মেঘ ইতিমধ্যে প্রায় সব কর্মীদের সঙ্গেই ভাব জমিয়ে ফেলেছে, মাঝে মাঝেই গিয়ে আড্ডা মেরে আসছে। খেয়েদেয়ে বাইরে বেরোতে দেখি ঠান্ডা বেশ কম আজ, বাইরে বেশ ঝলমলে, যদিও কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা নেই। ওদিকটা একই রকম - মেঘাচ্ছন্ন। টাইগার হিল যাবার কোন মানেই হত না। বিকাশবাবু হাজির যথাসময়ে গাড়ি নিয়ে - রাজভবনের সামনেই। পটাপট উঠে পড়লাম। গাড়ি চলল আগের দিনের রাস্তা ধরেই ... ...
ম্যাল রোডে ঢোকার মুখেই, দা ওয়ান অ্যান্ড ওনলি - কেভেন্টারস। ছাদে বসে দার্জিলিং চা - ফলোড বাই দা গাবদা পর্ক প্ল্যাটার - অনেকদিনের টার্গেট। খুশীর স্বাস্থ্য বাতিক - সে চিকেন প্ল্যাটার। যতটা ক্যালোরি বার্ণ হল প্রায় ততটাই আবার ভরে গেল। মেঘের আবার ডেজার্টও চাই - কাজেই তার জন্য আইসক্রিম। আমি আইসক্রিমের ভক্ত নই, খুশী তো খাবেই না এসব (সিঙ্গল কান্না)। কেভ'স এ আর কোন ডেজার্ট ও নাই। ... ...
তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়া গেল ঘন্টা খানেকের মধ্যেই। রুমের বাইরে পা রাখতেই বোঝা গেল, ইট'স কুল। কুল মানে একেবারে মহাকুল।বিশ্বকুল। বাপ্রে কুল। একে তো ছয় ডিগ্রি, তায় আবার কুয়াশা। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। কয়েক মিনিটেই জ্যাকেট, সোয়েটার, উলিকটের গেঞ্জি ভেদ করে কাঁপিয়ে দিল একদম। ... ...
জেনেশুনেও ভুলে মেরেছি যে কোভিডকালের পর গাড়িতে বেডরোল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা কম্বল, চাদর, বালিশ কিছুই আনিনি। এদিকে তিনজনেরই আপার বার্থ। কান্নার অজস্র ইমোজি। যত রাত বাড়ছে, তত কাঁপুনি বাড়ছে। ব্যাগ থেকে শীতের জ্যাকেট, মোজা, সব বের করে পরে ফেলেও সারারাত থরহরি কম্প। তিনজনেরই প্রায় নির্ঘুম রাত। ভোর পাঁচটা না বাজতেই সব উঠে পড়েছি। দাঁত ফাত মেজে চাতকের অপেক্ষা, কখন লোয়ার বার্থের ঘুম ভাঙবে, একটু নীচে গিয়ে বসা যাবে ... ...
ব্যাপার হচ্ছে এসব জানা বোঝা সত্ত্বেও আমার একটা দার্জিলিং প্রীতি জোরদার রয়ে গেছে। তার কারণ, ছোটবেলায় দুই বছর বাবার কর্মসূত্রে ছিলাম এই শহরে। গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে ফাইভ, সিক্স। খাদের ধারের রেলিং টা, টুং সোনাদা ঘুম পেরিয়ে। স্মৃতির শহর - বিস্মৃতিরও শহর - কারণ সেই ১৯৮৩ তে দার্জিলিং ছাড়ার পর ফিরে এসেছিলাম ২০০৫ এ - বাইশ বছর পর। তারপর আবার কেটে গেছে পনেরো বছর। হয়তো আরো যেত। কিন্তু আমার পুত্র বাদ সাধিল। ... ...
সারাদিন পাহাড়পথ ভেঙে আপনি ক্লান্ত। আরাম করে বসুন এই ছোট্ট ক্যাফেটায়, আমার উল্টো দিকের চেয়ারে। টেবিলে দু'টো বিয়ারের বোতল। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে হিমালয়ান্ ব্লুজ। ... ...
এটা আমরা সবাই জানি বা ইতিহাস পড়ে দেখেছি যে প্রাচীন কালে সাম্রাজ্য, রাজত্ব, রাজা ইত্যাদি অ্যাডমিনিষ্ট্রেটিভ জিনিসগুলো হাত ধরাধরি করে চলত ধর্মের সাথে – তা সে প্রাচীন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টধর্ম বা পরের দিকে ইসলাম – যাই হোক না কেন। ভারতের বাইরে হিন্দু মন্দিরের সবচেয়ে প্রাচীন উপস্থিতি টের পাওয়া যায় আজকের দিনের ভিয়েতনামে, খৃষ্ট পূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত – সূর্্য দেবতা, শিব এবং বিষ্ণুকে নিবেদিত। আমি উপরে যে ‘বৃহত্তর ভারত’ এর উল্লেখ করেছি তা একসময় বিস্তৃত ছিল আজকের দিনের মায়নামার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, কাম্বোডিয়া, লাওস এবং ভিয়েতনাম জুড়ে। সংস্কৃতে লেখা পাথরে খোদাই পাওয়া গেছে ভিয়েতনামে খৃষ্টীয় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শতাব্দীতে ভিয়েতনামে বা চতুর্থ এবং পঞ্চম শতাব্দীতে কাম্বোডিয়াতে। সেই সময় থেকে শুরু হয়ে দেখা গেছে প্রায় ১৪শ শাতাব্দী অবধি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সব দেশে স্থানীয় প্রভাব যুক্ত হিন্দু মন্দির তৈরী হয়েছে। অনেকসময় হিন্দু এবং বৌদ্ধধর্ম পুরোপুরি আলাদা না থেকে জন্ম দিয়েছে এক মিশ্র ঐতিহ্য এই দেশগুলিতে এবং মন্দিরে এই সব ছাপ রয়ে গেছে। পরের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মূলত বৌদ্ধ ধর্ম থেকে যায় কেবল মাত্র মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশীয়া ছাড়া – এই দুই দেশে ইসলাম ধর্মে এসে বৌদ্ধধর্মকে প্রতিস্থাপন করেছিল। ... ...
ধানজমির মাঝে এক্সোটিক রেষ্টুরান্ট! জীবনে ভাবিনি এ জিনিসও দেখতে হবে! যাঁরা বালি গেছেন তাঁরা হয়ত জানবেন আরো নানাবিধ খাবারের মধ্যে বাইরের লোকেদের কাছে বালির এক অন্যতম জনপ্রিয় ডিসের নাম ‘ক্রিসপি ডাক’। মানে ঠিক হাঁসের মাংস ডিপ ফ্রায়েড বললে ওই ডিসটিকে ঠিক ঠাক সম্মান দেওয়া হবে না, কিন্তু অনেকটা তাই। এমনিতে বালির প্রায় সব রেষ্টুরান্টেই এই ক্রিসপি ডাক সার্ভ করা হয় – তবে আমি বলব যদি বালি যান তাহলে উবুদের দিকে বিস্তৃর্ণ ধানক্ষেতের মধ্যে বেশ কিছু খুব সুন্দর সুন্দর রেষ্টুরান্ট আছে, সেখানেই খেতে। এগুলো মূলত টুরিষ্টের কথা ভেবেই বানানো – কিন্তু একটা অভিজ্ঞতা। অনেক রেষ্টুরান্ট আছে, কিন্তু সব থেকে বিখ্যাত বা জনপ্রিয় মনে হয় ‘বেবেক টেপি সাওয়া’ (Bebek Tepi Sawah) নামক রেষ্টুরান্টটি। ... ...
যদি গুগুল সার্চ করেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশ – তো মনে হয় না প্রথম দশে আপনি মলটা দেশের নাম পাবেন – সেখানে দেখবেন ফিনল্যান্ড এবং অন্যান্য স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশগুলিরই আধিক্য। কিন্তু এই সুখীর সংজ্ঞার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ বা আমরা যাকে বলি ‘আনন্দে’ বেঁচে থাকা তা ঘুলিয়ে ফেললে চলবে না। তেমন লিষ্টী বানাতে হলে প্রথম বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে মলটার নাম একেবারে প্রথম দিকে থাকবে। বিশাল আনন্দে এবং টেনশন ফ্রী জীবন কি ভাবে কাটাতে হয় এদের কাছ থেকে শেখা যেতে পারে। ... ...
নিকোলাস পাড়া। নাফাখুম থেকে প্রায় চার পাঁচ ঘন্টা ঝিরি পথ দিয়ে হেঁটে পাহাড় টপকে এক অদ্ভুত জায়গায় পৌছালাম।এই পাড়া প্রতিষ্ঠা করেছে নিকোলাস ত্রিপুরা। পদ্মা নদীর মাঝির হোসেন মিয়ার মত নতুন এক নতুন ঠিকানা তৈরি করেছে নিকোলাস। তার গল্প পুরোপুরি আমি জানি না, আমি যা এখন পর্যন্ত জানি তা হচ্ছে এ এক অদ্ভুত জায়গা। আমরা এসে পৌছাতে পৌছাতে সন্ধা নেমে এসেছিল। তারপর থেকেই জাদুবাস্তবতার জগতে চলে গেছি যেন। এখানে পাহাড়ের কোলে কুসুম গরম সুর্য টুপ করে ঢলে গেল। কয়েক বাড়ি আদিবাসিদের সন্ধ্যা আসল সরল পথে। যে সমাজ আমরা দেখে অভ্যস্ত তার সাথে তুলনা কই? শিশুরা অবাক দৃষ্টিতে আমাদের দেখছে। আমরা আমাদের নিয়ে ব্যস্ত। খাড়া পাহাড় উঠে আমরা ক্লান্ত, তারচেয়ে আসলে আমরা ব্যস্ত নতুন জায়গার চারপাশ দেখতে। এরপরই যেন শুরু হল জাদুর খেলা। শা করে তারা চলে আসল আমাদের কোলে। ঝকঝকে লাখ লাখ তারা যেন আমাদের ঘিরে নেচে চলছে। আমাদের সাথে মজা নেওয়ার জন্যই যেন দুই একটা তারা দৌড়াচ্ছে এদিক ওদিক। হুট করেই খেয়াল করলাম আমাদের সকল কাজের সমাপ্তি হয়েছে। আগামীকাল ভোরে নতুন পথে রউনা হওয়ার আগে আমাদের ঘুম আর খাওয়া ছাড়া কোন কাজ নাই। এই গ্রামের মানুষ অন্য সময়ে কী করে এই সময়ে? সন্ধ্যায় চা নাস্তা খাওয়া মানুষ আমরা। এরপর নানা অকাজে ব্যস্ত থাকা আমরা বুঝেই উঠতে পারছি না এদের জীবন। এই গ্রামে পানির ব্যবস্থা নাই। পানি নিয়ে আসে ওরা অনেক নিচে থেকে। নেই কোন পয়নিস্কাশনের সুস্থ কোন ব্যবস্থা। নেই মানে নেই। বন হচ্ছে এদের ভরসা স্থল। এই সমাজ কীভাবে আমাদের বুঝে আসবে? আসার কোন সম্ভাবনা আছে? আমার মনে হয় না। ছনের ঘর। ঘর উঁচু করেছে বাঁশ দিয়ে খুটি দিয়ে। তাড়াই বাঁশের বেড়া হচ্ছে মেঝে। আমরা যা দেখি তাই মুগ্ধ হই, বা মুগ্ধ হওয়ার ভান করি। কৃত্রিমতায় পূর্ণ জীবন কি জানে সত্যিকার মুগ্ধ হওয়া কাকে বলে? ... ...
বেশী বেড়ালেও বিপদ, আবার কম বেড়ালেও। অন্তত ভ্রমণ সংক্রান্ত কিছু মিথ বা অতিকথন বা ভ্রান্ত ধারণা গড়ে তুলতে। বেশী বেড়ানো মানেই বেশী জানা নয়, আর পুরোপুরি ঠিক জানা তো নয়ই। কিন্তু হয় কি বেশী বেড়ালে আমাদের মধ্যে অনেকসময় একটা ভ্রান্ত ধারনা চেপে বসে যে আমি যেটা জানি বা যার মুখোমুখি হয়েছি, সেটাই চরম সত্যি! এর বাইরে আর কিছুই হতে পারে না। আমার অভিজ্ঞতার বাইরেও যে অন্য কেউ অন্য ভাবে সমগ্র জিনিসটা দেখতে বা অনুভব করতে পারে, সেটা মানতেই চাই না আমরা – এতটাই সঙ্কীর্ণমনা এবং অধৈর্য্য হয়ে উঠি অনেক সময়। আর এই ব্যাপারগুলোই বেশীর ভাগ সময় জন্ম দেয় ‘মিথ’ এবং ভ্রান্ত ধরণার। এর কিছু কিছু ব্যাপার হয়ত ক্ষেত্র বিশেষে সত্যি, কিন্তু সেগুলোই একমাত্র সত্যি নয় বা চিরন্তন সত্য নয়। তেমন কিছু বিষয় নিয়েই ভাবলাম আজকে কিছু লিখি ... ...
আমাদের ঘুরে বেড়ানো। ... ...
ডাঙ হায়াঙ নিরর্থ এক বিখ্যাত হিন্দু পুরোহিত ছিলেন সেই সময়কার – তিনি তানহা লট ছাড়াও বালিতে আরো বেশ কিছু মন্দির স্থাপন করেছিলেন তাঁর সেই তীর্থ যাত্রার সময় – যে যাত্রাপথে তিনি জাভা থেকে বালি দ্বীপে এসেছিলেন। বালিতে পোঁছবার পর নাকি নিরর্থ নিজের ভিতর থেকে ভগবানের নির্দেশ পেয়েছিলেন কোথায় কোথায় মন্দির স্থাপন করতে হবে – আর সেই নির্দেশ পালন করেই তিনি মন্দির স্থাপন করেন তানহা লট-তেও। ... ...
লক্ষ্য করে দেখেছেন কি যে ইংরাজীতে এর বানান ‘Whiskey’ এবং ‘Whisky’ এই দুই ভাবেই লেখা হয় – মানে একটা ‘ই’ এর তফাত! টাইপো ভাবছেন বা ভাবছেন আমেরিকান ইংলিশ? না, আদপে ব্যাপারটা তা নয়। মনে রাখবেন এটা কোন আইন নয়, কিন্তু হুইস্কির ইতিহাসে আগে একটা কাষ্টম ছিল যে, ‘Whisky’ লেখা হত স্কচ্, কানাডিয়ান এবং জাপানীজ হুইস্কির জন্য। আর ‘Whiskey’ লেখা হত আইরিশ এবং আমেরিকার হুইস্কির ক্ষেত্রে। কিন্তু আজকাল অবশ্য সেই কনভেনশন আর মেনে চলা হয় না – ... ...
রয়টার্স নাকি ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের পর্যটকদের মধ্যে একটা সার্ভে করেছিল, যেখানে তাদের বেছে নিতে বলা হয়েছিল স্ট্রিট ফুডের জন্য পৃথিবীরে বিখ্যাত শহরগুলিকে। তার মধ্যে মালয়েশিয়ার পেনাং আসে তৃতীয় স্থানে – এবং ইন্টারেষ্টিংলি প্রথম দুটি জায়গাও এই এশিয়ার শহরই দখল করেছে – প্রথম স্থানে থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক এবং দ্বিতীয় স্থানে সিঙ্গাপুর। ষষ্ঠ স্থানে আছে ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটি। সত্যি কথা বলতে কি এই র্যাঙ্কিং নিয়ে বিশেষ দ্বিমত হবার চান্স নেই – এশিয়ার যে শহরগুলির নাম করা হয়েছে, তাদের স্ট্রীট ফুড সত্যিই অসাধারণ। তবে আমাকে বললে, আমি হয়ত সিঙ্গাপুরের জায়গায় মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরকে রাখতাম। আর প্রথম দশটি স্থানে যেখানে ঠাঁই নিতে পেরেছে এশিয়ার চারটি শহর, তাই এই কথা মেনে নিতে কোন বাধা নেই যে, স্ট্রীট ফুডের স্বর্গ হল এই এশিয়ার নানা শহর। ... ...
নবনীতা দেবসেনের মতো করে বলতে আর পারলুম কই – “হালের কাছে মাঝি আছে – এটা অস্থি-মজ্জায় জানি” (গৌরচন্দ্রিকা, ট্রাকবাহনে ম্যাকমাহনে)? তাই প্রতিমুহূর্তের মৃত্যু জানান দেয় এখনো বেঁচে আছ। এমনটাই হয় হয়ত আমাদের সাধারণের ঘরকন্নার সাথে। যা নেই, তাই দিয়েই বুঝি কী ছিল। পায়েতে বেড়ি যতদিন না পড়ল, ততদিন ভুলেও ভাবিনি যে ছাড়া আছি। আজ যখন শারীরিক দূরত্বের সাথে সাথে মনে বাসা করেছে সন্দেহ, সংকোচ আর ভয়ের অগুণতি ঠাণ্ডা রক্তের পোকা, তখন বুঝতে পারলাম ভালোবাসার জন্য পড়েছিল এই অপার পৃথিবী। তবু তেমন করে ভালোবাসতে পারি নি। ... ...
গাছ যা মাটির কাছ থেকে নেয় ফেরৎ দেয় তার চেয়েও বেশি - অক্সিজেন বানিয়ে দেয়, বাতাসের দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে, বৃষ্টি আনে, পশুপাখিদের থাকার জন্য বিনামূল্যে বাসস্থান বানিয়ে দেয়, প্রোটিনকে রুপান্তরিত করে। একটা পঞ্চাশ বছরের গাছের এফিসিয়েন্সি মূল্য ১৫ লাখ টাকা বছরে, অঙ্ক কষে বুঝিয়েছিলেন বিখ্যাত উদ্ভিদ বিজ্ঞানী তারকনাথ দাশ । ... ...
কিন্তু চকোলেটের ‘আধুনিক’ যুগের সূচনা বলতে গেলে ১৮২৮ সালের পর। যখন কর্মাশিয়াল ভাবে চকোলেটের আরো বেশী করে উৎপাদন শুরু হল। এর এইখানেই ডাচ্-দের অবদান। কোয়েনার্ড ভ্যান হুটেন নামে এক ডাচ্ কেমিষ্ট উদভাবন করে ফেলল কোকো জগতে যুগান্ত কারী এক জিনিস। তিনি উদভাবন করলেন এক হাইড্রোলিক প্রেস যার মাধ্যমে প্রসেস করা কোকো বিনস্ থেকে কোকো বাটার-কে আলাদা করে ফেলা গেল খুব সহজে, আর পরে রইল চকোলেটের/কোকো-র গুঁড়ো। ব্যাস আর পায় কে! কিন্তু ভ্যান হুটেন এতেই থামলেন না, তিনি আরো গবেষণা করে সেই চকোলেটের পাওডারের সাথে ক্ষারক জাতীয় লবণ (অ্যালকালাইন সল্ট) মিশিয়ে এই পাওডার-কে এমন করে তুললেন যে সেই পাওডার এবার খুব সহজেই কোন তরলে মিশে যায়। এই প্রসেসটা তিনি পেটেন্ট করেছিলেন এবং তা কালক্রেমে পরিচিত হয় ‘ডাচিং’ পদ্ধতি নামে। বলতে গেলে এই ডাচিং প্রসেস ছাড়া হয়ত আজকের এই চকোলেট বিপ্লব সম্ভব হত না। ... ...
দুধসাগর তারকরলি - - তা হোটেলখানি বেশ উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা, সামনে লোহার জমকালো গেট। রাতে এসে হর্ন বাজাতে এক রোগা পাতলা বাচ্চামত ছেলে এসে গেট খুলে বাঁদিকে হাত দেখালো। ভেতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার ঝুপসি গাছে ভরা, ভেতরের পথটিও ঠিক পাকারাস্তা নয় মাটির উপর ইঁট আর পাথরের টুকরো ফেলা। বাঁদিকে গাড়ি নিয়ে অল্প এগোতেই দেখা গেল আর এগোন যাবে না, মাটির পথ ধাপে ধাপে নেমে গেছে। ... ...
আবার অক্টোবরে ফিরি। আম্বোলিঘাটের দিকে যতই এগোতে চেষ্টা করি ততই দেখি গুগল ম্যাপে হোটেলের আনুমানিক দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়েই সারথীমশাইকে থামতে বলতে হল। খানিক ঘেঁটে বুঝলাম আমাদের খানাপুর হয়ে যেতে হবে, আম্বোলি নয়। অতএব ঘোরাও গাড়ি, গেল একঘন্টা জলে। যাকগে এখনো পৌনে সাতটা অবধি দিনের আলো থাকে। হায় তখন যদি জানতাম সামনে কী আছে। ... ...