কোনটা ভাল কোনটা খারাপ - এই বোধ ব্যাক্তিবিশেষে আলাদা। মানুষ শুরুতে বাড়ির বড়দের থেকে শিখেছে, পরে ইস্কুল কলেজ পাড়ায় খেলতে গিয়ে বা পড়াশোনা করার সময়ে তার ধারণা কিছুটা বদলে গেল, অনেক নতুন পরিস্থিতি এল তারও ভাল-মন্দ সম্পর্কে ধারণা হল। আবার, ছাত্রাবস্থার শেষ ও পরবর্তী কাজের জায়গার শুরুর দিকে তারও বদল হয় বটে, কলেজ - বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখার ব্যাপ্তি ইস্কুলের চেয়ে স্বাভাবিক ভাবেও বড়, কিন্তু আদত মূল ব্যাপারটার খুব একটা পরিবর্তন হয় না। এই মূল ভাল-মন্দের ধারণা, যা খানিকটা মূল্যবোধ বলব বা ইংরাজিতে “ভ্ ... ...
সে ছিল এক রংদার কফি হাউসের দুনিয়া– এক টেবলে ভাগাভাগি করে পাশাপাশি বসে সত্যজিৎ রায়, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, কমলকুমার মজুমদার, মৃণাল সেন, সমর সেন, ও পাশের টেবলে গর্জন করছে সদ্য-ছাপা কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর প্রথাচ্যুত জোয়ান কবিদের দঙ্গল! এই ধরতাইটুকু, এই দীপ্ত আধুনিকতা এবং পঞ্চাশের দশকের কলকাতার প্রেক্ষাপট বুঝে না-থাকলে আজকের কবরখানা কলকাতায় দাঁড়িয়ে সত্যজিতের শতবর্ষ-সেলিব্রেশন অর্থহীন হয়ে যায়। ... ...
ললিত স্যার না থাকলে দেবু দত্তগুপ্তর লেখার সাথে হয়ত কোন দিনও পরিচয় হত না। তখন দশম শ্রেণী, স্যার একদিন আলোচনা প্রসঙ্গে একটি বইয়ের কথা বললেন, যা সারাংশ দিলেন তাতে করে খুবই আগ্রহ জন্মাল। এটাও বললেন যে বইটা আমাদের ওই বয়সী ছাত্রদের সবারই পড়া উচিত অন্তত একবার করে। ওই বই তখন আমাদের ওদিকের দোকানে বিক্রী হত না – তাই স্যারই আনিয়ে দিলেন কোথা থেকে যেন। হাতে এসে পড়ল লাল-কালো প্রচ্ছদের একশো তিরিশ পারাত বইটি – “যে পাহাড়্গুলি ডিঙোতে চাই”। আমাদের এলাকা তখন প্রবলভাবে বামপন্থী – স্কুলের স্যাররাও বেশীর ভাগ বাম মতাদর ... ...
ভাগ্যের ফেরে জলধরবাবু আবার পরভূমে নিজবাসী। সেও নয়-নয় করে আজ তিন বছর হতে চলল। আবার সেই সিলিকন ভ্যালি। আবার সেই হাঁপ-ধরানো ঊর্ধশ্বাস। আবার সেই জিনিসের দাম দেখে খাবি। আবার সেই চাকরি নট হবার ভয়। সাড়ে তিন বছর যে সময় দিয়ে ... ...
স্কটিশ ক্যাফে*******************************(১)মহাযুদ্ধের ক্ষত তখনও ইউরোপের শরীরে শুকোয়নি, তার মধ্যেই বেজে উঠল আরো একটা যুদ্ধের দামামা। শক্তি বাড়িয়ে হিটলার তখন ইউরোপের সম্রাট হবার উচ্চাকাঙ্খা পোষণ করছে। কয়েক বছরের মধ্যেই মারা যাবে নয়-দশ কোটি মানুষ। কিন্তু সেই মহামৃত্যুমিছিলের পাশাপাশি একটা আলোর রেখাও ছিল। দুই যুদ্ধের সমসাময়িক সময়্টা সমস্ত দিক থেকেই ইওরোপে আইকনিক। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে উর্বরতম সময়। গোটিঙ্গেনে তখন গাউসের সোনার তরী সোনার ফসলে ভরে ঊঠেছে। কেম্ব্রিজ-ইকোল পলিটেকনিক-কোপেনহেগেন- ... ...
(একটা ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে এই লেখাটা আগে লিখেছিলাম। ছাপা হয়েছিল অন্যত্র। তবে আজকের সময়ে ফের বিষয়টা নতুন করে মনে পড়ল। আজকের বাস্তবতা এবং পরিপ্রেক্ষিত অনুযায়ী লেখাটা পরিমার্জন করে এখানে দিচ্ছি।)চারিদিকে বিরাট তর্ক-বিতর্ক। ভারত-বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের মধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে বিভাজন। কেউ কেউ ভাষাগত আত্মপরিচয়ের ভিত্তিতে নির্ধারণ করছেন তাদের অবস্থান এবং সমর্থনের অভিমুখ। আর অন্য বড় অংশের লোকেরা রাষ্ট্রীয় মানচিত্রের নিরিখে নির্ধারণ করছেন তাদের অবস্থান ও সমর্ ... ...
পশ্চিমবঙ্গের সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের মসনদ ধর্মান্ধ হিংস্র মৌলবাদী শক্তির হাতে চলে যেতে পারে, এমন সম্ভাবনায় আতঙ্কিত ছিলেন এ রাজ্যের গণতন্ত্র-প্রিয় মানুষ। ফলপ্রকাশের পর যখন দেখা গেল যে তা ঘটেনি, তখন তাঁরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও, উঠে এসেছে এক অস্বস্তিকর প্রশ্ন। এ রাজ্যের পূর্বতন ক্ষমতাসীন বাম শক্তি, বিশেষত তার বড় শরিক সিপিএম, কি মৌলবাদী শক্তিকে গোপনে সাহায্য করেছে? অর্থাৎ, তাদেরকে ক্ষমতা থেকে যারা হঠিয়েছে, সেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি ক্রোধ ও প্রতিহিংসা বশত তাদের কর্মী ও সমর্থকেরা কি বিজেপি-কে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে চেষ্টা করেছিলেন? নির্বাচনের আগে থেকেই এ হেন সম্ভাবনার কথা হাওয়ায় ভাসছিল কোনও কোনও মহলে, এবং নির্বাচনের পর তার ‘প্রমাণ’ মিলেছে বলে দাবি করছেন কেউ কেউ। প্রশ্ন হচ্ছে, নির্বাচনী ফলাফল থেকে সত্যিই এমন ইঙ্গিত মেলে কি? সেটাই আজ আমরা এখানে পর্যালোচনা করে দেখব। ... ...
মিছিমিছি খেলা বোধহয় আমাদের সবারই ছিল। ছোটবেলায়।এই যেমন দরজার কড়া আর হুড়োকোতে টিউবওয়েলের মত ঘ্টাং ঘটাঁ করে জল বের করে কলসীতে জল ভরা, সেই কলসী কাঁখে নিয়ে, কত উঃ আঃ করে চলাফেরা করে রান্নাঘরে এনে তার থেকে গড়িয়ে বাড়ির সবাইকে জল দেওয়া, প্লাস্টিকের সবুজ স্টোভটাতে চা বসানো, প্লাস্টিকের লাল কাপ প্লেটে সবাইকে সেই চা দেওয়া, মা, বাবা , দাদা। ঠাকুমা, পিসি, মাসি, কাকা , মামারা এলে আবার প্লেট শর্ট পড়লে মেল থেকে কেনা কাঠের কাপের সেটটাও উদ্বোধন ক'রে ফেলা। সকালে আপিস যাবার অগে রান্না ... ...
আমার ছোটবেলার পাহাড় ঘেঁষা মফস্বলের বাড়িতে একটা প্রাচীন লোহার সিন্দুক ছিল। ডালার ওপর একটা ফ্ল্যাট পদ্মফুল। তার মাঝে সরু একটি নিখুঁত কাটা আয়তক্ষেত্র । চাবিটাও তিনসেরি। মাঝে মাঝে যখন খোলা হতো, মনে পড়তো আলিবাবার খুল যা সিম সিম। ছোঁবার যো ছিল না,ঐ ডালা হাতে পড়লে থ্যাঁতলানো টিকটিকি। শুধু একবার কয়েন, অলংকার,দলিল নামিয়ে পরিষ্কার করার সময় মায়ের লেখা একটা একটা লুকোনো চিঠি আবিষ্কার করেছিলাম। রুলটানা কাগজে গোটা গোটা অক্ষর, প্রাপক আমার বাবা,-----" আমার গায়ের রঙ কালো বলে অনেক লাঞ্ছনা সইতে হয়। আবার মেয়ে হলো, ত ... ...
ফুলশয্যার রাত অবধি অহনার ধারণা ছিল, সব বাড়িরই নিজস্ব কিছু পুরোনো গল্প আছে। প্রাচীন বালাপোষ আর জরিপাড় শাড়ির সঙ্গে সেইসব কাহিনী মথবল দিয়ে তুলে রাখা থাকে। তারপর যেদিন আত্মীয় বন্ধু বহু বৎসর পরে একত্রিত- হয়ত বিবাহ, কিম্বা অন্নপ্রাশন, অথবা শ্রাদ্ধবাসর- সেই সব গল্পকথা আলমারির অগম সব কোণ থেকে আলগোছে বের করে এনে রোদে দেওয়া হয়। এমনি করে, প্রপিতামহর খুল্লতাত অথবা অতিবৃদ্ধ মাতামহীর পিতৃশ্বসাপতির একটি দুটি আখ্যান , ব্রোকেন টেলিফোন খেলায় যেমন হয় আর কি- মুখে মুখে ফেরে আর একটু একটু করে বদলে যেতে থাকে। আসলে, অহ ... ...
ভারতবর্ষে যদি রেলে যাতায়াতকে কেবল পরিবহন বলে কেউ ভাবেন তা হলে তিনি নির্ঘাত বিশাল একটা ভুল করে বসেন না জেনেই। ভারতে রেলে যাতায়াতের দার্শনিক নাম হল – রেলযাত্রা। যে কোন তীর্থ যাত্রার মত গুঁতো গুঁতি, না বেঁচে ফিরে আসার ভয়, সব খুইয়ে বসার আশঙ্কা এই সব সারক্যাষ্টিক জিনিস পত্র যদি বাদও দিই, তাহলে আমাদের রেলকে ‘যাত্রা’য় উন্নীত করতে যাদের অবদান অনৈস্বীকার্য তারা হল ট্রেনের ‘হকার’ এবং তাদের প্রতি আমাদের সমাজিক স্নেহ। ভারত থেকে বিদেশে এসে যখন প্রথমদিকে কেউ কেউ ট্রেনে চাপেন তা হলে বিশাল একটা ঝটকা ... ...
আমার একটি প্রতিপাদ্য, বহুদিন ধরেই, ছিল এবং আছে। সেটি হল, বছর দশেকের জন্যে রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যাপারটা বাঙালির জীবন থেকে তুলে দেওয়া উচিত। কেউ গাইবে না, কেউ শুনবে না, কেউ শেখাবে না, কেউ শিখবে না, টিভিতে দেখাবে না, রেডিওতে শোনাবে না, বিজ্ঞাপনে লাইন দেবে না ইত্যাদি। দশ বছর ডিটক্সিকেশনের পরে বোঝা যাবে রবীন্দ্রনাথ কতটা নিজের জোরে দাঁড়াতে পারেন। নইলে গলায় একটু সুর খেললেই পয়সা দিয়ে রেকর্ড বের করে শিল্পী হয়ে গেলাম - এ অনেক হয়েছে। অনেক শুনেছি দুশোটি গানের চর্বিত-চর্বণ। গেল কুড়ি-তিরিশ বছরে একজন গায়কও কি উঠেছে ... ...
মুশকিল হচ্ছে এই সব হচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়! আর এখানেই রোমানিয়া পিছিয়ে গেছে পশ্চিম ইউরোপ থেকে। গেম মারা চলছে, এখন গরমের সময়, এখনও চলছে, শীত আসলেও চলবে। সমস্যার গোরায় হাত না দিলে গেম মারা থামান যাবে না। গেম মারার দিক থেকে বাংলাদেশ শীর্ষে। আর সাথে সাথেই আছে ভারত পাকিস্তান। ( এখানে কিন্তু ভারত পাকিস্তানে কোন ভেদাভেদ নাই। পাকিস্তানি দালাল ধরে ভারতীয়রা হরহামেশা গেম মারছে। পাকিস্তানি নাপিতের জন্য সবাই বসে থাকে, কখন আসবে আর সস্তায় চুল কাটাবে! ) নেপালের বেশ সুনাম রোমানিয়ায়। তারা গেম মারে না বা খুব কম মারে। যতদূর জানি সামনে এই তিন দেশ থেকে আর লোক নিবে না রোমানিয়া। কিন্তু যদি শ্রমিক বান্ধব না হতে পারে তাহলে আসলে কোন কাজই কাজে আসবে না। কেন যায় এইটার উত্তর বের করতে পারলেই গেম মারা বন্ধ হবে। আমি একজন ইথুইপিয়ার নাগরিককে চিনি, তার সঙ্গী সাথী সব গেম মেরে চলে গেছে, তিনিও যাবেন। কাজেই গেমের দোষ শুধু আমাদের দিয়ে আমাদেরকে ব্ল্যাক লিস্ট করে আসলে কোন কাজ হবে না। সমস্যার গোরায় যেতে হবে। ... ...
সঠিক সংজ্ঞা গুলি মেনে নিলে আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম গণহত্যার কৃতিত্ব জার্মানদের প্রাপ্য। স্থান জার্মান দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকা, আজকের নামিবিয়া, কাল ১৯০৪। হেরেরো নামের স্থানীয় উপজাতির বিরোধিতায় ক্ষিপ্ত জার্মান সেনাপতি লোথার ফন ত্রথা নামের এক সেনাপতি লিখিত আদেশ দেন – "হেরেরো জাতিকে সমূলে বিনাশ করতে হবে, শুধু বন্দুকের গুলিতে নয়, তাদের ঠেলে পাঠাতে হবে এমন অঞ্চলে যেখানে জল নেই। "আশি হাজার হেরেরো নিধনের সা পরে জার্মান কাইজারকে লিখলেন, "যেসব পুরুষ নারী ও শিশুকে পেয়েছি তাঁদের নির্মমভাবে (গ্নাদেনলোস) হত্যা করেছি। এদের কারো কাছে অস্ত্র ছিল না।" ফিল্ড মার্শাল আলফ্রেড ফন শ্লিফেন সমর্থনে বলেন, "একটা জাতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই – তাদের বিনাশ আমাদের লক্ষ"। হিটলারের বয়েস তখন পনেরো, গোয়েরিঙের এগারো, দুনিয়ার আলো দেখতে আইখমানের দু বছর বাকি। ... ...
আমি গত ১৭ জানুয়ারি ‘গুরুচণ্ডাঌ’ ব্লগ সাইটে একটি লেখা লিখেছিলাম কোভিড-অস্বীকারপন্থী এবং ভ্যাকসিন-বিরোধী ভুয়ো গুজব ও হিড়িকের বিরুদ্ধে, কিঞ্চিৎ বিরক্ত হয়েই। ‘চারনম্বরপ্ল্যাটফর্ম’-এ যে এর বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী ভাষায় একটি লেখা বেরিয়েছে, আমি তা মোটেই টের পাইনি, কয়েকদিন আগে আমার বন্ধুরা সে দিকে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করার আগে পর্যন্ত। লেখাটি লিখেছেন জনৈক চিকিৎসক, আমার অপরিচিত। লেখাটির মধ্যে ‘সাত জার্মান, জগাই একা, তবুও জগাই লড়ে’ গোত্রের বেশ এক রকমের একটা বীরত্বব্যঞ্জক ভঙ্গি আছে। তাবৎ বিশ্বের বিলিয়নেয়ার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্তা, বড় বড় ওষুধ কোম্পানির মালিক আর পৃথিবীর সমস্ত দেশের সরকারি স্বাস্থ্য-কর্তারা সব একযোগে ভ্যাকসিনের সিরিঞ্জ উঁচিয়ে তেড়ে আসছে, আর তিনি ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের ছাতার বাঁট বাগিয়ে একা লড়ে যাচ্ছেন, এই রকম আর কি! সে লেখার প্রেক্ষিতেই, আমার এই জবাব। ... ...
বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কে আমাদের বাঙালীদের কিছু মিথ দিয়ে শুরু করা যাক। আমাদের চোখে বৈজ্ঞানিক মানে একজন রকস্টার, একজন আত্মকেন্দ্রিক উন্নাসিক ম্যাজিসিয়ান। গল্পে, কমিক্সে তাই যখন বিজ্ঞানীর চরিত্র আসে, সে আর পাঁচটা লোকের মত নয়। পুলিশের ডিটেকটিভের সাথে শার্লক হোমসের যা তফাৎ, একজন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানের শিক্ষকের সাথে প্রফেসর ক্যালকুলাস, ফিলিয়াস ফগ, বা প্রফেসর শঙ্কুর তফাৎ তার চেয়ে অনেক বেশী। এরা ঠিক মাটির মানুষ নয়। এরা নাহয় কল্পবিজ্ঞানের বিজ্ঞানী। কিন্তু আমরা যখন ফাইনম্যানের কথা পড়ছি, বা ডারউ ... ...
শিক্ষিত মধ্যবিত্তের তাহলে কী হবে? অ্যাবানডানড? যারা এই দুঃসময়েও পার্টিকে ভোট দিল, পাশে দাঁড়াল, তারা অপাংক্তেয়? তা অবশ্যই নয়। কমিউনিস্ট পার্টির প্রাথমিক অভিমুখ অবশ্যই গরীব, মেহনতি মানুষ - কৃষক, শ্রমশিল্পী - কিন্তু মধ্যবিত্ত মানুষ তার বাইরে পড়ে না। বহু মধ্যবিত্ত পরিবার আসলে নামেই মধ্যবিত্ত, শ্রেণীগতভাবে তাদের অবস্থান নিম্নবিত্তের থেকে খুব একটা ভাল নয় - এটা ভুললে চলবে না। কিন্তু "শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ" না হলে এই মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ কোথায়? এই প্রশ্নটাও, আবারও, প্রশ্নটা যত কঠিন, উত্তরটা তত নয়। বৃহৎ শিল্প মধ্যবিত্তের কর্মসংস্থান বাড়ায় বলে যে মিথ প্রচলিত আছে, সেই মিথ বার্স্টিং করার সদিচ্ছের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এই প্রশ্নের সহজ উত্তর। ... ...
নয়ই নভেম্বর উনিশশ উনননব্বুই : কাস্তে নয়, হাতুড়ি দিয়ে এমনকি খালি হাতে জনতা যখন বার্লিন বিভাজক প্রাচীরটি ধ্বংসের প্রয়াসে উন্মত্ত, ভ্লাদিমির পুতিন নামক এক কে জি বি অফিসার পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা এজেন্সি স্টাজিকে ফোন করে পাঁচ ট্রাক ভর্তি ফাইল আনিয়ে পেট্রল সহ তাতে অগ্নি সংযোগ করছেন। তার আগে অবিশ্যি (আপন ভাষ্য অনুযায়ী) মস্কোয় ফোন করেছিলেন। গভীর বেদনার সঙ্গে পুতিন বলেন, মস্কো নিশ্চুপ ছিল সেদিন। সেই পুতিন দশ বছরের ভেতরে রাষ্ট্রপতি হয়েই বলেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিনাশ বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড়ো ভূরাজনৈতিক বিপর্যয়। ... ...
আমি শিক্ষাবিশেষজ্ঞ নই। এবং আমার দৌড় কলকাতা থেকে সিঙ্গুর অবধি। সেটাও নেহাৎই মধ্যবিত্ত বৃত্তে। সেই বৃত্তে আমি কী দেখছি? আমার পরিচিত বন্ধুবান্ধবরা প্রায় কেউ তাঁদের ছেলেমেয়েদের রাজ্য বোর্ডের ইশকুলে পড়াননা। যাঁরা রাজ্য বোর্ডের শিক্ষক, তাঁরাও না। তার নিশ্চয়ই অনেক কারণ আছে। কিন্তু মোদ্দা কথা হল, কলকাতা থেকে সিঙ্গুর অবধি, এই যে তিরিশ কিলোমিটার এলাকা, স্যাম্পল সার্ভে না করেই বলতে পারি, যে, রাজ্য বোর্ডের ইশকুল গুলো মধ্যবিত্তের প্রথম পছন্দ তো নয়ই, বরং অগতির-গতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। আমরা যে ইশকুলগুলোয় পড়েছি, যেগুলো নামী ইশকুল বলে জেনেছি, সেগুলো সমেত। দুর্নীতি, ইশকুল-বন্ধ করে দেওয়া, এই ব্যাপারগুলো দিয়ে এই দুচ্ছাইকরণ প্রক্রিয়াটাকে ক্রমশ ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। ... ...
বিকেলের চায়ে হবে মুচমুচে নিমকি চেবানো/পুরনো দিনের কথা বলবে না দেখো একজনও/হয়ত উত্তমকুমারের প্রসঙ্গ তুলে/পারমিতা দেবে হাত মাথার লুটিয়ে পড়া চুলে/তারপর শুরু হবে কার ছেলে ফিজিক্সে ভালো... সুমনের এই প্রায় বিস্মৃত গানটার কথা আমরা শুনেইছিলাম উত্তমকুমার পড়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেই। উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেনের ছবি, আমাদের পরিভাষায় পঞ্চাশের দশকের বাংলা সোশ্যাল, তখন এমএ স্তরে পড়তে হচ্ছে। আমি বড় হয়েছিলাম ফিল্ম সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে, বাড়িতে ফিল্ম দেখা বারণ ছিল অনেককাল। ফলে জনপ্রিয় ছবি একেবারে না দেখে ব ... ...