দক্ষিণ পশ্চিম ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়াতে আছে ইউরোপের সবচেয়ে বড়ো পারমানবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। পৃথিবীর দশটির একটি। তেরো বছরের মেয়ে একাতেরিনাকে (ক্যাথরিন) নিয়ে অলিয়েনা ঝাপোরিঝিয়া থেকে ট্রেনে দু রাত্তির কাটিয়ে পোল্যান্ড পৌঁছেছিলেন। একটি ক্যাথলিক গিরজেতে তিন রাত্তির বাসের অনুমতি পাওয়া গেছিল। কিন্তু ব্রিটিশ ভিসার খোঁজ নেই। এবার কোথায় যাবেন? কিছু বন্ধু বান্ধবের সূত্রে খবর পান সুইডেনের গোয়েটেবর্গে সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা আছে। ... ...
একদিকে ইতিহাসের একঘেয়ে গল্প - অন্যদিকে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা, একটু হাসাহাসি হলে মন্দ হয় না। ফচকে এই নাটকটি আশা করি হাসির হাল্কা স্পর্শ দেবে আপনার মনে। ... ...
পোল্যাণ্ডের প্রথিতযশা চলচ্চিত্র পরিচালকদের অন্যতম আন্দ্রে ভাইদার দীর্ঘ চলচ্চিত্র জীবনের শেষ দুটি ছবি ছিল বায়োপিক। প্রথমটি পোল্যাণ্ডের বিখ্যাত সলিডারিটি আন্দোলনের নেতা লেখ ওয়ালেসাকে নিয়ে। দ্বিতীয়টি পোল্যাণ্ডের আভাঁ গার্দ চিত্রশিল্পের এক পুরোধা ব্যক্তিত্বকে নিয়ে। এই দুটি ছবি শুধু সময়ের দলিল নয়-- জীর্ণ , প্রাণহীন এবং মানবিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এক তথাকথিত সমাজতন্ত্রের ধারণার বিরুদ্ধে মানুষের যুদ্ধ ঘোষণার পক্ষেও বটে। একুশ শতকের সমাজতন্ত্রের নির্মাণ যদি ঘটাতে হয় তাহলে এই ভুলগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া, তাদের ধিক্কার জানানো ঠিক ততটাই জরুরী ,যতটা জরুরী এই মুহূর্তে বিকল্প সমাজব্যবস্থা নির্মাণের পথে যাত্রা। আন্দ্রে ভাইদার এই ছবি দুটি আমাদের সেই সুযোগ করে দেয়। ... ...
দিনে দিনে ক্রমশ: অসামাজিক হয়ে যাচ্ছি বলে নিজের আত্মচেতনা সজাগ হচ্ছে এই বলে যে কিছুটা অন্তত এফর্ট দেওয়া দরকার আমার তরফে যাতে করে একদম বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাই - তা এফর্ট দিচ্ছি আজকাল। আর সেই এফর্টের আগে-পরে যা হচ্ছে সেগুলো ডকুমেন্টেড করে রাখাই এই লেখার উদ্দেশ্যে ... ...
কৈশোর থেকে যৌবনের উড়াল। বদলে যায় পরিবেশ। বদলে যায় স্বজন-বান্ধব-পরিচিতি। বদলে যায় সময়। বদলে যায় জীবন, পুর্ব-লালিত ধ্যান ধারণা। সবার নয়, কারোর কারোর। এ বদলের ছাপ আবার সবসময় বাইরে পড়ে না। তাই আশেপাশের অজান্তেই ঘটে যায় অদল-বদল। আর কখনো কখনো এই বদলের কেন্দ্রে থাকে একটি জড়বস্তু। একটি শিক্ষাস্থান। খিড়কী থেকে সিংহদুয়ারের জীবনে খোলা হাওয়া। বদলের ক্যাটালিস্টও। জীবনে বদলই ধ্রুব। জ্ঞানীরা তাই বলেন। তবু কতটা সহজ হয় এই অন্তর-যাত্রা? কতটা মূল্য দিতে হয়? ... ...
পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির খবরকেও ছাপিয়ে দেশজুড়ে এখন লোকজনের প্রাত্যহিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে লেবুর অস্বাভাবিক দাম। গতমাসেও যেখানে কুড়ি টাকায় অন্তত ছটি লেবু পাওয়া যেত, সেই লেবুই এখন অবিশ্বাস্য ভাবে বিকোচ্ছে আক্ষরিক অর্থে সোনার দামে। একে তো গত ১২১ বছরে এত গরম নাকি মার্চ মাসে পড়েনি, তাই তৃষ্ণায় ছাতি ফাটা ধনী-দরিদ্র সব মানুষের সামান্য চাহিদা একটু লেবু জল। চাহিদা যখন আকাশচুম্বী লেবুর যোগান তখনই অন্যান্যবারের তুলনায় সবচেয়ে কম। লেবু এখন রাতারাতি বিলাস সামগ্রী। লেবুর দাম কমানো এখন বুঝি কেবল ভগবানেরই হাতে! সেই বিশ্বাস সম্বল করে বারাণসীতে তন্ত্র সাধনার জাগ্রত দেবী আদিশক্তির মন্দিরে তাই এগারোটি লেবু বলি দেওয়া হয়েছে। আজ হঠাৎ লেবু বিলাসিতার পর্যায়ে চলে যাওয়ায় স্মরণ করা দরকার, একেবারে গোড়ার দিকে রোমে লেবু ছিল ধনীদের কাছে বিরাট মর্যাদার প্রতীক। ঐতিহাসিক পম্পেই শহরের নানান মন্দির, প্রাসাদ, বাড়ি ও স্থাপত্যের দেওয়ালে খচিত ফ্রেস্কো পেইন্টিংয়ে লেবু চিত্রিত আভিজাত্যের চিহ্ন হিসেবেই। প্রাচীন গ্রিসে বিষক্রিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে লেবুর ব্যবহার ছিল। গুপ্তচরবৃত্তি, অবৈধ প্রণয় বা যুদ্ধের ক্ষেত্রেও লেবুর ভূমিকা চাঞ্চল্যকর। প্রবাদ প্রতিম প্রেমিক ক্যাসানোভা ও তাঁর শতাধিক প্রণয়ীর সম্ভোগে জন্মনিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার ছিল লেবু। কিংবদন্তিতুল্য জেনেরাল টমাস 'স্টোনওয়াল' জ্যাকসন রণক্ষেত্রে যাবার আগে লেবু চুষতেন। সেই থেকে তাঁর পরিচিতি বিশ্বের সবচেয়ে খ্যাতিমান লেবু-প্রেমিক হিসেবে। ... ...
কেবল সিরিয়া ইরাক আফঘানিস্তান নয়, আপন দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণে উৎপীড়িত অন্য অনেক দেশের মানুষজন ব্রিটেনে আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছেন। এঁদের মধ্যে কিছু এসেছেন এল সালভাদোর থেকে। বিগত তিরিশ বছর যাবত সেদেশে চলেছে গ্যাং ওয়ারফেয়ার, বিভিন্ন দলের মধ্যে সশস্ত্র লড়াই। শাসন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। সে দেশের সঙ্গিন আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সালভাদোরিয়ান শরণার্থীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেবার কথা ব্রিটিশ সরকার বিবেচনা করছেন। ইতিমধ্যে তাঁদের বসবাসের ব্যবস্থা হচ্ছে দেশের নানা জায়গায়। তাঁদের কেস খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। ... ...
প্রথম দলকে আপনি রোজ চোখে দেখেন, মুখ চেনেন, কিন্তু প্রায় কারোরই নাম জানেন না। দ্বিতীয় দলকে আপনি প্রায় কখনোই দেখতে পান না, জীবনে কখনো পাবেনও না – কিন্তু তাদের নাম আমি, আপনি সবাই জানি। কারণ, এই এক শতাংশ দেশবাসীর হাতে আছে দেশের মোট সম্পদের ৭০ শতাংশ। আর তার পরের ধাপের কুড়ি শতাংশ ভাগ্যবানের হাতে আছে প্রায় উনিশ শতাংশ সম্পদ। তাহলে হাতে রইল কি? পেনসিল? না দাদা – এগারো শতাংশ। ভাগীদার কজন? দেশের প্রায় আশি শতাংশ মানুষ ... ...
তখনকার বণিকেরা এতটা শিল্প সম্মত মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিতে শেখেনি, কিন্ত তাদের সামগ্রীর বাস্তব বিজ্ঞাপন করাটা অবশ্যই জরুরি ছিল। কারণ গ্রামের সাধারণ মানুষদের কাছে সে সময় ব্রোঞ্জ সামগ্রী, তেল, গাভী ও বলদ কিংবা মূল্যবান পট্টবস্ত্র ছিল, একেবারেই নতুন এবং অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। অতএব আমার এই কল্পনা, অলীক অবাস্তব নয়। আমরা প্রকৃতিজাত অনন্য এক প্রাণী - হোমোস্যাপিয়েন্স, সেদিনও ছিলাম, আজও আছি। সে সময় ব্যবসায়ীরা মনোহারী সত্য কথায় মানুষকে প্রলুব্ধ করেছিল, এখন ব্যবসায়ীদের মনোহারী নির্জলা-মিথ্যা কথায় আমরা প্রলুব্ধ হই, তফাৎ এইটুকুই। ... ...
[ আমার চোখে দেখা আর হৃদয়ে্র অনুভবে জারিত এই ছোট্ট ছোট্ট চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এখনো মোছেনি আমার মাথার স্মৃতিকোষগুলোর থেকে। তার থেকে তুলে আনা এই মণি-কাঞ্চনগুলোয় যেমন পেয়েছি সাক্ষাৎ ভগবানদের, তেমনি কিছু কিছু সাংঘাতিক ঘটনা নেহাৎ-ই সহ্য করেছি উপায়ান্তরহীন যাপনে। ক্রোধে ফেটে পড়েছি মননে। রক্তচাপ বাড়িয়েছি বারংবার – মধ্যবিত্ত মনোভাবনায়। পেয়েছি আচম্বিত বাড়ানো হাত - অকাতর অকৃপন স্পর্শে। কৃতজ্ঞতাও হয়তো অব্যক্ত ছিল আমার পক্ষে সে সময়। তো এইসব ছিন্নবিচ্ছিন্ন ঘটনার কিছু রেশ গ্রন্থিত করছি প্রাণের আনন্দে। এখনো বেঁচে আছি, বেঁচে আছে আমার প্রজন্ম। তাই ভগবানের নামকীর্তন যেমন করেছি অক্লেশে, আবার সেই ‘আতঙ্ক’ চলচিত্রের মতো যেন কিছুই দেখিনি আমি হয়ে পাল্টেছি চরিত্র কিম্বা স্থান-নাম। মহাবীর-বুদ্ধ-নানক-রামকৃষ্ণের পুণ্যভুমিতে আজ হিংসা পৌনঃপুনিকতায় ছড়াচ্ছে বিদ্বেষের লাল আগুন। যে আগুন শুধুই ভস্ম-জন্ম আহ্বান করে। নিরুপায় আমি করজোড়ে মার্জনা চাইছি আমার এটুকু অপৌরুষেয়তার।] ... ...
কৈশোর থেকে যৌবনের উড়াল। বদলে যায় পরিবেশ। বদলে যায় স্বজন-বান্ধব-পরিচিতি। বদলে যায় সময়। বদলে যায় জীবন, পুর্ব-লালিত ধ্যান ধারণা। সবার নয়, কারোর কারোর। এ বদলের ছাপ আবার সবসময় বাইরে পড়ে না। তাই আশেপাশের অজান্তেই ঘটে যায় অদল-বদল। আর কখনো কখনো এই বদলের কেন্দ্রে থাকে একটি জড়বস্তু। একটি শিক্ষাস্থান। খিড়কী থেকে সিংহদুয়ারের জীবনে খোলা হাওয়া। বদলের ক্যাটালিস্টও। জীবনে বদলই ধ্রুব। জ্ঞানীরা তাই বলেন। তবু কতটা সহজ হয় এই অন্তর-যাত্রা? কতটা মূল্য দিতে হয়? ... ...
তেমনই আমরা জানতে পারব না এলেন কেন উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হলেন। কেন আর দশটা ইউরেশিয়ান মেয়ের মত একটু পড়তে শেখা, একটু সেলাই-ফোঁড়াই , একটু নাচতে শেখা এই যা সব নিয়ে সাধারণ ইউরেশিয়ান মেয়েরা সন্তুষ্ট থাকত,এলেন কেন তার সীমানা ছাড়িয়ে বাইরে তাকাতে চাইলেন? তখনকার সাধারণ চাকুরিজীবি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বাড়িতে কি খুব পড়াশোনার চর্চা ছিল, বিশেষত মেয়েদের মধ্যে? ১৮৮২ সালের তথ্য থেকে পাই তার থেকে দেখা যায় যে ইউরোপিয়ান আর ইউরেশিয়ানদের মধ্যে, অন্তত কলকাতায়, প্রাইমারি বিভাগে মেয়েদের ভর্তির হার ছেলেদের প্রায় দ্বিগুণ। খুবই আশ্চর্য তথ্য। তবে মিডল স্কুলে গিয়েই এই অনুপাত উলটে যাচ্ছে। বিভিন্ন আংলো-ইন্ডিয়ান স্মৃতিকথার টুকরো-টাকরা যা হাতে এসেছে, তার থেকে এও ধারণা করা যায় যে ইউরেশিয়ান মেয়েদের অক্ষরজ্ঞান দরকার এই অবধি ঠিক আছে, তবে তার থেকে খুব বেশি শিক্ষার দরকার বলে কেউ ভাবেন নি সেই সময়। ওই প্রাইমারি স্কুলই ঢের। অবশ্য এই জনগোষ্ঠীর ছেলেরাও যে খুব বেশি দূর পড়াশোনা করতেন এমন তো নয়। আলাদা করে শ্রেণিবিভাগ করা থাকত না বলে একদম সঠিক করে বলা শক্ত, তবে এলেন যে বছর এন্ট্রান্স বা এফ এ পাস করেছেন সেই সেই বছরের তার সহপাঠীদের তালিকায় কিন্তু সাহেবি নামের ছাত্রের সংখ্যা নেহাতই হাতে গোণা। ... ...
[ আমার চোখে দেখা আর হৃদয়ে্র অনুভবে জারিত এই ছোট্ট ছোট্ট চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এখনো মোছেনি আমার মাথার স্মৃতিকোষগুলোর থেকে। তার থেকে তুলে আনা এই মণি-কাঞ্চনগুলোয় যেমন পেয়েছি সাক্ষাৎ ভগবানদের, তেমনি কিছু কিছু সাংঘাতিক ঘটনা নেহাৎ-ই সহ্য করেছি উপায়ান্তরহীন যাপনে। ক্রোধে ফেটে পড়েছি মননে। রক্তচাপ বাড়িয়েছি বারংবার – মধ্যবিত্ত মনোভাবনায়। পেয়েছি আচম্বিত বাড়ানো হাত - অকাতর অকৃপন স্পর্শে। কৃতজ্ঞতাও হয়তো অব্যক্ত ছিল আমার পক্ষে সে সময়। তো এইসব ছিন্নবিচ্ছিন্ন ঘটনার কিছু রেশ গ্রন্থিত করছি প্রাণের আনন্দে। এখনো বেঁচে আছি, বেঁচে আছে আমার প্রজন্ম। তাই ভগবানের নামকীর্তন যেমন করেছি অক্লেশে, আবার সেই ‘আতঙ্ক’ চলচিত্রের মতো যেন কিছুই দেখিনি আমি হয়ে পাল্টেছি চরিত্র কিম্বা স্থান-নাম। মহাবীর-বুদ্ধ-নানক-রামকৃষ্ণের পুণ্যভুমিতে আজ হিংসা পৌনঃপুনিকতায় ছড়াচ্ছে বিদ্বেষের লাল আগুন। যে আগুন শুধুই ভস্ম-জন্ম আহ্বান করে। নিরুপায় আমি করজোড়ে মার্জনা চাইছি আমার এটুকু অপৌরুষেয়তার।] ... ...
কয়লা পুড়িয়ে পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে তারা সেমিনারে সেমিনারে গলা ফাটায়। জঙ্গল সাফ করে তৈরি উৎকৃষ্ট কাগজের হাজার হাজার পাতায় তারা রিসার্চ রিপোর্ট তৈরি করে। কিন্তু সেমিনার হলে দৈবাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ কিছুক্ষণের জন্যেও বন্ধ হয়ে গেলে, বিক্ষোভে সবাই হাহাকার করে ওঠে। কয়লা পোড়ানো বিদ্যুতে এসি না চললে, আলো না জ্বললে, পরিবেশ সচেতন বিজ্ঞানের যে দম বন্ধ হয়ে আসে। ... ...
দুটো জিনিস নিয়ে আজকাল খুব কনফিউশন। এক, গুডি পাড়বার দিন অনেকে বাংলা হরফে হিন্দু নববর্ষ উইশ করছেন। দুই, বাংলাদেশের ১৪ই এপ্রিলটা সঠিক পয়লা বৈশাখ না পশ্চিমবঙ্গের ১৫ই এপ্রিল, সেই নিয়ে বিবাদ। সেখানেও হিন্দু মুসলমান চলে আসছে। ... ...
কোনো দেশ দখলের মহান ব্রতে যখন সৈন্য বাহিনী পথে নামে তাদের পিছু পিছু চলে সরবরাহ বাহিনী – রাঁধুনি খানসামা থেকে আরম্ভ করে মুচি মেথর। সৈন্যরা যেমন যেমন দুর্বার বেগে এগিয়ে যায় তার সঙ্গে তাল রেখে ডাল ভাত এমনকি দাঁত খোঁটার খড়কে কাঠিটি পর্যন্ত যোগান দেবার কনভেয়র বেল্টটি চালু থাকে। অভুক্ত সৈন্য বাহিনী যুদ্ধ জেতে না। আপন আপন রাশিয়া অভিযানের কালে নাপোলেওঁ এবং হিটলার এই সার সত্যটি অনুভব করেছিলেন। ১৯৪২ সালের ডিসেম্বরে শূন্যের পনেরো ডিগ্রি নিচে নেমে যাওয়া ঠাণ্ডায় যে জার্মান বাহিনী স্টালিনগ্রাদে লড়াই করছিল, তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনের দশ শতাংশ পৌঁছে দিতে অক্ষম হয় গোয়েরিঙের লুফতভাফে । ফলাফল আমাদের জানা। ... ...
বাংলায় যদি একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, তাহলে সমাজমাধ্যমে কী হয়? এখন যা হচ্ছে। সরকারপক্ষ, হয় চেপে যায়। নইলে বলে, দোষ আমাদের কেন হবে? মদ খেয়ে যদি কেউ খুন-ধর্ষণ কিছু একটা করে, তাহলে দোষ তো তাড়ির, তাড়ির না হলে নির্ঘাত খেজুর গাছের। পুলিশ তো আর গাছকে গ্রেপ্তার করতে পারেনা, ভারতীয় দন্ডবিধিতে তেমন ধারা নেই, তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। যদি প্রশ্ন করেন, কিন্তু খুনটা তো আর গাছ এসে করে দেয়নি, খুনিকে ধরলেন না কেন? তখন তাঁরা অম্লানবদনে বলবেন, আরে খুন হয়েছে জানবে, তবে তো। আইন আইনের পথে চলবে। আগে অভিযোগ, তারপর তদন্ত। খুন হবার আগে, সেই বেটি থানায় এসে অভিযোগ করেনি কেন? কোথাও কেউ প্রপার প্রসিডিওর ফলো করবেনা, আর সব দোষ হবে প্রশাসনের? মামার বাড়ি? সংখ্যাগুরু বিরোধীরা, সেই শুনে বলবেন, দেকেচ, আগেই বলেছিলাম, হিন্দু খতরেমে। খেজুর গাছের দোষ সরকার তো দেখতে পাবেইনা, ও গাছ তো আরব থেকে এসেছে। এরা সমুদ্রের নাম দিয়েছে, আরব সাগর, এদের পুলিশ আরবী ঘোড়া চড়ে, এদের একমাত্র দাওয়াই হল কেন্দ্র। কেন্দ্র থেকে তিনশছাপ্পান্ন লাও, দিল্লি থেকে সিবিআই। মারবে এখানে, বডি পড়বে তিহারে। জ্যায় শ্রীরাম। যদি মিনমিন করে প্রশ্ন করেন, কিন্তু এদিকে তো বঙ্গোপসাগর, তাছাড়া ওদিকেও তো হাথরাস-টাথরাস কীসব হয়েছে, তখন সিবিআই ঠিক কী করছিল? রেডিমেড জবাব, বড়-বড় কথা বলবেন না, আপনি কি সেকু-মাকু না লিবারবাল? কাশ্মীরে যখন পন্ডিতদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখন আপনি কোথায় ছিলেন? যখন আফগানিস্তানে বুদ্ধমূর্তি ভাঙা হচ্ছিল, আপনি কী করছিলেন? যখন নাইন-ইলেভেন হল, তখন... ইত্যাদি প্রভৃতি। ... ...
আমার বাবাকে শেরপুরের মানুষ ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলে মনে করতেন। সাধারণ মানুষ আব্বাকে চিনত এমন না, কিন্তু যারা এই ধারায় আছে তারা সবাই এক নামেই চিনত। শহরের বড় বড় মসজিদের ইমাম, ইসলাম বুঝে জানে এমন লোকজন আব্বাকে মান্য করত। আব্বার কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করতে দেখেছি অনেকেই। কোন মসজিদ বা মাদ্রাসায় আব্বার নাম বললে উনার নাম শুনা মাত্র নড়েচড়ে বসত সকলেই। আব্বা আমাদের এলাকার মসজিদে নামাজ পড়তেন না, কারণ এখানে যে নামাজ পড়ায় তিনি অল্প বয়সই, আব্বা তৃপ্তি পেতেন না তার পিছনে নামাজ পড়ে। হেঁটে দূরের এক মসজিদে যেতেন শুধু মাত্র সেই ইমাম সাহেবকে আব্বার মনে হত উনার মাপের, যার সাথে কথা বলা যায়, আলাপ করা যায়। সেই ইমাম সাহেব আমাকে অনেকবার আমার কাছে আব্বার প্রাণ খোলা প্রশংসা করেছেন। এক বাক্যে স্বীকৃতি দিছেন যে আব্বার মত ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানী মানুষ তিনি খুব কমই দেখেছেন। তিনি পরে শেরপুরের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা ও মসজিদের ইমাম হয়ে ছিলেন, এবং তখনও উনার আব্বার প্রতি মুগ্ধতা কাটেনি। আব্বা যখন অসুস্থ, বিছানায় পড়ে গেছেন। তখনও আমি দেখতাম কোথা থেকে কোথা থেকে মানুষ আসত, উদ্দেশ্য আব্বার সাথে দেখা করা আর একটু আলোচনা, ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে গল্প। আমি আব্বার এই দিকের কথা কেন বলছি? কারণ আমি আব্বাকে কোনদিন নববর্ষের বিরোধিতা করতে দেখি নাই। আব্বা নিশ্চয়ই মঙ্গল শোভা যাত্রায় অংশ নেয় নাই। কিন্তু মেজোপা যখন নববর্ষ উপলক্ষে একটা পাঞ্জাবি বা ফতুয়া এনে দিত তখন তিনি আগ্রহ নিয়েই পরতেন, খুশিতে চোখ নেচে উঠত উনার। বাব্বাহ! আমার জন্য আনছ, বলে হাতে নিতেন, হাসতেন। আমি যখন ঢাকায় ছিলাম তখন ফোন দিয়ে বলতাম, আব্বা, শুভ নববর্ষ, তিনিও সাথে সাথেই শুভেচ্ছা জানাতেন নববর্ষের। নববর্ষ উপলক্ষে ভাল মন্দ রান্না হয়েছে কি না তার খোঁজ নিতেন, আগ্রহ নিয়ে খেতেনও। আমি আমার সমস্ত জ্ঞান বাজি রেখে আপনাদের বলতে পারি যে কাঠ মোল্লা জাহান্নাম যাওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছেন গলা ফাটাইয়া, আমার বাবা তার চেয়ে বেশি জানতেন, ধর্ম, ইসলাম, সমাজ, দেশ, রাষ্ট্র সম্পর্কে। ... ...
অটিজম,হাইপার,পাগল,লালু টাইপ,বেড়ে পাকা,বায়নাদার,মারকুটে এমন গোছের অনেক শব্দ জুড়ে যায় বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতাতে এবং বয়ঃসন্ধিকালীন সমস্যাতে আক্রান্ত শিশু ও সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া ছেলেমেয়েদের নামের পাশে। সেসব নিয়েই গল্পচ্ছলে সহজ বাংলায় প্রথম রচিত বই "শিশু মন"। উদ্দেশ্য-অভিভাবক তথা জনমানসে সত্যতা ও সচেতনতা প্রসার। মুল্য-100/ প্রাপ্তিস্থান-9874465384 এই নম্বরে যোগাযোগ করুন। সারা ভারতে বই পাঠানোর ব্যবস্থা আছে, বই এর দাম এর সঙ্গে শুধুমাত্র অতিরিক্ত পোষ্টাল চার্য ধার্জ করা হবে। ... ...