কলেজ স্ট্রিট এলাকা নিয়ে গত সাড়ে চার দশকের অবলোকন ... ...
পরিবর্তনের এই সংসারে মৃত্যুর পর পুনর্জন্ম কার না হয় ? কিন্তু যে জন্মে বংশের সম্যক উন্নতি হয় সেই জন্মই (সার্থক) জন্ম। ... ...
গল্প লিখলাম। জানাবেন কেমন হয়েছে। ... ...
উপরে হচ্ছিল উড়াল রেলপথ, আর তাতে করে রাস্তাটিকে ভাঙা হয়েছিল ইচ্ছেমতন একটুও দয়া বা সন্মান না দেখিয়ে। ফলে জায়গায় জায়গায় খানা খন্দ তৈরী হয়েছিল, গ্রামের পাকা রাস্তার পাশে দেখতে পাওয়া লিকলিকে খন্দগুলোর সাথে এগুলোর পার্থক্য এইটুকুই যে ওরা প্রাকৃতিক, আর এরা কৃত্রিম। ... ...
আর অনিন্দ্যর দেওয়া সেই কিং সাইজ লেপ, যাকে আমি তোষক হিসেবেও ব্যবহার করতাম ? তার ভবিষ্যৎও পুরো অন্ধকার – মানে যদিও সেও কুকার আর স্টোভের মত ক্ষণে ক্ষণে আমার দুয়ারে এসেছিল, কিন্তু তাকে যে কার হাতে সঁপে দিয়েছিলাম সেটা ভুলে মেরে দিয়েছি। যাকগে, সেই ঐতিহাসিক লেপের অতীতটা বলে যাই, নইলে ইতিহাস আমায় ক্ষমা করবে না। ... ...
সুনি আশ্চর্য হয়ে গেল। মুমতাজ বাবল্স নামটা উচ্চারণ করেন না। দেবরূপের নাম আজ এতদিন বাদে এই প্রথম। দেবদূত তাঁর ডানা গুটিয়ে নিলেন। ফিরে আসছে হাত, পা, অভিমান। ক্ষোভ। তোয়ালে মোড়া শিশুকে বুকের গভীরে রেখে দিলেন মুমতাজ। রেখে দিলেন যন্ত্রণা নামক কীটটিকে। সে খাবে তাঁকে। তিলে তিলে। জানেন। ওরা ভালো থাক। ... ...
ত্রিদিবের সুগার ফ্লাকচুয়েশন হয় না! এমনিতেই সুগার ইজ সাইলেন্ট কিলার। আইজ, হার্ট অ্যান্ড কিডনিজ আর সাইলেন্টলি অ্যাফেক্টেড। ত্রিদিবের সাবধানে থাকা দরকার। ভীষণ সাবধানে। ওর ইচ্ছে করল এখনি বাবাকে একটা ফোন করে। কিন্ত এখন উঠে যাওয়া যায় না। এই মিটিং টা ভীষণ ফর্মাল। জেএনইউ থেকে দুজন এসেছেন। নিজেদের গোটা ফ্যাকাল্টি। একটা প্রাইমারি ডিসকাশনের পর বিভিন্ন ক্লাসের পাঠক্রম ঠিক করে নেওয়া হবে। বিশেষ করে অ্যায়ারনেস ক্লাসগুলো যেগুলো পাব্লিক ডিম্যান্ডে হচ্ছে। অন সোশ্যাল কজ। ন্যাক খুব প্রায়োরিটি দেয় এই ধরনের সোশ্যাল অ্যাক্টিভিটিকে ... ...
কোভিড আক্রান্ত পেশেন্টদের মধ্যে নিউরোলজিক্যাল মেন্টাল হেল্থ সাংঘাতিক ভাবে খারাপ হচ্ছে। অ্যাংজাইটি।মুড ডিজঅর্ডার।ডেমেনশিয়া। ফর্টিফোর পার্সেন্ট বেড়ে গেছে কোভিড সারভাইভারদের মধ্যে। ... ...
লোহরি গানে এবার কৃষক আন্দোলনের কথা যোগ হয়েছে। হঠা লো তিনো কানুন হো! কয়েকদিন আগেই এই ভিতর উঠোনে আর্মেনিয়ান খৃষ্টমাস পালিত হয়েছে।টুনিবাল্ব দিয়ে এখনো সাজানো আছে ।চাঁদোয়া যেন।টেবিলে মুড়মুড়া লাড্ডু,ভুগ্গা,ড্রাই ফ্রুট চিক্কি,পিন্ডি চানে, গুড় কি রোটি, কর্ন পালক কী টিক্কি। ... ...
ওরা বিমানবন্দরে নেমেই একটা গাড়ি ভাড়া করে ফেলল তিনদিনের জন্য। আর জার্মানি থাকতেই ওরা এয়ারবিএনবির মাধ্যমে একটা বাড়ি ভাড়া করে ছিল। গাড়ি নিয়ে সোজা বাড়িতে গিয়ে উঠলাম। এগুলা সবই আমার জন্য নতুন। ছোট্ট একটা বাড়ি, ঘরের ভিতরে প্যাঁচানো সিঁড়ি। নিচে বসার ঘর, রান্নাঘর আর বাথরুম। উপরে শোয়ার ঘর। ছোট্ট জায়গায় এমন কায়দা করে বাড়ি বানিয়েছে যে সব সুন্দর করে সুন্দর হয়ে গেছে। বাসা বুঝে নিয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলাম। এবং আমি পড়লাম বিপদে! ... ...
আপনাদের মতামত চাই ... ...
সমস্যাটা হল ইন্টারমিটেন্সির। সৌর বিদ্যুতের কথাই ধরুন। ভোরবেলা থেকে সন্ধ্যা বেলা পর্যন্ত সূর্যের আলো আছে বলে সোলার প্যানেলগুলি না হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হচ্ছে, কিন্তু রাত হয়ে গেলেই তারা কার্যত অকেজো। কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা তো রাত্রেবেলাও থাকছে...... ... ...
‘Wanderlust’ শব্দটা প্রথম শুনি ক্লাস সিক্স বা সেভেন-এ আগন্তুক সিনেমা থেকে। বলতে অসুবিধে নেই, তার সঠিক অর্থ (আক্ষরিক অর্থটুকু বাদ দিয়ে) বুঝতে অনেক সময় গেছে। হল্যান্ডে এসে ঠিক দুটি সপ্তাহান্ত পাচ্ছিলাম, তবে আপিসের কাজকর্ম বাদ দিয়ে বাকি সময়টুকু এক পল-ও নষ্ট করব না ঠিক করেছিলাম। অ্যানা ফ্র্যাঙ্কের বাড়ি ঘুরে আসার পর মনে হল, সব তো হল, নর্থ সী-কে তো একবার দেখা হলো না! তার উপর, হল্যান্ড দেশটা যে সমুদ্রতল থেকে সত্যিই অনেক নীচে তা-ই বা চাক্ষুষ হলো কই! হান্সের গল্প তো সেই ছোটোবেলায় কিশলয়ে পড়া, কিন্তু সেই সমুদ্রের তীরের উঁচু বাঁধই (এদেশে বলে ‘ডাইক’) বা দেখা হল কই! কাছাকাছি সমুদ্র দেখতে হলে আছে হল্যান্ডের রাজধানী দ্য হেগ (এখানে ডাচরা বলে ‘দেন হাগ’, নামটা শুনে কি মনে হয়, সে বিশ্লেষণে আর যাবো না), তারপর আপিসেও সহকর্মীরা বলল, রটারড্যাম-ও ঘুরে আসতে পারো। তো ম্যাপ ইত্যাদি দেখে যা বুঝলাম, একটু কষ্ট করলে দুটো শহর-ই একদিনে ঘুরে নেওয়া যায়। ... ...
একা থাকতে কিছুটা ভয়ই পাই আমি। আকাশপাতাল চিন্তা করতে একেবারে ভালবাসি না, তবু ফাঁকা ফ্ল্যাটে একা থাকলে সেসব কীভাবে যেন এসেই যায়। তাদের থেকে পালাতে চাইলেই আমি বাইকে উঠে বসে এক্সিলারেটর ঘোরাই। গ্যারেজ থেকে বেরিয়ে গলিতে আসতে না আসতেই বুঝতে পারি আমি পালাতে সক্ষম। কারণ বাইক চালাতে চালাতে অন্য কোন চিন্তা মাথায় আসে না। আসা সম্ভব নয়। এলে, দুর্ঘটনা ঘটে যাবে। ... ...
লাঞ্চ নাগাদ ২৯৫/৫, সেমুর নার্স আউট । সাত নম্বরে ব্যাট করতে এলেন গারফিল্ড সেন্ট অবারন সোবারস। জীবনে সেই একদিনই তাঁর ব্যাটিং চাক্ষুষ করেছি । একি লাবণ্য প্রাণে ! অফের বল টেনে স্বচ্ছন্দে লেগে ঘোরালেন ,একি লাবণ্য প্রাণে ! অফের বল টেনে স্বচ্ছন্দে লেগে ঘোরালেন , ব্যাটিং নয় এ যেন একটা উচ্চকিত হাসি, দূরে গঙ্গায় জাহাজের ভেঁপু বাজলো তিনি খেলে গেলেন এই ছায়া আলোকের আকুল কল্পনে , এই শীত মধ্যাহ্নের মর্মরিত ইডেনে ! এগারোটি বাউনডারি সহ সোয়া ঘণ্টায় ৭০ রান ! পরের দিন নতুন কায়ায় আবির্ভূত - কখনো স্পিন কখনো মিডিয়াম পেস । একটা শিখতে জীবন কেটে যায় আর ইনি পারেন না এমন কিছু নেই! একই অঙ্গে এতো রূপ ?‘ ... ...
রেভনিউ মিনিস্টার। মিনিস্টার বটে বাবা! উনিশশো তিরিশের কলোনিয়াল পাঞ্জাবের পি এম সিকান্দর হায়াতের ক্যাবিনেটের মন্ত্রী। নাইটহুড পেয়েছিলেন ছোটুরাম। হো! জাঠের রক্ত! ছোটুরামের জমিন্দার লিগে হিন্দু, মুসলমান, খেরেস্তান সব ছিল। ফাজিল হোসেনের সঙ্গে যোগ ছিল। হো! কৃষক ঋণে সুদের ওপর সুদ চাপানো বন্ধ করেছিলেন ছোটুরাম। পাঞ্জাব ডেবটরস প্রোটেকশন অ্যাক্ট। আর পাঞ্জাব রিলিফ ইনভেবটেডনেস অ্যাক্ট। সুদখোরদের হাত থেকে বাঁচল কৃষক। আর বাঁচল জমির দখল পেয়ে। কিন্ত জল? পানি? হো! ... ...
দেহটা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল পিঠের সিংহাসনটাতে, কিন্তু তেলের কাঁটার সাথে সঙ্গত করতেই কিনা, গাড়িটি হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেল। সিগনাল বাতি নেই, তাও এই জ্যাম! ‘’রাস্তায় নামলেই পাব্লিকের নাটকের আল্লাদ উডে… পাংখা গজান আরম্ভ করে…’’, বিড়বিড় করতে থাকে মারুফ গায়ের ক্যাটক্যাটে হলদে গেঞ্জিটা দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে। গেঞ্জিটা বুক পর্যন্ত উঠাতেই বেরিয়ে পড়ে রোমশ শরীরটা, এক রত্তি মাংস বাড়তি নেই কোথাও, হাড্ডিগুলো গড়েপিটে উঠেছে সেখানে বাইশটি বছর ধরে, তেল-মসলার কারুকাজ ছাড়াই। কিন্তু এই শরীরটারই চাকায় চাকায় বেজে চলে রাজপ্রাসাদী তান, যখন এক মনে আল্লা-খোদা করে যেতে থাকে তার পিছনে দন্ডায়মান এক দল নিরীহ ও নিপীড়িত যান! সংগীতটা আরো সুমধুর হয়ে উঠে, যখন সে বড় রাস্তা ছেড়ে গলিতে ঢুকে পড়ে। তখন জায়গার অভাবে তার জ্যাকটাকে সাইড দিতে চেয়েও ব্যর্থ হয়ে মরাকান্না জুড়ে দেয় আগের থেকেও নিরীহ ও নিপীড়িত কিছু যান। মারুফ আপন মনে হেসে উঠে! এমন কোন প্রাণী আছে যে রাস্তার বুকে চড়ে বেড়াবে আর তাকে সমীহ করবে না? তাকে নিয়ে রাস্তার সবার দুশ্চিন্তা, অথচ কারো মুখে রা পর্যন্ত নেই! পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, এমনকি মন্ত্রী- মিনিস্টারের গাড়িকে গুণতে চায় না পাব্লিক আজকাল! কিন্তু তাকে কেউ কিছু বলে না, গালাগালির তুবড়িও ছুটে আসে না। কি করবে, মানুষ যে ময়লা সহ্য করতে পারে না; টিয়ার গ্যাস, গুলি হজম হলেও ময়লা হজম হতে চায় না তাদের! বাসার পায়খানাটার মতই ঘেন্না একে তাদের! ... ...