তেমনই আমরা জানতে পারব না এলেন কেন উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হলেন। কেন আর দশটা ইউরেশিয়ান মেয়ের মত একটু পড়তে শেখা, একটু সেলাই-ফোঁড়াই , একটু নাচতে শেখা এই যা সব নিয়ে সাধারণ ইউরেশিয়ান মেয়েরা সন্তুষ্ট থাকত,এলেন কেন তার সীমানা ছাড়িয়ে বাইরে তাকাতে চাইলেন? তখনকার সাধারণ চাকুরিজীবি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বাড়িতে কি খুব পড়াশোনার চর্চা ছিল, বিশেষত মেয়েদের মধ্যে? ১৮৮২ সালের তথ্য থেকে পাই তার থেকে দেখা যায় যে ইউরোপিয়ান আর ইউরেশিয়ানদের মধ্যে, অন্তত কলকাতায়, প্রাইমারি বিভাগে মেয়েদের ভর্তির হার ছেলেদের প্রায় দ্বিগুণ। খুবই আশ্চর্য তথ্য। তবে মিডল স্কুলে গিয়েই এই অনুপাত উলটে যাচ্ছে। বিভিন্ন আংলো-ইন্ডিয়ান স্মৃতিকথার টুকরো-টাকরা যা হাতে এসেছে, তার থেকে এও ধারণা করা যায় যে ইউরেশিয়ান মেয়েদের অক্ষরজ্ঞান দরকার এই অবধি ঠিক আছে, তবে তার থেকে খুব বেশি শিক্ষার দরকার বলে কেউ ভাবেন নি সেই সময়। ওই প্রাইমারি স্কুলই ঢের। অবশ্য এই জনগোষ্ঠীর ছেলেরাও যে খুব বেশি দূর পড়াশোনা করতেন এমন তো নয়। আলাদা করে শ্রেণিবিভাগ করা থাকত না বলে একদম সঠিক করে বলা শক্ত, তবে এলেন যে বছর এন্ট্রান্স বা এফ এ পাস করেছেন সেই সেই বছরের তার সহপাঠীদের তালিকায় কিন্তু সাহেবি নামের ছাত্রের সংখ্যা নেহাতই হাতে গোণা। ... ...
অনেকদিন বাদে আজ ছাতে উঠেছে ও। ছাতে এত সুন্দর বাগান করেছে মা! দেখে অবাক হয়ে গেছিল। আইআইটি জয়েন করেছে পরের থেকে খুব কম বাড়িতে আসে। এলেও ছাতে ওঠা হয়না। ওর গৃহবন্দিত্ব না। ঘরবন্দিত্ব চলছে। স্বেচ্ছানির্বাসন। সারা পৃথিবী থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিতে হয় মাঝে মাঝে। একেবারে একটা দ্বীপের মধ্যে। খুব বেশিই ছুটছিল যেন! একটার পর একটা সেমেস্টার।টপ করে যাওয়া। না করতে পারলেই ফ্রাস্ট্রেশন। বাড়িতে এখন আর কিছু বলে না। কিন্তু ছোটবেলা থেকে ও একটা অদৃশ্য চাপ অনুভব করে। দাদা ফার্স্ট হয়েছে।তোমাকেও হতে হবে। দাদা এটা পারে। তোমাকেও পারতে হবে। ... ...
বেশি ভ্যান্তারা করে লাভ নেই। মহারাষ্ট্র থেকে দিল্লি, বিহার থেকে বাংলা, উহাদের ছক একটাই, এবং সেটা খুব পরিষ্কার। সিবিআই-ইডি-গ্রেপ্তার দিয়ে আঞ্চলিক বিরোধী সরকারগুলোকে নড়বড়ে করে দাও। চাপে রাখো। সত্যিই দুর্নীতি থাকলে তো সোনায় সোহাগা, নইলে বানিয়ে নাও। তারপর, চাপে থাকতে-থাকতেই খেলে দাও দাঙ্গার তাস। একে হিটলারি মতে বলা হত ব্লিৎসক্রিগ। ঝটিকা আক্রমণ। নানা জায়গায় ঝড়ের গতিতে শত্রুর সামনের লাইনে ফুটো করে দাও। তারপর সামনে চলো। দেখবে শত্রু নালে-ঝোলে হয়ে পিছনে পড়ে আছে। ... ...
গত ১৫/৫/২০২১ অর্থাৎ ঈদের ঠিক পরেরদিন শান্তিপুর থানার অর্ন্তগত বেলতলার বাবলাবন গ্রামে স্থানীয় শনি মন্দিরের গ্রিলে গোমাংস ঝুলিয়ে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। রাস্তা অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ, গ্রেফতার ও মারপিটের ঘটনাও ঘটে। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস শেল ও ফাটায়। এলাকায় এখন ও উত্তেজনা রয়েছে । এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এপিডিআর কৃষ্ণনগর শাখা ও শান্তিপুর জন উদ্যোগের পক্ষ থেকে ১৯/৫/২০২১ তারিখে একটি তথ্যানুসন্ধান করা হয়। ... ...
ফেব্রুয়ারি ২০, ১৯১৮। সেদিন সকাল থেকেই বুকটা দুরুদুরু কাঁপছে। আজ আমার ১৮ বছরের জন্মদিন। সকাল থেকে গোলাপের তোড়া আর হরেক কিসিমের কেকে ভেসে যাচ্ছে বোম্বের বাড়িটা। বাবা-মা দু’জনেই মহা-ব্যস্ত, একমাত্র মেয়ের জন্মদিন বলে কথা। বাবুর্চি-খানসামায় ঘর ছয়লাপ। আমাদের বোম্বের বাড়িটায় তো সব অতিথিকে বসানোই যাবে না। সামনের লনটায় প্রচুর আয়োজন করা হয়েছে। খাবার-দাবার, আলো-ফুলে ছয়লাপ কাণ্ড। কিন্তু একটা মজার ব্যাপার আছে। সকাল থেকে আমি খুব খুশি। সেই জে বাবার সাথে কথা বলে যাওয়ার পর থেকে এরম খুশির দিন আমার জীবনে আর আসে নি। আজ আমায় একজন মস্ত বড়ো একটা উপহার দেবেন। নিশ্চিত দেবেন। কিন্তু মজাটা কি জানেন, আমি ছাড়া আর কেউ জানে না আমায় সব থেকে বড়ো গিফ্টটা কে দিচ্ছে? আপনি জানেন কে? একটু ভাবুন তো। না না দুর। বাবা-মা নন, অন্য কেউ। না, হলো না। জে’ও নন। জে কি করে আমায় উপহার দেবেন? তিনি তো আজকে নিমন্ত্রিতই নন। বাবা বোম্বে হাইকোর্ট থেকে একটা রিস্ট্রেইনিং অর্ডার বার করেছেন। রুট্ঠি নাবালিকা, তাই তার বিষয়ে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব তার পরিবারের। মহামান্য আদালত আদেশ দিয়েছেন রুট্ঠি আর জে দেখা করতে পারবে না। কোনো প্রকাশ্য স্থানে জে’কে যেন রুট্ঠির সাথে দেখা না যায়। হ্যাঁ, যা বলছিলাম। বলুন দেখি সেরা উপহারটা কে দিলো? আগের প্যারাগ্রাফে আপনাকে কিন্তু একটা ক্লু দিয়েছি, ভাবুন দেখি। বুঝতেই পারছেন কোনো রাজা-মহারাজা-নবাবের দেয়া উপহার এটা নয়। এ উপহার যার দেয়া, তার কাছে কোনো রাজা-মহারাজা পাত্তা পায় না। সারা পৃথিবীর মানুষ এর কাছে মাথা নিচু করে কুর্নিশ করে। ভাবুন ভাবুন, না পারলে এই একটু পরেই বলে দেবো’খন। ... ...
মহাভারতের কথা অমৃতসমান ২চিত্রগুপ্ত: হে দ্রুপদকন্যা, যজ্ঞাগ্নিসম্ভূতা পাঞ্চালী, বলো তোমার কি অভিযোগ। আজ এ সভায় দুর্যোধন, দু:শাসন, কর্ণ সবার বিচার হবে। দ্রৌপদী: ওদের বিরূদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই রাজন। ওরা ওদের ইচ্ছা কখনো অপ্রকাশ রাখেন নি। আমার অভিযোগ শুধুমাত্র আমার পঞ্চস্বামীর বিরূদ্ধে। চিত্রগুপ্ত: হ্যাঁ কৃষ্ণা, তোমায় দ্যূতক্রীড়ার পণ রাখা ওদের উচিৎ কার্য হয় নি। দ্রৌপদী: সে অভিযোগ থেকে তো আমি ওদের কবেই মুক্তি দিয়েছি। সেই দিন মনে রাখলে আমাকে পুনরায় অগ্নিতে প্রবেশ করতে হত। ... ...
বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গভীর মননশীল ও সমাজতাত্বিক বিশ্লেষণ। পুরো EPW লেভেল। ... ...
নিউ ইয়র্ক নিবাসী ডঃ পার্থ ব্যানার্জী বিগত একমাস ধরে লিখে চলেছেন নিউ ইয়র্কে ঘটে চলা ভয়াবহ করোনা সংকটকে তিনি কীভাবে দেখছেন - সেই অভিজ্ঞতা। সঙ্গে রয়েছে এই বিপর্যয়ের কার্যকারণ প্রসঙ্গে তাঁর বিশ্লেষণ। তাঁর অনুমতি নিয়ে লেখাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে। এটি দ্বিতীয় কিস্তি। এখানে রইল ওনার লেখার পর্ব ৫-৮। ... ...
ব্রিটিশরা যখন ভারত ছেড়ে চলে যাবে এই ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে গেল, তখন দুটো প্রধান সমস্যা এসে দাঁড়ালো আমাদের স্বাধীনতার সামনে। একটি অবশ্যই দেশ ভাগ সংক্রান্ত। বহু আলাপ-আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক, বহু রক্তাক্ত হিংসা দাঙ্গার পর্ব পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল দেশভাগ হচ্ছেই। অবিভক্ত ভারত - ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় যে সমস্যাটি দেখা গেল সেটি হলো দেশীয় রাজ্যগুলির ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা ... ...
ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি আমাদের দেশ নাকি স্বাধীন,গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র । তা বড় হবার সময়ে এই সব শব্দ গুলির অর্থ ই কেমন যেন গুলিয়ে যেতে লাগল। কেউ শেখালেন ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়, তো অন্য কেউ বোঝালেন,এর চেয়ে ইংরেজরা নাকি ঢের ভালো ছিল! স্বাধীনতা ধুয়ে কি জল খাব, ইত্যাদি। ... ...
সেখানে কামাল পাশার সঙ্গে আনোয়ার পাশার নামও উল্লেখ করেছেন। এই আনোয়ার পাশা কামাল পাশার আগে তুরস্ক জয় করতে গিয়ে হেরে গিয়েছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারান, তাঁর সংগ্রামের রাস্তা কামাল পাশার থেকে আলাদা ছিল। তবু তিনি আনোয়ার এর নাম রেখেছিলেন তাঁর কারণ তিনি দেশের জন্য লড়াই করেছেন যে বীরেরা, তাঁদের বন্দনা করেছেন, শুধু জয়ীদের নয়। এ কথাও সত্যি কবিতাটি তিনি যখন লেখেন তখনও কামাল পাশা জয়ী হয়ে উঠতে পারেন নি। জয়লাভ করেছিলেন পরে। তিনি এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে শুধু জয়ীকেই বন্দনা নয়, সংগ্রামীকে বন্দনা করা হবে। সংগ্রামী মানেই সম্ভাবনা। ... ...
আমার আগের ব্লগ আয় তবে বেঁধে বেঁধে থাকি'র সুত্রে আসা কিছু ভাবনা আরেকটু বিশদে। মুলতঃ আমাদের জীবন থেকে ক্রম-অপসৃয়মান যুথবদ্ধতার ছায়া এবং সেই প্রক্রিয়াতে প্রযুক্তি কীভাবে ব্যক্তিযাপনকে করে তুলছে আরো সহনীয় তারই সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ। সেই প্রসঙ্গেই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সামাজিক মূল্যবোধের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে দু-চার কথা। ... ...
জ্যোতিষ আসলে কী - তা নিয়ে জ্যোতিষ বিরোধী অর্থাৎ বিজ্ঞানসম্মত ভাবনাচিন্তায় আগ্রহী মহলেও পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি। সেরকমই একটি ধারণা নিয়ে এসেছেন সুকল্প কুণ্ডু। জ্যোতিষ যে আসলে বিজ্ঞান, তবুও কেন জ্যোতিষ সফল এবং জ্যোতিষের বৈজ্ঞানিক বিরোধিতাও কেন সাফল্য পাচ্ছে না, তার নির্মোহ বিশ্লেষণ ফুটে উঠেছে এই লেখায়। ... ...
অমিতাভ গুপ্ত একটা অসম্ভব ভালো লেখা লিখেছে রোব্বারের আনন্দবাজারে। য্দিও লেখাটার প্রতিপাদ্যের সঙ্গে আমি একমত নই, তার পরেও, বৈদ্যুতিন এবং সামাজিক মাধ্যম জুড়ে অজস্র চর্বিতচর্বণের মধ্যে, এ ধরণের বৌদ্ধিক লেখা পড়লে মগজের আরাম হয়। লেখাটা লম্বা, তবে তার যৌক্তিক মোটামুটি এইরকমঃ ১। ফেসবুক, বা সামগ্রিকভাবে সামাজিক মাধ্যমে অতি-দক্ষিণপন্থী দৃশ্য-শ্রাব্য-পাঠ্য বস্তুর সংখ্যা বাম-অতিবাম-মধ্য এদের যোগফলের চেয়েও বেশি। ২। এর একটা কারণ হল সামাজিক মাধ্যমের অ্যালগরিদম অতি-দ্ক্ষিণপন্থীদের সহায়তা করে বেশি (কেন, লেখক ব্যাখ্যা করেননি)। ৩। এর আরও একটা সম্ভাব্য কারণ আছে। একটা স্টাডিতে দেখা গেছে অতি-দক্ষিণপন্থায় বিশ্বাসীদের বৌদ্ধাঙ্ক, অর্থাৎ আইকিউ তুলনামূলকভাবে কম। সোজা বাংলায় বললে বোকাদের অতিদক্ষিণপন্থার দিকে টেনে আনা সোজা। কারণ, বুদ্ধি কম মানে পড়াশুনো কম, বহির্জগতে বীক্ষণ কম, চিন্তাভাবনার ক্ষমতা কম। ... ...
আচ্ছা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সভ্যতার এ' রকম বিপর্যয় কি ইতিহাসে আগে হয়েছে? না বলেই মনে হল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চোটে জীবনযাত্রা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ঠিক কথা। বুদ্ধদেব বসুর মেমোয়ারে পড়েছি, ট্রাম বাদে কোনও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট যেত না তখন, সন্ধে নামলে এক কাঠি ওপরে বিদ্যুৎ অফ– মাঝেমধ্যে জনশূন্য রাসবিহারীর মোড়ে ট্রামের ইতস্তত ধাতব মর্মর, আর পূর্ণিমার চাঁদ গলে গলে ট্রামলাইনে পড়ছে। ... ...
নয়ই নভেম্বর উনিশশ উনননব্বুই : কাস্তে নয়, হাতুড়ি দিয়ে এমনকি খালি হাতে জনতা যখন বার্লিন বিভাজক প্রাচীরটি ধ্বংসের প্রয়াসে উন্মত্ত, ভ্লাদিমির পুতিন নামক এক কে জি বি অফিসার পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা এজেন্সি স্টাজিকে ফোন করে পাঁচ ট্রাক ভর্তি ফাইল আনিয়ে পেট্রল সহ তাতে অগ্নি সংযোগ করছেন। তার আগে অবিশ্যি (আপন ভাষ্য অনুযায়ী) মস্কোয় ফোন করেছিলেন। গভীর বেদনার সঙ্গে পুতিন বলেন, মস্কো নিশ্চুপ ছিল সেদিন। সেই পুতিন দশ বছরের ভেতরে রাষ্ট্রপতি হয়েই বলেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিনাশ বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড়ো ভূরাজনৈতিক বিপর্যয়। ... ...
একটা ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে বাংলার সাথে একসূত্রে বাঁধা পাঁচটি থেরবাদী বৌদ্ধ প্রধান দেশ- মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কাম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, আর ভারতীয় উপমহাদেশের অনেকগুলি অঞ্চল- আসাম, ওড়িশা, মিথিলাঞ্চল, নেপাল, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কেরল। এদের সবার নববর্ষ একসঙ্গে হয়- পয়লা বৈশাখ। ... ...
বি ... ...