এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • খান - ভালোবেসে খান

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ | ৫৭৫৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • লেবু বেশী কচলালে তেতো হয়ে যায় – তবে কিনা যত বড় লেবু তত বেশী সময় লাগবে তেতো হতে, ততক্ষণ আপনি কচলে যান। আমার ক্ষেত্রে এই কচলানোটা ঠিক কবে শুরু হয়েছিল ঠাওর করতে পারছি না, কিন্তু আপাতত আমি রীতিমত ফেড-আপ – বিদেশী খাবারের সাথে আমার কত ফ্যামিলিয়ারিটি, সেই বোঝানোর জন্য বাঙালী তথা জানাশুনা ভারতীয়দের নিদারুণ প্রচেষ্টা দেখে দেখে! কার বাড়িতে দিদিমা পিৎজা বানাতো – দাদু তিনতলার ছাদে অলিভ গাছ লাগিয়ে ছিলেন, কার মামা ছোটবেলায় বার্গার খেয়ে খেয়ে এখন পুরোপুরি অবিস এবং অম্বলের রুগি, কার দেশের বাড়িতে পাঁঠা দিয়ে থাই গ্রীন কারি হত, অ্যাভোকাডো দিয়ে পাস্তা কার স্কুল লাইফে ফেভারিটি টিফিন ছিল – ইত্যাদি, ইত্যাদি। এমন ফেড আপ আমি আগে হতাম ফেলে আসা চল্লিশ বিঘে আমবাগান, পঞ্চাশ বিঘে দিঘী এবং ততসহ হামেশা কুড়ি-ত্রিশ কিলো কাতলার গল্প শুনে। তাহলে সব বাঙালী বা ভারতীয়ই কি এক গোত্রের? মোটেই না – আমি মেজরিটির কথা বলছি মাত্র। না হলে খোদ কোলকাতাতেও বিদেশী রেষ্টূরান্ট চলছে কি করে? সে যতই ইণ্ডিয়ানাইজড্‌ হোক না কেন সেই বিদেশী খাবার! আর্ট-কালচার লাইনের সাথে এই লাইনের আঁতেলদের একটা প্রগাঢ় প্রধান মিল আছে, সেটা হল এই যে উভয় ক্ষেত্রেই ফাঁকা কলসির আওয়াজ বেশী। এটা বোঝা কি খুবই কষ্টের যে - যিনি খান, তিনি খান – এবং তিনিই কম ফাটান। গ্রীক স্যালাড আমি বুঝি তা পাঁচজনকে জানাবার জন্য দাদুকে দিয়ে ছাদে অলিভ গাছ লাগানোর সত্যি কি কোনও দরকার ছিল?

    শ্রেষ্ঠ খাবার – এই কনসেপ্টটাই গোলমেলে। সর্বমতগ্রাহ্য ইউনিভার্সালি ভালো খাবার বলে দাগিয়ে দিয়ে গেলানো এবং চালানোর চেষ্টা করা তো আরোই জটিল মনস্তাত্ত্বিক আলোচনায় পর্যবসিত হতে পারে। আমি খাই, আমি খেয়েছি, আমি খেতে ভালোবাসি – এই তিন জিনিস নিয়ে আলোচনায় ভারতীয় জিনের মধ্যে ঘুঁষে থাকা কম্পিটিটিভ ব্যাপারটা রীতিমত প্রকট হয়ে পরে – সত্যের সাথে মিথ্যার রেশিওটা কন্ট্রোলের বাইরে চলে গিয়ে কখন যে ককটেল তেতো করে দেয় সেই খেয়াল আমাদের থাকে না! উচ্ছে খেতে ভালো লাগে না সেই বলাটা মা আর বউয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হিষ্টরিক্যালি। কিন্তু সুশি বা পাস্তা খেতে ভালো লাগে না এটা কি লোক সমাজে স্বীকার করা যায় নাকি?

    কিন্তু প্রশ্ন হল কেন যাবে না? কেউ কি মাথার দিব্বি দিয়েছে নাকি যে সব খাবার ভালো লাগতেই হবে? নাঃ – কেউ দেয় নি। কোন নাম্বার কাটা যাবে নাকি যদি বলি কাঁচা হ্যারিং খেতে ভালো লাগে না? নাঃ – কেউ নাম্বার কাটার জন্য বসে নেই! কিন্তু ভাই বউয়ের খোঁচার হাত থেকে তুমি কি বাঁচাতে আসবে? আমি সেবার সরল মনে বললাম, সুশি জিনিসটা ঠিক আমার আসে না – পাশ থেকে বঊয়ের কি নিদারুণ গোঁত্তা – কেন, তুমি কি ভুলে গেলে সেই বার বেড়াতে গিয়ে অত ভালো সুশি খেলাম আমরা! কোথায় বেড়াতে গিয়ে সেই নিয়ে আর চটকানোর সাহায্য পেলাম না।

    মোদ্দা কথা আমার বক্তব্য হল, বিদেশীরা যেমন সহজে বলতে পারে ভারতীয় খাবার আমার সহ্য হয় না – আমরা ভারতীয়রা কেন বুক ফুলিয়ে বলতে পারব না যে স্প্যানিশ পাইয়া বা ইতালিয়াল রিসত্তো আমার সহ্য হয় না (যদি সত্যি অপছন্দের হয় আর কি)? বিদেশী খাবার সহ্য হয় না বলতে আমাদের বুক দুরুদুরু করে – কৈ, পাছন্দ নয়, সেটাও তো বুক ফুলিয়ে সচরাচর আমরা বলি না? ঐতিহাসিকরা এই জিনিসটায় তেমন নজর দেন নি – মনে হয় অনেক গবেষণার অপশন খালি রয়েছে। যদিও আমার গবেষণা বলছে এই সবের পিছনেই আছে ইনফিওরিটি কমল্পেক্স! তবে তেমন খ্যামতাওলা গবেষক হলে হয়ত প্রমান করে দেখাতে পারতেন যে আমাদের মধ্যে দাসত্বের বীজ ঢুকে থাকার জন্য সাদা প্রভুদের খাবার ভালো নয় বলতে আমাদের মধ্যে প্রবল অনিহা। এমনকি এর মধ্যে সাব-অলটার্ণ, সাব-মেসিভ, মেসোজিনিক, পোষ্টমডার্ণ বা মার্কসীয় তত্ত্ব ঢুকে থাকাও আশ্চর্য নয়! এ এক সোনার খনি, তেমন কোন তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন নি এখনো বিশেষ কেউ – থিওরী ছড়াবার এই চান্স।

    সাদা সাহেবদের মধ্যে এই আলোচনায় বৃটিশরা আসবে না – কারণ তিনশো বছর কাছাকাছি থেকেও ভারতীয়রা ঠিক বুঝে উঠতে পারে নি যে মালগুলো ভারতে আসার আগে কি খেয়ে বাঁচত! নিজেদের বিয়ার এবং তারপর ভারতীয় কারি খেয়ে তৃপ্তির টেঁকুর ইংরেজরা না তুললে বিদেশে ইন্ডিয়ান রেষ্টুরান্টের আজকের এই রমরমা ব্যবসা খাড়া হত না! এক সাদা চামড়া তো অন্য সাদা চামড়ার কথাই শুনবে তাই না? না হলে আমরা কানের গোড়ায় ঘ্যানঘ্যান করেও কি বিয়ারের পর কারি খাওয়াতে পারতাম সাদাদের? কেবলমাত্র ঘ্যান ঘ্যান করে সর্বত্র কোন খাবারকে পুশ করা গেলে বিদেশে আজকে কার্ড-রাইস আর ধোসার রমরমা হত – চিকেন টিক্কার নয়! বৃটিশরা বিন্ধ্য পর্বত পেরিয়ে তেমন সুবিধা করতে না পারার জন্য শুধু সাউথ ইন্ডিয়ানরাই বেঁচে যায় নি, ভারতীয় খাবার প্রতি আগ্রহ থাকা বিদেশীরাও বেঁচে গেছে – না হলে চিকেন টিক্কা মশালা নয়, রসম্‌ খেয়ে আশ মেটাতে হত!

