দেহটা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল পিঠের সিংহাসনটাতে, কিন্তু তেলের কাঁটার সাথে সঙ্গত করতেই কিনা, গাড়িটি হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেল। সিগনাল বাতি নেই, তাও এই জ্যাম! ‘’রাস্তায় নামলেই পাব্লিকের নাটকের আল্লাদ উডে… পাংখা গজান আরম্ভ করে…’’, বিড়বিড় করতে থাকে মারুফ গায়ের ক্যাটক্যাটে হলদে গেঞ্জিটা দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে। গেঞ্জিটা বুক পর্যন্ত উঠাতেই বেরিয়ে পড়ে রোমশ শরীরটা, এক রত্তি মাংস বাড়তি নেই কোথাও, হাড্ডিগুলো গড়েপিটে উঠেছে সেখানে বাইশটি বছর ধরে, তেল-মসলার কারুকাজ ছাড়াই। কিন্তু এই শরীরটারই চাকায় চাকায় বেজে চলে রাজপ্রাসাদী তান, যখন এক মনে আল্লা-খোদা করে যেতে থাকে তার পিছনে দন্ডায়মান এক দল নিরীহ ও নিপীড়িত যান! সংগীতটা আরো সুমধুর হয়ে উঠে, যখন সে বড় রাস্তা ছেড়ে গলিতে ঢুকে পড়ে। তখন জায়গার অভাবে তার জ্যাকটাকে সাইড দিতে চেয়েও ব্যর্থ হয়ে মরাকান্না জুড়ে দেয় আগের থেকেও নিরীহ ও নিপীড়িত কিছু যান। মারুফ আপন মনে হেসে উঠে! এমন কোন প্রাণী আছে যে রাস্তার বুকে চড়ে বেড়াবে আর তাকে সমীহ করবে না? তাকে নিয়ে রাস্তার সবার দুশ্চিন্তা, অথচ কারো মুখে রা পর্যন্ত নেই! পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, এমনকি মন্ত্রী- মিনিস্টারের গাড়িকে গুণতে চায় না পাব্লিক আজকাল! কিন্তু তাকে কেউ কিছু বলে না, গালাগালির তুবড়িও ছুটে আসে না। কি করবে, মানুষ যে ময়লা সহ্য করতে পারে না; টিয়ার গ্যাস, গুলি হজম হলেও ময়লা হজম হতে চায় না তাদের! বাসার পায়খানাটার মতই ঘেন্না একে তাদের! ... ...
এখানেই শেষ নয়। প্রচুর প্রাইভেট কোম্পানি আছে যেখানে কর্মীদের বসেরা 'বাপের চাকরে'র মতো করে ট্রিট করে। প্রচুর কোম্পানিতে লোকজনকে তাদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলে। এটা বিশেষ করে ঘটে একজন জুনিয়র এমপ্লয়ির সাথে। একটি কল সেন্টারের কথা শুনেছিলাম যেখানে জুনিয়র বা সদ্য জয়েন করা কর্মীরা সময়মতো পৌঁছেও কোন এক রহস্যময় কারণে কিছুতেই যথাসময়ে লগইন করতে পারতেন না। ফলে, সিস্টেমে সর্বদাই তাদেরকে দেখানো হতো লেট হিসেবে। এইভাবে সারাদিন কাজ করেও তারা দিনের শেষে বাড়ি ফিরতেন অর্ধেক কাজের স্যালারি নিয়ে। ... ...
আগের বার পোস্ট গোলমাল হয়ে গিয়েছিল। আবার ট্রাই করলুম। ... ...
একেই মন স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে আছে, তারপরে যাচ্ছেতাই রকমের ঠান্ডা পড়েছে! রাত পৌনে এগারটা বাজে, বিছানায় বসে একটা চিঠি লিখছি, সেটাও লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে। বাইরে কনকনে হাওয়া ঝাপটা দিয়ে যাচ্ছে। “ইস্পাত শীতল” বলে একটা কথা বইতে পড়েছি, সেটা বোধ হয় এই রকমই কিছু। চেকভ লিখেছিলেন, “মন যখন খুশি থাকে তখন লোকে খেয়ালও করে না শীতকাল চলছে, না গ্রীষ্ম।” তা লিখুন, মহামানবরা অমন অনেক কিছু লিখে টিখে থাকেন, যেগুলোর কোটেশন ছাড়া অন্য কোনও ব্যবহার নেই সাধারণজনের কাছে (এই যেমন আমি দিলাম)। ... ...
নয়না নাকছাবি ঝলসিয়ে সায় দিল। কমন পিপলস হিস্ট্রি। দ্যাট ইজ ইম্পরট্যান্ট। সাধারণ মানুষের জীবন। কোনকালে কোন রাজাবাদশা তার তেমন খবর রেখেছে! দুল্লা ভাট্টি আকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। মুসলমান রাজপুত। আবদুল্লাহ ভাট্টি। সন অব পাঞ্জাব। পাঞ্জাবের রবিন হুড। ... ...
মালবিকা একটা শ্বাস আটকালেন। কলকাতা শহর এখন একটি বৃহৎ গ্রাম যেখানে সবরকমের কূটকাচালি অ্যাভেইলেবল। গ্র্যান্ড ফর্ম টু দ্য মিনেস্ট ফর্ম। রীণা যোশি বিয়ে করছে খুব শিগগিরই, এই খবরটা মালবিকার কানে এসেছে। যে বলেছে সে বেশ সাজিয়ে গুছিয়েই বলেছে, গয়নাগাটি পরিয়ে। মালবিকা অলংকার খুলে সার সত্যটি বুঝে নিয়েছেন। ত্রিদিবের সঙ্গে উদ্দাম ফূর্তির দিন শেষ। রীণা এবার সোশ্যাল সিকিউরিটি খুঁজছে। কাজেই ত্রিদিবের ঘর শূন্য। হাতের ও ঝোপের উভয় পাখিই অদৃশ্য। ... ...
কে এই ভক্ত? কিসে তাঁর ভক্তি? চিত্তটিই বা কার কাছে প্রণত? ... ...
দুল্লা ভাট্টি।সম্রাট আকবরের আমল।মধ্যপ্রাচ্যে হিন্দুদের মেয়েরা পাচার হয়ে যেত।আকবর বন্ধ করেছিলেন এই পাচারের সুন্দ্রি আর মুন্দ্রি দুটি বোন।পাচার হয়ে যাচ্ছিল তারা। আকবর উদ্ধার করেছিলেন তাদের। সেই বোনদের নিয়ে গান।সুর টুপ টুপ করে ঝরে পড়ছে শীতশস্যে। আমেলিয়া একটি শিশুর জননী হয়েছেন বটে, কিন্ত তাঁর মধ্যে থেকে এখনো মুছে যায়নি প্রায় কিশোরী চাঞ্চল্য, বিস্ময়বোধ।তদুপরি আদিগন্ত প্রেম। আর্মেনিয়ান সংস্কৃতিধারা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়েও তিনি ধর্মবোধে প্রোথিত, আবার বিবাহসম্পর্কে একটি অন্য ধর্ম, অন্য সংস্কৃতি! এত ব্যাপ্তি তাঁর মধ্যে দোলা দিয়ে যাচ্ছে ... ...
এক নতুন রাহুল গান্ধীর সঙ্গে মুখোমুখি কিছু কথা এখানে নিউ ইয়র্কে। ... ...
এই সেকেন্ড ওয়েভ নাকী বড় মারাত্মক। প্রথম ওয়েভের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। কে জানে! তাই কী শুকদেবের অমন শক্ত প্রাণ চলে গেল! কী হা হা করে উদার হাসি! স্বতঃস্ফূর্ত। প্রাণবন্ত। কৃষ্ণের মত কূট নয়। অথচ সখা। ... ...
উনাদের কাণ্ড দেখলাম। উনারা একটা বারের উল্টো দিকে বন্ধ দোকান আছে এমন একটা জায়গায় বসে পড়লেন। তারপরে অবাক হয়ে, হা করে অনেকটা বলা চলে সামনের চলমান সিনেমা দেখতে থাকলেন! আমি নতুন মানুষ, যা দেখি তাই আশ্চর্য লাগে, অবাক হয়ে দেখি শুধু। একটু পরে বোধ বুদ্ধি ফিরলে মনে হল আরে করতেছি কী আমি এখানে! অর্ধনগ্ন নারী নাচছে এই দৃশ্য কতক্ষণ দেখা যায়? উনারা আমাকে রেহাই দিলেন। বললেন, চল একটু ঘুরে আসি। চললাম। প্রচুর মানুষ, সব বারে একই দৃশ্য। কাস্টমার ধরার জন্য নানা ফন্দি। আমি দেখতে দেখতে হাঁটতে থাকলাম। উনারা এবার যা করলেন তা হচ্ছে গলির ভিতরে তস্য গলি খুঁজে বের করলেন। চিপা একটা গলি, ওই গলির দুই পাশে পানশালা, ভিড় প্রচুর। যেহেতু জায়গা কম ঠ্যালা ধাক্কা খাওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা আছে। তার মধ্যে দোকানদারদেরই বুদ্ধি না মানুষ নিজেই এই কাজ করছে জানি না, ওই অল্প জায়গায় বিকট শব্দে গান বাজিয়ে নাচছে! কোন রকমে ঠেলে ঠুলে পার হলাম গলিটা। ওই পাশে উনারা অপেক্ষা করছেন। যা বললেন তা শুনে আমি মনে মনে কইলামও হরি, রক্ষা কর আমারে! ... ...
হয়তো ২০৫০ এর আগেই বিশ্বজুড়ে ক্লাইমেট ক্রাইসিস এমন একটা চেহারা নেবে যে গোটা পৃথিবী আর সবকিছু লাটে তুলে এই বিপদ কি করে সামলানো যায় সেই দিকে ফোকাস করতে বাধ্য হবে! অর্থাৎ, Covid প্যান্ডেমিকের সময় যেমন সারা পৃথিবীর ডাক্তার, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ, পুলিশ এবং আরো অনেকে এক হয়ে গিয়েছিলেন পরিস্থিতি সামাল দিতে, তেমনই আর একটা অবস্থা হয়তো আমরা আমাদের জীবদ্দশায় দেখতে চলেছি এই বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে। তবে ব্যাপারটা কিন্তু মোটেই সস্তা হবেনা। ... ...
শুধু ভয় দেখানো খবর আছে। সেন্টিমেন্ট আছে। কিন্তু প্রশ্ন নেই, চ্যালেঞ্জ নেই। কোনো দায় স্বীকার নেই। ... ...
...সমস্ত বার-ব্রত-তিথি-নক্ষত্র পালনে তিনি স্বয়ং মনুর থেকেও নিষ্ঠুর এবং অমোঘ। ... ...
কৃষি কর্পোরেট হয়ে যাওয়া কি সাপোর্ট করা যায়? এরমধ্যেই পাঁচ লাখ মেট্রিক টন শস্য ভর্তি গুদাম আদানির খপ্পরে চলে গেছে, জানেন? তিনলাখ মেট্রিক টন ফুড কর্পোরেশনে। এরপরে কী হবে বুঝতে পারছেন? ... ...
লকডাউন পিরিয়ডটা অনেককিছু শিখিয়ে দিল ত্রিদিবদা। আই হ্যাভ লার্ন্ট আ লট। আগেও অনেককিছু শিখেছি। কিন্ত এই কোভিডটাইমটা আমার দশবছর বয়স বাড়িয়ে দিয়েছে। ত্রিদিব নিজেকে সামলাতে পারলেন না। ... ...
পুলিশ কাস্টডিতে অসংখ্য অত্যাচারের চিহ্ন শরীরে। নারী শরীর। তাকে অত্যাচার করে মজা আছে। সুবিধেমত। তারপর দলিত। দলিত মেয়েদের রেপ করলে, অত্যাচার করলে অত কেউ মাথা ঘামাবে না। প্রতিদিন কিছু মেয়ে ধর্ষিত হয়। নোবডি কেয়ার্স। তবু নামটা মিডিয়া তুলে আনল কেন? ... ...
পুনরাধুনিক। পড়ে বলবেন কিন্তু। ... ...