আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল যখন জানতে পারলাম আমায় মোটর বাইক চালিয়ে বাড়ি নিয়ে যাবেন সেই প্রথম ভদ্রলোক যিনি একের পর এক কমলা রঙ-এর গ্লাস খালি করে চলেছেন এবং ওনার কথাবার্তাও আমার একটু ইয়ে ইয়ে লাগছে। আমি নিশ্চিত হয়ে গেলাম আজ কিছু একটা ঘটবে। ওনার চেহারা খুব ভাল, জানালেন পাওয়ার লিফটার না ওয়েট লিফটার কিছু একটা ছিলেন এক কালে। হেলমেট টেলমেট নেই। খুব ভয়ে ভয়ে পিলিয়ন রাইড করতে উঠে দেখলাম, ওনার গলা কাঁপলেও হাত স্টেডি। রাত প্রায় সাড়ে এগারটায় আমায় বাড়ির দরজায় নামিয়ে উনি ফিরে গেলেন। ... ...
ভোটের ফলাফল বেরোনোর সময়ে আমি আর তথা সন্ধ্যা আর রাতের দিল্লি ঘুরে ঘুরে মানুষজনের প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম। দোকানে, রাস্তায়, বাড়িতে লোকে রেডিও টিভি খুলে বসে আছে। চায়ের দোকানে দোকানে উত্তেজিত আলোচনা চলছে, রাস্তার লোকেরাও অনেকে ক্রিকেট কমেন্টারি শোনার মত কানে রেডিও নিয়ে ঘুরছে। জনপথে কোনও এক ভিআইপির বাড়ির সামনে রক্ষী রেডিও শুনছিল, তার সামনে কোমরসমান উঁচু বালির বস্তার সারি, তার ওপর বন্দুক রাখা। আমরা নতুন কিছু শোনার আশায় দাঁড়িয়ে গেলাম। রক্ষী রেডিওর ভল্যুম কমিয়ে গম্ভীরভাবে আমাদের চলে যেতে বলল, ওখানে দাঁড়ানো নিষেধ। ... ...
চা-ওয়ালা ছেলেটা হো হো করে হাসল, তারপর বলল, “জমি কিনতে গেছিলাম।” আমার মুখ দেখে ছেলেটা কিছু একটা বুঝল। বলল, “বিশ্বাস হল না, না ?” আমি চুপ। সত্যিই বিশ্বাস হয়নি। “কিছু মনে করবেন না স্যার, আপনি কত মাইনে পান? পাঁচ হাজার? সাত হাজার? দশ হাজার?” আমি চুপ। ১৯৯৬ সালে দশ হাজার টাকা মানে বেশ ভাল মাইনে। আমি তার চেয়ে অনেক কম পাই। “আমার ডেইলি প্রফিট ৫০০ টাকা। সেল নয়, প্রফিট,” বলল ছেলেটা। ... ...
ডায়াল করার পর যান্ত্রিক কণ্ঠে ঘোষণা হত – ‘আপ কাতার মে হ্যায়, কৃপয়া প্রতীক্সা কিজিয়ে’। ‘কাতার’ মানে আরব দেশটির কথা বলা হচ্ছে না। জানানো হচ্ছে যে আপনি একটি লম্বা লাইনের কোনও একটা অংশে রয়েছেন যেখানে সবাই ঠিক সেই জায়গায় ফোন করতে চাইছে যেথায় আপনিও কারও সাথে বাক্যালাপ করতে অধীর হয়ে রয়েছেন। অবশ্য কত জনের ‘কাতারে’ দাঁড়িয়ে আছেন আর কত ঘণ্টা ‘প্রতীক্সা’ করতে হবে তা নিয়ে কোনও অ্যাডভাইসরি আসত না। ... ...
ডিপ্লোম্যাসি কাকে বলে? সে জিনিসটা হল এমন একটা আর্ট, যাতে একটা কুকুরকে ততক্ষণই বাবা বাছা করতে হয়, যতক্ষণ না হাতে ঢিল পাওয়া যাচ্ছে। এখন এরা হল রাজধানীর কুকুর; তাই পলিটিক্স, ডিপ্লোম্যাসি ভালোই বোঝে। আর বোঝে বলেই বাবা বাছা করার সুযোগটুকু দেয় না, খুব জানে যে সুযোগ দিলেই আপনি ঢিলের খোঁজ করবেন। তবু যে তারা আমাদের দাঁত খিঁচানো ছাড়া আর কিছু করেনি তার কারণ বোধ হয় দুবলা পাতলা বাঙালী বলে ক্ষমা ঘেন্না করে দিয়েছিল। ... ...
কী করব বলুন, আদতে বীরভূম জেলার লোক তো, ঢেঁকিতে চড়ে সেখানকার আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ে নারদ মুনির কী অবস্থা হয়েছিল জানেনই তো। অ, জানেন না, তাইলে শুনুন। বেলা তখন দশটা হবে। প্রভু নারায়নের নাম জপতে জপতে বীরভূমের ওপর দিয়ে যাচ্ছেন নারদ। হঠাৎ সোঁ সোঁ করে একটা অদ্ভুত শব্দ। কী ব্যাপার? মেঘ করল নাকি? ঝড় এল? না তো, আকাশ দিব্যি পরিস্কার। ওদিকে সোঁ সোঁ আওয়াজটা হয়েই চলেছে। ভয় পেয়ে স্পিড বাড়িয়ে দ্রুত চলে গেলেন নারদ। নারায়নের কাছে গিয়ে সব খুলে বলে জিজ্ঞেস করলেন, “ওটা কিসের শব্দ ছিল?” ... ...
হাঁদাভোঁদা আর নন্টেফন্টে-কেল্টুদার কীর্তিকাহিনীতে যে সব অতুলনীয় ধ্বন্যাত্মক শব্দ পাওয়া যেত তার মধ্যে ছিল ‘উলস চাকুস চুকুস’, জিভে জল আনা খাবার চেটেপুটে খাওয়ার শব্দ। অর্থাৎ রাজধানীর স্ট্রিট ফুড। দিল্লিতে থেকে সেই সুযোগের সদ্ব্যাবহার না করে কোন মূর্খ ? আলকাতরা মার্কা ছোলার তরকারি যারা রাঁধে তারা চুলও বাঁধে, মানে জিভে জল আনা চাটও বানায় স্যার। ... ...
এই ডবল ডোজের গোবর খেয়ে মহাভারতের শুদ্ধতা না হয় ফিরিয়ে আনা গেল, কিন্তু বাংলার পোড়া পেটের শুদ্ধতা বাঁচে কি করে? অফিসের ক্যান্টিনের খাবার টিফিন হিসেবে চলতে পারে, কিন্তু কালা ছোলে (আলকাতরার মধ্যে চাট্টি সেদ্ধ ছোলা ফেলে দিলে যেমন দেখায়) দিয়ে লাঞ্চ? অনেকে যেমন খায়, তেমনি পেপসি বা কোকাকোলা সহযোগে? নাঃ, অমন সাঙ্ঘাতিক ফিউশন আমার চলবে না। অতএব তিন কোর্সের লাঞ্চ চালু করলাম – ভাত, ডাল আর অমলেট। আমার আর তথাগতর সঙ্গেই এই অফিসে যোগ দিয়েছিলেন কলকাতার এক বাঙালি – দাশগুপ্ত। কালা ছোলে দিয়ে লাঞ্চ করতে বিরক্তি প্রকাশ করায় তাঁকে আমার মেনু সাজেস্ট করেছিলাম। তিনি নাক সিঁটকে বললেন, “অমলেট! সেটা তো লোকে ব্রেকফাস্টে খায়”। ... ...
তাঁরা দুঃখেষু অনুদ্বিগ্নমনা সুখেষু বিগতস্পৃহঃ। চা খেতে খেতে তাদেরই এক জন বললেন, "ইহার পূর্বে কি কোনও কেলেংকারি ঘটে নাই এই দেশে ? রাজনীতিকরা কি অভিযুক্ত হন নাই পূর্বে ? সে সকল লইয়া প্রবল তদন্ত হইয়াছে এবং তাহা যে অতি বৃহৎ গ্রিন ব্যানানা ব্যতীত অন্য কিছু প্রসব করে নাই, তাহা বুঝিতে চিন্তন বৈঠক নিষ্প্রয়োজন। অতয়েব, হে অর্বাচীন, তুমি নিশ্চিন্তে পানভোজনে নিরত থাক এবং বাহুমূলকে বাদ্যযন্ত্র রূপে ব্যবহার কর।’’ ... ...
একই টেকনিক যে সব জায়গায় কাজ করে না সেটা বোঝানোর জন্য সেদিন বাড়ি ফিরে ভজহরি বাবুর বাজার করার গল্প বলেছিলাম তথাগতকে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়-এর গল্প ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’-তে ‘বাজাড়ু’ ভজবাবুর দাম কমানোর কায়দা ছিল এক এক দোকানে এক এক রকম। কোথাও চড়া মেজাজ দেখিয়ে, কোথাও আবার হাপুস নয়নে কেঁদে। আমার রুম-মেটটি গল্প শুনে খুশী হল না, তার প্রেস্টিজে গ্যামাক্সিন লেগে গেছে, মুখে স্কচ ব্রাইট ঘসে দিয়েছে বাসের লোকটা। অমন চমৎকার মুক্তো ভুল জায়গায় ছড়িয়ে বসলাম। ... ...
তিনি হাতে ডু-অ্যাণ্ড-ডোন্ট লিস্ট ধরিয়ে দিলেন। তাকিয়ে দেখলাম ‘ডু’ তাতে বিশেষ কিছু নেই, কেবল ‘ডোন্ট’ আর ‘ডোন্ট’। ১) কম করে ছ-মাসের আগে ঘর ছাড়া চলবে না, ২) ঘরে বান্ধবী টান্ধবী আসা চলবে না, ৩) ভোজন চলতে পারে, তবে পান চলবে না, ৪) বেশি রাত অবধি আলো জ্বালিয়ে রাখা চলবে না, ৫) ভাড়া তিন তারিখের বেশি বাকি রাখা চলবে না, ৬) ১১-টার বেশি রাত করে ঘরে ফেরা চলবে না, ৭) ঘরের দেওয়ালে পেরেক টেরেক পোঁতা চলবে না, ৮) ইত্যাদি আরও অনেক কিছু চলবে না... ... ...
বাবা একদিন বললেন পনের-কুড়ি দিন তো হয়ে গেল, আর ফোন নয়; একবার ওই অফিসে গিয়ে খোঁজ নাও। আর এক বন্ধুও সেখানে চাকরি পেয়েছিল আর আমারই মত হাপিত্যেস করে বসে ছিল। দুজনে মিলে গেলাম ডালহৌসি পাড়ার সেই অফিসে যেখানে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আর গিয়ে বুঝলাম মহামতি নিৎসে কেন ওই কথাটা বলেছিলেন। কথাটা হল, “যাবতীয় খারাপ জিনিসের মধ্যে সবচেয়ে বাজে হল আশা, কারণ মানুষের যন্ত্রণাকে সে ব্যাটা দীর্ঘায়িত করে।” ... ...
বঙ্গলক্ষ্মী হোটেল। বৌবাজারের মোড়ে। বঙ্গলক্ষ্মী সত্যিকারের লক্ষ্মী। খাওয়ার জন্য আদর্শ হোটেল। রাণাঘাটের আদর্শ হিন্দু হোটেল বা বর্ধমানের ব্যানার্জি হোটেল বা আসানসোলের গঙ্গা হোটেল কিংবা শিলিগুড়ির চলন্তিকার সঙ্গে লড়তে পারতো কেবল কলকাতার বঙ্গলক্ষ্মী। রুই মাছ পোস্তও ছিল অসাধারণ। কলাপাড়ায় চুড়ো করে ভাত। ... ...
[ আমার চোখে দেখা আর হৃদয়ে্র অনুভবে জারিত এই ছোট্ট ছোট্ট চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এখনো মোছেনি আমার মাথার স্মৃতিকোষগুলোর থেকে। তার থেকে তুলে আনা এই মণি-কাঞ্চনগুলোয় যেমন পেয়েছি সাক্ষাৎ ভগবানদের, তেমনি কিছু কিছু সাংঘাতিক ঘটনা নেহাৎ-ই সহ্য করেছি উপায়ান্তরহীন যাপনে। ক্রোধে ফেটে পড়েছি মননে। রক্তচাপ বাড়িয়েছি বারংবার – মধ্যবিত্ত মনোভাবনায়। পেয়েছি আচম্বিত বাড়ানো হাত - অকাতর অকৃপন স্পর্শে। কৃতজ্ঞতাও হয়তো অব্যক্ত ছিল আমার পক্ষে সে সময়। তো এইসব ছিন্নবিচ্ছিন্ন ঘটনার কিছু রেশ গ্রন্থিত করছি প্রাণের আনন্দে। এখনো বেঁচে আছি, বেঁচে আছে আমার প্রজন্ম। তাই ভগবানের নামকীর্তন যেমন করেছি অক্লেশে, আবার সেই ‘আতঙ্ক’ চলচিত্রের মতো যেন কিছুই দেখিনি আমি হয়ে পাল্টেছি চরিত্র কিম্বা স্থান-নাম। মহাবীর-বুদ্ধ-নানক-রামকৃষ্ণের পুণ্যভুমিতে আজ হিংসা পৌনঃপুনিকতায় ছড়াচ্ছে বিদ্বেষের লাল আগুন। যে আগুন শুধুই ভস্ম-জন্ম আহ্বান করে। নিরুপায় আমি করজোড়ে মার্জনা চাইছি আমার এটুকু অপৌরুষেয়তার।] ... ...
"....মানুষটি ছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা। দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজ ধরে হাওড়ার দিকে গেলে ওনার বাড়ি পড়বে ডান দিকে। শোনা যায়, দ্বিতীয় হুগলি সেতু তৈরি হবার আগেই উনি জানতে পারেন যে ওনার সাধের বাড়িখানা ভাঙা পড়বে। সে সময় বাঙলার মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। গল্প ভেসে বেড়ায় এখনো যে উনি সরাসরি জ্যোতি বসুকে কালো টেলিফোনে ডায়াল করেই বলেন – হাওড়া থেকে আমি ডাক্তার শেতল ঘোষ বলছি। আপনি কি চান আমি আমার এখানকার বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে চিরকালের জন্যে বিলেত চলে যাই ? জ্যোতি বসুর প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান যে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর যে নকশা তৈরি করা হয়েছে তাতে ওনার বাড়ি সম্পূর্ণ ভাঙা পড়ছে। অবশেষে সেই রাস্তাকে একটু তেরছা করে বেঁকিয়ে সে যাত্রা ডাক্তারবাবুর বিলেত যাওয়া আটকানো হয়েছিল।" ... ...
[ তখন ছেলেটি প্রস্তুত হচ্ছে নরেন্দ্রপুরে ভর্তি হবে বলে। সেসবের জন্যে এখানে ওর কোচিং ক্লাস শুরু হয়। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন অলোক দেখে যে ছেলে কোচিং থেকে আগেভাগেই বাড়ি চলে আসে জ্বর আর হাত-পায়ে ব্যথার কারণে। হাত আর পা ফুলে ওঠায় স্থানীয় ডাক্তারবাবুদের শরণাপন্ন হতেই হয়। দুতিনবার ডাক্তার দেখানোর পরেও জ্বর আর কমে না ছেলের। ফোলাটাও বাড়তেই থাকে। এরমধ্যে রাজপুর অঞ্চলের এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি দেখেবুঝে স্টেরয়েড দিতে শুরু করেন।] ... ...
[ সেই চুরাশি’র ডিসেম্বরের সকাল নটায় উঠেছিলাম করোমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ স্লিপার ক্লাস এস থ্রি-তেই। হারাধনের দশটি ছেলেমেয়ে। মাঝের স্লিপারগুলোর ভাঁজ খোলা হতো রাতের বেলায়। অবরে সবরে দুপুরের ভাতঘুমের জন্যে লাঞ্চের পরেও। ওঙ্গলে—বিজয়ওয়ারা জং—ইলুরু পেরিয়ে সাঁইসাঁই ছুটে চলা করোমণ্ডল এক্সপ্রেসের পরবর্তি স্টপেজ রাজামুন্দ্রী আসবো আসবো করছে। প্রায় বিকেল হয় হয়। হঠাৎ আমার মা-র অস্বস্তি শুরু। বুকজ্বালা দিয়ে শুরু হয়ে চোখ উলটে প্রায় যায় যায় অবস্থা ! ] ... ...
[ বাচ্চা মেয়েটি তখন সদ্যই সন্তানসম্ভাবা। মেয়েটির গোটা শরীর জুড়ে শুরু হ’ল অসহ্য ব্যথা আর যন্ত্রণা। এপাশ থেকে ওপাশ ফিরতে পারে না সে এমন প্রলয়ঙ্করী ব্যথা। স্বাভাবিকভাবেই কলকাতার ব্যানার্জি, মুখার্জি, পাল, চৌধুরী ইত্যাদি নামী নামী ডাক্তারবাবুদের চেম্বারে ছুটোছুটি শুরু হ’ল। কিন্তু ব্যথা আর কমেই না। বরং অযথা ব্যথা কমানোর ওষুধ খেয়ে খেয়ে সে মেয়ে প্রায় নিস্তেজ। কিছুদিনের মধ্যেই বিছানা হ’ল তার আশ্রয়।] ... ...
[ কাঠ্ঠোকরা পাখীর জলে ছোঁ মারার মতো কেড়ে নিলেন কাগজখানা ক্যান্টিন ম্যানেজারের হাত থেকে। দেখলেন কি লেখা আছে তাতে ! এরপরে অর্ডার বেরোলো, - ‘আমি বসে আছি এখানেই। সকালের চা, ব্রেকফাস্ট, তারপরের ফলের রস আর আজকের নন-ভেজ লাঞ্চ এক্ষুনি আনান এখানে’ ইয়েসো ম্যাম ইয়েসো ম্যাম করতে করতেই ক্যান্টিন ম্যানেজার প্রায় পালাতে পারলে বাঁচেন। এর মধ্যে পেশেন্ট বলে উঠল ‘ম্যাম, অতো আমি এখন খেতে পারবো না ! কিছু একটু হলেই হবে আমার !’] ... ...
[ এবারে প্রশ্ন হলো আমার শরীরে এই হেপাটাইটিস ‘বি’ এলো কোত্থেকে ? এই দুই নার্সিং হোমের মাঝের সময়্টায় আমি তো নিই-ই নি কোনো রক্ত, বা ফুঁড়তেও হয়নি কোনো সিরিঞ্জের ছুঁচ ! তাহলে ? এ তো আর হাওয়ায় বা জলে ভেসে আসার জীবানু নয়। একমাত্র সেই লখীন্দরের বাসর ঘরের ছ্যাঁদার মতো আমার শরীরে এই বিষ নিঃসন্দেহে এসেছিল ওই সেই দক্ষিণ কলকাতার বিশিষ্ট নার্সিং হোমের - সেই স্টকে থাকা বিশেষভাবে পরীক্ষিত রক্তের থেকেই। আর তো কোনো মাধ্যমই ছিল না হেপাটাইটিস ‘বি’ আগমনের।] ... ...