    কিছুদিন আগে বন্ধুরা আমাকে জানালো পুরাকালের বিখ্যাত ফোন কোম্পানী নোকিয়া-র মাথা নাকি দুঃখ প্রকাশ করেছে এই বলে যে – আমরা হেরে গেলাম, অথচ আমাদের কোন দোষ ছিল না! অন্যদল তার্কিক বন্ধু জানালো, আসলে মাথা বলেছেন, আমাদের ‘তেমন’ কোন দোষ ছিল না! স্ট্রেস দিতে হবে ‘তেমন’ শব্দটির উপর। আরেকদল খাবারের প্লেট নিয়ে ব্যুফে অ্যাটাক করার ফাঁকে জানিয়ে গেল যে – এই ভাবেই হেরে যেতে হয়! ব্যুফের দিকে ভেসে যেতে যেতে ডপলার এফেক্টের মত ‘ডারউইন’, ‘ডারউইন’, ‘সারভাইভাল’, ‘ফিটেষ্ট’ এই সব জটিল শব্দবন্ধের উল্লেখ শুনলাম মনে হল। তো আমি সোমবার অফিসে এসে নোকিয়া কোম্পানীর গল্প আমার কলিগ মুথাইয়া মণিমারণ – কে শোনালাম। মন দিয়ে শুনে মণিমারণ বলল – কিন্তু, আমি তো আর মোবাইল বিক্রীর ব্যবসায় নেই! আমি বুদ্ধি যেহেতু প্রখর, তাই চট করে বুঝে গেলাম যে মণিমারণ বলতে চেয়েছে, আমাকে তো আর লোকের পছন্দের উপর নির্ভর করে চলতে হয় না! এবার আরো বুদ্ধিমান পাঠক প্রশ্ন করতে পারেন, এতো লোক থাকতে আমি সেই গল্প মণিমারণকে শোনাতে গেলাম কেন?

    মণিমারণ তামিল, মণিমারাণের বউ আরো নিখাদ তামিল – বাড়িতে তামিল চ্যানেল ছাড়া টিভি চলে না, তামিল খাওয়া ছাড়া অন্য কিছু ভাবার তো প্রশ্নই নেই! আমি মণিমারণকে কোথাও বেড়াতে যেতে দেখি নি – কেবল সিঙ্গাপুর, সেখান থেকে চেন্নাই – সেখান থেকে কোচি। এই চলছে বছরের পর বছর। এর প্রধান কারণ হল – মণির বউ তামিল ছাড়া অন্য খাবার খেতে পারে না। মানে বাকি সাউথ ইন্ডিয়ান খাবারও নয় – নর্থ ইন্ডিয়ান তো বিজাতীয় বস্তু! একবার আমি মণিকে বালি বেড়াতে যেতে প্রায় কনভিন্স করে ফেলেছিলাম। বালির কুটা বীচের কাছে ডিস্কভারী হোটেল খুঁজে দিলাম যার লাগোয়া রয়েছে ভারতীয় রেষ্টুরান্ট ‘কুইন’। সব ঠিক ছিল – কিন্তু শেষ মুহুর্তে আবিষ্কৃত হল যে কুইল নর্থ ইন্ডিয়ান ক্যুজিন – তাই সেই বালি প্ল্যান বাতিল। মণি সিঙ্গাপুরের পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট – তা ভারত যাবার সময় সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে ট্রেন্সফারের সময় মণি সপরিবারে চেক-আউট করে সিটিতে গিয়ে মণির বঊয়ের একমাত্র পছন্দের রেষ্টুরান্টকে খেয়ে এসে আবার চেন্নাই ফ্লাইট ধরে। তো সব জেনেই আমি ওই নোকিয়ার গল্পটা শোনাতে গিয়েছিলাম মণিকে – এই ভাবে সে এমন চললে মণি তো অবলুপ্ত হয়ে যাবে কোন এক দিন – কিন্তু পরিবর্তে মণি আমাকে এক অমোঘ জ্ঞান দিল – তাকে তো আর লোকের পছন্দের উপর নির্ভর করে খেতে হয় না, বা লোককে ইমপ্রেসড করার জন্য খেতে! আহা রে – এটা যদি অনেক বাঙালী এবং ততসহ অনেক প্রবাসী ভারতীয় বুঝত। আমার চোখে মণিমারণ জাতীয় ব্যক্তিরা হচ্ছে গিয়ে লেজেন্ড – স্বজাতীয় চাপের কাছে মাথা না নুইয়ে নিজের খাদ্য-পছন্দ অকুন্ঠিত ভাবে স্বীকার করা – সে এক লুপ্তপ্রায় গুণ।

    নিজের খাওয়া বিশ্বাসের উপর গোঁড়া থাকার জন্য মণিকে আমার শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছা হয় – কোন হাঙ্কি পাঙ্কি নেই, লোক দেখানো নেই – আমার ভালো লাগে না অন্য খাবার, তাই খাবো না! বাঃ বাঃ, কি ফিলোসফি! এই সরল – কিন্তু কি কঠিন সেই মেনে চলা। বিশ্বাস হয় না এই জিনিস মেনটেন করা কি শক্ত? জিজ্ঞেস করুন তা হলে দেবু-দা কে –

    দেবু-দা কে আমি যাই বলি, তা সে আগে থেকেই জানে – পৃথিবীর সব খাবার তার পছন্দ, কিন্তু বাঙালী খাবার ছাড়া সে খেতে পারে না। আপনি তার সামনে অন্য কোন দেশের খাবার নিয়ে মুখ খুলবেন নি – তার আগেই দেবু-দা জানিয়ে দেবে সেই খাবার তা চাখা। দেবু-দা হোটেল কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে – মানে, ইসে, হল-গিয়ে সহ অসংখ্য অর্ধ-তৎসম শব্দ সহযোগে, কোম্পানী বিদেশে পাঠাবার আগে দেওয়া কালচারাল অ্যাওয়ারনেশ ট্রেনিং-এ পই পই করে না-করতে বলা আমেরিকান অ্যাকসেন্টে বাঙালী উচ্চারণে যা বলল তার বাঙলা সারমর্ম হল –

    -অ্যাই মেয়ে, তুমি আশেপাশে কোন ভালো রেষ্টুরান্ট সাজেষ্ট করতে পারো?
    -কি ধরণের রেষ্টূরান্ট চাইছেন স্যার?
    -ইয়ে, মানে – তোমাদের টাউনে যে রেষ্টুরান্ট বিখ্যাত আর কি
    -তাহলে স্যার আপনি আমাদের শহরের ফেমাস লেবানীজ রেষ্টুরান্টটা ট্রাই করতে পারেন। যদি চান, আমি বুক করে দিতে পারি

    লেবানীজ রেষ্টুরান্টের নাম শুনে দেবুদার অন্ডকোষ প্রায় শুকিয়ে এসেছে – সারাদিন মিটিং ঠেঙ্গিয়ে ডাল দিয়ে ভাত চটকে তন্দুরি সাঁটাবার তালে ছিল। লেবানীজ খাবার কি ভাবে, কোথা দিয়ে খায় দেবুদার জানা নেই – এবং আরো বড় কথা, জানার ইচ্ছেও নেই –

    -কিন্তু এখন তো রাত হয়ে গ্যাছে – ক্যাব পাবার সমস্যা
    -চিন্তা নেই স্যার, আমাদের হোটেলের ট্রান্সপোর্ট ড্রপ করে দেবে

    দেবুদা এবার পুরোপুরি ফেঁসে গ্যাছে, অণ্ডকোষ শুকাবার পালা শেষ, এবার অন্ডকোষ ঘেমে উঠছে – শেষ প্রশ্নটা আসার আগে এতো ভনিতা করতে হচ্ছে – একেবারে বেলাইন হয়ে যাবার আগে –

    -ইসে, তুমি কি আশে পাশে কোন ইন্ডিয়ান রেষ্টুরান্ট জানো বাই এনি চান্স? একচ্যুয়ালি আমার বন্ধুরা -----

    কোন দরকার ছিল তো না এত কথার – ভারতীয় হয়ে ভারতীয় খাবার পছন্দ করা এমন কিছু লজ্জার ব্যাপার তো আর নয়! কিন্তু ওই যে বললাম, সবাই মণিমারণ হতে পারে না!

    জোর করে সিনেমা, গান, রাজনীতি, খেলা, ওপেরা, গলফ, সাহিত্য – সমর সেন থেকে ফৈয়জ খান – সব ঠিক আছে – কিন্তু খাওয়া নিয়ে এই সব ছেনালীর এবং আঁতলামির কি মানে? বড় কষ্ট হয় – খাওয়া নিয়ে এহেন দ্বিচারিতা ঠিক না – যেখানে প্রামাণিত যে আমাদের জন্ম এবং বিবর্তন দুই হয়েছে খাবার জন্য – খাবার জন্যই সব, খাবার জন্যই আমরা – সেই ক্ষেত্রে প্রায়োরিটি ঠিক রাখতে পারলে তবেই না জাতি উন্নতি করতে পারবে! খাদ্য বিষয়ে আঁতলামো জাতিকে পিছিয়ে দেয় সেই বিষয়ে আমার কোন সন্দেহই নেই আজকাল! ইংরাজীতে বলতে গেলে – The fate of a nation depends on the way that they eat - কার উক্তি জানতে গুগুল সার্চ করুন।

    আমার বন্ধু সাধন যে জীবনে উন্নতি করতে পরেছে (এখন এক কলেজের প্রফেসর – আমার কাছে সেটাই উন্নতির মাপকাঠি) তার প্রধান কারণ ছিল সে খাবার বিষয়ে নিজের মনের কথা প্রকাশ করতে কুন্ঠিত হত না। সেই বি ই কলেজ থেকেই বুঝেছিলাম ওর হবে – সেই যে বার আমরা হোষ্টেল মেসে বসে গোপাল ঠাকুরের রাঁধা কষা মাংস, রুমালি রুটি, ফ্রায়েড রাইস সাঁটাচ্ছি, পাশের টেবিল থেকে চশমা চোখে লম্বু সুপ্রিয় মুখে ফ্রায়েড রাইস তুলেই ওয়াক, ওয়াক শব্দ করতে করতে বেসিনের দিকে ছুটল। কি হল কি হল প্রশ্নের ফাঁকে জানা গেল সুপ্রিয়র ফ্রায়েড রাইসে কুঁচো চিঙড়ি পড়ে গিয়েছিল – জৈন ধর্মালম্বী হবার জন্য কোন দিন মাছ মাংস খায় নি, তাই গন্ধ লেগে গ্যাছে – ফলতঃ বমন। সাধন আড়কানে শুনে নবম রুমালী রুটিতে নিমজ্জিত হতে হতে বলল – “ধুররররররররররররর বোকাচোদা”। মুখের গ্রাস শেষে হাড় চুষতে চুষতে ফাইন্যাল ভারডিক্ট – “যত্ত সব বাল ছাল নিরামিশাষীর দল”। খুবই সাটল ব্যাপার – কিন্তু বাঘের বাচ্চাদের এই ভাবেই আলাদা করা যায় অযুত ভেড়াদের থাকে।

    তাহলে আমি কি মণিমারণের দলে? নাকি সাধনের? নাকি দেবুদার পদ্ধতির সমর্থনে কলম ধরছি? আমি কারো দলে নই – সিম্পল কথা বলতে চাইছি, আমার মতে বাইরে বেরিয়ে শুধুমাত্র ভারতীয় খানায় আবদ্ধ না থেকে, অন্য কিছু ট্রাই করলে অসুবিধাটা কোথায়? তবে কিনা – প্রথম বার অন্তত খেতে হবে, না খেলে আপনি বুঝবেন কি করে যে সে খাবার আপনার ভালো লাগবে না? খেয়ে দেখুন – নিতান্তই না ভালো না লাগলে আবার ফিরে যান আলু পোস্ত, রসম, রাজমা যাই হোক না কেন। তবে প্লীজ পরে আবার ফাটাবেন না থাই থেকে ভিয়েতনাম নিয়ে! না জেনে তর্ক করা আমাদের মজ্জাগত – আর্ট, কালচার লাইনে সেটা টলারেট করছি কোন ক্রমে। আর্ট-কালচার জিনিসগুলি লাইফে এশেনশিয়াল নয়, ফাউ – কিন্তু খাবার তো আর তা নয়! কোন জিনিস না খেয়ে সেই খাওয়া বিষয়ক জ্ঞান দেওয়া নিয়ে আমি খুবই মনোকষ্টে আছি। আমি জানি না আমার মত সাফারার আরো কেউ আছেন কিনা – থাকলে এই সাফারিং বন্ধ করার জন্য একটা আন্দোলন করার দরকার। নিদেনপক্ষে কলেজস্ট্রীটে একটা জমায়েত, বা একটা পিটিশনে সই –

    তবে একটা কথা, বিদেশী খাবার খেতে হলে তাকে মর্যাদা দিয়েই খাওয়া উচিত বলে আমার ধারণা। মানে অরিজিন্যাল খাবারের গুষ্টির-তুষ্টি পুজো করে, তাকে সেই অরিজিন্যাল নামে ডাকার ঘোরতর বিরোধী আমি। সেই দিন এক গভীর প্রবন্ধে পড়লাম যে, ‘নুনু’ থাকা মানেই ‘পুরুষ’ নয়! আমি যদিও সারা জীবন তাই জানতাম – এমনকি ডাক্তারেরাও তাই জানত মনে হয়! বাচ্ছা পয়দা হল মায়ের পেট থেকে – ডাক্তারকাকু ছোট্ট নুনু নেড়েচেড়ে দেখে, গুল্লি গুল্লি বীচি ঠিক ঠাক আছে কিনা দেখে নিয়ে লিখে দিল বার্থ সার্টিফিকেটে ‘মেল’। কোন সমস্যার কিছু দেখি নি – আমার মত আরো লাখো লাখো পাবলিকও কিছুও ভুল দ্যাখে নি। কিন্তু না! সেই প্রবন্ধ পড়ে বুঝলাম যে ‘মেল’ হলেও সে ‘পুরুষ’ কনফার্মড নয়! ‘মাল’ হয়ে যাবার চান্সও আছে সুযোগ মত – বা ‘মেল’ ও ‘মাল’-এর মাঝামাঝি। আমি তো দেখলাম, বাঃ এতো বেশ ভালো যুক্তি! তো আমি যুক্তি দিলাম – ‘নুনু’ থাকলেই যেমন পুরুষ হয় না, তেমনি পাস্তা রাঁধলেই প্রকৃত ইতালিয়ান খাওয়া হয় না! গুচ্ছের সর্ষের তেল, গোল গোল (বা লম্বা লম্বা) ময়দার ফালি, তার মধ্যে মাংসের কুচো এবং তাতে কেনা সাদা বা লাল শস ঢেলে দিলেই পাস্তা এক্সপার্ট হওয়া যায় না! চিনুদা যেহেতু এক্সট্রা স্মার্ট তাই আরোএককাঠি উপরে গিয়ে বলল –

    -যাই বলিস, এই ইতালিয়ানরা পিৎজায় ট্যামেটো শসের ব্যবহার ঠিক জানে না
    -কেন চিনুদা, ওই তো পিৎজা বেসে রয়েছে শস
    -কোথায় শস? আর আমার সাথে বেস মারাস না! ছড়ানো কোথায় উপরে? এর থেকে আমাদের কলকাতায় পিৎজা অনেক ভালো

    চিনুদা ‘কেচাপ-এর কথা বলছিল – আমি অবশ্য জানি না কোলকাতায় কোথায় পিৎজার উপরে কেচাপ ছড়িয়ে (অ্যাজ এ জেনারেল প্র্যাকটিশ) সার্ভ করে! করলে তাদের ব্যান করে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে -

    এবার প্রশ্ন উঠতে পারে যে, এই আমি ভারতীয় খাবার নিয়ে বুক ফুলিয়ে গর্ব করে খেতে বলছি, তাহলে রেষ্টুরান্টে ঢুকে হাত দিয়ে খাওয়া, বা বেশ জোর করে খেয়ে ঢেঁকুর তোলা – এ সম্পর্কে আমার মতামত কি? এগুলি আপাত দৃষ্টিতে সহজ মনে হলেও এর ভিতরে অনেক গভীর জিনিস লুকিয়ে আছে। হাত দিয়ে খেয়ে বা আচমকা ঢেঁকুরে তুলে কত সম্পর্কের কুঁড়ি অকালে ঝরে যেতে দেখেছি। সেই ক্ষেত্রে আমার ডিফেন্স হল – মানুষ তো বিবর্তিত হয়েছে, অস্থানে হাত দিয়ে নাই বা খেলেন? আগে মানুষ ন্যাংটো হয়ে থাকত বলে এখনো থাকবে নাকি? আমার সমীক্ষা বলছে – রুটি, নান, লুচি, ধোসা জাতীয় খাদ্য, মানে যেগুলি ছিঁড়তে হয় সেগুলি হাত দিয়ে খাওয়া ‘সভ্য’ সমাজে অল্যাউড – বিখ্যাত বিদেশী হোটেলের ইন্ডিয়ান সেকশানেতেও। তবে হাত দিয়ে ভাত-মাংস খাওয়া নৈব-নৈব চ! অবশ্য টুরিষ্ট প্রধান জায়গা হলে, এবং খুব দামী ইণ্ডীয়ান রেষ্টুরান্ট না হলে, হাত দিয়ে ভাত চটকে আপনি একা খাবেন না – ভারত থেকে আগত শত শত কেশরী বা ডায়মণ্ড ট্র্যাভেলস্‌ ছাপ মধ্যবিত্ত আপনাকে সঙ্গ দেবে। তবে মনে রাখবেন “Animals feed themselves; men eat; but only wise men know the art of eating” – এবার আপনি মানুষ হবেন নাকি শিক্ষিত জন্তু, সেটা আপনার ব্যাপার!

    আমার বন্ধু কুমার দোশীর সাথে একদিন আমষ্টারডাম রেড লাইট ডিষ্ট্রিক্ট এলাকার ইন্ডিয়ান রেষ্টুরান্ট ‘কামাসূত্র’ তে খেতে গেছি। সেই রেষ্টূরান্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল এক ডাচ কলিগের কাছ থেকে। কুমার সেখানে গিয়ে ডাল, পালক পনীর, মিক্সড ভেজ, নান এই সব ভেজ ডিসের ওর্ডার দিয়ে ফেলল – একযাত্রায় আর পৃথক ফল হয় কেন সেই ভেবে আমিও কষ্ট করে ভেজ খাব ঠিক করলাম। তো সেদিন দেখলাম কুমারের ভেজ খাওয়া টলারেট করার থেকেও তার প্রবল বিদেশী রেষ্টুরান্টে বসে হাত দিয়ে চটকে খাওয়া টলারেট করা আরো বেশী চাপের! কুমার ধ্যান না মেডিটেশন কি যেন সব করত – সেই সব করে মনে হয় সে লোকলজ্জা জাতীয় ক্ষুদ্র বিষয়ের অনেক উর্দ্ধে উঠে যেতে পেরেছিল। কিন্তু আমি পারি নি – তার ফলে খাব কি, চোখ নামিয়ে কোন ক্রমে সময় অতিবাহিত করছি। একবার বললাম, কুমার ভাই, হাত দিয়ে না চটকালেই কি নয়? কুমার বলল, সুকি ভাই, টেনশনের কিছু নেই – এর রেড লাইট ডিসট্রিক্টে মূল কাজের মধ্যে একটা হল চটকানো, অনেক লোক এখানে শুধু চটকাতেই আসে – তাই বিন্দাস! আমার খাওয়া দেখার থেকে আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ জিনিস দেখার রয়েছে পাশের জানালায়। আমি দেখলাম অকাট্য যুক্তি। তবুও মিনমিন করে বললাম – আরে সেতো সবাই মাংস নিয়েও এখানে ঘাঁটতে আসে, তোর মত নিরামিষ আর কে আছে? বাইরে বরফ পড়ছে, সাদা সাদা তুলোয় ঢেকে গেছে পুরানো বাড়ির ফাঁকের গলি, ফুটপাথ – আর আমি দেখছি কুমারের ডান হাতের আঙুলের ফাঁক দিয়ে গলে আসা সাদা রঙের রায়তা! সাদা কি সত্যিই শান্তির রঙ নাকি বেদনার? যাই হোক মূল কথা হল, কুমার বুক ফেলিয়ে খেল – আর আমি মরলাম চক্ষু লজ্জায়। এই কুমারও এক লেজেন্ড – সবাই কুমার হতে পারে না।

    আমার এক চেনাশুনা ব্যক্তি নারায়ণ যার নাম সে আদপে নিরামিশাষি ব্রাহ্মণ। অর জন্যে সবাই নিরামিষ খাবারই অ্যারেঞ্জ করত – কিন্তু ওই যে মাল সেই হীনমন্যতায় ভুগত। সব জায়গাতে বলে, আমি অফসোরে জাহাজে থেকে তেলের পাইপ লাইন পেতেছি ১৬ বছর – আমিষ তো কোন ছাড় – অফসোরে থাকতে হলে যা পাবি তাই খেতে হবে। আত আমাকে বাঁচতে গিয়ে বিফ, পর্ক সব খেতে হয়েছে! ভালো কথা, আমার ইচ্ছে ছিল নারায়ণ বিফ (মানে স্টেক এর কথা বলছি) কি ভাবে খায় সেটা দেখার। ফর্ক-নাইফ দিয়ে নাকি আমরা যেমন কাটলেটের পিস তুলে কামড় মারি ঠিক তেমন ভাবে স্টেকে ডুবে যেতে! কিন্তু হায়, আমি এতো গুলো বছরেও বিফ তো কোন ছাড়, নারায়নকে চিকেনও খেতে দেখলাম ন। যেই দিনই একসাথে খাবার খেতে যাই, সেই দিনই ওর কিছউ একটা ব্রত বা পুজো বা অন্য কোন কারণ থাকে আমিষ না খাবার! অন্য নারায়ণ সাধনা করে পেতে হলেও, এই ধরণের নারায়ণ আমাদের চার পাশে পর্যাপ্ত ছড়িয়ে আছে তা বলাই বাহুল্য!

    কে এল এম (এখন আবার এয়ার ফ্রান্স জুড়ে গ্যাছে) এয়ারলাইন্স যে খুব একটা কাষ্টমার ফ্রেন্ডলি, এ কথা তার পরম মিত্রও বলতে পারবে না। আমি আর ঈকেশ ভাই বিজনেস ট্রিপে যাচ্ছি বিজনেস ক্লাসে। তেল কোম্পানী আর যাই হোক, বিজনেস ক্লাস আর ফাইভ স্টার হোটেল প্রোভাইড করতে কোন দিন কার্পণ্য করে না। ঈকেশ ভাই প্রবল নিরামিষাশী – এবং আগাম ভেজ মিল অর্ডার করা থাকে। সেদিন কোন কারণে বিজনেস ক্লাসেও ভেজ মিল শেষ হয়ে গ্যাছে! ঈকেশ ভাইকে অন্য খাবার দিয়ে প্রলোভন দেখানো হচ্ছে – কিন্তু ভাই সেই ‘হিন্দু ভেজিটেরিয়ান’ মিল ছাড়া খাবে না! সুন্দরী এয়ার হোষ্টেস উপরের একটা বোতাম খোলা স্কার্ট পড়ে প্রায় হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছে ঈকেশের সামনে অন্য খাবার পেশ করার জন্য! কিন্তু ঈকেশ ভাই সেই গোঁ – আমি মনে মনে এই বার বলি সাবাস! কোম্পানীর পয়সায় এলে এই এক জিনিস, না হলে এমনিতে তো আমাদের বরাদ্দ সেই ক্যাটেল ক্লাস এবং নিদারুণ তুরুচ্চ। এখন বিজনেস ট্রিপের সময় আমাদের পিছনে ঝলমল করে বহুজাতীক কোম্পানীর ছাতা – যাদের সাথে এয়ার লাইন্সের মিলিয়ন ডলারের কারবার। আমি এবার ফিসফাস করে বলি – সাবাস! সাদা মেয়ে খান্ত দিল – তারপর কোথা থেকে পেল বলতে পারব না, কিন্তু মাইক্রোওয়েভে ঈকেশ ভাইকে ভাত, ডাল, আলুভাতে করে মাঝ আকাশে খাওয়ালো! ঈকেশ ভাই লেজেন্ড – সবাই ঈকেশ ভাই হতে পারে না।

    তবে লেজেন্ডদের নিয়েও বেদনার দিক থাকতে পারে – যেমন থাকতে পারে চরম সুন্দরী নায়িকার অর্শ রোগ। কথা হল গিয়ে, একসাথে কারবার না করলে আমি পুরোটা টের পাবেন না। একবার এই ঈকেশভাইয়ের সাথে সুইজারল্যান্ড বেড়াতে গিয়ে তেমনই মোহভঙ্গ হয়েছিল – প্রতিদিন বিকেল সাড়ে চারটে বাজতে না বাজতেই রেন্টাল কাঠের বাড়িতে ফেরার তাড়া! কি না গিয়ে রেঁধে খেতে হবে – আর সারাদিন ঘুরে বেড়াবার সময় রাতে কি রান্না হবে সেই নিয়ে আলোচনা। পাহাড়ের চূড়া থেকে কেবল্‌ কার-এ করে নামছি – মনে হয় পৃথিবীর সুন্দরতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে থাকা কাঁচের সেই কেবল্‌ কার! আমি ভাবছি আকাশ, আমি ভাবছি মৃদু মৃদু কবিতা, গাছের গায়ে লেগে থাকে বরফ গলা জল – ওদিকে ঈকেশ ভাই চাইছে আলোচনা মাটিতে পা ঠেকিয়ে কোন গ্রসারী স্টোর্সে ঢোকা যায় সেই নিয়ে! তেমনি হয়েছে আবার জার্মানীর শ্যাম্পেন প্রভিন্সে রাত এগারোটার সময় এক নিঃঝুম ছোট শহরে ইন্ডিয়ান রেষ্টুরান্ট খোঁজা। আমি বলছি জার্মানদের সংস্কৃত ভাষার উপর যতটা ইন্টারেষ্ট ততটা ইন্টারেষ্ট ভারতীয় খাবরের উপর নেই – ঈকেশ ভাই বলছে, না, আমি গুগুল ম্যাপে দেখে বেরিয়েছি! সেই খুঁজে খুঁজে এক দরজা, দরজায় টোকা, ঢুকে পরণের কোট হুকে ঝুলিয়ে আরেকটা দরজা খুলেই হাঁ! এমন আশর্য হতেও মাঝে মাঝে ভালো লাগে – বসার জায়গা নেই রেষ্টুরান্টে, জার্মানরা তন্দুরী নান, মসালা চিকেন সাঁটাচ্ছে! অনেক পরে বসার সীট পেলাম – শেষ পাতে মালিকের সাথে খাওয়া, তবে সে এক অন্য গল্প – পরের কোন এক পর্বে।

    আমি বলি কি, খান – ভালোবেসে খান। যদি হাড় চুষতে ভালো লাগে তাহলে চুষুন। কেমন করে চুষবেন সেটা আপনার ব্যাপার। চোষার ধরনটা নিয়ে আঁতলামো করুণ, কিন্তু চোষা ফাঁকি দিয়ে নয়! চোষার আনন্দ নিজে নিন – কিছু জিনিস নেওয়াতে আনন্দ, কিছু জিনিস দেওয়াতে।

    কিংবা ব্রিলাট-সাভারিন (Jean Anthelme Brillat-Savarin) এর সেই বিখ্যাত উক্তিটি একবার ভেবে নিন – “Tell me what you eat, and I shall tell you what you are” মানে মোদ্দা কথায় নিজেকে যদি প্রকৃত চিনতে চান, তাহলে নিজের খাদ্যাভাসে সাচ্চা থাকুন – সেখানে ছড়ালে নিজেকে আর চেনা হয়ে উঠবে না! আরো একধাপ এগিয়ে – “The discovery of a new dish confers more happiness on humanity, than the discovery of a new star.”
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ | ৫৭৫৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sinfaut | 74.233.173.58 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:০৭52485
  • যদিও স্কার্টের উপরের বোতাম খুললে সে স্কার্ট কিভাবে পরে থাকে সেটাও বুঝিনি।

    আর জোক সম্পর্কে নতুন থিওরিও জানা হলো আজ। হয় নাম বলতে হবে নইলে গোটা সাবজেক্ট ক্যাটাগরিকে অ্যাড্রেস করতে হবে। তাই রচপাল সিং আমার বন্ধু বা পরিচিত পাঞ্জাবি তার নামে কিংবা পাঞ্জাবীরা/পাঞ্জাবীগুলো এমন ভাবে বললে সেটা জোক। কিন্তু যে জোক শুরু হচ্ছে, এক পাঞ্জাবী রেস্টোরন্টে ঢুকলো- এটা আদৌ পাঞ্জাবীদের নিয়েজোক নয়
  • dd | 116.51.29.42 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:০৮52508
  • বা ধরুন আমার দুর্দান্তো ঢ্যাঢ়শজিনি আছে। আমি খাই না রাঁধিনা বিকিনি পড়াই না জুল জুল করে তাকাই না। মুখ ভেটকে তাকাই।

    ব্যাস। ইনাফ।
  • sinfaut | 74.233.173.23 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:১০52486
  • *ধুর এই জড়ানো আঙুল দিয়ে আগেরটা দুম করে পোস্ট হয়ে গেল।

    ...এটা আদৌ পাঞ্জাবীদের নিয়ে জোক নয়, তাই কোন এক গোষ্ঠি কে নিয়ে জোক তো আদৌ নয়।

    নতুন নতুন জিনিস শিখি, গুরুতে তো এইজন্যই আসা।
  • Ekak | 53.224.129.44 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:১৭52487
  • এগুলো লোকে পার্কস হিসেবে নেয় তো :) রিসেপশনিস্ট এর বিজ্ঞাপনে "সুন্দরী " চাওয়ার কারণ কি ? এয়ার হোস্ট হয় পুরো টিমে এক কি দুজন বাকি সব "সুন্দরী" মহিলা হোস্টেস ক্যানো ? যেদিন মেয়ে কাস্টমার রা বিসনেস ক্লাস ফ্লাই করায় ছেলদের সংখ্যা কে ছাড়িয়ে যাবে সেদিন চাপা প্যান্ট এর ওপর ক্রচ ফুলে আছে কিনা সেই নিয়ে লেখা হবে । ইটস নরমাল ।

    অব্জেক্তিফিকেষণ বলাই যায়। কিন্তু অব্জেক্তিফিকেষণ বলতে আমার কিঞ্চিত দ্বিধা আছে কারণ কনসিউমার রিলেশনে আলাদা করে অব্জেক্তিফিকেষণ বলে কিছু হয়না । রিলেশন টাই অব্জেক্তিফায়েদ । পুরুষ মানুষ ফিমেল ও সুন্দরী নার্সের সহচর্জ্যে-স্পর্শে বেটার ফীল করে এটা তার পার্ট অফ হীলিং প্রসেস । দামড়া গুঁফো মেল নার্স গিয়ে মাথার কাছে গম্ভীর মুখ করে বসে থাকলে সে কাজ হবে না । এটাও এক ধরনের অব্জেক্তিফিকেষণ । কিন্তু কনসিউমার রিলেশন ।

    কোম্পানির পয়সায় বিসনেস ক্লাসে চড়লে সুন্দরী হোস্টেস এর সাহচর্য্য পাওয়া যায় । প্লেন কোম্পানি জেনে বুঝেই একটি সমান বাকি যোগ্যতা সম্পন্ন অসুন্দরী মেয়েকে না নিয়ে তাকে নিয়েছে । কিন্তু একটা সীমা রেখা আছে কনসিউমার এর । সী বাট ডোন্ট টাচ । ফীল বাট ডোন্ট এডভান্স । সেটা না মানলে তার গলাধাক্কা প্রাপ্য । কাজেই উইদিন লিমিট এনজয় করলে সমস্যা কি ।

    ডিস্ক্লেইমার : এয়ার হোস্টেস দের কাজ শুধু শারীরিক সৌন্দর্য্য প্রদর্শন নয় এটা আমি জানি । পরিচিত হোস্টেস আছেন । ফ্লাইট ঝামেলায় পরলে বা বেলি ল্যান্ডিং এর সময় কয়েক মিনিটের মধ্যে যাত্রী দের সেফটি মেসার নিতে সাহায্য করায় বা যেকোনো এদ্ভার্স সিচুএশন এ এনাদের বিশাল ভুমিকা । এক্সেপতেদ । কিন্তু তাতে , উপরের যাত্রীর আনন্দ পাওয়া নাজায়েজ হয়ে যায়না :) এইটুকুই ।
  • করঞ্জাক্ষ | 203.55.36.42 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:২২52488
  • নাম না বলে পেশা বললে বুঝি ঠিক? সেই সেট সাবসেটের গপ্পো।
  • Tim | 140.126.225.237 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:২৫52509
  • না না আমি আর কষ্ট কচ্ছিনা যে যেমন বোঝে সেরকমি ভালো। ছুটি ঃ-)

    সুকিকে মানে চেক না করে মিসোজিনিস্ট ইঙ্গিত করার জন্য সরি চেয়ে নিচ্ছি।
  • Ekak | 53.224.129.44 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:২৭52489
  • সেট সাবসেট তো থাকবেই কত্তা :) করঞ্জাখের চোখ করমচা র মত লাল এটা পারসনাল মেডিক্যাল ডেটা । ইন্ডিয়ান অরিজিন ইন্দো এরিয়ান এথনিক গ্রুপের লোকের চোখ লাল হয় এটা জাস্ট সায়েন্টিফিক অব্সার্ভেশন :) এখন সে অব্সার্ভেশন ভুল হলে গাল দিন । করন্জাক্ষ র ডেটা ফাঁস করেছে তো বলতে পারেন না !
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৩৪52510
  • কিন্তু এয়ারহোস্টেসের চাকরির জন্য এরকম প্রোপোর্শানেট ফিগার, অবিবাহিত, এসব ক্রাইটেরিয়াই বা চাওয়া হয় কেন ? ওনাদের কাজের যে কথা বলা হল, তার সাথে এগুলোর কী সম্পর্ক ? আর কে একজন প্রশ্ন করেছেন দেখলাম, সব সময় সুন্দরীদেরই নেওয়া হয় কেন ?
    তাহলে কি এম্প্লয়াররাই অব্জেক্টিফিল্কেশন করে দিচ্ছেন ?
  • sosen | 177.96.94.175 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৪২52511
  • আমি অল ওভার আগেইন হচ্ছি না কারণ আমার কনসেপ্টে গড়বড় নেই আদৌ। আমি এই ধরনের লেখাকে মিসোজিনিস্ট মনে করি কারণ মিসোজিনির একটি বহু আলোচিত প্রাইমারি কম্পোনেন্ট হচ্ছে হাসিঠাট্টা, ব্যবহার, অত্যাচার যে কোনো প্রকারে মহিলাদের দেহ(অথবা অস্তিত্ব) সম্পর্কিত সেল্ফ-কনশাসনেস তৈরি করতে প্ররোচিত করা, এবং নারীরা তাদের বুকের দিকে যে কেউ তাকিয়ে থাকলে নিজের যৌন আকর্ষণ নিয়ে গর্বিত বোধ করে এটা একটা যত্ন করে তৈরি করা মিথ। মেয়েরা মিসোজিনির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এই সেল্ফ কন্টেম্প্ট কম্পোনেন্টে, কারণ তাঁরা সক্রিয়ভাবে এটা বয়ে চলা মেইনটেইন করেন, জেনারেশন থেকে জেনারেশনে। এখন এককের পয়েন্ট হলো, মেয়েরা যদি আদৌ পাত্তা না দ্যায় তাহলেই এটা ভেঙ্গে যাবে-হয়তো। ভেঙ্গে গেলেও ফ্যাক্ট যে মিসোজিনি থেকেই এটার জন্ম, তা ঘুচবে না। যৌনতা অত্যন্ত ভালো বস্তু, কিন্তু রাস্তার মোড়ে বা বাসে কি মাল রে! শুনতে শুনতে এবং উপেক্ষা করতে করতেই যারা আমরা বড় হয়েছি তাদের আরেকটু উপেক্ষা করতে বলার সহৃদয় উপদেশ নাই বা দিলেন।

    যাই হোক, ডেফিনিশন নিয়ে সুখী থাকুন। আকবা।
  • de | 69.185.236.55 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৪৭52490
  • বুইলাম, অবজেক্টিফিকেশন অধিকাংশ পুরুষ কনজিউমারের মাইন্ডসেট এবং মহিলা কনজিউমারের সংখ্যা বাড়লে তেনারাও এই একই অবজেক্টিফিকেশন করবেন পুরুষ সার্ভিস প্রোভাইডারদের নিয়ে - এই তো?

    কিন্তু মাইন্ডসেটটা তখনো কি চেঞ্জ হবে না?

    নীরজা দেখে আসার পর থেকে এয়ারহোস্টেসদের কথা পড়লেই সেই বিমানটার কথা মনে পরে -
  • Ekak | 53.224.129.45 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫০52512
  • আরে খী অদ্ভূত । কলেজে সভাপতি বরণে সবচে দেখতে-শুনতে সুন্দর মেয়েটিকে এগিয়ে দেওয়া হয় ক্যানো ? সেখানে তো কোনো কনসিউমার রিলেশন ও নেই । তাও হয় । আর এখানে একজন হোস্টেস মানে তিনি গেস্ট দের ওয়েলকাম করবেন -ফেসিলিটেত করবেন -এদ্ভার্স সিচুএশন এ হেল্প করবেন । সবকটাই তাঁর কাজ । ফর্সা -ভাইটাল স্ট্যাট এসব নিয়ে মাথা ঘামানো তো হবেই । চোখের সামনে আকর্ষনীয় চেহারা নিয়ে ওয়াক করে যাওয়া টাও কাজ বৈকি । শুধু খাবার দেওয়া আর বেল্ট বাঁধতে সাহায্য করার জন্য তো দুটো মুষটান্ডা রাখলেও হত :)
  • Ekak | 53.224.129.45 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫১52513
  • আগের পোস্ট , এআর হোস্টেস সংক্রান্ত পোস্ট এর উত্তরে ।
  • Tim | 140.126.225.237 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫৭52515
  • সোসেন ঐ প্রেজেন্টেশনটা মনে আছে, কসমেটিক্স কিভাবে অবজেক্টিফিকেশন প্রোমোট করে আর জেনারেশন কে জেনারেশন সেইটা ফলো করে সেইটা? আমার মনে পড়ছেনা ভদ্রমহিলার নাম, কিন্তু টকটা ঘ্যামা ছিলো। তবে এটাও হয়ত হানি সিং এ আলোচনা হয়ে গেছে।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৫৭52514
  • যে মুহূর্তে বলা হচ্ছে, আকর্ষণীয় চেহারা নিয়ে বা তার সাহায্যে কিচ্চু করাটাও তাঁর কাজের মধ্যে পড়ে, সেটা কি তাহলে অব্জেক্টিফিকেশন হয়ে গেল না ?

    সেটাই বলতে চাইছি।

    এখানে পোস্টগুলো পড়ে মনে হল, শুধু খাবার দেওয়া, বেল্ট বাঁধা, অসুবিধেয় সাহায্য করাটা কাজ। সেখানে চেহারা ইত্যাদির কম্পোনেন্ট আনাই অব্জেক্টিফিকেশন। তাই জিগাচ্ছি। বিকিনিবালা অব্দি যদি নাও যায়, এমনি বিমানবালাদের ক্ষেত্রেও তো তাহলে এম্প্ল্যমেন্ট সূত্রেই অবজেক্টিফিকেশন হয়ে যাচ্ছে, সেইটা পয়েন্ট আউট করছি।
  • Ekak | 53.224.129.45 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:০৪52516
  • কেজানে অব্জেক্তিফিকেষণ কিভাবে হচ্ছে আমি বুজ্ছিনা :( প্রডাকশন রিলেশন তো । এনাটমি বই কে কি অব্জেক্তিফিকেষণ বলি ? বলিনা কারণ অতি অর সাবজেক্ট এন্ড অবজেক্ট । ক্লিয়ার দিফায়ন্দ স্টেট । এয়ার হোস্টেস এর নিখুঁত ভাইটাল সত্যট থাকবে , সুন্দরী হবেন এসব জেনেই তো মেয়েরা এয়ার হোস্টেস একাডেমি তে ভর্তি হন । ওটা প্রডাকশন রিলেশন এর কন্ট্রাক্ট এর অঙ্গ ।

    কোথাও এরকম তো নয় যে ক্লাসে ফিজিক্স পড়াতে দিয়ে বলছে পলকা ডট স্কার্ট পরে যাবেন ! উইদিন কন্ট্রাক্ট প্রডাকশন রিলেশন কিভাবে অব্জেক্তিফিকেষণ হয় আমার সিরিয়াসলি মাথায় ঢুকছেনা :)
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:০৭52517
  • সবই হল। কিন্তু ওই মহিলা মিসোজিনিস্ট কিনা ডিডিদা ছাড়া আর কেউ সৎসাহস দেখিয়ে কইলেন্না। যাঁরা কইলেন্না তাঁরা কিন্তু কেউ লাজুক নন, সুকি প্রসঙ্গে ঝপ করে মিসোজিনিস্ট ট্যাগাতে খুবই ভোকাল ছিলেন। :-)

    বলাবাহুল্য, ডিডিদাকে ক।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:১০52518
  • ছবিও দিয়ে দিই। দেখলেই আপুনাদের গা জ্বলে যাবে। কিন্তু এটা যাঁরা মাথা থেকে বেরিয়েছে, তাঁর সম্পর্কে নীরব থাকবেন। :-)

  • Ekak | 53.224.129.44 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:১৩52491
  • যতক্ষণ না কেও কাওকে এনগেজ করে উত্পাত করছে ততক্ষণ সে কি মাইন্ড সেট নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভেবে কি করব :(

    আর অব্জেক্তিফিকেসনে আমার যে বিশেষ আপত্তি আছে তাও না । মানে যতক্ষণ না উত্পাত করছে আর কি । যার যেরকম দৃষ্টিভঙ্গী , চরিত্রের যেদিকে ঝোঁক , সে সেইভাবে তার সামনের জিনিস কে মনে মনে ন্যারো ডাউন করে । এটাই স্বাভাবিক নয় কি ? সবাইকে কে সর্বদা যাই দেখবে একটা সাবজেক্ট হিসেবে ভাবতে হবে ক্যানো ?

    আমি বসে খাচ্ছি এক বন্ধুর সঙ্গে । মন দিয়ে চিকেনের টেংরি চিবুচ্ছি । এবার ঘটনা চক্রে সে একজন নিউত্রিসনিস্ট । সে আমাকে বলতে শুরু করলো : খা খা ভালো করে খা , দেড়শ গ্রাম প্রোটিন , পঞ্চাশ গ্রাম ফ্যাট । কার্ব ও আছে । আড়াইশ কিলো ক্যালরি খেতে ক্যামন লাগছে ? এ শুনলে তো আমার খাওয়ার ইচ্ছে চলে যাবে :( চূড়ান্ত অব্জেক্তিফিকেষণ । গোটা ফুড সাবজেক্ট টাকেই নিউত্রিসনাল ভ্যালু তে ন্যারো ডাউন করে অব্জেক্তিফাই করে দিলো । বা ধরুন যে রাঁধুনি সে এসে বলছে , মুরগি টা বেশ নধর ছিল । ফ্যাট ছিল বলে আর তেল বেশি দিই নি । কাসুরি মেথি দিয়েছি গন্ধ পাচ্ছো ? এ আবার কুলিনারী তে অব্জেক্তিফাই করলো ফুড সাবজেক্ট কে । এগুলো আমার কাছে প্রচন্ড বিরক্তিকর । ন্যাচেরালি যে ধরনের অব্জেক্তিফিকেসনে আমি সেই মুহুর্তে সাবসক্রাইব করছিনা সেটা আমার খাওয়ার সময় করলে আমার ভাল্লাগবেনা ।

