কেন ক্রেদি সুইস বিক্রি হল তার সম্যক তথ্য খবরের কাগজ, ইন্টারনেট , টেলিভিশনের ডিবেট (যাকে নাকি বলে নুক্কড় বহস বা নেশন ওয়ানটস টু নো) এবং লোকমুখে চেনা শোনা জানা যায়। সেটা আমার আলোচ্য বিষয় নয়। আগের পর্বে বলেছি ক্রেদি সুইসের চারটে মূল কর্মধারা – আপনার আমার চির পরিচিত কমার্শিয়াল ব্যাঙ্কিঙ্গে তারা কখনো লোকসান করে নি, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ও প্রাইভেট ব্যাঙ্কিং লাভ জনক - দুনিয়ার ধনী ব্যক্তিরা তাঁদের টাকা ভরা সুটকেস ৭০ নম্বর পারাদেপ্লাতসে গচ্ছিত রেখেছেন। সুদ পেয়েছেন দবাকে। তাহলে সমস্যাটা কোথা হতে এলো? ব্যাঙ্কের অলিখিত মূলধনের নাম বিশ্বাস – সেটি যদি হারায়, দুনিয়ার কোন ব্যাঙ্ক নিরাপদ নয়। এক সময় রান অন দি ব্যাঙ্ক হতো মুখের কথায়, গুজবে, কথা হয়েছে কানে কানে। আজ সামাজিক মাধ্যমের দ্বারা সেই ব্যাঙ্ক রানের কাজ সুচারু রূপে সাধিত হয় - সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের পঞ্চত্ব প্রাপ্তির কাহিনি সকলে অবগত আছেন। ক্রেদি সুইস তার খদ্দেরের বিশ্বাস কবে হারাল? ব্যাঙ্কের প্রতি আস্থা একদিনে বিনষ্ট হয় না, একটি ঘটনায় হয়তো নয়। ঠিক কি কারণে ক্রেদি সুইস একদিন তার কাছে গচ্ছিত ধন হারাতে শুরু করল তার তালিকা শিগগির কোথাও দেখা যাবে। একদিন তা নিয়ে নিশ্চিত পুস্তক রচনা, এমবিএ ক্লাসে পড়ানো হবে। ইউটিউবে দেখা যাবে ঘণ্টা ব্যাপী ক্লিপ। সে বহু মনিষীর কাজ। ... ...
মৌসুমি ব্যবসা এক নিশ্চিত ভবিষ্যতের হাতছানিতে জন্মলাভ করে। অথচ ইতিহাসের সব থেকে যন্ত্রণাদায়ক সত্যগুলোর একটি হল, ভবিষ্যৎ সবসময়ই আমাদের বিষ্মিত করবে, সবসময় অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে। বাজার সব থেকে নিষ্ঠুরভাবে তাদেরকেই চমকে দেয়, যারা সব থেকে বেশী নিশ্চিত থাকে যে, তাদের ভবিষ্যৎ অনুমানটি সঠিক হবে। ব্রিটিশ প্রাবন্ধিক জি কে চেস্টারটন একদা বলেছিলেন, "সেই লোকই আশির্বাদপুষ্ট যে কোন কিছুই প্রত্যাশা করে না, কারণ সে তাহলে আর হতাশ হবে না।" ... ...
হেনকালে একজন ব্যবসায়ী ,রাজনীতিক এবং আইনজ্ঞ মানুষ মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন – জুরিখের নিকটবর্তী এঙ্গে গ্রামে তাঁর জন্ম, জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়েছেন ( বন ও বার্লিনে কিছু সেমেস্তার সহ ) : তাঁর সকল বিদ্যা বুদ্ধি জানাশুনো এবং লবির জোরে সুইস কনফেডারেশনের কাছে আবেদন জানালেন- রেল ব্যবস্থাকে দ্রুত উন্নত করতে গেলে সে কাজটি দেওয়া হোক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে , ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যা শেখানোর স্কুল খোলা হোক ( যা আজকের ফেডারাল পলিটেকনিক ইনসটিটুট ; আইদগেনোশিসে টেখনিশে হখশুলে – ETH)। সে সব না হয় হলো, কিন্তু টাকা ? সে মানুষটি বললেন , ভাবনা করো না, রেল পত্তন এবং বিস্তারের জন্য আমরা একটি ব্যাঙ্ক স্থাপন করব । লাগে টাকা দেবে সে ব্যাঙ্ক ! তিরিশ লক্ষ ফ্রাঙ্কের শেয়ার ছেড়ে তার দশগুণ অর্থ পেলেন – সবাই উন্মুখ । প্রতিষ্ঠা করলেন প্রথম সুইস ব্যাঙ্ক – ১৮৫৬ ।( দু বছর বাদে ইকনমিসট পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার জেমস উইলসনের চার্টার্ড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়া এন্ড চায়না তার প্রথম শাখা খুলবে কলকাতায়, আজকের এন এস রোডে , দশ বছর বাদে হংকং সাংহাই ব্যাঙ্ক – যথাক্রমে হংকং এবং সাংহাইতে ) । ... ...
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কতটা মানবিক, কতটা যান্ত্রিক? ... ...
সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের সমস্যা অন্য রকম। মাত্র চল্লিশ বছরের পুরনো এই ব্যাঙ্কে আপনার আমার মতন সাধারণ নাগরিক খুব সামান্য টাকা রেখেছিলেন, মোট অঙ্কের দশ শতাংশও নয়। সেখানে যারা বৃহৎ অঙ্কের ডলার জমা রেখেছেন তাঁরা ব্যাংকিং জগতে হালে আবির্ভূত এক প্রজন্ম – এঁরা উদ্যোগী মূলধনের সরবরাহকারি – ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট। টাকার প্রকাণ্ড পোঁটলা নিয়ে ঘোরাঘুরি করেন, আপনার আমার পাড়ায় নয়, সেই সিলিকন ভ্যালিতে যেখানে টেক জগতের অনেক উজ্জ্বল তারকা কিছু না কিছু নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন – তাঁদের মাথায় বুদ্ধি আছে, একটা দুর্দান্ত কিছু বানানোর পুরো ব্লু প্রিন্ট আছে। নেই শুধু অর্থ। তাঁদের মধ্যে কেউ না কেউ একদিন বিল গেটস হয়ে উঠবেন – এই উদ্যোগী মূলধনের মালিক আজকে তাঁদের শেয়ার সস্তায় কিনে নিয়ে অগ্রিম অর্থ সাপ্লাই করছেন। আশা রাখেন এই টেক তারকারা একদিন এমন কেরামতি দেখাবেন যে সে শেয়ারের দাম লক্ষ ডলার হবে। অবশ্যই দশ জন উদ্ভাবকের মধ্যে দু চার জন এলিজাবেথ হোমসের মতন টোটাল ফ্রড হবেন (উনিশ বছরে স্ট্যানফোরডের ড্রপ আউট এই বালিকা নয় বিলিয়ন ডলার মূল্যের কোম্পানি বানিয়ে ফেলেছিলেন - এক ফোঁটা রক্ত থেকে ১৮০ রকমের টেস্ট করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে - এখন হাওয়ালাতে আছেন) তাতে কি? জুয়ার সব দান সমান হয় না, তাহলে তো সব খিলাড়ি রকিফেলার হয়ে যেত ... ...
এবারের সংগ্রাম মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম! আমাদের হাতিয়ার ‘সুদের হার’ আর ‘টাকার সরবরাহ’। রিভার্স গিয়ার। সুদের হার বাড়াও, নোট কম ছাপো। টাকার ভাও বেশি হলে জিনিসপত্রের চাহিদা কমবে। লোকে খরচা করবে হিসেব করবে। সুইগি থেকে খাবার না আনিয়ে গৃহবধূরা স্বহস্তে রন্ধন করবেন, নেটফ্লিক্সের চাঁদা বন্ধ করবেন। ব্যাঙ্কের খাতায় জমার পরিমাণ বাড়বে অবসর প্রাপ্ত মানুষ যারা ব্যাঙ্কে জমা টাকার সুদ থেকে জীবনযাত্রা নির্বাহ করেন, তাঁরা দু হাত তুলে আশীর্বাদ করবেন। মুদ্রাস্ফীতি কমলে গ্যাঁটের টাকার মূল্য বাড়ে। ... ...
আমি শিক্ষাবিশেষজ্ঞ নই। এবং আমার দৌড় কলকাতা থেকে সিঙ্গুর অবধি। সেটাও নেহাৎই মধ্যবিত্ত বৃত্তে। সেই বৃত্তে আমি কী দেখছি? আমার পরিচিত বন্ধুবান্ধবরা প্রায় কেউ তাঁদের ছেলেমেয়েদের রাজ্য বোর্ডের ইশকুলে পড়াননা। যাঁরা রাজ্য বোর্ডের শিক্ষক, তাঁরাও না। তার নিশ্চয়ই অনেক কারণ আছে। কিন্তু মোদ্দা কথা হল, কলকাতা থেকে সিঙ্গুর অবধি, এই যে তিরিশ কিলোমিটার এলাকা, স্যাম্পল সার্ভে না করেই বলতে পারি, যে, রাজ্য বোর্ডের ইশকুল গুলো মধ্যবিত্তের প্রথম পছন্দ তো নয়ই, বরং অগতির-গতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। আমরা যে ইশকুলগুলোয় পড়েছি, যেগুলো নামী ইশকুল বলে জেনেছি, সেগুলো সমেত। দুর্নীতি, ইশকুল-বন্ধ করে দেওয়া, এই ব্যাপারগুলো দিয়ে এই দুচ্ছাইকরণ প্রক্রিয়াটাকে ক্রমশ ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। ... ...
ডিএ নিয়ে আন্দোলন কতটা নৈতিক আর কতটা রাজনৈতিক? সরকারের অগ্রাধিকার কি সত্যিই গরীব মানুষ? টাকার সংস্থান কোথা থেকে হবে? এই নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত এই লেখায় । ... ...
মেয়েদের দায়িত্ব মা হিসেবে, বোন হিসেবে এবং স্ত্রী হিসেবে পুরুষদের শারীরিক এবং মানসিক যত্নআত্তির দায়িত্ব নেওয়া। সমাজনির্দিষ্ট এই পুরুষতান্ত্রিক সুভাষিতাবলীকে চ্যালেঞ্জ করে আত্নপরিচয় খোঁজা নারী আন্দোলনের অন্যতম দায়িত্ব ছিলো, আজও আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সমাজে যত্ন, পরিচর্যা এবং পরিষেবার প্রয়োজন ফুরিয়েছে বা ফুরাবে। তাই এই ধারণাগুলিকে পরিত্যাগ করার বদলে তাকে সমাজে সর্বব্যাপ্ত করার কথাও উঠে এসেছে নারী আন্দোলনের ভেতর থেকেই। শুধু তাকে পুঁজিবাদী ও পিতৃতান্ত্রিক নিগড় থেকে মুক্ত করার প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন। ... ...
দু দশক বাদে বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্টের এক নতুন প্রয়োগের সঙ্গে পরিচিত হলাম । ব্যাঙ্কিং বাজারে স্বল্প মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি ঋণের কেনা বেচা চলে, যার নাম সেকেন্ডারি ট্রেডিং । যেমন ধরুন সিটি ব্যাঙ্ক জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার কোম্পানিকে দু বছরের কড়ারে ধার দিয়েছে এবার সিটি তার স্বত্ব বিক্রি করে দিলো রাবো ব্যাঙ্ককে । দু বছর পার হলে রাবো ব্যাঙ্ক কভেন্ট্রিতে জাগুয়ারের দরোজায় সেই টাকা আদায়ের জন্য কড়া নাড়তে পারে অথবা ইতিমধ্যেই অন্য কাউকে বেচে দিয়ে থাকতে পারে । ঋণ শোধের দিন যার হাতে মালিকানা তাঁকে আমরা বলি হোল্ডার ইন ডিউ কোর্স যিনি সেদিন সেই টাকা পেলেন অথবা হাতে হ্যারিকেন ধরলেন ! এ ধরণের ট্রেডিং তুলকালাম হারে দেখা যায় স্বল্প মেয়াদি আমদানি রপ্তানির ব্যবসায় যাকে আমরা ট্রেড ফাইনান্স বলি। বি পি ( ব্রিটিশ পেট্রলিয়াম - ব্লাড প্রেশার নয় ) ছ মাসের কড়ারে জাহাজ ভর্তি তেল বেচল কেনিয়ার কোবিলকে। কোবিল একটি হুন্ডি লিখে জানাল ১৮০ দিন বাদে তারা দশ মিলিয়ন ডলার নিউ ইয়র্কে জমা করবে বি পির খাতায় । কেনিয়ান কোম্পানির ওপরে ভরসা নেই তাই বি পি সিটিব্যাঙ্কের গ্যারান্টি চাইল- অর্থাৎ কেনিয়া দাম না চুকোলে সিটি সে ডলার দেবে । আগামী কল্য সিটি এই হুন্ডি মেলন ব্যাঙ্ককে বেচে দিতে পারে – ছ মাসের ভেতরে এই কাগজটি মালিকানা বহুবার বদলে যায় এবং এইখানে শুরু হয় ট্রেডিঙের বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্টের খেলা। ... ...
#বইমেলা_ম্যালা_বই ... ...
এখন ধরো শেয়ারের দাম বেড়ে যাচ্ছে দেখে আমার পুত্র ব্যাঙ্ককে বলতে পারে তুমি আর কোন সুরক্ষা নয়, আমার কোম্পানির শেয়ার জমা রাখো । কোন কারণে যদি সুদ আসল শোধ না করতে পারি, আমার শেয়ার বেচে দিয়ে টাকা উদ্ধার করে নিও , এই যেমন মর্টগেজ শোধ না করতে পারলে ব্যাঙ্ক বসতবাড়ি বাজেয়াপ্ত করে টাকা উসুল করে। পেছন থেকে একটি ছেলে বললে বাড়ি ঘরের দাম কমতে বাড়তে পারে, তবু তার কিছু মূল্য থেকে যায়। কিন্তু শেয়ারের দাম শূন্য হয়ে যেতে পারে না কি ? এই যেমন এনরনের ক্ষেত্রে হয়েছে। আমার বাবা পেনশন ফানডে এনরনের শেয়ার জমা রেখেছিলেন, এখন সেগুলো ছেঁড়া কাগজের বাকসোয় ঠাই পেয়েছে। ... ...
পরবর্তী ষোল বছরে ভারতীয় ব্যবসায় নিবেশকারীদের জন্য এক রাজপথ , এক বিশাল অটোবান খুলে গেলো – ভারতীয় শেয়ার বাজারের নিবেশকবৃন্দ টাকার গাড়ি পাঠালেন চিরাচরিত নিউ ইয়র্ক লন্ডন প্যারিস নয়, আপাত অখ্যাত এক শহর পোর্ট লুই থেকে ( জনসংখ্যা সওয়া লক্ষ) । বিদেশি ব্যাঙ্ক সেখানে নেই তাই তাঁরা তাদের ডলার পাঠান স্থানীয় ব্যাঙ্কে , তা দিয়ে কেনা হয় রাশি রাশি ভারা ভারা ভারতীয় শেয়ার । দাম বাড়লে বেচেন , ট্রেডিং করেন , ট্যাক্স দেন মরিশাসে যার হার ব্রিটেন ফ্রান্স জারমানির তুলনায় নস্যি । ভারতীয় কর বিভাগ উদার দৃষ্টি উন্মীলন করে থাকেন । সরকারি ভাবে এর নাম দেওয়া হল বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক নিবেশন (ফরেন ইন্সটিটিউশনাল ইনভেসটরস)। কাগজে কলমে এঁরা বিদেশি নিবেশক কিন্তু খুঁটিয়ে দেখে কে ? পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি না হলে মালিক নৌকর চাকরের ঠিকানা ড্রাইভিং লাইসেন্স বিজলি বা জলের বিল ব্যাঙ্কের কাছে জমা দিয়ে আপন বৈধতা প্রমাণ করার কোন প্রয়োজন নেই । টাকা বা রুপিয়া আসছে নানান দিশা থেকে , যাচ্ছে শুধু ভারতের পানে, যেমন একদা পর্তুগিজ ডাচ ইংরেজ জাহাজ যেতো । ... ...
সদ্য পড়ে শেষ করলাম প্রতিভা সরকারের ‘মানসাই’। ছোটগল্প রচনায় তাঁর মুন্সিয়ানার সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। এটি তাঁর প্রথম উপন্যাস। বইটির মুদ্রণ পারিপাট্য চমৎকার। পড়ে মনে হল একটু লিখে রাখা দরকার। খুব ভেবেচিন্তে গুছিয়ে নয়, এটা একটা তাৎক্ষণিক পাঠ প্রতিক্রিয়া। ... ...
জিডিপিকে নিয়ে আগ্রহ নতুন কিছু নয়, একে একক মাপকাঠি ধরে দেশের স্কোরশিট বের করার ইতিহাস অনেক পুরনো এবং ব্যাপ্তি সারা বিশ্ব জুড়েই। অথচ যতই দিন যাচ্ছে, ততই শ্রী হারাচ্ছে এই সোনার কাঠি এর অন্তর্গত দুর্বলতার জন্য। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল একবার লিখেছিলঃ ‘’যদি একটি শিল্পকারখানা এর পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় দুষন সৃষ্টি করে এবং সরকারকে সেই দুষিত পরিবেশ পরিচ্ছন্ন করার বিল পরিশোধ করতে হয়, তাহলে এই দুইটি কাজই জিডিপিতে যোগ করে।‘’ আমাদের দেশের নির্মাণযজ্ঞে আমরা দুইটি চিত্র দেখতে পাই, একদিকে শূন্য জায়গায় নতুন বাড়ি হচ্ছে, অন্যদিকে পুরনো বাড়ি ভেঙ্গেও নতুন বাড়ি হচ্ছে। জিডিপি পুরনো বাড়ির ক্ষতকে স্পর্শ না করে দুইটি চিত্রকে একই দৃষ্টিতে মূল্যায়ন করে । আইভরি কোস্ট ১৯৬০ এর দশকে আফ্রিকার জন্য প্রবৃদ্ধির উদাহরণ ছিল, আর্জেন্টিনা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে বিশ্বের প্রধান শিল্পোন্নত দেশগুলির একটি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল, মেক্সিকো উত্তর আমেরিকার প্রবৃদ্ধি তারকা হিসেবে দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছিল ১৯৫০ থেকে টানা তিরিশ বছর। কিন্তু দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি-ঝড় থেমে গিয়েছিল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর অভাবে। আমলাতন্ত্র, জমির রেকর্ড, সম্পত্তি অধিকার, শিক্ষা, এবং বিচার ব্যবস্থা – রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোতে অব্যবস্থাপনা তাদের প্রবৃদ্ধির বেলুন ফুটো করে দিয়েছিল। অন্যদিকে, কোরিয়া ১৯৬০-৮০ … এই বিশ বছরে তার মাথাপিছু আয় ২০ গুন বাড়িয়ছে, ইতিহাসে যে রেকর্ড আজ পর্যন্ত কেউ ভাংগতে পারেনি। কোরিয়া পড়ে যায়নি কারণ সে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সুদৃঢ়করনে মনোযোগী ছিল শুরু থেকেই। ... ...