"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ৭ … শুধু ঐতিহ্যময় শাড়ি নয়, ঐশ্বর্যময় অতীতও জড়ানো তার সর্বাঙ্গে। চারদিকে পাহাড়, কয়েকটি হ্রদ, শহরের প্রান্তে নির্জন সবুজ, বড় একটি কেল্লা, নানা ঐতিহাসিক স্মারক তার অলঙ্কার। বুন্দেলখন্ডের এই প্রাচীন নগরী ভ্রমণে অভিজ্ঞতার প্রাপ্তি ছাপিয়ে যেতে পারে পর্যটকের প্রত্যাশা। লেখাটি ২০১৯এ প্রকাশিত হয়েছিল বাণিজ্যিক 'ভ্রমণ' পত্রিকায়। তবে তাদের পছন্দ low carb, low fat, high protein Dukan diet সদৃশ। তাই সেভাবেই লিখেছিলাম। সংক্ষিপ্ত আকারে। লেখার ল্যাজে ছিল কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন গোছের টীকা। তবে অমন ফাস্টফুড রান্নার মতো লিখতে ভালো লাগে না। তবু ওখানে দুটো লেখা প্রকাশিত হয়েছিল। আরো দুটো কম্পোজ হয়ে প্রতীক্ষায় ছিল। অনুমেয় কারণে প্রকাশিত হয়নি। এটা মন খুলে লিখলাম। 'ভ্রমণ' পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটি যদি হয় কিশোরী, ৫৭টি বাছাই করা ছবিতে সজ্জিতা এটি পূর্ণ যুবতি.. ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি ২য় পর্ব - - - - ২৮৩ বছর ধরে এখানে চলে আসা ইদের নামাজ ১৯৬৫ সালে মধ্যপ্রদেশের তদান্তীন দাপুটে মুখ্যমন্ত্রী পন্ডিত দ্বারকাপ্রসাদ মিশ্রের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়। সরকারী অনুদানে সাঁচী রোডে তৈরী হয় নতুন ঈদগাহ। ২০০২এ ASI মন্দির চত্বরে একটি গুদাম বানিয়ে এখানে পাওয়া মূর্ত্তির ভগ্নাংশ তালাবন্ধ করে রেখে দেয়। কিছু উন্মুক্ত জমিতেও সাজিয়ে রাখা আছে। তার কারুকার্য বেশ উন্নত মানের। এখানে আছে অষ্টম শতকের একটি বাউলী (step well). তার দেওয়ালে খোদিত আছে কৃষ্ণলীলার কিছু দৃশ্য। অনুমান ওই মন্দিরের আগেও এখানে কিছু ছিল। ... ...
'নগর' স্টাইলে মন্দিরগুলো কোনো গাঁথুনি ছাড়াই শুধু পাথরের ব্লক বসিয়ে বসিয়ে বানানো। প্রায় সব পূর্ব মুখী, সূর্যোদয়ের দিকে। অধিষ্ঠান হচ্ছে মন্দিরগুলোর কমন ভিত্তি। তার ওপরে ধীরে ধীরে অর্ধ মন্ডপ, মন্ডপ, মহামন্ডপ, অন্তরাল এবং সবশেষে গর্ভগৃহ। সূর্য ওঠার সময় সূর্যের আলো ধীরে ধীরে দরজা দিয়ে ঢুকে গর্ভগৃহের মূর্তির ওপর পড়বে, মন্দির স্থাপত্যগুলো সেভাবেই তৈরী। গর্ভগৃহের চারদিকে প্রদক্ষিণ করার জায়গা। গর্ভগৃহের ওপরে মন্দিরের বাইরের দিকে প্রধান মিনারটাকে শিখর এবং ছোট ছোট মিনারগুলোকে উরুশৃঙ্গ বলে। শিখরের একদম ওপরে বসানো থাকে একটা কলসী। মন্দিরগুলোর বাইরের এবং ভেতরের বেশিরভাগ মূর্তিই কোনোরকম যৌন অনুষঙ্গ ছাড়া তৎকালীন সাধারণ জীবনযাপনের গল্প। এছাড়াও মন্দিরগুলোর গায়ে কিছু কিছু জায়গায় আছে ব্রহ্মার মূর্তি যেটা অন্য কোথাও দেখা যায় না। ... ...
রেললাইনের পাশে পাহাড়ি ফুলের ঝোপঝাড়। ভিজে ভিজে ভাব হাওয়ায় ভাসছে। পাহাড়ের কোলে ছোট ছোট ব্রিজ আর সুড়ঙ্গ দিয়ে ট্রেন এগিয়ে যাচ্ছিল। দেড়ঘন্টা মত সময় লাগবে উধাগামান্ডালাম পৌঁছতে। লাভডেল ইত্যাদি ছোট ছোট স্টেশনও রাস্তায় পড়ে এবং সেখানে স্থানীয় লোকজনরা ওঠানামাও করে। ... ...
শীতল মরুভূমি স্পিতি উপত্যকায় সারে তিনদিন ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - সিরিজের পর্ব ৪ - - - বিড় বিড় করে অস্পষ্টভাষী নন্দনবাবা নন্দী মাহাত্ম্য দিয়ে শুরু করে সমুদ্র মন্থনে পাক মেরে বিশ্বরূপ দর্শন ছুঁয়ে কী যে ঘন্ট পাকালেন মাথায় কিছুই ঢুকলো না। মহিলাটি শোনার চেয়ে বাবার বক্তব্য মোবাইলে রেকর্ড করতে ব্যাগ্ৰ। ব্যাটারি ডাউন হয়ে তাও বন্ধ হয়ে গেল। আমি মুখ নীচু করে হাসি চাপি। এক দশক কুয়েতবাসী মহিলা বাবাকে অতক্ষণ বকিয়ে, বাবামৃত আংশিক রেকর্ড করে বাবার ATMএ রাখলেন মাত্র দশটি টাকা! বাবা চকিতে দৃষ্টিপাত করেন আমার দিকে। তারা চলে যেতে আমার দিকে মর্মভেদী দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঝোপড়ার সামনে খোলা আকাশে দু হাতে ফ্রেমের ভঙ্গি করে বলেন, LCD স্ক্রিন মে ইয়ে ড্রামা ক্যায়সা লাগা? বলি, য্যায়সা অনোখা সওয়াল এ্যাসেহী লা-জবাব জবাব। অস্পষ্টভাষী বাবা হাসেন প্রাণ খুলে। ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এই প্রথম পর্বটি এই সিরিজের প্রাককথন। ... ...
মধ্যপ্রদেশ ভৌগোলিক ভাবে ভারতের হৃদয় কিন্তু ওখানকার মানুষের সহৃদয়তার পরিচয়ও আমি বারংবার পেয়েছি ... ... ...
একাকী ভ্রমি বিস্ময়ে ... ...
মিনিট পঁয়তাল্লিশ বাদে তিনি উঠে দাঁড়ালেন, অর্জুন পাশের গাড়ি সরাতে বললেন আমরা রওনা দেব বাঘের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। রাস্তার (মানে জঙ্গলের ভেতরের কাঁচা পথ) দিকে খানিক এগিয়ে এসে এত গাড়ি দেখে বিরক্ত হয়ে তাড়ুবাবু আবার জঙ্গলের গহীন গহনে ঢুকে গেলেন। অর্জুন কিছু নির্দেশ দিয়ে গাড়ি নিয়ে গেলেন এক জলাশয়ের পাশে, তাড়ু জঙ্গলের ভেতর দিয়ে দিয়ে এখানেই নাকি আসবে। আর সত্যিই এলোও। ধীরেসুস্থে এসে জলে নামল তারপর মুখ তুলে তাকালো। উফফ স্বাভাবিক পরিবেশে একদম খোলা জায়গায় খোলা গাড়িতে বাঘের সাথে প্রথম চোখাচোখি ... সে রোমাঞ্চ মানুষের জীবনে একবারই আসে, পরের পরের বারেরা শুধুই প্রথমবারের সাথে তূলনীয় হয়ে চলে। ... ...
ঋষিকেশকে বিদেশীদের মধ্যে আরো জনপ্রিয় করেছে ষাটের দশকের শেষদিকে বিটলসদের এখানে আগমন। বিটলসরা এসেছিলেন মহেশ যোগীর কাছে 'ট্রান্সেন্ডেন্টাল মেডিটেশন' শিখতে। আশ্রমটা ছিল সরকারের থেকে লিজে নেওয়া জায়গা। লিজ শেষ হয়ে যাবার পর পুরো আশ্রম পরিত্যক্ত হয়ে যায় এবং প্যান ট্রিনিটি দাসের মত হিপি শিল্পীরা ঢুকে ভাঙা বাড়িগুলোর সর্বত্র গ্রাফিত্তি করে যেতে থাকে। এতদিন রাজাজী জাতীয় উদ্যানের জঙ্গল ধীরে ধীরে খেয়ে নিচ্ছিল আশ্রমের ভাঙা ঘরবাড়ি। সরকার জায়গাটা ঘিরে দিয়েছে যাতে বন্য জন্তু না ঢুকে পড়ে। কিছু কিছু বাড়ি সারানো হয়েছে। ... ...
সকাল নটার সময় বন্দুক পাহাড়ে একগাদা জাদু ,হাতসাফাই দেখানোর দোকান। এটা মূলত বাচ্চাদের সময় কাটানোর জায়গা বোঝা গেল। বেশিরভাগ তামাশার দোকান তখনো খোলেনি। চাঁদমারিতে সাজানো ছিল রংবেরঙের বেলুন। পাশে দু তিনটে খেলনা বন্দুক সাজিয়ে রাখা। দোকানের লোকজন সেগুলোতে ছররা ভরছে। নীচের ম্যাল থেকে বন্দুক পাহাড়ে রোপওয়ে চলে। সেটাও এখনো চালু হয়নি। কুকুরগুলো কুয়াশাঘেরা মেঝেতে শুয়ে ঘুমোচ্ছে। ... ...
এরপর গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে খাজ্জিয়ারের ফটকের বাইরে ছেড়ে দিলেন। পুরো রাস্তাটা নির্জন থাকলেও এই জায়গাটায় একেবারে গাড়ির এবং মানুষের মেলা বসে গেছে। খাজ্জিয়ার একেবারে প্রাকৃতিক একটা গড়ের মাঠের মত। চারদিক কালাটপ বনাঞ্চলের পাইন দিয়ে ঢাকা। বৃষ্টির জল জমে মাঝখানে একটা ছোট হ্রদ। সেখানে অবশ্য এখন গরমকালে বড় বড় মানুষসমান ঘাসের ঝোপ জন্মেছে। বর্ষাকালের পর আবার জল বাড়বে ঘাসের ঝোপ ঢেকে যাবে। শীতকালে এই উপত্যকা বরফে ঢেকে যায়। কিছু থাকার জায়গাও হয়েছে এখন খাজ্জিয়ারের কাছাকছি। ... ...
উদয়পুরে এত সবুজতার কারণ পিচোলা এবং ফতেহ সাগর এই দুটো হ্রদ। পিচোলা হ্রদের মাঝখানে একটা দ্বীপে আছে জগ মন্দির। গরমকালে রানারা ওখানে গিয়ে থাকতেন, এখন সেটা একটা পাঁচতারা এবং যথেষ্ট দামী হোটেল। আর একটা দ্বীপেও 'লেক প্যালেস' বলে একটা হোটেল আছে , সেটা টাটাদের। মূল রাজপ্রাসাদেরও ক্যাম্পাসের ভেতরে দুটো বাড়ি হোটেল হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়। ... ...
গাড়ি ভীমতাল দাঁতের কাছে ছেড়ে দিল। সামনেই তালের মাঝে দ্বীপে একোয়ারিয়াম। এখানেই ভীমতালের প্রধান ঘাট। নানা রকম বোটিং করার জায়গা। রথের মেলার মত ভিড়। পড়ন্ত বেলায় মহিলারা আর বাচ্চারা দলবেঁধে স্কুপ আইসক্রিম খাচ্ছে আর লোকেরা গিয়ে বোটিংয়ের জন্য দরাদরি করছে। উত্তরাখণ্ডে কাফাল বলে একরকম লাল রঙের বেরিজাতীয় ফল পাওয়া যায়। ছোট ছোট লাল লিচুর মত কিন্তু খোসা ছাড়াতে হয় না। ছোট ছোট কাগজের প্লেটে এক এক মুঠো করে সাজিয়ে বিক্রি হচ্ছে। খুমানি [এপ্রিকট], হিসালু [কাফালের মত কিন্তু হলুদ রঙের থোকাথোকা] এসব ফলও সাজিয়ে নিয়ে বসেছে স্থানীয় লোকজন। ... ...
কাংড়া, ধরমশালা, ম্যাকলিওডগঞ্জ সব জায়গা থেকেই সামনে দেখা যায় ধওলাধার পর্বতমালা। যত ওপরের দিকে যাবেন তত আরো সামনে এগিয়ে আসবে। ম্যাকলিওডগঞ্জ অনেকে যায় ত্রিউন্ড বলে একটা জায়গায় ট্রেক করার জন্য। ট্রেক বিশেষজ্ঞদের মতে এটা হিমালয়ের সবথেকে সোজা ট্রেক এবং বাচ্চারাও করতে পারে। ট্রেকিংয়ের জুতো বা অন্যান্য গিয়ার না হলেও চলে। ... ...
একটা বয়স ছিল, যখন ট্রেনে উঠলেই মনে হত, আহা উল্টোদিকের সিটে যদি কোনও সুন্দরী এসে বসে! তখন এসে বসতো পাকা বাচ্চা, কানে ট্রানজিস্টর লাগানো দাদু, এরা। দু’এক বার আমাকে পরিহাস করতে সন্ন্যাসীও এসে বসেছে। তারপর ট্রেনে যাওয়া-আসা বাড়তে লাগলো, আর আমিও বুঝলাম, সুন্দরী মেয়ে আসলে ইয়েতির মতো একটা ব্যাপার। স্লীপার ক্লাসে তাকে খোঁজা বৃথা; তার চেয়ে পিএইচডি করা ভালো। ... ...