    কিন্তু তারা যদি জাস্ট মনে ভাবে , বা পরে জার্নাল এ লেখে যে আজ এক বন্ধু খুব নিউত্রিশাস লান্চ করলো । লটস অফ বিটা ক্যারোটিন প্যাকড ফ্রেশ লেটুস উইথ মাইল্ড বেকড ফ্রেশ চিকেন উইথ ব্যালান্সড ফাইবার এন্ড প্রোটিন ইত্যাদি ইত্যাদি ...তাহলে আমি তেড়ে যাব না । এই আর কি । আমাকে সরাসরি এনগেজ না করে যা করবি করগা যা । আমি কার মাইন্ড সেট চেঞ্জ করায় বিশ্বাস করিনা । মাথা যার যার ।
  • Tim | 140.126.225.237 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:১৮52519
  • ওহো গোটা গোটা করে বলা হয়নি বলে কনফিউশন আছে নাকি? অবজেক্টিফাই করছেন সেই মহিলা। সোসেনবর্ণিত পথে উনি মিসোজিনির হাতিয়ার। হলো?
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:১৯52520
  • না হলনা। হাতিয়ার মানে 'অস্ত্র হিসেবে কাজ করছেন'। ওতে 'আহা বেচারি মহিলা' হল। 'মিসোজিনিস্ট' হলনা।
  • Ekak | 53.224.129.45 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২২52521
  • বাহ সোন্দর ছবি , আমার অবশ্য এই হাওয়াইআন ঝুল্লু ঝুল্লু লুস এন্ডস এর চে ফুল বডি পেইন্টিং বেশি পছন্দ । বেশ প্রতিবার ট্রিপে আলাদা আলাদা থীম পেইন্ট হবে । কখনো বাঘ ,কখনো পাখি , কখনো টেকনো থীম ।

    ফ্লাইটের ভেতরের মত বোরিং জায়গা পৃথিবীতে কমই আছে :|
  • Tim | 140.126.225.237 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২৩52523
  • কিন্তু মিসোজিনির অভিযোগ থেকে তো রোবু আর আমি দুজনেই সুকিকে রেহাই দিয়ে দিয়েছি হুহা স্পিডে। সেটা কি ইগনোর দিচ্চো?

    ডাকাত সর্দারের ডান হাত ডাকাতই হয় তো, বেচারা কেন হবে। ইনিও তাই, আমি এঁকে পরিভাষায় কি বলে তোয়াক্কা না করে মিসোজিনিস্টই বলবো।
  • sosen | 177.96.107.218 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২৩52522
  • এই মেয়েগুলোকে দেখলে গা জ্বলে যাবে? কোনো কিছুই তো জ্বলল না।

    চোখের দোষ।
  • করঞ্জাক্ষ | 203.55.36.42 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:২৯52492
  • যারা অবজেক্টিফিকেশনে আপত্তি করছেন, তারা সকলপ্রকার সাধারণীকৃত অবজেক্টিফিকেশনে আপত্তি নাও করতে পারেন। এই সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রেই কারু আপত্তি থাকতে পারে। ( সেই কোয়ান্টিফায়ার না দেওয়ার সমস্যা) প্রথমত আমায় অবজেক্টিফাই করলে আপত্তি, একে সিমেট্রাইজ করে পাচ্ছি অন্য কোন মানুষকে অবজেক্টিফাই করলে আপত্তি।
  • করঞ্জাক্ষ | 203.55.36.42 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৩৪52493
  • “ ততক্ষণ সে কি মাইন্ড সেট নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভেবে কি করব ঃ(
    ” একদম ঠিক কথা। “মাইন্ড সেট" জিনিসটাও স্ট্যাটিক নয় ও তাকে বর্ণনার ফ্রেমওয়ার্ক ও খুব সোজা নয়। তবে সাধারণ ভাবে অন্যের অপছন্দ হয় এ গোত্রের ব্যবহার আমরা এড়িয়ে চলি। কম্যুনিটি রুল বলা ভাল। সেই জন্যই এই পছন্দ বা অপছন্দের কথা ব্যক্ত করা।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৩৭52524
  • ইগনোর দিইনি তো। সেখানেই স্টিক করে হানিসিং ইত্যাদি টেনে না আনলে তক্কের কিছুই ছিলনা ও তো। :-) আমি তো রোবুর সঙ্গে তক্কো করছিনা।

    তা, এই মহিলাকে যখন মিসোজিনিস্ট বলাই হল, দুইখান কথা কই। ব্যাপারটা কী বিপজ্জনক দিকে যাচ্ছে দেখো। এই নগুয়েন থি মোসোজিনিস্ট। অপোন্না সেন (সানন্দার সম্পাদক) একই সূত্রে মিসোজিনিস্ট। পুনম পান্ডে (নিজেকে রসোগোল্লার মতো প্রেজেন্ট করেন), মিসোজিনিস্ট। আরেকটু লম্বা করে টানলে যে মেয়ে শরীর দেখিয়ে ডিস্কো যায়, সেও মিসোজিনিস্ট। এইভাবে টানতে থাকলে যারা লিপিস্টিক লাগান, ভুরু প্লাক করেন (সবই তো অবজেক্টিফিকেশনের চক্কর), সবই মিসোজিনি, মেল গেজের চক্কর ইত্যাদি। 'চয়েস' বলতে আর কি কিছু বাকি রইল?

    এর মধ্যে, আগেই পড়লাম, যাঁরা লিপস্টিক লাগান তাঁরা বাদ। কেন বাদ সেটা এস্টাবলিশ করে দিলে ভালো হয়। যাঁরা লিপস্টিক লাগান, তাঁরা কি যৌনভাবে নিজেকে অবজেক্টিফাই করছেন না, ঠিক যেমন ভাবে অবজেক্টিফিকেশন হয় বিকিনিতে?
  • Ekak | 53.224.129.44 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৪২52494
  • সমস্তরকম অব্জেক্তিফিকেষণ অবলীলায় রাত্রদিন চালিয়ে যাওয়া কিন্তু শুধু সেক্সুয়াল অব্জেক্তিফিকেসনে আপত্তি থাকা টা , প্রকৃত প্রস্তাবে, ভিক্টোরিয়ান মাইন্ড সেট এর পচা সালাড উপর দায়ে পরা কালেকটিভ লিবেরালিস্ম এর টপিং বলে মনে হয় :)

    নন প্রডাকশন/ সোশাল রিলেশনে এ আমাকে অব্জেক্তিফাই করলে বড়জোর বোঝাবার চেষ্টা করব যে আমি শুধুমাত্র ওই অবজেক্ট টা নই । না বুঝলে না বুঝলো । প্রডাকশন এনভায়রনমেন্ট এ কিছুই বোঝাতে যাব না যদি সেটা উইদিন কন্ট্রাক্ট হয় । আউত্সাইদ অফ কন্ট্রাক্ট হলে প্রতিবাদ করব । আইনি ব্যবস্থা নেব । সিম্পল ব্যাপার সিম্পল করে বুঝতে অসুবিধে কি ?
  • Ekak | 53.224.129.44 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৪৩52495
  • আরে অপছন্দের কথা ব্যক্ত করা নিয়ে কোনো সমস্যায় নেই :) স্পেসিফিকালি মিসজিনি বলা জায়েজ কিনা সেই নিয়ে এত হ্যাজ হচ্ছিল তো ।
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৪৬52525
  • একক, আমার বক্তব্য তো ছিল, এই টইয়ের যুক্তিতে সেটা অবজেক্টিফিকেশন হয় ( মিসোজিনিস্ট অব্দি গেলাম ই না)।
  • Tim | 140.126.225.237 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৪৮52526
  • তোমার পয়েন্ট বুঝলাম। কিন্তু মেয়েদের শরীর বলতেই অবজেক্ট ফর সেক্সুয়াল প্লেজার ছাড়া আর কিছু দেখতে না পাওয়া কি আমাদের খুব নিরাপদ কোন গন্তব্যে পৌঁছে দেয়? ওরা তো গাই টক করছে বলার মধ্যে কি তাতে প্রশ্রয় নেই? এই ভাবনার মধ্যে কি ইন্ট্রুশনের প্রিমিটিভ স্টেজ লুকিয়ে নেই, যে আরে আমার জন্যই তো সেজেছে, বাজিয়ে দেখিইনা একবার?
    আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু অন্য কথা বলে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন