এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো

  • দোল ইন্টারন্যাশনাল

    সৃজন সমাদ্দার লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ২২ মার্চ ২০১১ | ১০২০ বার পঠিত
  • সব খেলার একটা নিয়ম আছে। নিয়ম না বলে, স্বত:সিদ্ধ বলা ভালো। অঙ্কের খেলায়, তুমি গোলকে চৌকো করতে পার না। ফুটবল এ নিজের দলের গোল তাক করে লাথি ছুঁড়েছ কি মরেছ। তেমনি একই লিঙ্গের মানুষের সাথে দোল খেলার কোনো অর্থ হয় না। কম সে কম দুটো চাই। লিঙ্গ, অর্থে gender। অথচ অনেকেই সে নিয়মের তোয়াক্কা না করে যৌবন অতিক্রম করেন। তখন অনুশোচনার মত অনুভূতি হয়।

    আমি হোস্টেলে ঢুকেছিলাম, পাশেই ladies হোস্টেল বলে। মেয়েরা থাকবে, ভালো করে দোল খেলাটা শিখব। যুক্তির ফ্লো টা সঠিক হলেও, আমার (আর আমার সহপাঠীদের) ক্ষেত্রে প্রথম শর্তটা অপূর্ণ থেকে গেল।

    তাই আমরা আধাখ্যঁ¡চড়া খেলি। আগের রাত্তিরে মেসের বাসন পিটিয়ে হোস্টেল আর পুকুর চক্কর মারি। সাধারণ খেউড় হয়। ভাং-এর ট্যাবলেট যোগাড়, আর মদ খাওয়া। সকালে উঠে প্রফেসর quarter থেকে প্রণামের অজুহাতে মিষ্টি সংগ্রহ। তারপর বালতি বালতি রং এর-ওর ওপর ঢালা। ঘুমন্তদের ঘরে দরজার নিচ থেকে রং দেওয়া। দশটার দিকে ভাং সরবতের প্রস্তুতি দেখে আসা। মদ খাওয়া। ফুটবল। আবার ভাং। এর-ওর জামা ছেঁড়া। showerএর নিচে জোম্বি বন্ধুদের নেংটা তুলে আনা। এনে মদ খাওয়া। সন্ধ্যের দিকে হোলি night এর নাচ আর নাটক। রাতে সামান্য একটু মদ।

    ম্যাদামারা। পানসে। অর্থহীন দোল।

    অন্য কলেজ থেকে এর-ওর বন্ধুদের কাছে রোমহর্ষক গল্প শুনতাম। তখন আমরা পূর্ব ইউরোপের পাবলিক, আর ওরা লোহার পর্দা টপকে আসা, পশ্চিমী আত্মীয়।

    যাদের বাড়িতে দোল খেলা হয় না, তাদের অন্তত গুরুজনদের পায়ে আবির দিয়ে প্রণাম চলে। বড়রা ছোট ও সমবয়সীদের গালে সস্নেহে আবির মাখিয়ে দেন। সন্ধ্যেবেলা বাড়ির মা, জেঠিরা খোল দ্বার খোল গাইতে গাইতে মিষ্টি বানান। আমাদের বাড়িতে কোনো কিছুই হত না। আমার ঠাকুরদা ঠাকুরমাকে দোল পূর্ণিমার দিন বিয়ে করেছিলেন। সেবারই শেষ খেলা। হিন্দিতে বললে, খেল খতম। ওই দিনটাকে উদযাপন করার সাহস আর কারো হয় নি। মেজ জ্যাঠা এক যুগ আগে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন, তাই কিছু লাল আবির আনা হয়েছিল, কিন্তু পরে ফেলে দেয়া হয়। আমাদের বঞ্চিত করার পেছনে ছিলেন মূলত: একজন।

    বন্দী কাকা। (জেলে জন্মেছিলেন, তাই ঠাকুরদার এই নামকরণ) যার ছেলে ফুচিক ( ডাকনাম ফুচকে), যাকে নিয়ে গল্প।

    '৯১ এর কালীপুজোতে ফুচিক তুবড়িতে হাত পুড়িয়েছিল। পরের বছর বন্দীকাকা ঘোষণা করলেন আমরা সপরিবারে ম্যাজিক দেখতে যাব। শঙ্কিত সমবেত প্রশ্ন "কত টাকার বাজি?'

    "ধুর ও তো বাচ্চারা খেলে, আমাদের বাড়ির ছেলে হয়ে শেষে চরকি ঘোরাবি?'

    "না তো কি ছোকরি ঘোরাবো?' বাড়ির বড় ছেলে বাপ্পার মুখ বরাবরই আলগা।

    কাকিমা যুক্তি দেখালেন। 'বাড়ির ছেলে বলে কি বাচ্চা নয়?'

    "মিখাইল মলোতভ এর জীবনী পড়েছ? পড়লে জানবে উনি কোনদিন চকোলেট বোমা ফাটাননি। একবার ভাব তো শিশু চে রং মশাল জ্বালিয়ে হাসি হাসি করছে? সূর্‌য সেন দোদমা ফাটিয়ে বন্ধুদের কাছে ঘ্যাম নিচ্ছেন এসব ছেলেখেলা করলে আগ্নেয়াস্ত্রর কনসেপ্টটাই গুলিয়ে যাবে। আসল সময়ে বালান্স করতে পারবে না। '

    ৯৩ দোলের দিনটাও এইভাবে চটকে গেল । আগের বছর দীপদের বাড়িতে আমার চোখে সামান্য রং ঢুকে গেছিল। পরেরবার সিঁড়ির মুখে আমাদের দেখে বন্দী কাকা আকাশ থেকে পড়লেন।

    "এসব কী?'

    "রং, আবির..'

    "এখনো? এই বয়সে?'

    "কেন, কী হয়েছে?'

    "তোদের বয়সে ক্ষুদিরামও হোলি খেলেছিলেন। এম এন রায়ও। কিন্তু একটু ইতিহাস ঘাটলেই জানবি সেগুলো ছিল রক্তের হোলি।' সে সময় আমি অনেক ইতিহাসের বই পড়তাম। তাই একমাত্র আমিই বুঝলাম কাকার কথার মানে। যে সব দেশে হোলির তেমন চল নেই, সে সব দেশের লোকও, যেমন অ্যাটিলা, নেপলিয়ন, হোলির এই ব্র্যান্ডটা খেলতেন। শোলে তে দেখেছি গব্বর সিংহ পাহাড়ের গা চাবকিয়ে হোলি কবে জিগেস করছেন। সে হোলি আবির আর বাঁদুরে রংএর নয়।

    এই বলে কাকা আমাদের হয় কোনো রক্তদান শিবির, নয় আকাদেমি অফ ফাইন আর্টস এর নাটক বা exhibition এ নিয়ে যেতেন। সব জায়গাতেই লাল রং কোনো না কোনভাবে ছিটকে বেরুত।

    আমি অবশ্য বাইরে বেরোতাম পাড়ার মাতাল দেখার জন্য। আর অন্য কোনদিন দেখতে পেতাম না। আমার বাড়িতে কস্মিনকালে কাউকে মদ খেতে দেখিনি। দাদু সুনীল-শক্তির যুগে কবি হয়েও খেতেন না। (আত্মীয়দের মতে, এটা ওনার জীবনের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ কীর্তি। প্রথমটা হলো আনন্দবাজারে না লেখা) টিভিতে যদিও দেখেছি উত্তম কুমার মদ খাচ্ছেন। রাজেশ খান্না দোলের দিন মদ খেয়ে আকাশে উড়ছেন, নিচে রেখা। শুধু দোলের দিনই মাতালরা কেন দৃশ্য হয়, এটা সেই আমলে একটা ভাববার মত প্রশ্ন ছিল। আমি বাংলা রচনায় এদের কথা লিখতাম। আমি জানতাম মধ্যরাত্রির নিস্তব্ধতা একমাত্র গির্জার ঘন্টা আর এদের স্খলিত পদক্ষেপেই ভাঙে। তবুও অনেক জানা বাকি ছিল।

    মধুবাবুর বাজার পেরিয়ে ৩ নম্বর পুলের নিচে দীপদের চাকর অনিল টলতে টলতে এক পা এগোত আর দু পা পেছোত। চেক শার্টটা গনেশ পাইনের প্যালেট। কাকা দেখিয়ে বলতেন "পিটি দিস ম্যান। হি হেস নো ক®¾ট্রাল ওভার হিমসেলফ।' ফুচকে কী অর্থ করত জানি না, আমি কাকাকেই করুণা করতাম। আর আশা রাখতাম, সামনে থেকে না হলেও, একদিন ওপর থেকে রেখাকে দেখব।

    বন্দী কাকার কথা এলো ফুচকের বড় হওয়া কিছুটা বোঝাতে। ৯৪-এ আমরা পদ্মপুকুর ও তারপর কলকাতা ছেড়ে যাবার পর আর ওদের সাথে তেমন যোগাযোগ রইল না। দশ বছর পরে ফুচকে যখন আমাদের কলেজেই ভর্ত্তি হল, তখন কাকা সাথে এসেছিলেন হোস্টেলের রুম দেখতে। তার আগেও একবার এসেছিলেন, পরীক্ষার ফর্ম, question ইত্যাদি যোগাড়ে।

    ঘটনাক্রমে সেদিন ছিল দোল । এক নতুন ছোঁড়া মদ এর ঘোরে কাকাকে আবির দিয়ে প্রণাম করতে গেলে কাকা হাঁ হাঁ করে ওঠেন। কিছু ছেলে জড়ো হল। শ্রোতা পেয়ে বন্দী সমাদ্দার একটা নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিয়ে ফেললেন। "আমরা কিন্তু ভাই দোল খেলেছি রক্ত দিয়ে, কিছু মনে কোরো না। আমার দাদাও তাই। এই, ধর তোমাদের বয়সী বা একটু ছোটই হব। একইসাথে দীপাবলী আর দোল। পাইপগান থেকে আগুন ঝরছে, আর গা থেকে গরম ফ্রেশ blood। এই এখানেই । এই হোস্টেল এর কাছেপিঠেই এককালে কত রক্তগঙ্গা বয়ে গেছে। তোমরা কি এসব জান ?'

    হোস্টেলে আসার পর ফুচিকের কোনো ragging হল না।

    দেড় সেমেস্টারের মধ্যে ফুচিকের একটা ব্যথা মত জন্মায়। প্রথমেই লিখেছি হোস্টেল ছিল, কিন্তু মেয়েরা থাকত না। আশা রাখব পাঠক পাঠিকারা এটার ৯৫ শতাংশ ইন্টার্ভাল করে নেবেন। মানে, কোর্সে ভর্ত্তি হওয়া মোট মেয়ের সংখ্যা ১২, তাদের মধ্যে ৮ জন বছরে দিন দশেকের বেশি থাকত না। যারা থাকত, আমরা তাদের homework করে দিতাম। তবে এই গল্পে সেইসব মেয়েদের কোনো ভূমিকা নেই বললেই চলে। বাড়িতে আন্তর্জাতিক শুনে বড় হওয়া ফুচিকের কাছে এরা এমনিতেও matter করত না। প্রথম হোস্টেলের মানুষরা যখন দ্বিতীয় হোস্টেলের মানুষীদের assignment করতে ব্যস্ত, ফুচিকের নজর পড়েছিল campus এর ( বড় পুকুরের দক্ষিনে, গেস্টহাউসের ধার ঘেঁষে অবস্থিত ও দুটো বড় তালগাছ দ্বারা আংশিক আচ্ছাদিত ) তৃতীয় হস্টেলটির দিকে।

    যেখানে ছেলে মেয়েরা থাকত একসঙ্গে। চমকে হাততালি দেবার কিছু নেই, এরা কেউই ভারতীয় নন . কিছু একটা বদখত degree নিতে ওদের দেশের সরকার stipend দিয়ে দু বছরের জন্য এখানে পাঠায়।

    আফ্রিকা ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া থেকেই বেশির ভাগ। আমাদের সুমিত মন্ডল ওদের হোস্টেলে মাঝে মাঝে tution পড়াতে যেত। ওখানকার দু একটা ছেলে আমাদের club এর হয়ে খেলেওছে। তবে মেয়েদের নাম ছাড়া বিশেষ কিছুই জানতাম না। মন্ডল বলত। মমু, ভাভা, জেভম। হ্যঁ¡, ফুচিকের ব্যথার নাম ছিল ইয়ুন তাং।

    হোলি nightএর এক মাস আগে ছাদে নিয়মমাফিক জিবি মিটিং ডাকা হল। নাটকের বিষয় ঠিক করতে। ফুচিক হাত তুলে ঘোষণা করলো এবারের হোলি হবে রক্তের হোলি। আমরা উৎসুক হলাম। নাটকের ভালই নাম। জমাটি হবে। সুদেশ পান্ডে বলল "আগে' --হৃদয়রক্তরাগে তব চরণ দিব রাঙিয়া --- "Let's play this holi with blood'

    ব্যাপারটা অনুধাবন করতে দু মিনিট গেল। আগের বারের বাওয়ালের পর থেকে শশাঙ্কবাবু আর দীপঙ্করদা উপস্থিত থাকতেন। দু ' মিনিট পর শশাঙ্কবাবু ব্যাপরটা আন্দাজ করে মুখ খুললেন : "আহা মেয়েদের সাথে দোল খেলবে খেলোই না, কে মানা করেছে? এসব রক্ত ফক্ত আবার কেন?'

    ওনার বোঝার পর দীপঙ্করদা বুঝলেন।

    "ওহ এই ব্যাপার। মেয়েদের সাথে দোল খেলবে? তা বললেই হয়। যাও permission দিলাম । হা হা। সব কলেজেই তো হয়, এটা কোনো ব্যাপার নাকি, তোমাদের সবকিছুতেই বাড়াবাড়ি। হা হা হা'

    ফুচকে গর্জে উঠলো।

    "কীরকম ? আপনি জানেন ওই সব কলেজে কী হয় ? কী expect করলেন, আমরাও তাই ? রং বার্সে চালিয়ে লারেলাপ্পা করি ? "do me a favour lets play holi?' লোমশ ঠ্যাং দেখিয়ে ১৯-২০ বছরের হুমদো ছেলে বেতালে নাচছে, মেয়েদের এখানে সেখানে জড়িয়ে ধরছে। এদের মধ্যে চালু মালরা আবির নিয়ে strategically হিট এন্ড রান এর ধান্ধায়। প্রগতিশীলতার মুখোশ পরে অবোধ মেয়েদের ধর্ষণ করি, বলছেন?'

    second year রা বলল "আমরা কিন্তু রক্ত দিতে পারব না, মদ গাঁজা ভাং অনেক ধাক্কা, শরীরটা weak থাকবে।'

    নানা কোণ থেকে নানা কথা, বিতর্ক গজিয়ে উঠল। "সমাদ্দার, how perverted can you get man?'

    "co-ed school এ না পড়লে এরমই হবে। এসব sample ১৮ বছরের frustration এর ফসল।' মোটামুটি ঠিক হল যা করার ফুচিক একাই করবে।

    আমার লজ্জার থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছিল। ফুচিকের মত bright ছেলে পদ্মপুকুরের বাড়িতে থেকে এরকম বিকারগ্রস্ত হয়ে যাবে ভাবিনি । আমি ফিসফিস করে কিছু বলার চেষ্টা করলাম "ফুচকে জানি তুই এসব ব্যাপরে অভিজ্ঞ, তবু বলছি, এটা post y2k। এইসব সাইকো তশফরন আজকাল মেয়েরা খায় না। তুই তো ভালো আবৃত্তি করতিস,...'

    ফুচিক অনড় দেখে সিনিয়ররা technical দিকে চলে গেলেন। পিচকিরি হলে point blank range ছাড়া উপায় নেই। ভিসকোসিটির একটা ব্যাপার আছে, after all blood is thicker than water। এইসব।

    ফুচিক weekendএ আর বাড়ি ফেরে না। শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে হোস্টেল এর পশ্চিম wing থেকে একটা সুদীর্ঘ কালো ছায়া ঘনাতে থাকে। পাঁচ দিনের বাবলি গ্রাস করার মতলব তার। আমরা পড়ে থাকি। গাণিতিক মনে আধিভৌতিক ছোঁয়া আসে। এই সব সময়ে একা একা তিনতলার পুব wing-এ না যাওয়াই ভালো। কারণ সেখানে একটা পূর্ণ -ভৌতিক ফতুয়া আর সবুজ halfpant পরা ফুচিক পায়চারি করবে।

    তার মাথায় নানান নতুন তথ্য যেগুলো সে বন্ধুদের সাথে ভাগ করে নিতে চাই। সে তথ্যগুলো আমন্ত্রণ -এ সুমিত মন্ডলের থেকে ডিম ভুজিয়া খেতে খেতে নেয়া ।

    "য়িযুন এর বয়স কত?' "য়িযুনের প্রিয় রং কী? "য়িযুনের প্রিয় লেখক কে? '

    "য়িযুনের দেশ কী?'

    "কী?'

    ফুচকের চোখ প্রথমে ছোট হয়ে যায়, তারপর জ্বলজ্বল করে ওঠে।

    "vietnam!!!'

    কেশর খাঁর caseটা আমাকে আজকাল খুব ভাবায়। রবি ঠাকুর এনার কথা কবিতায় লিখেছিলেন। লোকটা রাজপুত রানীর ইনভি পেয়ে বাড় খেয়ে গেছিল। পরে কে এল পি ডি হয়ে যায়। ফুচকে কিছুই পায়নি। তবু সে তার কচি গোঁফে তা দেয় কোন সুখে?

    দোলের দিন দখিন থেকে কোনো হাওয়া না আসলেও, আমরা ব্যাকুল মনে মাতাল হয়ে এলাম। ফুটবল খেললাম। তারপর বল ঘিরে জড়ো হয়ে বসলাম। ভাঙের প্রভাবে ভঙ্গুর পৃথিবী। fractured আত্মার নির্দেশে সামনের গোলটাকে বিশ্বের আদি বিন্দু ভেবে নেওয়াই যায়। এর মধ্যে ফুচিকের খবর কে রাখে ? যার হৃদয়, তার রক্ত। রাগ হলে সেই দেখবে।

    complaint এলো সন্ধ্যেবেলা। দীপঙ্করদা জানালেন। molestation। সোমবার office এ জানানো হবে। ডিনারের পর আমি আর মন্ডল ক্ষমা চাইতে গেলাম। আমি, মন্ডল, মমু, ভাভা সবার ইংরেজি জ্ঞানে একটা অপূর্ব সাম্য থাকার কারণে আলোচনা খুব দ্র¦ত এগোলো। কিন্তু ঘটনা সম্পূর্ণ জানা গেল না। ফুচিক হাত দিয়ে কপালে ঠেকিয়ে কিছু একটা বলেছিল। তারপর নিজেই blood blood বলে চেল্লালো। তারপর সকলে ওখান থেকে পালিয়ে আসে।

    ভাভা বললেন "in india women no respect ever।'

    মন্ডল মৃদু প্রতিবাদ করলো "That toh in village, not here Trouble of the fact is, that the guy is mad, too much reading make him mad'

    -তিন চারজন সমস্বরে বলে উঠল "yes yes he looks like mad'

    -আমি বললাম "you come from buddhist countries, you should forgive'

    -এত গম্ভীর কথার মধ্যে য়িযুন এর গলা শোনা গেল না।

    সেটা সোমবারে শুনেছিলাম, canteen এ। দুজন দুটো মিনি রসগোল্লা নিয়ে ঘন হয়ে বসে ছিল। ভিয়েতনামের য়িযুন তাং আর কলকাতার ফুচিক সমাদ্দার। দুজনের ভাঙা ইংরেজিকে কোনো অনুবাদই সঠিক মযা Ñদা দিতে পারে না, তবু চেষ্টা করে দেখা যাক।

    য়িযুন : "ওটা সত্যি কি তোমার ছিল? '

    ফুচিক, ইতস্তত করে : "হ্যঁ¡, কেন?'

    য়িযুন : "পরে চেটে খেলাম তো। দারুন খেতে'। হাসি।

    এ মেয়ে তো মেয়ে নয় vampire নিশ্চয়ী!

    ফুচিক: "পৃথিবীর সব মেয়েই কি এক? তোমরা আসলে পুরুষের দেহ না, মন না, রক্ত ভালবাস'

    য়িযুন, কিছু না বুঝেই : "হ্যঁ¡ বাসি'।

    আমি শনিবার রাতে মন দিয়ে বেহেড ফুচিকের হাত দেখেছিলাম। শুঁকেও ছিলাম । রক্তের আলাদা কোনো গন্ধ থাকে কিনা জানিনা। সত্যি বলতে, আমি তো খানিকটা ৪৫ টাকার macdowells এর ঝাঁঝ পেয়েছিলাম। কিছুটা মুন্‌শিদার রান্নার। গাঢ় লাল খাসির ঝোলের পরিচিত সুবাস। হয়ত ফুচিক গুলিয়ে ফেলেছিল। য়িযুন তাং পুরো ব্যাপারটাকে মশকরা ভেবেই নিচ্ছে, মনে হয়। আমি কোনো পক্ষেরই ভুল ভাঙাই নি। ফুচিককেও জিগেস করা হয়নি।

    আসলে দোল লাগলে রক্তকেও আর শক্ত লাগে না । রক্ত। যা জল বা ঝোলের থেকে অনেক বেশি গাঢ়।





    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • গপ্পো | ২২ মার্চ ২০১১ | ১০২০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • নিশান | 34.93.27.208 (*) | ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৫:৫২89127
  • খাসা, খাসা, পরের দোলে আমিও রক্ত দিয়েই খেলবো!
  • শ্রী সদা | 113.19.212.21 (*) | ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৬:০৪89128
  • অসা হয়েছে ঃ)
  • ঐশিক | 24.140.33.186 (*) | ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৮:৩৮89129
  • বেশ ল্যাখা !!!!!
  • cb | 213.0.215.3 (*) | ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৯:০৪89130
  • এইটা ক্যানো জানি না মনে হচ্ছে, আগেও একবার পড়েছি।

    রম্যরচনা হবে তো অ্যায়সা
  • sosen | 24.139.199.11 (*) | ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৯:৫৩89131
  • লেখার ধরনটা দারুণ!
  • শঙ্খ | 161.151.16.11 (*) | ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০৬:৩৮89132
  • ওঃ খুব সুখপাঠ্য লেখা।

    কিছু কিছু জায়গায় টাইমিং অসাধারণ হয়েছে যেমন 'হোস্টেলে আসার পর ফুচিকের কোনো ragging হল না।'
    second year রা বলল "আমরা কিন্তু রক্ত দিতে পারব না, মদ গাঁজা ভাং অনেক ধাক্কা, শরীরটা weak থাকবে।'
    ইঃ ইঃ
  • pi | 57.29.130.199 (*) | ১২ মার্চ ২০১৭ ০১:০১89133
  • আজ আবার পড়ছিলাম :P
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ১২ মার্চ ২০১৭ ০১:০৮89134
  • হ্যাঁ এইটা আগেও পড়েছি... আইএসআই গল্পের টইতে বোধহয়... ওই যেখানে বকা জিগ্যেস করল কি করছিস, বললাম বকার ডায়রি লিখছি -- এ জাতীয় অমর লাইন ছিল :)

    এইটাও সেই শ্রেণীরই... অনবদ্য।
  • pi | 57.29.130.199 (*) | ১২ মার্চ ২০১৭ ০১:২৫89135
  • লেখক কিন্তু চেনা :P
  • pi | 24.139.221.129 (*) | ০১ মার্চ ২০১৮ ০৮:১৩89136
  • সৃজনবাবু আবার যে কবে এসব সৃজন করবেন !
  • নেতাই | 175.225.106.71 (*) | ০১ মার্চ ২০১৮ ১১:০৬89137
  • আমিও পড়েছি আগে। কোথায় মনে নেই।
  • ঝর্না | 24.97.78.26 (*) | ০২ মার্চ ২০১৮ ০৪:১৩89141
  • বাপরে...হেব্বি লেখা...
  • pi | 57.29.161.138 (*) | ০২ মার্চ ২০১৮ ০৯:৪২89138
  • গুরুতেই। স্টাইল থেকে কিছুটা গেস করা উচিত।
  • T | 165.69.191.250 (*) | ০২ মার্চ ২০১৮ ০৯:৫৫89139
  • হেবি হেবি। আগে পড়িনি এটা। লেখক কে গা?
  • San | 113.252.217.221 (*) | ০২ মার্চ ২০১৮ ১১:৩৫89140
  • ঋদ্ধি ?
    চমৎকার !
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন