মজার ছলে লেখা অসামান্য এই গল্পগুলি জীবজন্তুকে অন্যভাবে দেখতে শেখায়, ভালোবাসতে শেখায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে মাত্র চার বছর, ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত সময়ে তাঁরা কর্ফু দ্বীপে ছিলেন। কিন্তু এই অভিজ্ঞতাই জন্ম দিয়েছিলো ভবিষ্যতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষক জেরাল্ড ড্যারেল-এর। সুদূর ১৯৫৬ সালে লেখা এই বইটিকে আজও সাধারণ পাঠকের পক্ষে পশুপ্রেম ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রথম পাঠ বলা যেতে পারে। ... ...
আসলে তখনও পর্যন্ত সকলেই মনে করত একটা নির্দিষ্ট শ্রেণীর লোকেদেরই এইচ আই ভি হয়। আজও বহু মানুষ মনে করে এইচ আই ভি থাকে যাদের তারা তথাকথিত সুস্থদের দলে নয়। কিছু না কিছু রোগলক্ষণ দেখা দেবেই। যা সবচেয়ে ভুল। আমাদের জীবনযাত্রা আমরাই জানি। আর কেবল মাত্র একজন যৌনসঙ্গী থাকলেও এইচ আইভি হতে পারে। যদি সেই সঙ্গীর কোনও ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ থেকে থাকে। আজকাল যদিও কাউন্সেলর বা চিকিৎসকরা কারও এইচ আইভি ধরা পড়লে তাকে নিয়ে বসে আলোচনা করেন। কিন্তু সেদিন সেই মুহুর্তে আমার করনীয় কি আমি নিজেও বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ... ...
আমার একটি প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। যার বেশীরভাগ প্রবন্ধই এই ব্লগে প্রকাশিত। সেই বই বিষয়ে দু'চার কথা ভাগ করে নিলাম আমার পাঠকদের সাথে। নিজের বই নিয়ে ফেসবুক জাতীয় সমাজমাধ্যমে আলোচনা করাটাই রীতি। কিন্তু আমি ফেসবুক বা অন্য প্রচলিত সমাজমাধ্যম থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়েছি। গুরুচন্ডালিই আমার একমাত্র মাধ্যম নিজের কথা বলার জন্য। আশা করি নিজের ব্লগে, নিজের বই নিয়ে লেখা একটু রীতি বহির্ভুত হলেও নীতি বহির্ভুত বলে বিবেচিত হবে না। ... ...
তিনি ছিলেন আমার রাঙামা। আসলে রাঙা ঠাকুমা। বাবার মেজ কাকিমা। কিন্তু সকলের কাছেই তিনি একডাকে পরিচিত ছিলেন এই রাঙামা নামেই। একেবারে টুকটুকে গায়ের রঙের সঙ্গে আদরের ডাকের কী মিল! মাথায় কালো চুলের বড়ি খোঁপা। ছোটখাটো চেহারা। সংসারের হাজারো কাজ সামলে ওই বয়সেও মসৃন ত্বক। আদতে দ্বারভাঙার কন্যা। কবি যদিও বলেছেন, "যব-ছাতু খেয়ে বাঁচে পশ্চিমের দীনে," পশ্চিমে কিন্তু লোকপ্রিয় ছোলার ছাতু। উত্তরবঙ্গে বলতে শুনেছি, বুটের ছাতু। তা রাঙামা ছিলেন এই ছোলার ছাতু মাখার স্পেশালিস্ট। তাঁর হাতের তারে সেই ছাতু মাখা গোল বলের মতো দলার যে কী সুস্বাদ ছিল তা এখনও ভুলতে পারি না। আজকের আধুনিক প্রজন্ম এমন সব আটপৌরে জলখাবারের মর্মই হয়ত বোঝে না। তবে আজও এই সব সাধারণ ঘরোয়া খাবার নিয়ে বসলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে পৃথিবী থেকে একে একে চলে যাওয়া প্রিয় মুখগুলি যাঁদের স্নেহ, আর ভালোবাসা আমাদের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিকে এমন উজ্জ্বল করে রেখেছে। ... ...
কিশোর কবি সুকান্ত এসব ছড়া লিখেছিলেন সম্ভবতঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিনগুলিতে বেলেঘাটায় বসে। আমাদের বাড়িতে রেডিও এল ১৯৫৭ সালে, তখন ক্লাস টু’তে পড়ি। এর আগে কাকারা রেডিও ভাড়া করে আনতেন মহালয়ার একদিন আগে, বাড়ির সবাই ভোর চারটেয় উঠে ‘শ্রীমহিষাসুরমর্দিনী’ শুনবে যে! সেটা আসলে কালীবাবুর ইলেক্ট্রিকের দোকানে তৈরি লোক্যাল সেট, খালি কোলকাতা ক’ স্টেশন শোনা যায়। ... ...
বিতান মনে করত ওর জায়গায় আমাকে বসিয়ে দিয়ে ও দূর থেকে নিজের মত করে সব কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করবে। আসলে সংগঠন যতই নেটওয়ার্কের অংশ হোক না কেন, প্রজেক্ট আর সংগঠন দুটো যে আলাদা বিষয় ও কিছুতেই মানতে চাইত না। এর জন্য শুধু মাত্র ওকে দোষ দিয়েও লাভ নেই। এই নেটওয়ার্কটার শুরুতেই তো গলদ ছিল। নামেই নেটওয়ার্ক, আর্থিক অনুদান পাওয়ার উদ্দেশ্যে আসলে তো কয়েকটা সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরী আর একটা সংগঠনমাত্র। যে যে সংগঠনের প্রতিনিধিরা মিলে এই নেটওয়ার্ক করেছিল তারা স্ব-স্ব এলাকায় প্রজেক্টের ড্রপ ইন সেন্টার কেই নিজের নিজের সংগঠনের অফিস মনে করত।সেখান থেকেই কেউ কেউ নিজেদের সংগঠনের কাজ চালাতো। কোনও একটি সংগঠনের রেজিষ্ট্রার্ড অফিস অ্যাড্রেস এবং এই তথাকথিত নেটওয়ার্কের রেজিষ্ট্রার্ড অফিস অ্যাড্রেসও তো এক ছিল। এমন কি অনেক এলাকার সংগঠন নেটওয়ার্কের অংশ হিসাবে প্রজেক্টের কাজকেই নিজের সংগঠনের কাজ বলে দাবি করে অন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার কাছে রিপোর্ট দাখিল করে আর্থিক সহায়তা নিত। সে এক আজব চিড়িয়াখানা। সাধে কি আর লোকে এন জি ও বললেই বাঁকা চোখে তাকায়। তবে এটাও সত্যি আমার দেখা বহু সংগঠন প্রথমদিন থেকেই আর্থিক সততার সাথে কাজ করে আসছে আজও। ওই জন্যেই বলে হাতের পাঁচটা আঙ্গুল সমান নয়, তাই মুড়ি মুড়কি এক করে দেখতে নেই। ... ...
আচ্ছা, ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে এই যে আমাদের এত কান্নাকাটি, এইটা আদৌ করছি কেন আমরা? শুধুই ওটা আমাদের সংবিধানে সসম্মানে উল্লিখিত আছে বলে? শুধুই কি এই কারণে যে, পশ্চিম একে এক অবশ্য-পালনীয় আদর্শ বলে মনে করে, এবং আমরা পশ্চিমকে অনুকরণ করতে ভালবাসি? শুধুই কি এই কারণে যে, ওর মধ্যে ‘নিরপেক্ষতা’ কথাটা আছে এবং সেটা শুনতে বেশ চমৎকার লাগে? ... ...
গত ৫ তারিখে হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে মারা গেলেন স্ট্যান স্বামী; ৮৪ বছরের এক বুড়ো, যার পার্কিনসনগ্রস্ত হাতে জলের গেলাস ধরা মুশকিল, চামচ ধরে রাখতে পারেন না, লেখা বা টাইপ করা তো দূরের কথা। আদালত মেডিক্যাল রিপোর্ট থেকে জেনেছে যে উনি কানেও কম শুনছেন, চোখে দেখেছে যে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত লোকটি একজন দুর্বল অশক্ত বৃদ্ধ। তবু তার জামিনের আবেদন বারবার খারিজ হয়। ... ...
বিভিন্ন সময়ে শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গে এল জি বি টি সংগঠনগুলোর মধ্যে আর্থিক অনুদান পাওয়া নিয়ে রেষারেষি ছিলই। তখনও ভারতবর্ষে ৩৭৭ বিদ্যমান।এল জি বি টি ইস্যুতে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাও তো তখন অনেক কম ছিল। এমনকি যে সংগঠন তথা নেটওয়ার্কটায় আমার কর্মজীবনের শুরু, আর্থিক সহায়তা পাওয়ার উদ্দেশ্যে রাতারাতি তা তৈরির ইতিহাসেও একে অন্যকে বঞ্চিত করার মতো অনেক “কালিমাযুক্ত ঢাকঢাক গুড়গুড়” ছিল যে পরবর্তী কালে পশ্চিমবঙ্গে এল জি বি টি সংগঠনগুলোর মধ্যে আর কখনো সদ্ভাব তৈরী হলো না। এমনকি আজ যে এল জি বি টি কমিউনিটির মানুষ একে অন্যকে বিশ্বাস করেননা তার কারণও এর পিছনেই নিহিত আছে বলে আমি মনে করি। আর তাই " না আঁচালে বিশ্বাস নেই" এই আপ্তবাক্যে বিশ্বাসী ছিলাম সকলেই কমবেশি। অথচ এইচ আই ভি এডসের বাইরে গিয়ে, সংগঠনের জন্য সরাসরি আর্থিক সহায়তা আসুক এটা আমরা সকলেই চাইতাম। ... ...
একটা রক্তজমানো চিৎকার অন্ধকারকে খান খান করে দিল। আবার, আবার! তারপর সব চুপ। দু’সেকেন্ড। পকেট থেকে রিভলবার বের করে আমি দৌড়ুতে থাকি যুবরাজের আবাসের দিকে। চিৎকারটা ওদিক থেকেই আসছে, প্রথম আওয়াজটি স্পষ্টতঃ কোন নারী কন্ঠের। ... ...
আমার তখন এসব গা সওয়া হয়ে গেছে। মোটামুটি জামাকাপড় পাল্টানোর মত করে সকলে শরীর পাল্টায়, আমিও ততদিনে বুঝতে শিখেছি জোর করে আটকানো যায়না কিছুই। এ জগতে শরীরের ছড়াছড়ি, আর যে যত নষ্ট সে তত ভাল। পুরুষমানুষ আবার নষ্ট হয় নাকি। বস্তাপচা সতীত্ব আসলে ন্যাকামি। বিপ্রদাসকে এসব বলতে গেলে সে তো আর এক কাঠি ওপরে, পারলে আমাকেও বেচে টেচে দেয়। এ বৃন্দাবনে সবাই সতী। নিজেকেও বোঝাই ভালবাসা তো মনে মনে, মনটাই সব। কোলাকুলি হাত মেলানো সেটাও তো শরীর আর, গোপন অঙ্গ সেটাও শরীর। তবুও মন মানে না। এ সমাজে যেমন কেউ সম্পর্কে আছে জানার পরেও তার সঙ্গে লোকে কিছু করে বেড়ায় তেমনই তার সঙ্গীর কান ভাঙাতেও ছাড়েনা এই বলে যে "তোমার ভালবাসার মানুষটা মোটেও লয়াল নয়।" অন্যের মুখ থেকে কিছু শুনে অপ্রস্তুত হয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে আমি চাই নি কোনওদিন। ... ...
দরজার গুমগুম আওয়াজ থামল। আমি কান খাড়া করে রয়েছি। ওপাশে একটু ফিসফিস কথাবার্তা। তারপর উঁচুগলায় — আমরা, সৌরভবাবু। দরজা খুলুন। ডাইনিং হলে গিয়ে একসঙ্গে চা খাব। আমি চটপট রিভলবার আমার এয়ারব্যাগে চালান করে দিয়ে দরজাটা খুলি। প্রায় ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়েন দুই বোন - শৈবলিনী ও কুন্দনন্দিনী। ... ...
আমার বাড়ীতে না জানলেও বিতানের বাড়ীতে আমাদের সম্পর্ক গোপন ছিলনা। বিতানের মা আর দাদাভাই প্রথম থেকেই সাদরে মেনে নিয়েছিলেন আমাকে, যদিও ওর বাবার মেনে নিতে অনেক সময় লেগেছিল। সেদিন বিতানের বাড়ী গিয়ে পৌঁছে বেল বাজাতেই কাকিমা দরজা খুলল আর পিছনে কাকুর গলা, "বিতান তো বাড়ীতে নেই।" আমি দুজনকেই জড়িয়ে ধরে বললাম,"বিতান ছাড়া আমি যেন এ বাড়িতে আসিনা, আর তোমরা বুঝি আমার কেউ নয়।" আর তারপর যখন ওনাদের অবাক করে বিবাহবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানালাম সত্যিই অবাক হয়েছিলেন দুজনেই। দুজনের চোখে মুখে লজ্জা, আনন্দ ভাললাগার মিশেলে যে আলো সেদিন দেখেছিলাম তা আমার জীবনেও সেরা প্রাপ্তি । দাদাভাই ও অবাক হয়েছিল খুব। যে দিনটা ওরা জানত না, জানার কথাও ভাবেনি কোনওদিন সেটা এভাবে উদযাপন হবে কল্পনাও করেনি। আনন্দে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল। বিতানকে ফোন করে দাদাভাই সবটাই বলেছিল। আর জীবনে প্রথম বার কেক কাটার আনন্দে চোখে জল এসেছিল কাকুরও, আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন," এভাবে আমাদের জন্য তুমি ভাবতে পার, আমি আগে কোনওদিন ভাবিনি, আমাদের দেখা সম্পর্কের বাইরে ছেলে ছেলের সম্পর্ক মানতে পারিনি, তাই হয়তো তোমাকে নিয়ে অসুবিধা ছিল। তুমি আমার ছেলের থেকেও বেশি।" কাকু কাকিমা দুজনেই চেয়েছিলেন আমাদের সম্পর্কটা যেন অটুট থাকে। যদিও ২০০৬ সালে আমার এইচ এই ভি ধরা পড়ার পর আমার আর বিতানের মাঝে সম্পর্কটা আর থাকেনি। তবে কাকু কাকিমার বিয়ের দিনটাতে আজও আমি ওই দিনটাতে ওদের ফোন করতে ভুলি না। ... ...
কফিহাউসের সিঁড়িতে দাঁড়িয়েই মনটা ভাল হয়ে গেল ধীমানের। কফিহাউস বলতে যাদবপুর কফিহাউস। কলকাতায় কফিহাউস মোট তিনটে, অন্তত ধীমান তাই জানে। কিন্তু অন্য দুটো কফিহাউস ধীমানের তেমন পছন্দ নয়। কলেজ স্ট্রীটের কফিহাউসটা একটা প্রাগৈতিহাসিক, অন্ধকার গুহার মত মনে হয় আর সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ-এরটায় ঢুকলেই মনে হয় কোন অফিসের ক্যান্টিন। যাদবপুর কফিহাউস সে তুলনায় অনেক বেশী খোলামেলা, এখানে অনেক বেশী আলো হাওয়া। ... ...
আমষ্টারডামে ট্যুরিজিমের সমীক্ষায় দেখা গেছে এই শহরে বাইরের দেশ থেকে যে সব পর্যটকেরা আসেন তাঁদের থাকার মেয়াদ গড়ে মোটামুটি ৩ থেকে ৪ রাত। তো এত কম সময়ের মধ্যে রেড লাইট ডিষ্ট্রিক্ট সম্পর্কে বিশাল কিছু জ্ঞান সঞ্চয় করা সম্ভব নয় যদি না আগে থেকে এই বিষয়ে ইন্টারেষ্ট নিয়ে পড়াশুনা করে থাকেন। হাতে খুব বেশী ঘুরে ফিরে দেখার সময় নেই, কিন্তু এদিকে ইচ্ছে আছে আমষ্টারডামের এই বিখ্যাত এলাকার সম্পর্কে কিছু জানতে এবং ঘুরে দেখতে। তাহলে কি করবেন? বেশীর ভাগ পর্যটক যেটা করে সেটাই – একটা রেড লাইট ডিষ্ট্রিক্ট হেঁটে দেখার গাইডেড ট্যুর নিয়ে নেবেন! ... ...
ছোটবেলায় কাজ ছিল, নতুন নতুন রাস্তায় গিয়ে সে রাস্তার নাম দেওয়া দেশের মতো করে। তখন মাথায় সবে সবে কলম্বাস! একটা কানাগলির নাম ছিল বারান্দাপুরী, সে গলির বাড়িগুলোর বারান্দা আমরা কিনে নেব। ঝিলের পাশের যে ঘরোয়া আলোছায়া রাস্তা, তার নাম দি রেখেছিল দীঘিনগর। এই দীঘিনগর নাকি অভিশপ্ত। দীঘিতে যারা যারা আজ অব্দি ডুবে গেছে, রাত্রে ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁলে জলে নাকি আজও বুদবুদ ওঠে, জলে কি যেন ভেসে ওঠে … ... ...
ফুলবানু বাস-টারমিনাল এলাকাতে থাকতেই পছন্দ করে। বাস-টারমিনালে ঢুকতে দশ টাকা দিতে হয় বটে, তবে এখানে আয় ভালো। কল্যাণপুর থেকে শত শত বাস ছেড়ে যায়। কিন্তু ওখানকার মানুষগুলো দান-খয়রাতে তেমন পটু না। হাতটা বড়িয়ে দিলেই রেগে যায়। গাবতলী বাস-টারমিনালই তার পছন্দ। এখানকার মানুষগুলোর বেশভূষা দেখলেই বোঝা যায় এরা কল্যাণপুরের মানুষগুলোর চেয়ে অর্থবিত্তে কমা। তবুও এরাই বাসে ওঠার আগে না হলেও দু’ টাকা দেয়। জ্ঞান হওয়া অবধি সে এখানেই। ... ...
সত্যি কথা, পার্কসার্কাসের ওই ১/সি সার্কাস মার্কেট প্লেসের তিনকামরার ছোট্ট ফ্ল্যাট, যার ভেতরে গাদাগাদি করে আমরা অন্ততঃ আঠেরো জন থাকি, তাতে চলতে ফিরতে কারও না কারও গায়ে ধাক্কা লাগার কথা। লাগত না, তার দুটো কারণ। এক, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের সংখ্যা কমতে থাকত। সবাই এক এক করে স্কুল-কলেজে বা অফিস-কাচারিত, একেবারে ‘যাও সবে নিজ নিজ কাজে’। ... ...
হ্যাঃ, এই নাকি যুবরাজ। সঙ্গে গতকাল পরিচয় হওয়া রাজবাড়ির ড্রাইভার শান্তিরাম না থাকলে বুশশার্ট ও প্যান্ট পরা বছর চল্লিশের ভদ্রলোকটিকে যুবরাজ বলে ভাবতে কষ্ট হত। প্ল্যাটফর্মে বেশ ভীড়, তবে ফার্স্টক্লাস কোচের সামনে তেমন কিছু না। কালো কোট গায়ে কন্ডাকটরের সঙ্গে শান্তিরাম টিকিট দেখিয়ে কিছু কথা বলছিল। তারপর দেখি ঢোলা খাকি ইউনিফর্ম পরা ... ...
বাজার করাটা নিঃসন্দেহে একটা শিল্প। তাতে বিশেষ কারিগরি দক্ষতা লাগে, ইচ্ছা লাগে, ধৈর্য লাগে, বুদ্ধি, দুষ্টবুদ্ধি লাগে, অতি দ্রুত অঙ্ক-কষার ক্ষমতা লাগে। বাপরে, এত কিছু যদি আমার এই এক দেহতেই থাকে, তাহলে বাজার কেন করব বাপু, অ্যাষ্ট্রনট হব, চাঁদে যাব, মঙ্গলে যাব। কিন্তু তা বললে চলবে কেন? বাজার অতি বিষম বস্তু, না করলে পেটে কিছু পড়বে না, তবে কিনা যাঁরা গৃহিণী নিয়ে ঘর করেন তাঁদের অবশ্য পেটে না পড়লেও পিঠে ঠিক পড়বে। ... ...