আমরা অবশ্য ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ফাঁকে ফাঁকে সাস্টেনেবিলিটি শব্দটা গুঁজে দিয়ে ফান্ডিং চাইছি আজকাল। সাস্টেনিবিলিটির আরেক নমুনা দেখলাম সাইজুদ্দিন ঢালির ক্ষেতে এসে। অসাধারণ চাষের বাহার। এক জায়গায় বেগুন হয়েছে তো পাশে কুমড়ো, কিছুটা সর্ষের ক্ষেত। একটা ধানের বীজতলা। আর টাটাদের পাঁচিলের গা জুড়ে ছড়িয়ে আছে রজনীগন্ধার গাছগুলি। জিগেশ করলাম ‘চাষে এখন খরচা কেমন? জল পান কোথা থেকে?’ সাইজুদ্দিন বললেন ‘শ্যালো আছে আমার, জল তুলে নিই’ওয়াটার রিসোর্সের ক্লাস করা আমি এবার আঁতকে উঠি- ‘জলসেচ ছিল না এখানে?’ – ‘ছিল তো। বাগজোলা থেকে জল আসত। তো ২০০০ সাল নাগাদ সে সব পুরো রাজারহাটে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই নোটিশ বেরোনোর কিছু আগে। যাদের পাম্প কেনার পয়সা নেই, তারা এমনিই চাষ ছেড়ে দ্যায়।’ কী ভয়ংকর! মাটির তলা থেকে জল তুলে চাষ করা কতটা ক্ষতিকর তা নিয়ে এখানে আলাদা করে লিখছিনা। কিন্তু সত্যিই শিউরে উঠি আমি, কয়েক বছর আগে সেচ বন্ধ করে তারপর জমি দখল করে বাড়ি তোলার ধান্দা যাদের, তারা তো আক্ষরিক অর্থে নিজের মাকে বিক্রি করে দিতে পারে! জমিতে চাষ করছিলেন যে চাচা, তিনি বললেন- ‘আমি তো চাষ ছাড়া আর কিছুই জানিনা। জমি চলে গেলে এই বয়সে খাবটা কী?’ এ প্রশ্ন অনেকবার আলোচনা-টোনায় শুনেছি। কিন্তু এখন যিনি খাবটা কী বললেন, ওই বীজতলার ধান ছড়িয়ে বড় করে আমার অন্ন তিনিই হয়তো সংগ্রহ করেন। সাইজুদ্দিননে জিগেশ করলাম, ওই যে বড় বাড়িগুলো, একসময়ে আপনার, আপনার ভাই বন্ধুদের মাঠ ছিল। এখন পিচ-কংক্রিট। কেমন লাগে? উত্তর দিলেন- ‘কী বলব দাদা, ওখানে এখন তো আমাকে ঢুকতেও দ্যায়না, দেখতেও দ্যায়না ভেতরে কী আছে। কিন্তু একটা হাসপাতাল যদি হত। দরকারে অদরকারে আমিও যেতে পারতাম।’ ... ...
এই ধরণের নানান বঞ্চনা আর অত্যাচার এই মানুষগুলোর মোহভঙ্গ ঘটাচ্ছিল, সেই সঙ্গে জন্ম নিচ্ছিল ক্রোধ এবং হতাশা। অথচ এর থেকে বেরোনোর কোন রাস্তা তাদের সামনে খোলা ছিল না। ফলস্বরূপ সমাজের একটা বড় অংশ ড্রাগ এবং অন্যান্য নেশার ঝোঁকে পড়ে যাচ্ছিল। এক সময় প্নজাব আর নেশা প্রায় সমার্থক হয়ে গেছিল – অশিক্ষা আর দারিদ্র পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তুলছিল ক্রমশঃ। মানুষগুলো উদভ্রান্ত, দিশাহারা হয়ে পড়ছিলেন। স্বভাবতঃই এই প্রেক্ষিতে যখন ডেরা সাচা সৌদার মত আশ্রম এগিয়ে এল তাদের ত্রাতা হিসাবে, এরাও সাড়া দিলেন। না দেবার কোন কারণ ছিল না, কারণ ডেরা তাদের সম্মানজনক জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ডেরায় এই মানুষগুলির শিক্ষালাভের ব্যবস্থা আছে, তাদের ড্রাগ ও অন্য নেশা থেকে দূরে রাখার ব্যবস্থা আছে এবং সর্বোপরি, খাদ্যসংস্থান আছে। ডেরা তাদের কর্মসংস্থান দেয়, জীবনের উদ্দেশ্য দেয়। দিশাহারা অসহায় মানুষের কাছে খড়কুটোর মতন যে বাবাজী দিশা দেখাচ্ছে, সে রেপিস্ট কি না জানতে বা মানতে তাদের বয়ে গেছে। ভুললে চলবে না – পেটে সর্বগ্রাসী খিদে থাকলে কে আমাকে খাবার দিচ্ছে, সে খুনী না ধর্ষক, তাতে আমার কিছুই এসে যায় ... ...
বিদেশিদের শনাক্তকরণের অভিযান আসামে অনেকদিন ধরে চলছে। ইলিগাল মাইগ্র্যান্টস (ডিটেকশন বাই ট্রাইব্যুনাল) ও ফরেনারস ট্রাইব্যুনাল – এই দুই আইনি হাতিয়ার দিয়ে বিদেশিদের পাকড়াও করে বহিষ্কার করা হচ্ছিল। এন আর সি নবীকরণ একই উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে, তবে এটা আগেরগুলোর তুলনায় আরও ব্যাপক আর উচ্চাকাঙ্খী প্রকল্প। এন আর সি’র অর্থ ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস, ভারতের জাতীয় নাগরিকপঞ্জী। ১৯৫১ সালে স্বাধীন ভারতে প্রথম জনগণনা করা হয়। তখন সমস্ত ভারতীয় নাগরিকের হিসেব নেওয়া হয়েছিল, এন আর সি’তে সে তথ্য ঢোকানো হয়েছিল। আসামে এন আর সি নবীকরণ করা হচ্ছে প্রকৃত নাগরিকদের থেকে বিদেশিদের ছাঁকনি দিয়ে বের করার উদ্দেশ্যে। বিদেশি অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে আসামে একাধিক আন্দোলন দানা বেধেঁছে। আশির দশকের শুরুতে চলা আসাম আন্দোলনে তার সবথেকে বড় রূপ দেখা যায়। আন্দোলন শেষ হয় আসাম চুক্তিতে। ধার্য হয় ২৪ মার্চ ১৯৭১-এর পর আসামে আসা বিদেশিদের সনাক্ত করে বহিষ্কার করা হবে। বাস্তবে বহিষ্কারের কাজ বড় একটা এগোয়নি। একটা হিসেব অনুযায়ী ২০১২ পর্যন্ত ২৪৪২ জনকে বহিষ্কার করা হয়, আর প্রায় ৫৪ হাজার লোককে আদালত বিদেশি সাব্যস্ত করে। অন্য দিকে কেন্দ্র সরকারের গৃহ মন্ত্রকের বিবৃতি বলছে ২০০১ সালে আসামে নাকি ৫০ লক্ষ অবৈধ বাংলাদেশি বসবাস করতেন (সারা দেশে ১ কোটি ২০ লক্ষ)। গৃহ মন্ত্রক কোত্থেকে এই তথ্য জোগাড় করেছে জানা যায় নি। ... ...
'হিন্দি' একটি ভাষাবিশেষ নয়। এটি একটি সংস্কৃতি। উত্তর ও মধ্যভারতের বিশাল এলাকা এই সংস্কৃতির অঙ্গ। পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল,জম্মু, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, গুজরাট, মহারাষ্ট্র এর অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্ত প্রান্তেরই অসংখ্য নিজস্ব ভাষা রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি স্বীকৃত সরকারি ভাষা। কিন্তু যোগাযোগ রক্ষাকারী ভাষা হিসেবে এই সমস্ত জায়গায় হিন্দির কোনও বিকল্প নেই। হিন্দিবলয়ের কেন্দ্র হিসেবে যদি উত্তরপ্রদেশ ও বিহারকে নেওয়া যায় তবে দেখা যাবে এই দুটি রাজ্যেও বহু নিজস্ব ভাষা আছে। বিহারে ভোজপুরি (দুরকম, গঙ্গার উত্তর ও দক্ষিণে), মগহি, মৈথিলি, অঙ্গিকা প্রধান। উত্তরপ্রদেশে ভোজপুরি, অবধি,বুন্দেলখণ্ডি, পহাড়ি ইত্যাদি। একইভাবে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের হিন্দি, হরিয়ানভি, পূর্বি পঞ্জাবি (মনে রাখতে হবে পশ্চিম পঞ্জাব থেকে যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের ভাষা আলাদা ছিলো)। ... ...
গত প্রায় দেড় বছর ধরে করোনাভাইরাসের অতিমারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে ব্যতিব্যস্ত করেছে, জীবনের নানান দিক আর আগের মতন নেই | প্রাণঘাতী এই বিশ্বব্যাপী অতিমারী না হয় একরকম, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরেকটি অতিমারী মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, সেটি তথ্যবিভ্রান্তির অতিমারী। বিশেষ করে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের টিকা, এবং টিকা দেওয়া-নেওয়া নিয়ে নানান রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য চোখে পড়ছে। তাদের মধ্যে কয়েকটি নিয়ে এই আলোচনা। প্রতিটি “ভ্রান্ত ধারণা” (“মিথ”) আমরা প্রথমে উল্লেখ করে তারপর সেটিকে নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি। ... ...
তো কেদারনাথ মজুমদার পুরা রামায়ণখান দুর্ধর্ষভাবে বিশ্লেষণ কইরা সাইরা একটু মিন মিন কইরা যুক্তি দেখান যে রামায়ণের উত্তরকাণ্ডে রামের গোসব যজ্ঞের কথা আছে কিন্তু গরু খাওয়ার কথা তো পাই নাই। মনে হয় এইটা বঙ্কিমের সেই বিশ্লেষণের ধাচেই পড়ে। আমরা বুঝতে পারি কেদারনাথ কেন সেইটা পাশ কাইটা যান বা কমজোর গলায় কন- না তো। নাই তো। গোসব যজ্ঞের কথা আছে কিন্তু গরুর মাংস দিয়া মাখাইয়া ভাত খাইবার কথা তো নাই। যাউকগা। রামায়ণ সমাজে গরু খাওয়ার প্রচলন তো আছিলই উল্টা গরুর মাংসটাই আছিল শ্রেষ্ঠ মাংস বইলা গণ্য। গরু খাওয়া বন্ধ হয় মূলত বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবে… রামায়ণ সমাজে গরু খাওয়া হইত না; গোসব যজ্ঞ কইরা মূলত মধু দিয়া রান্না করা গরুর মাংস গাঙে ফালায় দেয়া হইত দেবতাগো খাইবার লাইগা; এইসব কথা কেউ কইলে অন্যদিকে ধইরা নিতে হইব যে তিনি বা তিনারা রামের বয়স বুদ্ধদেবের থাইকা কমাইয়া নিয়া আসছেন। আর রামায়ণরেও কইরা দিতে চাইছেন বৌদ্ধ উত্তর সাহিত্য... ... ...
অনেকেই প্রশ্ন করেন, কেন সন্তান চাই না। আমরা বর্তমান পৃথিবীকে একটা শিশুর জন্য যথেষ্ট সুস্থ ও নিরাপদ মনে করি না। তাই আমরা সন্তান চাই না। আমরা যখন জন্মেছিলাম তখনও পৃথিবী সুস্থ ছিল না, কিন্তু সেই সিদ্ধান্তে আমাদের কোন হাত ছিল না। যেটা আমাদের হাতে আছে আমরা বড়জোর সেটুকু করতে পারি। আমরা না জন্মালেও পৃথিবীর কোন ক্ষতি ছিল না। পৃথিবী তার মত চলত, অথবা চলত না। আরো অজস্র পৃথিবীর মত গ্রহ আছে ব্রহ্মাণ্ডে যাতে প্রাণ নেই। তারাও সুন্দর। অবশ্য চেতনা না থাকলে আর সুন্দরই বা কি! এসব দার্শনিক কথা থাক। নিতান্ত বস্তুতান্ত্রিক ভাবনাতেও দেখতে পাই মানুষজন্ম কেমন একটা অনর্থক ব্যাপার। এত বেশি মানুষ হয়ে গেছে পৃথিবীতে, না আছে পর্যাপ্ত খাবার, না আছে পর্যাপ্ত জমানো সম্পদ। সোজা কথা সোজা ভাবেই বলি। ছোট থেকেই শিখেছি খুব ভালো রেজাল্ট করতে হবে, ভালো চাকরি করতে হবে, তারপর একটা ভালো বিয়ে, সন্তান এবং তাদের প্রতিপালন। এই জিনিসগুলোর একটাও এমন লোভনীয় নয় যে তার জন্য জীবনভোর প্রাণপাত পরিশ্রম করা যায়। যারা পারেন তারা করেন। আমরা আরো একটা মানুষকে তার মতামত ছাড়াই নিয়ে এসে এই বোঝা চাপিয়ে দিতে চাই না। আর মতামত নেওয়ার তো কোন উপায়ই নেই। একটি শিশুকে জন্ম দিয়ে তাকে তো আর সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন করা সম্ভব নয়, তুমি কিভাবে বড় হতে চাও জানাও। নিজেদের মত তার ওপর চাপাতেই হবে, এমনকি তার মধ্যে এমন কিছু মতও থাকবে যা নিজেদেরই নীতিবিরুদ্ধ। যেমন ধরা যাক, বন্ধুস্থানীয় ভারতীয় বাবা-মায়েরা যেভাবে গেটেড কমিউনিটিতে বাসা বেঁধে গেটেড স্কুলে পড়শোনা করিয়ে যতখানি সম্ভব নোংরা পৃথিবীর ছোঁয়া বাঁচিয়ে বাচ্চা মানুষ করেন, সেটা আমাদের একান্তই অপছন্দ। একটু সমালোচনাই করলাম। তবে এটাও জানি, নিজেদের বাচ্চা থাকলে আমরাও এই পথই নিতাম। আরেকটি মানুষের জীবন নিয়ে বাজি লড়ার সাহস আমাদেরও হত না। আমরা জানি, আপনারা নিরুপায়। ... ...
বিগত এক দশকের বাংলা ছবি (মানে, কাগজের ভাষায়, তথাকথিত "মননশীল" বাংলা ছবি) দেখলে একটা কথা খুব পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে, বাংলা সিনেমার সাথে আন্তর্জাতিক সিনেমার সম্পর্ক, যা সত্যজিৎ-মৃণাল-ঋত্বিক একদা স্থাপন করতে সমর্থ হয়েছিলেন, এখন প্রায় পূর্ণতঃ ছিন্ন হয়েছে। বাংলা সিনেমা, অধুনা, তার নির্মাণে ও মেজাজে, পরিপূর্ণ মধ্যবিত্ততার একটি পঙ্কিল আবর্তে পাক খেতে খেতে, একমনে, নিজেই নিজেকে ক্রমাগত ধ্বংস করে চলেছে। বিশ্বসিনেমার ভাষা যতই বদলে যাক না কেন, যতই জটিল হয়ে উঠুক না কেন তার অন্তর্গত আখ্যানের বুনন, বা সেই আখ্যানের সঙ্গে বহির্বাস্তবের লেনদেন ও টানাপোড়েন, বাংলা ছবি, তবুও, দৃশ্যের মাধ্যমে একটি নিটোল, নাটকীয় অথচ অন্তঃসারশূন্য গপ্প বলাকেই তার পবিত্র কর্তব্য ঠাউরে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে ব্যস্ত থাকবে। এমনকী, ছবির ভাষা নিয়ে মাথা ঘামানো ছেড়ে, শুধু যদি এটুকুই প্রত্যাশা করি যে সেই গল্প, আদতে, মধ্যবিত্তের কোন গূঢ় আস্তিত্বিক সংকট বা জটিল স্ববিরোধকে দর্শকের সামনে উপস্থাপিত করবে, তাহলেও আশাভঙ্গের শিকার হতে হয়। কেননা, মধ্যবিত্তের হাঁচি-কাশি-টিকটিকি-প্রেম-অপ্রেম-আমাশার গল্পকে, ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে, সভ্যতার সংকট হিসেবে উপস্থাপিত করাই, এখন তার নতুন দস্তুর। এবং এই অন্তঃসারশূন্যতাকে আড়াল করার জন্যে রয়েছে আরোপিত কেতা, যা, বস্তুতপক্ষে, ষাট-সত্তরের দশকের আভাঁ-গার্দ ছবির থেকে ধার করা, পরবর্তীতে মিউজিক ভিডিওর জমানায় ব্যবহৃত হতে-হতে বাসি মাংসে পরিণত হওয়া, ক্যামেরা বা সম্পাদনার কৌশলমাত্র। বিশ্বসিনেমার কথা বাদ দিলেও, কেবল যদি হিন্দি বা মারাঠী সমান্তরাল ছবির কথাই ধরি, তাহলেও বোঝা যায়, বাংলা সিনেমা ঠিক কোন গর্তে গিয়ে মুখ লুকিয়েছে। ... ...
আজ থেকে প্রায় বাহাত্তর বছর আগে, ১৯৫০ সালে, প্রোফেসর উইলিয়ম এস রবিনসন একটি যুগান্তকারী পেপারে (“Ecological Correlations and the Behavior of Individuals”) প্রমাণ করে দেখান, যে, দুটি রাশির মধ্যে সম্পর্ক (অর্থাৎ কোরিলেশন) সম্পূর্ণ আলাদা-আলাদা দুরকম হতেই পারে, যদি একটি মাপা হয় সমষ্টির জন্য (অর্থাৎ এগ্রিগেট লেভেল) আর একটি ব্যক্তির পর্যায়ে (অর্থাৎ ইন্ডিভিজুয়াল লেভেলে)। রবিনসনের পেপারে ১৯৩০ সালের আমেরিকান জনগণনার—অর্থাৎ সেন্সাসের—ডেটা অ্যানালাইজ করে দেখানো হয়, যে ঐ সময়ের ৪৮টি স্টেটে যদি বিদেশে-জন্মানো (ফরেন-বর্ন) শতাংশ এবং সাক্ষর জনতার (আমেরিকান ইংলিশে সাক্ষর) শতাংশের মধ্যে কোরিলেশন পজিটিভ: ০.৫৩। এর থেকে ধারণা হতে পারে—যে রাজ্যে যত বিদেশ থেকে আসা লোক, সে রাজ্যে তত কম নিরক্ষর মানুষের শতাংশ, অথবা, তত বেশি সাক্ষরতার হার। আর একটু এগিয়ে ব্যক্তি-স্তরে নিয়ে গেলে, এমন মনে হতে পারে—যে, বিদেশে-জন্মানো মানুষের (আমেরিকান ইংলিশে) সাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা দেশে-জন্মানোদের থেকে বেশি। কিন্তু, এই সম্পর্ক-ই যদি ব্যক্তির স্তরে দেখেন, ঐ দুই রাশি—বিদেশে জন্ম আর সাক্ষরতা—এবার কিন্তু কোরিলেশন নেগেটিভ: —০.১১, অর্থাৎ সমষ্টি থেকে ব্যষ্টি-স্তরে আসতেই সম্পর্ক উল্টে গেলো। তবুও কখনো কখনো ব্যক্তির আচরণ আর সমষ্টির ব্যবহার এক-ই হয়, কখনো হয় এক্কেবারে উলটো। সেই গণ্ডগোলের নাম “ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি”। “ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি” শব্দবন্ধ অবিশ্যি রবিনসনের দেওয়া নাম নয়, সেটির আবির্ভাব কিছুদিন পর সেলভিনের ১৯৫৮ সালের পেপারে – ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসির সংজ্ঞা পেলাম আমরাঃ ‘the invalid transfer of aggregate results to individuals’! ... ...
ইউনাইটেড নেশনসের উদ্যোগে ২০ জুন পালিত হয় বিশ্ব শরণার্থী দিবস হিসেবে। বাঙালী হিসেবে শরণার্থী, উদ্বাস্তু, রিফিজি - এই কথা গুলি আমাদের অতি পরিচিত। যদিও জাতি হিসেবে, পরিচিত হলেও, যথেষ্ট সমানুভূতি ও সহমর্মিতা আছে কিনা তা বলা কঠিন। সুকন্যা কর ভৌমিকের অভিজ্ঞতা, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ছিন্নমূল হয়ে আসা মানুষদের আনন্দ বেদনায় তাঁর অংশভাগ নিয়ে। ... ...
`আজকের অতিমারির সময়ে ১৯৩০-এর দশক থেকে গৃহীত ড্রপলেট এবং এরোসল সংক্রান্ত ধারণার জগতে করোনা ভাইরাসের Airborne Transmission-এর তত্ত্ব একটি প্যারাডাইম শিফট, যা ভবিষ্যতে আরও অনেক বিষয়কে ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অতীতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অতি সাধারণ একটি অভ্যাসের পরিবর্তন এরকম প্যারাডাইম শিফট ঘটিয়েছিল অস্ট্রিয়ার চিকিৎসক-বিজ্ঞানী Ignaz Philipp Semmelweis-এর প্রবর্তন করা সার্জারির আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বাধ্যতামূলক অভ্যেস। তাঁর প্রবর্তিত অতি সামান্য (যেখানে কোন বড়ো প্রযুক্তির চেকনাই নেই) এই নতুন পদ্ধতি জন্মের পরে মায়েদের মৃত্যুর হার লক্ষ্যণীয়ভাবে কমিয়ে দিল। তাঁকে বলা হত “saviour of mothers”। ... ...
এর তাৎপর্য, বিজ্ঞানের ইউরোপ-কেন্দ্রিক উৎপত্তি সম্বন্ধে যে-ধারণা তখন বিদ্বৎমহলে প্রচলিত ছিল, তা বদলানোর মতো মালমশলা পেশ করলেন প্রফুল্লচন্দ্র। ইতালির Archivio di storia della Scienzia এই বইয়ের সমালোচনা করে যে-কথা বলল তা আরো তাৎপর্যপূর্ণ: ‘সবদেশেই একদল লোক থাকে, নির্বোধ সংকীর্ণ স্বাজাত্যবোধের দ্বারা চালিত হয়ে যারা বিশ্বাস করে যে বিজ্ঞান কেবল তাদেরই দেশে বিকশিত হয়েছে, এবং সেটা তাদেরই সম্পত্তি। কিন্তু আরেকদল মানুষ আছে যাঁদের রয়েছে উপযুক্ত শিক্ষাগত প্রস্তুতি, রয়েছে তথ্য সংগ্রহ করার, বিচার করার ও তা নিয়ে লেখবার মতো মনীষা। এঁরা যখন নিজ দেশ সম্বন্ধে প্রকৃত মমত্ব ও স্বাভাবিক দক্ষতা নিয়ে কোনো কাজে নিয়োজিত হন, তখন তাঁদের মধ্যে কাজ করে একটা উদার দর্শন, একটা সংস্কারমুক্ত মন। সুতরাং ,এঁদের রচনা আমরা গভীর মনোযোগ সহকারে অনুধাবন করতে বাধ্য ৷ ভারতে রসায়নের ক্ষেত্রে স্যার পি সি রায়ের স্থান ঠিক এরকমই। তাঁর কাছে আমরা অনেক কাজের জন্যই ঋণী। ... কিন্তু যে মহান কীর্তির জন্য তাঁর নাম অক্ষয় হয়ে থাকবে সেটি হল তাঁর রচিত আদিকাল থেকে শুরু করে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যকাল পর্যন্ত ভারতীয় রসায়নচর্চার এই অতুলনীয় ইতিহাসটি।’ ... ...
ধর্ষণ বলতে যেহেতু আমরা পুরুষ কর্তৃক অনিচ্ছুক নারীদেহের দখল নেওয়া বোঝাচ্ছি, পুরুষের মনোভাব এবং চিন্তাধারার পরিবর্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তবে সে কতো যুগের কতো সাধনার ফল তা জানা নেই । তথাকথিত শিক্ষার দৌড় দেখা হয়ে গেছে মি টুর দৌলতে। অন্তর্জালে যে পরিমাণ রেপ থ্রেট দেখা যায় তাতে মনে হয় মেয়েদের শায়েস্তা করার ঐ একটি পদ্ধতিই আমাদের শেখা। খুবই লজ্জা হয় যখন দেখি রেপিস্টের ধর্ম তুলে সেই ধর্মের নিরপরাধ মেয়েদের ধর্ষণ করবার ডাক দেওয়া হয়। চিত্তশুদ্ধির প্রচেষ্ট জারি থাকুক, আপাতত আর কিছু করতে না পারি রাষ্ট্র প্রশাসন এবং সমাজের ঘাড় নোয়ানোর জন্য আমরা সমস্বরে চিৎকার তো করতে পারব। সমস্ত ট্যাবু ভেঙে ফেলে প্রত্যেকটি ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে প্রবল আলোচনা,উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, চেঁচামেচি । ধর্ষণকে ঘিরে থাকা বোবা নৈশব্দকে ভেঙে ফেলে একেবারে অনর্থ করা যাকে বলে। আমরা এখন পরিষ্কার জানি ধর্ষণ শুধু লালসার কারণে হয়না । মেয়েদের ওপর সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবার একটি হাতিয়ার এটি। ... ...
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) মতে জলবায়ু বদল থামাতে গেলে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বর্তমান বিনিয়োগ যথেষ্ট নয়, তাপমাত্রার বৃদ্ধি ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নীচে বেঁধে রাখতে হলে ২০২৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বর্তমান হারের দ্বিগুণ বিনিয়োগ করতে হবে। তবে শুধু নবায়নযোগ্য শক্তির বৃদ্ধিই জলবায়ু বদল রোখার জন্য যথেষ্ট নয়, সবুজায়ন বৃদ্ধি করলেও তা হবে না। তা করতে গেলে জীবাশ্ম জ্বালানির দহন বন্ধ করতেই হবে। কেবল কয়লাই নয়, গ্যাস ও জৈবভর পোড়ানোও বন্ধ করতে হবে। ব্রিটেনের কার্বন ট্র্যাকার এবং কাউন্সিল অন এনার্জি এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার (সিইইডব্লু) যৌথ ভাবে প্রকাশিত এক স্টাডি রিপোর্ট ‘রিচ দ্য সান’-এ জানিয়েছে যে, উদীয়মান দেশ কম খরচের নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকেছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ প্রায় চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। বিশ্বের নব্বই ভাগ অঞ্চলেই নবায়নযোগ্য শক্তি সবচেয়ে সস্তা। এইসব দেশের বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধির মধ্যে ভারতের ভাগ ৯ শতাংশ, আবার আগামী দিনে সম্ভাব্য বৃদ্ধির ২০ শতাংশ। চিনের চাহিদা বৃদ্ধির ভাগ ৫০ শতাংশ, সম্ভাব্য বৃদ্ধির ভাগ ৩৯ শতাংশ। বেশিরভাগ উদীয়মান দেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার পেরিয়ে যাবতীয় বৃদ্ধি নবায়নযোগ্য শক্তি থেকেই পেতে চলেছে। ২০১০ সালে ভারতে নবায়নযোগ্য শক্তি ছিল ২০ গিগাওয়াটের কম, ২০২১-এর মে মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৯৬ গিগাওয়াট। বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র হিসেবে ধরলে তা হয়েছে ১৪২ গিগাওয়াট বা দেশের মোট বিদ্যুতের ৩৭ শতাংশ। ... ...
ওয়ার্কশপে গেছি। সে আমার প্রথম আম্রিগাবাস। ওয়ার্কশপে বারোটা দেশের তেরোটা ছেলেপুলেদের প্রায় সব কটা ঘোর মালখোর। প্রায়টা জুড়লো, আমার জন্য। তখন আমি মদ টদ মোটে ছুঁতুমটুঁতুম না, মানে বিয়ার মুখে দিয়ে বি গ্রেড নিমের পাঁচন মনে হওয়া আর ওয়াইন খেয়ে মাথা ঘুরে যাবার পরে আর কিছু ছোঁবাটোবার ইচ্ছেটিচ্ছে হয়নি। তো, সে তোরা নিজেরা যা ইচ্ছে খাবি খা, কিন্তু না, আমা হেন ঘোর মদনাস্তিককে দীক্ষিত না করে তাদের আত্মার শান্তি, প্রাণের আরাম কিছুই হচ্ছেনা। বিশেষত আমার রুমমেট হার্মাদ কন্যা তো এই কনভার্টিকরণকে পুরো ধর্মপ্রচারের মতন সিরিয়াসলি নিয়ে নিল। কীসব ফলের ফ্লেভারে বিয়ার দিয়ে আমার ক্লাস শুরু হল। তা, তাতে সবে একটু একটু উন্নতি দেখাচ্ছি বলে টিচার যখন রায় দিচ্ছেন, তখনি সব ভেস্তে দিলেন এক প্রফ। ... ...
যতবার আপনি নিজের ধারণার পক্ষে আওয়াজ তোলেন, ততবারই আসলে আপনি তথ্য সরবরাহ করেন বিপক্ষের প্রচারের হাতে। আপনি নিজেকে চিনিয়ে দেন। বিপক্ষ আপনাকে প্রচারের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেয়। আপনি নিজের জগত তৈরি করে তাতে বসবাস করতে থাকেন, বিদ্রোহ, বিপ্লব করতে থাকেন। আপনার বন্ধুবৃত্তের ছোট্টো বৃত্ত তাতে আপনাকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেয়। বিপক্ষ এসবে হস্তক্ষেপ অবধি করেনা। বরং তাদের প্রচার আরও নিখুঁত হয়ে ওঠে। আপনি আপনার বৃত্তে বন্দী হয়ে থাকেন, আপনার এলাকার সম্পূর্ন বাইরে বিপক্ষের প্রচার চলতে থাকে, চুপচাপ। আপনি জানতেও পারেননা। এর জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য একমাত্র আপনার। কারণ আপনি জেনেবুঝেই সমস্ত তথ্য তুলে দিয়েছেন ওই সর্বগ্রাসী ব্যবস্থার হাতে ... ...
ফাইজারের বায়োটেকনোলজি-জাত ভ্যাক্সিন এদেশে এখনও আসেনি। সে ভ্যাক্সিনে নরওয়েতে তেইশ জন মারা গিয়েছেন। সকলেই ভ্যাক্সিনের কারণেই মারা গিয়েছেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয় - তবু, ধরেই নেওয়া যাক, এঁদের মৃত্যুর কারণ ওই টিকা। এই ভ্যাক্সিন সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতির এম-আরএনএ ভ্যাক্সিন - পৃথিবীতে প্রথম। আগামী দিনে এই পথেই হয়ত আসবে অজস্র সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধী টিকা। ... ...
পৃথিবীটা কখন বদলাল ভাবি। সেটা কি যেই মুহূর্তে নিস্তার ভাইয়ের বোন নুসরা বেগমের পদক্ষেপ পড়েছিল কেশব ব্যানার্জির বাড়িতে তখন থেকে? মনে পড়ল নিস্তার ভাই সেদিন খুব উত্তেজনা নিয়ে দরজা খুলে দিয়েছিলেন, কিছু একটা বলতে চেয়েছিলেন, হয়তো তিনি ভবিষ্যৎ দেখেছেন সেটাই বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মহাবিশ্বের কার্য ও ফলাফলের মধ্যে একটা সমীকরণ রয়েছে, সেইজন্য আলোর গতির বেশি গতিবেগে আমরা সংকেত আদানপ্রদান করতে পারি না, তাই মহাবিশ্ব নুসরা বেগম হয়ে নিস্তার ভাইয়ের কথায় বাদ সেধেছিলেন, আমার পুরনো পৃথিবীর সমাপ্তি সেখানেই হয়েছে। মহাবিশ্ব ভবিষ্যতে কী হবে সেটা আমাকে জানতে দিতে চায়নি। তাই নুসরা বেগমকে ময়মনসিংহ থেকে নিয়ে আসতে হয়েছিল। দিনটা কী ছিল মনে করার চেষ্টা করি, ১৯৭৫য়ের ৮ই অগাস্ট। হয়তো নিস্তার ভাই আমাকে শেখ মুজিবের আসন্ন মৃত্যু সম্পর্কে বলতে চেয়েছিলেন। ... ...
আরে, বলতে চাইছেন কী এক্স্যাক্টলি? লকডাউনটা ভুল - এই তো?? এককথায় ঠিক নাকি ভুল - বলা মুশকিল। কিন্তু, তার চেয়েও বড় কথা - বলে আর লাভ নেই। আমরা তো লকডাউনের চতুর্থ সপ্তাহে আছি। লকডাউনই বলুন বা সোশ্যাল ডিস্টান্সিং - তার আর্থিক প্রভাব গভীর। শুধু গরীব লোকই না - আঁচ পড়বে আমার বা আপনার উপরেও - কিন্তু, অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষেরা যেমন ঘোর বিপদে, নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে, আপনি বা আমি ততোখানি নই। লকডাউন ঠিক হয়েছিল, নাকি ভুল - এ নিয়ে আলোচনা করার সময় অনেক পাওয়া যাবে - স্রেফ লকডাউন করে করোনার থাবা থেকে কত লক্ষ বা কত কোটি মানুষকে বাঁচিয়ে দেওয়া গেল, সে নিয়েও হাওয়া গরম করার সময় পরে মিলবে - আপাতত এটুকু নিশ্চিত করা যাক, যাতে লকডাউনের কারণে অনাহারে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত না হতে পারে। ... ...
রোজাভাঃ টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে,সিরিয়ার উত্তরে এবং তুরস্কের সীমান্তে আবদুল্লা অচালানের রাষ্ট্রবিহীন গণতন্ত্র তত্ত্বের ভিত্তিতে গত ৬-৭ বছর ধরে যে অভূতপূর্ব গণতান্ত্রিক পরীক্ষা এবং এক বৈকল্পিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠছে সে সম্বন্ধে ইতিপূর্বে গুরুর ব্লগে দুটি পর্বে লেখা প্রকাশিত হয়েছে। আগের লেখাটির সময়সীমা ছিল ২০১২ সালের রোজাভা বিপ্লব শুরু হওয়ার সময় পর্যন্ত – রোজাভা বিষয়ক তৃতীয় পর্ব প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে এবং রোজাভার সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগের সূত্রে কেবল মাত্র গুরুচন্ডা৯-র পাঠকদের উদ্দেশ্যে ইস্তাম্বুল থেকে রোজাভার ‘বৈকল্পিক’ শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটি লেখা পাঠিয়েছেন ‘ইয়াসিন দুমান’। ইয়াসিন দুমান বর্তমানে ইস্তাম্বুলে পি এইচ ডি ছাত্র, কুর্দিশ অ্যাক্টিভিস্ট এবং রোজাভার শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত – ইয়াসিন দুমানের লেখাটির অনুবাদ,লেখক পরিচিতি এবং ফুটনোট সহযোগে রইল আপনাদের উদ্দেশ্যে -পাঠক যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন রাখেন ( ইংরাজিতে রাখলে আমাকে কষ্ট করে অনুবাদ করতে হয়না) তাহলে লেখক যথাসম্ভব উত্তর দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। আমরা যারা আমাদের বর্তমান সময়ের এই অসাধারণ উচ্চাভিলাষী সামাজিক পরীক্ষা নিরীক্ষা বিষয়ে আগ্রহী তারা এই সূত্রে রোজাভার সাথে একটি প্রত্যক্ষ যোগাযোগ,মত বিনিময় গড়ে তুলতে পারবেন বলে আশা রাখি। ... ...