১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় কী হয়েছিল তা সকলের জানা। ভাষার প্রশ্নে এক বিন্দু আপোষ না করে রক্ত ঝড়িয়ে অধিকার আদায় করেছিল মানুষ। অধিকার আদায়ের এই পথ পরবর্তীতে বাংলাদেশ নামক একটা দেশের জন্ম দেয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় ঠিক সময়ে যা করার দরকার তা সে সময়ের সকল মানুষ তা করেছে। যে সময় প্রতিবাদে ফেটে যাওয়ার দরকার তখন প্রতিবাদে আকাশ কম্পিত করেছে। বিনিময়ে যখন জেলে যেতে হয়েছে তখন জেলে গিয়েছে, যখন রক্ত দিতে হয়েছে তখন রক্ত দিয়েছে। জীবন দেওয়ার সময়ও পিছুপা হয়নি কেউ। আমরা আজকে ওই সময়ের প্রতিবাদী প্রত্যেকটি মানুষের কাছে চির ঋণী। ভাষা হল, স্বাধীনতা পেলাম সকলই আমাদের আগের প্রজন্ম আমাদের জন্য করে দিয়ে গেছে। আমরা সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছি শুধু। অমূল্য এই সম্পদ গুলো যখন আমাদের হাতে এসেছে তখন আমরা কী করছি? স্বাধীনতার মর্যাদা বা রক্ত দিয়ে পাওয়া ভাষার মর্যাদা কতটুকু রেখেছি আমরা? ... ...
লকডাউনের আড়ালে কী? ... ...
এই মাসের ৪ তারিখ। ভারতীয় সংবাদপত্রগুলোতে এই প্রথম দিল্লিতে হিংসার পাশাপাশি প্রকাশিত হল এই খবর — ‘বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নোভেল করোনাভাইরাস। মৃত ৩২৪৮, আক্রান্ত অন্তত ৯২ হাজার জন মানুষ’। ... ...
একাল সেকালের জগা খিচুড়ি ... ...
কেউ কোভিড আক্রান্ত হয়ে হেল্পলাইনে ফোন করলে, সরকারি এম্বুলেন্স পৌঁছে যাচ্ছে বাড়িতে,আগে থেকে ড্রাইভারের নাম্বার এসে যাচ্ছে এসএমএসে ,তারপর অসুস্থ মানুষটিকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেওয়া, সম্পূর্ণ নিখরচায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা করানো এবং অবশেষে ছুটির পর বাড়ি পৌঁছে দেওয়াও হচ্ছে ! কোনো প্রথম বিশ্বের দেশ নয়, এই আপাত অবিশ্বাস্য ঘটনাগুলো ঘটছে আমাদের দেশে, আমাদের রাজ্যে ! ... ...
১৯৭৪। এপিডিআর থেকে মিছিল করে এসেছি এসপ্ল্যানেড ইস্টে, রাজনৈতিক বন্দিমুক্তির দাবিতে। মনে আছে, হাওড়ার ছেলে, বনবিহারীবাবুদের গ্রুপে ছিল সঞ্জীবদা, একটা বাসের মাথায় চড়ে বক্তৃতা করছিল। আমি আর জয় কৌটো ঝাঁকিয়ে পয়সা তুলছিলাম। সেদিন ওখানে ওয়েবকিউটার জমায়েতও ছিল। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম মনোভাবাপন্ন মাস্টারমশাইরা ওঁদের নানান দাবি দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। আমিই প্রথম দেখি আমাদের কলেজের সলিলদা (ইংরাজি পড়াতেন) আর হিতেনদা (বাংলা পড়াতেন) দাঁড়িয়ে আছেন। সদ্য কৈশোরের অ্যাডভেঞ্চার পোকা নেচে উঠল। জয়কে বললাম - চল যাই। ওঁরা সেই আমলে দশ টাকা দিয়েছিলেন। আর সলিলদা বলেছিলেন কলেজে দেখা করতে। ... ...
"....হায়দ্রাবাদ হোক বা অন্য কোথাও; জনগণ যখন পাগলের মতো কারও মৃত্যু চায়; সেও আদতে মানসিক ভাবে ভয়াবহ একজন অপরাধী হয়ে উঠেছে। যে অপরাধের জন্য সে শাস্তি চাইছে; সেইরকমই একটা ঘৃণা, হিংসাত্মক মানসিকতা সে নিজের মধ্যে বহন করছে।...." ... ...
'গহনারবাক্স' বিরতির আগে পর্যন্ত দারুণ ছিল। হুট করে সেখানে 'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ' টেনে আনা এবং কিছু আরোপিত বিষয় খানিকটা জোর করে গুঁজে দেবার কারণে ভালো হতে হতেও শেষ পর্যন্ত সেটা ভালো লাগেনি তেমন। পরেরটা ছিল 'আরশিনগর'। ওফফ! বার বার নিশ্চিত হওয়ার আর্জি জেগেছিল 'আরশিনগর' দেখতে দেখতে, সিনেমাটা কি আসলেই অপর্ণা সেনের! পরেরটা নিয়ে আমার ব্যাপক ব্যাকুল প্রতিক্ষা আর আশা ছিল। 'সোনাটা(Sonata)'। ভাগ্যিস শাবানা আজমি ছিলেন এটাতে। নইলে পর্দার অরুণা চরিত্র, যেটা পরিচালক স্বয়ং করেছিলেন, সে চরিত্রের আরোপিত কাঠিন্য দর্শক হিসেবে এই নাদানকে কেমন একটা দমবন্ধের অনুভূতি দিয়েছে সারাক্ষণ। অথচ অপর্ণা কত পছন্দের একজন! শাবানা আজমির চরিত্রটা 'সোনাটা'র প্রাণভোমরা বিশেষ। যাঁর উপস্হিতি দর্শকের জন্য স্বস্তিময় ছিল। ... ...
-এ মা ! তুমি টি শার্ট পরে আছো কেনো ? রাতুলের রিনরিনে গলার খিল খিল হাসি যেন একটা পাহাড়ি ঝর্ণার মত উপচে বেড়িয়ে এলো কম্পিউটার স্ক্রিনথেকে ! আর সে হাসির ছোঁয়াচ লেগে গেলো আমার পেশাদারিত্বের মুখোশ পরা আপাত গোমড়া মুখেও ! ... ...
মানুষ যখন, মনে কিছু প্রশ্ন তো আসবেই। তেমনই কিছু বেয়াড়া প্রশ্নের তালিকা। পারলে উত্তর দিন না পারলে থাক। কিন্তু এই অসময়ে রাজনীতি করবেন না। ... ...
এই ব্লগটি ডিলিট করা হয়েছে ... ...
পণ্ডিত রবিশংকর কে, এমন প্রশ্ন যদি তাঁর শতবর্ষে নিক্ষিপ্ত হয়, আমার উত্তর হবে: এক সেতার-বাজিয়ে প্রেমিক পুরুষ৷ নারীবাদীরা হয়তো অভিধার দ্বিতীয় শব্দটিতে কিঞ্চিৎ গোলমাল খুঁজে পাবেন, কিন্তু পৌরুষ ছাড়া রবিশংকরের বাজনাকে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। সেই পৌরুষ, আশ্চর্যজনক ভাবে, উদগ্র ম্যাসকিউলিনতার কোনও ইস্তেহার নয়, বরঞ্চ প্রতি পলে ভারতীয় পৌরুষের ধারণাকে সে ভেঙেছে, গুঁড়ো করেছে, সাজিয়ে নিয়েছে নতুনতর কোনও ক্যালাইডোস্কোপে। ... ...
চিকিৎসক পেটানো, গোটা ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক মোড়ে ঘুরিয়ে নিজেদের দায় মোচন অসম সরকারের। ... ...
বিংশ শতাব্দীর ফলিত সমাজতন্ত্রের ধারণায় পরিবেশচিন্তার বিশেষ কোনো গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু আজ যখন প্রজাতিগত সংকটের সামনে দাঁড়িয়ে পরিবেশচিন্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে তখন তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, উৎপাদন, প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার সবকিছুকে নতুন আলোয় দেখতে হচ্ছে। বহু বামপন্থী ধারণার পুনর্বিন্যাস তাই জরুরী হয়ে পড়েছে। পুঁজিবাদের অনুকরণ নয়, সম্পূর্ণ বিপরীত পথের সন্ধান না করতে পারলে পরিবেশ সংকট থেকে মুক্তির সন্ধান সম্ভব নয়। এর জন্য, মার্কস, বিশেষত পরিণত কার্ল মার্কসের লেখাপত্রের সন্ধান জরুরী। ... ...
রেমডেসিভির বিষয়ক দু-একটি কথা। দেখা যাচ্ছে যে ধরণের প্রমাণের ভিত্তিতে রেমডেসিভিরকে আমেরিকার এফ ডি এ ছাড়পত্র দিয়েছেন, সেই সমস্ত প্রমাণ খুব জোরালো নয়। এতৎসত্ত্বেও ভারতে রেমডেসিভির নিয়ে এক ধরণের উন্মাদনা তৈরী হয়েছে কি? ... ...
হিটলারের সময়ে ইহুদী-দের গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মারতে যে গ্যাস ব্যবহার করা হত সেই ‘জাইকলন বি’ (Zyklon B) নামক বিষাক্ত গ্যাস উদ্ভাবনের পিছনেও হেবারের হাত ছিল। তো দেখা যাচ্ছে একধারে মানুষ-কে নতুন জীবনদান কৃষিকাজ ইত্যাদিতে কৃত্রিম সার ব্যবহারের দিগন্ত খুলে দিয়ে – আর অন্যদিকে বিষাক্ত গ্যাস আবিষ্কার করে মানুষ মারতে সাহায্য করা – হেবারের জীবন এই ভাবেই প্যারাডক্সে ভরে উঠেছিল। তিনি প্রায় ডঃ জেকিল এবং মিঃ হাইড হয়ে উঠেছিলেন একই সাথে। ... ...
বিষয় এটা নয় যে, যুদ্ধ হবে কি হবে না। বিষয় হোলো 'যুদ্ধ' 'যুদ্ধ' জিগির তুলে রাখাটা কতটা প্রয়োজনীয়। যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুতকারক কোনো দেশের সামনেই এখন আতঙ্কবাদ আর তেমন বড় সমস্যা কিম্বা সুযোগ নয়। ... ...
[৬] সবজান্তা বনাম জ্ঞানার্থী উপরের আলোচনায় আমি এটা দেখাতে চেয়েছি, বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার সাথে অধ্যাত্মবাদের বিরোধটা অত্যন্ত কঠোর বাস্তব। কী জানতে হবে তাতেও, কীভাবে জানতে হবে তা নিয়েও—বিরোধ এই উভয় মৌল বিন্দুতেই। তথ্য যুক্তি তর্ক সংশয় প্রমাণ অপ্রমাণ পরীক্ষা নিরীক্ষা পরিমাপন তুলনা বিচার বিশ্লেষণ—এই সমস্ত ব্যাপার ধর্মীয় চিন্তার পক্ষে শুধু অপাংক্তেয় নয়, বিপজ্জনকও বটে। “তাঁর ইচ্ছাতেই সব”, “তিনি যা করাচ্ছেন তাই হবে”, “মেলাবেন, তিনি মেলাবেন”—এই রকম ধারণা বা বিশ্বাস কোনো প্রমাণ অপ্রমাণের ধার ধা ... ...
সময় কে আমারা কি চিনি? নাকি আমরাই সময়ের অংশ? সময় কি আমাদের বোধে লুকিয়ে নাকি সে বাস্তব? সে কি অশেষ নাকি তার ও প্রান্ত রেখা আছে? কালকের আমি কোথায় ? আগামি কালকে জানতে আমায় কে বাধা দিচ্ছে? এমনই হাজার প্রশ্ন ঘিরে ধরে যখন আমরা সময় কে নিয়ে ভাবতে বসি। সময়ের দর্শন, বিজ্ঞান, মনবিজ্ঞান, সবকিছুই এইসব প্রশ্নে ঘেরা। বিভিন্ন পর্বে এই সব জায়গাতেই আমরা ঘুরে বেড়াব। ... ...