এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক

  • দিলদার নগর ৫

    Aditi Dasgupta লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | ১৯ জুন ২০২৪ | ১৭৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • পান্থজনের সখা  নামেন ধুলায়? 
    এলোমেলো দুঃখগুলি জমাতে জমাতে ---
    কেউ কেউ কবে যেন আলো হয়ে যায়।

    গুলমোহর এর সামনে এখন গৌরের হাফ  টোস্ট।   সাদা মাখন ভরপুর করে মাখিয়ে দিয়েছে গৌর, চিনিও বেশ ঢেলে দিয়েছে। গৌর এর রং তেল পিছলানো বাদামি। দশাসই চেহারা, মাথার কোঁকড়া চুল ও সেই অনুপাতে। ‘মহিষাসুর’ বলে ক্ষেপানোর একটা সুযোগ পাওয়া গেলেও ব্যবহার করা যায়নি ওর মিহি কণ্ঠ আর মোলায়েম স্বভাবের জন্য। দুটো অ্যালুমিনিয়াম এর মগ নিয়ে, এ মগ ও মগ করে করে ওর যত্নে চা জুড়োনো অথবা ওমলেট, টোস্ট আর চায়ের ট্রে টা দু হাতে ধরে  হাসি হাসি মুখে এগিয়ে দেওয়া দেখতে দেখতে লোকে ঘরের ওম পায়। ছেলে পিলেদের ওর দোকানে বসিয়ে বাজার টাও সেরে আসে কেউ। ওকে আজকাল বুঝি একটু বেশী ই মাখন দিচ্ছে ব্যাটা! পাউরুটির ধার দিয়ে নেমে আসছে নরম ননী। আঙ্গুল দিয়ে তাই চেঁছে নিয়ে জিভে ঠেকালো গুলমোহর। চা চাইলো। গুলমোহর ওর আসল নাম নয়। এম ডি খান নামে ও সই করে পোস্ট অফিসে বা প্রেস এর খাতায়। ছদ্দ নাম বা লেখা লিখির নাম গুলমোহর। এই নামেই এখন ডাকেও লোকে ওকে। রফি সাবের ভক্ত কোন ছোট বেলা থেকে। ক্লাস এইট এ কুন্দ রানী হাই ইস্কুলের ম্যাগাজিনে কবিতা ছাপতে গিয়ে ও এই নাম নেয়---গুল মোহরের ফুল ঝরে যায়… গুন গুন করতে করতে। ওর ব্যাথাও জাগে, কেন যায়…কেন যায়? বাংলার সুনীল স্যার কবিতা পড়ে যত্ন করে কান মুলে দিয়েছিলেন। কবিতা কিন্তু ছাপা হয়ে বেরিয়েছিল। বানান ঠিক করে কটা ছেলে আর ছন্দ মিল দিতে পারতো ওই ইস্কুলে! কলেজের পাশ কোর্স এ ভর্তিও তো হলো, তারপর আর এগোলো কই? লেখা কিন্তু থামলোনা। ছাপলো হয়তো তার সিকি ভাগ। সামান্য টাকাও আসে। তবে প্রেসের কাজটা না পেলে ওর ভরসায় থাকা যেতোনা। সামান্য টাকা, তবু মাসের শেষে বাঁধা তো!  আজ প্রায় দশদিন প্রেস বন্ধ, ঘোষ দার বাবা মারা গেছেন। তবে আজ অবশ্য এমনিই রবিবার।এখন টাকাটাও চাইতে পারছেনা, এই সময় ভদ্র লোকে পিতৃদায় যার, তাকেই কিছু দেয়। ও মুখ ফুটে আর চায় কী করে? তাও একবার তপনকে বলে দেখবে, ওই তো সামলায় সব। 

    গুলমোহর একটা মাঝ বয়সী লোক। চল্লিশ পেরোনো।পথে ঘাটে যেমন দেখা যায়। হাইট, রং কোনো কিছুই আলাদা করে যে খুব চোখে পড়বে এমন নয়। এরকম লোকেরা মোটা হয়না সাধারণত। গুলমোহর ও তাই মোটা নয়। তবে নেহাত প্যাঙ্গলা ও নয় যেমনটি হলে লোকের একটু কৃপা হলেও হতে পারে। বরং বেশ খেটে খাওয়া জোরালো হাত পা। গালে বসন্তের ফুটো ফুটো। ব্যাকব্রাশ চুল উঁচু কপাল। একটা বৈশিষ্ট আছে অবশ্য, কপাল আর নাকের সংযোগ স্থলে  একটা ভাঁজ। গুলমোহরকে শীতকালে সব সময় কোট প্যান্ট  বুট জুতো তে দেখা যায়--- যদিও প্রত্যেকটির উপর যথেষ্টই বয়সের ছাপ পড়েছে। কোট প্যান্টের কালো রং ছাতা পড়া, বুট জোড়াও ফাটা ফাটা। যাকগে, গুলমোহর এখন একটা চারমিনার ধরাবে, কারণ এইমাত্র ওর চা শেষ হলো। দেড় খানা আছে প্যাকেটে। ও হাফটা বের করে ধরালো। আজ চান করে বেরোতে পারেনি, খুব সকালে বেরোতে হয়েছে কয়েকটা জায়গায় টাকা আদায় করতে।ধরে রাখা জলে তখন বরফ ধার। আঁচ পুড়িয়ে গরম জল, তাও ছেলে পিলে নয়, ওর মত মদ্দ লোকের জন্য ---ভাবনাতেও আসেনা! পুকুরের জল শীতের সকালে আরাম দেয়, উষ্ণ থাকে, কিন্তু  উজিয়ে হর্ষদীঘি যেতে সাত সকালে ওর আর ইচ্ছে করেনি, মাথার মধ্যে তখন টাকাটা পাবে কি পাবেনা চিন্তা! একটা লোকাল পত্রিকা সহরেই, আর বাকি একটা একটু দূরের, বাসে দেড় ঘন্টা মত। লোকের বাড়িতে যেতে বিরক্ত লাগে, কিন্তু ছুটির দিন ওর জন্য কে অফিস খোলে?দায় ওর ই! সামান্য লেখালিখির টাকা, তাও ব্যাটারা ঝুলিয়ে রাখে। তবে দূরেরটা আজ পেয়ে গেছে। কিন্তু মাসের টাকাটা আজও বাড়িতে দিতে পারবেনা। আম্মু যদিও আশা করে আছে। ভাবীরাও উঁকি ঝুঁকি মারে বৈকি! সে যাক, ও এখন ভাবছে সুলেখার কথা। 
     
    সুলেখার বদলে জুলেখা হলে সমস্যা কম হতো, ও ঘরে তুলতে পারতো একটু ধানাই পানাই করে। তবে জুলেখার ভালো নাও লাগতে পারতো বড় রাস্তা থেকে ঢালু কাঁচা গলিতে নেমে খানিক ইঁট আর খানিক মাটি আর টালির বাড়ি। শুয়োর, হাঁস মুরগি,নর্দমা আর রাস্তার কলের ভরসায় থাকা সে বাড়ি। কিন্তু সুলেখা মুখুজ্যেকে নিয়ে সমস্যা আরো ভারী। অথচ কেরানি সুলেখাকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নিতে হবেনা ওকে। বরং ওই নিশ্চিন্ত হতে পারে খানিক! সুলেখার ওই ছোট ভাইটা ইলেভেনে পড়ে, ওকে দেখে কেন সিগরেট লুকালো সেদিন,সেই থেকেই চিন্তা। বাপ্ বিষ্টুকে দেখলে কোনো চিন্তা আছে বলেই মনে হয়না। এটা সেটা পুজো আচ্চাতে ডাক পড়ে, টুকটাক পয়সা ঘরে আসে। দাঁত খুব বেশী আর নেই, ছেলে ছোকরাদের সাথে মসকরা করে বিড়ি খায় চেয়ে চিনতে। তারাও ছাড়েনা। কোন সিপিয়া কালে পূব বাংলার সাথে সুতোটুকু তুলে ধরে তারা বুড়োর চারপাশে নাচে :
    সত্যনারান বলে আমি সিন্নি নাহি খাবো 
    বিষ্টু বাঙাল বলে আমি 
    গুঁজ্জে গুঁজ্জে দুব!

    ওপাশের টেবিলে জোর তর্কবিতর্ক চলছে। পায়জামা পাঞ্জাবী, ধুতি, প্যান্ট শার্ট, ভারী চশমা, কথা ভেসে আসে :রাশিয়া, আমেরিকা চীন.. এদের বেশ লাগে। টাকাকড়ি খুব একটা ব্যাংকে আছে বলে মনে হয়না,অনেকের একেবারেই নেই বলেই মনে হয়--- চেহারা জামাকাপড় অন্তত তাই বলে। তবু যৌথ যাপনের আশ্বাসে বোধ হয় কেটে যায়। ওদের কথাগুলি ও যে বোঝেনা তাও নয়। ভালোই লাগে এই উচ্ছাস। সেই সমবেত অক্ষর যাপনের রসুই থেকে ভারী সুবাস বের হয়। গুল চেটে পুটে খায় সব।মাথায় রয়ে যায়, হৃদয়ে ঢুকে যায়।একাকী অক্ষর ঠেলতে ঠেলতে ভারী ক্লান্ত লাগে আজকাল। যদি যাপন করার সুযোগ পেত একটু, কারো সাথে !  একটু লজ্জাও লাগে মাঝে মাঝে, যদি চোখা চোখি হয়ে যায়! তাই খবরের কাগজে শব্দ ছকে চোখ নামিয়ে রাখে।  ওদের সাথে কখনো ছোট বাচ্ছা আনে। গুলমোহর গৌরের কাঁচের বয়ম থেকে লাজেন্স তুলে ওদের হাতে দেয় কখনো, লজ্জা একটু কম থাকে যেদিন, বা আত্মবিশ্বাস বেশী --–মাসের প্রথম দিকে।গাল টিপে দেয় হয়তো কারুর। কেউ অবাক হয়ে তাকায়, কেউ হাসে শুধু। বাপেরা আশ্বাসের হাসি হেসে ওর দিকে চেয়ে মাথা নাড়ে। আবার তর্কে ডুবে যায়।
    এখন ও উঠবে। এখন এই গড়ানো বেলায় আর বাড়ি ঢুকবেনা। তার চেয়ে পার্কে গিয়ে একটু গড়িয়ে নেবে সিমেন্টের বেঞ্চেতে রোদে। ওর মুখে হাতে একটু খড়ি ফুটছে,শুকনো চুল পড়ে আসা বেলার শিরশিরে বাতাসে উড়ছে একটু একটু। হটাৎ ই ওর মনে এল এক থালা ভাত। ওই টেবিলের ওরা উঠে পড়েছে। ওরা বাড়ি গিয়ে চান করে ভাত খাবে, যাই হোক কিছু একটা দিয়ে।এক ফোঁটা কেওকারপিন মাখবে কেউ, হয়তো বা সোনালী সাবান। ঘরের হাওয়ায় হাল্কা ভাসবে সেই সুস্থিতি র গন্ধ। ও হন হন করে এগোতে থাকে।পার্কে গিয়ে আর একটা গজ চা গিলবে এখন।

    শুয়ে শুয়ে এখন অন্য কিছু ভাবছে ও জোড়া গম্বুজের সোনালী মিনার দুটোর দিকে তাকিয়ে। কত মানুষ মান্নাত পুরণ করতে আসে  এই বড়ো হুজুরের দরগায়! কবে, সেই গত শতকের শুরুতেই তো তাঁর ইন্তেকাল হয়েছে, তবু তিনি বেঁচে আছেন! তাঁর পূর্ব পুরুষ সেই আরো কতকাল আগে বোগদাদ থেকে এখানে এসে আস্তানা গাড়লো। সাধু ফকির  দের কাজ কম্মের হিসেব কি মুদি দোকানের পাল্লায় মাপা যায়? দিন দুরত্বের হিসেব ও বুঝি তাদের আলাদা! সেই জায়গায় পৌঁছানোই কি কম মেহনতের কাজ? মন, হৃদয়,আত্মা,ইমান এর মেহনৎ ও তো মেহনৎ! সাধারনে বুঝবে কেমন করে? দেশ ভাগ কাটাকাটি ---কিন্তু মানুষের আসা বন্ধ হলো কই? ফি বছর ফাগুন মাসে বড়ো হুজুরের উরস পাকে পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে কত কিসিমের মানুষ আসে। কি সুন্দর সাজানো ট্রেন-- একেকটা কামরায় একেকটা  নাম লেখা --–কুমিল্লা -ফরিদপুরে- ঢাকা- নোয়াখালী -বরিশাল। সেই একশ বছরের উপর ধরে চলছে এই ট্রেন। পাকিস্তান হলো, বাংলাদেশ হলো, ট্রেন কিন্তু আটকানো গেলোনা। স্টেশন এ ঢুকলেই যেন উৎসব--- এসে গেছে, এসে গেছে! ভাই বেরাদর ছাড়াও অপরিচিত হাসি মুখ দেখে ওদেশ থেকে আশা মানুষজন। কত কি এক্সচেঞ্জ হয়। আর ওরা কেনে রাশি রাশি বঙ্গ জীবনের অঙ্গ!! সবুজ টিউবটার ক্রিমটুকুর নাকি ভারী চাহিদা ওই দেশে। গুল হাসে :
    এতো ভঙ্গ বঙ্গ দেশ তবু রঙ্গে ভরা!
    কে যেন বলেছিলো? ওহো, হ্যাঁ, ঐতো পাজামা চশমারা চ্যারিটি শো করেছিল, যেমন করে মাঝে মাঝে, রবিবার সকালে। কোমল গান্ধার। সাদা কালো। ট্রেন টা কেমন দোহাই আলী দোহাই আলী হাহাকার করতে করতে ঘ্যাচ করে এসে থেমে গেল পার্টিসনের গায়ে! অথচ নদীর ওপারেই ওর বাড়ি দেখা যায়। আর যাওয়া যাবেনা! আর দেখা হবে না! বুকটা মোচড় দিয়ে উঠেছিল ওর।
     
     আচ্ছা এই যে মৃত্যু ঘিরে খুশির উৎসব ----মৃত্যু তে উৎসব হয় কেন? মৃত্যু তো দুঃখের।উত্তর দিয়েছিলো সেই কবে জোসনার আব্বা। পাড়ার দেওয়ান মাজারের খাদিম সে তখন। জোসনা ইস্কুলে প্রাইমারি তে পড়তো ওর সাথে এখন হাসপাতালে আয়ার কাজ করে।  চাচা একটা কাগজের ঠোঙা থেকে দুজনের হাতে শুকনো বোঁদে দিতে দিতে বলছিল, এ মৃত্যু তো মরে যাওয়া নয়, জানের যে জান ---তার সাথে মিলন। আরবি তে উরস তো বিয়ে। আমীরের সাথে তার নিজামের ও তো শেষে এমনই বিয়ে হয়েছিল। বাংলা থেকে উর্দ্ধশ্বাস এ দিল্লী ছুটেছিলো  আমীর, তার নিজামের অসুস্থতার খবর পেয়ে। সে তখন তুঘলকের সরকারি চাকুরে। সেই নিজাম, যে কিনা ধর্মে সইলে তাকে নিয়েই কবরে ঢুকতে চেয়েছিলো। আমীর গিয়ে দেখলো ততদিনে তিনি ঢুকেই গেছেন কবরে, তাকে ছাড়াই। ওখানেই শুয়ে পড়লো সে। ছ মাস পরে তার মিলন হলো তার নিজামের সাথে। 

    মানুষের চৈতন্য বড়ো উঁচু তারের জিনিস, জনন ইন্দ্রিয় বা বংশবৃদ্ধির সমীকরণ  দিয়ে কি তাকে বাঁধা যায়? নর- নারী -নর- নর- নারী- নারী ---কে কখন কার মধ্যে নূরের দেখা পাবে তা কি অন্যে ঠিক করে দিতে পারে? জান্তব সংস্কার নিয়ে আর কতদূর চলতে পারে মানুষ?

     ও দেখছিলো একটা কেমন জানি ভারী তামাটে রং চারদিকে। পুরোনো দিনের সিনেমায় এমন রং থাকে। ও ঘোড়ার উপর, পুরোনো ভারী আচকানের মত কি পরেছে। মানুষজন যেন সেই আগের দিনের মতন। ওর খুব ভালো লাগছে। কেউ একটা এসে ঘোড়ার লাগাম ধরে ওকে যত্ন করে নামাতে চাইছে। ওর সাথে কাজী থাকার কথাতো! পাগড়ি পরা কেউ হাসছে, পাগড়িটা কিন্তু বাঁধনি ছাপ, লোকটা র কপালে হলুদ টিকায় কয়েকটা চালের দানা। এতো কাজী নয়! এতো রতন সুখলাল। ক দিন আগে মেয়ের বিয়েতে স্টেশন থেকে ঘোড়া ভাড়া করে বর এনেছিল। ঘোড়া থেকে ও নামতে গেল, এমন সময় বিষ্টু বাঙাল এসে হাতের ঘটি থেকে খানিকটা জল ওর মুখে মাথায় ছিটিয়ে দিলো! ধড় ফড় করে চোখ মেলে দেখে সুলেখা  হাসছে, একটু অপ্রতিভই বা, পৌষর বিকেল শেষে জল ছুঁড়ে! হাতে ঢাকনা খোলা জলের বোতল। স্বচ্ছতা হারিয়ে সাদাটে হয়ে আসা প্লাস্টিকের বোতলের গায়ে এখনো চিটে  থাকা নীলচে ফ্যাকাশে কাগজে মস্ত বড় বুড়ো আঙ্গুল এর কেল্লা ফতে ছবি আবছা। সুলেখা কেমন দেখতে সেটা এখানে অবান্তর। গুলশন এর ফুপু খালা ভাবি কেউই তো ওর রোশন চৌকি বসাবার জন্য উচাটন হয়ে ওঠেনি বা ওর বৌহীন ভবিষৎ নিয়ে লেশমাত্র উৎকণ্ঠা ও দেখায়নি যে ওকে তাদের সামনে সুলেখা কে বর্ণনা করতে হবে!

     ছায়া অনেক নীচে এখন, বাতাস ও ছেড়েছে। ওরা হাঁটতে থাকে। একটু পরে সুলেখা ধরে বাড়ির পথ। গুলমোহর কোনো কোনো দিন দিলদার টাইমস এর আপিসে গিয়ে বসে সন্ধ্যের দিকে। একটু আধটু সাহায্য করে, এটা সেটা পড়তেও পারে। চা ও দু এক কাপ জোটে। আজ ইচ্ছে করলোনা। তার চেয়ে একবার বড়ো আস্তানার দিকে হাঁটা মারবে ভাবলো। শবনাম বানো জুনিয়র এর জলসার জোর ঘোষণা চলছে কদিন ধরেই। আগে শুনেছে। একটু ভারী ফাটা গলা, বেশ লাগে। তবে অনেকেই সড়ক ছাপ বলে নাক সিটকোয়। ঢোলক হারমোনিয়াম তবলার সাথে সে নিজের দুহাতে চারটি চারটি করে কাঁচের খন্ড বাগিয়ে দারুণ বাজনা তোলে। গয়না, ঝলমলে পোশাক, নানান আওয়াজে রাত বাড়তে থাকে, মানুষের ভীড় ও বাড়ে। সস্তা পারফিউম, আতর আর হালোয়া র গন্ধ ভেসে বেড়ায়। তবে রাতের ভিড়ে পকেট মার আসে, আসে নেশাখোর, আসে লুচ্চা লাফাঙ্গা, ভিড়ের সুযোগ নিতে। সুলেখা বামনী কি কখনো এখানে আসবে? ভাবে ও। ফুল প্রোটেকশন দিয়ে সামনে নিয়ে গিয়ে বসাবে প্লাস্টিকের চেয়ারে। আরেকটি মেয়েই তো গাইছে! সেদিন কে যেন বলছিলো মেয়েদের কাওয়াল হওয়ায় মানা আছে। হজরত নিজামুদ্দিন বলেছেন নাকি। মন মানতে চায়না।তাঁর কাছে তো সব একাক্কার। তিনিতো মুহাব্বতেই ডুবে থাকা মানুষ ! যাকগে। 

    পশ্চিম দুয়ার সবসময়ে হানাদার পিশাচই আনেনি, সন্তও এনেছে, এনেছে শিক্ষা দীক্ষা শিল্প আর কত কিসিমের ভাবনা। সে প্রাচীন, মধ্য, আধুনিক--- যে যুগ ই ধরনা কেন!  যুদ্ধ, হত্যা, গুপ্ত হত্যা, ষড়যন্ত্র কোন যুগে ছিলোনা? আপাতত এই তেরোশোর শতকে দিল্লীতে এখন বুখারার নিজামুদ্দিন বসে আছেন তাঁর খানকাহ এর একেবারে উপরে। কাছেই রয়েছে তাঁর মুরিদ আমীর খুসরো। মধ্য এশিয়া থেকে পালিয়ে আসা তুর্কি বাবা আর রাজপুত মায়ের সন্তান সে। সুলতানের সাথে ওঠা বসা তার,বাপ দাদার। সে নিজেও রাজ কর্মচারী। অথচ নিজাম ছাড়া তার জীবনের কোনো অর্থই নেই! নিজাম পাত্তা দেননা সুলতানকে, বাদশা সুলতানরাও এঁদের ঘাঁটাতে সাহস করতোনা খুব একটা, দু এক পিস হেঁড়েমাথা ছাড়া। হিন্দুস্তান এক আজিব দেশ, সবকিছুকেই নতুন করে কেমন প্রাণ দিয়ে দেয় মিলিয়ে মিশিয়ে --- মেহেদির পাতা কড়া লাল হয় ভারতের মাটি ছুঁয়ে! পিছনে যমুনা কে জড়িয়ে মাঠ ঘাট পড়ন্ত সূর্যের আলোয় কেমন মায়াবী হয়ে উঠেছে! আকাশে ও রং এর মেলা। ধেনুগুলি ফিরছে তাদের গোঠে, গোষ্ঠবিহারীর বাঁশির সাথে মিলে যাচ্ছে যমুনার মাল্লাদের গান। সূর্যদেব পাটে বসতেই মেঘের আগমন, আকাশের সব রং মেঘকে জায়গা দিতে সরে গিয়ে বুঝি ঠাঁই নিলো নিজাম এর মুখে! আমীর মন্ত্রমুগ্ধর মতো তাঁকে সিজদা করলেন। বৃষ্টি নামলো! নিজাম একটি হাত দিয়ে স্পর্শ করলেন তাঁর মুরিদ আজিজ আমীর কে। তারপর কী হলো? 
    হায়রে এ অনুভূতি প্রকাশের ভাষা কি আমাদের আছে?
    যদি বলি?
    আলোকে মোর চক্ষু দুটি 
    মুগ্ধ হয়ে উঠলো ফুটি 

    হৃদ গগনে পবন হলো সৌরভতে মন্থর”
    কিন্তু সেতো আরো প্রায় ৫০০বছর পরে এক পীরালী বামুন বলবেন !
    খসরু কী বললেন?
    ছাপ তিলক সব ছিনি রে মো সে 
    নয়না মিলাইকে”!
    …নয়না মিলাইকে!

    নিজাম তাঁকে সহজ ভাষায় গভীর কথা বলতে বলেছিলেন। ফার্সি আরবির সাথে সাথে তাই উর্দু হিন্দি ব্রজবুলি আওয়াধি তে লিখেই চললেন তিনি! সৈন্য ব্যারাকের ভাষা উর্দু । খেটে খাওয়া নানা ভাষা নানা মতএর সৈনিক দের মুখের আরবি ফার্সি হিন্দি মিশে  উঠে নতুন এই ভাষা মন জয় করবে একদিন হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে, তারা ভালোবেসে গ্রহণ করবে একে।  আবার কিছু মানুষেরই কূট বুদ্ধিতে এই ভাষাই একদিন জোর করে ব্যবহার করা হবে অন্য মানুষের মাতৃভাষা কেড়ে নেওয়ার অসভ্য যুদ্ধে!

    পশ্চিমের দরজা হানাদার আর সন্ত--- দুই ই পেয়েছে--- কথাটা বাংলার পশ্চিম দুয়ার এই দিলদারেও সত্য। কত রকম শত্রু আর অত্যাচার!  আবার কোথা কোথা থেকে সাধু সন্ত সুফী এসে আস্তানা নিলো হেথায়! বৃন্দাবন,বোগদাদ, বুখারা মিলে মিশে গেলো। চিসতি, আলকাদেরি, সোহরাওরদী, সত্যপীর মিলে একাক্কার।

     গুলমোহর এখন ছাপ তিলক শুনছে আর মনের মাঝে কে যেন একই কথা গেয়ে চলেছে বাংলাতে :
    সব পরিচয় ভুলিয়ে দিলে একটি নয়ন সম্পাতে 
    তিলক ছাপটি মুছিয়ে দিলে একটি নয়ন সম্পাতে 
    পান করালে প্রেমের সূরা 
    নেশাতে  হই মাতোয়ারা 
    বিবশ তুমি করলে এমন একটি নয়ন সম্পাতে।
    সোনার কাঁকন শোভা আমার সোনার বরণ দুই হাতে 
    তোমার হাতেই বন্দি দুজন তোমার আঁখি  সম্পাতে।
    রং রসিয়া তোমার রঙেই রাঙিয়ে নিলে এই মোরে 
    আমার আমি  সপে দিলাম তোমার আঁখির সেই ডোরে।
    আমার সবটা এখন তোমার আর কিছু নেই  মোর হাতে 
    তিলক মুছে তোমার বধূ  একটি পলক সম্পাতে।


    গুলমোহর একদিন এক জোড়া কাঁকন কিনবে।
     কত দাম হয় কাঁকনের?

    আহা সাত আসমানের উপর আল্লা বন্দি নন, নিজাম বলেছেন,তিনি নিচেও আছেন, যবন,কাফের,ইহুদি ঈশাই--- সব্বার মধ্যে। তাদের ভালো বসলেই তুমিও মেহবুব -এ -ইলাহী হতে পারবে। এই যে এতো মানুষ সবার জন্য ---সবার ভালোবাসার কথা।

    রাত বাড়ছে। গুলমোহর উঠে পড়ে হাঁটতে শুরু করে। আস্তানা পেরিয়ে এদিকটায় এখন বেশ কিছু নতুন নতুন দোকান হয়েছে। বাচ্চাদের বেশ স্টাইলিশ জামা।দোকানগুলোর নাম গুলিও সত্যনারায়ন বা সুখলাল টাইপ নয়! কেমন সায়েবি। লিটল ফ্লাওয়ার, ব্লু মুন…এই রকম সব আরকি। এখন ঝাঁপ ফেলার আয়োজন। একে একে আলো নিভছে। শো কেসে ওই ছোট্ট গোলাপি ফ্রক টা, লেসের কাজটি আহা, ছোট্ট একটা শার্ট, নরম নীল জিনসের ছোট্ট প্যান্ট। কোথায় যেন দেখেছে ও, একটা ছোট্ট বাচ্চা উপুড় হয়ে সমুদ্র তীরে পড়েছিল এমন প্যান্ট পরে, ভেসে এসেছিলো। ওই ফ্রক তো কালকেই দেখলো, কোথায় বাচ্চাদের ইস্কুল, হাসপাতাল সব শেষ, ফুটফুটে তিনটি মেয়ে, আহা পড়েছিল রক্ত মেখে!  এমন জামার ছবি দেখেছে পুরোনো হলুদ ছবিতে গ্যাসচেম্বার এর পাশেও।  আরো জোরে হাঁটতে থাকে। একেবারে উল্টো দিকে! 

    হাঁটতে হাঁটতে সামনের ধূধু চাঁদ ধোয়া প্রান্তর। নদীটি কুয়াশার হাল্কা ওড়না বুকে ফেলে এই শীত রাতে এলিয়ে শুয়ে আছে আকাশের দিকে চেয়ে।একটু দূরে রেলের লাইন, তলা দিয়ে রাস্তা চলে গেছে ওদিকের প্রান্তরে। সেখানে একটি মাত্র গাছ দুহাত তুলে। গুলমোহর কাঁপছে। আগে পিছে যেন কিছু নেই। খুব কান্না পাচ্ছে। সবার জন্য--- সব্বার জন্য এবং নিজের জন্য। এরকম হটাৎ স্থির হয়ে যাওয়া নীল জোৎস্নায় এসে কি মানুষ মৃত্যুর পরে দাঁড়ায়? যত বন্ধু প্রিয়জন -যারা চলে গেলো সময়ে অসময়ে- বুঝে না বুঝে- সারা পৃথিবীতে নীরবে ঘটে যাওয়া অন্যায়- আহা শিশু মুখ- আহা মাতৃ পিতৃমুখ গুলি---সব্বাই? গুলমোহর মরে গিয়ে এখানে এলো, নাকি এ জীবনও কখনো কখনো মৃত্যু রূপ দেখায়? বিভূতিবাবুও দেখেছিলেন যেমন রাত মোহনায়? আহা এ ভালোবাসা আর বিষাদের প্লাবন কেমন করে সইবে সে? দুহাত তুলে দেয় সে আকাশে, পায়ের জমিন তার আলগা হয়ে আসে যেন!

    হজরত নিজামুদ্দিনের খানকাহ তে একদিন বসেছিল মেহফিল এ সামা। সেই আসরে ভালোবাসা ও ভাবাবেশে আমীর আর স্থির থাকতে পারেননি। উঠে নাচতে শুরু করলেন। নিজামের মানা না শুনে। অগত্যা নিজাম নির্দেশ দিলেন নাচতেই যদি ইচ্ছে হয়, তবে দুটি হাত আসমান পানে তাঁর দিকে তুলে নাচো, আর পায়ের পাতা দুটি কে বল যেন নিচের ধরণী কে দাপিয়ে দাপিয়ে অভিযোগ জানায়!

    এখানে, এই নদীর পার থেকে এখনো হালকা হালকা শোনা যায় শবনম বানুয়ের স্বর:
     খসরু দরিয়া প্রেম কা উল্টি ওয়া কি ধার।
    যো উতরা সো ডুব গেয়া যো ডুবা সো পার।।


    পরেরদিন খুব ভোরে হরিজন পল্লীর লোকজন গুলমোহরকে দেখতে পায়। খোঁজ খবর করে, ধারাধরি করে ওরাই পৌঁছে দেয় বাড়ি। গায়ে তার ধুম জ্বর, চোখ দুটি বন্ধ। সেই চোখ আর খোলেনি। কিন্তু মুখে অদ্ভুত এক প্রশান্তি! গালের বসন্তের গর্তগুলোও আর তেমন বুঝি চেয়ে নেই!

    আম্মি ক দিন রাতে ইনিয়ে বিনিয়ে কেঁদে যায়। কুকুর গুলোও সাথে সাথে সুর তোলে। দু চারজন দাবি করে তারা হুরি দেখেছে। কবরের উল্টো দিকের পাঁচিলে, মাথা থেকে বুক পর্যন্ত শুধু নাকি ভেসে ছিল। তবে কুয়াশায় আঁধারে দেখেছে, মানে মানে সরেও এসেছে তাড়াতাড়ি--- পাছে চোখে চোখ পড়ে যায়! তাই সঠিক বর্ণনাও করে উঠতে পারেনা। শুনে কেউ আমেন বলে কেউ দেওয়ান মাজারে শিরনি চড়ায়। উল্টো দিকের কালী মন্দিরেও ফুল বাতাসা নিয়ে যায় কেউ। তারপর সাধারণ ভাবেই হাওয়া জলে মিলিয়ে যায় সে আলোচনা।

     নতুন বছরে দিলদার নগরে এসে পৌছায় প্রথম ইলেকট্রিক ট্রেন। উদাসীন হাতঘড়িতে তার বাঁধা সময়। তাকে মান্য ধন্য করতে করতে একসময় দিলদার নগরও আসতে আসতে দৌড়োতে শুরু করে। 

    তবে সব্বাই দৌড়োতে পারে কি? পারলেও,  চায় কি দৌড়োতে? 
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ১৯ জুন ২০২৪ | ১৭৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ১৯ জুন ২০২৪ ২১:৪২533504
  • ছবি ছবি আর ছবি। সিনেমার রিলের মত গড়গড়িয়ে গড়িয়ে আসা কত কত পুরানো ছবি, একটু সিপিয়া একটু শ্যাওলাটে...  বুঁদ হয়ে দেখছি।
  • Kakali Bandyopadhyay | 223.223.150.147 | ২০ জুন ২০২৪ ০০:০৩533512
  • 'আলোকে মোর  চক্ষু দুটি' কে যে 'ছাপ তিলক' এর সাথে মেলানো যায় এতো কখনো ভাবিনি...
    মাজার.. কুন্দরানি হাইস্কুল.. ঊরুস পাক..
    শব্দগুলো কোন অতল থেকে ভেসে উঠলো যেন.. সবই  'চুপটি করে ঘাপটি মেরে' লুকিয়ে থাকে..
  • kk | 172.58.242.148 | ২০ জুন ২০২৪ ০৮:০২533525
  • অসম্ভব ভালো লাগছে এই সিরিজটা। ভালোবাসা, বিষাদ, যন্ত্রনা, স্বপ্ন, সবকিছুর মায়াবী বুনোট।
  • Suvasri Roy | ২৩ জুন ২০২৪ ১৭:১৩533644
  • লেখিকার প্রিয় শহর নিয়ে অসাধারণ লেখা। গভীর, মায়াবী ও ভালোবাসায় ভরা! 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন