এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • shyamal | 24.119.209.168 | ০৮ জুন ২০০৭ ১০:২৪390209
  • কল্লোলের লেখা পড়ে মনে হল আমিই বা শালা কম যাই নাকি? যেহেতু ওর সমসাময়িক তাই আমার একটা পাতি বুর্জোয়া perspective দেব ভাবলাম। তবে লেখা হবে অনেক ছোট আর low quality ওর তুলনায়। যদি আপনারা নেহাত না পড়তে চান তো বলবেন, বন্ধ করে দেব।

    ১৯৬৬

    শাস্ত্রী জি মারা গেলেন। বাড়িতে প্রায় শোকের ছায়া।একজন সত এবং efficient প্রধানমন্ত্রি চলে গেলেন। আমাদের বাড়ি এপলিটিকাল সাধারন মধ্যবিত্ত বাড়ি -- রাজনীতি বলতে শুধু নিয়ম করে ভোট দেওয়া। সিন্ডিকেট তখন powerful। মোরারজি, কামরাজ , নিজলিংগাপ্পা আরো কে কে ছিলেন -- সবারই বাসনা প্রধানমন্ত্রি হওয়ার। একজন হলে অন্যরা খাপ্পা হবেন। কাজেই consensus candidate নেহরুর মেয়ে । বাবা বলল, সিন্ডিকেট ই চালাবে, ইন্দিরা হবে পুতুল।
    প্রধানমন্ত্রি হওয়ার পর ইন্দিরা ফ্রান্সে গিয়ে ফরাসীতে বক্তৃতা দিলেন। ফরাসীরা নাকি দারুন খুশি। কংগ্রেসের ভেতরে কি হচ্ছিল জানিনা।বোঝার বয়েসও হয়নি।
    এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে কাঁকর মেশানো চাল পাওয়া যাচ্ছে। প্রফুল্ল সেন নিজে সেই চালের ভাত খেয়ে কাঁকর চিবিয়ে বললেন, এই তো বেশ খাওয়া যাচ্ছে। লোকজন খেপে গেল। যদ্দুর মনে পড়ে , আমেরিকা থেকে পি এল ৪৮০ স্কীমে সাদাটে গম আসতো রেশন দোকানে। বাবা বাজার করত কিন্তু রেশন তুলতাম আমি।
    ১৯৬৭ তে প্রফুল্ল সেন হারলেন। একদিন বাবা অফিস থেকে আসেই না। মা চিন্তা করছে। শেষে বাবার পিওন এসে খবর দিল, বাবা আর আরো কয়েকজন সিনিয়র অফিসারকে ইউনিয়নের লোকরা ঘেরাও করেছে। ইউনিয়ন বোধহয় ছিল আর এস পির।
    রাত তিনটেয় বাবা ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরল। বুঝলাম পাজি লোকেরা ঘেরাও করে।

    ১৯৬৯

    আমরা কোলকাতায় চলে এলাম। বাবা চাকরির জন্য এলনা।
    কংগ্রেস ভেঙ্গে গেল। আদি আর নব। সেটা ইন্দিরার প্রথম deft political manouvre। সব কিছু মনে নেই। কিন্তু সেই প্রথম ইন্দিরা প্রমান করলেন তিনি কারো পুতুল নন। তার পরেই রাজন্য ভাতা বিলোপ আর রাতারাতি ব্যাংক জাতীয়করন। মা , দিদিমা ইন্দিরাজি বলতে পাগল। দেখেছ , একটা মেয়ে বুড়ো গুলোকে কেমন টাইট দিল। ইন্দিরাজির পপুলারিটির পেছনে মহিলা ভোটারদের বিরাট হাত ছিল।
    সে সময়ে বোধহয় অজয় মুখার্জি মুখ্যমন্ত্রী আর জ্যোতি বাবু উপ। কোলকাতায় আসার পরই দেখলাম দেয়ালে নকশাল আর বোধহয় আমরা বাঙালীর সব লিখন। বাঙালী জাগো।আর তার পাশেই পার্লামেন্ট শুয়োরের খোঁয়াড় -- মাও। ধরে নিলাম দুটো ই হয়তো similar group। কিছুদিন যেতে না যেতেই সে বছরই বুঝলাম , নকশালরা কি বস্তু।
  • LCM | 24.4.0.122 | ০৮ জুন ২০০৭ ১০:৫৮390240
  • ওদিকে কল্লোল, এদিকে শ্যামল। জমে গেছে একেবারে।
  • S | 61.95.167.91 | ০৮ জুন ২০০৭ ১১:১২390251
  • পুরো ক্ষীর। চলুক ...
  • Riju | 172.18.18.170 | ০৮ জুন ২০০৭ ১২:৩৪390262
  • অন্যরকম স্বর ও শুনতে পাওয়া দরকার ছিলো।চলুক
  • kallol | 192.77.110.18 | ০৮ জুন ২০০৭ ১৩:৫৭390273
  • শ্যামল - এটা সত্যি দারুন হলো। একেবারে একটা নতুন দেখা। চালিয়ে যান ভাই। আমার লেখা অন্তত: একজনকে উস্কে দিতে পেরেছে ভেবে ভীষণ ভালো লাগছে। নিজেকে খুব সম্মানিত মনে হচ্ছে।
  • P | 163.244.62.123 | ০৮ জুন ২০০৭ ১৫:০৫390284
  • চলতে থাকুক এই অসাধারণ যুগলবন্দী !
  • Ishan | 71.239.32.103 | ০৮ জুন ২০০৭ ২০:৪৬390295
  • এট্টু বড়ো করে হোক। আমার সন্দেহ হচ্ছে শর্টে মারার চেষ্টা চলছে :-)
  • dd | 202.122.20.242 | ০৮ জুন ২০০৭ ২১:২২390305
  • গু চ'র আকাশ বাতাস ভরে যাচ্ছে ৫০ প্লাসে।
    একদিন আমরা করবো জয় ......
  • Blank | 65.82.130.9 | ০৮ জুন ২০০৭ ২৩:১৩390316
  • এই চাপের মধ্যে আবার যদি কোনোদিন দেখি গুচ খুলতে পারছি না অফিস থেকে, সেদিন একটা ভয়ংকর কিছু করে দেবো
  • ranjan roy | 122.168.71.83 | ০৯ জুন ২০০৭ ০১:২২390210
  • কল্লোল-শ্যামল এবং পঞ্চাশ প্লাস
    ----------------------------------------
    মনে ছবি আসে। ষাটের শেষ। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর চালের দাম, কেরোসিনের দাম বাড়তে লাগলো। বিরোধীনেতার ভারতরক্ষা আইনে জেলে বন্দী। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের প্রবাদ প্রতিম নায়ক গণেশ ঘোষ এবং আন্দামান ফেরৎ নীরব কর্মী সতীশ পাকড়াশী underground থেকে গড়ে তুলছেন খাদ্য আন্দোলন। স্বরুপনগরে ক্লাস ফাইভের ছাত্র বিধবামায়ের একমাত্র ছেলে নুরুল ইসলাম পুলিশের গুলিতে মারা গেল। উৎপল দত্তের এল টি জি 'র অভিনেতা শান্তনু ঘোষ গান লিখলেন " ও নুরুলের মা", গাইলেন অজিত পান্ডে।
    জ্বলে উঠলো বাদুড়িয়া, কোন্নগর কৃষ্ণনগর। খাদ্য আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লো।
    আমি নাকতলা হাইস্কুলে এগারো ক্লাসের ছাত্র। একদিন বেশকিছু অন্যস্কুলের ছাত্রদের নিয়ে মিছিল করে বি ডি ও অফিস গেলাম। ভদ্রলোক চারজনকে ভেতরে আসতে দিলেন। আমদের দাবি কি জিজ্ঞেস করলেন। অমি বললাম-" রাজবন্দীদের মুক্তি চাই, সস্তাদরে খাদ্য চাই।" -" বেশ লিখে দাও, ব্যাপারটা যদি এতই সহজ হত'"। আমি লিখছি - এমন সময় জানলা দিয়ে উড়ে এল একটা টোম্যাটো- সোজা ওনার টেবিলে।
    ভদ্রলোক বিরক্ত হয়ে যাতা বললেন। আমার পেটের ভেতরে হাসি গুড়গুড় করছিলো।
    তারপর এলো রাজবন্দিদের মুক্তি। সদ্যছাড়া পাওয়া উৎপল দত্ত কল্লোল নাটকের "খাইবার" জাহাজের গোটা সেটটা ময়দানে সাজালেন। তার ওপরে বসে জ্যোতিবাবু শুদ্ধু সব ছাড়াপাওয়া নেতারা বিজয়উৎসব করলেন।
    তারপর এলো ৬৭'র নির্বাচন।
    স্বাধীনতার পর সর্বপ্রথম এগারোটিরাজ্যে অ-কংগ্রেসি সরকার হলো। জোটরাজনীতির ও সেই শুরু।
    মনে পড়ে সামনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা , আর আমি কোচিং পালিয়ে বিজয়গড়ের মঠে দেখছি-- উৎপল দত্তের
    নাটক,"দিনবদলের পালা"।
    রঞ্জন রায়।
  • shyamal | 24.119.209.168 | ০৯ জুন ২০০৭ ০৪:০৫390221
  • একটু পিছিয়ে যাই ১৯৬১। সত্যজিতের "সন্দেশ" পত্রিকার গ্রাহক করে দিল বাবা। তখনো স্কুলে ভর্তি হইনি। সন্দেশ আসা মাত্র গোগ্রাসে গিলতাম। কি সব অসাধারন লেখা! পনেরো বছর গ্রাহক ছিলাম। co editor ছিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু লেখা বেরোত প্রধানত: সত্যজিতের পরিবারের লোকেদের। যেমন লীলা মজুমদার, পুন্যলতা চক্রবর্তী, নলিনী দাশ, সত্যজিতের কাকাদের। তাছাড়া, উপেন্দ্রকিশোরের লেখা তো ছিলই। সত্যজিত কভার থেকে শুরু করে সব ছবি নিজে আঁকতেন। সেখানেই আমার শংকু, ফেলুদা এদের সঙ্গে পরিচয়।
    ১৯৬৯ এ রিলিজ করল গুগাবাবা। দাদার সঙ্গে বিজলী তে গিয়েছি advance কাটতে। দেখি একটা সাদা গাড়ী এসে দাঁড়াল। নামলেন সত্যজিত।
    ১৯৬৯ এ আসার কথা অস্ট্রেলীয়ার ভারতে। তখন ক্লাশ নাইন। টিকিট কোথায় পাব ? এত ডিমান্ড যে হোমরা চোমরাদের সঙ্গে চেনা না থাকলে পাওয়া অসম্ভব। এদিকে বিল লরি, সিম্পসন,ম্যাকেন্‌জী, কনোলি সব আসছে ইডেনে । শেষে জানা গেল যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের জন্য কিছু সীজন টিকিট লটারী হবে।দাদা তখন যাদবপুরে পড়ে। লটারী কাটল আর টিকিট পেল। আমাদের কি আনন্দ! পাঁচদিনের টেস্ট -- একদিন পড়ল আমার ভাগ্যে। সে যে কী আনন্দ হয়েছিল! পতৌদি, বেদি, প্রসন্ন এদের জ্যান্ত দেখছি।
  • shyamal | 24.119.209.168 | ০৯ জুন ২০০৭ ০৬:০৮390232
  • ঐ সময়ে আমাদের বাড়ি তৈরী না হওয়া পর্যন্ত মামাবাড়ি ছিলাম। সেটা দক্ষিণ কলকাতার মধ্যবিত্ত পাড়ায়। সেটা ছিল সিপি এমের ঘাঁটি।এক কিমি দূরে একটা কলোনী -- পুরো নকশাল। আবার রেল লাইনের ওপারে নতুন জনবসতি গড়ে উঠছে -- সেটাও নকশাল এরিয়া। তখন নকশাল -- সিপি এমে মারপিট রোজকার ব্যাপার।পেটো, পাইপগান। শুরু হত রাত দশটায়। কিন্তু আমাদের বাড়ির কাছে নয়। একটু দূরে। কিন্তু রোজ শুতে যাবার সময়ে পেটো আর গুলির আওয়াজে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। নকশাল ছাত্ররা আর সিপিএম হল ফ্যাক্টরীর লেবারাররা।
    মামাবাড়িতে সোনার খনি পেয়ে গেলাম। তখন গল্পের বই পড়ার প্রচন্ড নেশা। দেখি তাক ভর্তি শরতচন্দ্র, বংকিম, রবীন্দ্রনাথ, কালিদাস। লুকিয়ে লুকিয়ে ( বড়দের বই তো ) পড়লাম দত্তা , পরিনীতা,পল্লীসমাজ, আনন্দমঠ, গোরা, গল্পগুচ্ছ। তখন প্রেমে পড়ার বয়স।পড়ে গেলাম পরিনীতার তেরো বছরের ললিতার প্রেমে। আর বাংলায় কালিদাস ! কুমারসম্ভব, মেঘদূত, অভিগ্যান শকুন্তলম। আদিরসের ছড়াছড়ি। শকুন্তলা বলছে, সখি, দুষ্মন্তকে দেখে আমার কি হল। কপালে ঘাম জমছে, স্তনবৃন্ত কঠিন হচ্ছে, যেন জ্বর আসছে ! বুঝতেই পারছেন সব বুর্জোয়া বই। নকশালরা জানলে পুড়িয়ে দিত।
    নকশালরা তখন বিদ্যাসাগরের মুর্তি ভাঙছে, স্কুলে লাইব্রেরী পোড়াচ্ছে, ট্রাফিক পুলিশকে খুন করছে , গ্রামে জোতদার খুন করছে । রোজকার কাগজে সেই একই রিপোর্ট। বহু স্কুল, কলেজে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। কি না এই বুর্জোয়া শিক্ষাব্যবস্থাকে ভাঙতে হবে। বিপ্লব এলো আর কি!
    সামাজিক ভাবে নকশালরা ছিল ultra conservative। পরের যুগে খালিস্তানী বা তালিবানদের মত। এই তিন দলই ধর্মভিত্তিক দল।তাই এতো মিল। তখন চোঙা প্যান্টের চল হয়েছে। শোনা গেল, নকশালরা নাকি যারা ঐ প্যান্ট পড়ছে তাদের প্যান্টের তলার দিকটা কেটে দিচ্ছে। কে জানে সত্যি না গুজব।
    আমাদের পাড়ার স্কুল যে হেতু সিপিএম zone এ তাই বেচে গিয়েছিল।বিশেষ কোন গন্ডগোল হয়নি। কিন্তু ১৯৬৯ এই এক টা ঘটনা ঘটল।
  • shyamal | 24.119.209.168 | ০৯ জুন ২০০৭ ১০:৫৫390233
  • তখনও লোড শেডিংএর জমানা শুরু হয়নি।রাত নটায় খেতে বসেছি বাড়ির সবাই।ফ্যান চলছে , কিন্তু তাও গরমের জন্য রান্নাঘরের পাশের দরজাটা হাট করে খোলা। সেখান দিয়ে কিছু দূরে বড় রাস্তা দেখা যায়।
    হঠাত বড় রাস্তা থেকে পর পর ছয় সাতটা পেটোর আওয়াজ।দেখলাম অন্ধকারে তিন চার জন আমাদের বাড়ির দিকে ছুটে আসছে। আর কিছু দেখার দরকার নেই।দরজা, জানালা সব বন্ধ কর।কারুর মুখে কথা নেই। কে জানে একটা পেটো বাড়িতে এসে পড়তে পারত।কজন মরেছে কে জানে।
    পর দিন আবার বাজার বসেছে -- সব কিছু যেন নর্মাল।কিন্তু আগের রাতের ঘটনা জানা গেল।আমাদের পাড়ায় যে মেইন সিপিএম গুন্ডা ( বা নেতা) তাকে মারতে নক্সালরা এসেছিল রেল লাইনের ওপার থেকে।পেটো চার্জ করে পালিয়ে গেছে।ওদের খবর ছিল যে এই গুন্ডা সন্ধেবেলা চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়। ঘটনাচক্রে সেদিন ছিলনা। মরেছে একজন যে ওখানে আড্ডা দিচ্ছিল।বেচারা সিপিএমের সমর্থক বটে কিন্তু active cadre নয়। ২৪ -২৫ বছর বয়েস। বম্বেতে চাকরী শুরু করেছিল।ছুটিতে কলকাতায় এসেছিল। ফেরা আর হল না। সেই আমার একমাত্র চোখের সামনে কাউকে খুন হতে দেখা। এরকম কত নিরপরাধ যে crossfire এ মরেছে তার ইয়ত্তা নেই।
    কয়েকদিনের মধ্যেই সিপিএম ঐ মোড়ে একটা শহীদ বেদি বানিয়ে ফেলল। কমরেড ,,,,, লাল সেলাম।
    একটাই সান্তনা যে মানুদার আমলে পুলিশ দুজনকেই মারে -- যে গুন্ডাকে মারতে নকসালরা এসেছিল, আর ওপার থেকে যে action টা প্ল্যান করেছিল। আমার এক বন্ধু বলে, না রে ও তাত্বিক নেতা ছিল। আমার কথা হল, যে মারার অর্ডারটা তো ও ই দিয়েছিল।
  • dd | 202.122.20.242 | ০৯ জুন ২০০৭ ১৭:৩৪390234
  • আর সি আই এ ছিলো। আমরা সব সময়েই শুনতাম অমুক আর তমুক হচ্ছে সি আই এর চর।

    যেমন ৬৯-৭০ নাগাদ মনুমেন্টের নীচে শনিবারের দুপুরে স্বত:স্ফুর্ত্ত ভাবে গজিয়ে উঠলো মুক্তমেলা। কোনো অ্যাজেন্ডা কোনো সেট প্রোগ্রম নেই। যে যার মতন কবিতা গান নাটক করছেন। খোলা ময়দানে। পৃষ্ঠপোষক ঘোষিত কেউ নেই।

    এর মডেল ছিলো উডস্টক। অতএব আমরা (আমিও) নিশ্চিত ছিলাম আমেরিকান সংস্কৃতি বুঝি না বুঝি না করে চাপিয়ে দেওয়ার এ এক সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত। কালো হাত ইত্যাদি .....

    যুযুধান দুই পক্ষ। দর্পনে ছাপা হচ্ছে সহাস্য তরুন তরুনীর ছবি। মুক্তমেলায় দর্শক বা অংশগ্রহনকারী। ক্যাপশন "এটা কি সংস্কৃতি না বেলেল্লাপনা?" অন্য পক্ষে আনন্দবাজার মুক্তমেলার সমর্থনে।

    কবি তুষার রায় তাৎক্ষনিক কবিতা আউড়াচ্চেন "পুলিশ / আমায় দেখে পাগড়ীটা তুই তুলিস "। সেটি নেশ বিখ্যাত হয়েছিলো।

    অবধারিত পেটো পরলো। মুক্তমেলার অপসংস্কৃতির "কদাচারের" বিরুদ্ধে।

    কিন্তু এ সব্র খুব দরকার পরেনি। এমনি স্বাভাবিক মৃত্যুই হলো মুক্তমেলার - অল্পদিন পরেই।
  • shyamal | 24.119.209.168 | ০৯ জুন ২০০৭ ১৮:৫৪390235
  • নকশালদের সম্বন্ধে অনেক কিছু শোনা যেত। কিছু সত্যি, কিছু হয়তো মিথ। নকশালরা ছিল আধুনিক ডন কিহোতে। হাওয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করা আর কি।যেমন আমরা শুনতাম যে কাউকে ধরতে পারলে , সে পুলিশের চরই হোক বা বদলা নেওয়ার জন্যই হোক -- তাকে খতম করায় একদম বাচ্চা ১২, ১৩ বছরের কমরেডদের দিয়ে। তার কারণ, ঐ বয়েসে যদি পুলিশের খাতায় খুনের অভিযোগে নাম উঠে যায় তবে সে আর পার্টি থেকে বেরোতে পারবেনা।
    কয়েক বছর আগে বুশ যখন মুশারফকে বলে , যারা আমার সঙ্গে নেই, তারা আমার শত্রু, তখন আমার মনে হল দেজাভু। এই কথা তো নকশালদের শেখানো হত। কোন মধ্যপন্থা নেই। যারা নকশাল নয় তারা সবাই নকশালদের শত্রু। কল্লোল আমার চেয়ে ভাল বলতে পারবেন এগুলো সত্যি না মিথ।
    পোস্টার পড়ত, চীনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান । বন্দুকের নলই ক্ষমতার উতস।
    ১৯৭০ এ একদিন দাদা কলেজ থেকে ফিরে বলল, আজ ক্লাস হয়নি। সকাল থেকে নকশাল ছাত্রদের সাথে লড়াই চলেছে বোধ হয় জয় ইনজিনিয়ারিং এর সিপিএম শ্রমিকদের সাথে।দাদারা ইলেকট্রিকাল ইনজিনিয়ারিং বিল্ডিংএর ছাদ থেকে লড়াই দেখছিল। বিকেলে বোধ হয় পুলিশ এসেছিল। যদি সারাই না হয়ে থাকে তবে আজও দেখা যাবে EE Building এর দেয়ালে বুলেটের গর্ত। অন্তত: আমরা যখন পড়েছি তখনও ছিল।
    আনোয়ার শা রোডে যাদবপুরের মেইন হোস্টেল ছিল নকশালদের ঘাঁটি।বহু পেটো আর বন্দুক, গুলি জড়ো করা হয়েছিল সেই হোস্টেলে। তার কারন ১৯৭০এ একদিন ভোরে পুলিশ হানা দেয় সেখানে। কিন্তু সাত আট ঘন্টা ধরে ছাত্রদের সঙ্গে চলে রীতিমত যুদ্ধ। এদিকে পুলিশ গুলি চালাচ্ছে তো ওদিক থেকে আসছে পেটো আর গুলি। শেষে ছাত্ররা surrender করে। কিন্তু হতাহত কেউ হয়নি দু পক্ষে।
    ১৯৭০এ মামাবাড়ির পাড়াতেই আমাদের বাড়ি তৈরী হল। মনে আছে একদিন কেরোসিন তেল কিনতে গেছি বাজারে। যাওয়ার সময়ে কিছু ছিলনা। ফেরার সময়ে দেখি রাস্তার দুধারে সিআরপি দাঁড়িয়ে আছে একদম রেডি হয়ে। প্রায় চল্লিশ জন। প্রত্যেকের হাতে স্টেন গান একদম তাক করা। রাস্তায় একটাও লোক নেই। কোনোক্রমে কাঁপতে কাঁপতে সিআরপির মাঝখান দিয়ে কেরোসিনের ক্যান হাতে বাড়ি ফিরলাম। নেহাত তখনো লম্বা হইনি বলে ওদের সন্দেহের চোখে পড়িনি।
  • dd | 202.122.20.242 | ০৯ জুন ২০০৭ ২০:১৬390236
  • ঐ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের হস্টেলের মতন ঘটনা তখন কলকাতার সব হস্টেলেই। অদ্ভুত কান্ড। এতোদিন পরে ফিরে ভাবতে গেলে অবাক লাগে।

    সবাই জানতো যে পুলিশ/সি আর পি একদিন এসে হস্টেল দখল করবে, পুলিশের ক্ষমতা নিয়ে কারুর কোনো ইলিউশন থাকর কথা নয়, কিন্তু ঐ এক অদ্ভুত হ্যালুসিনেসনে ভুগছিলো নকশাল ছাত্ররা। ভাবতো হস্টেল মানে মুক্তাঞ্চল। চিরকালের জন্য। প্রচুর বোমা কিছু পাইপগান খাটের নীচে রেখে আস্বস্ত থাকতো। হস্টেল থেকে কলেজ - বিপ্লবের এই ছিলো সীমানা।

    এক এক করে সব হস্টেল থেকেই পুলিশ ছেলেদের উৎখাত/গ্রেফতার করে। প্রচন্ড মার। জেল। মিসা।

    কিন্তু প্রায় ৭১ পর্য্যন্ত ঐ রকমের "মুক্তাঞ্চল ম্যানিয়া" বজায় ছিলো। কাশীপুর বরানগরের পর আর কিছু বাকী রইলো না। আরবান গেরিলার ওটাই শেষ প্রহর।
  • dd | 202.122.20.242 | ০৯ জুন ২০০৭ ২০:২৮390237
  • না। সি আই এ না হোক। কিন্তু কিছু আশ্চর্য্য জনক ঘটনা ঘটতো তখন। যেমন "আমরা বাঙালী"। সারা প্রদেশ জুড়ে রাতারাতি দেওয়াল লিখন। প্রতিটি বিধানসভার আসনে প্রার্থী। ইউনিফর্ম পরিয়ে লাঠি হাতে B.N.V.P বাহিনির কুচকাওয়াজ। কে দিতো এতো টাকা ?

    ঐ সত্তরের আন্দোলনের প্যারালালি এসব চলছিলো।

    আর শুরু হলো গুরুগিরি। নাম্বার ওয়ান সত্য সাঁই বাবা। তার বিভুতি টিভুতি ঐসব ৭০ থেকেই শুরু। তার সাথে প্রায় মরশুমী ব্যাঙের ছাতার মতন উঠে এলো আরো অজস্র গুরুজী,দাদাজী,বাবাজী। দুর্দান্ত সব অলৌকিক ক্ষমতা। বেশীর ভাগই ধোপে টেঁকে নি। বাল ব্রহ্মচারী নামে এক বারো বছরের বালক প্রচুর টাকা কামিয়েছিলো দেশে বিদেশে। জানতে ইচ্ছা করে এরা এখন কোথায়।

    হঠাৎ করে ইলাস্ট্রেটেড উইকলীতে (খুশবন্ত সিং)বেশ সাহসী ছবিটবি ছাপা হতে লাগলো। দেখাদেখি আরো অনেক ম্যাগাজিনে। প্রায় রাতারাতি বাঙলা সচিত্র "অ্যাডাল্ট ম্যাগাজিন" ফুটপাথ ভরে গেলো। হলদে চটি পন্ডি নয়। লিগ্যালি পাবলিশড। সব থেকে নাম করা ম্যাগের নাম ছিলো জীবন যৌবন।

    একটা বেশ অর্কেস্ট্রেড এফর্ট। এখনো তাই মনে হয়।
  • dd | 202.122.20.242 | ০৯ জুন ২০০৭ ২০:৪২390238
  • হয়তো নেহাৎই coincidence। কিন্তু ৭০ থেকেই আমেরিকার দরজা খুলে গেলো।

    প্রচুর ছেলে (বেশীর ভাগই ইনজিনীয়ার)আমেরিকা পাড়ি দিলেন। টুকটাক খবর পাছি। অমুক চলে গেছে। তমুক যাবে এক মাস পরে।

    শংকর,সুনীল গাংগুলি ও আরো অনেক সাহিত্যিক আমেরিকান অনুদানে আমেরিকা ঘুড়ে এলেন। পত্র পত্রিকায় পরপর ছাপা হতে লাগলো সেই স্বর্গ রাজ্যের বিবরন।

    উঁহু। গন্ধটা বেশ সন্দেহজনক।
  • shyamal | 24.119.209.168 | ০৯ জুন ২০০৭ ২১:২৫390239
  • এই সন্দেহ অমুলক। তার কারন ১৯৬৫ সালে আমেরিকায় পাশ হয় সিভিল রাইটস বিল।এতে প্রথম কালোদের ভোট দেওয়ার ক্ষমতা এলো। এর পরপরই এলো non-european দের green card এর রাইট। যতদূর জানি, ১৯৬৮র আগে ককেশিয়ান ছাড়া কাউকে গ্রীন কার্ড দেওয়া হতনা। রেসিজমের চুড়ান্ত। সেজন্য ভারতীয়দের যাওয়ার প্রশ্নই ছিলনা। যারা গেছে, পড়তে গেছে। কিন্তু চাকরী করায় বাধা ছিল।
    ১৯৬৮তে সেটা ঘুচে গেল । সেজন্য আপনি অত লোককে আমেরিকা যেতে দেখেছেন। সুনীল গিয়েছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ আইওয়াতে কবিতার একটা ওয়ার্কশপে। মার্কিন সরকারের টাকায় নয়। ইউনিভার্সিটির টাকায়। তখনকার দিনে বেশী লোক আমেরিকার বৈভব সম্বন্ধে জানতনা। ছিলনা টিভি, ইন্টারনেট।সেজন্য মনে আছে দাদার এক বন্ধু ১৯৭০এ পাশ করে সরাসরি গ্রীন কার্ডের apply করল আর মাস ছয়েক বাদে পেয়ে গেল। এটা ছিল ১৯৭৫ অবধি। তার পরে দাদাও গেলো u.s. consulate এ। ফর্ম নিয়ে এলো। তারপর বলল না: অনেক ঝামেলা। বলে আর apply করলনা।
  • Arijit | 82.39.109.5 | ০৯ জুন ২০০৭ ২১:৩২390241
  • CIA-র সন্দেহটা খুব অমূলক নাও হতে পারে। ড্যানিয়েল প্যাট্রিক ময়নিহানের আত্মজীবনীতে লেখাই আছে কেরালার প্রথম যুক্তফ্রন্ট সরকারকে ভাঙতে আম্রিকা ইনভেস্ট করেছিলো - সাতান্ন সালে। বইটা অবশ্য পড়িনি, শুনেছি - খবরেই বেরিয়েছিলো।
  • Arijit | 82.39.109.5 | ০৯ জুন ২০০৭ ২১:৩৭390242
  • এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে অ্যাপার্থেড বিরোধী লড়াইয়ের সময় আমেরিকা ডাইরেক্টলি-ইনডাইরেক্টলি বিরোধী গোষ্ঠী (যেমন অ্যাঙ্গোলায় বামপন্থী MPLA-কে আটকাতে ধর্মীয় FNLA আর UNITA)-কে অর্থ+অস্ত্র সাহায্য, নামিবিয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাহায্য করা - এগুলো ওয়েল ডকুমেন্টেড। কাজেই ভারতেও এই ঘটনা ঘটে থাকতেই পারে।
  • shyamal | 24.119.209.168 | ০৯ জুন ২০০৭ ২২:০১390243
  • তাহলে কি ভারতের ব্যাপারও ওয়েল ডকুমেন্টেড হতনা ? আমি তো এত বছরেও পি বি এসে কিছু দেখলামনা। আমার মনে হয় সে যুগে আমেরিকার প্রধান concern ছিল যে কোন দেশ কমিউনিস্ট না হয়ে যায়। কারণ cold war এর জমানায় দুটো ব্লক ছিল। দুটো ই চাইত নিজেদের পাল্লা ভারি রাখতে। যেহেতু ভারত দেশ হিসাবে কোনদিনই চীন বা সোভিয়েত হতে চায় নি সেজন্য সেদিক দিয়ে আমেরিকার নজর ভারতের ওপর কম ছিল মনে হয়।
    কিন্তু ভারতীয় শিক্ষিত মহলে আজও বোধহয় ধারনা আছে যে আমেরিকা নজর রাখছে। আমাকে একজন বলেছিলেন ২০০৩ এ , এই তো ইরাকের পরে ভারতের পালা। একে বলে প্যারানোয়া।
  • LCM | 24.4.0.122 | ০৯ জুন ২০০৭ ২২:১৫390244
  • "পেছন থেকে আমেরিকা/সিআইএ কলকাঠি নাড়ছে' - এসব শুনতে শুনতে বড় হয়ে ওঠা.... পেছনটা যে কোন দিকে সেটা বোঝা গেল না....
    এখন অবশ্য সামনে পিছনে কিছু নেই...

  • shyamal | 24.119.209.168 | ০৯ জুন ২০০৭ ২২:২৪390245
  • আমার মনে হয় বুশ একটি অপদার্থ। কিন্তু একটা ভাল কাজ করেছে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের স্কোপ বাড়িয়ে। কুড়ি বছর আগে ভারত আমেরিকার রেডার স্ক্রিনেই ছিলনা। এখন একেবারে front and center। আমি বলব ভারত সমীহ আদায় করে নিয়েছে অর্থনৈতিক উন্নতি করে।
  • dd | 202.122.20.242 | ০৯ জুন ২০০৭ ২২:২৮390246
  • lcm
    perception is reality। আমরা যে সময়ে বড় হয়েছি সেই সময়ে সি আই এ থাকতো আমাদের ভুবন জুড়ে। সত্যি কি অমন ছিলো? জানি না। কিন্তু ছোটোবেলাকার রাক্ষস খোক্ষস পরীদের দুনিয়া যেমন অকাট্য সত্য ,আমাদের কৈশোর ও সি আই এর বিশ্বব্যাপী চক্রান্তে ভরপুর ছিলো।

    আমি এই থ্রেডে যা লিখছি সেটা ইতিহাস নয়। সেই সময়ের বেড়ে ওঠার বর্ননা। যারা বামপন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন তারা সর্বব্যাপী সি আই এ তেও বিশ্বাস রাখতেন। আমিও।

  • Arijit | 82.39.109.5 | ১০ জুন ২০০৭ ০৩:১১390247
  • নজর হয়তো রাখছে - রাখছে না সেটা কি জোর দিয়ে বলা যায়? ১০০% নিশ্চিত হয়ে?

    গপ্পের কথা বলি - ফরসাইথের "ডেভিলস অল্টারনেটিভ' - শুরুটা মনে করুন - আম্রিকান প্রেসিডেন্ট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছেন রাশান চাষী গমের ক্ষেত থেকে বেরিয়ে গাছের ধারে ছোট বাইরে করছে:-)) এটা গপ্পোই, তবে সত্যিটাই বা আমরা কতদূর জানি?
  • tan | 131.95.120.60 | ১০ জুন ২০০৭ ০৩:১৮390248
  • ইন্দো ও দেখতে পায়! মানে আমাদের ইন্দো না,উপরের ইন্দো!
    মুনির দাড়িতে কতগুলো পোকা,একটা পোকা তুরতুর করে মুনির নাকের দিকে যাচ্ছে,সব দেখতে পেতো! দেখেশুনেই তো অপ্সরা পাঠাতো!:-)))
  • shyamal | 24.119.209.168 | ১০ জুন ২০০৭ ০৩:৩০390249
  • ১৯৭১ । শেখ মুজিবর রহমান পাকিস্তানের ভোটে সবচেয়ে বেশি সীট পেলেন। তার কারন, পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা পশ্চিমের চেয়ে বেশি। মুজিব বললেন , আমি সরকার গড়ব। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বললেন, না। ব্যাস, লেগে গেল ঝগড়া।পশ্চিমে বেশি সীট পেয়েছেন ভুট্টো। মুজিব বক্তৃতা দিলেন, আমাগো দাবায়ে রাখতে পারবানা। তখন আমরা পশ্চিমবঙ্গবাসীরা নজর রাখছি কি হচ্ছে তার ওপর। ২৫ মার্চ, বাঙ্গলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষনা করল। আমরা তো ecstatic। এবারে সবকিছু স্বাভাবিক হবে -- আমরা দেশের বাড়ি দেখতে পাবো। ওর দুচার দিন আগেই ইয়হিয়া বহু সৈন্য পাঠিয়েছে পূবে। মুজিব গ্রেপ্তার। কেউ জানেনা বেঁচে আছেন না মৃত।
    আমরা খবর পাচ্ছি স্বাধীন বাঙলাদেশ বেতার কেন্দ্র থেকে। সেখানে চলছে দেশাত্মবোধক গান। বাঙলাদেশ , আমার বাঙলাদেশ ।মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি। লোকে বলছে এই রেডিও স্টেশন বনগাঁ সাইডে ভারত তৈরী করেছে। কে জানে। কিন্তু অংশুমান রায়ের গলায় গান দারুন লাগত।
    এর পর খবর আসতে শুরু করল। খান সেনারা বুদ্ধিজীবিদের ধরে খুন করছে, মেয়েদের রেপ করছে, খুন করছে। প্রতিদিন দেবদুলালের একই খবর। দলে দলে রেফিউজি ভারতে ঢুকছে। ভারত সরকার কিছু রেফিউজি ক্যাম্প করল। কিন্তু সেসব উপচে পড়ছে। মুক্তিসেনারা সীমিত সম্বল নিয়ে লড়াই দিয়ে যাচ্ছে। নিশ্চয় ভারত সরকার মুক্তিফৌজ গড়তে আর চালাতে সাহায্য করেছিল। কারন ভারতের পক্ষে বিরাট লাভ। পুর্বে বন্ধু রাষ্ট্র পেলে সেখানে বর্ডারে সেনা deploy করতে হবে না। ভারত বাংলাদেশের সরকারকে স্বীকৃতি দিল। ইন্দিরা সারা বিশ্বে আবেদন করছেন বাংলাদেশ প্রব্লেম সলভ করার জন্য। কিন্তু পৃথিবী নীরব। ইন্দিরা আমেরিকায় গেলেন জুন কি জুলাইয়ে। নিক্সনকে বোঝালেন অবস্থা। কিন্তু নিক্সন সেই টপিকই তুললেন না আলোচনায়।ইন্দিরা খালি হাতে ফিরে এলেন। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা ভীষন। এক কোটি রেফিউজি। ইন্দিরা গেলেন মস্কোয়।আগস্টে বোধ হয় ভারত - সোভিয়েত ২০ বছরের চুক্তি হল। সোভিয়েতরা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিল। লড়াই তখনও চলছে।

  • tan | 131.95.120.60 | ১০ জুন ২০০৭ ০৩:৪৪390250
  • শ্যামল,
    চালিয়ে যান। দারুণ হচ্ছে। পুঙ্খানুপুঙ্খ লিখুন।

  • shyamal | 24.119.209.168 | ১০ জুন ২০০৭ ০৪:১১390252
  • পুজোয় শচীনদেব গাইলেন, টাক্‌ডুম, টাক্‌ডুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল। কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছিল না। মুক্তি ফৌজের ক্ষমতা সীমিত। কিন্তু apparently ভুলটা করল পাকিস্তান।
    ৩ ডিসেম্বর। বিকেলে ব্রিগেডে ইন্দিরার সভা। আমরা রেডিওতে শুনছি। তার পর সন্ধে ছটার নিউজ। দিল্লি থেকে। বাবা রোজই শুনত। কিন্তু এ দিন ঘোষক বলল, পাকিস্তান আজ আম্বালা সহ সাত আট টি military airfield এ বম্বিং করেছে। যুদ্ধ শুরু।
    পাকিস্তানের hare brained idea ছিল যে ভারতের airforce কে cripple করে দিতে পারলে জয় হবে। কিন্তু ভারতের একটিও প্লেন নষ্ট হয় নি। ভারতের intelligence advanced খবর পায় পাক অভিসন্ধির। সেজন্য পকিস্তান bomb করেছিল প্লেন নয়, ডিকয়। যুদ্ধ চলেছিল ১৩ দিন। পাকিস্তানের আদ্ধেক মিলিটারী তখন বাংলাদেশে। ভারতীয় সেনারা হু হু করে এগিয়ে গেলো পশ্চিম পাকিস্তানে। লাহোর প্রায় captured
    ৪ ডিসেম্বর মনে আছে মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল Gnat এয়ারপ্লেন।
    আর পূবে তো cakewalk। আজ রাজশাহি পড়ছে তো কাল চট্টগ্রাম। দিন সাতেকের মধ্যে ঢাকা বাদে সব বড় শহর মুক্ত। কিন্তু রেডিও পাকিস্তান ঢাকা তখনও বলে যাচ্ছে, পাকিস্তানী সেনারা ভারতে বম্বিং করছে।হাওড়া ব্রিজ আর বালি ব্রিজ ধ্বংস। কলকাতা cut off ইত্যাদি। শুনে আমরা হাসতে হাসতে খুন।

    দেখা গেল যুদ্ধ চললে পাকিস্তান wiped out হয়ে যাবে। নিক্সন এবার নড়ে চড়ে বসলেন।পাঠিয়ে দিলেন সেভেনথ ফ্লিট ভারত মহাসাগরে। ইন্দিরা বুঝছিলেন যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে। আমেরিকা বেশী সময় দেবে না। ১৬ তারিখ ঢাকা পড়ল।এখন সারা বাঙ্‌লাদেশ মুক্ত। বোধ হয় ৯০০০০ পাক সেনাকে POW করে নিয়ে আসা হল ভারতে। ভারত cease fire ঘোষনা করল।আর পশ্চিম পাকিস্তানে ভারত captured জমি ছেড়ে দিয়ে বর্ডরে ফিরে এলো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন