কিন্তু কথা হল, সব চ্যানেল-ট্যানেল কিনে ফেলেও, অপছন্দের সিনেমাকে আটকে, এজেন্সি দিয়ে ভয়-টয় দেখিয়েও গোদীবাবুর ঠিক শান্তি নেই। পিছনে পাপ লেগে থাকলে যা হয়। এখনও দুচাট্টে লোক এদিক সেদিক খুচরো ট্যাঁফোঁ করে চলেছে, কে কখন বলে দেয় 'রাজা তুই ন্যাংটো' তার ঠিক নেই। এই আমার মতো কিছু তেএঁটে আছে, যারা মিডিয়ার শত প্ররোচনাতেও গোদীবিরোধিতা থেকে কিছুতেই নড়বেনা। তাদের থামাতে এবার এসে গেছে ভারতের নতুন সম্প্রচার বিলের খসড়া। পাশ হলে তার আওতায় এসে যাবে প্রায় সবকিছু। টিভি, কেবল তো ছিলই, ওটিটি, ইন্টারনেট, সমাজমাধ্যম। খুব সম্ভবত এই লেখাটা, নতুন বিল এলে 'সম্প্রচার'এর আওতায় পড়বে। এসব কাপড় খুলে দেওয়া লেখা, তাই বিলে বলা আছে, খবর বা সাম্প্রতিক বিষয়ে সম্প্রচার করতে হলে সব্বাইকে 'নিয়ম' বা কোড মেনে চলতে হবে। কী নিয়ম? না, সেটা বলা নেই। সরকার বা কর্তৃপক্ষ যখন যা ঠিক করে দেবে তাই। নইলে জেল-জরিমানা, সবই আছে। ... ...
এই ‘নির্বাচনী বন্ড’ কেবল বিজেপিদলটির দ্বারা নয় বরং গোটা রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর সাহায্যেই নির্মিত হয়েছে, যা বিজেপি-মোদি সরকারের ব্রাহ্মণ্যবাদী সামন্ততান্ত্রিক কায়দার ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক দুর্নীতি রূপেই ভবিষ্যতে উল্লেখিত থাকবে। যার ফলে আজ সংসদীয় গণতন্ত্র পুঁজিতান্ত্রিক ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে, জনগণের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার এখানে সম্পূর্ন কমেডি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের এমন বিপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে জনগণের বাস্তবিক অবস্থা সব মিলিয়ে মিশিয়ে ট্র্যাজিকমেডি চরিত্রে পরিণতি হয়েছে। যদিও দেশের বিজেপি-বিরোধী দলগুলির দুর্নীতিবাজ নেতাদের দৌলতে, যাঁদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপরে উঠে দাঁড়িয়েই বিজেপি-মোদি সরকার রাষ্ট্রের একেকটি স্তম্ভ কে হাতিয়ার করে, ব্রাহ্মণ্যবাদী সামন্ততান্ত্রিক কায়দার ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটিয়েছে। তবুও এখন বিজেপি-বিরোধীদলগুলির এই একচেটিয়া লগ্নিপুঁজি-তন্ত্রের বিরোধিতা করে, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ধীরে ধীরে দেশের নিপীড়িত-শোষিত কৃষক-শ্রমিক-আদিবাসী-সংখ্যালঘু, ছোট-মাঝারি ব্যবসাদারদের দ্বারস্থ হওয়ার ফলে দেশের জন-গণতন্ত্রের ভবিষ্যত ইতিবাচক দিক বহন করতে পারে। ... ...
১৬ জুন, সকাল ৭.৩০! স্কুলের প্রিন্সিপাল এবং বাকি শিক্ষকদের কাছ থেকে আশীর্বাদ আর শুভেচ্ছা নিয়ে মিছিল শুরু করল নালেডি হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা! তারা যাবে অরল্যান্ডো স্টেডিয়ামে। এসেম্বলিতে সমবেত মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস পথে থাকার জন্য কিছুক্ষণ আগেই সতর্ক করে দিয়েছে তাদের স্কুলের ছাত্র তথা অ্যাকশন কমিটির প্রথম চেয়ারপার্সন টেপেলো মোটোপেনিয়েন। সকাল ৮টা নাগাদ অরল্যান্ডো অভিমুখী নালেডি স্কুলের মিছিলে যোগ দিল মরিস আইজ্যাকসন হাই স্কুল আর ফেফেনি জুনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের হাজার দুয়েক ছাত্রছাত্রীও! অনেক ছাত্রছাত্রীই জানত না যে ১৬জুন মিছিল হবে, কিন্তু স্কুলে এসে যখন তারা জানতে পারে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিছিলে যোগ দিয়েছিল তারা। আর যারা মিছিলের কথা জানত, তারা? স্কুলের একমাত্র ইউনিফর্মটা কেচে ধুয়ে ইস্তিরি করে পরে আর ধুলোমলিন জুতোজোড়া পালিশ করে যথাসম্ভব ধোপদুরস্ত হয়ে মিছিলে হাঁটতে এসেছিল সেই সব উজ্জ্বল কিশোর কিশোরীরা! ... ...
অনেক সময় অপবিজ্ঞানকে সূক্ষ্মভাবে বিজ্ঞানের মোড়কে মুড়ে দেওয়া হয়। যেমন, পৃথিবী সব জিনিসকে নিজের দিকে টানে, তাই তারা পৃথিবীতে এসে পড়ে – কোনো প্রাচীন শাস্ত্রে এরকম কথা লেখা থাকলেই, নিউটনের অনেক আগে আমরা মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার করেছি—এটা প্রমাণ হয় না। পৃথিবীতে আপেল এসে পড়ে, কারণ পৃথিবী আপেলকে টানে—এটা গুহামানবরাও বলতে পারত। ব্রহ্মাণ্ডে সব টানাটানিই যে একই সূত্রের ফল—সেটা নিউটনই প্রথম দেখান, আর বিজ্ঞানের যে কোনো সূত্রের জন্যে এই সার্বজনীনতাই মূল কথা। ... ...
সন্দেশখালির ওপর কিছু ভিডিও দেখে, রিপোর্ট পড়ে গুরুর ভাটে ১২.২.২৪/২০:৩৯ অরণ্য লিখলেন - “দিনের পর দিন গ্রামের মেয়েদের জোর করা হত রাতে তৃণমূলী গুন্ডাদের সাথে সময় কাটানোর জন্য। কথা না শুনলে স্বামী, পরিবারের লোকদের মারধর। এ জিনিস বোধহয় বাংলা আগে দেখে নি”। এটা পড়ে ১৯৭৫এ মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ছবি ২০১৮তে বাড়িতে বসে ল্যাপটপে দেখার প্রতিক্রিয়া মনে পড়লো। রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ, নিজে ঐ পরিস্থিতিতে থাকলে কীই বা করতে পারতাম ভেবে অসহায়তার অন্তে গ্ৰামবাসীদের প্রতিবাদে ফেটে পড়া দেখে - “বেশ হয়েছে” - গোছের ভিকারিয়াস প্লেজারের অনুভব। সিনেমাটা দেখে মোবাইলে কিছু ভাবনা ডায়েরি লেখার মতো লিখে রেখেছিলাম। এসেছিল কিছু পার্শ্বপ্রসঙ্গ। সন্দেশখালিতে অরণ্য উল্লিখিত ঘটনার প্রেক্ষিতে থাকলো সেই লেখাটি ... ...
এই সব দেখেশুনেই ডাক ছেড়ে বলতে ইচ্ছে হয় - হরি হে মাধব - তোমা বিনে কোথায় যাবো? ... ...
টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই ( Geographical Indications ) পাওয়া নিয়ে দুইটা ভিন্ন যুক্তি শোনা যাচ্ছে। দুইটাই সঠিক কিন্তু প্রসঙ্গ ভিন্ন। একটা ভারত থেকে জোর গলায় প্রচার হচ্ছে, তা হচ্ছে টাঙ্গাইল থেকে বসাক গোষ্ঠী, যারা মূলত শাড়ি বানাত তারা ভারত চলে গিয়ে সেখান থেকেই শাড়ি বানাচ্ছে, প্রচুর বিক্রি হচ্ছে, একজন বসাককে ভারত সরকার পদ্মশ্রী পুরস্কারও দিয়েছে। দেশের সংখ্যালঘু অত্যাচার, হিন্দুদের বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়া এগুলা দিয়ে বলা হচ্ছে তোমরা তাড়িয়ে দিয়েছে এখন আর তাঁদের শৈল্পিক কৃতিত্বের ভাগ চাও কেন? আর দ্বিতীয় কথাটা হচ্ছে বাংলাদেশের নারীরা শাড়ি পরা কমিয়ে দিয়েছে! এইটাও সত্য, আমার চোখের সামনে শাড়ি পরা নারীর সংখ্যা কমতে দেখছি। বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া শাড়ি পড়ে না এখন অনেকেই, যারা এক সময় শাড়ি ছাড়া আর কিছুই বুঝত না। ... ...
বইমেলার শেষদিনে পৌরসভার চুক্তিভিত্তিক সাফাইকর্মী’রা জানালেন, বইমেলা শেষে আবার অন্য কোন মেলায় কিংবা অন্য কোথাও তাঁদের কাজ খুঁজতে হবে। কিন্তু পরেরবার তাঁরা পৌরসভার কর্তাদের বলবেন খানিক মজুরি বাড়াতে। কিন্তু এঁদের কথা মানবে কে? সরকারতো সব ব্যাপারেই বলেন বিরোধীরা উস্কিয়েছে এঁদের। আর গিল্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন রাজনীতি করা চলবে না বইমেলা নিয়ে অথবা বইমেলা প্রাঙ্গণের ভেতরে। আর বেশি কিছু করলে, সামনেই উত্তর বিধাননগর থানার পুলিশবাবু’রা আছেন, আশা করা যায় সবটা সামলে নেবেন। এইরকম কয়েকশো উদাহরণ বইমেলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে সাজানো রয়েছে। ... ...
কুপার কোম্পানির টার্গেট ক্রেতা ছিলেন ব্যাচেলর গ্রাহকরা। সমকালীন নানা পত্রপত্রিকায় পাওয়া যায় কুপার কোম্পানির তাদের নবজাতক পণ্যটির জন্য বানানো নানা মজাদার বিজ্ঞাপন, যাঁর একটির এক ছবিতে লং জনস পরিহিত ছিন্নবোতাম বেচারামুখ এক উদাস ব্যাচেলর আর অন্যটিতে বোতাম আর সেফটিপিনের ঝঞ্ঝাটবিহীন নতুন কুপার অন্তর্বাসে এক ঝকঝকে ব্যাচেলর। এর সঙ্গে লেখা ছিল, ‘যে সমস্ত যুবক অবিবাহিত এবং সিঙ্গেল, যারা জামার বোতাম ছিঁড়ে গেলে সেলাই করে নিতে পারবেন না, এ জামা তাদের জন্যই!’ চলুন, একটু ফিরে দেখা যাক আট থেকে আশি, কচি মেয়ে থেকে বুড়ো দাদু সক্কলকে অন্যতম প্রিয় পোশাক টি-শার্টের ইতিহাসকে! ... ...
মধ্যশিক্ষাপর্ষদের সাইট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যবোর্ডের বাংলা মাধ্যম মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ২৭৬৮ খানা। হিন্দি মাধ্যম ১১৬, ইংরিজি মাধ্যম ৪৫। সব মিলিয়ে মোটামুটি ধরুন ৩০০০। সিবিএসইর সাইট অনুযায়ী, সিবিএসই অনুমোদিত বিদ্যালয় ৪৫০। আইসিএসইর সাইটে পরিসংখ্যান পাইনি, অন্যত্র দেখলাম শ চারেক। দুটো যোগ করে, মোটামুটি ধরুন ১০০০। অর্থাৎ কিনা পশ্চিমবঙ্গের চারভাগের একভাগ স্কুলই কেন্দ্রীয় বোর্ডের। ... ...
বিহারে "জন সুরাজ"-এর প্রবর্তক প্রশান্ত কিশোর বিশ্বাস করেন ক্রান্তিকারী গণতান্ত্রিক বা রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে কোনো বিকাশ হওয়া সম্ভব নয়। বৈপ্লবিক আন্দোলন একটি তেজ হাতিয়ার যা দিয়ে একটি মহীরুহ কেটে ফেলা যায়, মানে ক্ষমতাসীন শাসককে ক্ষমতাচ্যূত করা যায় কিন্তু আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো ‘নতুন ব্যবস্থা’ {System} বানানো সম্ভব নয় {যার দ্বারা দেশে, সমাজে দীর্ঘমেয়াদী পজিটিভ আউটকাম আসতে পারে}। ... ...
ফ্রাঙ্কফুর্টের বাণিজ্যমেলার ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, মোটামুটি ১৪৭৮ সাল থেকে নিজস্ব বইয়ের সম্ভার নিয়ে শরতের সময় ১সপ্তাহের জন্য এই মেলায় আসতে শুরু করেন বই ব্যবসায়ীরা। ছাপানো বইয়ের সেই আদ্যিকালে অবশ্য বই ছাপানো থেকে বিক্রি পর্যন্ত সমস্ত ধাপগুলোর কোন আলাদা কেন্দ্র বা ভাগ বিভাজন হয়নি। তাই নিজস্ব কর্মচারী আর শ্রমিকদের সাহায্যে গোটা প্রক্রিয়াটিকে সামলাতেন ১জন বই মুদ্রকই। অর্থাৎ সেকালে বইয়ের মুদ্রকই হতেন বইয়ের প্রকাশক আর বই বিক্রেতাও। ... ...
গুরুতে ১৮.১.২৪ সহস্রলোচন শর্মার - “এক কাল্পনিক পুস্তক বিক্রেতার গল্প” - লেখায় জাক ফঁসের চরিত্রে নৈতিকতার পরিচয় পেয়ে মনে পড়লো শংকরের একটি লেখায় আচার্য্য্য জগদীশ চন্দ্র বসুর চরিত্রে ঠিক তার বিপরীত দিশার পরিচয় পেয়েছি। সেই প্রেক্ষিতেই এই লেখা। ... ...
ভূতের বেগারের দ্বিতীয় অধ্যায় বা দ্বিতীয় পর্ব। এই পর্বে গিগ ইকনমিকে নিয়ে লেখা। ... ...
পর্বতারোহণ ফুটবল বা ক্রিকেটের মতো দর্শক পরিপূর্ণ স্টেডিয়ামে আয়োজিত খেলা নয়। এতে নেই দর্শকের উত্তাল করতালি বা চিলতে পোশাকের চিয়ার লিডারদের মনোরঞ্জনী উল্লাসবিভঙ্গ। এতে নেই কর্পোরেট স্পনসরদের ব্যানারের ঝলকানি। পর্বতারোহণে গেলে প্রকৃতির আপাত সৌন্দর্যের আড়ালে অনুভব করা যায় তার নির্মম, করাল রূপ। সুদূর, দুর্গম, নির্জন সেই ভয়াবহ প্রাকৃতিক পরিবেশে কখনো স্রেফ বেঁচে থাকাটাই হতে পারে কঠিন সংগ্ৰাম, নিদারুণ সংকটময়। তাই পর্বতারোহণে গিয়ে একটি শৃঙ্গ জয় করতে পারলে সেই সাফল্য অবশ্যই আনন্দদায়ক, তবে নিজের সামর্থ্য, সাহস, দক্ষতা ও সহ্যের সীমা অতিক্রম করতে পারার উপলব্ধির মধ্যেই প্রকৃত পর্বাতোরোহী খুঁজে পান আসল চ্যালেঞ্জ। সেটাই অভিযাত্রীক সত্তার আসল প্রাপ্তি। ... ...
মানুষ কিন্তু নির্বাচন পছন্দ করে। কেন জানি মানুষের ধারণা যে ভোট দিতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই যে একদলের নির্বাচন হচ্ছে, মানুষের এইটা নিয়ে কোন আগ্রহই থাকবে না, এমন হওয়ার কথা না? কিন্তু তা হচ্ছে না! আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক প্রজ্ঞাই বলেন আর যাই বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে এই নির্বাচন জমিয়ে দিয়েছে। শহরের মানুষ কিছু নাক উঁচু ভাব দেখাচ্ছে, ম্যালা তত্ত্ব কপাচাচ্ছে ( যেমন আমি নিজেই!) কিন্তু গ্রামের মানুষ, যেখানে সবচেয়ে বেশি ভোটার, তারা সবাই ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে। যারা ভাবছেন যে ভোটার শূন্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে তারা সম্ভবত ধোঁকা খেতে যাচ্ছেন। কালকে বিপুল পরিমাণ মানুষ ভোট দিবে এইটা আমি এখনই বলে দিতে পারছি। কারণ আমি সাধারণ মানুষের এই নির্বাচন নিয়ে যে উচ্ছ্বাস তা দেখেছি। মিথ্যা বলব না, এইটা আমাকে বিরক্ত করেছে। সব ফেলে এই নির্বাচনের জন্য এত আগ্রহ? ... ...
উনিশশো একাত্তর সনের ৬ই মে, সেই মানিককিশোর সত্তর বছর বয়সে জীবন্ত বলি হলেন বলিহার বাজারের সেই চালাঘরটিতে, যেখানে টিনের চাল বেয়ে নামত সুরের বৃষ্টি, ফোঁটায় ফোঁটায় ভিজিয়ে দিত চালার তলায় আশ্রয় নেয়া ভাগ্যবান শ্রোতাদের! হয়ত বড় ভালবাসতেন চালাঘরটিকে, সে কারণেই সেই চালাঘরের যূপকাষ্ঠেই অগ্নিস্নান করে সেদিন অমরলোকে পৌঁছে গিয়েছিলেন শহীদ মানিককিশোর, সপ্তাকাশ জুড়ে তখন বেজেই চলছিল কোন ধ্রুপদী রাগ! ... ...
অন্য দিকে মুসলিমদের অবস্থা চিন্তা করে দেখেন। মুসলিম ব্রাদারহুড মুসলিম উম্মাহ এগুলা আমার কাছে ভুয়া কথা মনে হয়। কোন কার্যকর ব্যবস্থা এদের দ্বারা আজ পর্যন্ত নেওয়া হয় নাই। মুসলিমরা বর্তমান সময়ে ভাগ্য বিতাড়িত জাতি বলে মনে হয়। কেন? ইয়েমেনে মানুষ মেরে ফিনিশ করে দিচ্ছে অথচ কোথাও কোন টু শব্দ হয়নি। না মুসলিম বিশ্বে না মানবতার, মানবধিকারের আঁতুড়ঘর ইউরোপের কোথাও কেউ কোন প্রতিবাদ করছে, কেউ বলতে পারবে না এই মানুষ মারার জন্য কোন একটা উন্নত দেশে রোড মার্চ হইছে, মানুষ জমায়েত হয়েছে, বিক্ষোভ হয়েছে। এর থেকে সামান্য ঘটনায় সিডনি থেকে বার্লিন নিউ ইয়র্ক থেকে প্যারিসে মিছিল শুরু হয় যেতে দেখছি আমরা। শুধু ইয়েমেন না, সিরিয়ায় যা হয়েছে তার প্রতিবাদই কয় জায়গায় কে করেছে? কেউ না। মুসলিমরাও যখন দেখে ঘাতক এখানে মুসলিম তখন তারাও চুপ! পশ্চিমা বিশ্ব তো বটেই, ডাবল স্টান্ডার্ড দেখাইতে মুসলিমরাও পিছিয়ে নেই। মুসলিমরা যখন এক সাথে একমাত্র ইহুদিদের আকামের সময় চিৎকার করে তখন কেউ কেউ এর ভিতরে অন্য কিছু খুঁজে পায়। কেউ কেউ বলে মুসলিমদের রক্তের ভিতরে জিনের ভিতরে ইহুদি বিদ্বেষ ঢুকে আছে, তখন আসলে কিছু বলার থাকে না। এই বলার অধিকার সম্ভবত মুসলিমরাই দিচ্ছে। ... ...
আজকাল জেন্ডার ইকুয়ালিটি সব আলোচনার শীর্ষে কিন্তু সেদিন , সেই ইউরোপে এটা কোন বিবেচ্য বিষয় ছিলো না । তবে এটা মানতেই হয় সেই নয়ের দশকেই অ্যাংলো সাক্সন জগতে বিশেষ করে আমেরিকায় মহিলারা সম্মানের স্থান পেয়েছেন সবার আগে , তার পরেই যুক্তরাজ্যর স্থান। ট্যাক্সি ধরার জন্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি । দরাদরিতে পরাস্ত হয়ে আমরা দুজনেই কিঞ্চিৎ বিমর্ষ । হঠাৎ মার্ক বললে, একটা জিনিস মানতে হবে তোমাদের দেশে মহিলারা কর্পোরেট জগতে যেখানে পৌঁছেছেন, জুরিখ জেনিভাতে হয়তো কোনদিন তা সম্ভব হবে না! বন্ডের দর কমে যাওয়ার মর্মবেদনা ভুলে গিয়ে ভারতীয় হিসেবে সেদিন খুব গর্ব হয়েছিল ... ...