | ১৬ মার্চ ২০১৬ ০৯:১৬705133
  • অন্ধকার দেখেছিস? নিকষ কালো অন্ধকার?
    -হ্যাঁ। অন্ধকার না দেখার কি আছে? অমাবস্যার রাতে বাড়ির ছাদে গিয়ে দাঁড়ালেই বেশ টের পাওয়া যায়। গেল ফেব্রুয়ারি তে ভালপাহাড় গেছিলাম। খাওয়া দাওয়ার পরে রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়েছি, এক হাত দূরের জিনিষ দেখা যাচ্ছিল না। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি কালো আকাশ জুড়ে লক্ষ লক্ষ তারা। তারার আলো বলে কিছু হয় কিনা ভাবছিলাম। বেশ কিছু সময় পর, চোখ সয়ে এল একটু একটু করে। বুঝতে পারছিলাম রাস্তা, রাস্তার ধারে তাল গাছ, মাঠ, মাঠে-চরাচর জুড়ে আকাশ থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে তারার আলো।
    -আরে ধুর। জিগালাম অন্ধকারের কথা। কাব্য করতে আরম্ভ করল। রাতে যখন ফিরিস হাওড়া থেকে ট্রেনে, তখন হিন্দমোটর স্টেশন টা পেরোলে বাঁদিকে তাকিয়ে দেখেছিস কখনো? দেখবি, কাকে বলে অন্ধকার। বন্ধ কারখানায় আলো জ্বলেনা প্রায় দু-বছর হয়ে গেল। সামনের ঘাছে ছাওয়া সুন্দর রাস্তাটায় আলো নেই। কারখানার চৌহদ্দি পেরিয়ে জলা জমি। সেখানে তো আলো জ্বলেই না। এই জলা জমির মাঝখান দিয়ে একটা রাস্তা আছে। কারখানা চালু ছিল যখন, ওই রাস্তাতেও তখন আলো জ্বলতো। এখন দেখবি, শুধুই নিকষ কালো অন্ধকার। তাকাতে পারবি না।অস্বস্তি হবে। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। যখন কলেজে পড়তাম, তখন যদিও মারুতি এসে গেছে, তবুও হিন্দমোটর লড়াই ছেড়ে দেয় নি। রাস্তাতে মারুতির ওই খেলনা গাড়ির চেয়ে শক্তপোক্ত অ্যাম্বাসেডর ই দেখা যেত বেশি। সামনের ওই যে অন্ধকার রাস্তা, নতুন গাড়িতে ভর্তি থাকত। আর জলার মাঝখান দিয়ে যে রাস্তা, ওটা ছিল গাড়ি টেস্ট করার রাস্তা।
    -হ্যাঁ। সেই সময় তো সকালে অফিস যাওয়ার সময় যারা হাওড়া যাব, হিন্দমোটর এলে ঠিক জায়গা পেয়ে যেতাম। আমাদের শিবপুরের কলেজ থেকে মেকানিকাল এর ছেলেরা বেশ কয়েকজন হিন্দমোটরে চাকরি পেতো। আমার মামাবাড়ির পাশেই বাড়ি ছিল চম্পা-মৌসুমী দের। ওদের বাবা হিন্দমোটরে কাজ করতো। সবাই বলতো ওদের না কি খুব ঠাঁটবাঁট, চম্পা-মৌসুমীর মাএর মাটিতে পা পড়ে না।
    -আর ঠাঁটবাঁট। কারখানাটা বন্ধ হয়ে গেল। এত হাজার শ্রমিক- কোন কাজ নেই হয়ে গেল সব।কারখানা চালু ছিল যখন, আলোয় ঝলমল করতো হিন্দমোটর। সেই আলো পেরিয়ে ওই জলাজমি একটা ভারসাম্য দিত। জলাজমি জুড়ে শীতকালে পানিফল হত। ছোট ছোট ডিঙি নৌকা নিয়ে স্থানীয় মানুষ জন, বেশির ভাগই হিন্দমোটর বা আসেপাশের অন্য কারখানার শ্রমিক, অবসরে পানিফল তুলে আনতো। আর সেই ভারসাম্য নেই। আলো অন্ধকারের ভারসাম্য হারিয়ে গেছে। এখন শুধুই অন্ধকার। একে একে সব কারখানা বন্ধ হয়ে গেল এদিকে। ভুগোল বই এ পড়া সেই রিষড়ার জে কে স্টীল, কোন্নগরের হিউম পাইপ, শ্রীরামপুরের স্ট্যান্ডার্ড ফার্মেসী - এরকম কত। ভাঙাচোরা কাঠামোর ওপর জঙ্গল হয়ে গেল। আশা করে বসে থাকতে থাকতে শ্রমিক শিখে নিল রিক্সা চালাতে, মোট বইতে। একটা গোটা শিল্পাঞ্চলের প্রশিক্ষিত শ্রমিকের দল অশিক্ষিত ভিখারিতে পরিনত হল। হিন্দমোটর সে তালিকায় শেষতম সংযোজন।
    -হ্যাঁ। কিন্তু একটা ভাল খবর আছে।
    -কি?
    -আবার আলো জ্বলবে। ওই জলাভূমি তে শহর গড়ে উঠছে, জানতো? অনেক ফ্ল্যাট, রাস্তা, পার্ক, শপিং মল।
    -হ্যাঁ। জানিনা আবার। কারখানা অন্ধকার থাকবে। জলাভূমিতে শহর হবে। আধুনিক শহরের পাশে প্রাগৈতিহাসিক কারখানার ধ্বংসাবশেষ। শ্রমিক রা আবার কাজ পাবে। ওই শহরে রিক্সা চালাবে। তার বউ কাজ পাবে ঠিকে ঝি-এর। তাদের ছেলে মেয়েরা পড়াশুনার পালা চুকিয়ে সেই শহরের চায়ের দোকানে ফরমাস খাটবে। আলোয় আলোকময় হয়ে হে এসো আলোর আলো।
    কি জানিস, একটা গল্প শুনেছিলাম। আফ্রিকার কোন দেশের কেউ একজন আমাদের আ্যম্বাসেডর গাড়ি দেখে না কি খুব হেসেছিল। তখন তার ভারতীয় বন্ধু বলেছিল, " হাসছ ঠিক আছে, কিন্তু এই গাড়িটা আমাদের ভারতে তৈরি। আর তোমাদের দেশে যে দামী দামী গাড়ি ছুটে বেড়ায়, তার কোনটাই কিন্তু তোমাদের দেশে তৈরি নয়। সবই বিদেশী। ভারতীয় রা নিজেদের গাড়ি নিজেরাই করতে পারে। "
    সেই গর্ব টুকুও আর রইল না। উলটে হাজার খানেক মানুষ গর্বিত শ্রমিক থেকে অশিক্ষিত মজুর বা ভিখারি হয়ে গেল।
  • dc | 132.164.41.106 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ০৯:২৬705145
  • অ্যাম্বাসাডর এর মতো ইনএফিসিয়েন্ট গাড়ি তৈরি করেও গর্ব করা যায়? বাপরে!
  • Arpan | 24.195.229.2 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ০৯:৫৯705156
  • আবার সে এসেছে ফিরিয়া।
  • lcm | 83.162.22.190 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১০:০১705167
  • কে? স্বদেশী আন্দোলন?
  • Arpan | 24.195.229.2 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১০:১৭705178
  • টাটাবাউদের গাড়ি। সম্পূর্ণ ভারতীয়।
  • d | 144.159.168.72 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১০:২১705189
  • মাহিন্দ্রাও।
  • শ্রী সদা | 212.142.113.69 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১০:২৪705200
  • http://fojusi.com/nokia-ceo-cries-hands-company-microsoft/

    "Nokia has been a respectable company. They didn’t do anything wrong in their business, however, the world changed too fast. Their opponents were too powerful.

    They missed out on learning, they missed out on changing, and thus they lost the opportunity at hand to make it big. Not only did they miss the opportunity to earn big money, they lost their chance of survival.

    The message of this story is, if you don’t change, you shall be removed from the competition."
  • dc | 132.164.41.106 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১০:৩৩705211
  • শুধু নোকিয়া কেন, গাড়ি শিল্পেই তো ক্লাসিক উদাহরন আছে। অ্যামেরিকার গাড়ি শিল্প জাপানি কম্পিটিশনের মুখে প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছিল। জাপানি ম্যানেজমেন্ট টেকনিক, টয়োটা প্রোডাকশান সিস্টেম, লিন ম্যানেজমেন্ট এসবের সাথে পাল্লা দিতে পারেনি। কিন্তু এই ইনোভেশনগুলোর সুফল ভোগ করেছে সারা পৃথিবীর কনসিউমার আর অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রি। আবার পরে অ্যামেরিকাতেও ডেমিং প্রাইজ চালু হয়েছে আরো ভালোভাবে কম্পিট করার জন্য। ভাগ্যিস গাড়ি নিয়ে অ্যামেরিকানদের গর্ব জাপানিরা ভেঙ্গে দিয়েছিল! আর ভাগ্যিস অ্যাম্বাসাডার নিয়ে ভারতের "গর্ব" ভেঙ্গে দিয়েছিল মারুতি ও পরে অন্যান্য দেশী বিদেশী গাড়ি কোম্পানিগুলো, যার সুফল আজ আমরা ভারতীয় কনসিউমারারা পাচ্ছি।
  • হেমিড্যাকটাইলাসফ্লাভিভিরিডিস | 170.83.42.137 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১১:০২705222
  • মাহিন্দ্রার XUV5OO 4x4 একটা অসম্ভব অসাধারণ গাড়ি। তবে টেস্ট ড্রাইভটুকুই, তার বেশি কিছু না। কুপ্রীতে, শ্রীদম, শেখসিকিদের মত রইস হলেও না হয় একটা ভাবনাচিন্তা করা যেত।
  • lcm | 83.162.22.190 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১১:০৭705134
  • মাহিন্দ্রার ট্রাকটারের অ্যাড এখানকার টিভি চ্যানেলে দেখেছি, আম্রিগায় বিক্রি হচ্ছে।
  • :/ | 132.177.136.28 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১১:১১705136
  • আমার টেস্ট ড্রাইভটুকুও করার সুযোগ জোটে নি। অপেক্ষায় আছি, লুরুর কোনও রইস আদমি যদি আমায় গিফট করে ...
  • Arpan | 116.206.143.0 | ১৬ মার্চ ২০১৬ ১১:২৪705137
  • সেই। শ্রীডিভোর মত রইসত্বের লেভেলে পৌঁছলে না হয় সি-ক্লাস নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা যেত।
  • Dipankar Patra | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৪:২৫705138
  • হিন্দমোটরের গাড়ি কেমন তা নিয়ে না ভেবে একটু সেই মানুষ গুলোর কথা ভাবুন সবাই যারা এই অন্ধকারের মধ্যে পড়লো। বিড়লা রা কেন হিন্দমোটর কে এই অবস্থার মধ্যে নিয়ে গেল? কেন রিষড়ার জে কে স্টীল বন্ধ হলো? কেন স্ট্যন্ডারড ফার্মেসী বন্ধ হলো। প্রশিক্ষিত শ্রমিক কি ভাবে রিক্সাচালক আর ফ্ল্যটবাড়ির দারোয়ানে পরিনত হলো?
  • দেব | 135.22.193.148 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৬:১১705139
  • যেটা জনতা বলতে চাইছে সেটা হল উঁচু ইমপোর্ট ট্যারিফের আড়ালে লুকিয়ে ব্যবসা করা এই সব সরকারী কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ারই ছিল আজ না হয় কাল। হিন্দমোটরের শ্রমিকদের বাইরে দেশটাতে আরো লক্ষ কোটি মানুষ আছে। ট্রেজারির টাকায় শুধু এদেরকে কদ্দিন বাঁচানো যায়। হয় লাভ করো নয়তো.....
  • de | 24.139.119.171 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৬:৩২705140
  • এই কথাটা বোধহয় পুরোপুরি সত্যি নয় -- ডানলপ, হিন্দমোটর, উষা, ইন্ডিয়া ক্যাপাসিটর এই কারখানাগুলো একে একে যখন বন্ধ হয়ে যায়, তখনও সারা ভারতে এদের মালের চাহিদা যথেষ্ট - ইউনিয়নবাজী আর খারাপ মালিকানা বন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ, কিন্তু এই দুটোই বোধহয় একমাত্র কারণ নয়।

    একটু অন্যভাবে ভাবলে বায়ো-কমপ্যাটিবল প্যাকেজিংয়ে জুটের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও জুট কারখানা বন্ধ হয়ে যায় কেন? কেন লাখো লাখো ডলার কেজি দার্জিলিং চা উৎপাদন করা সত্ত্বেও চা-বাগান বন্ধ হয়ে যায়, কেন চা-শ্রমিকরা অনাহারে থাকে?

    উত্তরগুলো খোঁজা জরুরী!
  • ranjan roy | 24.97.103.54 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৮:০১705141
  • de,
    ধন্যবাদ। অপ্রিয় সত্যি কথা বলার জন্যে।
  • SS | 160.148.14.3 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৮:১৪705142
  • এই অবস্থা আমেরিকার ইন্ডস্ট্রিয়াল টাউন গুলোতেও। পুরোনো কোল মাইনিং, স্টিল ম্যানুফ্যাক্চারিং টাউনগুলো মৃতপ্রায়। আর সবথেকে সফলভাবে এই সেন্টিমেন্টকে ইউজ করেচেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আর বার্নি স্যান্ডার্স।
  • dc | 132.164.88.15 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৯:০৯705143
  • যেকোন ফ্যাক্টরি বা ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে কিছু লংটার্ম ম্যাক্রোইকনমিক ট্রেন্ড, বা মার্কেট ট্রেন্ড, বা ম্যানেজমেন্টের অপদার্থতা-অদক্ষতা-লোভ থাকবেই। এর মধ্যে প্রথম দুটো ইনএভিটেবল। যেমন ধরুন নোকিয়া, গতকাল শ্রী সদা যাদের উদাহরন দিলেন। স্টিভ জবস ফোন মার্কেটকে এমন ভাবে ডিসরাপ্ট করলেন যে নোকিয়ার আর কিছু করার থাকলো না, সাথে সাথে আরো কিছু প্রোডাক্টের নাভিশ্বাস উঠলো। আবার ব্ল্যাকবেরি, যারা কনসিউমার ট্রেন্ড ঠিকমতো বুঝতে পারলো না, ব্ল্যাকবেরি ওএসে আটকে থাকলো, ফলে উঠে গেল। অন্যদিকে গুগল ইনোভেট করল, অ্যাডাপ্ট করলো, স্মার্টফোনের জন্য ওপেন সোর্স অ্যান্ড্রয়েড বানালো, সেটা এমন জনপ্রিয় হলো যে খোদ মাইক্রোসফটের মনোপলি শেষ হয়ে গেল। একইভাবে আর কয়েক বছরের মধ্যে হয়তো অ্যাপল পে আর অ্যান্ড্রয়েড পে এমন জনপ্রিয় হবে যে এখনকার কার্ড পেমেন্ট সিস্টেম অবসোলিট হয়ে যাবে। দশ বছর পরে হয়তো ওয়্যারেবল ডিভাইসেস পেয়ার্ড উইথ IoT এমন জনপ্রিয় হবে যে এখনকার স্মার্টফোন ধুলোয় গড়াগড়ি খাবে। কাজেই সময়ের সাথে কোম্পানি খুলবে, বন্ধ হবে, এটা ইনএভিটেবল।

    এবার হিন্দমোটর, এই কারখানা বন্ধ হওয়ার পেছনে ম্যানেজমেন্টের অদক্ষতা, লোভ, করাপশন সবই আছে। ওরা দীর্ঘ দিন সরকারের প্রোটেকশন পেয়েছে, ডিজাইন আপগ্রেড করেনি, কন্জিউমার প্রেফারেন্সকে পাত্তাও দেয়নি, কারখানার মূলধন চুরি করেছে। ফলে নব্বুইয়ের শেষ থেকে যখন লাইসেন্স রাজ উঠে গেল, কম্পিটিশন চলে এল, তখন হিন্দমোটর যে উঠে যাবে সেটা ইনএভিটেবল ছিল। ১৯৬০ সালের মান্ধাতার মরিস অক্সফোর্ডের বডি নিয়ে কতো লড়তো? তার ওপর পশ্চিম বঙ্গের পরিচিত ট্রেড ইউনিয়ন সমস্যা তো ছিলই।

    এবার হিন্দমোটরের শ্রমিকদের কথা। একেবারে বাস্তব কথা হলো কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে সেই কারখানার শ্রমিকদের এই অবস্থা হবেই। সারা পৃথিবী জুড়ে হাজার বছর ধরে নতুন পেশা তৈরি হয়েছে, পুরনো পেশার লোকেরা ডিসপ্লেসড হয়েছেন, ইকনমিকালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভবিষ্যতেও নতুন টেকনোলজি আসবেই, নতুন পেশা তৈরি হবেই, পুরনো কারখানা উঠে গিয়ে নতুন শিল্প তৈরি হবেই, পুরনো শিল্পর সাথে জড়িত শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেনই। কারখানা কেন বন্ধ হলো, আমার মতে সেই প্রশ্ন করা অবান্তর বা করে লাভ হবে না। বরং যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যেমন হিন্দমোটরের শ্রমিক বা চা কারখানার শ্রমিক, তাঁদের যদি কোনভাবে অন্য কোন ব্যবসা চালানোর ট্রেনিং আর মূলধন দেওয়া যায়, সেটা বরং বেশী কাজের হবে। এই যেমন এই লেখায় পড়লাম হিন্দমোটরে নতুন আবাসন হবে। সেই আবাসনে নিশ্চয়ই নানান সার্ভিসএরও দরকার হবে, যেমন হোম কুকড ফুড। তো কেউ যদি হোম কুকড ফুড ডেলিভারির ব্যবসা শুরু করেন, যে সার্ভিসটার খুব চাহিদা, তাহলে তিনি ভালো প্রফিট করতে পারবেন। চেন্নাই-ব্যাঙ্গালোরে তো হোম কুকড ফুড এর অনলাইন অ্যাগ্রিগেটরও শুরু হয়েছে, কিছুটা উবের মডেলে, আর পেপারে পড়ি যাঁরা এরকম খাবার বানিয়ে পাঠাচ্ছেন তাঁরা বিরাট প্রফিটও করছেন। কাজেই একটা জায়গায় আটকে না থেকে সামনের দিকে এগিয়ে গেলেই ভালো।
  • pi | 24.139.209.3 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৯:১২705144
  • চায়েরও চাহিদা নেই, কী বলেন ? ঃ)

    দেসির পোস্টে প্রশ্নগুলো দেখে ভাল লাগল। এসব হিন্দমোটর, আম্বাসাডর , এসব নিয়ে কেউ লিখলে খিল্লি খোরাক কি তপনীয় গাল খিস্তির ভীড়ে এই প্রশ্নগুলো তো হারিয়েই যেতে দেখি।
  • dc | 132.164.88.15 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৯:১৬705146
  • আরেকটা কথা বলি, এই গর্বিত শ্রমিক ব্যাপারটা আমার ঠিক পোষায় না। যে কাজ করে প্রফিট করা যাবে সেই কাজই কাজ। এককালে গর্বিত শ্রমিক ছিলাম বলে চিরকাল গর্বিত শ্রমিক থেকে যাবো এটা আমি মানতে পারিনা। আর ভারতে কিন্তু সার্ভিস ইকনমি আগের থেকে যথেষ্ট ভালো হয়েছে, প্রতিদিন আরো এক্সপ্যান্ড করছে। উপার্জন করার মতো নানান অপরচুনিটি তৈরি হচ্ছে।

    "জলাভূমি তে শহর গড়ে উঠছে, জানতো? অনেক ফ্ল্যাট, রাস্তা, পার্ক, শপিং মল" এতোবড়ো একটা শহের উপার্জন করার অপরচুনিটি থাকবেনা, এটা মনে হয়না।
  • dc | 132.164.88.15 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৯:১৮705147
  • pi আমাকে বললেন? চায়েরও চাহিদা আছে, গাড়িরও চাহিদা আছে। এই টইতে আমার পোস্টগুলো কোনটাই খিল্লিও না, খোরাকও না, সবকটাই সিরিয়াসলি করেছি। যা বাস্তব সেটাই লিখেছি।
  • aranya | 154.160.226.91 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২০:৫০705148
  • 'এবার হিন্দমোটর, এই কারখানা বন্ধ হওয়ার পেছনে ম্যানেজমেন্টের অদক্ষতা, লোভ, করাপশন সবই আছে'

    - করাপশন-এর জন্য ম্যানেজমেন্ট শাস্তি পেলে ভাল হয়। বিশেষতঃ শ্রমিক-দের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা যারা মেরে দেয়
    চোর বিজয় মাল্য -কেও যদি জেলে পাঠান যেত..
    কেই বা শাস্তি দেবে, সরকার-ও করাপ্ট মানুষে ভরা, ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়
  • dc | 132.164.88.15 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২০:৫৮705149
  • একমত। ম্যানেজমেন্ট চুরি করলে অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিত, মাল্য থেকে আর সবাই। আমাদের দেশে ক্রোনি ক্যাপিটালিজম বড্ডো বেশী, এটারও শেষ হওয়া দরকার। তবে আমাদের দেশে সব জায়গায় করাপশন এমন লেভেলে চলে গেছে যে সেটা হবে বলে মনে হয়না।
  • lcm | 60.242.74.27 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২১:০০705151
  • ডিসি,
    তুমি যে কথা বললে সেটা ঠিক। বা, S যে আম্রিগার উদাহারণ দিল সেটাও ঠিক।

    কিন্তু, De যে কথাটা বলেছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। হিন্দমোটর বন্ধ মানে এই নয় যে ভারতে গাড়ি বিক্রি কমে গেছে। বা গাড়ি বিক্রির মার্কেট তেমন নাই। হিন্দমোটর মার্কেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অন্যরকম গাড়ি বানায় নি কেন সেটা একটা প্রশ্ন। ৯০-এর মুক্ত অর্থনীতির পরেও স্রেফ সরকারি কন্ট্র্যাক্টের ওপর ভরসা করে কেন কোম্পানি চলে - সরকারই বা জেনেশুনে কি করে ...
  • aranya | 154.160.226.91 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২১:০০705150
  • কারখানা-র জমি প্রোমোটার-দের হাতে তুলে দেওয়া, এটা বেআইনী মনে হয়, পড়েছিলাম কোথাও। আইন পাশ কাটান হয়, সরকার চোখ বুজে থাকে।

    আর 'গর্বিত শ্রমিক' কথাটা শ্রমিক-কে গ্লোরিফাই করছে না, দক্ষতা-কে করছে। দক্ষ শ্রমিক বা যে কোন মানুষ যারা অর্জিত স্কিল ব্যবহার করে জীবিকা অর্জন করেন তাদের গর্ব আনস্কিলড মজুর বা ভিখারি-র চেয়ে বেশি -এইরকম কিছু
  • dc | 132.164.88.15 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২১:০৯705152
  • lcm দা সে তো লিখলামই, গাড়িরও চাহিদা আছে আর চায়েরও চাহিদা আছে। কিন্তু যতোই চাহিদা থাক ম্যানেজমেন্ট যদি মার্কেটে কমপিট না করতে তাহলে সে কারখানা তো উঠে যাবেই। অ্যাম্বাসাডর এমন গাড়ি ছিল যে ম্যানেজমেন্ট যদি করাপ্ট নাও হতো তাহলেও উঠে যেত, কারন ও গাড়িটার কোনরকম উন্নতিই হয়নি। আজকের হিউন্ডাই, টয়োটা, হন্ডার সাথে অ্যাম্বাসাডর কমপিট করছে এরকম সম্ভাবনা কি দূরবিন দিয়েও দেখা যায়। আর প্রোটেকশনিস্ট সরকার আরেকটা বড়ো কারন। যেদিন সরকার ঘোষনা করেছিল যে সব সরকারি গাড়ি আর সব ট্যাক্সি বাধ্যতামূলক অ্যাম্বি হতে হবে, সেদিনই ওটার মৃত্যু ঘটেছিল। সরকার কখনো কোন দেশে প্রোটেকশন দিয়ে কোন প্রোডাক্ট চালাতে পারেনি, কারন ওটা বেসিক কনসিউমার সাইকোলজির বিরুদ্ধে।
  • santanu | 119.177.246.149 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২৩:১৩705153
  • কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে 'গর্বিত শ্রমিক' রা কি করবে? ভিক্ষে বা দারোয়ানি?

    এছাড়া আরো কিছু গর্বিত কাজ করার সুযোগ আছে । এ অঙ্ক টা আগেও একবার লিখেছিলাম, আবার দিচ্ছি।

    টাউনশিপ হচ্ছে যখন, অন্তত ১০০০ ফ্ল্যাট প্রতিটি ১০০০ sft হবে। কলকাতায় মধ্যবিত্তের ফ্ল্যাট এর কনস্ট্রাকশন কস্ট মোটামুটি ১২৫০ প্রতি sft । এখনো তার মোটামুটি ৩০% হলো ডায়রেক্ট ম্যান্ পাওয়ার কস্ট। অন্তত তিন বছর (৩৬ মাস) লাগবে এই টাউনশিপ বানাতে।

    তাইলে ডায়রেক্ট ম্যান্ পাওয়ার খাতে প্রতি মাসে কত খরচ?

    ১০০০ x ১০০০ x ১২৫০ x ৩০% বাই ৩৬ = প্রায় ১ কোটি মাসে।

    শ্রমিকরা যখন কারখানা তে নিজের হাতে কাজ করে গর্বিত হয়েছে, তাদের ওই ইলেকট্রিক এর তার টানা, জলের লাইন লাগানো, ইঁট গাথা, টালি বসানো শিখে নিতে বেশি সময় লাগবে না। যতদিন না শেখে, ততদিন হেলপার, একটু কম ডেলি পয়সা।

    ঘরের পাশে লেবার থাকলে সাপুর্জি (ওরা বানাচ্ছে তো?) ও বাইরে থেকে ডায়রেক্ট ম্যান্ পাওয়ার আনবে না।

    আর তিন বছর পর, কলকাতা ও তার আশপাশে অনেক স্কিল্ড প্লাম্বার, ইলেক্ত্রিসিয়ান, মেসন পাওয়া যাবে, আমায় আপনাকে গিয়ে, আয়না বাবা একবার বলতে হবে না।

    আগের বার এরম কিছু লেখার পর এক ছাগল প্রশ্ন করে ছিল, তালে তো সব কারখানা বন্ধ করে বাড়ি বানালেই হয় - এ ব্যাপার এ আমার কোনো বক্তব্য সেদিন ও ছিল না, আজ ও নাই।
  • | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২৩:২০705154
  • বেঙ্গল শ্রীরাম বানাচ্ছে।
  • S | 202.156.215.1 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২৩:২৮705155
  • লিখতেই হলো।
    একটা পুরোনো গাড়ির কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে সেখানকার স্কিল্ড লেবারদের অসুবিধে হওয়ার কথা নয় যদি আরেকটা নতুন গাড়ির কারখানা থাকে। গাড়ির ডিমান্ড বেড়েছে, সঙ্গে অটোমেশনও হয়েছে - তবুও নতুন গাড়ির কারখানায় লেবারের প্রয়োজনীয়তা কম নয়।
  • pi | 24.139.209.3 | ১৭ মার্চ ২০১৬ ২৩:৩৫705157
  • গাড়ির উন্নতি করেনি, আধুনিকীকরণ করেনি, মার্কেটিং করেনি, এগুলো কারা করেনি ? দায় কার ? ম্যানেজমেণ্টের না ? তার ফল ভোগ করবেন শ্রমিকেরা ?
    শ্রমিকেরা তো বারবার এই আধুনিকীকরণের দাবি তুলে এসেছিলেন। জমি বিক্রি ক'রে যে টাকা পাওয়া গেছিল, সেগুলো তো এইসবের পিছনেই খরচ হবার কথা ছিল। তার জায়গায় কী হল ?
    দায় কার ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন