তখন দক্ষিণ কোলকাতায় একটা বড় ক্লাবের প্রথম শীতের সময়ে ফাংশন। অনেকের সাথে টেক্কা দেবার চেষ্টা এদের – কিন্তু পয়সা থাকলেই তো হবে না, বনেদীয়ানা দেখাতে হলে ভালো শিল্পী-কে এনে আর্ট-কালচার লাইনে নাক গলাতে হবে। এই ক্লাবের একজনের সাথে হেমন্ত মুখার্জী-র চেনাশুনা। সেই ভদ্রলোক গিয়ে হেমন্ত-বাবুকে ধরলেন – বোম্বে থেকে লতা-দিদিকে বলে কয়ে আনতেই হবে ফাংশনে। হেমন্ত বাবু আবার এমন অনুরোধ ফেলতে পারেন না। লতাকে ফাংশানে আনবেন বলে কথা দিলেন। ... ...
অমরদার পুরস্কার তো আমাদেরই পুরস্কার। যখন রিয়েলিটি শোতে ঢেকে যাচ্ছে দুনিয়া, লেখা-টেখা যা হচ্ছে, তাও বেশিরভাগই ভূত-প্রেত-তন্ত্র-মন্ত্র, যখন বিকট উচ্চকিত আলোর দুনিয়ায় শিল্পীরা ক্রমশ ব্রাত্য হয়ে যাচ্ছেন, তখন যেকোনো সৃষ্টিশীল মানুষ স্বীকৃতি পেলেই মনে হয়, নিজেদের স্বীকৃতি। তার উপর এ তো অমরদা। এই তো সেদিনই গুটিগুটি স্টলে এসে চেয়ারে বসলেন, দুচারটি বাক্যবিনিময় হল। ফিল্মফেয়ার পাওয়া শিল্পী এলে ভিড় জমে যেত, অকাদেমী পাওয়া লেখক হলে, তেমন হয়না, কী আর করা যাবে। বুকার-টুকার পেলে হয়। অরুন্ধতী রায় কি ঝুম্পা লাহিড়ি এলে ভিড়ের সঙ্গে দুচাট্টি ক্যামেরাও কি আসতনা? এবার অমরদা এলেও হবে নির্ঘাত। তাতে যে অমরদার দুটি নতুন হাত গজাবে তা নয়। উনি যা লিখেছেন, তা তো আর একটা পুরস্কারে বদলে যাবেনা। এবং এ মোটেই আনন্দের ব্যাপারও না, যে বিদেশী পুরস্কার পেলে তবেই আমরা টের পাব ঘ্যাম কিছু একটা হচ্ছিল বটে। কিন্তু ও আমাদের ঐতিহ্য। রবীন্দ্রনাথও, শুনেছি, বিশ্বভারতীর খাটা-পায়খানার জন্য পয়সা তুলতে কলকাতায় মুখের ফেনা তুলে ফেলেছিলেন, তারপর যেই নোবেল পেলেন, ট্রেন রিজার্ভ করে আস্ত কলকাতাই বোলপুরে হাজির। নোবেল বাবা, ইয়ার্কি না। ... ...
গতকাল হাঙ্গেরিতে ভিকতর অরবান এবং সার্বিয়াতে আলেকজান্দার ভুচিচ যথাক্রমে প্রধান মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হলেন। এই সেই অরবান যিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সকল আইনকে কলা দেখিয়ে আপন রাজনীতি করেন। আলেকজান্দার ভুচিচ রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোন স্যাঙ্কশনের বিরোধী , যদিও তিনি ইতিমধ্যে ই উ তে ভর্তি হবার দরখাস্ত করেছেন। তাঁর মতে এ দুটি স্বতন্ত্র ব্যাপার। এঁরা শ্রী পুতিনের প্রিয়জন - তিনি দুজনকেই আজ সকালে আশীর্বাদ জানিয়েছেন। তারতুর ক্রিসটা, কাউনাসের এভেলিনার কাছে শুনি আগামী মে মাসের ন তারিখে একটি সংঘর্ষের বিপুল সম্ভাবনা। সোভিয়েত আমল থেকে প্রতিবছর সেই দিনটি পালিত হয় মহান দেশপ্রেমিক জনযুদ্ধের বিজয় দিবস রূপে। ইউক্রেনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বালটিক দেশগুলির সরকার এই দিবসটিকে পূর্ণ সমারোহে উদযাপন করার অনুমতি নাও দিতে পারেন। তখন কি হবে? রাশিয়ানরা প্রবল বিক্রমে পথে নামবেন ইউক্রেনে যুদ্ধের সমর্থনে। এই জল তরঙ্গকে রুধিবে কে? ... ...
স্যাক্রামেন্টো আর শ্রীলঙ্কা ধরনের ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। এখানে বন্দুকবাজি ও প্রকাশ্য রাস্তায় হত্যা। ওখানে অর্থনৈতিক মহাসঙ্কট এবং অদৃশ্য গণহত্যা। ... ...
বৈশম্পায়ন কহিলেন, হে নরবর! আমি সেই কূটবুদ্ধি, পানভোজনকুশলী নেতাগণকে আখ্যাত করিব, আপনি শ্রবণ করুন। আমি সেই চেন অলংকৃত, অদ্ভুতচরিত্র, বহুভাষী, বাইট-প্রিয় নেতাদিগের চরিত্র কীর্তিত করিতেছি, আপনি শ্রবণ করুন। হে রাজন, যাঁহারা পাঞ্জাবি-পাজামাবৃত, মোবাইলকর্ণগত, গ্রহরত্নখচিত অঙ্গুরিয়শোভিত, এবং রোদচসমা পরিহিত, তাঁহারাই নেতা। ... ...
চোখ বন্ধ করে ভাবি এই রাতের অন্ধকারে ট্রেন ভর্তি বাবা মায়েরা শিশুদের নিয়ে মুক্তির সন্ধানে দীর্ঘ যাত্রায় চলেছেন। লভিভ পৌঁছুলে বাবা ফিরে যাবেন পূব দিকের কোন শহরে গ্রামে যেখানে তাঁদের সুখের সংসার চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে আছে। ছোট মেয়ে হয়তো বলবে, বাবা কখন আসবে গো? ছটা একুশে? ... ...
[ আমার চোখে দেখা আর হৃদয়ে্র অনুভবে জারিত এই ছোট্ট ছোট্ট চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এখনো মোছেনি আমার মাথার স্মৃতিকোষগুলোর থেকে। তার থেকে তুলে আনা এই মণি-কাঞ্চনগুলোয় যেমন পেয়েছি সাক্ষাৎ ভগবানদের, তেমনি কিছু কিছু সাংঘাতিক ঘটনা নেহাৎ-ই সহ্য করেছি উপায়ান্তরহীন যাপনে। ক্রোধে ফেটে পড়েছি মননে। রক্তচাপ বাড়িয়েছি বারংবার – মধ্যবিত্ত মনোভাবনায়। পেয়েছি আচম্বিত বাড়ানো হাত - অকাতর অকৃপন স্পর্শে। কৃতজ্ঞতাও হয়তো অব্যক্ত ছিল আমার পক্ষে সে সময়। তো এইসব ছিন্নবিচ্ছিন্ন ঘটনার কিছু রেশ গ্রন্থিত করছি প্রাণের আনন্দে। এখনো বেঁচে আছি, বেঁচে আছে আমার প্রজন্ম। তাই ভগবানের নামকীর্তন যেমন করেছি অক্লেশে, আবার সেই ‘আতঙ্ক’ চলচিত্রের মতো যেন কিছুই দেখিনি আমি হয়ে পাল্টেছি চরিত্র কিম্বা স্থান-নাম। মহাবীর-বুদ্ধ-নানক-রামকৃষ্ণের পুণ্যভুমিতে আজ হিংসা পৌনঃপুনিকতায় ছড়াচ্ছে বিদ্বেষের লাল আগুন। যে আগুন শুধুই ভস্ম-জন্ম আহ্বান করে। নিরুপায় আমি করজোড়ে মার্জনা চাইছি আমার এটুকু অপৌরুষেয়তার।] ... ...
এতদিনের গতানুগতিক জীবনে যে মস্তিষ্ক আর পাঁচটা পশুর মতোই জীবনধারণের কাজে সদা ব্যাপৃত ছিল, তার ভেতরে আসছে নতুন এক আবেগের জোয়ার। সেদিন ওই আদিম মানুষগুলি প্রথম যে অনুভবে নির্বাক হয়ে গিয়েছিল, তারা স্বপ্নেও ভাবেনি তাদের বহু প্রজন্ম পরে, এই অনুভূতির নাম দেওয়া হবে, প্রেম, ভালোবাসা। ছেলে ও মেয়ের ভালোবাসার এই অনুভূতি নিয়ে অজস্র কাব্য, কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস, নাটক লেখা হবে। খুলে যাবে মানব সংস্কৃতির আরেকটি দিক – যার নাম সাহিত্য। ... ...
যত বেশি যুদ্ধ, তত বেশি এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স। যত বেশি জেল, তত বেশি সল্ট লেকে জমি। সে নোনা হ্রদ বা নিউ টাউন পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় হতে পারে। ... ...
পর্দা জুড়ে ফুটে ওঠে পরিত্যক্ত মন্দিরে এক বিশাল রামের মূর্তি। আধুনিক দর্শক আশা করি এই অনুষঙ্গ ভালোই বুঝতে পারবেন। রাম গেরুয়া ধুতি পরে রামের মূর্তি থেকে তীর ধনুক খুলে নেয়। জড়িবুটির ম্যাজিকে তার সমস্ত ক্ষত এতক্ষণে উধাও। সারাংশে রাম আর ভীম, সঙ্গে রয়েল বেঙ্গল বাঘ, কম্পজ্বর ভাল্লুক, চিড়বিড়ে চিতাবাঘ, চোখানাক নেকড়ে, দৌড়বাজ হরিণ, উপজাতির শিকারী ভায়েরা - সিনেমার গল্প জুড়ে সবার মিলিত প্রচেষ্টা বড়লাটের বাড়ি উড়িয়ে দিয়ে সব খারাপ ইংরেজ খতম করে। প্রথম দৃশ্যের নির্মম ফার্স্ট লেডির ময়ূর আঁকা নিথর হাতটি শূন্যে দোলে। কিন্তু এতো শুধু খোলসের বিবরণ। ভাবুক দর্শকের সামনে খুলে যায় বোধের দরজা। আর্য আর ফর্সা ইংরেজের সঙ্গে যুদ্ধ করে ভীম। পাঁচ নিষাদ পুত্রকে তাদের মায়ের সঙ্গে জতুগৃহে পুড়িয়ে মারার গ্লানি ধুয়ে আজ সে নিজেই নিষাদের কন্ঠস্বর, তাদের চেতনার প্রতিভূ। আর আবহ জুড়ে গান বাজে রাঘবম রাজসম। তীরধনু আর অক্ষয় তূনীর হাতে ভীমকে সুরক্ষা দেন রাম। পুলিশ অফিসার রামের অহল্যা মনোভূমি আজ ভারতের ঐতিহ্যধারী রামের স্পর্শে প্রাণ পায়। আজ সে সত্যিকারের শ্রীরামচন্দ্র হয়ে ওঠে। ... ...
পাহাড়ে শীতের আয়ু দীর্ঘ। আরও একমাস এই পাহাড় পর্বত জনপদ বরফে ঢাকা থাকবে। মঠের সন্ন্যাসী ফাদার সোকা ফাদার সোফিয়ান তাঁবু খাটিয়েছেন, ত্রাণ সামগ্রী যোগাড় করছেন। গিরজের উপাসনায় যোগ দিয়েছেন ইউক্রেনের নারী ও শিশু তাঁরাও অর্থোডক্স। তাঁদের মধ্যে একজন, ইরিনা বাবিচ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন। তবু বললেন আজ আমি গিরজেয় পুতিনের স্বাস্থ্য ও সুবিবেচনার আশায় প্রদীপ জ্বালিয়েছি। ... ...
মেরি পপিন্স এবং জেমস বন্ড-এর skills গুলোর মিশ্রণে তৈরী কিছু "ninja" ন্যানিদের তৈরী করার গল্প ... ...
এক কালুয়া আর এক কালুয়াকে অস্কার হলিউডে চড় কষিয়েছে। সেই নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড। ছি ছি কী লজ্জা! ... ...
আটের দশকে ইউরোপের পক্ষে একজোট হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণ বৈষম্য বাদী সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবসা বাণিজ্যে প্রতিবন্ধ সৃষ্টি করা শক্ত হয়েছিল। মিসেস থ্যাচার বললেন ‘ তাতে করে মূল সমস্যার কোনো সমাধান হয় না। আমাদের উচিত দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের সঙ্গে কথা বলা, আলোচনা করা, তাদের বুঝিয়ে মত পরিবর্তন করা, স্যাঙ্কশন নয়’। স্বভাবতই তিনি শেল বা ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের ব্যবসার ক্ষতি করতে অনিচ্ছুক ছিলেন।সোয়েতো বা আলেকজান্দ্রার কালো মানুষদের কথা ভেবে কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে চায়। ... ...
ব্যতিক্রম বাদ দিলে মোটামুটি এই হলো আমেরিকা। "উই আর দ্য বেস্ট, এন্ড নো কোয়েশ্চেনস অ্যাস্ক্ড।" ... ...
ঘুড়িও সেদিন ভাবটা এমন দিব্যি আছে সুখে পাতার ফাঁকে জড়িয়ে আবার দেখালো বুক ঠুকে। ... ...
সিনেমা রিভিউ ... ...