এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  সিনেমা

  • বাড়ি থেকে পালিয়ে কিম্বা তাড়িয়ে...

    pi
    সিনেমা | ২৩ এপ্রিল ২০১০ | ৩৪৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • byaang | 122.172.54.39 | ২৩ এপ্রিল ২০১০ ২৩:৪৬449600
  • উল্টো কেসটা কি সেটা না বললে অধর্ম হয় না কি?
  • Abhyu | 128.192.7.51 | ২৪ এপ্রিল ২০১০ ০৭:৪৬449601
  • হয়ই তো।

    মায়েরা একদিন বোস্টেল পরিদর্শনে গিয়েছিল। ছেলেরা বলল ওদের খুব খারাপ খাবার খেয়ে থাকতে হয় (কোনোদিন নরেন্দ্রপুরে পড়ে নি) - মা বলল - ঐ যে মাংস রান্না হচ্ছে? ওরা বলল সেটা লোক দেখানো। মাত্র তিন টুকরো মাংস রান্না হয়, সেটা ওদের হেড স্যার খেয়ে নেয়। ছেলেদের শুধু ঝোলের পেঁপে দেওয়া হয়।
  • Lama | 117.194.229.96 | ২৪ এপ্রিল ২০১০ ১১:৪৫449602
  • আমার টিমের একটা মেয়ে ভালো বাংলা জানে না, একদিন বলল, "আমি ছোটবেলায় একবার একা একা রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলাম। তখন এক ভদ্রলোক আমাকে বস্তায় ভরে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।'
  • Abhyu | 97.81.111.140 | ২৪ এপ্রিল ২০১০ ২১:১১449603
  • আচ্ছা এই ছেলেধরারা কি কখনো সত্যি ছিল?
  • suchetana | 122.172.59.79 | ২৫ এপ্রিল ২০১০ ০৭:৫৭449604
  • বোধ হয় না। তবে বাচ্চাদের বস্তাওয়ালা ছেলেধরার ভয় দেখানোর জন্য, এবং ভয়টা তাদের মনে গেঁথে যাওয়ার জন্য, প্রচুর গরীব মানুষকে গণপিটুনি খেতে হয়েছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মারা গেছে বলেও শুনেছি।
  • Lama | 117.194.225.23 | ২৭ এপ্রিল ২০১০ ২১:১২449605
  • আমাদের পাশের বাড়িতে রাজু বলে একটা ছেলে ছিল: প্রত্যেক বছর মাধ্যমিকে ফেল করে বাড়ি থেকে পালাত আর দিন তিনেক পর তাকে তার মাসীর বাড়ি থেকে ফিরিয়ে আনা হত। কেন জানি না, বছর বছর এরকম হওয়া সঙ্কেÄও বাড়ির লোকেরা প্রথম দুদিন মাসীর বাড়িটা বাদ দিয়ে আর সব সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে সময় নষ্ট করত।
  • M | 222.254.179.174 | ২৭ এপ্রিল ২০১০ ২১:২১449606
  • আমার ননদের ছেলে তখন পাঁচ বছরের ,খুব রাগ করে খেলনার ব্যাগ টানতে টানতে বাড়ী থেকে চলে যাচ্ছিলো, শেষে তার দাদাই গিয়ে নিয়ে আসে।
  • M | 222.254.179.174 | ২৭ এপ্রিল ২০১০ ২১:৩১449607
  • আমার প্রথম পালানোটা দুবছর বয়সে,ভাইয়ের অন্নপ্রাশনের দিনে।সবাই ভাইকে নিয়ে এত ব্যস্ত হচ্ছিলো যে দু:খু পেয়ে আমি টুকটুক করে হেঁটে পাড়ার শেষ প্রান্তে দিদু বুড়ীর বাড়ী গিয়ে পৌঁছেছিলাম।ছোটবেলা থেকেই আদর আর ভালোবাসা পাওয়া নিয়ে হিংসেময় দিনের শুরু করেছিলাম।
  • M | 222.254.179.174 | ২৭ এপ্রিল ২০১০ ২১:৩৩449608
  • তারপর ভাই তখন ও হাঁটতে শেখেনি,দুটো দাঁত বের করে হাসছে সবে,একদিন টেবিলে তুলে দুম করে ঠেলে দিলাম আর তারপর পালালাম।
  • rimi | 168.26.215.135 | ২৭ এপ্রিল ২০১০ ২৩:৩০449610
  • এই বিষয়ে আমারো গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেবার আছে।

    বাড়ী থেকে শেষবার পালিয়েছিলাম মাত্র দুইমাস আগে। রাগ করে নয় একেবারেই, বৈরাগ্যের বশে। শুক্কুরবারের রাতে মদ্যপানটা একটু বেশিই হয়েছিল সেদিন। রাত বারোটা সাড়ে বারোটা নাগাদ বেশ ভালো নেশা হল, আর মনের মধ্যে বেশ একটা ফুরফুরে বৈরাগ্য এল। বললাম, "আমি বেরিয়ে যাচ্ছি।" ওদিকে আকা তখন পরীক্ষার পড়া নিয়ে এমনি ব্যস্ত ছিল যে সম্ভবত শুনতেই পায় নি। আমিও হাওয়াই চটি পরে, গাড়ীর চাবি নিয়ে এবং ব্যাগ বা সেলফোন কিছুই না নিয়ে বেরিয়ে গেলাম।

    সেদিন আবার চমৎকার পূর্ণিমা ছিল, মনে করলাম আজই জাহান্নমে যাবার আদর্শ দিন। কিন্তু গাড়ী চালাতে গিয়েই টের পেলাম ব্যপারটা বিশেষ সুবিধার নয়। স্টিয়ারিংটা বেশ বেয়াড়াপনা করছে। মনে বৈরাগ্য এলেও প্রাণের ভয় কিছুমাত্র কমে নি। অতএব ফিরে এলাম। কিন্তু তখনো জাহান্নমে যাবার ইচ্ছে কমে নি। অতএব হাঁটা লাগালাম। কিন্তু কি দু:খের বিষয়, কিছুক্ষণ হাঁটার পরেই অ্যায়সা বমি পেতে লাগল যে কি বলব। কোনোমতে বাড়ি ফিরে দেখি, আকার মুখ রাগে তেলো হাঁড়ি। আকা রাগে ফেটে পড়ল। আর আমিও সোজা বিছানায় গিয়ে বমি করে নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। বাকি রাত আকা বিছানার চাদর বালিশ ইত্যাদি পরিষ্কার করেই কাটাল।
  • Sibu | 108.117.136.153 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ০৩:৫৪449611
  • আর সেই রাগে আকা পরদিন কঠিন কঠিন ধাঁধাঁ জিজ্ঞেস করতে লাগল :))।

    না: বাড়ি ছেড়ে মাঝে মাঝে না পালালে ঠিক ভাল লাগে না। আমার যখন পালাতে ইচ্ছে করে তখন আমি কম্প্যানির যত্ত সব অন্য অফিসের কাজ সেগুলো যেচে যেচে ঘাড়ে নেই।
  • Abhyu | 128.192.7.51 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ০৪:১৬449612
  • তার মানে শিবুদা তার বোনের কতা বিশ্বাস করেচে :)
  • Sibu | 108.117.136.153 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ০৪:২০449613
  • আরে রক্তের টান বলে কতা ;)।
  • byaang | 59.93.203.230 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ০৯:২৪449614
  • হ্যা হ্যা, রিমি।
  • byaang | 59.93.203.230 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৪:০৫449615
  • ভাটে দিল্লি-গুরগাঁও আর টইয়ে রিমির গপ্প পড়ে স্মৃতির অতলে প্রায় তলিয়ে যাওয়া এক মুক্তো কুড়িয়ে আনলাম।

    ২০০২এর প্রায় শেষ, সবে গুরগাঁওয়ে ডেরা বেঁধেছি। একদিন সন্ধ্যেবেলা পর্দার কাপড় কিনতে যাওয়া হল। দোকানের কাছকাছি গিয়ে তিনি ঘোষণা করলেন, তিনি তাঁর নতুন গাড়ি থেকে নামবেন না। গুরগাঁও সুবিধের জায়গা নয়, প্রচুর গাড়ি চুরি হয়, (সত্যি-মিথ্যে জানি না) তাই গাড়িকে সুরক্ষা দিতে তিনি গাড়ির ভিতরে বিরাজ করবেন।

    একা একাই বিরসবদনে কাপড় কিনলাম। আর ফেরার পথে দুজনে মিলে কেন একসাথে কাপড় পছন্দ করা গেল না এই নিয়ে আলোচনা এমন জায়গায় চলে গেল যে মাঝপথে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করলাম। আর সেই তিনিও আপদ গেছে, বাঁচা গেছে গোছের মুখ করে গাড়ি চালিয়ে চলে গেলেন। ডিএলএফ সিটি তখন ছিল প্রায় ধু ধু প্রান্তর, আর মধ্যে মধ্যে হঠাৎ করে দ্বীপের মত জেগে ওঠা হাইরাইজ হাউসিং কমপ্লেক্সগুলো। আমি দুমদুম করে হেঁটে চলেছি, আর চারিপাশ বীরপুরুষের কবিতার মত কোনোখানে জনমানব নাই। কিন্তু গুরগাঁওয়ের ঠান্ডাতেও মাথা ঠান্ডা হচ্ছে না। বেশ কিছুক্ষণ পর আরেকজনের টনক নড়লো, গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে এসে, মুখ বার করে বললেন "তুমি কি ফিরতে চাও?"।

    কোথায় বলবে "প্লিজ, ফিরে এস", না তার বদলে ঐ প্রশ্ন! চিড়বিড়িয়ে উঠে, হাতের কাছে আর কিছু না পেয়ে একটা আধলা ইঁট কুড়িয়ে, তাক করে বললাম, "আজ যদি তোর সাধের গাড়ির কাঁচ না গুঁড়িয়েছি!!"। (তখনও আমি জামা ছিঁড়তে, ল্যাপি ভাঙ্গতে শিখি নি)। তিনিও সাধাসাধি ভুলে, প্রাণভয়ে গাড়িতে স্পীড তুলে পালিয়ে গেলেন।

    আমি হেঁটেই চলেছি। ঐ হাড় হিম করা ঠান্ডাতেও মাথা ঠান্ডা রাখা যাচ্ছে না। হাত থেকে আধলাটা ফেলি নি, তবে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি উত্তেজনায়। প্রায় ঘন্টাখানেক বাদে, এক জীপগাড়ি পাশে এসে দাঁড়ালো। দুই উর্দিপরা দেবদূত নেমে এলেন জীপ থেকে, বললেন "ম্যাডামজী, এই এলাকায় জীপ নিয়ে ঘুরে ঘুরে নজরদারী করাই আমাদের কাজ। অনেকক্ষণ ধরে দেখছি আপনি এরাস্তা-ওরাস্তা হেঁটে চলেছেন, হয়তো রাস্তা হারিয়ে ফেলেছেন। এই দেখুন আমাদের পরিচয়পত্র। ভয় পাবেন না, আমাদের গাড়িতেও চড়তে হবে না, শুধু দয়া করে বলে দিন, আপনার বাড়ি কোথায়? আমরা রাস্তা বলে দেব। এই শহর মেয়েদের জন্য নিরাপদ নয়, আমরা নজর করেছি একটি গাড়ি বহুক্ষণ ধরে আপনার পিছু নিয়েছে"।

    ঘুরে দেখি সেই তিনি দূর থেকে নজর রাখছেন। তখন আর কোনমুখে দেবদূতদের সত্যি কথা বলি! দেবদূতরা সত্যিই খুব সৎ এবং ভালোমানুষ ছিলেন। এক মহিলা নিরাপত্তা রক্ষীর সাথে তাদের জীপে করে আমাকে রিজেন্সি পার্ক ওয়ানের গেটের সামনে আমাকে নামিয়ে দিলেন। আমি বাড়ি গিয়ে লেপমুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লাম। আরেকজনও রক্তচক্ষু নিয়ে বাড়ি ফিরলেন এবং বাক্‌শূন্য হয়ে হপ্তান্ত কাটিয়ে দিলেন।

    যারা যারা আমাকে এবার বলার চেষ্টা করছেন, খুব বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম সেদিন, তাদের জন্য অভয়বাণী - ভাগ্য সাহসীদেরই সহায় হয়, আর আজ অব্দি অচেনা মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকি নি, যদিও চেনা মানুষরা ..........
  • san | 198.179.147.171 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৪:০৯449616
  • 'তুমি কি ফিরতে চাও? '

    :-)))))))))))))))))))))))))))))))))))))))))
  • Samik | 219.64.11.35 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৪:১৪449617
  • আজ্ঞে ব্যাং, ঐ কথাটিই বলব, ভাগ্য তোমার সহায় ছিল সেদিন।
  • Samik | 219.64.11.35 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৪:১৬449618
  • গেঁড়ি রেগে গেলে মাঝে মাঝেই গ্যাঁড়াকে বলে, তুই চলে যা তো বাড়ি থেকে, গ্যাঁড়া একটুও টেম্পটেড হয় না। পয়সা দিয়ে কেনা বাড়ি, এখনো হোম লোন চলছে, বল্লেই চলে যেতে হবে নাকি? গ্যাঁড়া গম্ভীর মুখে ল্যাপটপে গুরুচন্ডা৯ খুলে তার ভেতরে ঢুকে পড়ে।
  • Arpan | 204.138.240.254 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৪:১৬449619
  • :-)))

    এইসব ক্ষেত্রে ভাববাচ্যের প্রয়োগ বিশেষ কাজের (আমরা প্রায়ই ইউজ করি)।

    যেমন "আজ কি আর বাড়ি ফেরাটেরা হবে?'
  • de | 59.163.30.2 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৪:১৯449621
  • এই টইটা এতোক্ষণে পড়ে উঠলাম! উফ! পেটে খিল ধরে গেলো! বিশেষত: ব্যাং আর রিমির গল্পে এতো মোটিভেটেড হয়েছি যে কি বলবো! কিন্তু আফসোস -- মোটিভেটেড অস্ত্রগুলি যেদিকে ছুঁড়বো তিনি আগামী দুইমাস ট্যুরে থাকবেন!

    আমার দ্বারা কস্মিনকালেও ঝগড়া হয় না -- ঘটনাবলী ঝগড়ার দিকে টার্ন নিচ্ছে দেখলেই আমি মুখ বন্ধ করে ফেলি। সেই সুযোগ ঘর আর বাইরের লোকে পুরোমাত্রায় নেয়!

    আমি ব্যাংয়ের কাছে কোর্স-ওয়ার্কে আগ্রহী!!
  • Samik | 219.64.11.35 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৪:২০449622
  • ভাববাচ্য বলতে মনে পড়ল, ট্রেনে করে কলেজ থেকে ফিরছি, বটেদাকে (বাঁকুড়ার ছেলে) এক প্যাসেঞ্জার জিজ্ঞেস করল কথায় কথায়, "কী করা হয়?' বটেদাও বেশ গম্ভীর মুখে জবাব দিল, "পড়া হয়'।
  • de | 59.163.30.2 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৪:২২449623
  • শমীকের "ফুল হতে চলেছে" শুনেও হেব্বি হাসলাম!
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৯:২৪449624
  • ওপরওয়ালা কি ৫০% পপুলেশনের জন্যে একটাই টেমপ্লেট বানিয়েছিলেন? তাই মনে হচ্ছে।
  • aka | 168.26.215.13 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৯:৫৪449625
  • এই টইটা বেশ জেনেরিক হয়েছে। নাম, ধাম বদলে দিলেও গল্প একই থাকে। টেমপ্লেট পপুলেশনের টেমপ্লেট গল্প। :)
  • Arpan | 216.52.215.232 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ১৯:৫৭449626
  • হ্যাঁ। আর পুরনো বউ আর নতুন গাড়ি এইটা আবার একটা চয়েস হল নাকি?
  • Arijit | 61.95.144.122 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ২০:০৭449627
  • মানে বল্লুম গোটা পৃথিবীর "ভেনাসের বাসিন্দারা' একই টেমপ্লেটে তৈরী।
  • Samik | 219.64.11.35 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ২০:২২449628
  • হুঁ ... উনিশ আর বিশ। কিন্তু আদতে ভেনাসিয়ানই।
  • aka | 168.26.215.13 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ২০:২৫449629
  • হ্যাঁ সাড়ে উনিশ আর বিশ।
  • byaang | 59.93.205.124 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ২২:৪১449630
  • মঙ্গলগ্রহীদের অন্য ৫০% পপুলেশন নিয়ে অ্যাত্তো বক্তব্য! বাকি ৫০% মানে নিজেদের নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই? এই টই থেকে এটুকু পরিষ্কার যার মঙ্গলগ্রহ থেকে আসে নি, তারা আদ্যোপান্ত সৎ, এবং লুকোছাপায় বিশ্বাসী নয়। সোজা বাংলায় মনে এক, মুখে আরেক নয়।
  • ranjan roy | 122.168.239.225 | ২৮ এপ্রিল ২০১০ ২৩:২৬449632
  • মেয়েদুটো তখন ছোট। দেবী চৌধুরাণীর হটাৎ ধূম জ্বর, অগত্যা আমাকে রাঁধিতে হইবে। আলুর তরকারি এবং ডিমের ঝোল রাঁধিলাম। মেয়েরা সোনামুখ করিয়া খাইল। কিন্তু চৌধূরাণী পাতে বসিয়া চেঁচাইয়া উ ঠিলেন।
    --- একি? জ্বরের রোগীকে ভাত দিচ্ছ? রুটি কই?
    (গো-বলয়ের বেটি সুস্থ অবস্থায়ও রাত্রে রুটি খায়।)
    আমি আমতা আমতা করিয়া জানাইলাম যে আমার রুটি বানাইবার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হইয়াছে। পূর্বের মতই উহা হয় ট্রাপিজিয়াম বা সাইক্লিক কোয়াড্রিল্যাটারাল হইয়াছে। অতএব----।
    --- লজ্জা করে না মিথ্যে কথা বলতে! আলসে কোথাকার! বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও বাড়ি থেকে।
    কথাটি বুকে শেলসম বিঁধিল।
    সত্যই তো! ইহা চৌধূরাণীর স্কুল হইতে দেয়া কোয়ার্টার।
    হায় হরিদাস পাল! নিজের বলিতে মাথার উপর একটি ছাদও নাই। ধিক পৌরুষ! অবিলম্বে স্থান ত্যাগ কর।
    শীতের রাত্রি। নয়টা বাজে।জামাকাপড় পরিয়া ব্যাগ কাঁধে তুলিলাম। রায়পুর রেলস্টেশনে রাত কাটাইব। শেষ রাত্রে প্যাসেঞ্জার ট্রেন ধরিয়া বিলাসপুরে কর্মস্থলে যাইব।
    গুটি গুটি দরজার দিকে যাইতেছি, চোখ পড়িল ভাতের থালার দিকে। আমার প্রিয় ডিমের ঝোল আর আলু। ইহাদের ছাড়িয়া অভুক্ত অবস্থায় যাইতে হইবে?
    কিন্তু হরিদাস পাল ভাঙিলেও মচকাইবেন না!
    দরজা পার হইলাম, কেহ পিছে ডাকিলো না। বড় মেয়ে আসিয়া আমার পেছনে দরজা বন্ধ করিয়া ছিটকিনি তুলিয়া দিল। হায় জীব ! তুমি কার, কে তোমার! এই মেয়েকে কতবার মায়ের কড়া শাসনের হাত হইতে রক্ষা করিয়াছি!
    দোতলা হইতে ধীরে ধীরে পা ঘষ্টাইয়া নামিলাম। যখন বুঝিলাম কোন সিমলা চুক্তির আশা নাই তখন দ্রুতবেগে হাঁটিতে লাগিলাম। স্টেশনে যাইতে রিকশা খুঁজিতে হইবে। বিশ কদম আগাইয়াছি, দোতলার গবাক্ষপথে বড় মেয়ের আর্ত চিৎকার--- বাবা, ফিরে এস, প্লীজ ফিরে এস! ছোট বোন খুব কাঁদছে।
    নিজের মেয়ে ডাকিয়াছে, পরের মেয়ে নয়।
    ইহাতে ফিরিয়া গেলে কারও সম্মানহানি হইবে না।
    ( যেমন মন্ত্রীর No Victimisation আশ্বাসবাণীতে স্ট্রাইক কল্‌ অফ্‌ করিলে ট্রেড ইউনিয়নের সম্মানহানি হয় না!)
    প্রায় দৌড়াইয়া সিঁড়ি বাহিয়া দোতলায় উঠিলাম। ছোট মেয়ের চোখের জল মুছাইলাম। তারপর আমার নাকে খৎ দেয়া মুখশ্রী দেখিয়া দেবী চৌধূরাণী বিজয়ীর উদার হাসি হাসিয়া বলিলেন--- রায়! নাটক স্টেজেই ভাল লাগে, ঘরের মধ্যে নয়। নে, ডিমের ঝোল খেতে বোস।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন